হাদিস নম্বরঃ ৫৭০১ | 5701 | ۵۷۰۱
পরিচ্ছদঃ ২৫১৫. মানুষের সঙ্গে শিষ্টাচার করা। আবূ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, আমরা কোন কোন কাওমের সঙ্গে বাহ্যত হাসি-খুশি মেলামেশা করি। কিন্তু আমাদের অন্তরগুলো তাদের উপর লা’নাত বর্ষণ করে।
৫৭০১। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট প্রবেশ করে অনুমতি চাইলে তখন তিনি বললেনঃ তাকে অনুমতি দাও। সে তার বংশের নিকৃষ্ট সন্তান। অথবা বললেনঃ সে তার গোত্রের ঘৃন্যতম ভাই। যথন সে প্রবেশ করল তখন তিনি তার সাথে নম্রভাবে কথা বার্তা বললেন। আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি এর সম্পর্কে যা বলার তা বলেছেন। এখন আপনি তার সাথে নম্রভাবে কথা বললেন। তিনি বললেনঃ হে আয়েশা! আল্লাহর কাছে মর্যাদায় নিকৃষ্ট সে ব্যাক্তি, যার অশালীন আচরন থেকে বেঁচে থাকার জন্য মানুষ তার সংশ্রব ত্যগ করে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭০২ | 5702 | ۵۷۰۲
পরিচ্ছদঃ ২৫১৫. মানুষের সঙ্গে শিষ্টাচার করা। আবূ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, আমরা কোন কোন কাওমের সঙ্গে বাহ্যত হাসি-খুশি মেলামেশা করি। কিন্তু আমাদের অন্তরগুলো তাদের উপর লা’নাত বর্ষণ করে।
৫৭০২। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওহহাব (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আবূ মুলায়কাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে। তিনি একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কয়েকটি রেশমের তৈরী (সোনার বোতাম লাগান) ‘কাবা’ হাদিয়া দেওয়া হলো। তিনি এগুলো সাহাবীদের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন এবং তা থেকে একটি মাখরামা (রাঃ) এর জন্য আলাদা রেখে দিলেন। পরে যখন তিনি এলেন, তখন তিনি (সেটি তাকে দিয়ে) বললেনঃ আমি এটি তোমার জন্য লুকিয়ে রেখেছিলাম। আইউব নিজের কাপড়ের দিকে ইশারা করলেন, তিনি যেন তার কাপড় মাখরামাকে দেখাচ্ছিলেন। মাখরামা (রাঃ) এর মেজাজের মধ্যে কিছু (অসন্তষের ভাব) ছিল।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭০৩ | 5703 | ۵۷۰۳
পরিচ্ছদঃ ২৫১৬. মু’মিন এক গর্ত থেকে দু’বার দংশিত হয় না। মু’আবিয়া (রাঃ) বলেছেনঃ অভিজ্ঞতা ব্যতীত সহনশীলতা সম্ভব নয়
৫৭০৩। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রকৃত মুমিন একই গর্ত থেকে দু’বার দংশিত হয় না।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭০৪ | 5704 | ۵۷۰٤
পরিচ্ছদঃ ২৫১৭. মেহমানের হক
৫৭০৪। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এসে বললেনঃ আমাকে কি এ খবর জানানো হয় নি যে, তুমি সারা রাত সালাতে কাটাও। আর সারা দিন সিয়াম পালন কর। তিনি বললেনঃ তুমি (এরকম) করো না। রাতের কিছু অংশ সালাত (নামায/নামাজ) আদায় কর, আর ঘুমাও। কয়েকদিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর, আর কয়েকদিন ইফতার কর (সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভঙ্গ কর)। তোমার উপর তোমার শরীরের হক আছে। তোমার উপর তোমার চোখের হক আছে, তোমার উপর তোমার মেহমানের হক আছে, আর তোমার উপর তোমার স্ত্রীরও হক আছে। নিশ্চয়ই তুমি তোমার আয়ু লম্বা হওয়ার আশা কর। সুতরাং প্রত্যেক মাসে তিন দিন সিয়াম পালনই তোমার পক্ষে যথেষ্ঠ।
কেননা, নিশ্চয়ই প্রতিটি নেক কাজের বদলে তার দশ গুন পরিমাণ সাওয়াব দেওয়া হয়। সুতরাং এভাবে সারা বছরেই সিয়ামের সাওয়াব পাওয়া যায়। তখন আমি কঠোর ব্যবস্থা চাইলে, আমাকে কঠোর ব্যবস্থা দেয়া হলো। আমি বললাম এর চেয়েও বেশী পালনের সামর্থ আমার আছে। তিনি বললেনঃ তা হলে তুমি প্রতি সপ্তাহে তিন দিন সিয়াম পালন কর। তখন আমি আরও কঠোর ব্যবস্থা চাইলে, আমাকে কঠোর ব্যবস্থা দেওয়া হল। আমি বললাম আমি এর চেয়ে বেশী সিয়ামের সামর্থ রাখি। তিনি বললেনঃ তবে তুমি আল্লাহর নাবী দাউদ (আলাইহিস সালাম) এর সিয়াম পালন কর। আমি বললাম ইয়া নাবী আল্লাহ! দাউদ (আলাইহিস সালাম) এর সিয়াম কি রকম? তিনি বললেন? আধা বছর সিয়াম পালন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭০৫ | 5705 | ۵۷۰۵
পরিচ্ছদঃ ২৫১৮. মেহমানের সম্মান করা ও নিজেই মেহমানের খিদমত করা। আল্লাহর বানীঃ তোমার নিকট ইবরাহীম এর সম্মানিত মেহমানদের ……
৫৭০৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ সুরায়হ কাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহতে ও শেষ দিনে ঈমান রাখে সে যেন মেহমানের সম্মান করে। মেহমানের সম্মান একদিন ও একরাত। আর সাধারণ মেহমানদারী তিন দিন ও তিনরাত। এরপরে (তা হলে) ‘সাদাকা’। মেহমানকে কষ্ট দিয়ে, তার কাছে মেহমানের অবস্থান হালাল নয়।
(অন্য সূত্রে) মালিক (রহঃ) অনুরূপ বর্ণনা করার পর অতিরিক্ত বলেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের উপর ঈমান রাখে সে যেন উত্তম কথা বলে, অথবা সে যেন চুপ থাকে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭০৬ | 5706 | ۵۷۰٦
পরিচ্ছদঃ ২৫১৮. মেহমানের সম্মান করা ও নিজেই মেহমানের খিদমত করা। আল্লাহর বানীঃ তোমার নিকট ইবরাহীম এর সম্মানিত মেহমানদের ……
৫৭০৬। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেয দিনে ঈমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনে ঈমান রাখে সে যেন মেহমানের সাম্মান করে। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনে ঈমান রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে, অথবা যেন চুপ থাকে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭০৭ | 5707 | ۵۷۰۷
পরিচ্ছদঃ ২৫১৮. মেহমানের সম্মান করা ও নিজেই মেহমানের খিদমত করা। আল্লাহর বানীঃ তোমার নিকট ইবরাহীম এর সম্মানিত মেহমানদের ……
৫৭০৭। কুতায়বা (রহঃ) … উকবা ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আমাদের কোথাও পাঠালে আমরা এমন কোন কাওমের কাছে উপস্থিত হই, যারা আমাদের মেহমানদারী করে না। এ ব্যাপারে আপনার মত কি? তখন তিনি আমাদের বললেনঃ যদি তোমরা কোন কাওমের নিকট গিয়ে পৌছ আর তারা তোমাদের মেহমানের উপযোগী যত্ন নেয়, তবে তোমরা তা সাদরে গ্রহণ করবে। আর যদি তারা না করে, তা হলে, তাদের অবস্থানুযায়ী তাদের থেকে মেহমানের উপযোগী দাবী আদায় করে নেবে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭০৮ | 5708 | ۵۷۰۸
পরিচ্ছদঃ ২৫১৮. মেহমানের সম্মান করা ও নিজেই মেহমানের খিদমত করা। আল্লাহর বানীঃ তোমার নিকট ইবরাহীম এর সম্মানিত মেহমানদের ……
৫৭০৮। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনে ঈমান রাখে, সে যেন তার মেহমানের সম্মান করে। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনে ঈমান রাখে, সে যেন তার রক্তের সম্পর্ক যুক্ত রাখে। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনে ঈমান রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে, অথবা নীরব থাকে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭০৯ | 5709 | ۵۷۰۹
পরিচ্ছদঃ ২৫১৯. খাবার তৈরি করা ও মেহমানের জন্য কষ্ট স্বীকার করা
৫৭০৯। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ জুহায়ফা (রহঃ) এর পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালমান (রাঃ) ও আবূ দারদা (রাঃ) এর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব সৃষ্টি করে দেন। এরপর একদিন সালমান (রাঃ) আবূ দারদা (রাঃ) এর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন, তখন তিনি উম্মে দারাদা (রাঃ) কে অতি সাধারন পোশাকে দেখতে পেলেন। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন তোমার কি হয়েছে? তিনি বললেনঃ তোমার ভাই আবূ দারদা (রাঃ) এর দুনিয়াতে কিছুর প্রয়োজন নেই। ইতিমধ্যে আবূ দারদা (রাঃ) এলেন। তারপর তার জন্য খাবার প্রস্তুত করে তাঁকে বললেনঃ আপনি খেয়ে নিন। আমি তো সিয়াম পালন করছি। তিনি বললেনঃ আপনি যতক্ষণ না খাবেন ততক্ষণ আমিও খাব না।
তখন তিনিও খেলেন তারপর যখন রাত হল, তখন আবূ দারদা (রাঃ) সালাতে দাঁড়ালেন। তখন সালমান (রাঃ) তাকে বললেনঃ আপনি ঘুমিয়ে নিন। তিনি শুয়ে পড়লেন। কিছুক্ষন পরে আবার উঠে দাঁড়ালে, তিনি বললেনঃ (আরও) ঘুমান। অবশেষে যখন রাত শেষ হয়ে এল, তখন সালমান (রাঃ) বললেনঃ এখন উঠুন এবং তারা উভয়েই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তারপর সালমান (রাঃ) বললেনঃ তোমার উপর তোমার রবের দাবী আছে, (তেমনি) তোমার উপর তোমার দাবী আছে এবং তোমার স্ত্রীরও তোমার উপর দাবী আছে। সুতরাং তুমি প্রত্যেক দাবীদারের দাবী আদায় করবে। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে, তার কাছে তার কথা উল্লেখ করলেন তিনি বললেনঃ সালমান সত্যই বলেছে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭১০ | 5710 | ۵۷۱۰
পরিচ্ছদঃ ২৫২০. মেহমানের সামনে কারো উপর রাগ করা, আর অসহনশীল হওয়া অনুচিত
৫৭১০। আয়্যাশ ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) কিছু লোককে মেহমান হিসাবে গ্রহন করলেন। তিনি (তার পুত্র) আবদুর রহমান কে নির্দেশ দিলেন, তোমার এ মেহমানদের নিয়ে যাও। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যাচ্ছি। আমি ফিরে আসার পূর্বে তুমি তাদের খাইয়ে দাইয়ে অবসর হয়ে যেয়ো। আবদুর রহমান (রাঃ) তাদের নিয়ে চলে গেলেন এবং তার ঘরে যা ছিল তা সামনে পেশ করে দিয়ে তাদের বললেনঃ আপনারা খেয়ে নিন। তাঁরা বললেন আমাদের এ বাড়ীর মালিক কোথায়? তিনি বললেনঃ আপনারা খেয়ে নিন। তারা বললেন বাড়ীর মালিক না আসা পর্যন্ত আমরা খাবো না। তিনি বললেনঃ আমাদের পাত্র থেকে আপনারা আপনাদের খাবার খেয়ে নিন। কারন আপনারা না খেলে তিনি এসে আমার উপর রাগ করবেন। কিন্তু তাঁরা অস্বীকার করলেন।
আমি ভাবলাম যে তিনি অবশ্যই আমার উপর ক্ষুব্ধ হবেন। তারপর তিনি ফিরে আসলে আমি তার থেকে এক পাশে সরে পড়লাম। তিনি তাদের জিজাসা করলেন, আপনারা কী করেছেন। তখন তারা তাঁকে সব বর্ণনা করলেন। তখন তিনি বললেনঃ হে আবদুর রহমান! তখন আমি চুপ করে রইলাম। তিনি আবার ডাকলেন, হে আবদুর রহমান। এবারেও আমি চুপ করে রইলাম। তিনি আবার ডেকে বললেনঃ ওহে মূর্খ! আমি তোকে কসম দিচ্ছি। যদি আমার ডাক শুনে থাকিস, তবে কেন আসছিস না? তখন আমি বেরিয়ে এসে বললামঃ আপনি আপনার মেহমানদের জিজ্ঞাসা করুন। তখন তারা বললেন সে ঠিকই আমাদের খাবার এনে দিয়েছিল। তিনি বললেন তবুও কি আপনারা আমার অপেক্ষা করছেন? আল্লাহর কসম! আমি আজ রাতে তো খাবো না।
মেহমানরাও বললেনঃ আল্লাহর কসম আপনি যতক্ষন না খাবেন ততক্ষন আমরাও খাব না। তখন তিনি বললেনঃ আমি আজ রাতের মত খারাপ রাত আর দেখিনি। আপনাদের প্রতি আক্ষেপ। আপনারা কি আমাদের খাবার গ্রহণ করবেন না? তখন তিনি (আবদুর রহমানকে ডেকে) বললেনঃ তোমার খাবার নিয়ে এসো। তিনি তা নিয়ে আসলে তিনিই খাবারের উপর নিজ হাত রেখে বললেন, বিসমিল্লাহ এ প্রথম ঘটনাটা শয়তানের কারনেই ঘটেছে। তারপর তিনি খেলেন এবাং তারাও খেলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭১১ | 5711 | ۵۷۱۱
পরিচ্ছদঃ ২৫২১. মেহমানকে মেজবানের (এ কথা) বলা যে, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি না খান ততক্ষণ আমিও খাব না। এ সম্পর্কে নবী (সাঃ) থেকে আবু জুহায়ফার হাদীস রয়েছে
৫৭১১। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার আবূ বকর (রাঃ) তার একজন কিংবা কয়েকজন মেহমান নিয়ে এলেন এবং সন্ধ্যার সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলেন। তিনি ফিরে এলে আমার আম্মা তাকে বললেনঃ আপনি মেহমানকে, কিংবা বললেন, মেহমানদের (ঘরে) রেখে (এতো) রাত কোথায় আটকা পড়েছিলেন? তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেঃ তুমি কি তাদের খাবার দাওনি? তিনি বললেনঃ আমি তাদের সামনে খাবার দিয়েছিলাম কিন্তু তারা, বা সে তা খেতে অস্বীকার করলেন। তখন আবূ বকর (রাঃ) রেগে গাল মন্দ বললেন ও বদ দু’আ করলেন। আর শপথ করলেন যে, তিনি খাবার খাবেন না। আমি লুকিয়ে ছিলাম। তিনি আমাকে ডেকে বললেন ওরে মূর্খ! তখন মহিলা (আমার আম্মা) ও কসম করলেন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি না খাবেন ততক্ষন আম্মাও খাবেন না।
এদিকে মেহমানটি বা মেহমানরাও কসম খেয়ে বসলেন যে, যতক্ষন তিনি না খান, ততক্ষন পর্যন্ত তারাও খাবেন না। তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ এ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে শয়তান থেকে। তারপর তিনি খাবার আনতে বললেন। আর তিনি খেলেন এবং মেহমানরাও খেলেন। কিন্তু তারা খাওয়া আরম্ভ করে যতবারই লুকমা উঠাতে লাগলেন, তার নীচে থেকে তার চেয়েও বেশী খাবার বৃদ্ধি পেতে লাগলো। তখন তিনি তার স্ত্রীকে ডেকে বললেন হে বনী ফেরাসের বোন এ কি? তিনি বললেন আমার চোখের প্রশান্তির কসম! এতো আমাদের পূর্বের খাবার থেকে এখন অনেক বেশী দেখছি। তখন সবাই খেলেন এবং তা থেকে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে কিছু পাঠিয়ে দিলেন। তারপর তিনি বর্ণনা করেন যে, তা থেকে তিনিও খেয়েছিলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭১২ | 5712 | ۵۷۱۲
পরিচ্ছদঃ ২৫২২. বড়কে সম্মান করা। বয়সে যিনি বড় তিনিই কথাবার্তা ও প্রশ্নাদি আরম্ভ করবেন
৫৭১২। সুলায়মাল ইবনুু হারব (রহঃ) … রাফে ইবনু খাদীজ (রাঃ) ও সাহল ইবনু আবূ হাসমাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার আবদুল্লাহ ইবনু সাহল ও মুহাইয়ইসা ইবনু মাসউদ (রাঃ) খায়বারে পৌছে উভয়েই খেজুরের বাগানের ভিন্ন ভিন্ন পথে চলে গেলেন। সেখানে আবদুল্লাহ ইবনু সাহল (রাঃ) কে হত্যা করা হল। এ ঘটনার পর আবদুর রহমান ইবনু সাহল ও ইবনু মাসউদ (রাঃ) এর দুই ছেলে হুওয়াইসা (রাঃ) ও মুহায়ইসা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলেন এবং তাঁর কাছে নিহত ব্যাক্তির কথা বলতে লাগলেন। আবদুর রহমান (রাঃ) কথা শুরু করলেন। তিনি ছোট ছিলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেনঃ তুমি বড়দের সম্মান করবে।
বর্ণনাকারী ইয়াহইয়া বলেনঃ কথা বলার দায়িত্ব যেন বড়রা পালন করে। তখন তারা তাদের লোক সম্পর্কে কথা বললেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেনঃ তোমাদের পঞ্চাশ জন লোক কসমের মাধ্যমে তোমাদের নিহত ভাইয়ের হত্যার হক প্রমাণ কর। তারা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! ঘটনা তো আমরা দেখিনি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা হলে ইয়াহুদীরা তাদের থেকে পঞ্চাশ জনের কসমের মাধ্যমে তোমাদের কসম থেকে মুক্তি দিবে। তখন তারা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! ওরা তো কাফির সম্প্রদায়। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের তরফ থেকে তাদের নিহত ব্যাক্তির ফিদইয়া দিয়ে দিলেন।
সাহল (রাঃ) বললেনঃ আমি সেই উটগুলো থেকে একটি উট পেলাম। সেটি নিয়ে আমি যখন আস্তাবলে গেলাম তখন উটনীটি তার পা দিয়ে আমাকে লাথী মারলো।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭১৩ | 5713 | ۵۷۱۳
পরিচ্ছদঃ ২৫২২. বড়কে সম্মান করা। বয়সে যিনি বড় তিনিই কথাবার্তা ও প্রশ্নাদি আরম্ভ করবেন
৫৭১৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা আমাকে এমন একটা বৃক্ষের খবর দাও, মুসলমানের সাথে যার দৃষ্টান্ত রয়েছে। তা সর্বদা তার প্রতিপালকের নির্দেশে খাদ্য দান করে, আর তার পাতাও ঝরে না। তাখন আমার মনে আসলো যে, এটি খেজুর গাছ। কিন্তু যেহেতু সে স্থানে আবূ বকর ও উমর (রাঃ) উপস্থিত থেকেও কথা বলছিলেন না, তাই আমিও কথা বলা পছন্দ করি নি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই বললেনঃ সেটি হলো, খেজুর গাছ। তারপর যখন আমি আমার আব্বার সঙ্গে বেরিয়ে এলাম, তখন আমি বললাম আব্বা! আমার মনেও খেয়াল এসেছিল যে, এটা নিশ্চয়ই খেজুর গাছ। তিনি বললেনঃ তোমাকে তা বলতে কিসে বাধা দিয়েছিল? যদি তুমি তা বলতে তাহলে একথা আামার কাছে এত এত ধন-সম্পদ পাওয়ার চেয়েও বেশী প্রিয় হতো। তিনি বললেনঃ আমাকে শুধু একথাই বাধা দিয়েছিল যে, আমি দেখলাম আপনি ও আবূ বকর (রাঃ) কেউই কথা বলছেন না। তাই আমিও কথা বলা পছন্দ করলাম না।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭১৪ | 5714 | ۵۷۱٤
পরিচ্ছদঃ ২৫২০. কবিতা পাঠ, সঙ্গীত ও উট চালানোর সঙ্গীতের মধ্যে যা জায়িয ও যা না-জায়িয। আল্লাহ তা’আলার বানীঃ এবং বিপথগামী লোকেরাই কবিদের অনুসরন করে থাকে …… তারা কোন পথে ফিরে বেড়াচ্ছে
৫৭১৪। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চই কোন কোন কবিতার মধ্যে জ্ঞানের কথাও রয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭১৫ | 5715 | ۵۷۱۵
পরিচ্ছদঃ ২৫২০. কবিতা পাঠ, সঙ্গীত ও উট চালানোর সঙ্গীতের মধ্যে যা জায়িয ও যা না-জায়িয। আল্লাহ তা’আলার বানীঃ এবং বিপথগামী লোকেরাই কবিদের অনুসরন করে থাকে …… তারা কোন পথে ফিরে বেড়াচ্ছে
৫৭১৫। আবূ নুয়াইম (রহঃ) … জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক জিহাদে হেটে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ তিনি একটা পাথরে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলেন এবং তার একটা আঙ্গুল রক্তাক্ত হয়ে গেল। তখন তিনি কবিতার ছন্দে বলেন তুমি একটি রক্তাক্ত আংগুল বৈ কিছুই নও, আর যে কষ্ট ভোগ করছ তা তো একমাত্র আল্লাহর পথেই।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭১৬ | 5716 | ۵۷۱٦
পরিচ্ছদঃ ২৫২০. কবিতা পাঠ, সঙ্গীত ও উট চালানোর সঙ্গীতের মধ্যে যা জায়িয ও যা না-জায়িয। আল্লাহ তা’আলার বানীঃ এবং বিপথগামী লোকেরাই কবিদের অনুসরন করে থাকে …… তারা কোন পথে ফিরে বেড়াচ্ছে
৫৭১৬। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কবিরা যে সব কথা বলেছেন তার মধ্যে কবি লবীদের কথাটাই সবচেয়ে বেশী সত্য কথা। (তিনি বলেছেন) শোন! আল্লাহ ব্যতীত সব কিছুই বাতিল। তিনি আরও বলেছেনঃ কবি উমাইয়া ইবনু আবূ সালত ইসলাম গ্রহনের কাছাকাছি হয়ে গিয়েছিল।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭১৭ | 5717 | ۵۷۱۷
পরিচ্ছদঃ ২৫২০. কবিতা পাঠ, সঙ্গীত ও উট চালানোর সঙ্গীতের মধ্যে যা জায়িয ও যা না-জায়িয। আল্লাহ তা’আলার বানীঃ এবং বিপথগামী লোকেরাই কবিদের অনুসরন করে থাকে …… তারা কোন পথে ফিরে বেড়াচ্ছে
৫৭১৭। কুতায়বা (রহঃ) … সালামা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে খায়বার অভিযানে বের হলাম। আমরা রাতের বেলায় চলছিলাম। দলের মধ্যে থেকে একজন আমির ইবনু আকওয়া (রাঃ) কে বলল যে, আপনি কি আপনার (ছোট) কবিতাগুলো থেকে কিছু পড়ে আমাদের শোনাবেন না? আমির (রাঃ) ছিলেন একজন কবি। সুতরাং তিনি দলের লোকদের হুদী গেয়ে শোনাতে লাগলেন। হে আল্লাহ! তুমি না হলে, আমরা হেদায়েত পেতাম না। আমরা সাদাকা দিতাম না, সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতাম না। আমাদের আগেকার-গুনাহু ক্ষমা করুন; যা আমরা করেছি। আমরা আপনার জন্য উৎসর্গিত। যদি আমরা শত্রুর সম্মুখীন হই, তখন আমাদের পদদ্বইয় সুদৃঢ় রাখুন। আমাদের উপর শান্তি বর্ষন করুন। শত্রুর ডাকের সময় আমরা যেন বীরের মত ধাবিত হই, যখন তারা হৈ-হুল্লোড় করে, আমাদের উপর আক্রমণ চালায়।
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেনঃ এ উট চালক লোকটি কে? সে যে এ রকম উট চালিয়ে যাচ্ছে। লোকেরা বললেনঃ তিনি আমির ইবনু আকওয়া। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তার উপর রহম করুন। দলের একজন বললেন ইয়া নাবী আল্লাহ! তার জন্য তো শাহাদাত নির্দিষ্ট হয়ে গেলো। হায়! যদি আমাদের এ সুযোগ দান করতেন। তারপর আমরা খায়বারে পৌছে শত্রুদের অবরোধ করে ফেললাম। এ সময় আমরা অতিশয় ক্ষুধার্ত হয়ে পড়লাম। অবশেষে আল্লাহ (খায়বার যুদ্ধে) তাদের উপর আমাদের বিজয় দান করলেন। তারপর যেদিন খায়বার বিজিত হলো, সেদিন লোকেরা অনেক আগুন জ্বালাল।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমরা এত সব আগুন কি জন্য জ্বালাচ্ছ? লোকেবা বললোঃ গোশত রান্নার জন্য। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ কিসের গোশত? তারা বললঃ গৃহপালিত গাধার গোশত। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এসব গোশত ফেলে দাও এবং হাড়িগুলো ভেঙ্গে ফেল। এক ব্যাক্তি বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! বরং গোশতগুলো ফেলে আমরা হাড়িগুলো ধুয়ে নেই? তিনি বললেনঃ তবে তাই কর।
রাবী বলেন যখন লোকের যুদ্ধে সারিবদ্ধ হল, আমির (রাঃ) এর তলোয়ার খানা খাঁটো ছিল। তিনি এক ইয়াহুদীকে মারার উদ্দেশ্য এটি দিয়ে তার উপর আক্রমণ করলেন। কিন্তু তার তলোয়ারের ধারাল অংশ আমির (রাঃ) এর হাটুতে এসে আঘাত করল। এতে তিনি মারা গেলেন। তারপর ফিরার সময় সবাই ফিরলেন।
সালামা (রাঃ) বলেনঃ আমার চেহারার রং পরিবর্তন দেখে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমার কি হয়েছে? আমি বললাম আমার বাপ-মা আপনার উপর কুরবানী হউন! লোকেরা বলছে যে, আমিরের আমল সব বরবাদ হয়ে গেছে। তিনি বললেনঃ এ কথাটা কে বলেছে? আমি বললাম অমুক, অমুক অমুক এবং উসায়দ ইবনু হুয়াইর আনসারী (রাঃ)। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যারা এ কথা বলেছে, তারা মিথ্যা বলেছে। তিনি বললেনঃ তার দুটি পুরস্কার রয়েছে, সে জাহিদ এবং মুজাহিদ। আরব ভূ-খণ্ডে তার মত লোক অল্পই জন্ম নিয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭১৮ | 5718 | ۵۷۱۸
পরিচ্ছদঃ ২৫২০. কবিতা পাঠ, সঙ্গীত ও উট চালানোর সঙ্গীতের মধ্যে যা জায়িয ও যা না-জায়িয। আল্লাহ তা’আলার বানীঃ এবং বিপথগামী লোকেরাই কবিদের অনুসরন করে থাকে …… তারা কোন পথে ফিরে বেড়াচ্ছে
৫৭১৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কতক সহধর্মিণীর কাছে আসলেন। তখন তাদের সঙ্গে উম্মে সুলায়মও ছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন সর্বনাশ, হে আনজাশাহ! তুমি (উট) চালাও। কেননা, তুমি কাঁচপাত্র (মহিলা নিয়ে চলেছ। রাবী আবূ কিলাবা বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘সাওকাকা বিল কাওয়ারীর’ বাক্য দ্বারা এমন বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করলেন, যা অন্য কেউ বললে, তোমরা তাকে ঠাট্টা করতে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭১৯ | 5719 | ۵۷۱۹
পরিচ্ছদঃ ২৫২৩. কবিতার মাধ্যমে মুশরিকদের নিন্দা করা
৫৭১৯। মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার হাসসান ইবনু সাবিত (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট মুশরিকদের নিন্দা করার অনুমতি চাইলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা হলে এ নিন্দা থেকে আমার বংশ মর্যাদা কিভাবে বাঁচাবে? তখন হাসসান (রাঃ) বললেনঃ আমি তাদের থেকে আপনাকে এমনভাবে বের করে দেব, যেভাবে মাখানো আটা থেকে চুল বের করে আনা হয়।
রাবী উরওয়া বর্ননা করেন একদিন আমি আয়িশা (রাঃ) এর কাছে হাসসান (রাঃ) কে গালি দিতে শুরু করলাম তখন তিনি বললেনঃ তুমি তাকে গালমন্দ করো না। কারণ, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তরফ থেকে মুশরিকদের প্রতিরোধ করতেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭২০ | 5720 | ۵۷۲۰
পরিচ্ছদঃ ২৫২৩. কবিতার মাধ্যমে মুশরিকদের নিন্দা করা
৫৭২০। আসবাগ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) তার বর্ণনায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা উল্লেখ করে বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের ভাই অর্থাৎ কবি ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) অশ্লীল কথা বলেনি। তিনি বলতেনঃ আমাদের মধ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনি কুরআন তিলাওয়াত করেন; যখন ভোরের মনোরম আলো ফুটে উঠে। পথভ্রষ্ট হওয়ার পর তিনি আমাদের সুপথ দেখিয়েছেন। আর আমরা অন্তরের সাথে একীন করলাম যে, তিনি যা বলছেন তা ঘটবেই। তিনি নিজ পিঠ বিছানা থেকে সরিয়ে রেখেই রাত কাটান। যখন কাফিরদের শয্যা-সুখ ত্যাগ করা তাদের পক্ষে ভারী কষ্টকর হয়।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭২১ | 5721 | ۵۷۲۱
পরিচ্ছদঃ ২৫২৩. কবিতার মাধ্যমে মুশরিকদের নিন্দা করা
৫৭২১। আবুল ইয়ামান ও ইসরাঈল (রহঃ) … হাসসান ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে আবূ হুরায়রা! আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি। আপনি কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে একথা বলতে শুনেছেন যে ওহে হাসসান! তুমি আল্লাহর রাসুলের তরফ থেকে পাল্টা জবাব দাও। হে আল্লাহ! তুমি জিবরীল (আলাইহিস সালাম) এর মাধ্যমে তাকে সাহায্য কর। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেনঃ হ্যাঁ।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭২২ | 5722 | ۵۷۲۲
পরিচ্ছদঃ ২৫২৩. কবিতার মাধ্যমে মুশরিকদের নিন্দা করা
৫৭২২। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসসান (রাঃ) কে বললেনঃ তুমি কাফিরদের নিন্দা করো। জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তোমার সহায়।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৩ | 5723 | ۵۷۲۳
পরিচ্ছদঃ ২৫২৪. যে কবিতা মানুষকে এতটা প্রভাবিত করে, যা তাকে আল্লাহর স্মরণ, জ্ঞান অর্জন ও কুরআন থেকে বাধা দেয়, তা নিষিদ্ধ
৫৭২৩। উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কারো উদর কবিতা দিয়ে ভর্তি হওয়ার চেয়ে পূজ দিয়ে ভর্তি হওয়া অনেক ভাল।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৪ | 5724 | ۵۷۲٤
পরিচ্ছদঃ ২৫২৪. যে কবিতা মানুষকে এতটা প্রভাবিত করে, যা তাকে আল্লাহর স্মরণ, জ্ঞান অর্জন ও কুরআন থেকে বাধা দেয়, তা নিষিদ্ধ
৫৭২৪। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তির পেট কবিতা দিয়ে ভর্তি হওয়ার চাইতে এমন পূজে তর্তি হওয়া উত্তম যা তোমাদের পেটকে ধবংস করে ফেলে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৫ | 5725 | ۵۷۲۵
পরিচ্ছদঃ ২৫২৫. নাবী (ﷺ)এর উক্তিঃ তোমার ডান হাত ধূলি ধূসরিত হোক। তোমার হাত-পা ধ্বংস হোক এবং তোমার কন্ঠদেশ ঘায়েল হোক
৫৭২৫। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, পর্দার হুকুম নাযিল হওয়ার পর আবূ কুয়ায়সের ভাই আফলাহ আমার গৃহে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। আমি বললামঃ আল্লাহর কসম! আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুমতি না নিয়ে, তাকে অনুমতি দেব না। কারন, আবূ কুয়ায়সের স্ত্রী আমাকে দুধ পান করিয়েছেন। ইতিমধ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে প্রবেশ করলেন। আমি বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! এ ব্যাক্তি তো আমাকে দুধ পান করান নি। বরং তার স্ত্রী আমাকে দুধ পান করিয়েছেন। তিনি বললেন অনুমতি দাও। কারণ এ লোকটি তোমার (দুধ) চাচা। তোমার ডান হাত ধূলায় ধূসরিত হোক। রাবী উরওয়া বলেন, এ কারণেই আয়িশা (রাঃ) বলতেন যে, বংশগত সম্পর্কে বিবাহে যারা হারাম হয় দুধ পান সম্পর্কেও তোমরা তাদের হারাম গন্য করবে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৬ | 5726 | ۵۷۲٦
পরিচ্ছদঃ ২৫২৫. নাবী (ﷺ)এর উক্তিঃ তোমার ডান হাত ধূলি ধূসরিত হোক। তোমার হাত-পা ধ্বংস হোক এবং তোমার কন্ঠদেশ ঘায়েল হোক
৫৭২৬। আদম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে আসার ইচ্ছা করলেন। তখন সাফিয়্যা (রাঃ) ঋতুস্রাব আরম্ভ হওয়ায় তার দরজার সামনে চিন্তিত ও বিষণ্ণ বদনে দাঁড়িয়ে আছেন দেখতে পেলেন। তখন তিনি কুরাইশদের বাগধারায় বলেনঃ ‘আকরা হালকী’। তুমি তো দেখছি, আমাদের আটকিয়ে দিবে। এরপর জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি কুরবানীর দিনে ফরয তাওয়াফ আদায় করেছিলে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন তিনি বললেনঃ: তাহলে এখন তুমি চলো।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৭ | 5727 | ۵۷۲۷
পরিচ্ছদঃ ২৫২৬. ‘যা‘আমু’ (তারা ধারণা করেন) সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে
৫৭২৭। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … উম্মে হানী বিনত আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন মক্কা বিজয়ের বছর আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে গিয়ে তাকে গোসল করতে পেলাম। তখন তাঁর কন্যা ফাতিমা (রাঃ) তাঁকে পর্দা দিয়ে আড়াল করছিলেন। আমি তাঁকে সালাম দিলাম, তিনি জিজ্ঞাসা করলেন এ কে? আমি বললাম আমি আবূ তালিবের মেয়ে উম্মে হানী। তিনি বললেনঃ উম্মে হানীর জন্য মারহাবা। তারপর তিনি যখন গোসল শেষ করলেন। তখন তিনি দাঁড়ালেন এবং এক কাপড় গায়ে জড়িয়ে আট রাকাআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তিনি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলে আমি বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি হুবায়রার পূত্র অমুককে নিরাপত্তা দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার ভাই বলছে, সে তাকে হত্যা করবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে উম্মে হানী। তুমি যাকে নিরাপত্তা দিয়েছ, আমিও তাকে নিরাপত্তা দিলাম। উলে হানী (রাঃ) বলেন এই সময়টি ছিল চাশতের সময়।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৮ | 5728 | ۵۷۲۸
পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭২৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে একটি কুরবানীর উট হাকিয়ে নিতে দেখে, তাকে বললেনঃ এতে সাওয়ার হয়ে যাও। সে বললঃ এটি তো কুরবানীর উট। তিনি আবার বললেন সাওয়ার হয়ে যাও। সে বললঃ এটি তো কুরবানীর উট। তিনি বললেন এতে সাওয়ার হয়ে যাও। সে বলল, এটি তো কুরবানীর উট। তিনি বললেনঃ ওয়াইলাকা (তোমার অকল্যাণ হোক) তুমি এটির উপর সাওয়ার হয়ে যাও।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৯ | 5729 | ۵۷۲۹
পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭২৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে একটা কুরবানীর উট হাকিয়ে নিয়ে যেতে দেখে বললেনঃ তুমি এর উপর সাওয়ার হয়ে যাও। সে বলল ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটি তো কুরবানীর উট। তখন তিনি দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয়বার বললেনঃ ওয়াইলাকা (তোমার অনিষ্ট হোক) তুমি এতে সাওয়ার হয়ে যাও।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩০ | 5730 | ۵۷۳۰
পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭৩০। মুসাদ্দাদ ও আইউব (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সফরে ছিলেন। তার সঙ্গে তখন আনজাশা নামক একজন কালো গোলাম ছিল। সে পুথি গাইতেছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ ওহে আনজালা তোমার সর্বনাশ। তুমি উটটিকে কাচপাত্র সদৃশ সাওয়ারীদের নিয়ে ধীরে চালিয়ে যাও।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩১ | 5731 | ۵۷۳۱
পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭৩১। মূসা ইবনু ইসমাঈস (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে অনেক জনের প্রশংসা করলো। তিনি বললেনঃ ‘ওয়াইলাকা’ (তোমার অমঙ্গল হোক) তুমি তো তোমার ভাই এর গর্দান কেটে দিয়েছ। তিনি এ কথাটি তিনবার বললেনঃ তিনি আরও বললেনঃ যদি তোমাদের কাউকে কারেই প্রশংসা করতেই হয়, আর সে তার অবস্থা সম্পর্কে অবহিত থাকে, তবে শুধু এতটুকু বলবে যে, আমি এ ব্যাক্তি সম্পর্কেই এরূপ ধারনা পোষণ করি। প্রকৃত হিসাব নিকাশের মালিক একমাত্র আল্লাহ। আর আমি নিশ্চিতভাবে আল্লাহর সামনে কারো পবিত্রতা বর্ণনা করছি না।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩২ | 5732 | ۵۷۳۲
পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭৩২। আবদুর রহমান ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা নিজ অধিকারভুক্ত কিছু মাল নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভাগ করে দিলেন। এমন সমর তামীম গোত্রের যুল খোয়াইসীরা নামক এক ব্যাক্তি বলে উঠল ইয়া রাসুলাল্লাহ! ইনসাফ করুন। তখন তিনি বললেনঃ ওয়ায়লাকা (তোমার অমঙ্গল হোক) আমি ইনসাফ না করলে আর কে ইনসাফ করবে? তখন উমর (রাঃ) বললেনঃ আপনি আমাকে অনুমতি দিন, আমি এর গর্দান উড়িয়ে দেই। তিনি বললেনঃ না। কারন, তার এমন কতক সাথী রয়েছে; যাদের সালাত (নামায/নামাজ) এর সামনে নিজেদের সালাত (নামায/নামাজ)কে তুচ্ছ মনে করবে এবং তাদের সিয়ামের সামনে তোমাদের নিজেদের সিয়ামকে তুচ্ছ মনে করবে। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে! যেমনিভাবে তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায় — গোবর ও রক্তকে এমনভাবে অতিক্রম করে যায় যে তীরের অগ্রভাগ লক্ষ্য করলে তাতে কোন চিহ্ন পাওয়া যায় না, তার উপরিভাগে লক্ষ্য করলেও কোন চিহ্ন পাওয়া যায়না। তার কাঠামোতে ও কোন চিহ্ন নেই। তার পাতির মধ্যে ও, কোন চিহ্ন নেই।
এমন সময় তাদের আবির্ভাব হবে যখন মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ দেখা দিবে। তাদের পরিচয় হল, তাদের নেতা এমন এক ব্যাক্তি হবে, যার একহাত স্ত্রীলোকের রক্তের মত অথবা শিড়ের মত তা কাপতে থাকবে। রাবী আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেন, আমি সাক্ষ্য দিয়ে বলছি যে, আমি নিশ্চয়ই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একথা শুনেছি এবং আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি নিজে আলী (রাঃ) এর সাথে ছিলাম যখন তিনি এ দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিলেন। তখন সে লোকটিকে যুদ্ধের নিহত ব্যাক্তিদের মধ্য থেকে খুজে বের করে আনার পর তাকে ঠিক সেই অবস্থায়ই পাওয়া গেল, যে অবস্থার বর্ণনা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দিয়েছিলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩৩ | 5733 | ۵۷۳۳
পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭৩৩। আবুল হাসান মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে এসে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি তো ধবংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ ওয়ায়লাকা (আফসোস তোমার জন্য) এরপর সে বলল আমি রামযানের মধ্যেই দিনের বেলায় আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে ফেলেছি। তিনি বললেন একটা গোলাম আযাদ করে দাও সে বললঃ আমার কাছে তা নেই। তিনি বললেনঃ তা হলে তুমি লাগাতার দু’মাস সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর। সে বলল আমি এতেও সক্ষম নই। তিনি বললেনঃ তবে তুমি ষাটজন মিসকীনকে খাওয়াও। লোকটি বললঃ আমি এর সামর্থ রাখি না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে এক ঝুড়ি খেজুর এলো। তখন তিনি বললেনঃ এটা নিয়ে যাও এবং সাদাকা করে দাও। সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! তা কি আমার পরিবার ব্যতীত অন্যকে দেব? সেই সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রান। মদিনার উভয় প্রান্তের মধ্যে আমার চেয়ে অভাবী আর কেউ নেই। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনভাবে হেসে দিলেন যে, তার পার্শ্বের দাঁত পর্যন্ত প্রকাশ পেল। তিনি বললেনঃ তবে তুমিই নিয়ে যাও।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩৪ | 5734 | ۵۷۳٤
পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭৩৪। সুলায়মান ইবনু আবদুর রহমান (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একজন গ্রাম্য লোক এসে বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আমাকে হিজরত সম্পর্কে কিছু বর্ণনা করুন। তিনি বললেনঃ আফসোস তোমার প্রতি হিজরত তো খুব কঠিন ব্যাপার। তোমার উট কি আছে? সে বললঃ হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কি এর যাকাত দিয়ে থাক? লোকটি বললঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তবে তুমি সমুদ্রের ঐ পাশ থেকেই আমল করে যাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ সাওয়াব একটুও কমাবেন না।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩৫ | 5735 | ۵۷۳۵
পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭৩৫। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওয়াহহাব (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ‘ওয়ায়লাকুম’ অথবা ‘ওয়ায়হাকুম’ (তোমাদের জন্য আফসোস) আমার পরে তোমরা আবার কাফির হয়ে যেয়ো না। যাতে তোমরা একে অন্যের গর্দান মারবে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩৬ | 5736 | ۵۷۳٦
পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭৩৬। আমর ইবনু আসিম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক গ্রাম্য লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে এসে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ কিয়ামত কবে সংঘটিত হবে? তিনি বললেনঃ তোমার জন্য আক্ষেপ তুমি এর জন্য কি প্রস্তুতি নিয়েছ? সে জবাব দিলঃ আমি তো তার জন্য কিছু প্রস্তুতি নেই নি, তবে আমি আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ভালবাসি। তিনি বললেনঃ তুমি যাকে ভালবাস, কিয়ামতের দিন তুমি তার সঙ্গেই থাকবে। তখন আমরা বললামঃ আমাদের জন্যও কি এরূপ? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। এতে আমরা সে দিন যারপরনাই আনন্দিত হলাম। আনাস (রাঃ) বলেন এ সময় মুগীরা (রাঃ) এর একটি যুবক ছেলে পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। সে ছিল আমার সমবয়সী নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি এ যুবকটি বেশী দিন বেঁচে থাকে, তবে সে বৃদ্ধ হওয়ার আগেই কিয়ামত সংঘটিত হতে পারে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩৭ | 5737 | ۵۷۳۷
পরিচ্ছদঃ ২৫২৮. মহামহিম আল্লাহর প্রতি ভালবাসার নিদর্শন। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ (আপনি বলে দিন) যদি তোমরা আল্লাহকে সত্যই ভালবেসে থাকো, তা’হলে তোমরা আমার অনুসরণ কর। তাহলে আল্লাহও তোমাদের ভালবাসবেন
৫৭৩৭। বিশর ইবনু খালিদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষ (দুনিয়াতে) যাকে ভালবাসবে (কিয়ামতে) সে তারই সঙ্গী হবে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩৮ | 5738 | ۵۷۳۸
পরিচ্ছদঃ ২৫২৮. মহামহিম আল্লাহর প্রতি ভালবাসার নিদর্শন। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ (আপনি বলে দিন) যদি তোমরা আল্লাহকে সত্যই ভালবেসে থাকো, তা’হলে তোমরা আমার অনুসরণ কর। তাহলে আল্লাহও তোমাদের ভালবাসবেন
৫৭৩৮। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেছেনঃ এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে জিজ্ঞাসা করলঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এমন ব্যাক্তি সম্পর্কে আপনি কি বলেন, যে ব্যাক্তি কোন দলকে ভালবাসে, কিন্তু (আমলের দিক দিয়ে) তাদের সমান হতে পারে নি। তিনি বললেনঃ মানুষ যাকে ভালবাসে সে তারই সঙ্গী হবে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩৯ | 5739 | ۵۷۳۹
পরিচ্ছদঃ ২৫২৮. মহামহিম আল্লাহর প্রতি ভালবাসার নিদর্শন। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ (আপনি বলে দিন) যদি তোমরা আল্লাহকে সত্যই ভালবেসে থাকো, তা’হলে তোমরা আমার অনুসরণ কর। তাহলে আল্লাহও তোমাদের ভালবাসবেন
৫৭৩৯। আবূ নুয়াইম (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হলোঃ কোন ব্যাক্তি একদলকে ভালবাসে কিন্তু (আমলে) তাদের সমকক্ষ হতে পারেনি। তিনি বললেনঃ মানুষ যাকে ভালবাসে, সে তারই সঙ্গী হবে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪০ | 5740 | ۵۷٤۰
পরিচ্ছদঃ ২৫২৮. মহামহিম আল্লাহর প্রতি ভালবাসার নিদর্শন। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ (আপনি বলে দিন) যদি তোমরা আল্লাহকে সত্যই ভালবেসে থাকো, তা’হলে তোমরা আমার অনুসরণ কর। তাহলে আল্লাহও তোমাদের ভালবাসবেন
৫৭৪০। আবদান (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! কিয়ামত কবে হবে? তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি এর জন্য কি যোগাড় করেছ? সে বললঃ আমি এর জন্য তো বেশী কিছু সালাত (নামায/নামাজ), সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ও সাদাকা আদায় করতে পারি নি। কিন্তু আমি আল্লাহ ও তার রাসুলকে ভালবাসি। তিনি বললেনঃ তুমি যাকে ভালবাস তারই সঙ্গী হবে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪১ | 5741 | ۵۷٤۱
পরিচ্ছদঃ ২৫২৯. কেউ কাউকে ‘দূর হও’ বলা
৫৭৪১। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবনু সাঈদকে বললেনঃ আমি তোমার জন্য একটি কথা গোপন রেখেছি, তুমি বলতো সেটা কি? সে বললঃ ‘দুখ’ তখন তিনি বললেনঃ দূর হও।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪২ | 5742 | ۵۷٤۲
পরিচ্ছদঃ ২৫২৯. কেউ কাউকে ‘দূর হও’ বলা
৫৭৪২। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন উমব ইবনু খাত্তাব (রাঃ) একদল সাহাবীসহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ইবনু সহিয়্যাদের নিকট গমন করেন। তারা সেখানে গিয়ে তাকে বনূ মাগালাহের দূর্গের পাশে ছেলেদের সাথে খেলায় রত গেলেন। তখন সে বালেগ হওয়ার কাছাকাছি বয়সে পৌছেছেন। সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমন টের পেল না যতক্ষন না রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাত দিয়ে তার পিঠে মারলেন। তারপর তিনি বললেনঃ তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে আমিই আল্লাহর রাসুল? তখন সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দিকে তাকিয়ে বললোঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি উম্মি সম্প্রদায়ের রাসূল। এরপর ইবনু সাইয়্যাদ বললোঃ আপনি কি সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, আমিই আল্লাহর রাসূল? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ধাক্কা মেরে বললেন, আমি আল্লাহ ও তার রাসুলদের উপর ঈমান রাখি।
তারপর আবার তিনি ইরনে সাইয়্যেদকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কী দেখতে পাও? সে বললো আমার নিকট সত্যবাদী ও মিথ্যাবাদী উভয়ই আসেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বিষয়টি তোমার উপর এলোমেলো করে দেয়া হয়েছে। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন আমি তোমার (পরীক্ষার) জন্য কিছু গোপন রাখছি। সে বলছেনঃ তা ‘দুখ’। তখন তিনি বললেনঃ দূর হও। তুমি কখনো তোমার ভাগ্যকে অতিক্রম করতে পারবে না। উমর (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনি কি তার ব্যাপারে আমাকে অনুমতি দেন যে, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ যদি সেই (দাজ্জালই) হয়ে থাকে, তবে তার উপর তোমাকে ক্ষমতা দেওয়া হবে না। আর এ যদি সে না হয়ে থাকে, তবে তাকে হত্যা করা তোমার জন্যই ভাল হবে না।
সালিম (রাঃ) বলেনঃ এরপর আমি আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, এ ঘটনার পর একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং উবাই ইবনু কাব (রাঃ) সেই খেজুর বাগানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন, যেখানে ইবনু সাইয়্যাদ ছিল। অবশেষে যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাগানে প্রবেশ করলেন, তখন তিনি খেজুরের কাণ্ডের আড়ালে আড়ালে চলতে লাগলেন। তার লক্ষ্য ছিল যে, ইবনু সাইয়্যাদ তাকে দেখার আগেই যেন তিনি তার কিছু কথাবার্তা শুনে নিতে পারেন। এ সময় ইবনু সাইয়্যাদ তার বিছানায় একখানা চাঁদর মুড়ি দিয়ে শুয়েছিল। আর তার চাদরের ভেতর থেকে বিড়বিড় শব্দ শোনা যাচ্ছিল।
ইতিমধ্যে ইবনু সাইয়্যাদের মা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখল যে, তিনি খেজুরের কাণ্ডের আড়ালে লুকিয়ে লুকিয়ে আসছেন। তখন তার মা তাকে ডেকে বললোঃ ওহে সাফ! এটা তার ডাক নাম ছিলো। এই যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তখন ইবনু সাইয়্যাদ (যে বিষয়ে মগ্ন ছিল তা থেকে) বিরত হন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি তার মা তাকে সতর্ক না করতো তবে তার (রহস্য) প্রকাশ পেয়ে যেতো।
রাবী সালিম আরও বলেনঃ আবদুল্লাহ (রাঃ) বর্ননা করেছেন যে, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আল্লাহ তা’আলার যথোপযুক্ত প্রশংসার পর দাজ্জালের উল্লেখ করে বললেনঃ আমি তোমাদের তার সম্পর্কে সতর্ক করে দিচ্ছি। প্রত্যেক নাবীই এর সম্পর্কে তার কওমকে সতর্ক করে গিয়েছেন। আমি এর সম্পর্কে এমন কথা বলছি যা অন্য কোন নাবী তার কাওমকে বলেন নি। তবে তোমরা জেনে রাখ সে কানা; কিন্তু আল্লাহ কানা নন।
পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪৩ | 5743 | ۵۷٤۳
পরিচ্ছদঃ ২৫৩০. কাউকে মারহাবা বলা। আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) ফাতেমা (রাঃ) কে বলেছেনঃ আমার মেয়ের জন্য ‘মারহাবা’। উম্মু হানী (রাঃ) বলেন, আমি একবার নাবী (সাঃ) এর নিকট এলাম। তিনি বললেনঃ উম্মু হানী ‘মারহাবা’।
৫৭৪৩। ইমরান ইবনু মায়সারা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবদুল কায়সের প্রতিনিধি দল নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলে তিনি বললেনঃ এই প্রতিনিধি দলের প্রতি ‘মারহাবা’ যারা লাঞ্চিত ও লজ্জিত অবস্থায় আসে নি। তারা বললঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমরা রাবিয়া কাওমের লোক। আমরা ও আপনার মধ্যখানে অবস্থান করছে ‘মুযার’ কাওম। এজন্য আমরা হারাম মাস ছাড়া আপনার খেদমতে পৌছতে পারি না। সুতরাং আপনি আমাদের এমন কিছু চুড়ান্ত বিধি নিষেধ বাতলিয়ে দেন যা অনুসরন করে আমরা জান্নাতে যেতে পারি এবং আমাদের পাচাতে যারা রয়েছে তাদের হেদায়েত দিতে পারি। তিনি বললেনঃ আমি চারটি (মেনে চলা) ও চারটি (হতে বিরত থাকার) নির্দেশ দিচ্ছি। তোমরা সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করবে, যাকাত দেবে। রামযান মাসের সিয়াম পালন করবে এবং গনীমতের মালের পঞ্চমাংশ দান করবে। আর কদুর খোলে, সবুজ রং করা কলসে, খেজুর মূলের পাত্রে এবং আলকাতরা মাখানো পাত্রে পান করবে না।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪৪ | 5744 | ۵۷٤٤
পরিচ্ছদঃ ২৫৩১. ক্বিয়ামাতের দিন মানুষকে তাদের পিতার নামে ডাকা হবে
৫৭৪৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (কিয়ামতের দিন) প্রতিজ্ঞা ভঙ্গকারীর জন্য একটি পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং বলা হবে যে, এ হল অমুকের পুত্র অমুকের নিদর্শন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪৫ | 5745 | ۵۷٤۵
পরিচ্ছদঃ ২৫৩১. ক্বিয়ামাতের দিন মানুষকে তাদের পিতার নামে ডাকা হবে
৫৭৪৫। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গকারীর জন্য কিয়ামত দিবসে একটা পতাকা স্থাপন করা হবে। আর বলা হবে যে, এটা অমুকের পুত্র অমুকের নিদর্শন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪৬ | 5746 | ۵۷٤٦
পরিচ্ছদঃ ২৫৩২. কেউ যেন না বলে, আমার আত্মা ‘খবীস’ হয়ে গেছে
৫৭৪৬। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! তোমাদের কেউ যেন একথা না বলে যে, আমার আত্না খবীস হয়ে গেছে। তবে একথা বলতে পার যে আমার আত্মা কলুষিত হয়ে গেছে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪৭ | 5747 | ۵۷٤۷
পরিচ্ছদঃ ২৫৩২. কেউ যেন না বলে, আমার আত্মা ‘খবীস’ হয়ে গেছে
৫৭৪৭। আবদান (রহঃ) … আবূ ইমামা ইবনু সাহল তার পিতা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! তোমাদের কেউ যেন একথা না বলে, আমার আত্মা খবীস হয়ে গেছে। বরং সে বলবেঃ আমার আত্মা কলুষিত হয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪৮ | 5748 | ۵۷٤۸
পরিচ্ছদঃ ২৫৩৩. যামানাকে গালি দেবে না
৫৭৪৮। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ বলেনঃ মানুষ যামানাকে গালি দেয়, অথচ আমিই যামানা, (এর নিয়ন্ত্রণের মালিক)। একমাত্র আমারই হাতে রাত ও দিনের পরিবর্তন হয়।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪৯ | 5749 | ۵۷٤۹
পরিচ্ছদঃ ২৫৩৩. যামানাকে গালি দেবে না
৫৭৪৯। আইয়্যাশ ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আংগুরকে ‘কারম’ বলো না। আর বলবে না বঞ্চিত যুগ। কারন আল্লাহ হলেন যুগ এর নিয়ন্তা।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫০ | 5750 | ۵۷۵۰
পরিচ্ছদঃ ২৫৩৪. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ প্রকৃত ‘কারম’ হলো মু’মিনের কলব। তিনি বলেছেনঃ প্রকৃত সম্বলহীন হলো সে, যে লোক ক্বিয়ামাতের দিন সম্বলহীন। যেমন (অন্যত্র) তাঁরই বাণীঃ প্রকৃত বাহাদুর হলো সে লোক, যে রাগের সময় নিজেকে সামলিয়ে রাখতে পারে। আরও যেমন তাঁরই বাণীঃ আল্লাহ একমাত্র বাদশাহ্। আবার তিনিই এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে, একমাত্র আল্লাহ তা’আলাই সার্বভৌমত্বের মালিক। এরপর বাদশাহদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আল্লাহর বাণীঃ “বাদশাহরা যখন কোন জনপদে প্রবেশ করে, তখন তারা তা ধ্বংস করে দেয়”
৫৭৫০। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ লোকেরা (আঙ্গুরকে) ‘করম’ বলে, কিন্তু আসলে করম হলো মুমিনের অন্তর।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫১ | 5751 | ۵۷۵۱
পরিচ্ছদঃ ২৫৩৫. কোন ব্যক্তির এ রকম কথা বলা আমার বাপ-মা আপনার প্রতি কুরবান। এ সম্পর্কে নবী (সাঃ) থেকে যুবায়র (রাঃ) এর একটি হাদিস আছে
৫৭৫১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আলী (রাঃ) বলেন, আমি সা’দ (রাঃ) ব্যতীত আর কারো সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একথা বলতে শুনি নাই যে, আমার মা-বাপ তোমার প্রতি কুরবান। আমি তাকে বলতে শুনেছিঃ হে সা’দ! তুমি তীর চালাও। আমার মা ও বাপ তোমার প্রতি কুরবান। আমার ধারনা হচ্ছে যে, একথা তিনি ওহুদের যুদ্ধে বলেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫২ | 5752 | ۵۷۵۲
পরিচ্ছদঃ ২৫৩৬. কোন ব্যক্তির এ কথা বলা যে, আল্লাহ আমাকে তোমার প্রতি কুরবান করুন। আবু বকর (রাঃ) নবী (সাঃ) কে বললেনঃ আমরা আমাদের পিতা ও মাতাদের আপনার প্রতি কুরবান করলাম
৫৭৫২। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে তিনি ও আবূ তালহা (রাঃ) (মদিনায়) আসছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সাফিয়্যা (রাঃ) তার উটের পেছনে বসাছিলেন। পথে এক জায়গায় উটের পা পিছলে যায় এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার স্ত্রী পড়ে যান। তখন আবূ তালহা (রাঃ) ও তার উট থেকে লাফ দিয়ে নামলেন এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন ইয়া নাবী আল্লাহ! আপনার কি কোন আঘাত লেগেছে? আল্লাহ আমাকে আপনার প্রতি কুরবান করুন। তিনি বললেনঃ না। তবে স্ত্রী লোকটির খবর নাও। তখন আবূ তালহা (রাঃ) তার কাপড় দিয়ে চেহারা ঢেকে তার দিকে অগ্রসর হলেন এবং তার উপরও একখানা কাপড় ফেলে দিলেন। তখন স্ত্রীলোকটি উঠে দাঁড়ালেন। এরপর আবূ তালহা (রাঃ) তাদের সাওদাটি উটের উপর কসে বেধে দিলেন। তারা উভয়ে সাওয়ার হলেন এবং সবাই আবার রওয়ানা হলেন। অবশেষে যখন তারা মদিনার নিকটে পৌছলেন, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতে লাগলেনঃ আমরা তাওবাকারী, ইবদিতকারী এবং একমাত্র স্বীয় প্রতিপালকের প্রশংসাকারী। তিনি মদিনায় প্রবেশ করা পর্যন্ত একথাগুলো বলছিলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫৩ | 5753 | ۵۷۵۳
পরিচ্ছদঃ ২৫৩৭. আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় নাম
৫৭৫৩। সাদাকা ইবনু ফাযল (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের একজনের একটি ছেলে জন্মগ্রহণ করল। সে তার নাম রাখল কাসেম। আমরা বললামঃ আমরা তোমাকে আবূল কাসেম ডাকবো না এবং সেরূপ মর্যদাও করবো না। তিনি একথা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানালেন। তিনি বললেন তোমার ছেলের নাম আবদুর রাহমান রেখে দাও।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫৪ | 5754 | ۵۷۵٤
পরিচ্ছদঃ ২৫৩৮. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার নামে নাম রাখতে পার, তবে আমার কুনিয়াত দিয়ে কারো কুনিয়াত (ডাক নাম) রেখো না। আনাস (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে এ হাদিসটি বর্ণনা করেছেন
৫৭৫৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমাদের এক ব্যাক্তির একটি ছেলে জন্মগ্রহণ করল। সে তার নাম রাখলো ‘কাসেম’। তখন সে বললঃ আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা না করে তাকে এ কুনিয়াতে ডাকবো না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা আমার নামে নাম রেখো, কিন্তু আমার কুনিয়াতে কেউ কুনিয়াত রেখো না।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫৫ | 5755 | ۵۷۵۵
পরিচ্ছদঃ ২৫৩৮. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার নামে নাম রাখতে পার, তবে আমার কুনিয়াত দিয়ে কারো কুনিয়াত (ডাক নাম) রেখো না। আনাস (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে এ হাদিসটি বর্ণনা করেছেন
৫৭৫৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আমার নামে নাম রেখো, কিন্তু আমার কুনিয়াতে কুনিয়াত রেখো না।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫৬ | 5756 | ۵۷۵٦
পরিচ্ছদঃ ২৫৩৮. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার নামে নাম রাখতে পার, তবে আমার কুনিয়াত দিয়ে কারো কুনিয়াত (ডাক নাম) রেখো না। আনাস (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে এ হাদিসটি বর্ণনা করেছেন
৫৭৫৬। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমাদের একজনের একটি ছেলে হলে সে তার নাম রাখলো ‘কাসেম’। তখন আমরা বললাম আমরা তোমাকে ‘আবূল কাসেম’ কুনিয়াতে ডাকবো না। আর এ দ্বারা তোমার চোখও শীতল করবো না। তখন সে ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে ঐ কথা উল্লেখ করলে তিনি বললেনঃ তোমার ছেলের নাম রাখ আবদুর রহমান।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫৭ | 5757 | ۵۷۵۷
পরিচ্ছদঃ ২৫৩৯. ‘হাযন’ নাম
৫৭৫৭। ইসহাক ইবনু নাসর (রহঃ) … ইবনু মুসাইয়্যাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তার পিতা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমার নাম কি? তিনি বললেনঃ হাযন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বরং তোমার নাম ‘সাহল’। তিনি বলেনঃ আমার পিতা আমার যে নাম রেখেছেন, তা অন্য কোন নাম দিয়ে আমি বদলাবো না। ইবনু মুসায়্যাব (রহঃ) বলেনঃ এরপর থেকে আমাদের বংশের মধ্যে কঠিনতাই চলে এসেছে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫৮ | 5758 | ۵۷۵۸
পরিচ্ছদঃ ২৫৪০. নাম বদলিয়ে পূর্বের নামের চাইতে উত্তম নাম রাখা
৫৭৫৮। সাঈদ ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) … সাহল (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, যখন মুনযির ইবনু আবূ উসায়দ জন্মগ্রহণ করলেন, তখন তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে নিয়ে আসা হল। তিনি তাকে নিজের উরুর উপর রাখলেন। আবূ উসায়দ (রাঃ) পাশেই বসা ছিলেন। এ সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সামনেই কোন জরুরী কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। ইত্যবসরে আবূ উসায়দ (রাঃ) কারো দ্বারা তার উরুর থেকে তাকে উঠায়ে নিয়ে গেলেন। পরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে কাজ থেকে অবসর হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন শিশুটি কোথায়? আবূ উসায়দ বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি তাকে ফেরৎ পাঠিয়ে দিয়েছি। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তার নাম কি? তিনি বললেনঃ অমুক। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বরং তার নাম মুনযির। সে দিন থেকে তার নাম রাখলেন মুনযির।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫৯ | 5759 | ۵۷۵۹
পরিচ্ছদঃ ২৫৪০. নাম বদলিয়ে পূর্বের নামের চাইতে উত্তম নাম রাখা
৫৭৫৯। সাদাকা ইবনু ফাযল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে যায়নাব (রাঃ) এর নাম ছিলো ‘বাররাহ’ (নেককার)। তখন কেউ বললেন এতে তিনি নিজের পবিত্রতা প্রকাশ করছেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নাম রাখলেন ‘যায়নাব’।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬০ | 5760 | ۵۷٦۰
পরিচ্ছদঃ ২৫৪০. নাম বদলিয়ে পূর্বের নামের চাইতে উত্তম নাম রাখা
৫৭৬০। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … সাঈদ ইবনু মূসাইয়্যাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। একবার তার দাদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে আসলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তোমার নাম কি? তিনি উত্তর দিলেন আমার নাম হাযন। তিনি বললেনঃ না বরং তোমার নাম “সাহল”। তিনি বললেনঃ আমার পিতা আমার যে নাম রেখে গিয়েছেন তা আমি বদলাতে চাই না। ইবনু মূসাইয়্যাব বলেন, ফলে এরপর থেকে আমাদের বংশে কঠিনতাই চসে আসছে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬১ | 5761 | ۵۷٦۱
পরিচ্ছদঃ ২৫৪১. নাবীদের (আঃ) নামে যারা নাম রাখেন। আনাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) ইব্রাহীম (রাঃ) কে চুমু দিয়েছেন অর্থাৎ তাঁর পুত্রকে।
৫৭৬১। ইবনু নুমায়র (রহঃ) … ইসমাঈল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ আপনি কি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পুত্র ইবরাহীম (রাঃ) কে দেখেছেন? তিনি বললেনঃ তিনি তো ছোট বেলায়ই মারা গিয়েছেন। যদি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরে কোন নাবী হওয়ার বিধান থাকত তবে তার পুত্র বেঁচে থাকতেন। কিন্ত তার পরে কোন নাবী হবেন না।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬২ | 5762 | ۵۷٦۲
পরিচ্ছদঃ ২৫৪১. নাবীদের (আঃ) নামে যারা নাম রাখেন। আনাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) ইব্রাহীম (রাঃ) কে চুমু দিয়েছেন অর্থাৎ তাঁর পুত্রকে।
৫৭৬২। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আদী ইবনু সাবিত (রাঃ) বলেন, আমি বারাআ (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, যখন ইবরাহীম (রাঃ) মারা যান তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ জান্নাতে তার জন্য ধাত্রী থাকবে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬৩ | 5763 | ۵۷٦۳
পরিচ্ছদঃ ২৫৪১. নাবীদের (আঃ) নামে যারা নাম রাখেন। আনাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) ইব্রাহীম (রাঃ) কে চুমু দিয়েছেন অর্থাৎ তাঁর পুত্রকে।
৫৭৬৩। আদম (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আমার নামে নাম রাখ। কিন্তু আমার কুনিয়াতে কারো কুনিয়াত রেখ না। কারণ আমিই কাসেম। আমি তোমাদের মধ্যে (আল্লাহর দেওয়া নিয়ামত) বণ্টন করি। আনাস (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬৪ | 5764 | ۵۷٦٤
পরিচ্ছদঃ ২৫৪১. নাবীদের (আঃ) নামে যারা নাম রাখেন। আনাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) ইব্রাহীম (রাঃ) কে চুমু দিয়েছেন অর্থাৎ তাঁর পুত্রকে।
৫৭৬৪। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আমার নামে নাম রাখ। কিন্তু আমার কুনিয়াতে কারো কুনিয়াত রেখো না। আর যে ব্যাক্তি স্বপ্নে আমাকে দেখেছে, সে অবশ্যই আমাকে দেখেছে। শয়তান আমার আাকৃতি ধারন করতে পারে না। আর যে ব্যাক্তি ইচ্ছা করে আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করে, সে যেন জাহান্নামেই তার বাসস্থান করে নেয়।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬৫ | 5765 | ۵۷٦۵
পরিচ্ছদঃ ২৫৪১. নাবীদের (আঃ) নামে যারা নাম রাখেন। আনাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) ইব্রাহীম (রাঃ) কে চুমু দিয়েছেন অর্থাৎ তাঁর পুত্রকে।
৫৭৬৫। মুহাম্মদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমার একটি ছেলে জন্মগ্রহন করলে আমি তাকে নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসলাম। তার নাম রেখে দিলেন ইবরাহীম। তারপর তিনি একটি খেজুর চিবিয়ে তার মুখে দিয়ে তার জন্য বরকতের দু’আ করলেন এবং তাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিলেন। রাবী বলেনঃ সে ছিল আবূ মূসা (রাঃ) এর বড় সন্তান।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬৬ | 5766 | ۵۷٦٦
পরিচ্ছদঃ ২৫৪১. নাবীদের (আঃ) নামে যারা নাম রাখেন। আনাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) ইব্রাহীম (রাঃ) কে চুমু দিয়েছেন অর্থাৎ তাঁর পুত্রকে।
৫৭৬৬। আবুল ওয়ালীদ (রহঃ) … যিয়াদ ইবনু ইলাকাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মুগীরা ইবনু শু‘বা (রাঃ) কে বলতে শুনেছিঃ যে দিন ইবরাহীম (রাঃ) মারা যান, সে দিন সূর্যগ্রহণ হয়েছিল।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬৭ | 5767 | ۵۷٦۷
পরিচ্ছদঃ ২৫৪২. ওয়ালীদ নাম রাখা
৫৭৬৭। আবূ নু‘আয়ম ফাযল ইবনু দুকায়ন (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) এর রুকু থেকে মাথা তুলে দু’আ করলেনঃ ইয়া আল্লাহ! তুমি ওয়ালীদ, সালাম ইবনু হিশাম, আইয়্যাশ ইবনুু আবূ রাবিয়া এবং মক্কার দুর্বল মুসলমানদের শত্রুর নির্যাতন থেকে নাজাত দাও। আর হে আল্লাহ! মুযার গোত্রকে শক্তভাবে পাকড়াও করো। হে আল্লাহ! তুমি তাদের উপর এমন দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দাও, যেমন দুর্ভিক্ষ ইউসুফ আলাইহিস সালাম এর যুগে এসেছিল।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬৮ | 5768 | ۵۷٦۸
পরিচ্ছদঃ ২৫৪৩. কারো সঙ্গীকে তার নামের কিছু অক্ষর কমিয়ে ডাকা। আবু হাযিম (রহঃ) বলেন, আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন যে, নবী (সাঃ) আমাকে “ইয়া আবা হিরিরিন” বলে ডাক দেন
৫৭৬৮। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আয়িশা! এই যে জিবরীল আলাইহিস সালাম তোমাকে সালাম বলেছেন। তিনি বললেনঃ তাঁর উপরও আল্লাহর শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক। এরপর তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো দেখতে পান, যা আমি দেখি না।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬৯ | 5769 | ۵۷٦۹
পরিচ্ছদঃ ২৫৪৩. কারো সঙ্গীকে তার নামের কিছু অক্ষর কমিয়ে ডাকা। আবু হাযিম (রহঃ) বলেন, আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন যে, নবী (সাঃ) আমাকে “ইয়া আবা হিরিরিন” বলে ডাক দেন
৫৭৬৯। ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার উম্মে সুলায়ম (রাঃ) সফরের সামগ্রীবাহী উটে সাওয়ার ছিলেন। আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গোলাম আরজাশা উটগুলোকে দ্রুত হাকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ ওহে আবূ আনজাশা। তুমি কাঁচপাত্রবাহী উটগুলো ধীরে ধীরে হাকিয়ে নিয়ে যাও।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭০ | 5770 | ۵۷۷۰
পরিচ্ছদঃ ২৫৪৪. কোন ব্যক্তির সন্তান জন্মানোর পূর্বেই সে শিশুর নাম দিয়ে তার ডাকনাম রাখা
৫৭৭০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবার চেয়ে বেশী সদাচারী ছিলেন। আমার একজন ভাই ছিল; তাকে ‘আবূ উমায়র’ বলে ডাকা হতো। আমার অনুমান যে, সে তখন মায়ের দুধ খেতো না। যখনই সে তার নিকট আসতো, তিনি বলতেনঃ হে আবূ উমায়র! তোমার নুগায়র কি করছে? সে নুগায়র পাখিটা নিয়ে খেলতো। আর প্রায়ই যখন সালাত (নামায/নামাজ)-এর সময় হতো, আর তিনি আমাদের ঘরে থাকতেন, তখন তার নীচে যে বিছানা থাকতো, সামান্য পানি ছিটিয়ে ঝেড়ে দেয়ার জন্য আমাদের নির্দেশ দিতেন। তারপর উনি সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য দাঁড়াতেন এবং আমরাও তার পেছনে দাঁড়াতাম। আর তিনি আমাদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭১ | 5771 | ۵۷۷۱
পরিচ্ছদঃ ২৫৪৫. কারো অন্য কুনিয়াত থাকা সত্ত্বেও তার কুনিয়াত “আবু তুরাব” রাখা
৫৭৭১। খালিদ ইবনু মাখলাদ (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আলী (রাঃ) এর নিকট তার নামগুলোর মধ্যে ‘আবূ তুরাব’ কুনিয়াত ছিলো সবচেয়ে বেশী প্রিয় এবং এ নামে ডাকলে তিনি খুব খুশী হতেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ই তাকে ‘আবূ তুরাব’ কুনিয়াতে ডেকেছিলেন। একদিন তিনি ফাতিমা (রাঃ) এর সঙ্গে রাগ করে বেরিয়ে এসে মসজিদের দেয়াল ঘেসে ঘুমিয়ে পড়লেন। এসময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তালাশ করছিলেন। এক ব্যাক্তি বললঃ তিনি তো ওখানে দেয়াল ঘেসে শুয়ে আছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কাছে গিয়ে তাকে এমন অবস্থায় পেলেন যে তার পিঠে ধূলাবালি লেগে আছে। তিনি তার পিঠ থেকে ধূলা ঝাড়তে লাগলেন এবং বলতে শুরু করলেনঃ হে আবূ তুরাব! উঠে বসো।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭২ | 5772 | ۵۷۷۲
পরিচ্ছদঃ ২৫৪৬. আল্লাহ তা’আলার নিকট সবচেয়ে ঘৃণিত নাম
৫৭৭২। আবূল ইয়ামন (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলার নিকট কিয়ামত দিবসে এ ব্যাক্তির নাম সব চাইতে ঘৃণিত, যে তার নাম ধারণ করেছে রাজাধিরাজ।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭৩ | 5773 | ۵۷۷۳
পরিচ্ছদঃ ২৫৪৬. আল্লাহ তা’আলার নিকট সবচেয়ে ঘৃণিত নাম
৫৭৭৩। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলার নিকট সর্বাধিক নিকৃষ্ট নামধারী অথবা বলেছেন, সব নামের মধ্যে ঘৃণিত নাম হল সে ব্যাক্তি, যে রাজাধিরাজ নাম ধারণ করেছে। সুফিয়ান বলেন যে, অন্যেরা এর ব্যখ্যা করেছেন, শাহান শাহ।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭৪ | 5774 | ۵۷۷٤
পরিচ্ছদঃ ২৫৪৭. মুশরিকের কুনিয়াত। মিসওয়ার (রাঃ) বলেন যে, আমি নাবী (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, কিন্তু যদি ইবনু আবূ ত্বালিব চায়
৫৭৭৪। আবূল ইয়ামান ও ইসমাঈল (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়দ (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি গাধার উপর সাওয়ার ছিলেন। তখন তার গায়ে একখানা ফাদাকী চাদর ছিল এবং তার পেছনে উসামা বসাছিলেন। তিনি বদরের যুদ্ধের পূর্বে সা’দ ইবনু উবাদাহ (রাঃ) এর শুশ্রুষা করার উদ্দেশ্যে হারিস ইবনু খাযরাজ গোত্র অভিমুখে রওয়ানা হচ্ছিলেন। তারা চলতে চলতে এক মজলিসের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। সেখানে আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালুল ছিল। এটা আবদুল্লাহ ইবনু উবাই এর (প্রকাশ্যে) ইসলাম গ্রহনের আগের ঘটনা। মজলিসটি ছিল মিশ্রিত। এতে ছিলেন মুসলমান মুশরিক, মূর্তিপূজক ও ইয়াহুদী। মুসলমানদের মধ্যে আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) ও ছিলেন।
সাওয়ারীর চলার কারনে যখন উড়ন্ত ধুলাবালি মজলিসকে ঢেকে ফেলেছিল, তখন ইবনু উবাই তার চাদর দিয়ে তার নাক ঢেকে নিয়ে বললঃ তোমরা আমাদের উপর ধূলি উড়িওনা। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের সালাম করলেন এবং সাওয়ারী থামিয়ে নামলেন। তারপর তিনি তাদের আল্লাহর দিকে দাওয়াত দিয়ে কুরআন পড়ে শোনালেন। তখন আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালুল তাকে বললঃ হে ব্যাক্তি! আপনি যা বলছেন যদি তা ঠিক হয়ে থাকে তবে তার চেয়ে উত্তম কথা আর কিছুই নেই। তবে আপনি আমাদের মজলিসসমূহে এসে আমাদের কষ্ট দিয়েন না। যে আপনার কাছে যায়, তাকেই আপনি উপদেশ দিবেন।
তখন আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) বললেন না। ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আমাদের মজলিস সমূহে আসবেন। আমরা আপনার এ বক্তব্য পছন্দ করি। তখন মজলিসের মুসলমান, মুশরিক ও ইয়াহুদীরা পরস্পর গালমন্দ করতে লাগল।
এমনকি তাদের মধ্যে হাঙ্গামা হওয়ার উপক্রম হল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের থামাতে লাগলেন অবশেষে তারা নীরব হল। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ সাওয়ারীর উপর সাওয়ার হয়ে রওয়ানা হয়ে গেলেন এবং সাদ ইবনু উবাদা (রাঃ) এর নিকট পৌছলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে সা’দ! আবূ হুবার অর্থাৎআবদুল্লাহ ইবনু উবাই আমাকে যা বলেছেনঃ তা কি তুমি শোননি? সে এমন এমন কথা বলেছে।
তখন সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) বললেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার পিতা আপনার প্রতি কুরবান আপনি তাকে ক্ষমা করে দিন এবং তার কথা ছেড়ে দিন। সেই সত্তার কসম! যিনি আপনার উপর কুরআন নাযিল করেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলার তরফ থেকে আপনার প্রতি হক এমন সময় নাযিল করেছেন, যখন এই শহরের অধিবাসীরা পরস্পর পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, তারা তাকে রাজ মুকুট পরাবে এবং (রাজকীয়) পাগড়ী তার মাথায় বাঁধবে। কিন্তু যখন আল্লাহ আপনাকে যে সত্য দিয়েছেন তা দিয়ে সেই সিদ্ধান্তকে নস্যাৎ করে দিলেন, তখন সে এতে রাগান্বিত হয়ে পড়েছে। এজন্যই সে আপনার সাথে এ ধরনের আচরণ করেছে যা আপনি প্রত্যক্ষ করলেন। তারপর তিনি তাকে ক্ষমা করে দিলেন, আর আল্লাহর নির্দেশানুযায়ী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণ তো এমনই মুশরিক ও কিতাবীদের ক্ষমা করে দিতেন এবং তাদের নির্যাতনে ধৈর্য ধারণ করতেন।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহর বানীঃ তোমাদের আগে যাদের কিতাব দেয়া হয়েছিল তোমরা তাদের থেকে নিশ্চয়ই আগের কথা শুনতে পাবে …… শেষ পর্যন্ত। আল্লাহ আরো বলেছেন কিতাবীরা অনেকেই কামনা করে……। তাই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর নির্দেশানুযায়ী তাদের ক্ষমা করতে থাকেন। অবশেষে তাকে তাদের সহিত জিহাদ করার অনুমতি দেওয়া হয়।
তারপর যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদর অভিযান চালালেন তখন এর মাধ্যমে আল্লাহ কাফির বীর পুরুষদের এবং কুরাইশদের সরদারদের মধ্যে যারা নিহত হওয়ার তাদের হত্যা করেন। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগন বিজয় বেশে গনীমত নিয়ে ফিরলেন। তাদের সাথে কাফিরদের অলেক বাহাদুর ও কুরাইশদের অনেক নেতাও বন্দী হয়ে আসে। সে সময় ইবনু উবাই ইবনু সালুল ও তার সঙ্গী মূর্তিপূজক মুশরিকরা বললঃ এ ব্যাপারে অর্থাৎ দ্বীন ইসলাম তো প্রবল হয়ে পড়ছে। সুতরাং এখন তোমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে ইসলামের বায়আত কর। তারপর তারা সবাই ইসলাম গ্রহণ করল।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭৫ | 5775 | ۵۷۷۵
পরিচ্ছদঃ ২৫৪৭. মুশরিকের কুনিয়াত। মিসওয়ার (রাঃ) বলেন যে, আমি নাবী (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, কিন্তু যদি ইবনু আবূ ত্বালিব চায়
৫৭৭৫। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আব্বাস ইবনু আদল মুত্তালিব (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কি আবূ তালিবের কোন উপকার করতে পেরেছেন? তিনি তো সর্বদা আপনার হিফাযত করতেন এবং আপনার জন্য অন্যের উপর রাগ করতেন। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি তো বর্তমানে জাহান্নামের হালকা স্তরে আছেন। যদি আমি না হতাম তাহলে তিনি জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকতেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭৬ | 5776 | ۵۷۷٦
পরিচ্ছদঃ ২৫৪৮. পরোক্ষ কথা বলে মিথ্যা এড়ানোর উপায়। ইসহাক বর্ণনা করেছেন, আমি আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছি। আবু তালহার একটি শিশুপুত্র মারা যায়। তিনি এসে (তার স্ত্রী কে) জিজ্ঞাসা করলেনঃ ছেলেটি কেমন আছে? উম্মে সুলায়ম (রাঃ) বললেনঃ সে শান্ত। আমি আশা করছি, সে আরামেই আছে। তিনি ধারনা করলেন যে, অবশ্য তিনি সত্য বলেছেন।
৫৭৭৬। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মহিলাদের সহ) এক সফরে ছিলেন। হুদী গায়ক হুদীগান গেয়ে যাচ্ছিল। তিনি তাকে নির্দেশ দিলেন, আফসোস তোমার প্রতি ওহে আনজাশা! তুমি কাচপাত্র তুল্য সাওয়ারীদের সাথে মৃদুকর।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭৭ | 5777 | ۵۷۷۷
পরিচ্ছদঃ ২৫৪৮. পরোক্ষ কথা বলে মিথ্যা এড়ানোর উপায়। ইসহাক বর্ণনা করেছেন, আমি আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছি। আবু তালহার একটি শিশুপুত্র মারা যায়। তিনি এসে (তার স্ত্রী কে) জিজ্ঞাসা করলেনঃ ছেলেটি কেমন আছে? উম্মে সুলায়ম (রাঃ) বললেনঃ সে শান্ত। আমি আশা করছি, সে আরামেই আছে। তিনি ধারনা করলেন যে, অবশ্য তিনি সত্য বলেছেন।
৫৭৭৭। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সফলে ছিলেন। তার আনজাশা নামে এক গোলাম ছিল। সে হুদী গান গেয়ে উটগুলো হাকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো। তিনি তাকে বললেনঃ হে আনজাশাা! তুমি ধীরে উট হাঁকাও, যেহেতু তুমি কাচপাত্র তুল্যদের (আরোহী) উট চালিয়ে যাচ্ছ। আবূ কিলাবা বর্ণনা করেন, কাঁচপাত্র সদৃশ শব্দ দ্বারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদের বুঝিয়েছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭৮ | 5778 | ۵۷۷۸
পরিচ্ছদঃ ২৫৪৮. পরোক্ষ কথা বলে মিথ্যা এড়ানোর উপায়। ইসহাক বর্ণনা করেছেন, আমি আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছি। আবু তালহার একটি শিশুপুত্র মারা যায়। তিনি এসে (তার স্ত্রী কে) জিজ্ঞাসা করলেনঃ ছেলেটি কেমন আছে? উম্মে সুলায়ম (রাঃ) বললেনঃ সে শান্ত। আমি আশা করছি, সে আরামেই আছে। তিনি ধারনা করলেন যে, অবশ্য তিনি সত্য বলেছেন।
৫৭৭৮। ইসহাক (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি হুদীগায়ক গোলাম ছিল। তাকে আনজাশা বলে ডাকা হতো। তার সুর ছিল মধুর। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ হে আনজাশা! তুমি নম্রভাবে হাঁকাও, যেন কাচপাত্রগুলো ভেঙ্গে না ফেল। কাতাদা (রহঃ) বলেনঃ তিনি কাঁচপাত্রগুলো শব্দ দ্বারা মহিলাদের বুঝিয়েছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭৯ | 5779 | ۵۷۷۹
পরিচ্ছদঃ ২৫৪৮. পরোক্ষ কথা বলে মিথ্যা এড়ানোর উপায়। ইসহাক বর্ণনা করেছেন, আমি আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছি। আবু তালহার একটি শিশুপুত্র মারা যায়। তিনি এসে (তার স্ত্রী কে) জিজ্ঞাসা করলেনঃ ছেলেটি কেমন আছে? উম্মে সুলায়ম (রাঃ) বললেনঃ সে শান্ত। আমি আশা করছি, সে আরামেই আছে। তিনি ধারনা করলেন যে, অবশ্য তিনি সত্য বলেছেন।
৫৭৭৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার মদিনাতে (ভয়ংকর আওয়াজ হলে) আতঙ্ক দেখা দিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ তালহা (রাঃ) এর একটি ঘোড়ায় সাওয়ার হয়ে এগিয়ে গেলেন এবং (ফিরে এসে) বললেন আমি তো কিছুই দেখতে পেলাম না। আমি এ ঘোড়াটিকে সমুদ্রের মত পেয়েছি।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮০ | 5780 | ۵۷۸۰
পরিচ্ছদঃ ২৫৪৯. কোন কিছু সম্পর্কে, তা অবাস্তব মনে করে বলা যে, এটা কোন কিছুই নয়
৫৭৮০। মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) বলেন, কয়েকজন লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গণকদের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ওটা কিছুই নয়। তারা আবার আরয করলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেন ওটা কিছু নয়। তারা আবার আরয করলো ইয়া রাসুলাল্লাহ! তারাতো কোন সময় এমন কথা বলে ফেলে, যা কাজে পরিনত হয়ে যায়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন কথাটি জ্বীন থেকে প্রাপ্ত। জ্বীনেরা তা (আসমানের ফিরিশতাদের থেকে) ছৌঁ মেরে নিয়ে এসে তাদের বন্ধু গণকদের কানে তুলে দেয়, যেভাবে তিনি তার বাচ্চাদের মুখে দানা তুলে দেয়। তারপর এ গণকরা এর সাথে আরও শতাধিক মিথ্যা কথা মিশিয়ে দেয়।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮১ | 5781 | ۵۷۸۱
পরিচ্ছদঃ ২৫৫০. আসমানের দিকে চোখ তোলা। মহান আল্লাহর বানীঃ “লোকেরা কি উষ্ট্রের প্রতি লক্ষ্য করে না যে, তা কিভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর তারা কি আসমানের দিকে তাকায় না যে, তা কিভাবে এত উচু করে রাখা হয়েছে” আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদিন নবী (সাঃ) আসমানের দিকে মাথা তোলেন
৫৭৮১। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেনঃ এরপর আমার প্রতি ওহী আসা বন্ধ হয়ে গেল। এ সময় আমি হেঁটে যাচ্ছিলাম। তখন আমি আসমানের দিক থেকে একটি শব্দ শুনে আকাশের দিকে চোখ তুললাম। তখন আকস্মিকভাবে ঐ ফিরিশতাকে আসমান ও যযীনের মাঝখানে একটি কুরসীর উপর উপবিষ্ট দেখতে পেলাম, যিনি হেরায় আমার নিকট এসেছিলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮২ | 5782 | ۵۷۸۲
পরিচ্ছদঃ ২৫৫০. আসমানের দিকে চোখ তোলা। মহান আল্লাহর বানীঃ “লোকেরা কি উষ্ট্রের প্রতি লক্ষ্য করে না যে, তা কিভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর তারা কি আসমানের দিকে তাকায় না যে, তা কিভাবে এত উচু করে রাখা হয়েছে” আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদিন নবী (সাঃ) আসমানের দিকে মাথা তোলেন
৫৭৮২। ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এক রাতে মায়মুনা (রাঃ) এর ঘরে অবস্থান করছিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তার গৃহে ছিলেন। যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অথবা কিয়দংশ বাকী ছিল তখন তিনি উঠে বসলেন এবং আসমানের দিকে তাকিয়ে পাঠ করলেনঃ নিশ্চয়ই আসমানসমুহের ও যমীনের সৃষ্টি করার মধ্যে এবং দিন রাতের পরিবরর্তনে জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮৩ | 5783 | ۵۷۸۳
পরিচ্ছদঃ ২৫৫১. (কোন কিছু তালাশ করার উদ্দেশ্যে) পানি ও কাদার মধ্যে লাঠি দিয়ে ঠোকা দেওয়া
৫৭৮৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার তিনি মদিনার কোন এক বাগানে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে একটা লাঠি ছিল। তিনি তা দিয়ে পানি ও কাদার মাঝে ঠোকা দিচ্ছিলেন। এমন সময় এক ব্যাক্তি এসে দরজা খোলার অনুমতি চাইলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তার জন্য খুলে দাও এবং তাকে জান্নাতের সংবাদ দাও। তখন আমি গিয়ে দেখলাম যে, তিনি আবূ বকর (রাঃ)। আমি তার জন্য দরজা খুলে দিলাম এবং জান্নাতের সংবাদ দিলাম। তারপর আরেক ব্যাক্তি দরজা খোলার অনুমতি চাইলেন। তিনি বললেনঃ খুলে দাও এবং তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও। তখন দেখলামঃ তিনি উমর (রাঃ)। আমি তাকে দরজা খুলে দিলাম এবং জান্নাতের সুসংবাদ জানালাম। আবার আরেক ব্যাক্তি দরজা খোলার অনুমতি চাইলেন। তখন তিনি হেলান দিয়েছিলেন। তিনি সোজা হয়ে বসে বললেনঃ খুলে দাও এবং তাকে (দুনিয়াতে) একটি কঠিন বিপদের সম্মুখীন হওয়ার মাধ্যমে জান্নাতবাসী হওয়ার সুসংবাদ দাও। আমি গিয়ে দেখি, তিনি উসমান (রাঃ) আমি তাকেও দরজা খুলে দিলাম এবং জান্নাতের শুভ সংবাদ দিলাম। আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা ভবিষ্যৎ বানী করেন, আমি তাও বর্ণনা করলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা আমার সহায়ক।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮৪ | 5784 | ۵۷۸٤
পরিচ্ছদঃ ২৫৫২. কারো হাতের কোন কিছু দিয়ে যমীনে ঠোকা মারা
৫৭৮৪। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আমরা এক জানাযায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সথে ছিলাম। তিনি একটা লাকড়ী দিয়ে যমীনে ঠোকা দিয়ে বললেনঃ তোমাদের কোন ব্যাক্তি এমন নয় যার ঠিকানা জান্নাতে অথবা জাহান্নামে ফয়সালা হয়ে যায়নি। লোকেরা জিজ্ঞাসা করলঃ তা হলে কি আমরা তার উপর নির্ভর করব না। তিনি বললেনঃ আমল করে যাও। কারন যাকে যে জন্য পয়দা করা হয়েছে, তা তার জন্য সহজ করে দেয়া হবে। (এরপর তিলাওয়াত করলেন) “যে ব্যাক্তি দান খয়রাত করবে, তাকওয়া অর্জন করবে …… শেষ পর্যন্ত”।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮৫ | 5785 | ۵۷۸۵
পরিচ্ছদঃ ২৫৫৩. বিস্ময়বোধে “আল্লাহু আকবার” অথবা “সুবহানাল্লাহ” বলা
৫৭৮৫। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে উঠে বললেনঃ সুবহানাল্লাহ! অদ্যকার রাতে কত যে ধন-ভাণ্ডার এবং কত যে বিপদ-আপদ নাযিল করা হয়েছে। কে আছ যে এ হুজরা বাসিনীদের অর্থাৎ তার বিবিদের জাগিয়ে দেবে? যাতে তারা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে। দুনিয়ার কত কাপড় পরিহিতা, আখিরাতে উলঙ্গ হবে! উমর (রাঃ) বর্ণনা করেন, আমি একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কি আপনার বিবিগণকে তালাক দিয়েছেন? তিনি বললেনঃ না। তখন আমি বললামঃ আল্লাহু আকবার।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮৬ | 5786 | ۵۷۸٦
পরিচ্ছদঃ ২৫৫৩. বিস্ময়বোধে “আল্লাহু আকবার” অথবা “সুবহানাল্লাহ” বলা
৫৭৮৬। আবূল ইয়ামান ও ইসমাঈল (রহঃ) … আদী ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী সাফিয়্যা (রাঃ) বর্ণনা করেন যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রামাযানের শেষ দশ দিনে মসজিদে ইতিকাফ থাকা অবস্থায় তিনি তার সাথে দেখা করতে গেলেন। তিনি রাতের প্রথম ভাগে কিছু সময় তার সঙ্গে কথেবার্তার পর ফিরে যাওয়ার জন্য দাঁড়ালেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে এগিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ালেন। অবশেষে যখন তিনি মসজিদেরই দরজার নিকট পৌছলেন, যা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী উম্মে সালামার ঘরের নিকটে অবস্থিত। তখন তাদের পাশ দিয়ে আনসারের দু’জন লোক চলে গেলে, তারা উভয়েই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাম দিল এবং নিজ পথে রওয়ানা হল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেনঃ ধীরে চল। তিনি সাফিয়্যা বিনত হুইয়াহ। তারা বললোঃ সুবহানাল্লাহ! ইয়া রাসুলাল্লাহ! তাদের উভয়ের মনে তা গুরুত্বপূর্ন মনে হল। তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই শয়তান মানুষের রক্তে চলাচল করে থাকে। তাই আমার আশংকা হলো যে, সম্ভবত সে তোমাদের অন্তরে সন্দেহের উদ্রেক করতে পারে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮৭ | 5787 | ۵۷۸۷
পরিচ্ছদঃ ২৫৫৪. ঢিল ছোঁড়া
৫৭৮৭। আদম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল মুযানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঢিল ছুড়তে নিষেধ করেছেন। আর বলেনঃ এ কোন শিকার মারতে পারবে না এবং শক্রকেও আহত করতে পারবে না বরং কারো চোখ ফুঁড়ে দিতে পারে আবার কারো দাত ভেংগে দিতে পারে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮৮ | 5788 | ۵۷۸۸
পরিচ্ছদঃ ২৫৫৫. হাঁচিদাতার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা
৫৭৮৮। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে দু’ব্যাক্তি হাঁচি দিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজনের জবাব দিলেন। অপরজনের জবাব দিলেন না। তাকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ এই বাক্তি আলহামদুলিল্লাহ বলেছে। আর ঐ ব্যাক্তি আলহামদুলিল্লাহ বলে নি। (তাই হাঁচির জবাব দেয়া হয় নি)।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮৯ | 5789 | ۵۷۸۹
পরিচ্ছদঃ ২৫৫৬. হাঁচিদাতা ‘আলহামদুলিল্লাহরর জবাব দেয়া
৫৭৮৯। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … বারা ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাতটি কাজের আদেশ দিয়েছেন এবং সাতটি কাজ থেকে নিষেধ করেছেন। রোগীর দেখাশোনা করতে, জানাযার সঙ্গে যেতে, হাঁচিদাতার জবাব দিতে, দাওয়াত গ্রহণ করতে, সালামের জবাব দিতে, মানুষের সাহায্য করতে এবং কসম পুরা করতে আমাদের আদেশ দিয়েছেন। আর সোনার আংটি অথবা বালা ব্যবহার করতে, সাধারণ রেশমী কাপড় পরতে, মিহিন রেশমী কাপড়, রেশমী যিন ব্যবহার করতে, কাসীই ব্যবহার করতে এবং রৌপ্য পাত্র ব্যবহার করতে আমাদের নিষেধ করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৯০ | 5790 | ۵۷۹۰
পরিচ্ছদঃ ২৫৫৭. কিভাবে হাঁচির দু’আ মুস্তাহাব, আর কিভাবে হাই তোলা মাকরূহ
৫৭৯০। আদম ইবনু আবূ আয়াস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা’আলা হাঁচি দেওয়া পছন্দ করেন, আর হাই তোলা অপছন্দ করেন। সুতরাং কেউ হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বললে, যারা তা শুনবে তাদের প্রত্যেকের তার জবাব দেওয়া ওয়াজিব হবে। আর হাঁই তোলা, তাতো শয়তানের তরফ থেকে হয়ে থাকে, তাই যথাসাধ্য তা রোধ করা উচিত। কারণ যখন কেউ মুখ তুলে হা করে তখন শয়তান তার প্রতি হাসে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৯১ | 5791 | ۵۷۹۱
পরিচ্ছদঃ ২৫৫৮. কেউ হাঁচি দিলে, কীভাবে জওয়াব দিতে হবে?
৫৭৯১। মালিক ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ হাঁচি দেয়, তখন সে যেন “আলহামুদুলিল্লাহ” বলে। আর তার শ্রোতা যেন এর জবাবে “ইয়ার হামুকাল্লাহ” বলে। আর যখন সে “ইয়ার হামুকাল্লাহ” বলবে তখন হাঁচিদাতা তাকে বলবেঃ “ইয়াহদিকুমুল্লাহ ওয়া ইয়ুসলিহু বালাকুম”।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৯২ | 5792 | ۵۷۹۲
পরিচ্ছদঃ ২৫৫৯. হাঁচি দাতা ‘আলহামদুলিল্লাহ’ না বললে তার জবাব দেওয়া যাবে না
৫৭৯২। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে দুই ব্যাক্তি হাঁচি দিলেন। তিনি একজনের হাচির জবাব দিলেন এবং অপর ব্যাক্তির জবাব দিলেন না। অপর ব্যাক্তিটি বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি তার হাঁচির জবাব দিলেন, কিন্তু আমার হাঁচির জবাব দিলেন না। তিনি বললেনঃ সে আলহামদুলিল্লাহ বলেছে, কিন্তু তুমি আলহামদুলিল্লাহ বলনি।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৯৩ | 5793 | ۵۷۹۳
পরিচ্ছদঃ ২৫৬০. যদি কেউ হাই তুলে, সে যেন নিজের হাত মুখে রাখে
৫৭৯৩। আসিম ইবনু আলী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা হাঁচি দেওয়া পছন্দ করেন আর হাই তোলা অপছন্দ করেন। যদি তোমাদের কেউ হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বলে তবে প্রত্যেক মুসলমান শ্রোতার তার জবাবে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলা ওয়াজিব। আর হাই তোলা শয়তানের তরফ থেকে হয়ে থাকে। সুতরাং তোমাদের কারো হাই উঠলে সে যেন তা যথাসাধ্য রোধ করে। কারণ কেউ হাই তোললে শয়তান তার প্রতি হাসে।