বুখারি হাদিস নং ৫৬০১-৫৭০০

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০১ | 5601 | ۵٦۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৪৬৮. মু’মিনদের পারস্পরিক সহযোগিতা
৫৬০১। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ মূসা (আশআরী) (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিন মুমিনের জন্য ইমরাতের ন্যায়, যার এক অংশ অন্য অংশকে মজবুত করে রাখে। এরপর তিনি (হাতের) আঙ্গুলগুলো (আরেক হাতের) আঙ্গুল (এর ফাকে) ঢুকালেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় এক ব্যাক্তি কিছু প্রশ্ন করার জন্য কিংবা কোন প্রয়োজন পূরণের জন্য এল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দিকে ফিরে তাকালেন এবং বললেনঃ তোমরা তার জন্য (কিছু দেওয়ার) সুপারিশ করো। এতে তোমাদের সাওয়াব দেওয়া হবে। আল্লাহ তার নাবীর আবেদন অনুযায়ী যা ইচ্ছা তা করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০২ | 5602 | ۵٦۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৬৯. আল্লাহ তা’আলার বানীঃ যে ব্যক্তি ভাল কাজের সুপারিশ করবে, সে ঐ কাজের সাওয়াবের একটা অংশ পাবে …… ক্ষমতাবান পর্যন্ত। كِفْلٌ অর্থ অংশ। আবু মুসা (রাঃ) বলেন, কিফলাইন শব্দের অর্থ হলো, দিগুন সাওয়াব।
৫৬০২। মুহাম্মদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কোন ভিখারী অথবা অভাবগ্রস্ত লোক আসলে তিনি বলতেনঃ তোমরা সুপারিশ করো, তাহলে তোমরা সাওয়াব পাবে। অবশ্য আল্লাহ তাআলা তার রাসূলের দু’আ অনুযায়ী যা ইচ্ছা তা দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০৩ | 5603 | ۵٦۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৭০. নাবী (সাঃ) অশালীন ছিলেন না, আর ইচ্ছে করে অশালীন উক্তি করতেন না
৫৬০৩। হাফস ইবনু উমর ও কুতায়বা (রহঃ) … মাসরুক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) এর নিকট এমন সময় গেলাম, যখন তিনি মুআবিয়া (রাঃ) এর সন্মুখে কুফায় আগমন করেন। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা উল্লেখ করে বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বভাবগত অশালীন ছিলেন না আর ইচ্ছাকৃতভাবেও অশালীন উক্তি করতেন না। তিনি আরও বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক উত্তম ঐ ব্যাক্তি, যে স্বভাবে সর্বোত্তম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০৪ | 5604 | ۵٦۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৭০. নাবী (সাঃ) অশালীন ছিলেন না, আর ইচ্ছে করে অশালীন উক্তি করতেন না
৫৬০৪। মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার একদল ইয়াহুদী নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললোঃ আস-সামু আলাইকুম। (আপনার উপর মরণ আসুক)। আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ তোমাদের উপরই এবং তোমাদের উপর আল্লাহর লানত ও গযব পতিত হোক। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আয়িশা! তুমি একটু থামো। নম্রতা অবলম্বন করা তোমার কর্তব্য। দৃঢ় ব্যবহার ও অশালীন আচরণ পরিহার করো। আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ তারা যা বলেছে, তা কি আপনি শোনেন নি? তিনি বললেনঃ আমি যা উত্তর দিলাম, তুমি তা শোননি? আমি তাদের এ কথাটি তাদের উপর ফিরিয়ে দিয়েছি। সুতরাং আমার কথাই তাদের ব্যাপারে কবুল হবে আর আমার ব্যাপারে তাদের কথা কবুল করে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০৫ | 5605 | ۵٦۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৪৭০. নাবী (সাঃ) অশালীন ছিলেন না, আর ইচ্ছে করে অশালীন উক্তি করতেন না
৫৬০৫। আসবাগ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গালি-গালাজকারী, অশালীন ও অভিশাপদাতা ছিলেন না। তিনি আমাদের কারো উপর নারায হলে, কেবল এতটুকু বলতেন তার কি হলো। তার কপাল ধুলাময় হোক।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০৬ | 5606 | ۵٦۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৪৭০. নাবী (সাঃ) অশালীন ছিলেন না, আর ইচ্ছে করে অশালীন উক্তি করতেন না
৫৬০৬। আমর ইবনু ঈসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট প্রবেশের অনুমতি চাইল। তিনি লোকটিকে দেখে বললেনঃ সে সমাজের নিকৃষ্ট লোক এবং সমাজের দুষ্ট সন্তান। এরপর সে যখন এসে বসলো, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সামনে আনন্দ প্রকাশ করেন এবং উদারতার সাথে মেলামেশা করেন। লোকটি চলে গেলে আয়িশা (রাঃ) তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! যখন আপনি লোকটিকে দেখলেন তখন তার সম্পর্কে এরূপ বললেন, পরে তার সাথে আপনি সহাস্যে ও উদার প্রাণে সাক্ষাৎ করলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আয়িশা। তুমি কখন আমাকে অশালীন রূপে পেয়েছ? কিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট মর্যাদার দিক দিয়ে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট সেই ব্যাক্তি, যার বদ স্বভাবের কারনে মানুষ তাকে পরিত্যাগ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০৭ | 5607 | ۵٦۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৪৭১. সচ্চরিত্রতা, দানশীলতা সম্পর্কে ও কৃপনতা ঘৃণ্য হওয়া সম্পর্কে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, নাবী (সাঃ) মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে দানশীল ছিলেন। আর রমযান মাসে তিনি আরও অধিক দানশীল হতেন। আবু যার (রাঃ) বর্ণনা করেন, যখন তাঁর নিকট নাবী (সাঃ) এর আবির্ভাবের খবর আসল তখন তিনি তাঁর ভাইকে বললেনঃ তুমি এই মাক্কা উপত্যকার দিকে সফর কর এবং তাঁর কথা শুনে এসো। তাঁর ভাই ফিরে এসে বললেনঃ আমি তাঁকে উত্তম চরিত্রে ভূষিত হওয়ার নির্দেশ দিতে দেখেছি।
৫৬০৭। আমর ইবনু আওন (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর, সবার চাইতে অধিক দানশীল এবং লোকদের মধ্যে সর্বাধিক সাহসী ছিলেন। একদা রাতের বেলায় (একটি বিরাট আওয়াজ শুনে) মদিনাবাসীরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। তাই লোকেরা সেই শব্দের দিকে রওনা হয়। তখন তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সামনা সামনি পেলেন তিনি সে আওয়াজের দিকে লোকদের আগেই বের হবে গিয়েছিলেন। তিনি বলতে লাগলেনঃ তোমরা ঘাবড়িওনা তোমরা ঘাবড়িওনা, (আমি দেখে এসেছি, কিছুই নেই)। এ সময় তিনি আবূ তালহা (রাঃ) এর জ্বীন বিহীন ঘোড়ার উপর সওয়ার ছিলেন। আর তার কাঁধে একখানা তলোয়ার ঝুলাছিল। এরপর তিনি বললেনঃ অবশ্য এ ঘোড়াটিকে আমি সমুদ্রের মত (দ্রুতগামী) পেয়েছি। অথবা বললেনঃ এ ঘোড়াটিতো একটি সমুদ্র।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০৮ | 5608 | ۵٦۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৪৭১. সচ্চরিত্রতা, দানশীলতা সম্পর্কে ও কৃপনতা ঘৃণ্য হওয়া সম্পর্কে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, নাবী (সাঃ) মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে দানশীল ছিলেন। আর রমযান মাসে তিনি আরও অধিক দানশীল হতেন। আবু যার (রাঃ) বর্ণনা করেন, যখন তাঁর নিকট নাবী (সাঃ) এর আবির্ভাবের খবর আসল তখন তিনি তাঁর ভাইকে বললেনঃ তুমি এই মাক্কা উপত্যকার দিকে সফর কর এবং তাঁর কথা শুনে এসো। তাঁর ভাই ফিরে এসে বললেনঃ আমি তাঁকে উত্তম চরিত্রে ভূষিত হওয়ার নির্দেশ দিতে দেখেছি।
৫৬০৮। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এমন কোন জিনিসই চাওয়া হয় নি, যার উত্তরে তিনি ‘না’ বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০৯ | 5609 | ۵٦۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৪৭১. সচ্চরিত্রতা, দানশীলতা সম্পর্কে ও কৃপনতা ঘৃণ্য হওয়া সম্পর্কে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, নাবী (সাঃ) মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে দানশীল ছিলেন। আর রমযান মাসে তিনি আরও অধিক দানশীল হতেন। আবু যার (রাঃ) বর্ণনা করেন, যখন তাঁর নিকট নাবী (সাঃ) এর আবির্ভাবের খবর আসল তখন তিনি তাঁর ভাইকে বললেনঃ তুমি এই মাক্কা উপত্যকার দিকে সফর কর এবং তাঁর কথা শুনে এসো। তাঁর ভাই ফিরে এসে বললেনঃ আমি তাঁকে উত্তম চরিত্রে ভূষিত হওয়ার নির্দেশ দিতে দেখেছি।
৫৬০৯। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … মাসরুক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার আমরা আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) এর নিকট বসাছিলাম। তিনি আমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা করছিলেন। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বভাবত অশালীন ছিলেন না এবং তিনি ইচ্ছা করেও কাউকে অশালীন কথা বলতেন না। তিনি বলতেনঃ তোমাদের মধ্যে যার স্বভাব-চরিত্র ভাল সেই তোমাদের মধ্যে সব চাইতে উত্তম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১০ | 5610 | ۵٦۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৪৭১. সচ্চরিত্রতা, দানশীলতা সম্পর্কে ও কৃপনতা ঘৃণ্য হওয়া সম্পর্কে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, নাবী (সাঃ) মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে দানশীল ছিলেন। আর রমযান মাসে তিনি আরও অধিক দানশীল হতেন। আবু যার (রাঃ) বর্ণনা করেন, যখন তাঁর নিকট নাবী (সাঃ) এর আবির্ভাবের খবর আসল তখন তিনি তাঁর ভাইকে বললেনঃ তুমি এই মাক্কা উপত্যকার দিকে সফর কর এবং তাঁর কথা শুনে এসো। তাঁর ভাই ফিরে এসে বললেনঃ আমি তাঁকে উত্তম চরিত্রে ভূষিত হওয়ার নির্দেশ দিতে দেখেছি।
৫৬১০। সাঈদ ইবনু আবূ মারয়াম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে একখানা বুরদাহ নিয়ে আসলেন। সাহল (রাঃ) লোকজনকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ আপনারা কি জানেন বুরদাহ কী? তারা বললেনঃ তা চাদর। সাহল (রাঃ) বললেনঃ এটি এমন চাদর যা ঝালরসহ বোনা হয়েছে। এরপর সেই মহিলা আরজ করলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি আপনাকে এটি পরিধানের জন্য দিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাদরখানি এমনভাবে গ্রহন করলেন, যেন তার এটির দরকার ছিল। এরপর তিনি এটি পরিধান করলেন। এরপর সাহাবীদের মধ্যে থেকে এক ব্যাক্তি সেটি তার দেহে দেখে ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটা কতই না সুন্দর! আপনি এটি আমাকে দিয়ে দিন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ (দিয়ে দেব)।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে চলে গেলেন, অন্যান্য সাহাবীরা তাকে দোষারোপ করে বললেনঃ তুমি ভাল কাজ করোনি। যখন তুমি দেখলে যে, তিনি চাদরখানা এমনভাবে গ্রহণ করেছেন যেন এটি তার প্রয়োজন ছিল। এরপরও তুমি সেটা চেয়ে বসলে। অথচ তুমি অবশ্যই জানো যে, তার কাছে যখনই কোন জিনিস চাওয়া হয়, তখন তিনি কাউকে কখনো বিমুখ করেন না। তখন সেই ব্যাক্তি বললোঃ যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটি পরিধান করেছেন, তখন তার বরকত হাসিল করার আশায়ই আমি একাজ করেছি, যেন আমি এ চাদরটাকে আমার কাফন বানাতে পারি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১১ | 5611 | ۵٦۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৪৭১. সচ্চরিত্রতা, দানশীলতা সম্পর্কে ও কৃপনতা ঘৃণ্য হওয়া সম্পর্কে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, নাবী (সাঃ) মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে দানশীল ছিলেন। আর রমযান মাসে তিনি আরও অধিক দানশীল হতেন। আবু যার (রাঃ) বর্ণনা করেন, যখন তাঁর নিকট নাবী (সাঃ) এর আবির্ভাবের খবর আসল তখন তিনি তাঁর ভাইকে বললেনঃ তুমি এই মাক্কা উপত্যকার দিকে সফর কর এবং তাঁর কথা শুনে এসো। তাঁর ভাই ফিরে এসে বললেনঃ আমি তাঁকে উত্তম চরিত্রে ভূষিত হওয়ার নির্দেশ দিতে দেখেছি।
৫৬১১। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কিয়ামতের সময় ঘনিয়ে আসলে, ইল্‌ম কমে যাবে, অন্তরে কৃপণতা ঢেলে দেয়া হবে এবং হারজের আধিক্য হবে। সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেনঃ হারজ কি, ইয়া রাসুলাল্লাহ? তিনি বললেনঃ হত্যা, হত্যা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১২ | 5612 | ۵٦۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৭১. সচ্চরিত্রতা, দানশীলতা সম্পর্কে ও কৃপনতা ঘৃণ্য হওয়া সম্পর্কে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, নাবী (সাঃ) মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে দানশীল ছিলেন। আর রমযান মাসে তিনি আরও অধিক দানশীল হতেন। আবু যার (রাঃ) বর্ণনা করেন, যখন তাঁর নিকট নাবী (সাঃ) এর আবির্ভাবের খবর আসল তখন তিনি তাঁর ভাইকে বললেনঃ তুমি এই মাক্কা উপত্যকার দিকে সফর কর এবং তাঁর কথা শুনে এসো। তাঁর ভাই ফিরে এসে বললেনঃ আমি তাঁকে উত্তম চরিত্রে ভূষিত হওয়ার নির্দেশ দিতে দেখেছি।
৫৬১২। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি দশ বছর পর্যন্ত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমত করেছি। কিন্তু তিনি কখনো আমার প্রতি উঃ শব্দ বলেন নি। একথা জিজ্ঞাসা করেন নি তুমি এ কাজ কেন করলে এবং কেন করলে না?

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১৩ | 5613 | ۵٦۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৭২. মানুষ নিজ পরিবারে কী ভাবে চলবে
৫৬১৩। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলামঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ গৃহে কী কাজে রত থাকতেন? তিনি বললেনঃ সাধারন গৃহ-কর্মে ব্যস্ত থাকতেন। আর যখন সালাত (নামায/নামাজ) এর সময় হয়ে যেতো, তখন উঠে সালাতে চলে যেতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১৪ | 5614 | ۵٦۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৩. ভালবাসা আল্লাহ তা‘আলার তরফ থেকে আসে
৫৬১৪। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন আল্লাহ তা’আলা কোন বান্দাকে ভালাবাসেন, তখন তিনি জিবরীল (আলাইহিস সালাম) কে ডেকে বলেন, আল্লাহ তা’আলা অমুক বান্দাকে ভালবাসেন তুমিও তাকে ভালবাসবে। তখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাকে ভালবাসেন এবং তিনি আসমানবাসীদের নিকট ঘোষণা করে দেন যে, আল্লাহ তা’আলা অমুককে ভালবাসেন, অতএব তোমরাও তাকে ভালবাসবে। তখন আসমানবাসীরাও তাকে ভালবাসতে শুরু করে। তারপর আল্লাহ তা’আলার তরফ থেকে যমীন বাসীদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা সৃষ্টি করা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১৫ | 5615 | ۵٦۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৪. আল্লাহ তা‘আলার উদ্দেশ্যে ভালবাসা
৫৬১৫। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি ঈমানের স্বাদ পাবে না, যতক্ষন না সে কোন মামুষকে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালবাসবে, আর যতক্ষণ না সে যে কুফরী থেকে আল্লাহ তাকে উদ্ধার করেছেন, তার দিকে ফিরে যাওয়ার চাইতে আগুন নিক্ষিপ্ত হওয়াকে সর্বাধিক প্রিয় মনে করবে এবং যতক্ষণ না আল্লাহ ও তাঁর রাসুল তার কাছে অন্য সব কিছুর চেয়ে অধিক প্রিয় হবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১৬ | 5616 | ۵٦۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৫. আল্লাহ তা’আলার বানীঃ হে ঈমানদারগণ! তোমরা একদল অপর দলের প্রতি উপহাস করবে না। সম্ভবতঃ উপহাস্য দল, উপহাসকারীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে …… আর তারাই যালিম।
৫৬১৬। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু যামআ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের বায়ু নির্গমনে কাউকে হাসতে নিষেধ করেছেন। তিনি আরও বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কেন তার স্ত্রীকে ষাড়কে পিটানোর মত প্রহার করবে? পরে হয়ত, সে আবার তার সাথে গলাগালিও করবে। সাওরী ওহায়ব আবূ মুআবিয়া (রহঃ) হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন, ‘ষাড় পিটানোর স্থলে’ ‘দাসকে বেত্রাঘাত করার মত’।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১৭ | 5617 | ۵٦۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৫. আল্লাহ তা’আলার বানীঃ হে ঈমানদারগণ! তোমরা একদল অপর দলের প্রতি উপহাস করবে না। সম্ভবতঃ উপহাস্য দল, উপহাসকারীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে …… আর তারাই যালিম।
৫৬১৭। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিনায় (খুতবা দান কালে) জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমরা কি জানো আজ কোন দিন? সকলেই বললেনঃ আল্লাহ ও তার রাসুলই অধিক জ্ঞাত আছেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আজ এটি হারাম (সম্মানিত) দিন। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমরা জানো, এটি কোন শহর? সবাই জবাব দিলেনঃ আল্লাহ ও তার রাসুলই বেশী জানেন। তখন তিনি বললেনঃ এটি একটি হারাম (সম্মানিত) শহর। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমরা কি জানো, এটা কোন মাস? তারা বললেনঃ আল্লাহ ও তার রাসূলই বেশী অবগত। তখন তিনি বললেনঃ এটা একটা হারাম (সম্মানিত) মাস। তারপর তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা তোমাদের (একে অন্যের) জান মাল ও ইজ্জত-আবরুকে হারাম করেছেন, যেমন হারাম তোমাদের এ দিনটি তোমাদের এ মাস ও তোমাদের এ শহর।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১৮ | 5618 | ۵٦۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৬. গালি ও অভিশাপ দেয়া নিষিদ্ধ
৫৬১৮। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমানের গালি দেয়া ফাসিকী (কবীরা গুনাহ) এবং একে অন্যের সাথে মারামারি করা কুফরী। শুবা (রহঃ) সূত্রে গুনদারও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১৯ | 5619 | ۵٦۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৬. গালি ও অভিশাপ দেয়া নিষিদ্ধ
৫৬১৯। আবূ মা’মার (রহঃ) … আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একজন অপর জনকে ফাসিক বলে যেন গালি না দেয় এবং একজন আর একজনকে যেন কাফির বলে অপবাদ না দেয়। কেননা যদি সে তা না হয়ে থাকে তবে তা তার উপরই পতিত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২০ | 5620 | ۵٦۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৬. গালি ও অভিশাপ দেয়া নিষিদ্ধ
৫৬২০। মুহাম্মদ ইবনু সিনান (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অশালীন অভিশাপদাতা ও গালিদাতা ছিলেন না। তিনি কাউকে তিরস্কার করার সময় শুধু বলতেনঃ তার কি হল? তার কপাল ধূলাময় হোক।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২১ | 5621 | ۵٦۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৬. গালি ও অভিশাপ দেয়া নিষিদ্ধ
৫৬২১। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … সাবিত ইবনু যাহহাক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি গাছের নীচে বাইআত গ্রহণকারীদের অন্যতম সাহাবী ছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি ইসলাম ধর্ম ছাড়া অন্য কোন ধর্মের উপর কসম খাবে সে ঐ ধর্মেরই শামিল হয়ে যাবে, আর মানুষ যে জিনিসের মালিক নয়, এমন জিনিসের নযর আদায় করা তার উপর ওয়াজিব নয়। আর কোন ব্যাক্তি দুনিয়াতে যে জিনিস দ্বারা আত্নহত্যা করবে, কিয়ামতের দিন সে জিনিস দিয়েই তাকে আযাব দেওয়া হবে। কোন ব্যাক্তি কোন মুমিনের উপর অভিশাপ দিলে, তা তাকে হত্যা করারই শামিল হবে। আর কোন মুমিনকে কাফির বলে অপবাদ দিলে, তাও তাকে হত্যা করারই মত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২২ | 5622 | ۵٦۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৬. গালি ও অভিশাপ দেয়া নিষিদ্ধ
৫৬২২। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … সুলায়মান ইবনু সুরাদ (রাঃ) নামক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ দু’জন লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে একে অন্যকে গালি দিচ্ছিল। তাদের একজন এত ক্রুদ্ধ হয়েছিল যে, তার চেহারা ফুলে বিগড়ে গিয়েছিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি অবশ্যই একটই কালেমা জানি। যদি সে ঐ কালেমাটি পড়তো, তা হলে তার ক্রোধ চড়ে যেত। তখন এক ব্যাক্তি তার নিকট গিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঐ কথাটি তাকে জানালো। আর বললো যে তুমি শয়তান থেকে পানাহ চাও। তখন সে বললোঃ আমার মধ্যে কি কোন রোগ দেখা যাচ্ছে? আমি কি পাগল? তুমি চলে যাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২৩ | 5623 | ۵٦۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৬. গালি ও অভিশাপ দেয়া নিষিদ্ধ
৫৬২৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের “লায়লাতুল কদর” সম্বন্ধে জানানোর জন্য বেরিয়ে আসলেন। তখন দু’জন মুসলমান ঝগড়া করছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি ‘লায়লাতুল কদর’ সম্পর্কে তোমাদের খবর দিতে বেরিয়ে এসেছিলাম। এ সময় অমুক অমুক পরস্পর ঝগড়া করছিল। এজন্য ঐ খবরের ‘ইল্‌ম’ আমার থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। এটা হয়ত তোমাদের জন্য কল্যাণকরই হবে। অতএব তোমরা তা রমযানের শেষ দশকের নবম, সপ্তম ও পঞ্চম রাতে তালাশ করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২৪ | 5624 | ۵٦۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৬. গালি ও অভিশাপ দেয়া নিষিদ্ধ
৫৬২৪। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ তার উপর একখানা চাদর ও তার গোলামের গায়ে একখানা চাদর দেখে বললামঃ যদি আমি ঐ চাদরটি নিতেন ও পরিধান করতেন, তাহলে আপনার এক জোড়া হইয়ে যেত আর গোলামকে অন্য কাপড় দিয়ে দিতেন। তখন আবূ যার (রাঃ) বলেনঃ একদিন আমার ও আরেক ব্যাক্তির মধ্যে কথাবার্তা হচ্ছিল। তার মা ছিল জনৈক অনারব মহিলা। আমি তার মা তুলে গালি দিলাম। তখন লোকটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তা বলল। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কি অমুককে গালি দিয়েছ? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তুমি কি তার মা তুলে গালি দিয়েছ? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই তুমিতো এমন ব্যাক্তি যার মধ্যে জাহেলী যুগের আচরন বিদ্যমান। আমি বললামঃ এখনো? এই বৃদ্ধ বয়সেও? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ! তারা তো তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাআলা ওদের তোমাদের অধীন করেছেন। সুতরাং আল্লাহ তায়ালা যার ভাইকে তার অধীন করে দেন, সে নিজে যা খায়, তাকেও যেন তা খাওয়ায়। সে নিজে যা পরে, তাকেও যেন তা পরায়। আর তার উপর যেন এমন কোন কাজের চাপ না দেয়, যা তার শক্তির বাইরে। আর যদি তার উপর এমন কঠিন কোনো চাপ দিতেই হয় তাহলে সে নিজেও যেন তাকে সাহায্য করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২৫ | 5625 | ۵٦۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৭. মানুষের গুনাগুন উল্লেখ করা জায়িয। যেমন লোকে কাউকে বলে ‘লম্বা’ অথবা ‘খাটো’। আর নাবী (সাঃ) কাউকে ‘যুল্ইয়াদাইন’ (লম্বা হাত বিশিষ্ট) বলেছেন। তবে কারো বদনাম অথবা অপমান করার উদ্দেশ্যে (জায়িয) নয়
৫৬২৫। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে যোহরের সালাত (নামায/নামাজ) দু’রাকআত আদায় করে সালাম ফিরালেন। তারপর সিজাদার জায়গার সামনে রাখা একটি কাঠের দিকে আগ্রসর হয়ে তার উপর তার এক হাত রাখলেন। সেদিন লোকদের মাঝে আবূ বকর, উমর (রাঃ)-ও হাযির ছিলেন। তারা তার সঙ্গে কথা বলতে ভয় পেলেন। কিন্তু তাড়াহুড়া করে (কিছু) লোক বেয়িয়ে গিয়ে বলতে লাগলঃ সালাত (নামায/নামাজ) খাট করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন ছিল, যাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘যুলইয়াদাইন’ (দুই হাতাওয়ালা অর্থাৎ লম্বা হাতা ওয়ালা) বলে ডাকতেন, সে বললঃ ইয়া নাবী আল্লাহ! আপনি কি ভুল করেছেন, না সালাত (নামায/নামাজ) ছোট করা হয়েছে? তিনি বললেনঃ আমি ভুলে যাইনি এবং (সালাত (নামায/নামাজ) ছোটও করা হয়নি। তারা বললেনঃ বরং আপনই ভুলে গেছেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তখন তিনি বললেনঃ ‘যুলইয়াদাইন’ ঠিকই বলেছে। তারপর তিনি উঠে দাঁড়িয়ে দু’রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন ও সালাম ফিরালেন। এরপর ‘তাকবীর’ বলে আগের সিজদার মত অথবা তার চেয়ে দীর্ঘ সিজদা করলেন। তারপর আবার মাথা তুললেন এবং তাকবীর বললেন এবং আগের সিজদার ন্যায় অথবা তার থেকে দীর্ঘ সিজদা করলেন। এরপর মাথা উঠালেন এবং তাকবীর বললেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২৬ | 5626 | ۵٦۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৮. গীবত করা। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহর বাণীঃ তমাদের কেউ যেন অন্যের গীবত না করে …… অতি দয়ালু পর্যন্ত।
৫৬২৬। ইয়াহইয়া (রহঃ) … ইবনু আব্বাস থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই এ দু’জন কবরবাসীকে আযাব দেওয়া হচ্ছে। তবে বড় কোন গুনাহের কারণে কবরে তাদের আযাব দেয়া হচ্ছে না। এই কবরবাসী পেশাব করার সময় সতর ঢাকতোনা। আর ঐ কবরবাসী গীবত (পরনিন্দা) করে বেড়াত। এরপর তিনি খেজুরের একটি কাঁচা ডাল আনিয়ে সেটি দু’টুকরো করে এক টুকরো এ কবরটির উপর এবং এক টুকরো ঐ কবরটির উপর গেড়ে দিলেন। তারপর বললেনঃ এ ডালের টুকরো দুটি না শুকানো পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাদের আযাব কমিয়ে দিবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২৭ | 5627 | ۵٦۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৯. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আনসারদের ঘরগুলো উত্তম
৫৬২৭। কাবীসা (রহঃ) … উসাইদ সায়েদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আনসারদের ঘরগুলোর মধ্যে নাজ্জার গোত্রের ঘরগুলোই উত্তম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২৮ | 5628 | ۵٦۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৪৮০. ফাসাদ ও সন্দেহ সৃষ্টিকারীদের গীবত করা জায়েয
৫৬২৮। সাদাকা ইবনু ফাযল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসার অনুমতি চাইলে তিনি বললেনঃ তাকে অনুমতি দাও। সে বংশের নিকৃষ্ট ভাই অথবা বললেনঃ সে গোত্রের নিকৃষ্ট সন্তান। লোকটি ভিতরে আসলে তিনি তার সাথে নম্রভাবে কথাবার্তা বললেন। তখন আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ? আপনি এ ব্যাক্তি সম্পর্কে যা বলার তা বলেছেন। পরে আপনি আবার তার সাথে নম্রতার সাথে কথাবার্তা বললেন। তখন তিনি বললেনঃ হে আয়িশা! নিশ্চয়ই সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যাক্তি সে-ই যার অশালীনতা থেকে বেঁচে থাকার জন্য মানুষ তার সংশ্রব ত্যাগ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২৯ | 5629 | ۵٦۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৪৮১. চোগলখোরী কবীরা গুনাহ্
৫৬২৯। ইবনু সালাম … ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনার কোন বাগানের বাইরে গেলেন। তখন তিনি এমন দু’জন লোকেরা আওয়াজ শুনলেন, যাদের কবরে আযাব দেওয়া হচ্ছিল। তিনি বললেনঃ তাদের দু’জনকে আযাব দেয়া হচ্ছে। তবে বেশী গুনাহের দরুন আযাব দেওয়া হচ্ছে না। আর তা হল কবীরা গুনাহ। এদের একজন পেশাবের সময় সতর ঢাকতো না। আর অপর জন চোগলখোরী করে বেড়াতো। তারপর তিনি একটা কাঁচা ডাল আনিয়ে তা ভেঙ্গে দু’ টুকরো করে, এ কবরে এক টুকরো আর ঐ কবরে এক টুকরো গেড়ে দিলেন এবং বললেনঃ দু’টি যতক্ষণ পর্যন্ত না শুকাবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের আযাব হালকা করে দেওয়া হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩০ | 5630 | ۵٦۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৪৮২. চোগলখোরী নিন্দনীয় গুনাহ্। আল্লাহর বাণীঃ অধিক কসমকারী, লাঞ্চিত ব্যক্তি পশ্চাতে নিন্দাকারী এবং চোগলখোরী করে বেড়ায় এমন ব্যক্তি। প্রত্যেক চোগলখোর ও প্রত্যেক পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ নিন্দাকারীদের ধংস অনিবার্য
৫৬৩০। আবূ নুয়াঈম (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, চোগলখোর কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩১ | 5631 | ۵٦۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৩. মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা মিথ্যা কথা পরিহার কর।
৫৬৩১। আহমদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি মিথ্যা কথা এবং সে অনুযায়ী কাজ করা আর মুর্খতা পরিত্যাগ করলো না আল্লাহর নিকট (সিয়ামের নামে) তার পানাহার ত্যাগের কোন প্রয়োজন নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩২ | 5632 | ۵٦۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৪. দু’মুখো ব্যক্তি সম্পর্কে
৫৬৩২। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন তুমি আল্লাহর নিকট ঐ ব্যাক্তিকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট পাবে যে দুমুখো। সে এদের সামনে একরূপ নিয়ে আসতো আর ওদের কাছে অন্য রূপে ধরা দিত।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩৩ | 5633 | ۵٦۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৫. আপন সঙ্গীকে তার সম্পর্কে অপরের উক্তি অবহিত করা
৫৬৩৩। মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (গনীমতের মাল) ভাগ করলেন। তখন আনসারদের মধ্য থেকে এক (মুনাফিক) ব্যাক্তি বললঃ আল্লাহর কসম! এ কাজে মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর সন্তুষ্টি চাননি। তখন আমি এসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথার খবর দিলাম। এতে তার চেহারার রং বদলে গেল। তিনি বললেনঃ আল্লাহ মূসা (আলাইহিস সালাম) এর উপর রহম করুন। তাকে এর চাইতে অনেক বেশী কষ্ট দেওয়া হয়েছে তবুও তিনি সবর করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩৪ | 5634 | ۵٦۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৬. অপছন্দনীয় প্রশংসা
৫৬৩৪। মুহাম্মদ ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজনকে আরেক জনের প্রাশংসা করতে শুনলেন এবং সে তার প্রসংসায় অতিরঞ্জন করছিল। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা তো লোকটিকে মেরে ফেললে অথবা বললেনঃ লোকটির মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিলে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩৫ | 5635 | ۵٦۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৬. অপছন্দনীয় প্রশংসা
৫৬৩৫। আদম (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে এক ব্যাক্তির আলোচনা আসল। তখন একজন তার খুব প্রশাংসা করলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আফসোস তোমার প্রতি! তুমিতো তোমার সাথীর গলা কেটে ফেললে। এ কথাটি তিনি কয়েক বার বললেন। (তারপর তিনি বললেনঃ) যদি তোমাদের কারো প্রশংসা করতেই হয়, তবে সে যেন বলে, আমি তার সম্পর্কে এমন, এমন ধারণা করি, যদি তার এরূপ হওয়ার কাথা মনে করা হয়। তার প্রকৃত হিসাব গ্রহনকারীতো হলেন আল্লাহ আর আল্লাহর মুকাবিলায় কেউ কারো পবিত্রতা বর্ণনা করবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩৬ | 5636 | ۵٦۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৭. নিজের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কারো প্রশংসা করা। সা’দ (রাঃ) বলেন, আমি নাবী (সাঃ) কে যমিনের উপর বিচরণকারী কোন লোকের ব্যাপারে এ কথা বলতে শুনিনি যে, সে জান্নাতী এক ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু সালাম (রাঃ) ব্যতীত
৫৬৩৬। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইযার সম্পর্কে কঠোর শাস্তির কথা উল্লেখ করলেন, তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আমার লুঙ্গিরও একদিক দিয়ে ঝুলে পড়ে। তিনি বললেনঃ তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত নও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩৭ | 5637 | ۵٦۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৮. মহান আল্লাহর বানীঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়বিচার ও সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দান করেন … গ্রহন পর্যন্ত। এবং আল্লাহর বানীঃ তোমাদের সীমা অতিক্রম করার পরিনতি তোমাদেরই উপর বার্তাবে “যার উপর যুলম করা হয় নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন” আর মুসলিম অথবা কাফিরের কু-কর্ম প্রচার থেকে বিরত থাকা
৫৬৩৭। হুমায়দী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এত এত দিন এমন অবস্থায় অতিবাহিত করছিলেন যে তার খেয়াল হতো যেন তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয়েছেন, অথচ তিনি মিলিত হননি। আয়িশা (রাঃ) বলেন, এরপর তিনি আমাকে বললেনঃ হে আয়িশা! আমি যে ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলাম, সে বিষয়ে আল্লাহ আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন। (আমি স্বপে দেখলাম) আমার নিকট দুই ব্যাক্তি এলো। একজন বসলো আমার পায়ের কাছে এবং আরেক জন শিয়রে। পায়ের কাছে বসা বাক্তি শিয়রে বসা ব্যাক্তিকে জিজ্ঞাসা করলঃ এ ব্যাক্তির অবস্থা কি? সে বললঃ তাকে যাদু করা হয়েছে। সে আবার জিজ্ঞাসা করললঃ তাকে কে যাদু করেছে? সে বললঃ লাবীদ ইবনু আসাম। সে আবার জিজ্ঞাসা করলঃ কিসের মধ্যে? সে বললো নর খেজুর গাছের খোলার ভিতবে তাঁর চিরুনীর এক টুকরা ও আচড়ানো চুল পুরে দিয়ে ‘যারওয়ান’ কুপের মধ্যে একটি পাথরের নীচে রেখেছে।

এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সেখানে) গিয়ে দেখে বললেনঃ এ সেই কূপ যা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। সেখানের খেজুর গাছের মাথাগুলো যেন শয়তানের মাথা এবং সে কুপের পানি যেন মেহদী নিংড়ানো পানি। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশে তা কুপ থেকে বের করা হলো। আয়িশা (রাঃ) বলেন, তখন আমি আরয করলামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কেন অর্থাৎ এটি প্রকাশ করলেন না? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তো আমাকে শিফা দান করেছেন, আর আমি মানুষের নিকট কারো কুকর্ম ছাড়ানো পছন্দ করি না। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ লাবীদ ইবনু আসাম ছিল ইয়াহুদীদের মিত্র বনূ যুরায়কের একব্যাক্তি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩৮ | 5638 | ۵٦۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৯. একে অন্যকে হিংসা করা এবং পরস্পর বিরোধিতা করা নিষিদ্ধ। মহান আল্লাহর বাণীঃ আমি হিংসুকের হিংসার অনিষ্ট থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি
৫৬৩৮। বিশর ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ধারণা করা থেকে বিরত থাকো। কারো প্রতি ধারণা পোষন করা সবচেয়ে বড় মিথ্যা ব্যাপার। তোমরা দোষ অন্বেষন করো না, গোয়েন্দাগিরী করো না, গরস্পর হিংসা করো না একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষভাব পোষন করো না এবং পরস্পর বিরোধে লিপ্ত হয়ো না। বরং তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে থেকেো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩৯ | 5639 | ۵٦۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৯. একে অন্যকে হিংসা করা এবং পরস্পর বিরোধিতা করা নিষিদ্ধ। মহান আল্লাহর বাণীঃ আমি হিংসুকের হিংসার অনিষ্ট থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি
৫৬৩৯। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষভাব পোষন করো না, পরস্পর হিংসা করো না পরস্পর বিরুদ্ধাচরন করো না। তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে থেকেো। কোন মুসলমানের জন্য তিন দিনের বেশী তার ভাইকে পরিত্যাগ করে থাকা জায়িয নয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪০ | 5640 | ۵٦٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৪৯০. মহান আল্লাহর বাণীঃ হে মুমিনগণ! তোমরা বেশী অনুমান করা থেকে বিরত থাক।। আয়াতের শেষ পর্যন্ত
৫৬৪০। আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা অনুমান থেকে বেঁচে থেকেো। কারণ অনুমান বড় মিথ্যা ব্যাপার। আর কারো দোষ অনুসন্ধান করো না, গোয়েন্দাগিরী করো না, একে অন্যকে ধোঁকা দিও না, আর পরস্পর হিংসা করো না, একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষভাব পোষণ করো না এবং পরস্পর বিরুদ্ধাচরন করো না। বরং সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে থেকো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪১ | 5641 | ۵٦٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৪৯১. কি ধরনের ধারণা করা যেতে পারে
৫৬৪১। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অমুক অমুক ব্যাক্তি আমাদের দ্বীন সম্পর্কে কিছু জানে বলে আমি ধারণা করি না। রাবী লায়স বর্ণনা করেন যে, এ দু’ব্যাক্তি মুনাফিক ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪২ | 5642 | ۵٦٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৯১. কি ধরনের ধারণা করা যেতে পারে
৫৬৪২। ইয়াহইয়া ইবনু যুকায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লায়স আমাদের কাছে উক্ত হাদীস বর্ননা করেন। (এতে রয়েছে) আয়িশা (রাঃ) বলেন একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এসে বললেনঃ হে আয়িশা! অমুক অমুক ব্যাক্তি আমাদের দ্বীন, যার উপর আমরা রয়েছি, সে সম্পর্কে কিছু জানে বলে আমি ধারণা করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪৩ | 5643 | ۵٦٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৯২. মু’মিনের নিজের দোষ গোপন রাখা
৫৬৪৩। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে আমার সকল উম্মত মাফ পাবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই ধৃষ্টতা যে, কোন ব্যাক্তি রাতে অপরাধ করল যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে ভোর হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এমন এমন কর্ম করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত অতিবাহিত করল যে, আল্লাহ তার কর্ম গোপন রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর পর্দা খুলে ফেলল।

পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪৪ | 5644 | ۵٦٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৯২. মু’মিনের নিজের দোষ গোপন রাখা
৫৬৪৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … সাফওয়ান ইবনু মুহরিয (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি ইবনু উমর (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলঃ আপনি ‘নাজওয়া’ (কিয়ামতের দিন আল্লাহ ও তাঁর মুমিন বান্দার মধ্যে গোপন আলোচনা) সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কি বলতে শুনেছেন? তিনি বললেন, তিনি বলেছেনঃ তোমাদের এক ব্যাক্তি তার রবের এমন নিকটবর্তী হবে যে তিনি তার উপর তাঁর নিজস্ব পর্দা ঢেলে দিয়ে দু’বার জিজ্ঞাসা করবেনঃ তুমি অমুক অমুক কাজ করেছিলে? সে বলবেঃ হ্যাঁ। আবার তিনি জিজ্ঞাসা করবেনঃ তুমি এমন এমন কাজ করেছিলে? সে বলবে হ্যাঁ। এভাবে তিনি তার স্বীকরোক্তি নিবেন। এরপর বলবেন আমি দুনিয়াতে তোমর এগুলো ঢেকে রেখেছিলাম। আজ আমি তোমার এসব গুনাহ মাফ করে দিচ্ছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪৫ | 5645 | ۵٦٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৩. অহংকার। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, (আল্লাহর বানী) عطفه অর্থাৎ তার ঘাড়। ثَانِيَ عطفه অর্থাৎ নিজে নিজে মনে অহমিকা পোষণকারী
৫৬৪৫। মুহাম্মাদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … হারিসা ইবনু ওহাব খুযায়ী (রাঃ) থেকে বর্ণিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি কি তোমাদের জান্নাতীদের সম্পর্কে অবহিত করবো না? (তারা হলেন) ঐ সকল লোক যারা অসহায় এবং যাদের হীন মনে করা হয়। তারা যদি আল্লাহর নামে কসম খেয়ে বসে, তাহলে তা তিনি নিশ্চয়ই পুরা করে দেন। আমি কি তোমাদের জাহান্নামীদের সম্পর্কে অবহিত করবো না? তারা হলোঃ রুঢ় স্বভাব, কঠিন হৃদয় ও দাম্ভিক।

মুহাম্মদ ইবনু ঈসা (রহঃ) সুত্রে আনাস ইবনু ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মদিনাবাসীদের কোন এক দাসীও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাত ধরে যেখানে ইচ্ছা নিয়ে যেত। আর তিনিও তার সাথে ঢলে যেতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪৬ | 5646 | ۵٦٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৪. সম্পর্ক ত্যাগ এবং এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ) এর বাণীঃ কোন লোকের জন্য তার ভাইয়ের সাথে তিনদিনের বেশি কথাবার্তা পরিত্যাগ করা জায়িয নহে
৫৬৪৬। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আওফ ইবনু মালিক ইবনু তুফায়ল (রাঃ) আয়িশা (রাঃ) এর বৈপিত্রেয় ভ্রাতুষ্পূত্র থেকে বর্ণিত। আয়িশা (রাঃ) কে অবহিত করা হল যে, তাঁর কোন বিক্রির কিংবা দান করার ব্যাপারে আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র বলেছেনঃ আল্লাহর কসম! আয়িশা (রাঃ) অবশ্যই বিরত থাকবেন, নতুবা আমি নিশ্চয়ই তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করবো। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ সত্যই কি তিনি এ কথা বলেছেন? তারা বললেন হ্যাঁ। তখন আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি আমার উপর মানত (শপথ) করে নিলাম যে আমি ইবনু যুবায়রের সাথে আর কখনও কথা বলবো না। যখন এ বর্জনকাল দীর্ঘ হল, তখন ইবনু যুবায়র (রাঃ) আয়িশা (রাঃ) এর নিকট সুপারিশ পাঠালেন। তখন তিনি বললেন না! আল্লাহর কসম! এ ব্যাপারে আমি কখনো কোন সুপারিশ গ্রহণ করব না। আর আমার মানতও ভঙ্গ করব না। এভাবে যখন ব্যপারটা ইবনু যুবায়র (রাঃ) এর জন্য দীর্ঘ হতে লাগলো, তখন তিনি যহুরা গোত্রের দু’ব্যাক্তি মিসওয়ার ইবনু মাখরামা ও আবদুর রহমান ইবনু আসওয়াদ ইবনু আবদ ইয়াগুসের সাথে আলোচনা করলেন।

তিনি তাদের দু’জনকে বললেনঃ আমি তোমাদের আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি যে, তোমরা দু’জন (যে প্রকারে হোক) আমাকে আয়িশা (রাঃ) এর কাছে নিয়ে যাও। কারন আমার সাথে তার বিচ্ছিন্ন থাকার মানত জায়িয নয়। তখন মিসওয়ার (রাঃ) ও আবদুর (রাঃ) উভয়ে চাদর দিয়ে ইবনু যুবায়রকে জড়িয়ে নিয়ে এলেন এবং উভয়ে আয়িশা (রাঃ) এর কাছে অনুমতি চেয়ে বললেনঃ আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওবাবারাকাতুহু আমরা কি ভেতরে আসতে পারি? আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ আপনারা ভেতরে আসুন। তারা বললেনঃ আমরা সবাই? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তোমরা সবাই প্রবেশ কর। তিনি জানতেন না যে তাদের সঙ্গে ইবনু যুবায়র রয়েছেন। তাই যখন তাঁরা ভেতরে প্রবেশ করলেন তখন ইবনু যুবায়র পর্দার ভেতর ডুকে গেলেন এবং আয়িশা (রাঃ) কে জড়িয়ে ধরে, তাকে আল্লাহর কসম দিতে লাগলেন এবং কাঁদতে আরম্ভ করলেন।

তখন মিসওয়ার (রাঃ) ও আবদুর রহমান (রাঃ)-ও তাকে আল্লাহর কসম দিতে আরম্ভ করলেন। তখন আয়োশা (রাঃ) ইবনু যুবায়ের (রাঃ) এর সাথে কথা বলেন এবং তার ওযর কবুল করে নেন। আর তাঁরা বলতে লাগলেনঃ আপনি তো নিশ্চয়ই জানেন যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্ক বর্জন করতে নিষেধ করেছেন এবং বলেছেনঃ কোন মুসলমানের জন্য তার ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সম্পর্ক ছিন্ন রাখা হারাম।

যখন তারা আয়িশা (রাঃ) কে বেশী বেশী বুঝাতে চাপ দিতে লাগলেন, তখন তিনিও তাদের বুঝাতে ও কাঁদতে লাগলেন এবং বললেনঃ আমি ‘মানত’ করে ফেলেছি। আর মানত তো শক্ত ব্যাপার। কিন্তু তারা একাধারে চাপ দিতেই থাকলেন অবশেষে তিনি ইবনু যুবায়র (রাঃ) এর সাথে কথা বলে ফেললেন এবং তার নযরের জন্য (কাফফারা স্বরুপ) চল্লিশ জন গোলাম আযাদ করে দিলেন। এর পরে, যখনই তিনি তার মানতের স্মরণ করতেন তখন তিনি এত বেশী কাঁদতেন যে, তার চোখের পানিতে তার ওড়না ভিজে যেত।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪৭ | 5647 | ۵٦٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৪. সম্পর্ক ত্যাগ এবং এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ) এর বাণীঃ কোন লোকের জন্য তার ভাইয়ের সাথে তিনদিনের বেশি কথাবার্তা পরিত্যাগ করা জায়িয নহে
৫৬৪৭। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা পরস্পর বিদ্বেষ ভাবাপন্ন হয়ো না, হিংসা করো না এবং একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন থেকেো না। আর তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ও পরস্পর ভাই-ভাই হয়ে থেকো। কোন মুসলমানের জন্য জায়েয নয় যে, সে তার ভাই থেকে তিন দিনের বেশী সম্পর্ক ছিন্ন করে থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪৮ | 5648 | ۵٦٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৪. সম্পর্ক ত্যাগ এবং এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ) এর বাণীঃ কোন লোকের জন্য তার ভাইয়ের সাথে তিনদিনের বেশি কথাবার্তা পরিত্যাগ করা জায়িয নহে
৫৬৪৮। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ আইউব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তির জন্য হালাল নয় যে সে তার ভাই এর সাথে তিন দিনের বেশী এমনভাবে সম্পর্ক ছিন্ন রাখবে যে, দু’জনে সাক্ষাৎ হলেও একজন এদিকে আর অপর জন সে দিকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তাদের মধ্যে যে সর্ব প্রথম সালামের সূচনা করবে, সেই উত্তম ব্যাক্তি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪৯ | 5649 | ۵٦٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৫. যে আল্লাহর নাফরমানী করে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েয। কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) যখন (তাবুক যুদ্ধের সময়) নাবী (সাঃ) এর পেছনে থেকে গিয়েছিলেন, তখনকার কথা উল্লেখ করে বলেন যে, নাবী (সাঃ) মুসলিমদেরকে আমাদের সাথে কথাবার্তা বলা নিষেধ করে দিয়েছিলেন। তিনি পঞ্চাশ দিনের কথাও উল্লেখ করেন।
৫৬৪৯। মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন (একদিন) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি তোমার রাগ ও খুশী উভয়ই বুঝতে পারি। আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ আপনি তা কি ভাবে বুঝে নেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ? তিনি বললেনঃ যখন তুমি খুশী থাক, তখন তুমি বলোঃ হ্যাঁ, মুহাম্মদের রবের কসম! আর যখন তুমি রাগান্বিত হও, তখন তুমি বলে থাকোঃ না, ইবরাহীমের রবের কসম! আয়িশা (রাঃ) বললেন, আমি বললাম হ্যাঁ। আমিতো শুধু আপনার নামটি বর্জন করি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫০ | 5650 | ۵٦۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৬. আপন লোকের সাথে প্রতিদিন সাক্ষাৎ করবে অথবা সকালে-বিকালে
৫৬৫০। ইবরাহীম ইবনু মূসা ও লায়স (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমার বুঝ হওয়ার পর থেকেই আমি আমার বাবা-মাকে ইসলামের অন্তর্ভুক্তই পেয়েছি। আমাদের উপর এমন কোন দিন অতিবাহিত হতো না, যে দিনের উভয় প্রান্তে সকালে ও বিকেলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট আসতেন না। একদা ঠিক দুপুর বেলায় আমরা আবূ বকর (রাঃ) এর কক্ষে বসা ছিলাম। একজন বলে উঠলেনঃ এই যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! তিনি এমন সময় এসেছেন, যে সময় তিনি আমাদের এখানে আসেন না। আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ তাকে কোন গুরত্বপূর্ণ বিষয়ই এ মুহূর্তে নিয়ে এসেছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমাকে মক্কা থেকে বের হয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫১ | 5651 | ۵٦۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৯. ভ্রাতৃত্বের ও প্রতিশ্রুতির বন্ধন স্থাপন। আবু জুহাই.ফা.হ্ (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) সালমান ও আবু দারদার মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করেন। ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) বলেনঃ আমরা মাদীনায় আসলে নাবী (সাঃ) আমার ও সা’দ ইবনু রাবী-এর মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করে দেন
৫৬৫১। মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আনসার পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলেন এরপর তিনি তাদের সেখানে খাবার খেলেন। এরপর যখন তিনি বেরিয়ে আসার ইচ্ছা করলেন, তখন ঘরের মধ্যে এক জায়গায় (সালাত (নামায/নামাজ) এর জন্য) বিছানা করতে নির্দেশ দিলেন। তখন তার জন্য পানি ছিটিয়ে একখানা চাটাই বিছিয়ে দেয়া হলো। তারপর তিনি এর উপর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন এবং তাদের জন্য দু’আ করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫২ | 5652 | ۵٦۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৮. প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎ উপলক্ষে সুন্দর পোশাক পরিধান করা
৫৬৫২। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … ইয়াহইয়া ইবনু আবূ ইসহাক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, সালিম ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আমাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইস্তাবরাক কী? আমি বললামঃ তা মোটা ও সুন্দর রেশমী বস্ত্র। তিনি বললেনঃ আমি আবদুল্লাহ ইবনু উমরকে বলতে শুনেছি যে, উমর (রাঃ) এক ব্যাক্তির গায়ে একজোড়া মোটা রেশমী বস্ত্র দেখলেন। তখন তিনি সেটা নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে এসে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি এটি কিনে নিন। যখন আপনার নিকট কোন প্রতিনিধি দল আসবে, (তাদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য) তখন আপনি এটি পরবেন। তিনি বললেনঃ রেশমী বস্ত্র একমাত্র ঐ ব্যাক্তই পরবে, যার (আখিরাতে) কোন হিসসা নেই। এরপর বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমর (রাঃ) এর নিকট এরূপ একজোড়া কাপড় পাঠালেন। তখন তিনি সেটি নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে এসে বললেনঃ আপনি এটা আমার নিকট পাঠালেন, অথচ নিজেই এ জাতীয় বস্ত্র সম্পর্কে যা বলার তা বলেছিলেন। তিনি বললেনঃ আমি তো এটা একমাত্র এ জন্য তোমার নিকট পাঠিয়েছি, যেন তুমি এর বিনিময়ে কোন মাল গ্রহন করতে পার। এ হাদীসের প্রেক্ষিতে ইবনু উমর (রাঃ) কারুকার্য খচিত কাপড় পড়তে অপছন্দ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫৩ | 5653 | ۵٦۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৯. ভ্রাতৃত্বের ও প্রতিশ্রুতির বন্ধন স্থাপন। আবু জুহাই.ফা.হ্ (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) সালমান ও আবু দারদার মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করেন। ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) বলেনঃ আমরা মাদীনায় আসলে নাবী (সাঃ) আমার ও সা’দ ইবনু রাবী-এর মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করে দেন
৫৬৫৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) আমাদের নিকট এলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ও সা’দ ইবনু রাবী এর মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করে দেন। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বিয়ের পর তাকে বললেনঃ তুমি ওয়ালিমা করো অন্তত একটি বকরী দিয়ে হলেও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫৪ | 5654 | ۵٦۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৯. ভ্রাতৃত্বের ও প্রতিশ্রুতির বন্ধন স্থাপন। আবু জুহাই.ফা.হ্ (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) সালমান ও আবু দারদার মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করেন। ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) বলেনঃ আমরা মাদীনায় আসলে নাবী (সাঃ) আমার ও সা’দ ইবনু রাবী-এর মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করে দেন
৫৬৫৪। মুহাম্মদ ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) … আসিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, আমি আনাস ইবনু মাসিক (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম। আপনি জানেন কি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইসলামে প্রতিশ্রুতির সম্পর্ক নেই? তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো আমার ঘরে বসে কুরায়শ আর আনসারদের মধ্যে পরস্পর প্রতিশ্রুতির বন্ধন স্থাপন করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫৫ | 5655 | ۵٦۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৫৫। হিব্বান ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রিফাআ কুরাবী (রাঃ) তাঁর স্ত্রীকে তালাক দেন এবং অকাট্য তালাক দেন। এরপর আবদুর রহমান ইবনু যুবায়র তাকে বিয়ে করেন। পরে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি রিফাআর কাছে ছিলেন এবং রিফাআ তাকে শেষ তিন তালাক দিয়ে দেন এবং তাঁকে আবুদর রহমান ইবনু যুবায়র বিয়ে করেন। আল্লাহর কসমা ইয়া রাসুলাল্লাহ! এর কাছে তো শুধু এ কাপড়ের মত রয়েছে। (একথা বলে) তিনি তাঁর ওড়নার আচল ধরে উঠালেন। রাবী বলেনঃ তখন আবূ বকর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বসা ছিলেন এবং সাঈদ ইবনু আসও ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি লাভের অপেক্ষায় হুজরার দরজার কাছে বসা ছিলেন। তখন সা’দ (রাঃ) আবূ বকর (রাঃ) কে উচ্চস্বরে ডেকে বললেনঃ হে আবূ বকর আপনি এই মহিলাকে কেন ধমক দিচ্ছেন না, যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে (প্রকাশ্যে) এসব কথাবার্তা বলছে তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেবল মুচকি হাসছিলেন। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সম্ভবত তুমি আবার রিফাআ (রাঃ) এর নিকট ফিরে যেতে চাও। তা হবে না। যতক্ষন না তুমি তার এবং সে তোমার মিলন স্বাদ গ্রহন করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫৬ | 5656 | ۵٦۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৫৬। ইসমাঈল (রহঃ) সা’দ ইবনু আবূ ওক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট (প্রবেশের) অনুমতি চাইলেন। তখন তার নিকট কুরাইশের কয়েকজন মহিলা প্রশ্নাদি করছিলেন এবং তাঁদের আওয়াজ তার আওয়াজের উপর চড়া ছিল। যখন উমর (রাঃ) অনুমতি চাইলেন। তখন তাঁরা তাড়াতাড়ি পর্দার আড়ালে চলে গেলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অনুমতি দেওয়ার পর যখন তিনি ভিতরে প্রবেশ করলেন, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসছিলেন। উমর (রাঃ) বললেন আল্লাহ আপনাকে হাসি মুখে রাখুন; ইয়া রাসুলাল্লাহ! তখনই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমার নিকট যে সব মহিলা ছিলেন, তাদের প্রতি আমি আশ্চার্যান্বিত যে তারা তোমার আওয়াজ শোনা মাত্রই তাড়াতাড়ি পর্দার আড়ালে চলে গেলেন।

উমর (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এদের ভয় করার জন্য আপনিই অধিক যোগ্য ছিলেন। এরপর তিনি মহিলাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন হে নিজের জানের দুশমনরা! তোমরা কি আমাকে ভয় কর, আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ভয় কর না? তারা জবাব দিলেন আপনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনেক বেশী কঠিন ও কঠোর ব্যাক্তি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন হে ইবনু খাত্তাব! শোনো! সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন; যখন শয়তান পথ চলতে তোমার সম্মুখীন হয়, তখনই শয়তান তোমার পথ ছেড়ে অন্য পথ ধরে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫৭ | 5657 | ۵٦۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৫৭। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তায়েফে (অবরোধ করে) ছিলেন, তখন একদিন তিনি বললেনঃ ইনশাআল্লাহ আগামী কাল আমরা ফিরে যাব। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কয়েকজন সাহাবী বললেনঃ আমরা তায়েফ জয় না করা পর্যন্ত স্থান ত্যাগ করব না। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তবে ভোর হলেই তোমরা যুদ্ধে নেমে পড়বে। রাবী বলেনঃ তারা ভোর থেকেই তাদের সাথে ভীষণ লড়াই আরম্ভ করলেন। এতে তাদের মধ্যে বহুলোক জখম হয়ে পড়লেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইয়া আল্লাহ আমরা আগামীকাল ফিরে চলে যাবো এবং তারা সবাই নীরব রইলেন। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫৮ | 5658 | ۵٦۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৫৮। মূসা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেন, এক বাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। আমি রামাযানে (দিনে) আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ তুমি একটি গোলাম আযাদ করে দাও। সে বলল আমার গোলাম নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে একধারে দু’মাস সিয়াম পালন কর। সে বললঃ এতেও আমি সক্ষম নই। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তবে ষাটজন মিসকীনকে খাবার দাও। সে বললঃ তারও আমার সামর্থ নেই। তখন এক ঝুড়ি খেজুর এল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ প্রশ্নকারী ব্যাক্তিটি কোথায়? এইটি নিয়ে সাদাকা করে দাও। লোকটি বললঃ আমার চেয়ে বেশী অভাবগ্রস্ত আর কে? আল্লাহর কসম! মদিনার উভয় প্রান্তের মধ্যবর্তী স্থলে এমন কোন পরিবার নেই, যে আমাদের চেয়ে বেশী অভাবগ্রস্ত। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনভাবে হেসে দিলেন যে, তার চোয়ালের দাঁতগুলো প্রকাশ পেল এবং তিনি বললেনঃ তাহলে এখন এটা তোমরাই খেয়ে নাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫৯ | 5659 | ۵٦۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৫৯। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একবার আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে হেঁটে চলছিলাম। তখন তার গায়ে একখানা গাঢ় পাড়যুক্ত নাজরানী চাদর ছিল। এক বেদুঈন তাঁকে পেয়ে চাদরখানা ধরে ভীষণ জোরে টান দিল। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাঁধের উপর তাকিয়ে দেখলাম যে, জোরে চাদরখানা টানার কারনে তার কাঁধে চাদরের পাড়ের দাগ বসে গেছে। তারপর বেদুঈনটি বললোঃ হে মুহাম্মাদ! তোমার কাছে আল্লাহর দেওয়া সে সম্পদ আছে, তা থেকে আমাকে দেওয়ার নির্দেশ দাও। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে ফিরে হেসে দিলেন এবং তাকে কিছু দান করার নির্দেশ দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬০ | 5660 | ۵٦٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৬০। ইবনু নুমায়র (রহঃ) … জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি ইসলাম গ্রহন করার পর থেকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তার কাছে যেতে বাধা দেননি। তিনি আমাকে দেখামাত্রই আমার সামনে মুচকি হাসি হাসতেন। একদিন আমি অভিযোগ করে বললামঃ আমি ঘোড়ার পিঠে চেপে বসে আকড়ে থাকতে পারি না। তখন তিনি আমার বুকে হাত রেখে দু’আ করলেন। হে আল্লাহ! তাকে দৃঢ়মনা করে দিন এবং তাকে হেদায়েতকারী ও হেদায়েত প্রাপ্ত বানিয়ে দিন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬১ | 5661 | ۵٦٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৬১। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … যায়নাব বিনত উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার উম্মে সুলায়ম (রাঃ) বলেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহ তো সত্য কথা বলতে লজ্জা করেন না। মেয়েলোকের স্বপ্নদোষ হলে তাদেরও কি গোসল করতে হবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। যদি সে পানি (বীর্য) দেখতে পায়। তখন উম্মে সুলায়মা (রাঃ) হেসে দিলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন মেয়ে লোকেরও কি স্বপ্নদোষ হতে পারে? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা না হলে, সন্তানের মধ্যে সাদৃশ্য হয় কেমন করে?

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬২ | 5662 | ۵٦٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৬২। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এমনভাবে মুখভরে হাসতে দেখিনি যে, তার আলা জিহ্বা দেখা যেত। তিনি তো শুধু মুচকি হাসতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬৩ | 5663 | ۵٦٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৬৩। মুহাম্মাদ ইবনু মাহবুব ও খালীফা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট জুমুআর দিন মদিনায় এল, যখন তিনি খুতবা দিচ্ছিলেন। সে বললোঃ বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেছে আপনি বৃষ্টিপাতের জন্য আপনার রবের নিকট দুআ করুন। তখন আকাশের দিকে তাকালেন তখন আমরা আকাশে কোন মেঘ দেখছিলাম না। তখন তিনি বৃষ্টিপাতের জন্য দু আ করলেন। এ সময় মেঘ এসে মিলিত হতে লাগলো। তারপর এমন বৃষ্টিপাত হল যে, মদিনার খাল-নালাগুলো প্রবাহিত হতে লাগল এবং ক্রমাগত পরবর্তী জুমুআ পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে থাকল, মাঝে আর বিরতি হয়নি।

পরবর্তী জুমুআয় যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা দিচ্ছিলেন, তখন ঐ ব্যাক্তি অথবা অন্য এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বলল, আমরা তো ডুবে গেছি। আপনি আপনার রবের কাছে দু’আ করুন, যেন তিনি আমাদের উপর থেকে বৃষ্টিপাত বন্ধ করে দেন। তখন তিনি হেসে দিলেন এবং দু’বার অথবা তিন বার দুআ করলেন। ইয়া আল্লাহ! (বৃষ্টি) আশে পাশে নিয়ে যান, আমাদের উপর নয়। তখন মেঘপুঞ্জ দূর হয়ে গিয়ে মদিনার আশে-পাশে বর্ষণ করতে লাগল। আমাদের উপর আর বর্ষিত হলো না। এতে আল্লাহ তাঁর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুজিযা ও তার দুআ কবুল হওয়ার নিদর্শন দেখান।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬৪ | 5664 | ۵٦٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৫০১. আল্লাহ তা’আলার বানীঃ “হে ইমানদারগন তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সাথে থাকো” মিথ্যা কথা বলা নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে
৫৬৬৪। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সত্য নেকীর দিকে পরিচালিত করে আর নেকী জান্নাতের দিকে পৌছায়। আর মানুষ সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে অবশেষে সিদ্দীক এর দরজা লাভ করে। আর মিথ্যা মানুষকে পাপের দিকে নিয়ে যায়। পাপ তাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। আর মানুষ মিথ্যা কথা বলতে বলতে অবশেষে আল্লাহর কাছে মহামিথ্যাবাদী রূপে সাব্যস্ত হয়ে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬৫ | 5665 | ۵٦٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৫০১. আল্লাহ তা’আলার বানীঃ “হে ইমানদারগন তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সাথে থাকো” মিথ্যা কথা বলা নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে
৫৬৬৫। ইবনু সালাম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুনাফিকের চিহ্ন তিনটিঃ যখন সে কথা বলে, তখন মিথ্যা বলে, আর যখন সে ওয়াদা করে, তখন তা ভঙ্গ করে আর যখন তার কাছে আমানত রাখা হয় তখন সে তাতে খিয়ানত করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬৬ | 5666 | ۵٦٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৫০১. আল্লাহ তা’আলার বানীঃ “হে ইমানদারগন তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সাথে থাকো” মিথ্যা কথা বলা নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে
৫৬৬৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি আজ রাতে (স্বপ্নে)! দু’জন লোককে দেখলাম। তারা বললোঃ আপনি যে লোকটির গাল চিরে ফেলতে দেখলেন, সে বড় মিথ্যাবাদী। সে এমন মিথ্যা বলত যে দুনিয়ার (লোক) আনাচে কানাচে তা ছড়িয়ে দিত। ফলে, কিয়ামত পর্যন্ত তার সাথে এরূপ ব্যবহার হতে থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬৭ | 5667 | ۵٦٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৫০২. উত্তম চরিত্র
৫৬৬৭। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, মানুষের মধ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে চাল-চলনে, রীতি-নীতিতে ও স্বভাব-চরিত্রে, যার সবচেয়ে বেশী সামঞ্জস্য বিদ্যমান, তিনি হলেন ইবনু উম্মে আবদ। যখন তিনি নিজ ঘর থেকে বের হন, তখন থেকে ঘরে ফিরে আসা পর্যন্ত এ সামঞ্জস্য দেখা যায়। তবে তিনি একাকী নিজ গৃহে কিরূপ ব্যবহার করেন, তা আমরা জানি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬৮ | 5668 | ۵٦٦۸

পরিচ্ছদঃ ২৫০২. উত্তম চরিত্র
৫৬৬৮। আবুল ওয়ালীদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উত্তম বানী হলো আল্লাহর কিতাব। আর সবচে উত্তম চরিত্র হল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চরিত্র।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬৯ | 5669 | ۵٦٦۹

পরিচ্ছদঃ ২৫০৩. ধৈর্যধারণ ও কষ্ট দেয়া। আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই ধৈর্যশীলদের অগণিত পুরস্কার দেওয়া হবে
৫৬৬৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কষ্টের কথা শোনার পর আল্লাহ তা’আলার চেয়ে অধিক ধৈর্যধারনকারী কেউ বা কোন কিছুই নেই। লোকেরা তার জন্য সন্তান সাব্যস্ত করে; এরপরও তিনি তাদের বিপদ মুক্ত রাখেন এবং রিযিক দান করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭০ | 5670 | ۵٦۷۰

পরিচ্ছদঃ ২৫০৩. ধৈর্যধারণ ও কষ্ট দেয়া। আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই ধৈর্যশীলদের অগণিত পুরস্কার দেওয়া হবে
৫৬৭০। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গনীমতের মাল বণ্টন করলেন। তখন এক আনসারী ব্যাক্তি বললঃ আল্লাহর কসম এ বণ্টনে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করা হয়নি। তখন আমি বললামঃ জেনে রেখো, আমি নিশ্চয়ই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ কথা বলব। সুতরাং আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসলাম। তখন তিনি তার সাহাবীগণের মধ্যে ছিলেন। এজন্য তার কাছে কথাটা চুপেচুপে বললাম। একথাটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বড়ই কষ্টদায়ক হল, তার চেহারার রং বদলে গেল এবং তিনি এত রাগাম্বিত হলেন যে, আমি ভাবলাম, হায়! যদি আমি তার কাছে এ খবর না দিতাম, তবে কত ভাল হত। এরপর বললেনঃ মূসা (আলাইহিস সালাম) কে নিশ্চই এর চেয়েও বেশী কষ্ট দেয়া হয়েছে। তাতেও তিনি ধৈর্যধারণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭১ | 5671 | ۵٦۷۱

পরিচ্ছদঃ ২৫০৪. কারো মুখোমুখী তিরস্কার না করা
৫৬৭১। উমর ইবনু হাফয (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে কোন কাজ করলেন এবং অন্যদের তা করার অনুমতি দিলেন। তথাপি একদল লোক তা থেকে বিরত রইল। এ খবর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পৌছলে তিনি ভাষণ দিলেন এবং আল্লাহর প্রশংসার পর বললেন কিছু লোকের কি হয়েছে। তারা এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে চায়, যা আমি নিজে করছি। আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহর সম্পর্কে তাদের চেয়ে অধিক জ্ঞাত এবং আমি তাকে তাদের চাইতে অনেক বেশী ভয় করি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭২ | 5672 | ۵٦۷۲

পরিচ্ছদঃ ২৫০৪. কারো মুখোমুখী তিরস্কার না করা
৫৬৭২। আবদান (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ পর্দার ভেতরে কুমারীদের চেয়েও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশী লাজুক ছিলেন। যখন তিনি তার কাছে অপছন্দনীয় কিছু দেখতেন, তখন আমরা তার চেহারাতেই এর আভাস পেয়ে যেতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭৩ | 5673 | ۵٦۷۳

পরিচ্ছদঃ ২৫০৫. কোন ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইকে বিনা কারণে কাফির বললে তা তার নিজের উপরই বার্তাবে
৫৬৭৩। মুহাম্মাদ ও আহমাদ ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কোন ব্যাক্তি তার মুসলমান ভাইকে ‘হে কাফির’ বলে ডাকে, তখন তা তাদের দু’জনের কোন একজনের উপর বর্তায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭৪ | 5674 | ۵٦۷٤

পরিচ্ছদঃ ২৫০৫. কোন ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইকে বিনা কারণে কাফির বললে তা তার নিজের উপরই বার্তাবে
৫৬৭৪। ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কেউ তার ভাইকে কাফির বলবে, তাদের দু’জনের একজনের উপর তা বর্তাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭৫ | 5675 | ۵٦۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৫০৫. কোন ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইকে বিনা কারণে কাফির বললে তা তার নিজের উপরই বার্তাবে
৫৬৭৫। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … সাবিত ইবনু যাহহাক (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কেউ ইসলাম ধর্ম ছাড়া অন্য কোন ধর্মের মিথ্যা কসম খায়, সে যা বলে তাই হবে। আর যে বস্তু দিয়ে কেউ আত্নহত্যা করবে, জাহান্নামের আগুনে তাকে সে বস্তু দিয়েই আযাব দেওয়া হবে। ঈমানদারকে লানত করা, তাকে হত্যা করার সমান। আর যে কেউ কোন ঈমানদারকে কুফরীর অপবাদ দিবে, তাও তাকে হত্যা করার সমান হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭৬ | 5676 | ۵٦۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৫০৬. কেউ যদি কাউকে না জেনে কিংবা নিজ ধারণ অনুযায়ী (কাফির বা মুনাফিক) সম্বোধন করে, তাকে কাফির বলা যাবে না। উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) হাতিব ইবনু বাল্তা’আ (রাঃ) কে বলেছিলেন, ইনি মুনাফিক। তখন নাবী (সাঃ) বললেনঃ তা তুমি কী করে জানলে? অথচ আল্লাহ বদর যুদ্ধে যোগদানকারীদের প্রতি লক্ষ্য করে বলেছেনঃ আমি তোমাদের গুনাহ মাফ করে দিলাম।
৫৬৭৬। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। পুনরায় তিনি নিজ কাওমের নিকট এসে তাদের তিনি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। একবার তিনি তাদের নিয়ে সালাতে সুরা বাকারা পড়লেন। তখন এক ব্যাক্তি; সালাত (নামায/নামাজ) সংক্ষেপ করতে চাইল। সুতরাং সে (আলাদা হয়ে) সংক্ষেপে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এ খবর মু’আয (রাঃ) এর কাছ পৌছলে তিনি বললেনঃ সে মুনাফিক! লোকটির কাছে এ খবর পৌছলে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে এসে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা এমন এক কাওমের লোক, যারা নিজের হাতে কাজ করি, আর নিজের উট দিয়ে সেঁচের কাজ করি। মুআয (রাঃ) গত রাত্রে সূরা বাকারা দিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে আরম্ভ করলেন, তখন আমি সংক্ষেপে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নিলাম। এতে মু’আয (রাঃ) বললেন যে, আমি মুনাফিক। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে মু’আয। তুমি কি (লোকদের) দ্বীনের প্রতি বিতৃঞ্চ করতে চাও? একথাটি তিনি তিন বার বললেন। পরে তিনি তাকে বললেনঃ তুমি ওয়াশ শামসি ওয়াদ দু-হা আর সাব্বিহিসমা রাব্বিকাল আলা এবং এর অনুরূপ ছোট সূরা পড়বে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭৭ | 5677 | ۵٦۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৫০৬. কেউ যদি কাউকে না জেনে কিংবা নিজ ধারণ অনুযায়ী (কাফির বা মুনাফিক) সম্বোধন করে, তাকে কাফির বলা যাবে না। উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) হাতিব ইবনু বাল্তা’আ (রাঃ) কে বলেছিলেন, ইনি মুনাফিক। তখন নাবী (সাঃ) বললেনঃ তা তুমি কী করে জানলে? অথচ আল্লাহ বদর যুদ্ধে যোগদানকারীদের প্রতি লক্ষ্য করে বলেছেনঃ আমি তোমাদের গুনাহ মাফ করে দিলাম।
৫৬৭৭। ইসহাক (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি কসম খায় এবং লাত ও উযযার কসম করে, তবে সে যেন (সাথে সাথেই) লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে। আর যদি কেউ তার সাথীকে বলে, এসো আমরা জুয়া খেলি; তবে সে যেন (কোন কিছু) সাদাকা করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭৮ | 5678 | ۵٦۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৫০৬. কেউ যদি কাউকে না জেনে কিংবা নিজ ধারণ অনুযায়ী (কাফির বা মুনাফিক) সম্বোধন করে, তাকে কাফির বলা যাবে না। উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) হাতিব ইবনু বাল্তা’আ (রাঃ) কে বলেছিলেন, ইনি মুনাফিক। তখন নাবী (সাঃ) বললেনঃ তা তুমি কী করে জানলে? অথচ আল্লাহ বদর যুদ্ধে যোগদানকারীদের প্রতি লক্ষ্য করে বলেছেনঃ আমি তোমাদের গুনাহ মাফ করে দিলাম।
৫৬৭৮। কুতায়বা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) কে একদিন আরোহীর মাঝে এমন সময় পেলেন, যখন তিনি তার পিতার নামে কসম খাচ্ছিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উচ্চস্বরে তাদের বললেনঃ জেনে রাখ! আল্লাহ তোমাদের নিজের পিতার নামে কসম খেতে নিষেধ করেছেন। যদি কাউকে কসম খেতেই হয়, তবে সে যেন আল্লাহর নামেই কসম খায়, অন্যথায় সে যেন চুপ থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭৯ | 5679 | ۵٦۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৫০৭. আল্লাহর বিধি-নিষেধের ব্যাপারে রাগ করা ও কঠোরতা অবলম্বন করা জায়িয। আল্লাহ বলেছেনঃ কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর, তাদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বন কর।
৫৬৭৯। ইয়াসারাহ ইবনু সাফওয়ান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট আসলেন। তখন ঘরে একখানি পর্দা ঝুলানো ছিল। যাতে ছবি ছিল। তা দেখে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারার রং বদলিয়ে গেল। এরপর তিনি পর্দাখানা হাতে নিয়ে ছিড়ে ফেললেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের মধ্যে বললেন কিয়ামতের দিন সবচেয়ে কঠিন আযাব হবে ঐসব লোকদের যারা এ সকল ছবি আঁকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮০ | 5680 | ۵٦۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৫০৭. আল্লাহর বিধি-নিষেধের ব্যাপারে রাগ করা ও কঠোরতা অবলম্বন করা জায়িয। আল্লাহ বলেছেনঃ কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর, তাদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বন কর।
৫৬৮০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন অমুক ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) দীর্ঘ করার কারণে আমি ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) থেকে পিছনে থাকি। বর্ণনাকারী বলেন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কোন ওয়াযের মধ্যে সেদিন থেকে বেশী রাগান্বিত হতে আর দেখি নি। রাবী বলেন, এরপর তিনি বললেন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ বিতৃষ্ণা সৃষ্টিকারী আছে। সুতরাং তোমাদের যে কেউ লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে সে যেন সংক্ষেপ করে। কারণ তাদের মধ্যে রোগী, বৃদ্ধ এবং কর্মব্যাস্ত লোক থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮১ | 5681 | ۵٦۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৫০৭. আল্লাহর বিধি-নিষেধের ব্যাপারে রাগ করা ও কঠোরতা অবলম্বন করা জায়িয। আল্লাহ বলেছেনঃ কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর, তাদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বন কর।
৫৬৮১। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তখন তিনি মসজিদের কিবলার দিকে নাকের শ্লেষ্মা দেখতে পান। এরপর তিনি তা নিজ হাতে খুটিয়ে পরিস্কার করলেন এবং রাগান্বিত হয়ে বললেনঃ তোমাদের কেউ যতক্ষন সালাতে থাকে, ততক্ষন আল্লাহ তার চেহারার সামনে থাকেন। সুতরাং সালাত (নামায/নামাজ) এর অবস্থায় কখনো সামনের দিকে নাকের শ্লেষ্মা ফেলবেনা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮২ | 5682 | ۵٦۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৫০৭. আল্লাহর বিধি-নিষেধের ব্যাপারে রাগ করা ও কঠোরতা অবলম্বন করা জায়িয। আল্লাহ বলেছেনঃ কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর, তাদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বন কর।
৫৬৮২। মুহাম্মদ (রহঃ) … যায়দ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পথে পড়ে থাকা জিনিস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেন তুমি তা এক বছর পর্যন্ত প্রচার করতে থাকো, তারপর তার বাঁধন চিনে রাখ। তারপর তা তুমি ব্যয় কর। এরপর যদি এর মালিক এসে যায়, তবে তুমি তাকে ফিরিয়ে দাও। লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করলঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! হরিয়ে যাওয়া ছাগলের কি হুকুম? তিনি বললেন সেটা তুমি নিয়ে যাও। কারণ এটা হয়ত তোমার জন্য অথবা তোমার কোন ভাইয়ের অথবা চিতাবাঘের। লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করল। ইয়া রাসুলাল্লাহ! আর হারানো উটের কি হুকুম? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রেগে গেলেন। এমন কি তার গন্ডদ্বয় রক্তিমাভ হয়ে গেল। তিনি বললেনঃ তাতে তোমার কি? তাঁর সাথেই তার চলমান পা ও পানি রয়েছে এবং এ পর্যন্ত সেটি তার মালিকের নাগাল পেয়ে যাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮৩ | 5683 | ۵٦۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৫০৭. আল্লাহর বিধি-নিষেধের ব্যাপারে রাগ করা ও কঠোরতা অবলম্বন করা জায়িয। আল্লাহ বলেছেনঃ কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর, তাদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বন কর।
৫৬৮৩। মাক্কী ও মুহম্মদ ইবনু যিয়াদ (রহঃ) … যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেজুরের পাতা দিয়ে, অথবা চাটাই দিয়ে একটি ছোট হুজরা তৈরী করলেন এবং ঘর থেকে বেবিয়ে এসে ঐ হুজরায় (রাতে নফল) সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে লাগলেন। তখন একদল লোক তাঁর খোঁজে এসে তার সঙ্গে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে লাগল। পরবর্তী রাতও লোকজন সেখানে এসে হাযির হল। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেরী করলেন এবং তাদের দিকে বেরিয়ে আসলেন না। তারা উচ্চস্বরে আওয়াজ দিতে লাগলেন এবং ঘরের দরজায় কংকর নিক্ষেপ করতে লাগলেন। তখন তিনি রাগাম্বিত হয়ে তাদের কাছে বেরিয়ে এসে বললেন তোমরা যা করছ তাতে আমি আশংকা করছি যে সম্ভবত এটি না তোমাদের উপর ফরয করে দেয়া হয়। সুতরাং তোমাদের উচিত তোমরা ঘরেই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে। কারন ফরয ব্যতীত অন্য সালাত (নামায/নামাজ) নিজ নিজ ঘরে পড়াই উত্তম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮৪ | 5684 | ۵٦۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৫০৯. ক্রোধ থেকে বেঁচে থাকা। মহান আল্লাহর বানীঃ যারা গুরতর পাপ ও অশালীন কাজ থেকে বেঁচে থাকে এবং যখন ক্রধান্নিত হয় তখন তারা (তাদের) মাফ করে দেয়। (এবং আল্লাহর বানীঃ) যারা সচ্চল ও অসচ্চল অবস্থায় ব্য্য করে, আর যারা ক্রোধ সংবরণকারী ও মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল, আল্লাহ সতকর্ম পরায়ণদের ভালবাসেন।
৫৬৮৪। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন প্রকৃত বীর সে নয়, সে কাউকে কুস্তিতে হারিয়ে দেয়। বরং সেই প্রকৃত বাহাদুর, সে ক্রোধের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮৫ | 5685 | ۵٦۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৫০৯. ক্রোধ থেকে বেঁচে থাকা। মহান আল্লাহর বানীঃ যারা গুরতর পাপ ও অশালীন কাজ থেকে বেঁচে থাকে এবং যখন ক্রধান্নিত হয় তখন তারা (তাদের) মাফ করে দেয়। (এবং আল্লাহর বানীঃ) যারা সচ্চল ও অসচ্চল অবস্থায় ব্য্য করে, আর যারা ক্রোধ সংবরণকারী ও মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল, আল্লাহ সতকর্ম পরায়ণদের ভালবাসেন।
৫৬৮৫। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … সুলায়মান ইবনু সুরদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে দু’ব্যাক্তি পাগলামী করছিল। আমরাও তার কাছেই বসাছিলাম, তাদের একজন অপর জনকে এত রাগান্বিত হয়ে গালী দিচ্ছিল যে তার চেহারা লাল হয়ে গিয়েছিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি একটি কালেমা জানি, যদি এ লোকটি তা পড়তো, তা হলে তার ক্রোধ চলে যেত। অর্থাৎ যদি লোকটি “আউযুবিল্লাহি মিনাশশাইতানির রাজীম” পড়তো। তখন লোকেরা সে ব্যাক্তিকে বলল, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বলেছেন, তা কি তুমি শুনছো না? সে বললোঃ আমি নিশ্চয়ই পাগল নই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮৬ | 5686 | ۵٦۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৫০৯. ক্রোধ থেকে বেঁচে থাকা। মহান আল্লাহর বানীঃ যারা গুরতর পাপ ও অশালীন কাজ থেকে বেঁচে থাকে এবং যখন ক্রধান্নিত হয় তখন তারা (তাদের) মাফ করে দেয়। (এবং আল্লাহর বানীঃ) যারা সচ্চল ও অসচ্চল অবস্থায় ব্য্য করে, আর যারা ক্রোধ সংবরণকারী ও মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল, আল্লাহ সতকর্ম পরায়ণদের ভালবাসেন।
৫৬৮৬। ইয়াহইয়া ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বললোঃ আপনি আমাকে অসিয়ত করুন। তিনি বললেনঃ তুমি রাগ করো না। লোকটা কয়েকবার তা বললেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক বারই বললেনঃ রাগ করো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮৭ | 5687 | ۵٦۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৫১০. লজ্জাশীলতা
৫৬৮৭। আদম (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ লজ্জাশীলতা কল্যাণ ব্যতীত কোন কিছুই বয়ে আনে না। তখন বুশায়র ইবনু কাব (রাঃ) বললেন হিকমতের পুস্তকে লিখা আছে যে, কোন কোন লজ্জাশীলতা ধৈর্যশীলতা বয়ে আনে। আর কোনকোন লজ্জাশীলতা এনে দেয় শান্তি ও সুখ। তখন ইমরান (রাঃ) বললেন, আমি তোমার কাছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করছি। আর তুমি (এর মোকাবিলায়) আমাকে তোমার পুস্তিকা থেকে বর্ণনা করছ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮৮ | 5688 | ۵٦۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৫১০. লজ্জাশীলতা
৫৬৮৮। আহমদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি লোকের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় লোকটি (তার ভাইকে) লজ্জা সম্পর্কে তিরস্কার করছিল এবং বলছিল যে, তুমি বেশী লজ্জা করছ, এমনকি সে যেন এ কথাও বলছিল যে, এ তোমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তাকে তার অবস্থার উপর ছেড়ে দাও। কারণ নিশ্চই লজ্জাশীলতা ঈমানের অঙ্গ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮৯ | 5689 | ۵٦۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৫১০. লজ্জাশীলতা
৫৬৮৯। আলী ইবনু জায়দ (রহঃ) … আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ গৃহে অবস্থানরত কুমারী মেয়েদের চেয়েও বেশী লাজুক ছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯০ | 5690 | ۵٦۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৫১১. যখন তুমি লজ্জা ত্যাগ করবে, তখন তুমি যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে
৫৬৯০। আহমদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পুর্বেকার নাবীদের কর্তব্য থেকে মানুষ যা বর্জন করেছে তার একটি হল, যদি তুমি লজ্জাই ছেড়ে দাও তবে তুমি যা চাও তা কর।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯১ | 5691 | ۵٦۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৫১২. দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করার উদ্দেশ্যে সত্য বলতে লজ্জাবোধ করতে নেই
৫৬৯১। ইসমাঈল (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদিন উম্মে সুলায়ম (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহ তো সত্য কথা বলার ব্যাপারে লজ্জা করতে নির্দেশ দেন না। সুতরাং মেয়ে লোকের স্বপ্নদোষ হলে কি তার উপরও গোসল করা ফরয? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, যদি সে পানি, বীর্য দেখতে পায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯২ | 5692 | ۵٦۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৫১২. দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করার উদ্দেশ্যে সত্য বলতে লজ্জাবোধ করতে নেই
৫৬৯২। আাদম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিনের দৃষ্টান্ত হল এমন একটি সবুজ গাছ, যার পাতা ঝরে পড়ে না এবং একটির সঙ্গে আর একটির ঘর্ষণ লাগে না। তখন কেউ কেউ বললঃ এটি অমুক গাছ, আবার কেউ বললঃ এটি অমুক গাছ। তখন আমি বলতে চেয়েছিলাম যে, এটি খেজুর গাছ। তবে, যেহেতু আমি অল্প বয়স্ক ছিলাম, তাই বলতে সংকোচবোধ করলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে দিলেন যে, সেটি খেজুর গাছ।

আর শুবা (রহঃ) থেকে ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে অতিরিক্ত বর্ণিত আছে যে, তারপর আমি উমর (রাঃ) এর নিকট এ সম্বন্ধে বললাম। তখন তিনি বললেনঃ যদি তুমি সে সময় একথা বলে দিতে তবে তা আমার নিকট এত এত (ধন সম্পদ থেকেও) বেশী খুশীর বিষয় হতো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯৩ | 5693 | ۵٦۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৫১২. দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করার উদ্দেশ্যে সত্য বলতে লজ্জাবোধ করতে নেই
৫৬৯৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলো এবং তার সামনে নিজেকে পেশ করে বললঃ আপনার কি আমার প্রয়োজন আছে? তখন আনাস (রাঃ) এর মেয়ে বললঃ এ মহিলার লজ্জা কত কম। আনাস (রাঃ) বললেনঃ সে তোমার চেয়ে ভাল। সে তো (নাবীর সহধর্মিণী হওয়ার সৌভাগ্য) লাভের জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে নিজেকে (বিবাহের জন্য) পেশ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯৪ | 5694 | ۵٦۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৫১৩. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ তোমরা নম্র হও, কঠোর ব্যবহার করো না। নাবী (সাঃ) মানুষের সাথে নম্র ব্যবহার পছন্দ করতেন
৫৬৯৪। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা নম্র ব্যবহার করো এবং কঠোর ব্যবহার করো না। আর মানুষকে শান্তি দাও এবং মানুষের মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টি করো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯৫ | 5695 | ۵٦۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৫১৩. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ তোমরা নম্র হও, কঠোর ব্যবহার করো না। নাবী (সাঃ) মানুষের সাথে নম্র ব্যবহার পছন্দ করতেন
৫৬৯৫। ইসহাক (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে আর মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) কে ইয়ামানে পাঠান, তাদের অসিয়ত করেন। তোমরা (লোকের সাথে) নম্র ব্যবহার করবে, কঠোর ব্যবহার করবে না। শুভ সংবাদ দেবে এবং তাদের মনে বিদ্বেষ সৃষ্টি করবে না। আর তোমরা দু’জনের মধ্যে সদ্ভাব বজায় রাখবে। তখন আবূ মূসা (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা এমন এক দেশে যাচ্ছি, যেখানে মধু থেকে শরাব তৈরী হয়। একে ‘বিতউ’ বলা হল। আর ‘যব’ থেকেও শরাব তৈরী, করা হয় তাকে বলা হয় ‘মিযর’। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ প্রত্যেক নেশাসৃষ্টিকারী বস্তু হারাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯৬ | 5696 | ۵٦۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৫১৩. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ তোমরা নম্র হও, কঠোর ব্যবহার করো না। নাবী (সাঃ) মানুষের সাথে নম্র ব্যবহার পছন্দ করতেন
৫৬৯৬। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যখন কোন দু’টি কাজের মধ্যে এখতিয়ার দেয়া হয়। তখন তিনি দুটির মধ্যে অপেক্ষাকৃত সহজটি গ্রহণ করতেন যদি তা গুনাহর কাজ না হতো। আর যদি তা গুনাহের কাজ হতো, তা হলে তিনি তা থেকে সবার চাইতে দূরে সরে থাকতেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন বিষয়ে নিজের ব্যাপারে কখনো প্রতিশোধ নিতেন না। অবশ্য কেউ আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করলে, তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তার প্রতিশোধ নিতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯৭ | 5697 | ۵٦۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৫১৩. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ তোমরা নম্র হও, কঠোর ব্যবহার করো না। নাবী (সাঃ) মানুষের সাথে নম্র ব্যবহার পছন্দ করতেন
৫৬৯৭। আবূ নু’মান (রহঃ) … আযরাক ইবনু কায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা আহওয়ায নামক স্থানে একটা খালের কিনারায় অবস্থান করছিলাম। খালটির পানি শুকিয়ে গিয়েছিল। এমন সময় আবূ বারযা আসলামী (রাঃ) একটি ঘোড়ায় সাওয়ার হয়ে সেখানে এলেন। তিনি ঘোড়াটিকে ছেড়ে দিয়ে সালাতে দাঁড়ালেন। তখন ঘোড়াটা (দুরে) চলে গেল দেখে তিনি সালাত (নামায/নামাজ) ছেড়ে দিয়ে ঘোড়ার অনুসরণ করলেন এবং ঘোড়াটি পেয়ে ধরে আনলেন। তারপর সালাত (নামায/নামাজ) পূর্ন করলেন। এ সময় আমাদের মধ্যে একজন বিরূপ সমালোচক ছিলেন। তিনি তা দেখে বললেনঃ এই বৃদ্ধের দিকে তাকাও, সে ঘোড়ার খাতিরে সালাত (নামায/নামাজ) ছেড়ে দিল।

তখন আবূ বারযাহ (রাঃ) এগিয়ে এসে বললেনঃ যখন থেকে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হারিয়েছি, তখন থেকে আজ পর্যন্ত কেউ আমাকে এরূপ তিরস্কার করেন নি। তিনি আরও বললেনঃ আমার বাড়ী বহুদূরে। সুতরাং যদি আমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতাম এবং ঘোড়াটিকে এভাবেই ছেড়ে দিতাম তাহলে আমি রাতে নিজ পরিবারের নিকট পৌছতে পারতাম না। তিনি আরও উল্লেখ করলেন যে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহচর্য লাভ করেছেন এবং তার নম্র ব্যবহার প্রত্যক্ষ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯৮ | 5698 | ۵٦۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৫১৩. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ তোমরা নম্র হও, কঠোর ব্যবহার করো না। নাবী (সাঃ) মানুষের সাথে নম্র ব্যবহার পছন্দ করতেন
৫৬৯৮। আবুল ইয়ামান ও লায়স (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার এক বেদুঈন মসজিদে পেশাব করে দিলো। তখন লোকজন তাকে শাসন করার জন্য উত্তেজিত হয়ে পড়ল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেনঃ তোমরা তাকে ছেড়ে দাও এবং তার পেশাবের উপর এক বালতি পানি অথবা একপাত্র পানি ঢেলে দাও। কারণ, তোমাদের নম্র ব্যবহারকারী বানিয়ে পাঠানো হয়েছে কঠোর ব্যবহারকারী হিসেবে পাঠানো হয় নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯৯ | 5699 | ۵٦۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৫১৪. মানুষের সাথে হাসিমুখে মেলামেশা করা। ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, মানুষের সাথে এমনভাবে মেলামেশা করবে, যেন তাতে তোমার দ্বীনে আঘাত না লাগে। আর পরিবারের সঙ্গে হাসি তামাশা করা।
৫৬৯৯। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাথে মেলামেশা করতেন এমনকি একদিন তিনি আমার এক ছোট ভাইকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ওহে আবূ উমায়র। নুগায়র পাখিটি কেমন আছে?

হাদিস নম্বরঃ ৫৭০০ | 5700 | ۵۷۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৫১৪. মানুষের সাথে হাসিমুখে মেলামেশা করা। ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, মানুষের সাথে এমনভাবে মেলামেশা করবে, যেন তাতে তোমার দ্বীনে আঘাত না লাগে। আর পরিবারের সঙ্গে হাসি তামাশা করা।
৫৭০০। মুহাম্মাদ (রহঃ) … আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনেই আমি পুতুল বানিয়ে খেলতাম। আমার বান্ধবীরাও আমার সঙ্গে খেলতো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশ করলে তারা দৌড়ে পালাত। তখন তিনি তাদের ডেকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিতেন এবং তারা আমার সঙ্গে খেলা করত।