ভ্ৰমণ কাহিনী
আমার খুব কুচবিহার যেতে ইচ্ছে হয়
কেননা কুচবিহারের প্রতিটি শিশুর মুকুটে সাপের মাথার মণি
আমার ইচ্ছে করে আমি ওদের ব্ৰতচারীর সঙ্গী হই।
কুচবিহারের প্রেতিচ্ছায়া গাছে গাছে ঠিকানা লেখা চিঠি ঝুলছে
হলুদ পোশাক পরা যৌবন ওখানে মধ্য রাত্রির চাঁদের তলায় এসে
পাশা খেলে
কুচবিচারের ভূমধ্যহদ থেকে ছিটকে ওঠে অশ্বমেধের ঘোড়া
আমার দিকে হেযার হাস্য ছুঁড়ে দেয়
আমি তর্জনীতে আঙুলে ঠেকিয়ে বলি, চুপ, আমি যাচ্ছি।
রবীন্দ্রনাথের প্রচার সচিবের চাকরি নিয়ে বিশ্বব্ৰহ্মাণ্ড ঘুরতে ঘুরতে
আমার একদিন ইচ্ছে করে কুচবিহার যেতে
ওখানকার জ্যোতির্ময় বিকেলবেলায় সবুজ মখমলে শুয়ে
ক্ৰমশ হারিয়ে যাই
কুচবিহারের ন্যাসপাতি গাছে বসা পাখির একটা পালকের জন্য
আমার সমস্ত ছেলেবেলার দুঃখ মুচড়ে ওঠে
অভিমানে ইচ্ছে হয় রেললাইন উপড়ে লণ্ডভণ্ড করতে,
বিবৰ্ণ কোন চাষীকে সেচকার্যের জন্য আমি আমার চোখের
জল ধার দিতে চাই।
কুচবিহারের নারীরা স্বর্গের খুব কাছাকাছি বলে উদ্ভিন্ন যৌবনা
জলপরীর মতন তারা আমাকে একমুহূর্তের মায়া দেবে বলেছিল।
তারা ‘আনি মানি জানি না পরের ছেলে মানি না’ খেলতে খেলতে
আমাকে এসে ছুঁয়ে দিল
তারা আমাকে তাদের বিশাল উরসে জড়িয়ে ধরে বললো,
তুমি খেজুর গাছ কিংবা শজারু–তা জানি না
আমাদের ছোঁয়ায় সবই দেবদারু।