ভ্রমণ
চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলাম, একা, অহঙ্কার অত্যন্ত গম্ভীর
নাকের ক’লক্ষ শিরা কাঁপে যেন ঠোঁট ওল্টায় চিবুক পর্যন্ত
শরীর বিমর্ষ নয়–হাঁসের পালকসম ভারী অনুরাগী
গোধূলির, জলপ্রপাতের, কুচো আমিষের, হলুদ স্বর্গের
চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলাম আমি যেমন দাঁড়ানো যায় একা
যেমন দাঁড়ানো যায় জলে
পর্বত শিখরে
যেমন হঠাৎ মুখ পাখিদের সঙ্গে উড়ে যায়
মুখহীন চেয়ে থাকা যেমন শৈশব থেকে ভাসে
সিন্দুকের ঝনাৎকার, সীমানা ছাড়িয়ে যায় লক্ষ
বিকেলের ওড়াওড়ি
যেমন দাঁড়ানো যায় একাহিম স্ত্রীলোকের বুকের ভিতরে।
কে যেন স্বর্গের থেকে চ্যুত হয় অহরহ, চুত হয় স্বর্গেরও পরিধি
সটান ভূপৃষ্ঠে নয়, আরো নিচে, পাতাল বা খ্রীস্টান নরকে নরকে
প্রবাসী আছি বহুকাল, চিঠি লিখো,
কেয়ার আর অনুতাপ শাখা
সোনালি সাপের চোখ ডাক পিয়নের মতো উৎকণ্ঠা ওড়ায়
সায়াহ্নের স্নান যত্ন…ভেঙে যায় চিৎকারের গলা
আবার হঠাৎ যেন ফিরে আসে প্রহরী ও সবুজ নিশান
এক বৃষ্টিপাত
আবার হঠাৎ যেন ফিরে আসে বহুমুখ,
অন্ধকারে ফুলের উত্থান–
পতনের পদশব্দ হয়
সুনীল সুনীল বলে ডাক দেয় পার্কের রেলিং–
এ মৃত্যু ও মায়ের কণ্ঠ পরস্পর বিপরীত দিকে ছুটে যায়–
আবার হঠাৎ ঘুম ঘুমের ভিতর থেকে ডুবন্ত দ্বীপের
রঙ কিংবা নিবেদন নিয়ে আসে, প্ৰেতকণ্ঠে সুনীল সুনীল
হিজল বনের পাশে খোলা প্ৰান্তরের দিকে ভাসে।
জাগরণ কোনোদিনও ক্ষমাশীল নয়, যেন জাগরণ বহু জাগরণ
যেমন নারীর ঘুম শরীরের কলরবে খেলা
যেমন রাত্রির মধ্যে ভিজে পায়ে বাড়ি ফেরা,
অন্ধকারে চোখ ভিজে যায়
ভালোবাসা খুঁজে নেয় ঘাতকের চক্ষু, বুক পেতে দেয়
ছুরির সম্মুখে
কোনো কণ্ঠস্বর কোনো উত্তর জানে না–
স্বৰ্গ নরকের চেয়ে কতখানি দূরে থাকে কবিতার খাতা?