ওল্ড স্টেটমেন্ট
নিউ স্টেটমেন্ট
1 of 2

মথি ০৮

১ যীশু সেই পাহাড় থেকে নেমে এলে অনেক লোক তাঁর পিছনে পিছনে চলতে লাগল।
২ সেই সময় একজন কুষ্ঠ রোগী যীশুর কাছে এসে তাঁর সামনে নতজানু হয়ে বলল, ‘প্রভু, আপনি ইচ্ছে করলেই আমাকে ভাল করে দিতে পারেন।’
৩ তখন যীশু সেইকুষ্ঠ রোগীর দিকে হাত বাড়িয়ে তাকে স্পর্শ করলেন। তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, আমি তাই-ইচাই। তুমি ভাল হয়ে যাও।’ সঙ্গে সঙ্গে তার কুষ্ঠ রোগ ভাল হয়ে গেল।
৪ তখন যীশু তাকে বললেন, ‘দেখ, তুমি কাউকে একথা বোলো না, বরং যাও যাজকের কাছে গিয়ে নিজেকে দেখাও; আর গিয়ে মোশির আদেশ অনুসারে নৈবেদ্য উত্‌সর্গ কর। তাতে তারা জানবে য়ে তুমি ভাল হয়ে গেছ।’
৫ এরপর যীশু যখন কফরনাহূম শহরে গেলেন, তখন একজন শতপতি তাঁর কাছে এসে অনুনয় করে বললেন,
৬ ‘প্রভু, আমার চাকরের পক্ষাঘাত হয়েছে, সে বিছানায় পড়ে আছে ও যন্ত্রণায় ছট্ফট্ করছে।’
৭ যীশু তাঁকে বললেন, ‘হ্যাঁ, আমি যাব, এবং তাকে সুস্থ করব।’
৮ সেইশতপতি তখন যীশুকে বললেন, ‘প্রভু, আমি এমন য়োগ্য নইয়ে আমার বাড়ীতে আপনি আসবেন। আপনি কেবল মুখে বলে দিন, তাতেইআমার চাকর ভাল হয়ে যাবে।
৯ আমি নিজে অপরের কর্তৃত্বের অধীন আর আমার সৈন্যদের উপরে আমি কর্তৃত্ব করি। আমি কাউকে ‘যাও’ বললে সে যায়, আবার কাউকে ‘এস’ বললে সে আসে; আর আমার চাকরকে ‘এটা কর’ বললে সে তা করে।’
১০ যীশু একথা শুনে আশ্চর্য হলেন; যাঁরা তাঁর পিছনে পিছনে যাচ্ছিল তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি সমগ্র ইস্রায়েলে আমি এত বেশী বিশ্বাস কারও মধ্যে দেখতে পাইনি।
১১ আমি তোমাদের আরো বলছি য়ে, পূর্ব ও পশ্চিম থেকে অনেকে আসবে আর অব্রাহাম, ইসহাক ও যাকোবের সঙ্গে স্বর্গরাজ্যে ভোজে বসবে।
১২ কিন্তু যাঁরা রাজ্যের উত্তরাধিকারী, তাদের বাইরে অন্ধকারে ফেলে দেওয়া হবে। সেখানে লোকেরা কান্নাকাটি করবে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষবে।’
১৩ এরপর যীশু সেই শতপতিকে বললেন, ‘যাও, তুমি য়েমন বিশ্বাস করেছ, তেমনি হোক্।’ আর সেই মূহুর্তেই তার চাকর সুস্থ হয়ে গেল।
১৪ যীশু পিতরের বাড়ীতে গিয়ে দেখলেন, পিতরের শাশুড়ীর ভীষণ জ্বর হয়েছে, আর তিনি বিছানায় শুয়ে আছেন।
১৫ যীশু তাঁর হাত স্পর্শ করা মাত্রই জ্বর ছেড়ে গেল। তখন তিনি বিছানা ছেড়ে উঠে যীশুর সেবা করতে লাগলেন।
১৬ সন্ধ্যা হলে লোকেরা ভূতে পাওয়া অনেক লোককে যীশুর কাছে নিয়ে এল। আর তিনি তাঁর হুকুমে সেই সব ভূতদের দূর করে দিলেন। এছাড়া তিনি রোগীদের সুস্থ করলেন।
১৭ এর দ্বারা ভাববাদী যিশাইয়র ভাববাণী পূর্ণ হল:‘তিনি আমাদের দুর্বলতা গ্রহণ করলেন, আমাদের ব্যাধিগুলি বহন করলেন।’ যিশাইয় ৫৩:৪
১৮ যীশু যখন দেখলেন য়ে তাঁর চারপাশে অনেক লোক জড়ো হয়েছে, তখনহ্রদের ওপারে যাওয়ার জন্য অনুগামীদের আদেশ দিলেন।
১৯ একজন ব্যবস্থার শিক্ষক তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘গুরু, আপনি য়েখানে যাবেন আমিও সেখানে যাব।’
২০ তখন যীশু তাকে বললেন, ‘শিয়ালের গর্ত আছে এবং আকাশের পাখীদের বাসা আছে; কিন্তু মানবপুত্রের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই।’
২১ তাঁর অনুগামীদের মধ্যে আর একজন বললেন, ‘প্রভু আগে আমার বাবাকে কবর দিয়ে আসার অনুমতি দিন, তারপর আমি আপনাকে অনুসরণ করব।’
২২ কিন্তু যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি আমার সঙ্গে এস, যাঁরা মৃত তারাই মৃতদের কবর দেবে।’
২৩ এরপর যীশু একটা নৌকাতে উঠলেন আর তার শিষ্যরা তাঁর সঙ্গে গেলেন।
২৪ সেইহ্রদের মধ্যে হঠাত্ ভীষণ ঝড় উঠল, তাতে নৌকার উপর ঢেউ আছড়ে পড়তে লাগল। যীশু তখন ঘুমোচ্ছিলেন।
২৫ তাইশিষ্যরা তাঁর কাছে গিয়ে তাঁর ঘুম ভাঙ্গিয়ে বললেন, ‘প্রভু বাঁচান! আমরা য়ে ডুবে মরলাম।’
২৬ তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘হে অল্প বিশ্বাসীর দল! কেন তোমরা এত ভয় পাচ্ছ?’ তারপর তিনি উঠে ঝোড়ো বাতাস ওহ্রদের ঢেউকে ধমক দিলেন, তখন সব কিছু শান্ত হল।
২৭ এতে শিষ্যরা আশ্চর্য হয়ে বললেন, ‘ইনি কিরকম লোক? এঁর কথা এমন কি বাতাস ও সাগর শোনে!’
২৮ যীশু যখনহ্রদের অপর পারে গাদারীয়দের দেশে এলেন সেই সময় ভূতে পাওয়া দুজন লোক কবর থেকে বেরিয়ে তাঁর সামনে এল। তারা এমন ভয়ঙ্কর ছিল য়ে কোন মানুষ সেই পথ দিয়ে চলতে পারত না।
২৯ ‘তারা চিত্‌কার করে বলল, ‘হে ঈশ্বরের পুত্র, আপনি আমাদের নিয়ে কি করতে চান? নির্দিষ্ট সময়ের আগেইকি আপনি আমাদের নির্য়াতন করতে এসেছেন?’
৩০ সেখান থেকে কিছু দূরে এক পাল শুযোর চরছিল।
৩১ তখন ভূতেরা যীশুকে অনুনয় করে বলল, ‘আপনি যদি আমাদের তাড়িয়েইদেবেন তবে ঐ শুযোর পালের মধ্যে ঢুকতে হুকুম দিন।’
৩২ যীশু তাদের বললেন, ‘তাইযাও!’ তখন তারা সেইলোকদের মধ্যে থেকে বের হয়ে এসে সেইশুযোরগুলির মধ্যে গিয়ে ঢুকল; তাতে সেইশুযোরের পাল ঢালু পাড় দিয়ে জোরে দৌড়াতে দৌড়াতে ব্রদের জলে গিয়ে ডূবে মরল।
৩৩ যাঁরা সেইপাল চরাচ্ছিল, তারা দৌড়ে পালাল। তারা নগরের মধ্যে গিয়ে সব খবর জানাল। বিশেষ করে সেইভূতে পাওয়া লোকদের বিষয়ে বলল।
৩৪ তখন নগরের সব লোক যীশুকে দেখার জন্য বের হয়ে এল। তারা যীশুর দেখা পেয়ে তাঁকে অনুনয় করে বলল তিনি য়েন তাদের অঞ্চল ছেড়ে চলে যান।