মাদল

কে ক্লান্ত পুরুষ তার ঘরের জঠরে বসে আছে
হাঁটুতে থুতনি রেখে। তার
অস্তিত্বের আনাচেকানাচে
গ্লানির পঙ্কের ছাপ, শরীরের সব কটি হাড়
খেয়েছে কামড়
সে কোন্‌ রহস্যময় নেকড়ের বারংবার। চোখ
নিজের কাছেই তার শোক
করবার মতো জায়গা এবং জীবন
প্রায় সারাক্ষণ
শোকার্ত চোখের মতো করে ছলছল।
বার্ধক্য ঝুঁকেছে তার দিকে বড় বেশি,
বুঝি তাই গৃহকোণে পড়ে থাকে অলস মাদল,
হয় না চঞ্চল পেশী
আগেকার মতো আর। কিছু স্মৃতি শুধু
রৌদ্রদগ্ধ মাঠের মতন করে ধুধু।

কে রাগী পুরুষ তীব্র বাজায় মাদল অকস্মাৎ
নেচে নেচে নিজের উঠোনে-
দেখা যায় কিনা যায় তরঙ্গিত হাত।
আওয়াজ ছড়িয়ে পড়ে দশদিকে, আওয়াজের কী-যে
মানে, তা সে নিজ
বোঝে না, কেবলি শোনে
এবং পা ফেলে তালে তালে, আলোময়
হয়ে ওঠে তার অস্তিত্বের প্রতিটি স্পন্দিত ভাঁজ।
খসে যায় জরা বাকলের মতো আর মনে হয়
তাকে বন্দনীয় কারুকাজ
মহান শিল্পীর। আর সারা বাংলাদেশ যেন আজ
তার দীপ্র মাদলের গুরুগুরু অজর আওয়াজ।