বুখারি হাদিস নং ৫২৩৮-৫২৭৫

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩৮ | 5238 | ۵۲۳۸

পরিচ্ছদঃ রোগের কাফ্‌ফারা ও ক্ষতিপূরণ এবং মহান আল্লাহ‌র বাণীঃ যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে তাকে সেই কাজের প্রতিফল দেয়া হবে।
৫২৩৮। আবূল ইয়ামান হাকাম ইবনু নাফি (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমান ব্যাক্তির উপর যে সকল বিপদ আপদ আপতিত হয় এর দ্বারা আল্লাহ তার পাপ মোচন করে দেন। এমনকি যে কাটা তার শরীরে বিদ্ধ হয় এর দ্বারাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩৯ | 5239 | ۵۲۳۹

পরিচ্ছদঃ রোগের কাফ্‌ফারা ও ক্ষতিপূরণ এবং মহান আল্লাহ‌র বাণীঃ যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে তাকে সেই কাজের প্রতিফল দেয়া হবে।
৫২৩৯। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলিম ব্যাক্তির উপর যে সকল যাতনা, রোগ ব্যাধি, উদ্দেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানী আপতিত হয়, এমন কি যে কাটা তার দেহে বিদ্ধ হয়, এ সবের দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহ সমুহ ক্ষমা করে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪০ | 5240 | ۵۲٤۰

পরিচ্ছদঃ রোগের কাফ্‌ফারা ও ক্ষতিপূরণ এবং মহান আল্লাহ‌র বাণীঃ যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে তাকে সেই কাজের প্রতিফল দেয়া হবে।
৫২৪০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন মুমিন ব্যাক্তির উদাহরণ হল সে শস্যক্ষত্রের নরম চারা গাছের ন্যায়, যাকে বাতাস একবার কাত করে ফেলে, আরেক বার সোজা করে দেয়। আর মুনাফিকের উদাহরন, সে যেন ভূমির উপর কঠিনভাবে স্থাপিত বৃক্ষ, যাকে কোন ক্রমেই নোয়ানো যায় না। অবশেষে এক ঝটকায় মূলসহ তা উৎপাটিত হয়ে যায়। যাকারিয়্যা তার পিতা কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমাদের কাছে এরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪১ | 5241 | ۵۲٤۱

পরিচ্ছদঃ রোগের কাফ্‌ফারা ও ক্ষতিপূরণ এবং মহান আল্লাহ‌র বাণীঃ যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে তাকে সেই কাজের প্রতিফল দেয়া হবে।
৫২৪১। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিন ব্যাক্তির উপমা হল সে যেন শস্যক্ষেত্রের কোমল চারাগাছ। যে কোন দিক থেকেই তার দিকে বাতাস আসলে বাতাস তাকে নুইয়ে দেয়। আবার (যখন বাতাসের প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় তখন তা সোজা হয়ে দাঁড়ায়। (তদ্রূপ অবস্থা হল মু’মিনের) বালা মুসিবত তাকে নোয়াতে থাকে। আর ফাসিক হল ভূমির উপর কঠিনভাবে সোজা হয়ে দাঁড়ানো বৃক্ষের ন্যায়, যাকে আল্লাহ যখন ইচ্ছা করেন ভেংগে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪২ | 5242 | ۵۲٤۲

পরিচ্ছদঃ রোগের কাফ্‌ফারা ও ক্ষতিপূরণ এবং মহান আল্লাহ‌র বাণীঃ যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে তাকে সেই কাজের প্রতিফল দেয়া হবে।
৫২৪২। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ যে ব্যাক্তির কল্যাণ কামনা করেন তাকে তিনি মুসীবতে লিপ্ত করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৩ | 5243 | ۵۲٤۳

পরিচ্ছদঃ ২২৫১. রোগের তীব্রতা
৫২৪৩। কাবীসা (রহঃ) ও বিশর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চাইতে অধিক রোগ যাতনা ভোগকারী অন্য কাউকে দেখিনি।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৪ | 5244 | ۵۲٤٤

পরিচ্ছদঃ ২২৫১. রোগের তীব্রতা
৫২৪৪। মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিড়িত অবস্থায় তাঁর কাছে গেলাম। এ সময় তিনি কঠিন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আমি বললাম নিশ্চয়ই আপনি কঠিন জ্বরে আক্রান্ত। আমি এও বললাম যে, এটা এ জন্য যে, আপনার জন্য দ্বিগুন সওয়াব রয়েছে। তিনি বলেনঃ হ্যাঁ। যে কোন মুসলিম মুসীবতে আক্রান্ত হয়, তার উপর থেকে গুনাহ সমুহ এভাবে ঝরে যায়, যে ভাবে বৃক্ষ থেকে ঝরে যায় তার পাতাগুলো।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৫ | 5245 | ۵۲٤۵

পরিচ্ছদঃ ২২৫২. মানুষের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হন নবীগণ। এর পরে ক্রমান্বয়ে প্রথম ব্যক্তি এবং পরবর্তী প্রথম ব্যক্তি
৫২৪৫। আবদান (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম। তখন তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। আমি বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি তো কঠিন জ্বরে আক্রান্ত। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তোমাদের দু’ব্যাক্তি যতটুকু জ্বরে আক্রান্ত হয়, আমি একাই ততটুকু জুরে আক্রান্ত হই। আমি বললাম এটি এজন্য সে, আপনার জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সাওয়াব। তিনি বললেন হ্যাঁ ব্যাপারটি এমনই। কেননা যে কোন মুসলিম মুসীবতে আক্রান্ত হয়, চাই একটি কাটা কিংবা আরো ক্ষুদ্র কিছু হোক না কেন, এর দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহগুলোকে মুছে দেন, যেভাবে গাছ থেকে পাতাগুলো ঝরে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৬ | 5246 | ۵۲٤٦

পরিচ্ছদঃ ২২৫৩. রোগীর সেবা করা ওয়াজিব
৫২৪৬। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ মূসা আশাআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, রোগীর সেবা কর এবং কয়েদীকে মুক্ত কর।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৭ | 5247 | ۵۲٤۷

পরিচ্ছদঃ ২২৫৩. রোগীর সেবা করা ওয়াজিব
৫২৪৭। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … বারা ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাতটি জিনিসের আদেশ দিয়েছেন এবং সাতটি বিষয়ে নিষেধ করেছেন। তিনি আামাদের নিষেধ করেছেনঃ সোনার আংটি, মোটা ও পাতলা এবং কারুকার্য খচিত রেশমী কাপড় ব্যাবহার করতে এবং কাসসী ও মিয়সারা কাপড় ব্যবহার করতে। আর তিনি আমাদের আদেশ করেছেনঃ আমরা যেন জানাযার অনুসরন করি, রোগীর সেবা করি এবং বেশী বেশী করে সালাম করি।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৮ | 5248 | ۵۲٤۸

পরিচ্ছদঃ ২২৫৪. সংজ্ঞাহীন ব্যক্তির সেবা করা
৫২৪৮। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি ভীষণভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) পায়ে হেঁটে আমার খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য আমার নিকট আসলেন। তাঁরা আমাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পেলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর তিনি তার অবশিষ্ট পানি আমার গায়ের উপর ছিটিয়ে দিলেন। ফলে আমি সংজ্ঞা ফিরে পেয়ে দেখলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার সম্পদের ব্যাপারে আমি কি করবো? আমার সম্পদের ব্যাপারে কি পদ্ধতিতে আমি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো? তিনি তখন আমাকে কোন উত্তর দিলেন না। অবশেষে মীরাসের আয়াত নাযিল হল।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৯ | 5249 | ۵۲٤۹

পরিচ্ছদঃ ২২৫৫. মৃগী রোগে আক্রান্ত রোগীর ফযীলাত
৫২৪৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আতা ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) আমাকে বললেন আমি কি তোমাকে একজন জান্নাতী মহিলা দেখাবো না? আমি বললাম অবশ্যই। তখন তিনি বললেনঃ এই কৃষ্ণ বর্ণের মহিলাটি, সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসেছিল। অরপর সে বললঃ আমি মৃগী রোগে আক্রান্ত হই এবং এ অবস্থায় আমার ছতর খুলে যায়। সুতরাং আপনি আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোআ করুন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি যদি চাও, ধৈর্য ধারণ করতে পার। তোমার জন্য থাকবে জান্নাত। আর তুমি যদি চাও, তাহলে আমি আল্লাহর কাছে দুআ করি, যেন তোমাকে নিরাময় করেন। মহিলা বলল আমি ধৈর্য ধারণ করবো। সে বলল তবে যে সে অবস্থায় ছতর খুলে যায়। কাজেই আল্লাহর নিকট দুআ করুন যেন আমার ছতর খুলে না যায়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য দু’আ করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫০ | 5250 | ۵۲۵۰

পরিচ্ছদঃ ২২৫৫. মৃগী রোগে আক্রান্ত রোগীর ফযীলাত
৫২৫০। মুহাম্মদ (রহঃ) … আতা (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি সেই উম্মে যুফার (রাঃ) কে দেখেছেন কাবার গিলাফ ধরা অবস্থায়। সে ছিল দীর্ঘ দেহী কৃঞ্চ বর্ণের এক মহিলা।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫১ | 5251 | ۵۲۵۱

পরিচ্ছদঃ ২২৫৬. যে ব্যক্তির দৃষ্টিশক্তিচলে গেছে তার ফযীলাত
৫২৫১। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ বলেছেনঃ আমি যদি আমার কোন বান্দাকে তার অতি প্রিয় দুটি জিনিসের ব্যাপারে পরীক্ষায় ফেলি, আর সে তাতে ধৈর্য ধারণ করে, তাহলে আমি তাকে সে দুটির বিনিময়ে দান করবো জান্নাত। আনাস (রাঃ) বলেন, দুটি প্রিয় জিনিস বলে তার উদ্দেশ্য হল সে ব্যাক্তির চক্ষুদ্বয়। অনুরূপ বর্ণনা করেছেন আশআস ইবনু জাবির ও আবূ যিলাল (রহঃ) আনাস (রাঃ) এর সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫২ | 5252 | ۵۲۵۲

পরিচ্ছদঃ ২২৫৭. মহিলাদের পুরুষ রোগীর সেবা করা। উম্মু দারাদা (রাঃ) মসজিদে অবস্থানকারী জনৈক আনসার ব্যক্তির সেবা করেছিলেন
৫২৫২। কুতায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আসলেন, তখন আবূ বকর ও বিলাল (রাঃ) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। তিনি বলেনঃ আমি তাদের কাছে গেলাম এবং বললাম হে আব্বাজান! আপনি কেমন অনুভব করছেন? হে বিলাল, আপনি কেমন অনুভব করছেন? আবূ বকর (রাঃ) এর অবস্থা ছিল, তিনি যখন জ্বরে আক্রান্ত হতেন তখন তিনি আবৃতি করতেনঃ

সব মানুষ সুপ্রভাত ভোগ করে আপন পরিবার পরিজনের মধ্যে, আর মৃত্যু অপেক্ষমান থাকে তার জুতার ফিতার চেয়ে সন্নিকটে। বিলাল (রাঃ) এর জ্বর যখন থামত তখন তিনি বলতেন হায়! আমি যদি লাভ করতাম একটি রাত কাটানোর সুযোগ এমন উপত্যকায় যে আমার পাশে আছে ইযখির ও জালীল ঘাস। যদি আমার অবতরণ হতো কোন দিন মাজিন্নার কূপের কাছে। হায়! আমি কি কখনো দেখা পাব শামা ও তাফীলের।

আয়িশা (রাঃ) বলেন, এরপর আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তাকে এদের অবস্থা জানালাম। তখন তিনি দুআ করে বললেনঃ হে আল্লাহ! মদিনাকে আমাদের কাছে প্রিয় করে দাও, যে রূপে তুমি আমাদের কাছে মক্কা প্রিয় করে দিয়েছ কিংবা সে অপেক্ষা আরো অধিক প্রিয় করে দাও। হে আল্লাহ! আর মদিনাকে উপযোগী করে দাও এবং মদিনার মুদ্দ ও সা’ এর ওযনে বরকত দাও। আর এখানকার জ্বরকে স্থানান্তরিত করে জুহফা এলাকায় স্থাপন করে দাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৩ | 5253 | ۵۲۵۳

পরিচ্ছদঃ ২২৫৮. অসুস্থ শিশুদের সেবা করা
৫২৫৩। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়েদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এক কন্যা (যায়নাব) তাঁর কাছে সংবাদ পাঠিয়েছেন, এ সময় উসমা, সা’দ ও সম্ভবত উবায় (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলেন। সংবাদ ছিল এ মর্মে যে, (যায়নাব বলেছেন) আমার এক শিশুকন্যা মৃত্যুশয্যায় শায়িত। কাজেই আপনি আমাদের এখানে আসুন। উত্তরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে সালাম পাঠিয়ে বলে দিলেনঃ সব আল্লাহর ইখতিয়ার। তিনি যা চান নিয়ে নেন, আবার যা চান দিয়ে যান। তার কাছে সব কিছু একটি নির্ধারিত সমতা আছে। কাজেই তুমি ধৈর্যধারণ কর এবং উত্তম প্রতিদানের আশায় থাকো।

তারপর আবারো তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কসম ও তাগিদ দিয়ে সংবাদ পাঠালে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে দাঁড়ালেন। আমরাও দাঁড়িয়ে গেলাম। এরপর শিশুটিকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোলে তুলে দেওয়া হল। এ সময় তার নিঃশ্বাস দ্রুত উঠানামা করছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দু-চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরতে লাগলো। সা’দ (রাঃ) বললেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটা কি? তিনি উত্তর দিলেনঃ এটা রহমত। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা করেন তার অন্তরে এটিকে স্থাপন করেন। আর আল্লাহ তার মেহেরবান বান্দাদের প্রতই মেহেরবানী করে থাকেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৪ | 5254 | ۵۲۵٤

পরিচ্ছদঃ ২২৫৯. অসুস্থ বেদুঈনদের সেবা করা
৫২৫৪। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক বেদুঈনের কাছে গিয়েছিলেন! তার রোগের খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য। বর্ণনাকারী বলেনঃ আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিয়ম ছিল তিনি যখন কোন রোগীকে দেখতে যেতেন তখন তাকে বলতেন কোন ক্ষতি নেই ইনশাআল্লাহ তুমি তোমার গুনাহ থেকে পবিত্রতা লাভ করবে। তখন বেদুঈন বললঃ আপনি কি বলেছেন যে, এটা গুনাহ থেকে পবিত্র করে দেবে? কখনো নয়, বরং এটা এমন এক জ্বর যা এক অতি বৃদ্ধকে গরম করছে কিংবা সে বলেছিল উত্তপ্ত করছে, যা তাকে কবরস্থান দেখিয়ে ছাড়বে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ তবে তেমনই।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৫ | 5255 | ۵۲۵۵

পরিচ্ছদঃ ২২৬০. মুশরিক রোগীর দেখাশুনা করা
৫২৫৫। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ইয়াহুদীর ছেলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমত করত। ছেলেটির অসুখ হলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দেখতে এলেন। এরপর তিনি বললেন তুমি ইসলাম গ্রহন করো। সে ইসলাম গ্রহন করলো। সাঈদ ইবনু মূসায়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আবূ তালিব মৃত্যুমুখে পতিত হলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে এসেছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৬ | 5256 | ۵۲۵٦

পরিচ্ছদঃ ২২৬১. কোন রোগীকে দেখতে গিয়ে সালাতের সময় হলে সেখানেই উপস্থিত লোকদের নিয়ে জামা’আতবদ্ধভাবে সালাত আদায় ক
৫২৫৬। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থতার সময় লোকজন তাকে দেখার জন্য তাঁর কাছে আসলে তিনি তাদের নিয়ে বসা অবস্থায় সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। লোকজন তার পেছনে দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) শুরু করেছিল। ফলে তিনি তাদের বসার জন্য ইশারা করেন। এরপর সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করে তিনি বলেনঃ ইমাম হল এমন ব্যাক্তি যাকে অনুসরন করতে হয়। কাজেই সে যখন রুকু করবে তখন তোমরাও রুকু করবে। সে যখন মাথা উঠাবে, তোমরা মাথা উঠাবে। আর সে যখন বসে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে তখন তোমরাও বসে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৭ | 5257 | ۵۲۵۷

পরিচ্ছদঃ ২২৬২. রোগীর দেহে হাত রাখা
৫২৫৭। মাক্কী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) …. আয়েশা বিনত সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তার পিতা বলেছেন, আমি যখন মক্কায় কঠিনভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখার জন্য আসেন। আমি বললামঃ হে আল্লার নবী! আমি সম্পদ রেখে যাচ্ছি। আর আমার একটি মাত্র কন্যা ছাড়া আর কেউ নেই। এ অবস্থায় আমি কি আমার দু’তৃতীয়াংশ সম্পদের ব্যাপারে অসীয়ত করে এক-তৃতীয়াংশ রেখে যাব? তিনি উত্তর দিলেনঃ না। আমি বললামঃ তা হলে অর্ধেক রেখে দিয়ে আর অর্ধেকের ব্যাপারে অসীয়ত করে যেতে পারি। তিনি বললেনঃ না। আমি বললামঃ তাহলে দু’তৃতীয়াংশ রেখে দিয়ে এক-তৃতীয়াংশ এর ব্যাপারে অসীয়ত করে যেতে পারি? তিনি উত্তর দিলেনঃ এক-তৃতীয়াংশের পার, তবে এক-তৃতীয়াংশও অনেক। তারপর তিনি আমার কপালের উপর তাঁর হাত রাখলেন এবং আমার চেহারা ও পেটের উপর হাত বুলিয়ে বললেনঃ হে আল্লাহ, সা’দকে তুমি নিরাময় কর। তার হিজরত পুর্ন করতে দিন। আমি তার হাতের হিমেল পরশ এখনও পাচ্ছি এবং মনে করি আমি তা কিয়ামত পর্যন্ত পাব।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৮ | 5258 | ۵۲۵۸

পরিচ্ছদঃ ২২৬২. রোগীর দেহে হাত রাখা
৫২৫৮। কুতায়বা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে প্রবেশ করলাম। তখন তিনি ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। আমি তাঁর গায়ে আমার হাত বুলালাম এবং বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কঠিন জ্বরে আক্রান্ত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন হ্যাঁ! আমি এমন কঠিন জ্বরে আক্রান্ত হই, যা তোমাদের দু’জনের হয়ে থাকে। আমি বললাম এটা এ জন্য যে, আপনার জন্য প্রতিদানও হল দ্বিগুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন হ্যাঁ! এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে কোন মুসলিম ব্যাক্তির উপর কোন যন্ত্রণা, রোগ ব্যাধি বা এ ধরনের অন্য কিছু আপতিত হলে তাতে আল্লাহ তার গুনাহগুলো ঝরিয়ে দেন, যে ভাবে গাছ তার পাতাগুলো ঝরিয়ে ফেলে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৯ | 5259 | ۵۲۵۹

পরিচ্ছদঃ ২২৬৩. রোগীর সামনে কী বলতে হবে এবং তাকে কী জবাব দিতে হবে
৫২৫৯। কাবীসা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসুস্থতার সময় তার কাছে এলাম। এরপর তাঁর শরীরে হাত বুলালাম। এ সময় তিনি কঠিন জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। আমি বললাম আপনি কঠিন জ্বরে আক্রান্ত এবং এটা এ জন্য যে আপনার জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সাওয়াব। তিনি বললেন হ্যাঁ! কোন মুসলিম ব্যাক্তির উপর কোন কষ্ট আপতিত হলে তার উপর থেকে গুনাহগুলো এভাবে ঝরে যায়, যেভাবে বৃক্ষ থেকে পাতা ঝরে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬০ | 5260 | ۵۲٦۰

পরিচ্ছদঃ ২২৬৩. রোগীর সামনে কী বলতে হবে এবং তাকে কী জবাব দিতে হবে
৫২৬০। ইসহাক (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রোগীকে দেখার জন্য তার কাছে প্রবেশ করলেন। তখন তিনি বলেনঃ কোন ক্ষতি নেই ইনশাআল্লাহ গুনাহ থেকে তোমার পবিত্রতা লাভ হবে। রোগী বলে উঠলঃ কখনো না বরং এটি এমন জ্বর, যা এক অতি বৃদ্ধের গায়ে টগবগ করছে আশংকা হয় যেন তাকে কবরে পৌঁছাবে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ, হবে তাই।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬১ | 5261 | ۵۲٦۱

পরিচ্ছদঃ ২২৬৪. রোগীর দেখাশুনা করা, আরোহী অবস্থায়, পায়ে চলা অবস্থায়, এবং গাধার পিঠে সাওয়ারী অবস্থায়
৫২৬১। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়েদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি গাধার পিঠে আরোহন করলেন। গাধাটির পিঠে ছিল ‘ফাদক’ এলাকায় তৈরী চাদর মোড়ানো একটি গদি। তিনি নিজের পেছনে উসামা (রাঃ) কে বসিয়ে অসুস্থ সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) কে দেখতে গিয়েছিলেন। এটা বদর যুদ্ধের পূর্বেকার ঘটনা। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলতে চলতে এক পর্যায়ে এক মজসিসের পাশ অতিক্রম করতে লাগলেন। সেখানে ছিল আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালুল। এ ঘটনা ছিল আবদুল্লাহর ইসলাম গ্রহনের আগের। মজলিসটির মধ্যে মুসসিম, মুশরিক, মূর্তিপূজক ও ইয়াহুদী সম্প্রদায়ের লোকও ছিল। আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ)-ও সে মজলিসে উপস্থিত ছিলেন। সাওয়ারী জানোয়ারটির পায়ের ধূলা-বালি যখন মজলিসের লোকদের মাঝে উড়াতে লাগল, তখন আবদুল্লাহ ইবনু উবায় তার চাঁদর দিয়ে নিজের নাক চেপে ধরল এবং বলল আমাদের উপর ধূলা-বালু উড়াবেন না।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম দিলেন এবং নীচে অবতরণ করে তাদের আল্লাহর প্রতি আহবান জানালেন। এরপর তিনি তাদের সামনে কুরআন পাঠ করলেন। তখন আবদুল্লাহ ইবনু উবায় তাঁকে বললঃ জনাব, আপনি যা বলেছেন আমার কাছে তা পছন্দনীয় নয়। যদি এ সব কথা সত্য হয়, তাহলে আপনি এ মজলিসে আমাদের কষ্ট দিবেন না। বরং আপনি নিজ বাড়ীতে চলে যান এবং সেখানে যে আপনার কাছে যাবে, তার কাছে এসব বৃত্তান্ত প্রকাশ করবেন। ইবনু রাওয়াহা বলে উঠলেনঃ অবশ্যই, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এসব বক্তব্য নিয়ে আমাদের মজলিসে আসবেন। আমরা এগুলো পছন্দ করি। এরপর মুসলিম, মুশরিক, ও ইয়াহুদীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা আরম্ভ হয়ে গেল, এমন কি তারা পরস্পর মারামারি করতে উদ্যত হলো।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের শান্ত ও নীরব করতে চেষ্টা করতে থাকেন। অবশেষে সবাই শান্ত হলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওয়ারীর উপর আরোহন করেন এবং সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) এর বাড়ীতে প্রবেশ করেন। এরপর তিনি তাঁকে অর্থাৎ সা’দ (রাঃ) কে বললেন তুমি কি শুনতে পাওনি আবদুল্লাহ ইবনু উবায় কি উক্তি করেছে? সা’দ (রাঃ) উত্তর দিলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! তাকে ক্ষমা করুন এবং উপেক্ষা করুন। আল্লাহ আপনাকে যে মর্যাদা দান করার ইচ্ছা করেছেন তা দান করেছেন। আমাদের এ উপদ্বীপ এলাকার লোকজন একমত হয়েছিল তাকে রাজমুকট পরিয়ে দেওয়ার জন্য এবং তাকে নেতৃত্ব দান করার জন্য। এরপর যখন আপনাকে আল্লাহ যে হক ও সত্য দান করেছেন তখন এর দ্বারা তার ইচ্ছা পণ্ড হয়ে গেল। এতে সে গভীর মনোক্ষুন্ন হল। আর আপনি তার যে আচরণ দেখলেন, তার কারণ এটই।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬২ | 5262 | ۵۲٦۲

পরিচ্ছদঃ ২২৬৪. রোগীর দেখাশুনা করা, আরোহী অবস্থায়, পায়ে চলা অবস্থায়, এবং গাধার পিঠে সাওয়ারী অবস্থায়
৫২৬২। আমর ইবনু আব্বাস (রহঃ) … জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার অসুস্থতা দেখার জন্য আমার কাছে এসেছিলেন। এ সময় তিনি না কোন গাধার পিঠে আরোহী ছিলেন, আর না কোন ঘোড়ার পিঠে ছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৩ | 5263 | ۵۲٦۳

পরিচ্ছদঃ ২২৬৫. রোগীর উক্তি “আমি যাতনা গ্রস্থ” কিংবা আমার মাথা গেল, কিংবা আমার যন্ত্রণা প্রচন্ড আকার ধারণ করেছে এর বর্ণনা। আর আইয়ুব (আঃ) এর উক্তিঃ হে আমার রব। আমাকে কষ্ট-যাতনা স্পর্শ করেছে অথচ তুমি তো পরম দয়ালু
৫২৬৩। কাবীসা (রহঃ) … কাব ইবনু উকবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পথ অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন, এ সময় আমি পাতিলের নীচে লাকড়ী জ্বালাচ্ছিলাম। তিনি বললেনঃ তোমার মাথার উকুন কি তোমাকে খুব যন্ত্রণা দিচ্ছে। আমি বললাম জ্বি-হ্যাঁ। তখন তিনি নাপিত ডাকলেন। সে মাথা মুড়িয়ে দিল। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ফিদইয়া আদায় করে দিতে আদেশ করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৪ | 5264 | ۵۲٦٤

পরিচ্ছদঃ ২২৬৫. রোগীর উক্তি “আমি যাতনা গ্রস্থ” কিংবা আমার মাথা গেল, কিংবা আমার যন্ত্রণা প্রচন্ড আকার ধারণ করেছে এর বর্ণনা। আর আইয়ুব (আঃ) এর উক্তিঃ হে আমার রব। আমাকে কষ্ট-যাতনা স্পর্শ করেছে অথচ তুমি তো পরম দয়ালু
৫২৬৪। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আবূ যাকারিয়্যা (রহঃ) … কাসিম ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা (রাঃ) বলেছিলেন হায় যন্ত্রনায় আমার মাথা গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি এমনটি হয় আর আমি জীবিত থাকি তাহলে আমি তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবো, তোমার জন্য দু’আ করবো। আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ হায় আফসুস, আল্লাহর কসম। আমার মনে হয় আপনি আমার মৃত্যুকে পছন্দ করেন। আর এমনটি হচ্ছে আপনি পরের দিনই আপনার অন্যান্য সহধর্মিনাদের সঙ্গে রাত যাপন করতে পারবেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বরং আমি আমার মাথা গেল বলার বেশি যোগ্য। আমি তো ইচ্ছা করেছিলাম কিংবা বলেছেন, আমি ঠিক করেছিলাম আবূ বকর (রাঃ) ও তার ছেলের নিকট সংবাদ পাঠাবো এবং অসীয়ত করে যাবো, যেন লোকদের কিছু বলার অবকাশ না থাকে কিংবা আকাঙ্ক্ষাকারীদের কোন আকাঙ্ক্ষা করার অবকাশ না থাকে। তারপর শুনলাম আল্লাহ (আবূ বকর ব্যতীত অন্য কেউ খিলাফতের আকাঙ্ক্ষা করুক) তা অপছন্দ করবেন, মুমিনগণ তা পরিহার করবেন। কিংবা তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ তা পরিহার করবেন এবং মুমিনগণ তা অপছন্দ করবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৫ | 5265 | ۵۲٦۵

পরিচ্ছদঃ ২২৬৫. রোগীর উক্তি “আমি যাতনা গ্রস্থ” কিংবা আমার মাথা গেল, কিংবা আমার যন্ত্রণা প্রচন্ড আকার ধারণ করেছে এর বর্ণনা। আর আইয়ুব (আঃ) এর উক্তিঃ হে আমার রব। আমাকে কষ্ট-যাতনা স্পর্শ করেছে অথচ তুমি তো পরম দয়ালু
৫২৬৫। মূসা (রহঃ) … ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম। তখন তিনি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। আমি তাঁর গায়ে আমার হাত রাখলাম এবং বললামঃ আপনি কঠিন জ্বরে ভুগছেন। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ যেমনটি তোমাদের দু’জনকে ভুগতে হয়। ইবনু মাসউদ (রাঃ) বললেন আপনার জন্য রয়েছে দ্বিগুন সাওয়াব। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ কোন মুসলিম ব্যাক্তি, কোন কষ্ট বা রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয় কিংবা অন্য কোন যন্ত্রনায় নিপতিত হয়, আল্লাহ তার গুনাহসমূহ মোচন করে দেন, যেমনভাবে বৃক্ষ তার পাতাসমূহ ঝেড়ে ফেলে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৬ | 5266 | ۵۲٦٦

পরিচ্ছদঃ ২২৬৫. রোগীর উক্তি “আমি যাতনা গ্রস্থ” কিংবা আমার মাথা গেল, কিংবা আমার যন্ত্রণা প্রচন্ড আকার ধারণ করেছে এর বর্ণনা। আর আইয়ুব (আঃ) এর উক্তিঃ হে আমার রব। আমাকে কষ্ট-যাতনা স্পর্শ করেছে অথচ তুমি তো পরম দয়ালু
৫২৬৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আমির ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বিদায় হাজ্জের (হজ্জ) সময় আমার রোগ কঠিন আকার ধারন করলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দেখতে আসলেন। আমি বললামঃ (মৃত্যু) আমার সন্নিকটে এসে গেছে যা আপনি দেখতে পাচ্ছেন অথচ আমি একজন বিত্তবান ব্যাক্তি। একটি মাত্র কন্যা ছাড়া আমার কোন ওয়ারিস নেই। এখন আমি আমার সম্পদের দু’তৃতীয়াংশ সাদকা করতে পারি কি? তিনি উত্তর দিলেনঃ না। আমি বললামঃ তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেনঃ না। আমি বললাম এক তৃতীয়াংশ। তিনি বললেনঃ এও অনেক বেশী। নিশ্চয়ই তোমার ওয়ারিসদের সাবলম্বী রেখে যাওয়াই উত্তম তাদের নিঃস্ব ও মানুষের দারগ্রস্ত বানিয়ে যাওয়ার চাইতে। আর তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে যে ব্যয়ই কর না কেন, তার বিনিময়ে তোমাকে সাওয়াব দেওয়া হবে। এমন কি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যে আহার তুলে দাও, তাতেও।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৭ | 5267 | ۵۲٦۷

পরিচ্ছদঃ ২২৬৬. তোমারা উঠে যাও, রোগীর এ কথা বলা
৫২৬৭। ইবরাহীম ইবনু মূসা ও আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকালের সময় ঘনিয়ে এলো, তখন ঘরের মধ্যে অনেক মানুষের সমাবেশ ছিল। যাদের মধ্যে উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ)-ও ছিলেন। তখন তিনি (রোগ যন্ত্রনায় কাতর অবস্থায়) বললেনঃ লও, আমি তোমাদের জন্য কিছু লিখে দেব, যাতে পরবর্তীতে তোমরা বিভ্রান্ত না হও। তখন উমর (রাঃ) বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর বেশি যাতনা তীব্রতর হয়ে উঠেছে। আর তোমাদের নিকট কুরআন বিদ্যমান। আর আল্লাহর কিতাবই আমাদের জন্য যথেষ্ট। এ সময়ে আহলে বাইতর মধ্যে মতানৈক্যের সৃষ্টি হল। তারা বাদানুবাদে প্রবৃত্ত হলেন। তারপরে কেউ কেউ বলতে লাগলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কাগজ পৌছিয়ে দাও এবং তিনি আমাদের জন্য কিছু লিখে দেবেন, যাতে পরবর্তীতে তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট না হও। আবার তাদের মধ্যে অন্যরা উমর (রাঃ) যা বললেন তা বলে যেতে লাগলেন। এভাবে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তাঁদের বাকবিতণ্ডা ও মতানৈক্য বেড়ে চলল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তোমরা উঠে যাও। উবায়দুল্লাহ (রহঃ) বলেনঃ ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলতেন, বড় মুসীবত হল লোকজনের সেই মতানৈক্য ও তর্ক-বিতর্ক, যা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সেই লিখে দেওয়ার মধ্যে অন্তরায় সৃষ্টি করেছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৮ | 5268 | ۵۲٦۸

পরিচ্ছদঃ ২২৬৭. দু’আর উদ্দেশ্যে অসুস্থ শিশুকে নিয়ে যাওয়া
৫২৬৮। ইবরাহীম ইবনু হামযা (রহঃ) … সায়েব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার খালা আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে গেলেন। এরপর তিনি বললেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমর বোনের ছেলেটি অসুস্থ। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার মাথায় হাত বুলালেন এবং আমার জন্য বরকতের দু’আ করলেন। এরপর তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। আমি তার উযূ (ওজু/অজু/অযু)র অবশিষ্ট পানি পান করলাম এবং তার পিঠের পেছনে গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন আমি মোহরে নবুওয়াতের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সেটি তার দুকাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত এবং খাটিয়ার গোল ঘুন্টির মত।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৯ | 5269 | ۵۲٦۹

পরিচ্ছদঃ ২২৬৮. রোগীর মৃত্যু কামনা করা
৫২৬৯। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনু মলিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ দুঃখ দৈন্যে নিপতিত হওয়ার কারণে যেন মৃত্যু কামনা না করে। যদি এমন একটা কিছু করতেই হয়, তা হলে সে যেন বলে হে আল্লাহ! আমাকে জীবিত রাখ, যতদিন পর্যন্ত আমার জন্য জীবিত থাকা কল্যাণকর হয় এবং আমাকে মৃত্যু দাও, যখন আমার জন্য মৃত্যু কল্যাণকর হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭০ | 5270 | ۵۲۷۰

পরিচ্ছদঃ ২২৬৮. রোগীর মৃত্যু কামনা করা
৫২৭০। আদম (রহঃ) … কায়স ইবনু আবূ হাযিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা অসুস্থ খাব্বাব (রাঃ) কে দেখতে গেলাম। এ সময় (তার পেটে চিকিৎসার জন্য) সাতবার দাগ লাগানো হয়েছিল। তখন তিনি বললেনঃ আমাদের সংগীরা যারা (পূর্বেই) ইন্তেকাল করেছেন তাঁরা এমতাবস্থায় চলে গেছেন যে, দুনিয়া তাঁদের আমলের সাওয়াবে কোন রকম কমতি করতে পারেনি। আর আমরা এমন জিনিস লাভ করেছি, যা মাটি ছাড়া অন্য কোথাও রাখার জায়গা পাই না। যদি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মৃত্যুর জন্য দুআ কামনা করতে নিষেধ না করতেন, তবে আমি মৃত্যুর জন্য দু’আ করতাম। এরপর আমরা অন্য এক সময় তার কাছে এসেছিলাম। তখন তিনি তার বাগানের দেয়াল তৈরী করছিলেন। তিনি বললেনঃ মুসলমান ব্যাক্তিকে তার সকল প্রকার ব্যয়ের উপর সওয়াব দান করা হয় তবে এ মাটিতে স্থাপিত জিনিসের কথা ভিন্ন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭১ | 5271 | ۵۲۷۱

পরিচ্ছদঃ ২২৬৮. রোগীর মৃত্যু কামনা করা
৫২৭১। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি তোমাদের কাউকে তার নেক আমল জান্নাতে প্রবেশ করাতে সক্ষম হবে না। লোকজন প্রশ্ন করলঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনাকেও নয়? তিনি বললেনঃ আমাকেও নয়, ততক্ষন পর্যন্ত আল্লাহ আমাকে তার করুণা ও মেহেরবানীর দ্বারা ঢেকে না দেন। কাজেই মধ্যপন্থা অবলম্বন কর এবং নৈকট্য লাভের চেষ্টা করে যাও। আর তোমাদের মধ্যে কেউ যেন মৃত্যু কামনা না করে। কেননা, সে ভাল লোক হলে (বেশী বয়স পাওয়ার দরুন) তার নেক আমল বৃদ্ধি পাওয়ার সুযোগ পাবে। পক্ষান্তরে মন্দ লোক হলে সে লজ্জিত হয়ে তওবা করার সুযোগ লাভ করতে পারবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭২ | 5272 | ۵۲۷۲

পরিচ্ছদঃ ২২৬৮. রোগীর মৃত্যু কামনা করা
৫২৭২। আবদুল্লাহ ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমার পায়ের উপর হেলান দেওয়া অবস্থায় বলতে শুনেছি, হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করে দাও, আমার প্রতি অনুগ্রহ কর, আর আমাকে মহান বন্ধুর সঙ্গে মিলিয়ে দাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭৩ | 5273 | ۵۲۷۳

পরিচ্ছদঃ ২২৬৯. রোগীর জন্য পরিচর্যাকারীর দু’আ করা। আয়শা বিনত সা’দ তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ হে আল্লাহ্‌! সা’দকে নিরাময় কর
৫২৭৩। মূসা ইবনু ইসমাইল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিয়ম ছিল, তিনি যখন কোন রোগীর কাছে আসতেন কিংবা তার নিকট যখন কোন রোগীকে আনা হত তখন তিনি বলতেন কষ্ট দূর করে দাও হে মানুষের রব, শেফা দান কর, তুমিই একমাত্র শেফাদানকারী। তোমার শেফা ব্যতীত অন্য কোন শেফা নেই। এমন শেফা দান কর যা সামান্য রোগকেও অবশিষ্ট না রাখে। আমর ইবনু আবূ কায়স ও ইবরাহীম ইবনু তুহমান হাদীসটি মানসুর ইবরাহীম ও আবূযযোহা থেকে إِذَا أُتِيَ بِالْمَرِيضِ “যখন কোন রোগীকে আনা হতো”, এভাবে বর্ননা করেছেন। জারীর হাদীসটি মানসুর আবূযযোহা সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তিনি “যখন রোগীর কাছে আসতেন” এ শব্দসহ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭৪ | 5274 | ۵۲۷٤

পরিচ্ছদঃ ২২৭০. রোগীর পরিচর্যাকারীর অযু করা
৫২৭৪। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে প্রবেশ করলেন তখন আমি ছিলাম অসুস্থ। তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। এরপর আমর শরীরের উপর উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি ছিটিয়ে দিলেন। কিংবা বর্ণনাকারী বলেছেন এরপর তিনি উপস্থিত লোকদের বলেছেনঃ তার শরীরে পানি ছিটিয়ে দাও। ফলে আমি চেতনা ফিরে পেলাম। আমি বললাম কালালাহ (পিতাও নেই, সন্তানও নেই) ব্যতীত আমার কোন ওয়ারিস নেই। সুতরাং আমার পরিত্যক্ত সম্পদ কিভাবে বণ্টন করা হবে? তখন ফারায়েয সম্পর্কিত আয়াত নাযিল হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭৫ | 5275 | ۵۲۷۵

পরিচ্ছদঃ ২২৭১. জ্বর, প্লেগ ও মহামারী দূর হবার জন্য কোন ব্যক্তির দু’আ করা
৫২৭৫। ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মদিনা) আসলেন, তখন আবূ বকর (রাঃ) ও বিলাল (রাঃ) জ্বরাক্রান্ত হলেন। তিনি বলেনঃ আমি তাদের কাছে গেলাম এবং বললাম আব্বাজান, আপনার কাছে কেমন লাগছে? হে বিলাল! আপনি কিরূপ অনুভব করছেন? তিনি বললেনঃ আবূ বকর (রাঃ) যখন জ্বরাক্রান্ত হতেন তখন তিনি আবৃত্তি করতেনঃ সব মানুষ সুপ্রভাত ভোগ করে আপন পরিবার পরিজন নিয়ে। আর মৃত্যু অপেক্ষমান থাকে তার জুতার ফিতার চাইতেও সন্নিকটে।

আর বিলাল (রাঃ) এর নিয়ম ছিল যখন তার জ্বর ছেড়ে যেত, তিনি তখন স্বর উচ্চস্বরে বলতেনঃ হায়! আমি যদি লাভ করতাম একটি রাত কাটানোর সুযোগ এমন উপত্যকায় যেখানে আমার পাশে আছে ইযখির ও জালীল ঘাস। যদি আমার অবতরন হতো কোন দিন মাযিন্না অঞ্চলের কুপের কাছে, যদি আমার চোখে ভেসে আসতো শামা ও তাফীল। আয়িশা (রাঃ) বলেন এরপর আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম এবং তাঁকে সংবাদ দিলাম। তখন তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! আমাদের কাছে মদিনাকে প্রিয় বানিয়ে দাও যেভাবে আমাদের কাছে প্রিয় ছিল মক্কা এবং মদিনাকে স্বাস্থ্যকর বানিয়ে দাও। আর মদিনার মুদ্দ ও সা’ কে বরকতময় করে দাও এবং মদিনার জ্বরকে স্থানান্তরিত করে “জুহফা” অঞ্চলে স্থাপন করে দাও।