বুখারি হাদিস নং ৫০৮০-৫০৭৯
পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত…. সুতরাং তোমরা তাদের ভয় করো না; বরং শুধু আমাকেই ভয় করো (মায়িদাহঃ ৩) পর্যন্ত এবং আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই তোমাদিগেকে পরীক্ষা করবেন কিছু শিকার সম্বন্ধে…… আয়াতের শেষ পর্যন্ত (মায়িদাহঃ ৯৪) ইব্ন আব্বাস (রা) বলেন, الْعُقُودُ অঙ্গীকারসমূহ যা কিছু হালাল করা হয় বা হারা করা হয়। إِلاَّ مَا يُتْلَى عَلَيْكُمْ শুকুর। يَجْرِمَنَّكُمْ তোমাদেরকে যেন প্ররোচিত করে। شَنَآنُ শত্রুতা। الْمُنْخَنِقَةُ যে প্রাণীটি শ্বাসরুদ্ধ করার কারণে মারা গিয়েছে। الْمَوْقُوذَةُ যে প্রাণীকে লাঠির দ্বারা আঘাত করার দরুন তার দেহ থেতলিয়ে গিয়ে মারা যায়। الْمُتَرَدِّيَةُ যে প্রাণী পাহাড়ের উপর থেকে পড়ে মারা গিয়েছে। النَّطِيحَةُ যে বকরী শিং এর গুতায় মারা গিয়েছে। ইব্ন আব্বাস (রা) বলেন, এর মধ্যে জন্তুটির তুমি লেজ বা চোখ নড়াচড়া করা অবস্থায় পাবে। সেটাকে যবাহ করবে এবং আহার করবে।
৫০৮০। আবূ নুআইম (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তীরের ফলকের আঘাতের দ্বারা লদ্ধ শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। উত্তরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তীরের ধারাল অংশের দ্বারা যেটি নিহত হয়েছে সেটি খাও। আর ফলকের বাঁটের আঘাতে যেটি নিহত হয়েছে সেটি অকীয- (অর্থাৎ থেতলিয়ে যাওয়া মৃতের অন্তর্ভুক্ত)। আমি তাকে কুকুরের দ্বারা লদ্ধ শিকার সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করলাম। উত্তরে তিনি বললেনঃ যে শিকারকে কুকুর তোমার জন্য ধরে রাখে সেটি খাও। কেননা, কুকুরের ঘায়েল করা যবাহর হুকুম রাখে। তবে তুমি যদি তোমার কুকুর বা কুকুরগুলোর সঙ্গে অন্য কুকুর পাও, এবং তুমি আশংকা কর যে, অন্য কুকুরটিও তোমার কুকুরের শিকার পাকড়াও করেছে এবং হত্যা করেছে, তা হলে তা খেও না। কেননা, তুমি তো কেবল নিজের কুকুর ছাড়াকালে বিসমিল্লাহ বলেছ। অন্যের কুকুরের ক্ষেত্রে তা বলনি।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৮১ | 5081 | ۵۰۸۱
পরিচ্ছদঃ ২১৬৮. তীর লব্ধ শিকার। বন্দুকের গুলিতে শিকার সম্বন্ধে ইব্ন উমর (রা) বলেছেনঃ এটি মাওকুযাহ বা থেতলিয়ে যাওয়া শিকারের অন্তর্ভূক্ত। সালিম, কাসিম, মুজাহিদ, ইব্রাহীম, আতা ও হাসান বসীর (র) একে মাকরূহ মনে করেন। হাসানের মতে গ্রাম এলাকা ও শহর এলাকায় বন্দুক দিয়ে শিকার করা মাকরূহ। থবে অন্যত্র শিকার করতে কোন দোষ নেই।
৫০৮১। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তীরের শিকার সম্পর্কে জিজাসা করলাম। তিনি বললেনঃ যদি তীরের ধারাল অংশ দ্বারা আঘাত করে থাক তাহলে খাও আর যদি ফলকের আঘাত লেগে থাকে এবং শিকারটি মারা যায়, তাহলে খেওনা। কেননা, সেটি, ওয়াকীয বা থেতলিয়ে মরার অন্তর্ভুক্ত। আমি বললামঃ আমি তো শিকারের জন্য কুকুর ছেড়ে দেই। তিনি উত্তর দিলেনঃ যদি তোমার কুকুরকে তুমি বিসমিল্লাহ পড়ে ছেড়ে থাক, তা হলে খাও। আমি আবার বললামঃ যদি কুকুর কিছুটা খেয়ে ফেলে? তিনি বললেনঃ তা হলে খেও না। কেননা, সে তা তোমার জন্য ধরে রাখেনি বরং সে ধরেছে নিজের জন্যই। আমি বললামঃ আমি আমার কুকুরকে পাঠাবার পর যদি তার সঙ্গে অন্য কুকুরকেও দেখতে পাই, তখন? তিনি বললেনঃ তাহলে খেওনা। কেননা, তুমি তো কেবল তোমার কুকুর ছাড়ার সময় বিসমিল্লাহ বলেছ, অন্য কুকুরের ক্ষেত্রে বিসমিল্লাহ বলনি।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৮২ | 5082 | ۵۰۸۲
পরিচ্ছদঃ ২১৬৯. তীরের ফলকে আঘাত প্রাপ্ত শিকার
৫০৮২। কাবীসা (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কুকুরগুলোকে শিকারে পাঠিয়ে থাকি। তিনি বললেনঃ কুকুরগুলো তোমার জন্য যেটি ধরে রাখে সেটি খাও। আমি বললামঃ যদি ওরা হত্যা করে ফেলে? তিনি বললেনঃ যদি ওরা হত্যাও করে ফেলে। আমি বললাম আমরা তো ফলকের সাহায্যেও শিকার করে থাকি। তিনি বললেনঃ সেটি খাও যেটি তীরে যখম করেছে। আর যেটি তীরের পার্শ্বের আঘাতে মারা গেছে সেটি খেওনা।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৩ | 5083 | ۵۰۸۳
পরিচ্ছদঃ ২১৭০. ধনুকের সাহায্যে শিকার করা। হাসান ও ইব্রাহীম (র) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি যদি শিকারকে আঘাত করে, ফলে তার হাত কিম্বা পা পৃথক হয়ে যায়, তাহলে পৃথক অংশটি খাওয়া যাবে না, অবশিষ্ট অংশটি খাওয়া যাবে। ইব্রাহীম (র) বলেছেনঃ তুমি যদি শিকারের ঘাড়ে কিম্বা মধ্যভাগে আঘাত কর, তা হলে তা খাও। যায়েদের সূত্রে আ’মাশ (র) বলেছেন যে, আবদুল্লাহ ইব্ন মাস’উদের গোত্রে একটি গাধা নাগালের বাইরে চলে গিয়েছিল। তখন তিনি আদেশ দিয়েছিলেনঃ তার দেহের যে অংশই সম্ভব হয় সেখানেই আঘাত কর। তারপর যে অংশটি ছিঁড়ে যাবে তা ফেলে দাও, আর অবশিষ্ট অংশ খাও।
৫০৮৩। আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) … আবূ সা’লাবা আল খুশানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ হে আল্লাহর নাবী! আমরা আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের এলাকায় বসবাস করি। আমরা কি তাদের থালায় খেতে পারি? তাছাড়া আমরা শিকারের অঞ্চলে থাকি। তীর ধনুকের সাহায্যে শিকার করি এবং প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন কুকুর দিয়ে শিকার করে থাকি ও এমতাবস্থায় আমার জন্য কোনটি দুরস্ত হবে? উত্তরে তিনি বললেনঃ তুমি যে সকল আহলে কিতাবের কথা উল্লেখ করলে তাতে বিধান হল যদি ভিন্ন পাও তাহলে তাদের পাত্রে খাবে না। আর যদি না পাও তাহলে তাদের পাত্রগুলো ধৌত করে নাও। তারপর তাতে আহার কর। আর যে প্রানীকে তুমি তোমার তীর ধনূকের সাহায্যে শিকার করেছ এবং বিসমিল্লাহ পড়েছ সেটি খাও। আর যে প্রানীকে তুমি তোমার প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কুকুরের সাহায্যে শিকার করেছ এবং বিসমিল্লাহ পড়েছ। সেটি খাও আর যে প্রানীকে তুমি তোমার প্রশিক্ষণবিহীন কুকুর দ্বারা শিকার করেছ সেটি যদি যবাহ করার সুযোগ পাও, তা হলে খেতে পার।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৪ | 5084 | ۵۰۸٤
পরিচ্ছদঃ ২১৭১. ছোট ছোট পাথর নিক্ষেপ করা ও বন্দুক মারা
৫০৮৪। ইউসুফ ইবনু রাশেদ (রহঃ) … আবদুলাহ ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি এক ব্যাক্তিকে দেখলেন সে ছোট ছোট পাথর নিক্ষেপ করছে। তখন তিনি তাকে বললেনঃ পাথর নিক্ষেপ করোনা। কেননা, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাথর করতে নিষেধ করেছেন অথবা রাবী বলেছেনঃ পাথর ছোড়াকে তিনি অপছন্দ করতেন এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেতেনঃ এর দ্বারা কোন প্রানী শিকার করা হয় না এবং কোন শত্রুকেও ঘায়েল করা হয় না। তবে এটি কারো দাত ভেংগে ফেলতে পারে এবং চোখ উপড়ে দিতে পারে। তারপর তিনি আবার তাকে পাথর ছুড়তে দেখলেন। তখন তিনি বললেনঃ আমি তোমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীস বর্ণনা করেছিলাম যে, তিনি পাথর নিক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন অথবা তিনি তা অপছন্দ করেছেন। অথচ তুমি পাথর নিক্ষেপ করছ? আমি তোমার সঙ্গে কথাই বলব না এতকাল এতকাল পর্যন্ত।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৫ | 5085 | ۵۰۸۵
পরিচ্ছদঃ ২১৭২. যে ব্যক্তি শিকার বা পশু-রক্ষার কুকুর ছাড়া অন্য কুকুর পালন করে
৫০৮৫। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন তিনি বলতেনঃ যে ব্যাক্তি এমন কুকুর পালন করে যেটি পশু রক্ষার জন্যও নয় কিংবা শিকারের জন্যও নয়। তার আমল থেকে প্রত্যহ দুই কীরাত পরিমাণ হ্রাস পাবে।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৬ | 5086 | ۵۰۸٦
পরিচ্ছদঃ ২১৭২. যে ব্যক্তি শিকার বা পশু-রক্ষার কুকুর ছাড়া অন্য কুকুর পালন করে
৫০৮৬। মাককী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যে ব্যাক্তি শিকারী কুকুর কিংবা পশু রক্ষাকারী কুকুর ব্যতীত অন্য কোন কুকুর পোষে, সেই ব্যাক্তির আমলের সাওয়াব থেকে প্রত্যহ দুই কীরাত পরিমাণ কমে যায়।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৭ | 5087 | ۵۰۸۷
পরিচ্ছদঃ ২১৭২. যে ব্যক্তি শিকার বা পশু-রক্ষার কুকুর ছাড়া অন্য কুকুর পালন করে
৫৩৮৭। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি পশু রক্ষাকারী কিংবা শিকারী কুকুর ব্যতীত অন্য কুকুর পালন করে, তার আমল থেকে প্রতিদিন দুই কীরাত পরিমান সওয়াব কমে যায়।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৮ | 5088 | ۵۰۸۸
পরিচ্ছদঃ ২১৭৩. শিকারী কুকুর যদি শিকারের কিছুটা খেয়ে ফেলে এবং মহান আল্লাহ্র বাণীঃ লোকেরা আপনাকে প্রশ্ন করে থাকে যে, তাদের জন্য কী হালাল করা হয়েছে? …. নিশ্চয় আল্লাহ হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত তৎপর- পর্যন্ত (মায়িদাহঃ ৫:৪)। اجْتَرَحُوا তারা যা উপার্জন করেছে। ইব্ন আব্বাস (রা) বলেছেনঃ যদি কুকুর শিকারের কিছুটা খেয়ে ফেলে, তবে সে শিকার নস্ট করে ফেলল। কেননা, সে তো তখন নিজের জন্য ধরেছে বলে গণ্য হবে। অথচ আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেনঃ যেগুলোকে তোমরা শিকার শিক্ষা দিয়েছ যে ভাবে আল্লাহ্ তোমাদিগকে শিক্ষা দান করেছেন। কাজেই কুকুরকে প্রহার করতে হবে এবং শিক্ষা দিতে হবে, যাতে সে শিকার খাওয়া বর্জন করে। ইবন উমর (রা) এটিকে মাকরূহ বলতেন। আতা (রহঃ) বলেছেন, কুকুর যদি রক্ত পান করে আর গোশত না খায় তাহলে (সেই শিকার) খেতে পারে।
৫০৮৮। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) খেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলামঃ আমরা এমন সম্প্রদায়, যারা এ সকল কুকুরের দ্বারা শিকার করে থাকি। তিনি বললেনঃ তুমি যদি তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরকে বিসমিল্লাহ পড়ে পাঠিয়ে থাক তাহলে ওরা যেগুলো তোমাদের জন্য ধরে রাখে, তা খাও যদিও শিকারকে কুকুর হত্যা করে ফেলে। তবে যদি কুকুর শিকারের কিছুটা খেয়ে ফেলে (তাহলে খাবে না)। কেননা, তখন আমার আশংকা হয় যে সে শিকার নিজেরই উদ্দেশ্যে ধরেছে। আর যদি তার সঙ্গে অন্য কুকুর মিলে যায় তাহলে খাবে না।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৯ | 5089 | ۵۰۸۹
পরিচ্ছদঃ ২১৭৪. শিকার যদি দুই বা তিনদিন শিকারী থেকে অদৃশ্য থাকে
৫০৮৯। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্নিত। তিনি বলেছেনঃ যদি তোমার কুকুরকে বিসমিল্লাহ পড়ে পাঠাও, এরপর কুকুর শিকার পাকড়াও করে এবং মেরে ফেলে, তবে তা খেতে পার। আর যদি কুকুর কিছুটা খেয়ে ফেলে, তাহলে খাবে না। কেননা, সে তো নিজের জন্যই ধরেছে। আর যদি এমন কুকুরদের সঙ্গে মিশে যায়, যাদের উপর বিসমিল্লাহ পড়া হয়নি এবং সেজন্য শিকার ধরে মেরে ফেলে, তা হলে তা খাবে না। কেননা, তুমি তো জানো না যে কোন কুকুরটি হত্যা করেছে? আর যদি তুমি শিকারের প্রতি তীর নিক্ষেপ করে থাক; এরপর তা একদিন বা দুইদিন পর এমতাবস্থায় হাতে পাও যে, তার গায়ে তোমার তীরের আঘাত ছাড়া অন্য কিছু নেই, তাহলে খাও। আর যদি তা পানির মধ্যে পড়ে থাকে, তা হলে তা খাবে না।
আবদুল আলা দাউদ সুত্রে আদী থেকে বর্ণনা করেন যে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করেছিলেনঃ যদি কোন বাক্তি শিকারের প্রতি তীর নিক্ষেপ করে এবং দুই তিন দিন পর্যন্ত সেই শিকারের অনুসন্ধানের পর মৃত অবস্থায় পায় এবং দেখে যে, তার গায়ে তার তীর লেগে রয়েছে (তখন সে কি করবে)? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইচ্ছা করলে সে তা খেতে পারে।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৯০ | 5090 | ۵۰۹۰
পরিচ্ছদঃ ২১৭৫. শিকারের সাথে যদি অন্য কুকুর পাওয়া যায়
৫০৯০। আদম (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি বিসমিল্লাহ পড়ে আমার কুকুরকে পাঠিয়ে থাকি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি যদি বিসমিল্লাহ পড়ে তোমার কুকুরটিকে পাঠিয়ে থাক, এরপর সে শিকার ধরে মেরে ফেলে এবং কিছুটা খেয়ে ফেলে, তা হলে তুমি খেয়ো না। কেননা, সে তো নিজের জন্যই তা ধরেছে। আমি বললামঃ আমি আমার কুকুরটিরে পাঠালাম পরে তার সঙ্গে অন্য কুকুরও দেখতে পেলাম। আমি ঠিক জানিনা উভয়ের কে শিকার ধরেছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তা খেয়ো না। কেননা, তুমি তো তোমার কুকুরের উপরই বিসমিল্লাহ পড়েছ, অন্যটির উপর পড়নি। আমি তাকে তীরের শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেনঃ যদি তুমি তীরের ধার দিয়ে আঘাত করে থাক, তাহলে খাও। আর যদি পার্শ্বের দ্বারা আঘাত কর আর তাতে তা মারা যায় তাহলে সেটি থেতলিয়ে মারার অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং তা খেয়ো না।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৯১ | 5091 | ۵۰۹۱
পরিচ্ছদঃ ২১৭৬. শিকারে অভ্যস্ত হওয়া সম্পর্কে
৫০৯১। মুহাম্মদ (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করে বলছিলামঃ আমরা এমন সম্প্রদায়, যারা এ সকল কুকুরের দ্বারা শিকার করতে অভ্যস্ত। তিনি বললেনঃ তুমি যদি আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে (বিসমিল্লাহ বলে) তোমার প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কুকুরগুলোকে পাঠাও, তাহলে কুকুরগুলো তোমার জন্য যা ধরে রাখবে, তুমি তা খেতে পার। তবে কুকুর যদি কিছুটা খেয়ে ফেলে, তাহলে তুমি খেয়ো না। কেননা, আমার আশংকা হয় যে, সে তখন নিজের জন্যই ধরেছে। আর যদি তার সঙ্গে অন্যান্য কুকুর মিলিত হয়, তাহলেও খেয়ো না।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৯২ | 5092 | ۵۰۹۲
পরিচ্ছদঃ ২১৭৬. শিকারে অভ্যস্ত হওয়া সম্পর্কে
৫০৯২। আবূ আসিম ও আহমাদ ইবনু আবূ রাজা (রহঃ) … আবূ সা’লাবা খুশানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আমরা আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের এলাকায় বসবাস করি, তাদের পাত্রে আহার করি। আর আমরা শিকারের অঞ্চলে থাকি, শিকার করি তীর ধনুক দিয়ে, প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কুকুর দিয়ে এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয় এমন কুকুর দিয়েও। অতএব আমাকে বলে দিন, এর মধ্যে আমাদের জন্য কোনটি হালাল? তিনি বললেনঃ তুমি যা উল্লেখ করেছো তুমি আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের এলাকায় বসবাস কর, তাদের পাত্রে খানা খাও। তরে যদি তাদের পাত্র ছাড়া অন্য পাত্র পাও, তাহলে তাদের পাত্রে আহার করো না। আর যদি না পাও তাহলে ঐগুলো ধৌত করে তারপর তাতে আহার করবে। আর তুমি উল্লেখ করেছ যে তুমি শিকারের অঞ্চলে থাক। তুমি যা তীর ধনুক দ্বারা শিকার কর, তাতে তুমি বিসমিল্লাহ পড়বে এবং তা খাবে। তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর নিয়ে যা শিকার কর, তাতে বিসমিল্লাহ পড়বে এবং তা খাবে। আর তুমি যা শিকার কর তোমার এমন কুকুরের দ্বারা যেটি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নয় সেখানে যদি যবাহ করার সুযোগ পাও তাহলে খেতে পার।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৩ | 5093 | ۵۰۹۳
পরিচ্ছদঃ ২১৭৬. শিকারে অভ্যস্ত হওয়া সম্পর্কে
৫০৯৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা মক্কার যাহরান নামক স্থানে একটি খরগোশ ধাওয়া করলাম। লোকজন তার পেছনে ছুটতে থাকে এবং তারা ব্যর্থ হয়। এরপর আমি তার পেছনে ছুটলাম। অবশেষে সেটি ধরে ফেললাম। তারপর আমি এটিকে আবূ তালহার নিকট নিয়ে এলাম। তিনি এটির উভয় রান ও নিতম্ব নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পাঠান। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটি গ্রহণ করেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৪ | 5094 | ۵۰۹٤
পরিচ্ছদঃ ২১৭৬. শিকারে অভ্যস্ত হওয়া সম্পর্কে
৫০৯৪। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলেন। অবশেষে তিনি মক্কার কোন এক রাস্তা পর্যন্ত পৌছলে তিনি তার কয়েকজন সঙ্গীসহ পেছনে পড়ে গেলেন। তারা ছিলেন ইহরাম বাধা অবস্থায়। আর তিনি ছিলেন ইহরাম ছাড়া অবস্থায়। তিনি একটি বন্য গাধা দেখতে পেয়ে তার ঘোড়ার উপর আরোহণ করলেন। তারপর সাথীদের তার হাতে তাঁর চাকু তুলে দিতে অনুরোধ করলেন। তারা অস্বীকার করলেন। অবশেষে তিনি নিজেই সেটি তুলে নিলেন এবং গাধাটির পিছনে দ্রুতবেগে ছুটলেন এবং সেটিকে হত্যা করলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীদের কেউ কেউ তা খেলেন আবাব কেউ কেউ তা খেতে অস্বীকার করলেন। পরিশেষে তারা যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পৌছলেন তখন তারা বিষয়টি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেনঃ এটি তো এমন খাদ্য যা আল্লাহ তাআলা তোমাদের খাওয়ার জন্য দিয়েছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৫ | 5095 | ۵۰۹۵
পরিচ্ছদঃ ২১৭৬. শিকারে অভ্যস্ত হওয়া সম্পর্কে
৫০৯৫। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) এর সুত্রে অনুরূপ বর্ণিত আছে। তবে এতে রয়েছে যে, তিনি বললেনঃ তোমাদের সাথে কি তার কিছু গোশত আছে?
হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৬ | 5096 | ۵۰۹٦
পরিচ্ছদঃ ২১৭৭. পাহাড়ে শিকার করা
৫০৯৬। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি মক্কা ও মদিনার মধ্যবর্তী সফরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সংগে ছিলাম। অন্যরা ছিলেন ইহরাম বাধা অবস্থায়। আর আমি ছিলাম ইহরাম বিহীন এবং ঘোড়ার উপর সাওয়ার। পর্বত আরোহনে আমি ছিলাম দৃঢ়। এমন সময়ে আমি লোকজনকে দেখছিলাম যে, তারা আগ্রহ সহকারে কি যেন দেখছে। কাজেই আমিও দেখতে লাগলাম। হঠাৎ দেখি একটি বন্য গাধা। আমি লোকজনকে জিজ্ঞাসা করলামঃ এটি কি? তারা উত্তর দিলঃ আমরা জানি না। আমি বললামঃ এটি বন্য গাধা? তারা বললঃ এটি তাই তুমি যা দেখছ। আমি আমার চাবুকের কথা ভুলে গিয়েছিলাম তাই তাদের বললামঃ আমাকে আমার চাবুকটি তুলে দাও। তারা বললঃ আমরা তোমাকে এ কাজে সাহয্য করব না। অগত্যা আমি নেমে চাবুকটি তুলে নিলাম। তারপর সেটির পেছনে ছুটলাম।
অবশেষে আমি সেটিকে ঘায়েল করলাম এবং তাদের কাছে এসে বললামঃ যাও, এটাকে তুলে নিয়ে আসো।। তারা বললঃ আমরা ওটিকে স্পর্শ করবো না। তখন আমি নিজেই সেটিকে তুলে তাদের কাছে নিয়ে এলাম। তাদের মধ্যে কয়েকজন তা খেতে অসম্মতি প্রকাশ করল। আর কয়েকজন তা খেল। আমি বললামঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট থেকে তোমাদের জন্য বিষয়টি জেনে নেব। এরপর আমি তাকে পেলাম এবং এ ঘটনা শুনলাম। তিনি আমাকে বললেনঃ তোমাদের সঙ্গে সেটির অবশিষ্ট কিছু আছে কি? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ খাও। কেননা, এটি তো এমন খাবারের জিনিস যা আল্লাহ তোমাদের খাওয়ার জন্য দিয়েছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৭ | 5097 | ۵۰۹۷
পরিচ্ছদঃ ২১৭৮. মহান আল্লাহ্র এরশাদঃ তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার হালাল করা হয়েছে….. (৫:৯৬)। উমর (রা) বছেলেনঃ صَيْدُهُ যা শিকার করা হয়, আর طَعَامُهُ সমুদ্র যাকে নিক্ষেপ করে। আবূ বক্র (রা) বলেছেনঃ মরে যা ভেসে উঠে তা হালাল। ইব্ন আব্বাস (রা) বলেছেনঃ طَعَامُهُ সমুদ্রে প্রাপ্ত মৃত জানোয়ার খাদ্য, তবে তন্মধ্যে যেটি ঘৃণিত সেটি ছাড়া। বাইন জাতীয় মাছ ইয়াহুদীরা খায় না, আমরা খাই। রাসূলুল্লাহ্ (সা) এর সাহাবী আবূ শুরায়হ (রা) বলেছেনঃ সমুদ্রের সব জিনিসই যবাহকৃত বলে গণ্য। আতা (র) বলেছেনঃ (সমুদ্রের) পাখি সম্পর্কে আমার মত সেটিকে যবাহ করতে হবে। ইব্ন জুরায়জ (র) বলেনঃ আমি আতা (র) কে খাল, বিল, নদী-নালা ও জলাশয়ের শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলামঃ এগুলো কি সমুদ্রের শিকার অন্তর্ভূক্ত? তিনি উত্তর দিলেনঃ হ্যাঁ। তারপর তিনি এই আয়াতটি তিলাওয়াত করেনঃ هَذَا عَذْبٌ فُرَاتٌ سَائِغٌ شَرَابُهُ وَهَذَا مِلْحٌ أُجَاجٌ وَمِنْ كُلٍّ تَأْكُلُونَ لَحْمًا طَرِيًّا এর পানি সুস্বাদু ও তৃপ্তিদায়ক (যা পান করার উপযোগী) আর অপরটির পানি লোনা ও বিস্বাদ। আর এর প্রত্যেকটি থেকেই তোমরা খাও তাজা গোশ্ত। হাসান সমুদ্রের কুকুরের চামগায় নির্মিত ঘোড়ার গদির উপর আরোহণ করেছেন। শা’বি (র) বলেছেনঃ আমার পরিবারের লোকেরা যদি ব্যঙ খেত, তা হলে আমি তাদের তা খাওয়াতাম। হাসান (র) কচ্ছপ খাওয়াকে দোষের মনে করতেন না। ইব্ন আব্বাস (রা) বলেনঃ সমুদ্রের সব ধরনের শিকার খেতে পার, যদিও তা কোন ইয়াহুদী কিংবা খৃষ্টান কিংবা অগ্নিপূজক শিকার করে থাকে। আবুদ্ দারদা (রা) বলেনঃ মাছ ও সূর্যের তাপ শরাবকে পাক করে।
৫০৯৭। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা ‘জায়শুল খাবত’ অভিযানে ছিলাম। আমাদের সেনাপতি নিয়োগ করা হয়েছিল আবূ উবায়দা (রাঃ) কে। এক সময় আমরা ভীষনভাবে ক্ষুধার্ত হয়ে পড়লে, সমুদ্র এমন একটি মৃত মাছ তীরে নিক্ষেপ করল যে এত বড় মাছ কখনো দেখা যায়নি। এটিকে ‘আম্বর’ বলা হয়। আমরা অর্ধমাস যাবত এটি খেলাম। আবূ উবায়দা (রাঃ) এর একটি হাড় তুলে ধরলেন এবং এর নীচে দিয়ে একজন অশ্বারোহী অনায়াসে বেরিয়ে গেল।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৮ | 5098 | ۵۰۹۸
পরিচ্ছদঃ ২১৭৮. মহান আল্লাহ্র এরশাদঃ তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার হালাল করা হয়েছে….. (৫:৯৬)। উমর (রা) বছেলেনঃ صَيْدُهُ যা শিকার করা হয়, আর طَعَامُهُ সমুদ্র যাকে নিক্ষেপ করে। আবূ বক্র (রা) বলেছেনঃ মরে যা ভেসে উঠে তা হালাল। ইব্ন আব্বাস (রা) বলেছেনঃ طَعَامُهُ সমুদ্রে প্রাপ্ত মৃত জানোয়ার খাদ্য, তবে তন্মধ্যে যেটি ঘৃণিত সেটি ছাড়া। বাইন জাতীয় মাছ ইয়াহুদীরা খায় না, আমরা খাই। রাসূলুল্লাহ্ (সা) এর সাহাবী আবূ শুরায়হ (রা) বলেছেনঃ সমুদ্রের সব জিনিসই যবাহকৃত বলে গণ্য। আতা (র) বলেছেনঃ (সমুদ্রের) পাখি সম্পর্কে আমার মত সেটিকে যবাহ করতে হবে। ইব্ন জুরায়জ (র) বলেনঃ আমি আতা (র) কে খাল, বিল, নদী-নালা ও জলাশয়ের শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলামঃ এগুলো কি সমুদ্রের শিকার অন্তর্ভূক্ত? তিনি উত্তর দিলেনঃ হ্যাঁ। তারপর তিনি এই আয়াতটি তিলাওয়াত করেনঃ هَذَا عَذْبٌ فُرَاتٌ سَائِغٌ شَرَابُهُ وَهَذَا مِلْحٌ أُجَاجٌ وَمِنْ كُلٍّ تَأْكُلُونَ لَحْمًا طَرِيًّا এর পানি সুস্বাদু ও তৃপ্তিদায়ক (যা পান করার উপযোগী) আর অপরটির পানি লোনা ও বিস্বাদ। আর এর প্রত্যেকটি থেকেই তোমরা খাও তাজা গোশ্ত। হাসান সমুদ্রের কুকুরের চামগায় নির্মিত ঘোড়ার গদির উপর আরোহণ করেছেন। শা’বি (র) বলেছেনঃ আমার পরিবারের লোকেরা যদি ব্যঙ খেত, তা হলে আমি তাদের তা খাওয়াতাম। হাসান (র) কচ্ছপ খাওয়াকে দোষের মনে করতেন না। ইব্ন আব্বাস (রা) বলেনঃ সমুদ্রের সব ধরনের শিকার খেতে পার, যদিও তা কোন ইয়াহুদী কিংবা খৃষ্টান কিংবা অগ্নিপূজক শিকার করে থাকে। আবুদ্ দারদা (রা) বলেনঃ মাছ ও সূর্যের তাপ শরাবকে পাক করে।
৫০৯৮। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের তিনশ’ সাওয়ার পাঠালেন আমাদের সেনাপতি ছিলেন আবূ উবায়দা (রাঃ)। উদ্দেশ্য ছিল আমরা যেন কুরাইশদের একটি কাফেলার অপেক্ষা করি। তখন আমাদের ভীষণ ক্ষিধে পেল। এমন কি আমরা خبط (গাছের পাতা) খেতে আরম্ভ করলাম। ফলে এ বাহিনীর নামকরণ করা হয় “জায়শুল খাবত”। তখন সমুদ্র আম্বর নামক একটি মাছ পাড়ে তুলে দেয়। আমরা এটি থেকে অর্ধমাস যাবত আহার করলাম। আমরা এর চর্বি তেল রুপে গায়ে মাখতাম। ফলে আমাদের শরীর সতেজ হয়ে উঠে। আবূ উবায়দা (রাঃ) মাছটির পাজরের কাটাগুলোর একটি খাড়া করে ধরলেন, তখন একজন অশ্বারোহী তার নীচ দিবে অতিক্রিম করে গেল। আমাদের মধ্যে (কোয়স ইবনু না’দ) এক ব্যাক্তি ছিলেন, খাদ্যাভাব তখন ভীষণ আকার ধারণ করেছিল। তখন তিনি তিনটি উট যবাহ করেন। তারপর আরো তিনটি যবাহ করেন। এরপর আবূ উবায়দা (রাঃ) তাকে বারণ করলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৯ | 5099 | ۵۰۹۹
পরিচ্ছদঃ ২১৭৯. ফড়িং খাওয়া
৫০৯৯। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সাতটি কিংবা ছয়টি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করি। আমরা তার সঙ্গে ফড়িংও খাই। সুফিয়ান, আবূ আওয়ালা ও ইসরাইল এরা আবূ ইয়াফুর ইবনু আওফার সুত্রে বর্ননা করেছেন সাতটি যুদ্ধে।
হাদিস নম্বরঃ ৫১০০ | 5100 | ۵۱۰۰
পরিচ্ছদঃ ২১৮০. অগ্নি পুজকদের বাসনপত্র ও মৃত জানোয়ার
৫১০০। আবূ আসিম (রহঃ) … আবূ সা’লাবা খুশানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আমরা আহলে কিতাবের এলাকায় বাস করি। তাদের পাত্রে খাই এবং আমরা শিকারের এলাকায় বাস করি, তীর-ধনুকের সাহায্যে শিকার করি এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের সাহায্যে শিকার করি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি যে বললে তোমরা আহলে কিতাবের ভুখণ্ডে থাক, অপারগ না হলে তুমি তাদের বাসন পত্রে খেও না যদি কোন উপায় না পাও তাহলে সেগুলো ধুয়ে তাতে খেয়ো। আর তুমি যে বললে তোমরা শিকারের অঞ্চলে বাস কর যদি তুমি তোমার তীরের দ্বারা যা শিকার করতে চাও সেখানে আল্লাহর নাম নাও এবং খাও। আর তুমি যা তোমার প্রশিক্ষন প্রাপ্ত কুকুরের সাহায্যে শিকার কর, সেখানে আল্লাহর নাম নাও এবং খাও। আর তুমি যা শিকার কর তোমার প্রশিক্ষণবিহীন কুকুরের সাহায্যে এবং তা যবাহ করার সুযোগ (অর্থাৎ জীবিত) পাও তবে তা (যবাহ করে) খাও।
হাদিস নম্বরঃ ৫১০১ | 5101 | ۵۱۰۱
পরিচ্ছদঃ ২১৮০. অগ্নি পুজকদের বাসনপত্র ও মৃত জানোয়ার
৫১০১। মাক্কী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … সালামা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ খায়বার বিজয়ের দিন সন্ধায় মুসলমানগন আগুন জ্বালালেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমরা কি জন্য এ সব আগুন জালিয়েছ? তারা বললঃ গৃহ পালিত গাধার গোশত। তিনি বললেনঃ পাতিলের সব কিছু ফেলে দাও এবং পাতিলগুলো ভেঙ্গে ফেল। দলের একজন দাঁড়িয়ে বললঃ পাতিলের সব কিছু ফেলে দেই এবং পাতিলগুলো ধুয়ে নেই? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাও করতে পার।
হাদিস নম্বরঃ ৫১০২ | 5102 | ۵۱۰۲
পরিচ্ছদঃ ২১৮১. যবাহের বস্তুর উপর বিস্মিল্লাহ্ বলা এবং ইচ্ছাকৃতভাবে যে বিসমিল্লাহ তরক করে। ইব্ন আব্বাস (রা) বলেছেনঃ কেউ বিসমিল্লাহ্ বলতে ভুলে গেলে তাতে কোন দোষ নেই। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ যে সব প্রাণীর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারন করা হয়নি, তা থেকে আহার করো না। তা অবশ্যই গুনাহের কাজ। আর যে ব্যক্তি বিসমিল্লাহ বলেতে ভুলে যায়, তাতে গুনাহগার বলা যায় না। আল্লাহ আরো ইরশাদ করেনঃ শয়তানরা তাদের বন্ধুদের প্ররোচনা দেয় …… (শেষ পর্যন্ত
৫১০২। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে যুল হুলায়ফা নামক স্থানে ছিলাম। লোকজন ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ে। তখন আমরা কিছু সংখ্যাক উট ও বকরী (গনীমত স্বরূপ) লাভ করি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সকলের পেছনে। সবাই তাড়াতাড়ি করল এবং পাতিল চড়িয়ে দিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে এসে পৌছলেন। তখন তিনি পাতিলগুলো ঢেলে দিতে নির্দেশ দিলেন। পাতিলগুলো ঢেলে দেওয়া হল। তারপর তিনি (প্রাপ্ত গনীমত) বণ্টন করলেন। দশটি বকরী একটি উটের সমান গণ্য করলেন। এ সময়ে একটি উট পালিয়ে গেল। দলে অশ্বারোহীর সংখ্যা ছিল খুব কম। তারা উটটির পেছনে ছুটল কিন্তু তারা সেটি কাবু করতে ব্যর্থ হল। অবশেষে একজন উটটির প্রতি তীর নিক্ষেপ করলে আল্লাহ উটটিকে থামিয়ে দিলেন।
তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সকল চতুষ্পদ প্রানীর মধ্যে বন্য জানোয়ারের ন্যায় পালিয়ে যাওয়ার স্বভাব আছে। কাজেই যখন কোন প্রানী তোমাদের থেকে পালিয়ে যায়, তখন তার সাথে তোমরা অনুরুপ ব্যবহার করবে। বর্ণনাকারী বলেন আমার দাদা বলেছেন, আমরা আশা করছিলাম কিংবা তিনি বলেছেন, আমরা আশংকা করছিলাম যে আগামীকাল আমরা তাদের সম্মুখীন হতে পারি। অথচ আমাদের নিকট কোন ছুরি নেই। তাহলে আমরা কি বাঁশের (বাখায়ী) দিয়ে যবাহ কববো? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে দেয় এবং তাতে বিসমিল্লাহ বলা হয় তা খাও। তবে দাঁত ও নখ দিয়ে নয়। এ সম্পর্কে আমি তোমাদের অবহিত করছি যে, দাঁত হল হাড় বিশেষ, আর নখ হল হাবশী সম্প্রদায়ের ছুরি।
হাদিস নম্বরঃ ৫১০৩ | 5103 | ۵۱۰۳
পরিচ্ছদঃ ২১৮২. যে জন্তুকে দেব-দেবী ও মূর্তির নামে যবাহ করা হয়
৫১০৩। মুআলা ইবনু আসাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘বালদাহ’ নামক স্থানে নিম্ন অঞ্চলে সায়েদ ইবনু আমর ইবনু নুফায়লের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। ঘটনাটি ছিল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর অহী নাযিল হওয়ার আগের। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে দস্তরখান বিছানো হল। তাতে ছিল গোশত। তখন যায়েদ ইবনু আমর তা থেকে খেতে অস্বীকার করলেন। তারপর তিনি বললেনঃ তোমরা তোমাদের দেব-দেবীর নামে যা যবাহ কর, তা থেকে আমি খাই না। আমি কেবল তাই খাই যা আল্লাহর নামে যবাহ করা হয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৫১০৪ | 5104 | ۵۱۰٤
পরিচ্ছদঃ ২১৮৩. নবী (সাঃ) এর ইরশাদঃ আল্লাহর নামে যবাহ্ করবে
৫১০৪। কুতায়বা (রহঃ) … জুনদুব ইবনু সুফিয়ান বাজালী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কুরবানী উদযাপন করলাম। তখন কতক লোক সালাত (নামায/নামাজ)-এর আগেই তাদের কুরবানীর পশুগুলো যবাহ করে নিয়েছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) থেকে ফিরে যখন দেখলেন, তারা সালাত (নামায/নামাজ) এর আগেই যবাহ করে ফেলেছে। তখন বললেনঃ যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) এর আগে যবাহ করেছে সে সেন তার বদলে আরেকটি যবাহ করে নেয়। আর যে ব্যাক্তি আমাদের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা পর্যন্ত যবাহ করেনি। সে যেন এখন আল্লাহর নাম নিয়ে যবাহ করে।
হাদিস নম্বরঃ ৫১০৫ | 5105 | ۵۱۰۵
পরিচ্ছদঃ ২১৮৪. যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে অর্থাৎ বাঁশ, পাথর ও লোহা
৫১০৫। মুহাম্মদ ইবনু আবূ বকর (রহঃ) … ইবনু কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ইবনু উমর (রাঃ) কে জানিয়েছেন যে তার পিতা (কা’ব) তাকে বলেছেনঃ তাদের একটি দাসী ‘সালা’ নামক স্থানে বকরী চরাত। এক সময় সে দেখতে পেল পালের একটি বকরী মারা যাচ্ছে। সে একটি পাথর ভেঙ্গে তা দিয়ে সেটি যবাহ করল। তখন তিনি (কা’ব) পরিবারের লোকজনকে বললেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে আসার আগে তোমরা তা খেয়ো না। অথবা তিনি বললেনঃ আমি তাকে জিজ্ঞাসা করার এমন কাউকে পাঠিয়ে জেনে নেওয়ার আগে তোমরা তা খেয়ো না। এরপর তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলেন অথবা তিনি কাউকে তার নিকট পাঠালেন তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটি খেতে আদেশ দিলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১০৬ | 5106 | ۵۱۰٦
পরিচ্ছদঃ ২১৮৪. যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে অর্থাৎ বাঁশ, পাথর ও লোহা
৫১০৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন যে, কা’ব ইবনু মালিকের একটি দাসী বাজারের কাছে অবস্থিত ‘সালা’ নামক ছোট পাহাড়ের উপর তার বকরী চরাতো। তন্মধ্যে একটি বকরি মরণাপন্ন হয়ে পড়ে। সে এটিকে ধরল এবং পাথর ভেংগে তা দিয়ে সেটিকে যবাহ করে। তখন লোকজন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ঘটনাটি উল্লেখ করলে তিনি তাদের তা খাওয়ার অনুমতি দেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১০৭ | 5107 | ۵۱۰۷
পরিচ্ছদঃ ২১৮৪. যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে অর্থাৎ বাঁশ, পাথর ও লোহা
৫১০৭। আবদান (রহঃ) … রাফি (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের কাছে কোন ছুরি নেই। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে এবং যার উপর আল্লাহর নাম নেওয়া হয়, তা খাও। তবে দাঁত ও নখ দিয়ে নয়। নখ হল হাবশীদের ছুরি, আর দাঁত হল হাড়। তখন একটি উট পালিয়ে গেল। তীর নিক্ষেপ করে সেটিকে আটকানো হল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সকল উটৈর মধ্যে বন্য জন্তুর মত পালিযে যাওয়ার অভ্যাস আছে। কাজেই তন্মধ্যে কোনটি যদি তোমাদের আয়ত্বের বাইরে চলে যায়, তাহলে তার সাথে এরুপ ব্যবহার কর।
হাদিস নম্বরঃ ৫১০৮ | 5108 | ۵۱۰۸
পরিচ্ছদঃ ২১৮৫. দাসী ও মহিলার যবাহকৃত জন্তু
৫১০৮। সাদকা (রহঃ) … কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে জনৈক মহিলা পাথরের সাহায্যে একটি বকরী যবাহ করেছিল। এ ব্যাপারে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সেটি খাওয়ার নির্দেশ দেন। লায়স (রহঃ) নাফি (রহঃ) সুত্রে বলেনঃ তিনি জনৈক আনসারকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আবদুল্লাহ সম্পর্কে বলতে শুনেছেন যে, কা’ব (রাঃ) এর একটি দাসী……। পরবর্তী অংশ উক্ত হাদীসের অনুরূপ।
হাদিস নম্বরঃ ৫১০৯ | 5109 | ۵۱۰۹
পরিচ্ছদঃ ২১৮৫. দাসী ও মহিলার যবাহকৃত জন্তু
৫১০৯। ইসমাঈল (রহঃ) … জনৈক আনসারী থেকে তিনি মু’আয ইবনু সা’দ কিংবা সা’দ ইবনু মু’আয (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, কাব ইবনু মালিক (রাঃ) এর একটি দাসী ‘সালা’ পাহাড়ে বকরী চরাতো। বকরীগুলোর মধ্যে একটিকে মরে যাচ্ছে দেখে সে একটি পাথর দিয়ে সেটিকে যবাহ কবল। এই ব্যাপারে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হল তিনি বললেনঃ সেটি খাও।
হাদিস নম্বরঃ ৫১১০ | 5110 | ۵۱۱۰
পরিচ্ছদঃ ২১৮৬. দাঁত, হাড় ও নখের সাহায্যে যবাহ্ করা যাবে না
৫১১০। কাবীসা (রহঃ) … রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ খাও অর্থাৎ যা রক্ত প্রবাহিত করে তবে দাঁত ও নখের দ্বারা নয়।
হাদিস নম্বরঃ ৫১১১ | 5111 | ۵۱۱۱
পরিচ্ছদঃ ২১৮৭. বেদুঈন ও তাদের মত লোকের যবাহকৃত জন্তু
৫১১১। মুহাম্মদ ইবনু উবায়দুল্লাহ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদল লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললঃ কিছু সংখ্যক মানুষ আমাদের নিকট গোশত নিয়ে আসে। আমরা জানিনা যে, পশুটির যবাহের সময় বিসমিল্লাহ বলা হয়েছিল কিনা। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরাই এতে বিসমিল্লাহ পড় এবং তা খাও। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ প্রশ্নকারী দলটি ছিল কুফর থেকে নতুন ইসলাম গ্রহনকারী।
ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেনঃ দ্বারাওয়ারদী (রহঃ) আলী (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আবূ খালিদ ও তুফাবী (রহঃ) অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১১২ | 5112 | ۵۱۱۲
পরিচ্ছদঃ ২১৮৮. আহলে কিতাবের যবাহকৃত জন্তু ও এর চর্বি। তারা দারুল হারবের হোক কিংবা না হোক। মহান আল্লাহর ইরশাদঃ আজ তোমাদের জন্য পবিত্র জিনিসসমূহ হালাল করে দেওয়া হল। আহলে কিতাবের খাবার তোমাদের জন্য হালাল, তোমাদের খাবারও তাদের জন্য হালাল (মায়িদাহ: ৫) যুহরী (র) বলেছেনঃ আরব এলাকার খৃস্টানদের যবাহকৃত পশুতে কোন দোষ নেই। তবে তুমি যদি তাকে গায়রুল্লাহর নাম পড়তে শোন, তাহলে খেয়ো না। আর যদি না শুনে থাক, তাহলে মনে রেখ যে, আল্লাহ তাদের কুফরীকে জেনে নেওয়া সত্ত্বেও অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। হাসান ও হবরাহীম বলেছেনঃ খাতনা বিহীন লোকের যবাহকৃত পশুতে কোন দোষ নেই।
৫১১২। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা খায়বরের একটি কিল্লা অবরোধ করে রেখেছিলাম। এমন সময়ে এক ব্যাক্তি চর্বি ভর্তি একটি থলে ছুড়ে মারল। আমি সেটি তুলে নেয়ার জন্য ছুটে গেলাম। ফিরে তাকিয়ে দেখি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তাকে দেখে আমি লজ্জিত হয়ে গেলাম। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, তাদের খাবার দ্বারা তাদের যবাহকৃত জন্তু বুঝান হয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৫১১৩ | 5113 | ۵۱۱۳
পরিচ্ছদঃ ২১৮৯. যে জন্তু পালিয়ে যায় তার হুকুম বন্য জন্তুর মত। ইবন মাসঊদ (রা) ও এ ফতোয়া দিয়েছেন। ইবন আব্বাস (রা) বলেছেনঃ তোমার অধীনস্থ যে জন্তু তোমাকে অক্ষম করে দেয়, সে শিকারের ন্যায়। যে উট কুয়ায় পড়ে যায়। তার যে স্থানে তোমার পক্ষে সম্ভব হয়, আঘাত (যবাহ) কর। আলী ইবন উমর এবং আয়েশা (রাঃ)ও এইমত পোষন করেন।
৫১১৩। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা আগামী দিন শত্রুর সন্মিখীন হব, অথচ আমাদের কাছে কোন ছুরি নেই। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি ত্বরান্বিত করবে কিংবা তিনি বলেছেনঃ তাড়াতাড়ি (যবাহ) করবে। যা রক্ত প্রবাহিত করে এবং এতে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়, তা খাও। তবে দাঁত ও নখ দ্বারা নয়। তোমাকে বলছিঃ দাঁত হল হাড় আর নখ হল হাবশীদের ছুরি। আমরা কিছু উট ও কস্তুরী গনীমত হিসাবে পেলাম। সেগুলো থেকে একটি উট পালিয়ে যায়। একজন সেটির উপর তীর নিক্ষেপ করলে আল্লাহ উটটি আটকিয়ে দেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সকল গৃহপালিত উটের মধ্যে বন্যপশুর স্বভাব রয়েছে। কাজেই তন্মধ্যে কোনটি যদি তোমাদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়, তা হলে তার সাথে অনুরুপ ব্যবহার করবে।
হাদিস নম্বরঃ ৫১১৪ | 5114 | ۵۱۱٤
পরিচ্ছদঃ ২১৯০. নহর ও যবাহ করা। আতা (র) এর উদ্ধৃতি দিয়ে উবন জুবায়জ বলেছেন, গলা বা সিনা ব্যতীত যবাহ কিংবা নহর করা যায় না। (আতা (র) বলেন) আমি বললামঃ যে জন্তুকে যবাহ করা হয় সেটিকে আমি যদি নহর করি, তাহলে যথেষ্ট হবে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। কেননা, আল্লাহ তা’আলা গরুকে যবাহ করার কথা উল্লেখ করেছেন। কাজেই যে জন্তুকে নহর করা হয়, তা যদি তুমি যবাহ কর, তবে তা জায়িয। অবশ্য আমার নিকট নহর করাই অধিক পছন্দনীয়। যবাহ অর্থ হচ্ছে রগগুলোকে কেটে দেওয়া। তিনি বললেনঃ আমি তা মনে করি না। তিনি বললেনঃ নাফি (র) আমাকে অবহিত করেছেন যে, ইবন উমর (রা) ‘নাখ’ থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেনঃ ‘নাখ’ হল হাড়ের ভিতরের সাদা রগ কেটে দেওয়া এবং তারপর ছেড়ে দেওয়া, যাতে জন্তুটি মারা যায়। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ স্মরণ কর, মূসা যখন তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ আল্লাহ তোমাদের গরু যবাহ করতে আদেশ দিচ্ছেন …… যদিও তারা যবাহ করতে উদ্যত ছিল না তবুএ তারা সেটিকে যবাহ করল”। (বাকারঃ ৬৭-৭১) পর্যন্ত। সাঈদ (র) ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেনঃ গলা ও সিনার মধ্যে জবাহ করাকে জবাহ বলে। ইবন উমর, ইবন আব্বাস ও আনাস (রা) বলেনঃ যদি মাথা কেটে ফেলে তাতে দোষ নেই।
৫১১৪। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আসমা বিনত আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আমরা একটি ঘোড়া নহর করে তা খেয়েছি।
হাদিস নম্বরঃ ৫১১৫ | 5115 | ۵۱۱۵
পরিচ্ছদঃ ২১৯০. নহর ও যবাহ করা। আতা (র) এর উদ্ধৃতি দিয়ে উবন জুবায়জ বলেছেন, গলা বা সিনা ব্যতীত যবাহ কিংবা নহর করা যায় না। (আতা (র) বলেন) আমি বললামঃ যে জন্তুকে যবাহ করা হয় সেটিকে আমি যদি নহর করি, তাহলে যথেষ্ট হবে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। কেননা, আল্লাহ তা’আলা গরুকে যবাহ করার কথা উল্লেখ করেছেন। কাজেই যে জন্তুকে নহর করা হয়, তা যদি তুমি যবাহ কর, তবে তা জায়িয। অবশ্য আমার নিকট নহর করাই অধিক পছন্দনীয়। যবাহ অর্থ হচ্ছে রগগুলোকে কেটে দেওয়া। তিনি বললেনঃ আমি তা মনে করি না। তিনি বললেনঃ নাফি (র) আমাকে অবহিত করেছেন যে, ইবন উমর (রা) ‘নাখ’ থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেনঃ ‘নাখ’ হল হাড়ের ভিতরের সাদা রগ কেটে দেওয়া এবং তারপর ছেড়ে দেওয়া, যাতে জন্তুটি মারা যায়। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ স্মরণ কর, মূসা যখন তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ আল্লাহ তোমাদের গরু যবাহ করতে আদেশ দিচ্ছেন …… যদিও তারা যবাহ করতে উদ্যত ছিল না তবুএ তারা সেটিকে যবাহ করল”। (বাকারঃ ৬৭-৭১) পর্যন্ত। সাঈদ (র) ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেনঃ গলা ও সিনার মধ্যে জবাহ করাকে জবাহ বলে। ইবন উমর, ইবন আব্বাস ও আনাস (রা) বলেনঃ যদি মাথা কেটে ফেলে তাতে দোষ নেই।
৫১১৫। ইসহাক (রহঃ) … আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমলে আমরা একটি ঘোড়া যবাহ করেছি। তখন আমরা মদিনায় থাকতাম। পরে আমরা সেটি খেয়েছি।
হাদিস নম্বরঃ ৫১১৬ | 5116 | ۵۱۱٦
পরিচ্ছদঃ ২১৯০. নহর ও যবাহ করা। আতা (র) এর উদ্ধৃতি দিয়ে উবন জুবায়জ বলেছেন, গলা বা সিনা ব্যতীত যবাহ কিংবা নহর করা যায় না। (আতা (র) বলেন) আমি বললামঃ যে জন্তুকে যবাহ করা হয় সেটিকে আমি যদি নহর করি, তাহলে যথেষ্ট হবে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। কেননা, আল্লাহ তা’আলা গরুকে যবাহ করার কথা উল্লেখ করেছেন। কাজেই যে জন্তুকে নহর করা হয়, তা যদি তুমি যবাহ কর, তবে তা জায়িয। অবশ্য আমার নিকট নহর করাই অধিক পছন্দনীয়। যবাহ অর্থ হচ্ছে রগগুলোকে কেটে দেওয়া। তিনি বললেনঃ আমি তা মনে করি না। তিনি বললেনঃ নাফি (র) আমাকে অবহিত করেছেন যে, ইবন উমর (রা) ‘নাখ’ থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেনঃ ‘নাখ’ হল হাড়ের ভিতরের সাদা রগ কেটে দেওয়া এবং তারপর ছেড়ে দেওয়া, যাতে জন্তুটি মারা যায়। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ স্মরণ কর, মূসা যখন তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ আল্লাহ তোমাদের গরু যবাহ করতে আদেশ দিচ্ছেন …… যদিও তারা যবাহ করতে উদ্যত ছিল না তবুএ তারা সেটিকে যবাহ করল”। (বাকারঃ ৬৭-৭১) পর্যন্ত। সাঈদ (র) ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেনঃ গলা ও সিনার মধ্যে জবাহ করাকে জবাহ বলে। ইবন উমর, ইবন আব্বাস ও আনাস (রা) বলেনঃ যদি মাথা কেটে ফেলে তাতে দোষ নেই।
৫১১৬। কুতায়বা (রহঃ) … আসমা বিনত আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমলে আমরা একটি ঘোড়া নহর করেছি। এরপর তা খেয়েছি। নহর কথাটির বর্ণনা এ সঙ্গে হিশামের সূত্র দিয়ে ওয়াকী ও ইবনু উয়ায়না অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১১৭ | 5117 | ۵۱۱۷
পরিচ্ছদঃ ২১৯১. পশুর অংগহানি করা, বেঁধে তীর দ্বারা হত্যা করা ও চাঁদমারী করা মাকরূহ
৫১১৭। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … হিশাম ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আনাস (রাঃ) এর সঙ্গে হাকাম ইবনু আইয়্যুবের কাছে গেলাম। তখন আনাস (রাঃ) দেখলেন, কয়েকটি বালক, কিংবা বর্ণনাকারী বলেছেন কয়েকজন তরুণ একটি মুরগি বেঁধে তার প্রতি তীর নিক্ষেপ করছে। আনাস (রাঃ) বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবন্তকে বেধে এভাবে তীর নিক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১১৮ | 5118 | ۵۱۱۸
পরিচ্ছদঃ ২১৯১. পশুর অংগহানি করা, বেঁধে তীর দ্বারা হত্যা করা ও চাঁদমারী করা মাকরূহ
৫১১৮। আহমাদ ইবনু ইয়াকুব (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদের কাছে গিয়েছিলেন। এ সময় ইয়াহইয়া পরিবারের একটি বালক একটি মুরগীকে বেঁধে তার প্রতি তীর নিক্ষেপ করছিল। ইবনু উমর (রাঃ) মুরগীটির দিকে এগিয়ে গিয়ে সেটি মুক্ত করে দিলেন। তারপর মুরগী ও বালকটিকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে গিয়ে বললেনঃ তোমরা তোমাদের বালকদের হত্যার উদ্দেশ্যে এভাবে বেঁধে পাখি মারতে বাধা দিও। কেননা আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছিঃ তিনি হত্যার উদেশ্যে জন্তু জানোয়ার বেধে তীর নিক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১১৯ | 5119 | ۵۱۱۹
পরিচ্ছদঃ ২১৯১. পশুর অংগহানি করা, বেঁধে তীর দ্বারা হত্যা করা ও চাঁদমারী করা মাকরূহ
৫১১৯। আবূ নুমান (রহঃ) … সাঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বললেনঃ আমি ইবনু উমর (রাঃ) এর কাছে ছিলাম। এরপর আমরা একদল তরুণ, কিংবা তিনি বলেছেন, একদল মানুষের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখলাম, তারা একটি মুরগি বেধে তার প্রতি তীর ছুড়ছে। তারা যখন ইবনু উমর (রাঃ) কে দেখতে পেল, তখন তারা তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। ইবনু উমর (রাঃ) বললেনঃ এ কাজ কে করেছে? এ কাজ যে করে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উপর অভিশাপ দিয়েছেন।
শুবা (রহঃ) থেকে সুলায়মান অনুরূপ বর্ননা করেছেন। মিনহাল ইবনু উমার (রাঃ) এর সুত্রে বলেন, যে ব্যাক্তি পশুর অঙ্গহানি ঘটায় তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১২০ | 5120 | ۵۱۲۰
পরিচ্ছদঃ ২১৯১. পশুর অংগহানি করা, বেঁধে তীর দ্বারা হত্যা করা ও চাঁদমারী করা মাকরূহ
৫১২০। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) এর সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে যে তিনি লুটতরাজ ও অঙ্গহানি ঘটাতে নিষেধ করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১২১ | 5121 | ۵۱۲۱
পরিচ্ছদঃ ২১৯২. মুরগীর গোশত
৫১২১। ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ মূসা আশ-আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মুরগীর গোশত খেতে দেখেছি।
আবূ মা’মার (রহঃ) … যাহদাম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) এর কাছে ছিলাম। জারমের এ গোত্র ও আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ছিল। আমাদের কাছে খাবার আনা ছিল। তাতে ছিল মোরগের গোশত। দলের মধ্যে লালচে রংয়ের এক ব্যাক্তি বসা ছিল। সে খাবারের দিকে অগ্রসর হল। আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) তখন বলেনঃ এগিয়ে এসো, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মোরগের গোশত খেতে দেখেছি। সে বললঃ আমি এটিকে এমন কিছু খেতে দেখেছি, যে কারণে তা খেতে আমি অপছন্দ করি। তখন আমি কসম করেছি যে, আমি তা খাব না। তিনি বললেনঃ এগিয়ে এসো, আমি তোমাকে জানাবো। কিংবা তিনি বলেছেন, আমি তোমাদের কাছে হাদীস বর্ননা করবো।
আমি আশআরীদের এক দল সহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম। এরপর আমি তার সামনে এসে উপস্থিত হই যখন তিনি ছিলেন রাগান্বিত। তখন তিনি বণ্টন করছিলেন সাদাকার কিছু জানোয়ার। আমরা তার কাছে সাওয়ারী চাইলাম। তখন তিনি কসম করে বললেনঃ আমাদের কোন সাওসারী দিবেন না এবং বললেনঃ তোমাদের সাওয়ারীর জন্য দিতে পারি এমন কোন জন্তু আমার কাছে নেই। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গনীমতের কিছু উট আনা হল। তিনি বললেনঃ আশআরীগণ কোথায়? আশআরীগণ কোথায়?
আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) বলেনঃ এরপর তিনি আমাদের সাদাচুল বিশিষ্ট বলিষ্ট পাঁচটি উট দিলেন। আমরা কিছু দুরে গিয়ে অবস্থান করলাম। তখন আমি আমার সঙ্গীদের বললাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কসমের কথা ভুলে গিয়েছিলেন। আল্লাহর কসম যদি আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তার কসমের ব্যাপারে গাফিল রাখি, তাহলে আমরা কোনদিন সফলকাম হবো না। কাজেই আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ফিরে গিয়ে তাকে বলা হলঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা আপনার নিকট সাওয়ায়ী চেয়েছিলাম তখন আপনি আমাদের সাওসারী দেবেন না বলে কসম করেছিলেন। আমাদের মনে হয় আপনি আপনার কসমের কথা ভুলে গিয়েছেন।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ নিজেই তো আমাদের সাওয়ারীর জানোয়ার দিয়েছেন। আল্লাহর কসম, আমি যখন কোন ব্যাপারে কসম করি এরপর কসমের বিপরীত কাজ তার চাইতে মঙ্গলজনক মনে করি, তখন আমি মঙ্গলজনক কাজটিই করি এবং কাফফারা দিয়ে হালাল হয়ে যাই।
হাদিস নম্বরঃ ৫১২২ | 5122 | ۵۱۲۲
পরিচ্ছদঃ ২১৯৩. ঘোড়ার গোশত
৫১২২। হুমায়দী (রহঃ) … আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আমরা একটি ঘোড়া নহর করলাম এবং সেটি খেলাম।
হাদিস নম্বরঃ ৫১২৩ | 5123 | ۵۱۲۳
পরিচ্ছদঃ ২১৯৩. ঘোড়ার গোশত
৫১২৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ খায়বারের দিনে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। আর ঘোড়ার গোশতের ব্যাপারে তিনি অনুমতি দিয়েছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১২৪ | 5124 | ۵۱۲٤
পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৪ সাদাকা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, খায়বরের দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১২৫ | 5125 | ۵۱۲۵
পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। ইবনু মুবারক, উবায়দুল্লাহ (রহঃ) সুত্রে থেকে অনুরূপ বর্ননা করেছেন। উবায়দুল্লাহ সালিম সুত্রে আবূ উসামা (রহঃ) অনুরূপ বর্ননা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১২৬ | 5126 | ۵۱۲٦
পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৬। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ খায়বারের বছর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুতআ (স্বল্পকালের জন্য বিয়ে করা) থেকে এবং গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১২৭ | 5127 | ۵۱۲۷
পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৭। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ খায়বারের দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। তবে ঘোড়ার গোশত খেতে অনুমতি দিয়েছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১২৮ | 5128 | ۵۱۲۸
পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … বারাআ ও ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১২৯ | 5129 | ۵۱۲۹
পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৯। ইসহাক (রহঃ) … আবূ সা’লাবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহপালিত গাধার গোশত খাওয়া হারাম করেছেন। ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে যুবায়দী ও উকায়ল অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। যুহরী (রহঃ) এর বরাত দিয়ে মালিক, মা’মার, মাজিশুন, ইউনুস ও ইবনু ইসহাক বলেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁত বিশিষ্ট সকল হিংস্র জন্তু খেতে নিষেধ করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১৩০ | 5130 | ۵۱۳۰
পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১৩০। মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে জনৈক আগন্তুক এসে বললঃ গাধাগুলো খেয়ে ফেলা হচ্ছে। তারপর আরেকজন আগন্তক এসে বললঃ গাধাগুলো খেয়ে ফেলা হচ্ছে। তারপর আরেকজন আগন্তক এসে বললঃ গাধাগুলোকে নিঃশেষ করে দেওয়া হচ্ছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণাকারীকে ঘোষণার আদেশ দিলেন। সে লোকদের মধ্যে ঘোষণা দিলঃ আল্লাহ ও তার রাসুল তোমাদের গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। কেননা, এগুলো ঘৃন্য। তখন ডেকচিগুলোকে উলটিয়ে দেয়া হল, অথচ তাতে গোশত টগবগ করছিল।
হাদিস নম্বরঃ ৫১৩১ | 5131 | ۵۱۳۱
পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১৩১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আমি জাবির ইবনু যায়দকে জিজ্ঞাসা করলামঃ মনে করে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। তিনি বললেনঃ হাকাম ইবনু আমর গিফারীও বসরায় আমাদের কাছে এ কথা বলতেন। কিন্তু ইবনু আব্বাস (রাঃ) তা অস্বীকার করেছেন। তারপর তিনি এ আয়াতটি তিলাওয়াত করেছেনঃ “বলুন আমার প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়েছে তাতে, লোকজন যা আহার করে তার মধ্যে আমি কিছুই নিষিদ্ধ পাই না … শেষ পর্যন্ত। (সুরা আন-আমঃ ১৪৫)।
হাদিস নম্বরঃ ৫১৩২ | 5132 | ۵۱۳۲
পরিচ্ছদঃ ২১৯৫. মাংসভোজী সর্বপ্রকার হিংস্র জন্তু খাওয়া
৫১৩২। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ সা’লাবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁত বিশিষ্ট সর্বপ্রকার হিংস্র জন্তু খেতে নিষেধ করেছেন। যুহরী (রহঃ) থেকে ইউনুস, মা’মার ইবনু উয়ায়না ও মাজিশুন অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৩ | 5133 | ۵۱۳۳
পরিচ্ছদঃ ২১৯৬. মৃত জন্তুর চামড়া
৫১৩৩। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি মৃত বকরীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা এটির চামড়াটি কেন কাজে লাগালে না? লোকজন উক্তি করলঃ এটি মৃত জানোয়ার। তিনি বললেনঃ শুধু তার খাওয়া হারাম করা হয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৪ | 5134 | ۵۱۳٤
পরিচ্ছদঃ ২১৯৬. মৃত জন্তুর চামড়া
৫১৩৪। খাত্তাব ইবনু উসমান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি মৃত বকরীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ এটির মালিকের কি হল? যদি এটির চামড়া থেকে তারা উপকার গ্রহণ করত।
হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৫ | 5135 | ۵۱۳۵
পরিচ্ছদঃ ২১৯৭. কস্তুরী
৫১৩৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন আঘাত প্রাপ্ত লোক যে আল্লাহর পথে আঘাত পায়, সে কিয়ামতেয় দিন এমতাবস্থায় আসবে যে তার ক্ষত স্থান থেকে টকটকে লাল রক্ত ঝরছে এবং তার সুগন্ধি হবে কস্তুরীর সুগন্ধির ন্যায়।
হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৬ | 5136 | ۵۱۳٦
পরিচ্ছদঃ ২১৯৭. কস্তুরী
৫১৩৬। মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সৎ সঙ্গী ও অসৎ সঙ্গীর উপমা হল কস্তুরী বহনকারী (আতর বিক্রেতা) ও কামারের হাপরের ন্যায়। মৃগ-কস্তুরী বহনকারী হযত তোমাকে কিছু দান করবে কিংবা তার কাছ থেকে তুমি কিছু খরিদ করবে কিংবা তার কাছ থেকে তুমি লাভ করবে সুবাস। আর কামারের হাপর হয়ত তোমার কাপড় পুড়িয়ে দেবে কিংবা তুমি তার কাছ থেকে পাবে দুর্গন্ধ।
হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৭ | 5137 | ۵۱۳۷
পরিচ্ছদঃ ২১৯৮. খরগোশ
৫১৩৭। আল ওয়ালীদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা ‘মাররুয যাহরান’ নামক স্থানে একটি খরগোশ ধাওয়া করলাম। তখন লোকজনও এর পেছনে ছুটল এবং তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ল। এরপর আমি সেটিকে ধরতে সক্ষম হালাম এবং আবূ তালহার নিকই নিয়ে এলাম। তিনি এটিকে যবাহ করলেন এবং তার পিছনের অংশ কিংবা তিনি বলেছেন দুই রান নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পাঠিয়ে দিলেন এবং তিনি তা গ্রহণ করলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৮ | 5138 | ۵۱۳۸
পরিচ্ছদঃ ২১৯৯. গুঁই সাপ
৫১৩৮। ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ গুই সাপ আমি খাই না, আর হারামও বলিনা।
হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৯ | 5139 | ۵۱۳۹
পরিচ্ছদঃ ২১৯৯. গুঁই সাপ
৫১৩৯। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মায়মুনা (রাঃ) এর গৃহে গেলেন। সেখানে ভুনা করা গুই পেশ করা হল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে দিকে হাত বাড়ালেন। এ সময় জনৈকা মহিলা বললঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানিয়ে দাও, তিনি কি জিনিস খেতে যাচ্ছেন। তখন তারা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটি গুই সাপ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুনে হাত সরিয়ে নিলেন। খালিদ (রাঃ) বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটি কি হারাম? তিনি বললেনঃ না, হারাম নয়। তবে আমাদের অঞ্চলে এটি নেই। তাই আমি একে ঘৃণা করি। খালিদ (রাঃ) বলেনঃ এরপর আমি তা আমার দিকে এনে খেতে লাগলাম। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকিয়ে দেখছিলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১৪০ | 5140 | ۵۱٤۰
পরিচ্ছদঃ ২২০০. যদি জমাট কিংবা তরল ঘিয়ের মধ্যে ইঁদুর পড়ে
৫১৪০। হুমায়দী (রহঃ) … মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একটি ইঁদুর ঘিয়ের মধ্যে পড়ে মরে গিয়েছিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ ইঁদুরটি এবং তার আশ-পাশের অংশ ফেলে দাও। এরপর তা খাও। সুফিয়ান (রহঃ) এর কাছে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, মা’মার এ হাদীসটি যুহরী সাঈদ ইবনু মূসাইয়্যাব, আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর সনদে বর্ননা করেন। তিনি বললেনঃ আমি যুহরী (রহঃ) কে বলতে শুনেছি যে, তিনি উবায়দুল্লাহ ইবনু আব্বাস, মায়মুনা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করছেন। তিনি আরো বলেন যে, আমি যুহরী থেকে উক্ত সনদে এ হাদীসটি একাধিকবার শুনেছি।
হাদিস নম্বরঃ ৫১৪১ | 5141 | ۵۱٤۱
পরিচ্ছদঃ ২২০০. যদি জমাট কিংবা তরল ঘিয়ের মধ্যে ইঁদুর পড়ে
৫১৪১। আবদান (রহঃ) … যুহরী (রহঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হয় জমাট কিংবা তরল তৈল বা ঘিয়ের মধ্যে ইঁদুর ইত্যাদি জানোয়ার পড়ে মারা গেলে তার কি হুকুম? তিনি বললেনঃ আমাদের কাছে উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ সূত্রে হাদীস পৌছেছে যে, ঘিয়ের মধ্যে পড়ে একটি ইদুর মারা গিয়েছিল, সেটির ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ দিয়েছিলেন, ইদুর ও এর সংলগ্ন অংশ ফেলে দিতে, এরপর তা ফেলে দেওয়া হয় এবং খাওয়া হয়।
হাদিস নম্বরঃ ৫১৪২ | 5142 | ۵۱٤۲
পরিচ্ছদঃ ২২০০. যদি জমাট কিংবা তরল ঘিয়ের মধ্যে ইঁদুর পড়ে
৫১৪২। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল এমন একটি ইঁদুর সম্পর্কে যা ঘিয়ের মধ্যে পড়েছিল। তখন তিনি বলেছিলেন ইঁদুরটি এবং তার আশপাশের অংশ ফেলে দাও এবং অবশিষ্ট অংশ খাও।
হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৩ | 5143 | ۵۱٤۳
পরিচ্ছদঃ ২২০১. পশুর মুখে চিহ্ন লাগানো ও দাগানো
৫১৪৩। উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি জানোয়ারের মুখে চিহ্ন লাগানোকে মাকরূহ মনে করতেন। ইবনু উমর (রাঃ) আরো বলেছেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানোয়ারের মুখে প্রহার করতে নিষেধ করেছেন। আনকাযী (রহঃ) হানযালা সূত্রে কুতায়বা (রহঃ) অনুরূপ বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ تُضْرَبُ الصُّورَةُ অর্থাৎ মুখে প্রহার করতে নিষেধ করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৪ | 5144 | ۵۱٤٤
পরিচ্ছদঃ ২২০১. পশুর মুখে চিহ্ন লাগানো ও দাগানো
৫১৪৪। আবুল ওয়ালীদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ আমি আমার এক ভাইকে নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম, যেন তিনি তাকে তাহনীক করেন অর্থাৎ খেজুর বা অন্য কিছু একবার চিবিয়ে তার মুখে দিয়ে দেন। এ সময়ে তিনি তার উট বাধার স্থানে ছিলেন। তখন আমি তাকে দেখলাম তিনি একটি বকরীর গায়ে চিহ্ন লাগাচ্ছেন। বর্ননাকারী বলেন আমার মনে হয় তিনি (হিশাম) বলেছেন বকরীর কানে চিহ্ন লাগাচ্ছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৫ | 5145 | ۵۱٤۵
পরিচ্ছদঃ ২২০২. কোন দল মালে গণীমত লাভ করার পর যদি তাদের কেউ সাথীদের অনুমতি ছাড়া কোন বকরী কিংবা উট যবাহ করে ফেলে তাহলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) থেকে বর্ণিত রাফি (রা) এর হাদীস অনুসারে সেই গোশত খাওয়া যাবে না। চোরের যবাহকৃত পশুর ব্যাপারে তাউস ও ইকরিমা (র) বলেছেন, তা ফেলে দাও।
৫১৪৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললাম। আগামী দিন আমরা শক্রর মুকাবিলা করবো; অথচ আমাদের সঙ্গে কোন ছুরি নেই। তিনি বললেনঃ সতর্ক দৃষ্টি রাখো কিংবা তিনি বলেছেনঃ জলদি করো। যে জিনিস রক্ত বহায় এবং যাতে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়, সেটি খাও। যতক্ষন না সেটি দাত কিংবা নখ হয়। এ ব্যাপারে তোমাদের জানোাচ্ছি, দাঁত হলো হাড়, আর নখ হল হাবশীদের ছুরি। দলের দ্রুতগামী লোকেরা আগে বেড়ে গেল এবং গনীমতের মালামাল লাভ করল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন লোকজনের পেছনে। তারা ডেকচি চড়িয়ে দিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে তা উল্টিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন, তারপর সেগুলো উল্টিয়ে দেয়া হল। এরপর তিনি তাদের মধ্যে মালে গনীমত বণ্টন করলেন এবং দশটি বকরীকে একটি উটের সমান গন্য করলেন। দলে অগ্রবর্তীদের কাছ থেকে একটি উট ছুটে গিয়েছিল। অথচ তাদের সঙ্গে কোন অশ্বারোহী ছিল না। এ অবস্থায় এক ব্যাক্তি উটটির প্রতি তীর নিক্ষেপ করলে আল্লাহ উটটিকে থামিয়ে দিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সকল চতুষ্পদ জন্তুর মধ্যে বন্য পশুর স্বভাব রয়েছে। কাজেই, তন্মধ্যে কোনটি যদি এরুপ করে, তাহলে তার সঙ্গে অনুরূপ ব্যবহার করবে।
হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৬ | 5146 | ۵۱٤٦
পরিচ্ছদঃ ২২০৩. কোন দলের উট ছুটে গেলে তাদের কেউ যদি সেটিকে তাদের উপকারের উদ্দেশ্যে তীর নিক্ষেপ করে এবং হত্যা করে, তাহলে রাফি (রা) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর হাদীস অনুযায়ী তা জায়েয
৫১৪৬। মুহাম্মাদ ইবনু সালাম (রহঃ) … রাফী ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন এক সফরে আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। তখন উটগুলোর মধ্য থেকে একটি উট পালিয়ে যায়। তিনি বলেন তখন এক ব্যাক্তি সেটির প্রতি তীর নিক্ষেপ করলে আল্লাহ সেটিকে থামিয়ে দেন। তিনি বলেন এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সকল পশুর মধ্যে বন্যপশুর চাঞ্চল্য আছে। সুতরাং তার মধ্যে যেটি তোমাদের উপর প্রবল হয়ে উঠলে সেটির সঙ্গে অনুরূপ ব্যবহার করো। তিনি বলেন আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা অনেক সময় যুদ্ধ অভিযানে বা সফরে থাকি, যবাহ করতে ইচ্ছা করি কিন্তু ছুরি থাকে না। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আঘাত করো এমন জিনিস দ্বারা যা রক্ত প্রবাহিত করে অথবা তিনি বলেছেনঃ এমন জিনিস দ্বারা যা রক্ত ঝরায় এবং যার উপরে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়েছে সেটি খাও, তবে দাঁত ও নখ ব্যতীত। কেননা দাঁত হল হাড়, আর নখ হল হাবশীদের ছুরি।
২২০৪. পরিচ্ছেদঃ অনন্যোপায় ব্যক্তির খাওয়া। আল্লাহ তা’আলার বাণী: “হে মু’মিনগণ, তোমাদের আমি সেসব পবিত্র বস্তু দিয়েছি তা থেকে তোমরা আহার কর, এবং আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। যদি তোমরা শুধু তাঁরই ইবাদত কর। নিশ্চয় আল্লাহ্ মৃত জন্তু, রক্ত, শূকর- মাংস এবং যার উপর আল্লাহর নাম ব্যতীত অন্যের নাম উচ্চারিত হয়েছে, তা তোমাদের হারাম করেছেন। কিন্তু যে অনন্যোপায় অথচ নাফরমান কিংবা সীমালংঘনকারী নয়, তার কোন পাপ হবে না ( ২: ১৭২-১৭৩)। আল্লাহ্ আরো বলেন: তোমরা আল্লাহর নিদর্শনে বিশ্বাসী হলে, যে জন্তুর উপর তাঁর নাম নেওয়া হয়েছে, তা আহার কর। তোমাদের কী হয়েছে যে, যাতে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়েছে, তোমরা তা আহার করবে না? যা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ তা তিনি বিশেষভাবে-ই তোমাদের নিকট বিবৃত করেছেন তবে তোমরা নিরুপায় হলে তা আলাদা। অনেক অজ্ঞানতাবশত: নিজেদের খেয়াল-খুশী দ্বারা অবশ্যই অন্যকে বিপদগামী করে, আপনার প্রতিপালক সীমালংঘনকারীদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত (৬: ১১৮-১১৯)। আল্লাহ আরো বলেন: “বলুন, আমার প্রতি যে প্রত্যাদেশ হয়েছে তাতে লোকে যা আহার করে তার মধ্যে আমি কিছুই নিষিদ্ধ পাই না, মরা, বহমান রক্ত ও শূকরের মাংস ব্যতীত- কেননা, এটা অবশ্যই অপবিত্র”- অথবা যা অবৈধ, আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গের কারণে, “তবে কেউ অবাধ্য না হয়ে এবং সীমালংঘন না করে তা গ্রহণে নিরুপায় হলে, আপনার প্রতিপালক ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (৬: ১৪৫)।
আল্লাহ আরো বলেনঃ আল্লাহ তোমাদের যা দিয়েছেন তার মধ্যে যা বৈধ ও পবিত্র তা তোমরা আহার কর এবং তোমরা যদি কেবল আল্লাহরই ইবাদত কর, তবে তাঁর অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। আল্লাহ তো কেবল মরা, রক্ত, শূকর-মাংস এবং যা যবাহকালে আল্লাহর পরিবর্তে অন্যের নাম নেওয়া হয়েছে, তা-ই তোমাদের জন্য হারাম করেছেন। কিন্তু কেউ অন্যায়কারী কিংবা সীমালংঘনকারী না হয়ে অনন্যোপায় হলে, আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়াল (১৬:১১৪-১১৫)।