হাদিস নম্বরঃ ৪৮৯৭
পরিচ্ছদঃ ২০৫১. খোলার বর্ণনা এবং তালাক হওয়ার নিয়ম। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘তোমরা নারীদের যা দিয়েছ তা থেকে কিছু গ্রহণ করা তোমাদের জন্য হালাল হবে না ……. অত্যাচারী পর্যন্ত।’’ উমার (রা) কাযীর অনুমতি ছাড়া খুলা’কে বৈধ বলেছেন। ‘উসমান (রা) মাথার বেনী ছাড়া অন্য সব কিছুর পরিবর্তে খুলা’ করার অনুমতি দিয়েছেন। তাউস (র) বলেন, যদি তারা উভয় আল্লাহর সীমা ঠিক না রাখতে পারার আশংকা করে অর্থাৎ সংসার জীবনে তাদের প্রত্যেকের উপর যে দায়িত্ব আল্লাহ্ অর্পণ করেছেন সে ব্যপারে তিনি বোকাদের মাঝে একথা বলেননি যে, খুলা ততক্ষণ বৈধ হবে না, যতক্ষণ না মহিলা তাকে সহবাস থেকে বাধা দিবে।
৪৮৯৭। সুলায়মান (রহঃ) … ইকরামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, জামীলা (সাবিতের স্ত্রী) এরপর উক্ত হাদীসটি উল্লেখ করেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৮৯৮ | 4898 | ٤۸۹۸
পরিচ্ছদঃ ২০৫২. স্বামী-স্ত্রী দ্বন্দ ক্ষতির আশংকায় খুলা’র প্রতি ইঙ্গিত করতে পারে কি ? মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘ যদি তোমরা তাদের উভয়ের মধ্যে বিরোধের আশংকা কর, তবে উভয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে একজন করে সালিশ নিযুক্ত কর। যদি তারা (স্বামী-স্ত্রী) উভয়ে সংশোধন হতে চায়, তবে আল্লাহ তাদের জন্য সে উপায় বের করে দেবেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ সর্ব বিষয়ে অবহিত এবং তিনি সব কিছুর খবর রাখেন।’’ (৪ঃ৩৫)
৪৮৯৮। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … মিস্ওয়ার ইবনু মাখারামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, ‘বনু মুগীরার লোকেরা তাদের মেয়েকে ‘আলীর সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য আমার অনুমতি প্রার্থনা করছে, আমি এর অনুমতি দিতে পারি না।
হাদিস নম্বরঃ ৪৮৯৯ | 4899 | ٤۸۹۹
পরিচ্ছদঃ ২০৫৩. বিক্রয়ের কারণে দাসী তালাক হয় না
৪৮৯৯। ইসমাঈল ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহধর্মিণী ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বারীরার মাধ্যমে (শরীয়তের) তিনটি বিধান জানা গেছে। এক. তাকে আযাদ করা হল, এরপর তাকে তার স্বামীর সাথে থাকা বা না থাকার ইখ্তিয়ার দেওয়া হল। দুই. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আযাদকারী আযাদকৃত গোলামের পরিত্যক্ত সম্পত্তির মালিক হবে। তিন. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশ করলেন, দেখতে পেলেন ডেগে গোশত উথলিয়ে উঠছে। তাঁর কাছে রুটি ও ঘরের অন্য তরকারী উপস্থিত করা হল। তখন তিনি বললেনঃ গোশতের পাত্র দেখছি না যে যার ভিতর গোশত ছিল? লোকেরা জবাব দিল, হাঁ, কিন্তু সে গোশত বারীরাকে সাদাকা হিসাবে দেওয়া হয়েছে। আর আপনি তো সাদাকা খান না? তিনি বললেনঃ তার জন্য সাদাকা, আর আমাদের জন্য এটা হাদিয়া।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯০০ | 4900 | ٤۹۰۰
পরিচ্ছদঃ ২০৫৪. দাসী স্ত্রী আযাদ হওয়ার পরে গোলাম স্বামীর সাথে থাকা বা না থাকার ইখ্তিয়ার
৪৯০০। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি তাকে অর্থাৎ বারীরার স্বামীকে ক্রীতদাস অবস্থায় দেখেছি।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯০১ | 4901 | ٤۹۰۱
পরিচ্ছদঃ ২০৫৪. দাসী স্ত্রী আযাদ হওয়ার পরে গোলাম স্বামীর সাথে থাকা বা না থাকার ইখ্তিয়ার
৪৯০১। আবদুল আলা ইবনু হাম্মাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ অমুক গোত্রের গোলাম এই মুগীস অর্থাৎ বারীরার স্বামী; আমি যেন তাকে এখনও মদিনার অলিতে গলিতে ক্রন্দনরত অবস্থায় বারীরার পিছু পিছু ঘুরতে দেখতে পাচ্ছি।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯০২ | 4902 | ٤۹۰۲
পরিচ্ছদঃ ২০৫৪. দাসী স্ত্রী আযাদ হওয়ার পরে গোলাম স্বামীর সাথে থাকা বা না থাকার ইখ্তিয়ার
৪৯০২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ বারীরার স্বামী কালো গোলাম ছিল। তার নাম মুনাস। সে অমুক গোত্রের গোলাম ছিল। আমি যেন এখনো দেখতে পাচ্ছি সে মদিনার অলিতে গলিতে বারীরার পিছু পিছু ঘুরছে।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৩ | 4903 | ٤۹۰۳
পরিচ্ছদঃ ২০৫৫. বারীরার স্বামীর ব্যাপারে নবী (সাঃ) এর সুপারিশ
৪৯০৩। মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, বারীরার স্বামী ক্রীতদাস ছিল। মুগীস বলে তাকে ডাকা হত। আমি যেন এখনও তাকে দেখছি সে বারীরার পিছনে কেঁদে কেঁদে ঘুরছে আর তার দাঁড়ি বেয়ে অশ্রু ঝরছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আব্বাস! বারীরার প্রতি মুগীসের ভালবাসা এবং মুগীসের প্রতি বারীরার অনাসক্তি দেখে তুমি কি আশ্চর্যান্বিত হও না? এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ (বারীরা) তুমি যদি তার কাছে আবার ফিরে যেতে? সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কি আমাকে নির্দেশ দিচ্ছেন? তিনি বললেনঃ আমি সুপারিশ করছি মাত্র। সে বললঃ আমার তার কোন প্রয়োজন নেই।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৪ | 4904 | ٤۹۰٤
পরিচ্ছদঃ ২০৫৬. পরিচ্ছেদ নাই
৪৯০৪। আবদুল্লাহ ইবনু রাজা (রহঃ) … আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, আয়শা (রাঃ) বারীরাকে ক্রয় করতে চাইলেন। কিন্তু তার মালিকগণ ওলীর (অভিভাবকত্বের অধিকার) শর্ত ছাড়া বিক্রয় করতে সম্মত হল না। তিনি বিষয়টি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তুলে ধরলে তিনি বললেনঃ তুমি তাকে ক্রয় কর এবং আযাদ করে দাও। কেননা, ওলীর অধিকার আযাদকারীর জন্যই সংরক্ষিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কিছু গোশত আনা হল এবং বলা হল এ গোশত বারীরাকে সাদাকা করা হয়েছে। তিনি বললেনঃ তার জন্য সাদাকা বটে, তবে তা আমাদের জন্য হাদিয়া।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৫ | 4905 | ٤۹۰۵
পরিচ্ছদঃ ২০৫৬. পরিচ্ছেদ নাই
৪৯০৫। আদম (রহঃ) বর্ণনা করেন শোবা আমাদের কাছে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তাতে আরও বলা হয়েছে স্বামীর সাথে থাকা না থাকার ব্যপারে তাকে এখতিয়ার দেয়া হয়েছিল।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৬ | 4906 | ٤۹۰٦
পরিচ্ছদঃ ২০৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা মুশরিক মহিলাদেরকে বিয়ে করো না যে পর্যন্ত তারা ঈমান না আনে। নিঃসন্দেহে একজন ঈমানদার দাসী একজন মুশরিক মহিলা অপেক্ষা উত্তম। যদি সে তোমাদের কাছে ভালও মনে হয়।
৪৯০৬। কুতায়বা (রহঃ) … নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু উমরকে কোন খৃস্টান বা ইয়াহুদী নারীর বিবাহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ আল্লাহ তা আলা মুমিনদের উপর মুশরিক নারীদের বিবাহ হারাম করে দিয়েছেন। আর এর চেয়ে মারাত্তক শিরক কি হতে পারে যে মহিলা বলে, আমার প্রভু ঈসা (আলাইহিস সালাম)। অথচ তিনিও আল্লাহর একজন বান্দাহ।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৭ | 4907 | ٤۹۰۷
পরিচ্ছদঃ ২০৫৮. মুশরিক নারী মুসলমান হলে তার বিবাহ ও ইদ্দত
৪৯০৭। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুমিনদের বিষয়ে মুশরিকরা দুটি দলে বিভক্ত ছিল। একদল ছিল হরবী মুশরিক, তিনি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেন এবং তারাও তার বিরাদ্ধে যুদ্ধ করত। অন্যদল ছিল চুক্তিবদ্ধ মুশরিক। তিনি তাদের সঙ্গে লড়তেন না এবং তারাও তার সাথে লড়ত না। হরবীদের কোন মহিলা যদি হিজরত করে (মুসলমানদের) কাছে চলে আসত! তাহলে সে ঋতুমতী হয়ে পূনরায় পবিত্র না-হওয়া পর্যন্ত তার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হতো না। পবিত্র হলে পরেই তার সাথে বিবাহ বৈধ হত। তবে যদি বিয়ের পূর্বেই তার স্বামী হিজরত করত তাহলে মহিলাকে তার কাছেই ফিরিয়ে দিতে হত। আর যদি তাদের কোন দাস বা দাসী হিজরত করত তবে তারা মুক্ত হয়ে যেত এবং মুহাজিরদের সমান অধিকার লাভ করত।
এরপর বর্ননাকারী (আতা) চুক্তিবদ্ধ মুশরিকদের প্রসঙ্গে মুজাহিদের অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। যদি চুক্তিবদ্ধ মুশরিকদের কোন দাস বা দাসী হিজরত করে আসত, তাহলে তাদেরকে পূনরায় পাঠিয়ে দেওয়া হতো না। তবে তাদের মুল্য ফিরিয়ে দেওয়া হতো। আতা (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, আবূ উমাইয়্যার কন্যা কুরায়বা উমর ইবনু খাত্তাবের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ছিল। তিনি তাকে তালাক দিলে মুআবিয়া ইবনু আবূ সুফিয়ান তাকে বিবাহ করেন। আর আবূ সুফিয়ানের কন্যা উম্মুল হাকাম ইয়ায ইবনু গানম ফিহরীর বিবাহে আবদ্ধ ছিল। তিনি তাকে তালাক দিলে আবদুল্লাহ ইবনু উসমান সাকাফী (রাঃ) তাকে বিয়ে করেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৮ | 4908 | ٤۹۰۸
পরিচ্ছদঃ ২০৫৯. যিম্মি বা হরবীর কোন মুশরিক বা খৃস্টান স্ত্রী যদি ইসলাম গ্রহণ করে। ‘আবদুল ওয়ারি (র)…. ইব্ন ‘আববাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, যদি কোন খৃস্টান নারী তার স্বামীর পূর্বে ইসলাম গ্রহণ করে, তবে উক্ত মহিলা তার জন্য হারাম হয়ে যায়। দাউদ (র) ইব্রাহীম সায়েগ (র) থেকে বর্ণনা করেন, আতা (র) কে জিজ্ঞাসা করা হল, চুক্তিবদ্ধ কোন হরবীর স্ত্রী যদি ইসলাম গ্রহণ করে এবং ইদ্দতের মধ্যেই তার স্বামী ইসলাম গ্রহণ করে, তবে কি মহিলা তার স্ত্রী থাকবে ? তিনি উত্তর দিলেন, না তবে সে মহিলা যদি নতুনভাবে বিবাহ ও মোহ্রে সম্মত হয়। মুজাহিদ (র) বলেন, মহিলার ইদ্দতের মধ্যে স্বামী মুসলমান হলে সে তাকে বিবাহ করে নিবে। আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেনঃ না তারা কাফিরদের জন্য হালাল, আর না কাফিরেরা তাদের জন্য হালাল। অগ্নি উপাসক স্বামী-স্ত্রী মুসলমান হলে কাতাদা ও হাসান তাদের সমবন্ধে বলেন, তাদের পূর্ব বিবাহ বলবৎ থাকবে। আর যদি তাদের কেউ আগে ইসলাম কবূল করে, আর অন্যজন অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে, তবে মহিলা তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। স্বামীর জন্য তাকে গ্রহণ করার কোন পথই থাকবে না। ইব্ন জুরায়জ (র) বলেন, আমি ‘আতা’ (র) কে জিজ্ঞসা করলামঃ মুশরিকদের কোন মহিলা যদি ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমানদের নিকট চলে আসে, তাহলে তার স্বামী কি তার নিকট থেকে বিনিময় গ্রহণ করতে পারবে ? আল্লাহ্ তা’আলা তো বলেছেনঃ ‘‘তারা যা ব্যয় করেছে তোমরা তাদেরকে তা দিয়ে দাও।’’ তিনি উত্তর দিলেনঃ না। এ আদেশ কেবল নবী (সাঃ) ও জিম্মীদের মধ্যে ছিল। (মুশরিকদের বেলায় এটা প্রযোজ্য নয়)। মুজাহিদ (র) বলেনঃ এ সব ছিল সে সন্ধির ক্ষেত্রে যা নবী (সাঃ) ও কুরায়শদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
৪৯০৮। ইবনু বুকায়র (রহঃ) … ‘উরওয়া ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) বলেন, ঈমানদার মহিলারা যখন হিজরত করে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসত, তখন তিনি আল্লাহর নির্দেশ “হে ঈমানদারগণ! কোন ঈমানদার মহিলা হিজরত করে তোমাদের কাছে আসলে তোমরা তাদেরকে যাচাই কর” অনুসারে তাদেরকে যাচাই করতেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ ঈমানদার মহিলাদের মধ্যে যারা (আয়াতে উল্লেখিত) শর্তাবলী মেনে নিত, তারা পরীক্ষায় কৃতকার্য হত। তাই যখনই তারা এ ব্যাপারে মৌখিক স্বীকারোক্তি প্রকাশ করত তখনই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বলতেন যাও, আমি তোমাদের বায়’আর গ্রহণ করেছি। আল্লাহর কসম! কথার মাধ্যমে বায়’আত গ্রহণ ছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাত কখনো কোন নারীর হাত স্পর্শ করেনি। আল্লাহর শপথ। তিনি শুধুমাত্র সেইসব বিষয়েই বায়’আত গ্রহণ করতেন, যে সব বিষয়ে বায়’আত গ্রহণ করার জন্য আল্লাহ্ তাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন। বায়’আত গ্রহণ শেষে তিনি বলতেনঃ আমি কথায় তোমাদের বায়’আত গ্রহণ করলাম।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৯ | 4909 | ٤۹۰۹
পরিচ্ছদঃ ২০৬০. মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা স্বীয় স্ত্রীদের সাথে ‘সংগত না হওয়ার শপথ’ করে, তারা চার মাস অপেক্ষা করবে। এরপর যদি তারা প্রত্যাগত হয় তবে আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর যদি তারা তালাক দেওয়ার সংকল্প করে, তবেও আল্লাহ্ সব কিছু শুনেন ও জানেন। فَاءُوا শব্দের অর্থ رَجَعُوا প্রত্যাবর্তন করে (২ঃ২৬৬ ও ২৭৭)
৪৯০৯। ইসমাঈল ইবনু আবূ উওয়ায়স (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার তাঁর সহধর্মিনাদের থেকে ঈলা (কাছে না যাওয়ার প্রতিজ্ঞা) করলেন। সে সময় তার পা মচকে গিয়েছিল। তিনি তার কামরার মাচানে উনত্রিশ দিন অবস্থান করেন। এরপর সেখান থেকে নেমে আসেন। লোকেরা বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আপনি তো এক মাসের প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। তিনি বললেনঃ মাস উনত্রিশ দিনেরও হয়।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯১০ | 4910 | ٤۹۱۰
পরিচ্ছদঃ ২০৬০. মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা স্বীয় স্ত্রীদের সাথে ‘সংগত না হওয়ার শপথ’ করে, তারা চার মাস অপেক্ষা করবে। এরপর যদি তারা প্রত্যাগত হয় তবে আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর যদি তারা তালাক দেওয়ার সংকল্প করে, তবেও আল্লাহ্ সব কিছু শুনেন ও জানেন। فَاءُوا শব্দের অর্থ رَجَعُوا প্রত্যাবর্তন করে (২ঃ২৬৬ ও ২৭৭)
৪৯১০। কুতায়বা (রহঃ) … নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু উমর (রাঃ) যে ঈলার কথা আল্লাহ উল্লেখ করেছেন সে সস্বন্ধে বলতেন, সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পরে প্রত্যেকেরই উচিৎ হয় স্ত্রীর সৌজন্যর সাথে গ্রহণ করবে, না হয় তালাক দেওয়ার সিধান্ত নিবে, যেমনভাবে আল্লাহ তাআলা আদেশ করেছেন।
ইসমাঈল আমাকে আরও বলেছেন, মালিক (রহঃ) নাফি এর সুত্রে ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ননা করেছেন যে, চার মাস অতীত হয়ে গেলে তালাক দেওয়া পর্যন্ত তাকে আটকিয়ে রাখ হবে। আর তালাক না দেওয়া পর্যন্ত তালাক প্রযোজ্য হবে না। উসমান, আলী, আবূ জারদা আয়িশা (রাঃ) এবং আরও বার জন সাহাবী থেকেও উক্ত মতামত উল্লেখ করা হয়।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯১১ | 4911 | ٤۹۱۱
পরিচ্ছদঃ ২০৬১. নিরুদ্দিষ্ট ব্যক্তির পরিবার ও তার সম্পদের বিধান। ইব্ন মুসাইয়্যাব (র) বলেন, যুদ্ধের ব্যূহ থেকে কোন ব্যক্তি নিখোঁজ হলে এক বছর অপেক্ষা করবে। ইব্ন মাসউদ (রা) একটি দাসী ক্রয় করে এক পর্যন্ত তার মালিককে খুঁজলেন (মূল পরিশোধ করার জন্য)। তিনি তাকে পেলেন না, সে নিখোঁজ হয়ে যায়। অবশেষে তিনি এক দিরহাম, দুই দিরহাম করে দান করতেন এবং বলতেনঃ হে আল্লাহ্ ! এটা অমুকের পক্ষ থেকে দিচ্ছি। যদি মালিক এসে যায়, তবে এর সাওয়াব আমি পাব, আর তার টাকা পরিশোধ করার দায়িত্ব হবে আমার। তিনি বলেনঃ হারনো প্রাপ্তির ব্যাপারেও তোমরা এরূপ কাজ করবে। ইব্ন মাসউদ (রা)-ও এরূপ মত ব্যক্ত করেছেন। ঠিকানা জানা আছে এরূপ কয়েদী সমবন্ধে যুহ্রী (র) বলেনঃ তার স্ত্রী অন্যত্র বিয়ে বসতে পারবে না এবং তার সম্পদও বন্টন করা হবে না। তবে তার খবরাখবর সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেলে, তাঁর ব্যাপারে নিখোঁজ ব্যক্তির বিধান কার্যকর হবে।
৪৯১১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … মুনবাইস এর আযাদ কৃত গোলাম ইয়াযীদ থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হারানো বকরী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ ওটাকে ধরে নাও। কেননা, ওটা হল তোমার জন্য, না হয় তোমার (অন্য) ভাইয়ের জন্য অথবা নেকড়ের জন্য। তাঁকে আবার হারানো উট সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি রেগে গেলেন এবং তার উভয় গণ্ডদেশ রক্তিম বর্ন ধারন করল। এরপর তিনি বললেনঃ ওকে নিয়ে তোমার ভাবনা কিসের? তার সাথে (চলার জন্য) পায়ের তলায় ক্ষুর ও (পানাহারের জন্য) পেটে মশক আছে। সে পানি পান করতে থাকবে এবং বৃক্ষ-লতা খেতে থাকবে আর এর মধ্যে মালিক তার সন্ধান লাভ করবে। তাকে লুকতা (হারানো প্রাপ্তি) সমন্ধে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ প্রাপ্ত বস্তুর থলে ও মাথার বন্ধনটা চিনে নাও এবং এক বছর পর্যন্ত এর ঘোষণা দিতে থাক। যদি এ শনাক্তকারী (মালিক) আসে, তবে ভালো কথা, অন্যথায় এটাকে তোমার মালের সাথে মিলিয়ে নাও।
সুফিয়ান বলেনঃ আমি রাবীআ ইবনু আবূ আবদুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করে উল্লিখিত কথাগুলো ছাড়া কিছুই পাইনি। আমি বললামঃ হারান প্রানী সম্পর্কে মুনবাইস এর আযাদকৃত গোলাম ইয়াযীদের হাদীসটি কি যায়েদ ইবনু খালিদ থেকে বর্ণিত? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। ইয়াহইয়া বলেন, রাবীআ বলতেনঃ হাদীসটি মুনবাইস-এর আযাদকৃত গোলাম ইয়াযীদ-এর সূত্রে যায়েদ ইবনু খালিদ থেকে বর্ণিত। সুফিয়ান বললেনঃ আমি রাবীআর সাথে সাক্ষাৎ করে এ ব্যাপারে আলোচনা করলাম।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯১২ | 4912 | ٤۹۱۲
পরিচ্ছদঃ ২০৬৩. ইশারার মাধ্যমে তালাক ও অন্যান্য কাজ। ইব্ন ‘উমর (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইংগিত করলেন। কা’ব ইব্ন মালিক (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আস্মা (রা) বলেন, নবী (সাঃ) সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। ‘আয়েশা (রা) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি ? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের প্রতি ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি ? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্র (রা)-এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ)হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ কাতাদা (রা) নবী (সাঃ) মুহরিহম-এর (এহরামকার) শিকার সমবন্ধে বললেন, তোমদেরকে কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইশারা করেছিলে ? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।
২০৬২. পরিচ্ছেদঃ যিহার। (আল্লাহ্ বলেছেনঃ) “আল্লাহ্ শুনতে পেয়েছেন সেই মহিলাটির কথা যে, তার স্বামীর ব্যাপারে তোমার সাথে বিতর্ক করে থাকে আর যে ব্যক্তি এতে সক্ষম হবে না, সে যেন “ষাটজন মিসকীনকে খাবার দেয়া” পর্যন্ত। (বুখারী (রহঃ) বলেনঃ) ইসমাঈল আমাকে বলেছেন, মালিক (রহঃ) তাঁর কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, তিনি ইবন শিহাবকে গোলামের যিহার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। উত্তরে তিনি বললেনঃ আযাদ ব্যক্তির অনুরূপ। মালিক (রহঃ) বলেনঃ গোলাম ব্যক্তি দু’মাস রোযা রাখবে। হাসান বলেনঃ আযাদ মহিলা বা বাঁদীর সাথে আযাদ পুরুষ বা গোলামের যিহার একই রকম। ইকরামা বলেনঃ বাঁদীর সাথে যিহার করলে কিছু হবে না। যিহার তো কেবল আযাদ রমনীর সাথেই হতে পারে।
৪৯১২। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উটে চড়ে তাওয়াফ করলেন। তিনি যখনই রুকনের কাছে আসতেন তখনই এর প্রতি ইশারা করতেন এবং আল্লাহু আকরার, বলতেন। যায়নাব (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “ইয়াজুজ ও মাজুজ” এদের দরজা এভাবে খুলে গেছে; এই বলে তিনি (তার আঙ্গুলকে) নব্বই এর মত করলেন। (অর্থাৎ শাহাদাত আঙ্গুলীর মাথা বৃদ্ধাঙ্গুলীর গোড়ায় লাগালেন।)
হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৩ | 4913 | ٤۹۱۳
পরিচ্ছদঃ ২০৬৩. ইশারার মাধ্যমে তালাক ও অন্যান্য কাজ। ইব্ন ‘উমর (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইংগিত করলেন। কা’ব ইব্ন মালিক (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আস্মা (রা) বলেন, নবী (সাঃ) সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। ‘আয়েশা (রা) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি ? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের প্রতি ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি ? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্র (রা)-এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ)হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ কাতাদা (রা) নবী (সাঃ) মুহরিহম-এর (এহরামকার) শিকার সমবন্ধে বললেন, তোমদেরকে কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইশারা করেছিলে ? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।
৪৯১৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূল কাসিম ঠিক বলেছেনঃ জুমআর দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, যে মুহূর্তে কোন মুসলমান দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে আল্লাহর কাছে যে কোন কল্যান চায় আল্লাহ অবশ্যই তা মঞ্জুর করে থাকেন। তিনি স্বীয় হাত দ্বারা ইশারা করেন এবং তার আঙ্গুলগুলো মধ্যমা ও কনিষ্ঠ আঙ্গুলের পেটে রাখেন। আমরা বললামঃ তিনি স্বল্পতা বুঝাতে চাচ্ছেন।
উওয়ায়সী (রহঃ) বলেনঃ ইবরাহীম ইবনু স্বাদ শুবা ইবনু হাজ্জাজ থেকে, তিনি হিশাম ইবনু যায়েদ থেকে তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে জনৈক ইয়াহুদী একটি বালিকার উপর নির্যাতন করে তার অলংকারাদি ছিনিয়ে নেয়। আর (পাথর দ্বারা) তার মস্তক চুর্ণ করে। সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার পূর্ব মূহুর্তে তার পরিবারের লোকেরা তাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে আসে। তখন সে নিশ্চুপ ছিল। রাসুসুলাহ (একজন নির্দোষ ব্যাক্তির নাম উল্লেখ পূর্বক) তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমাকে কে হত্যা করেছে? অমুক? সে মাথার ইশারায় বললঃ না। তিনি অন্য এক নিরপরাধ ব্যাক্তির নাম ধরে বললেন, তবে কি অমুক? সে ইশারায় জানাল, না। এবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হত্য্যকারীর নাম উল্লেখ করে বললেনঃ তবে অমুক ব্যাক্তি মেরেছে কি? সে মাথা নেড়ে বললঃ জি-হ্যাঁ। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদেশ উক্ত ব্যাক্তির মাথা দু-পাথরের মাঝখানে রেখে চুর্ন করা হল।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৪ | 4914 | ٤۹۱٤
পরিচ্ছদঃ ২০৬৩. ইশারার মাধ্যমে তালাক ও অন্যান্য কাজ। ইব্ন ‘উমর (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইংগিত করলেন। কা’ব ইব্ন মালিক (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আস্মা (রা) বলেন, নবী (সাঃ) সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। ‘আয়েশা (রা) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি ? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের প্রতি ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি ? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্র (রা)-এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ)হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ কাতাদা (রা) নবী (সাঃ) মুহরিহম-এর (এহরামকার) শিকার সমবন্ধে বললেন, তোমদেরকে কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইশারা করেছিলে ? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।
৪৯১৪। কাবীসা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, ফিতনা (বিপর্যয়) এদিক থেকে আসবে। তিনি পুর্ব দিকে ইশারা করলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৫ | 4915 | ٤۹۱۵
পরিচ্ছদঃ ২০৬৩. ইশারার মাধ্যমে তালাক ও অন্যান্য কাজ। ইব্ন ‘উমর (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইংগিত করলেন। কা’ব ইব্ন মালিক (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আস্মা (রা) বলেন, নবী (সাঃ) সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। ‘আয়েশা (রা) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি ? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের প্রতি ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি ? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্র (রা)-এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ)হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ কাতাদা (রা) নবী (সাঃ) মুহরিহম-এর (এহরামকার) শিকার সমবন্ধে বললেন, তোমদেরকে কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইশারা করেছিলে ? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।
৪৯১৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ আমরা কোন এক সফরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। সূর্য অস্ত গেলে তিনি এক বাক্তি (বিলাল) কে বললেনঃ নেমে যাও আমার জন্য ছাতু গোল। সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ যদি আপনি সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতেন। (তাহলে রোযাটি পূর্ন হত)। তিনি পূনরায় বললেনঃ নেমে গিয়ে ছাতু গোল। সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! যদি সন্ধ্যা হতে দিতেন! এখনো তো দিন রয়ে গেছে। তিনি আবার বললেনঃ যাও, গিয়ে ছাতু গুলে আন। তৃতীয়বার আদেশ দেওয়ার পর সে নামল এবং তার জন্য ছাতু প্রস্তুত করল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা পান করলেন। এরপর তিনি পূর্বদিকে হাত দিয়ে ইশারা করে বললেনঃ যখন তোমরা এদিক থেকে রাত নেমে আসতে দেখবে তখন রোযাদার ইফতার করবে।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৬ | 4916 | ٤۹۱٦
পরিচ্ছদঃ ২০৬৩. ইশারার মাধ্যমে তালাক ও অন্যান্য কাজ। ইব্ন ‘উমর (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইংগিত করলেন। কা’ব ইব্ন মালিক (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আস্মা (রা) বলেন, নবী (সাঃ) সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। ‘আয়েশা (রা) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি ? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের প্রতি ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি ? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্র (রা)-এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ)হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ কাতাদা (রা) নবী (সাঃ) মুহরিহম-এর (এহরামকার) শিকার সমবন্ধে বললেন, তোমদেরকে কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইশারা করেছিলে ? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।
৪৯১৬। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিলালের আযান যেন তোমাদের কাউকে-সাহরী থেকে বিরত না রাখে। কেননা, সে আযান দেয়, যাতে তোমাদের রাত্রি জাগরণকারীরা (রাতের ইবাদতকারীরা) কিছু আরাম করতে পারে। সকাল বা ফজর হয়েছে এমন কিছু বুঝানো তার উদ্দেশ্য নয়। ইয়াযীদ তার হাত দুটি সম্মূখে প্রসারিত করে দু-দিকে ছড়িয়ে দিলেন। (সুবহে সা’দিক কিভাবে উদ্ভাসিত হয় তা দেখানোর জন্য)।
লায়স (রহঃ) বলেনঃ জাফর ইবনু রাবীআ, আবদূর রহমান ইবনু হরমুয থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর কাছে শুনেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কৃপন ও দাতা ব্যাক্তির দৃষ্টান্ত হচ্ছে এমন দু-ব্যাক্তির ন্যায়, যাদের পরিধানে বক্ষস্থল থেকে গলার হাড় পর্যন্ত লৌহ-নির্মিত পোশাক রয়েছে। দানকারী যখনই কিছু দান করে, তখনই তার শরীরে পোশাকটি বড় ও প্রশস্ত হতে থাকে, এমনকি এটা তার আঙ্গুল ও অন্যান্য অঙ্গগুলিকে ঢেকে ফেলে।
পক্ষন্তরে, কৃপণ যখনই দান করার ইচ্ছা করে, তখনই তার পোশাকের প্রতিটি হলকা চেপে যায়। সে প্রশস্ত করার চেষ্টা করলেও সেটা প্রশস্ত হয় না। এ কথা বলে তিনি নিজের আঙ্গুল দ্বারা কণ্ঠনালীর প্রতি ইশারা করলেন (অর্থাৎ দাতা ব্যাক্তি দান করার ইচ্ছা করলে তার অন্তর প্রশান্তি হয়, সে উদার হতে দান করতে পারে; কিন্তু কৃপণ দান করতে ইচ্ছা করলেই তার অন্তর সঙ্কুচিত হয়, তার হাত গুটিয়ে আসে, সে দান করতে পারে না।)
হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৭ | 4917 | ٤۹۱۷
পরিচ্ছদঃ ২০৬৪. লি’আন (অভিশাপযুক্ত শপথ)। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করবে, আবারো নিজেরা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষীও থাকবে না …. থেকে যদি সে সত্যবাদী’’ পর্যন্ত। যদি কোন বোবা (মূক) লোক লিখিতভাবে বা ইশারায় কিংবা কোন পরিচিত ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে অপবাদ দেয়, তাহলে তার হুকুম বাকশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতই। কেননা নবী (সাঃ) ফরয বিষয়গুলিতে ইশারা করার অনুমতি দিয়েছেন। হিজাজ ও অন্যান্য স্থানের কিছু সংখ্যক আলিমেরও এ মত। আল্লাহ্ বলেছেনঃ ‘‘সে (মরিয়ম) সন্তানের প্রতি ইশারা করলো, লোকেরা বলল, দোলনার শিশুর সাথে আমরা কিভাবে কথোপকথন করবো? যাহ্হাক বলেনঃ ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে। কিছু লোকের মন্তব্য হলোঃ ইশারার মাধ্যমে কোন হদ্ (শরয়ী’ দন্ড) বা লি’আন নেই, আবার তাদেরই মত হলো লিখিতভাবে কিংবা ইশারা ইঙ্গিতে তালাক দেয়া জায়েয আছে। অথচ তালাক এবং অপবাদের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। যদি তারা বলেঃ কথা বলা ছাড়া তো অপবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে তো তালাক দেওয়া, অপবাদ দেওয়া এমনিভাবে গোলাম আযাদ করা, কোনটাই ইশারার মাধ্যমে জায়েয হতে পারে না। অথচ আমরা দেখি বধির ব্যক্তিরও লি’আন করতে পারে। শা’বীও কাতাদা (র) বলেনঃ যদি কেউ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি তালাকপ্রাপ্তা, তাহলে ইশারার দ্বারা স্ত্রী স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইব্রাহীম বলেনঃ বোবা ব্যক্তি স্বহস্তে তালাকপ্রাপ্ত লিপিবদ্ধ করলে অবশ্যই তালাক হবে। হাম্মাদ বলেনঃ বোবা এবং বধির মাথার ইংগিতে বললেও জায়েয হবে।
৪৯১৭। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি তোমাদের বলব কি, আনসারদের মধ্যে সর্বোত্তম গোত্র কোনটি? তারা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ বলুন। তিনি বললেনঃ তারা বনূ নাজ্জার। এরপর যারা তাদের নিকটবর্তী, বনূ আবদুল আশহাল, এরপর তাদের নিকটবর্তী যারা বনূ হারিস ইবনু খাযরাজ। এরপর তাদের সন্নিকটে যারা বনূ সাঈদা। এরপর তিনি হাত দ্বারা ইঙ্গিত করলেন। হাতের আঙ্গুলগুলোকে সংকুচিত করে পূনরায় তা সাম্প্রসারিত করলেন। যেমন কেউ কিছু নিক্ষেপকালে করে থাকে। এরপর বলেনঃ আনসারদের প্রত্যেকটি গোত্রেই কল্যাণ নিহিত আছে।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৮ | 4918 | ٤۹۱۸
পরিচ্ছদঃ ২০৬৪. লি’আন (অভিশাপযুক্ত শপথ)। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করবে, আবারো নিজেরা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষীও থাকবে না …. থেকে যদি সে সত্যবাদী’’ পর্যন্ত। যদি কোন বোবা (মূক) লোক লিখিতভাবে বা ইশারায় কিংবা কোন পরিচিত ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে অপবাদ দেয়, তাহলে তার হুকুম বাকশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতই। কেননা নবী (সাঃ) ফরয বিষয়গুলিতে ইশারা করার অনুমতি দিয়েছেন। হিজাজ ও অন্যান্য স্থানের কিছু সংখ্যক আলিমেরও এ মত। আল্লাহ্ বলেছেনঃ ‘‘সে (মরিয়ম) সন্তানের প্রতি ইশারা করলো, লোকেরা বলল, দোলনার শিশুর সাথে আমরা কিভাবে কথোপকথন করবো? যাহ্হাক বলেনঃ ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে। কিছু লোকের মন্তব্য হলোঃ ইশারার মাধ্যমে কোন হদ্ (শরয়ী’ দন্ড) বা লি’আন নেই, আবার তাদেরই মত হলো লিখিতভাবে কিংবা ইশারা ইঙ্গিতে তালাক দেয়া জায়েয আছে। অথচ তালাক এবং অপবাদের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। যদি তারা বলেঃ কথা বলা ছাড়া তো অপবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে তো তালাক দেওয়া, অপবাদ দেওয়া এমনিভাবে গোলাম আযাদ করা, কোনটাই ইশারার মাধ্যমে জায়েয হতে পারে না। অথচ আমরা দেখি বধির ব্যক্তিরও লি’আন করতে পারে। শা’বীও কাতাদা (র) বলেনঃ যদি কেউ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি তালাকপ্রাপ্তা, তাহলে ইশারার দ্বারা স্ত্রী স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইব্রাহীম বলেনঃ বোবা ব্যক্তি স্বহস্তে তালাকপ্রাপ্ত লিপিবদ্ধ করলে অবশ্যই তালাক হবে। হাম্মাদ বলেনঃ বোবা এবং বধির মাথার ইংগিতে বললেও জায়েয হবে।
৪৯১৮। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী সাহল ইবনু সা’দ-সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার আবির্ভাব এবং কিয়ামতের মাঝে দুরত্ব এ আঙ্গুল থেকে এ আঙ্গূলের দূরত্বের ন্যায়। কিংবা তিনি বলেনঃ এ দুটির দূরত্বের ন্যায়। এই বলে তিনি তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল দুটি মিলিত করলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৯ | 4919 | ٤۹۱۹
পরিচ্ছদঃ ২০৬৪. লি’আন (অভিশাপযুক্ত শপথ)। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করবে, আবারো নিজেরা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষীও থাকবে না …. থেকে যদি সে সত্যবাদী’’ পর্যন্ত। যদি কোন বোবা (মূক) লোক লিখিতভাবে বা ইশারায় কিংবা কোন পরিচিত ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে অপবাদ দেয়, তাহলে তার হুকুম বাকশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতই। কেননা নবী (সাঃ) ফরয বিষয়গুলিতে ইশারা করার অনুমতি দিয়েছেন। হিজাজ ও অন্যান্য স্থানের কিছু সংখ্যক আলিমেরও এ মত। আল্লাহ্ বলেছেনঃ ‘‘সে (মরিয়ম) সন্তানের প্রতি ইশারা করলো, লোকেরা বলল, দোলনার শিশুর সাথে আমরা কিভাবে কথোপকথন করবো? যাহ্হাক বলেনঃ ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে। কিছু লোকের মন্তব্য হলোঃ ইশারার মাধ্যমে কোন হদ্ (শরয়ী’ দন্ড) বা লি’আন নেই, আবার তাদেরই মত হলো লিখিতভাবে কিংবা ইশারা ইঙ্গিতে তালাক দেয়া জায়েয আছে। অথচ তালাক এবং অপবাদের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। যদি তারা বলেঃ কথা বলা ছাড়া তো অপবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে তো তালাক দেওয়া, অপবাদ দেওয়া এমনিভাবে গোলাম আযাদ করা, কোনটাই ইশারার মাধ্যমে জায়েয হতে পারে না। অথচ আমরা দেখি বধির ব্যক্তিরও লি’আন করতে পারে। শা’বীও কাতাদা (র) বলেনঃ যদি কেউ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি তালাকপ্রাপ্তা, তাহলে ইশারার দ্বারা স্ত্রী স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইব্রাহীম বলেনঃ বোবা ব্যক্তি স্বহস্তে তালাকপ্রাপ্ত লিপিবদ্ধ করলে অবশ্যই তালাক হবে। হাম্মাদ বলেনঃ বোবা এবং বধির মাথার ইংগিতে বললেও জায়েয হবে।
৪৯১৯। আদম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মাস এত, এত এবং এত দিনে হয়, অর্থাৎ ত্রিশ দিনে। তিনি আবার বললেন মাস এত, এত ও এত দিনেও হয়। অর্থাৎ উনত্রিশ দিনে। তিনি বলতেনঃ কখনও ত্রিশ দিনে আবার কখনও উনত্রিশ দিনে মাস হয়।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯২০ | 4920 | ٤۹۲۰
পরিচ্ছদঃ ২০৬৪. লি’আন (অভিশাপযুক্ত শপথ)। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করবে, আবারো নিজেরা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষীও থাকবে না …. থেকে যদি সে সত্যবাদী’’ পর্যন্ত। যদি কোন বোবা (মূক) লোক লিখিতভাবে বা ইশারায় কিংবা কোন পরিচিত ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে অপবাদ দেয়, তাহলে তার হুকুম বাকশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতই। কেননা নবী (সাঃ) ফরয বিষয়গুলিতে ইশারা করার অনুমতি দিয়েছেন। হিজাজ ও অন্যান্য স্থানের কিছু সংখ্যক আলিমেরও এ মত। আল্লাহ্ বলেছেনঃ ‘‘সে (মরিয়ম) সন্তানের প্রতি ইশারা করলো, লোকেরা বলল, দোলনার শিশুর সাথে আমরা কিভাবে কথোপকথন করবো? যাহ্হাক বলেনঃ ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে। কিছু লোকের মন্তব্য হলোঃ ইশারার মাধ্যমে কোন হদ্ (শরয়ী’ দন্ড) বা লি’আন নেই, আবার তাদেরই মত হলো লিখিতভাবে কিংবা ইশারা ইঙ্গিতে তালাক দেয়া জায়েয আছে। অথচ তালাক এবং অপবাদের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। যদি তারা বলেঃ কথা বলা ছাড়া তো অপবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে তো তালাক দেওয়া, অপবাদ দেওয়া এমনিভাবে গোলাম আযাদ করা, কোনটাই ইশারার মাধ্যমে জায়েয হতে পারে না। অথচ আমরা দেখি বধির ব্যক্তিরও লি’আন করতে পারে। শা’বীও কাতাদা (র) বলেনঃ যদি কেউ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি তালাকপ্রাপ্তা, তাহলে ইশারার দ্বারা স্ত্রী স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইব্রাহীম বলেনঃ বোবা ব্যক্তি স্বহস্তে তালাকপ্রাপ্ত লিপিবদ্ধ করলে অবশ্যই তালাক হবে। হাম্মাদ বলেনঃ বোবা এবং বধির মাথার ইংগিতে বললেও জায়েয হবে।
৪৯২০। মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) … আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় হাত দ্বারা ইয়ামানের দিকে ইশারা করে দু-বার বললেনঃ ঈমান ওখানে। জেনে রেখ! হৃদয়ের কঠোরতা ও কাঠিন্য উট পালনকারীদের মধ্যে (কৃষকদের মধ্যে)। যে দিকে শয়তানের দুটি শিং উদিত হবে তাহলো (কঠোর হদয়) রাবী’আ ও মুযার গোত্রদ্বয়।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯২১ | 4921 | ٤۹۲۱
পরিচ্ছদঃ ২০৬৪. লি’আন (অভিশাপযুক্ত শপথ)। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করবে, আবারো নিজেরা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষীও থাকবে না …. থেকে যদি সে সত্যবাদী’’ পর্যন্ত। যদি কোন বোবা (মূক) লোক লিখিতভাবে বা ইশারায় কিংবা কোন পরিচিত ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে অপবাদ দেয়, তাহলে তার হুকুম বাকশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতই। কেননা নবী (সাঃ) ফরয বিষয়গুলিতে ইশারা করার অনুমতি দিয়েছেন। হিজাজ ও অন্যান্য স্থানের কিছু সংখ্যক আলিমেরও এ মত। আল্লাহ্ বলেছেনঃ ‘‘সে (মরিয়ম) সন্তানের প্রতি ইশারা করলো, লোকেরা বলল, দোলনার শিশুর সাথে আমরা কিভাবে কথোপকথন করবো? যাহ্হাক বলেনঃ ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে। কিছু লোকের মন্তব্য হলোঃ ইশারার মাধ্যমে কোন হদ্ (শরয়ী’ দন্ড) বা লি’আন নেই, আবার তাদেরই মত হলো লিখিতভাবে কিংবা ইশারা ইঙ্গিতে তালাক দেয়া জায়েয আছে। অথচ তালাক এবং অপবাদের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। যদি তারা বলেঃ কথা বলা ছাড়া তো অপবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে তো তালাক দেওয়া, অপবাদ দেওয়া এমনিভাবে গোলাম আযাদ করা, কোনটাই ইশারার মাধ্যমে জায়েয হতে পারে না। অথচ আমরা দেখি বধির ব্যক্তিরও লি’আন করতে পারে। শা’বীও কাতাদা (র) বলেনঃ যদি কেউ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি তালাকপ্রাপ্তা, তাহলে ইশারার দ্বারা স্ত্রী স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইব্রাহীম বলেনঃ বোবা ব্যক্তি স্বহস্তে তালাকপ্রাপ্ত লিপিবদ্ধ করলে অবশ্যই তালাক হবে। হাম্মাদ বলেনঃ বোবা এবং বধির মাথার ইংগিতে বললেও জায়েয হবে।
৪৯২১। আমর ইবনু যুবারা (রহঃ) … সাহল (রাঃ) থেকে বর্নিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি ও ইয়াতীমের প্রতিপালনকারী জান্নাতে এরুপ নিকটে থাকব। এই বলে তিনি তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল দুটি দ্বারা ইশারা করলেন এবং এ দু টির মাঝে সামান্য ফাঁক রাখলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯২২ | 4922 | ٤۹۲۲
পরিচ্ছদঃ ২০৬৫. ইঙ্গিতে সন্তান অস্বীকার করা।
৪৯২২। ইয়াহইয়া ইবনু কাযা’আ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, জনৈক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার একটি কালো সন্তান জন্মেছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমার কিছু উট আছে কি? সে উত্তর করলঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ সেগুলোর রং কেমন? সে বললঃ লাল। তিনি বললেনঃ সেগুলোর মধ্যে কোনটি ছাই বর্নের আছে কি? সে বললঃ হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ আর সেটিতে এমন বর্ণ কোথেকে এলো? লোকটি বললঃ সম্ভবতঃ পূর্ববর্তী বংশের কারণে এরুপ হয়েছে। তিনি বললেনঃ তাহলে হতে পারে, তোমার এ সন্তানও বংশগত কারণে এরুপ হয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৩ | 4923 | ٤۹۲۳
পরিচ্ছদঃ ২০৬৬. লি’আনকারীকে শপথ করানো
৪৯২৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এ জনৈক ব্যাক্তি তার স্ত্রীকে অপবাদ দিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়কে শপথ করালেন এবং তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দিলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৪ | 4924 | ٤۹۲٤
পরিচ্ছদঃ ২০৬৭. পুরুষকে প্রথমে লি’আন করানো হবে।
৪৯২৪। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, হিলাল ইবনু উমাইয়্যা তার স্ত্রীকে (যিনার) অপবাদ দেয়। তিনি এসে সাক্ষ্য দিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলনঃ আল্লাহ তাআলা অবশ্যই জানেন তোমাদের দু’জনের একজন নিঃসন্দেহে মিথ্যাবাদী। অতএব কে তাওবা করতে প্রস্তুত আছ? এরপর স্ত্রী দাঁড়াল এবং সাক্ষ্য দিল (সে দোষমুক্ত)।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৫ | 4925 | ٤۹۲۵
পরিচ্ছদঃ ২০৬৮. লি’আন এবং লি’আনের পর তালাক দেওয়া
৪৯২৫। ইসমাঈল (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, উওয়াইমার আজলানী (রাঃ) আসিম ইবনু আদী আনসারী (রাঃ) এর কাছে এসে বললেনঃ হে আসিম! কি বল, যদি কোন ব্যাক্তি তার স্ত্রীর সাথে অপর ব্যাক্তিকে (ব্যাভিচার-রত অবস্থায়) পায় তবে সে কি তাকে হত্যা করবে? আর এতে তোমরাও কি তাকে হত্যা করবে? (যদি সে হত্যা না করে) তাহলে কি করবে? হে আসিম! তুমি আমার এ বিষয়টি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা কর। এরপর আসিম (রাঃ) এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের জিজ্ঞাসাকে অপছন্দ করলেন এবং অশোভনীয় মনে করলেন। এমন কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আসিম (রাঃ) যা শুনলেন তাতে তার খুব খারাপ লাগল।
আসিম (রাঃ) গৃহে প্রত্যাবর্তন করলে উওয়াইমির এসে জিজ্ঞাসা করলঃ হে আসিম? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাকে কি উত্তর দিলেন। আসিম (রাঃ) উওয়াইমিরকে বললেনঃ তুমি আমার কাছে কোন ভাল কাজ নিয়ে আসনি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের জিজ্ঞাসাকে অপছন্দ করেছেন, সে সম্বন্ধে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছি। উওয়াইমির (রাঃ) বললেন আল্লাহর শপথ তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা না করে ক্ষ্যান্ত হব না।
এরপর উওয়াইমির (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তাঁকে লোকদের মাঝে পেলেন এবং তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! কী বলেন, কোন ব্যাক্তি যদি তার স্ত্রীর সাথে অপর ব্যাক্তিকে (ব্যাভিচার-রত) দেখতে পায় সে কি তাকে হত্যা করবে? আর আপনারাও কি তাকে হত্যার বদলে হত্যা করবেন? অন্যথায় সে কি করবে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার ও তোমার স্ত্রীর ব্যাপারে আয়াত অবর্তীর্ণ হয়েছে যাও তাকে নিয়ে এসো।
সাহল (রাঃ) বলেন, তারা উভইয়ে লিআন করল। সে সময় আমি লোকদের সাথে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে ছিলাম। উভয়ে লিআন করা সমাপ্ত করলে উওয়াইমির বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! যদি আমি তাকে (স্ত্রী হিসাবে) রাখি, তবে আমি তার উপর মিথ্যা আরোপ করেছি বলে প্রমাণিত হবে। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে নির্দেশ দেওয়ার পূর্বেই তিনি স্ত্রীকে তিন তালাক দিলেন। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেনঃ উভয়কে পৃথক করে দেওয়াই পরবর্তীতে লি’আন কারীদ্বয়ের হুকুম হিসাবে পরিগনিত হল।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৬ | 4926 | ٤۹۲٦
পরিচ্ছদঃ ২০৬৯. মসজিদে লি’আন করা
৪৯২৬। ইয়াহইয়া (রহঃ) … ইবনু জুরাইজ (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমাকে ইবনু শিহাব (রহঃ) লিআন ও তার হুকুম সম্বন্ধে সা’দ গোত্রের সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে হাদীস বর্ননা করেন যে, আনসারদের জনৈক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কি বলেন, যদি কোন ব্যাক্তি তার স্ত্রীর সাথে অন্য কাউকে দেখতে পায়, তবে কি সে তাকে হত্যা করবে? অথবা কি করবে? এর পর আল্লাহ তাআলা তার ব্যাপারে কুরআনে উল্লেখিত লি’আনের বিধান অবর্তীর্ণ করেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তোমার ও তোমার স্ত্রীর ব্যাপারে ফয়সালা দিয়েছেন।
রাবী বলেনঃ আমি উপস্থিত থাকতেই তারা উভয়ে মসজিদে লিআন করল। উভয়ের লিআন কাজ সমাধা হলে সে ব্যাক্তি বললঃ ইয়া রাসুলাল্লা! যদি আমি তাকে স্ত্রী হিসাবে রেখে দেই তবে তার উপর মিথ্যারোপ করেছি বলে সাব্যস্ত হবে। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আদেশ দেয়ার পূর্বেই সে তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনেই তারা পৃথক হয়ে গেল। তিনি বললেনঃ এই সম্পর্কোচ্ছেদই লিআন এর বিধান।
ইবনু জুরাইজ বলেনঃ ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেছেনঃ তাদের পর লিআনকারীদ্বয়ের মধো পৃথক করার হুকুম প্রবর্তিত হয়। উপরোক্ত মহিলা ছিল সন্তান সম্ভবা। তার বাচ্চাকে মায়ের পরিচয়ে ডাকা হত। বর্ণনাকারী বলেনঃ এরপর উত্তোধিকারের ব্যাপারেও হুকুম প্রবর্তিত হল যে, মহিলা সন্তানের উত্তরাধিকারী হবে এবং সন্তানও তার উত্তারাধিকারী হবে, যতটুকু আল্লাহ তাআলা নির্ধারণ করেছেন।
হাদীসে ইবনু জুরাইজ, ইবনু শিহাবের সুত্রে সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী থেকে বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি ঐ মহিলা ওহ্রার (এক প্রকার ছোট প্রানী) এর মতো লাল ও বেটে সন্তান প্রসব করে, তবে বুঝবো মহিলাই সত্য বলেছে, আর সেই তার উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে। আর যদি সে কালো চক্ষু বিশিষ্ট বড় নিতম্বযুক্ত সন্তান প্রসব করে, তবে বুঝবো, সে ব্যাক্তি সত্যই বলেছে। পরে মহিলাটি কালো সন্তানই প্রসব করেছিল।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৭ | 4927 | ٤۹۲۷
পরিচ্ছদঃ ২০৭০. নবী (সাঃ) এর উক্তিঃ আমি যদি প্রমাণ ছাড়া রজম করতাম।
৪৯২৭। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে লিআন করার প্রসঙ্গ আলোচিত হল। আসিম ইবনু আদী (রাঃ) এ ব্যাপারে একটি কথা জিজ্ঞাসা করে চলে গেলেন। এরপর তার গোত্রের জনৈক ব্যাক্তি তার কাছে এসে অভিযোগ করল যে সে তার স্ত্রীর সাথে অপর এক ব্যাক্তিকে পেয়েছে। আসিম (রাঃ) বললেন অযথা জিজ্ঞাসার কারণেই আমি এধরনের বিপদে পড়লাম। এরপর তিনি লোকটিকে নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলেন এবং অভিযোগকারীর বিষয়টি তাকে অবহিত করলেন। লোকটি ছিল হলদে-হালকা দেহ সোজা চুল বিশিষ্ট। আর ঐ লোকটি যাকে তার স্ত্রীর কাছে পেয়েছে বলে সে অভিযূক্ত করে সে ছিল প্রায় কালো, মোটা ধরনের, স্থুল দেহের অধিকারী।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ! সমস্যাটি সমাধান করে দিন। এরপর মহিলা ঐ লোকটির আকৃতি বিশিষ্ট সন্তান প্রসব করল যাকে তার স্বামী তার কাছে পেয়েছে বলে উল্লেখ করেছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের (স্বামী-স্ত্রী) উভয়কে লিআন করালেন। এক ব্যাক্তি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে সে বৈঠকেই জিজ্ঞাসা করল, এ মহিলা সমন্ধেই কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন “আমি যদি কাউকে বিনা প্রমানে রজম করতাম তবে একেই রজম করতাম”। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেনঃ না। সে ছিল (অন্য এক) মহিলা, যে মুসলিম সমাজে প্রকাশ্যে ব্যভিচারে লিপ্ত থাকত।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৮ | 4928 | ٤۹۲۸
পরিচ্ছদঃ ২০৭১. লি’আনকারিণীর মোহর
৪৯২৮। আমর ইবনু যুরারা (রহঃ) … সাঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু উমরকে জিজ্ঞাসা করলাম, এক ব্যাক্তি তার স্ত্রীকে অপবাদ দিল- (তার বিধান কি?) তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ আজলানের স্বামী স্ত্রীর দু-জনকে পৃথক করে দিয়েছিলেন এবং তিনি বলেছিলেনঃ আল্লাহ তাআলা অবহিত আছেন তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। সুতরাং তোমাদের কেউ তাওবা করতে রাযী আছ কি? তারা দু-জনেই অস্বীকার করল। পুনরায় তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা অবহিত আছেন তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী সুতরাং কেউ তাওবা করতে প্রস্তুত আছ কি? তারা আবারও অস্বীকার করল। এরপর তিনি তাদেরকে পৃথক করে দেন।
আইয়্যুব বলেনঃ আমাকে আমর ইবনু দীনার (রহঃ) বললেন এ হাদীসে আরও কিছু কথা আছে তোমাকে তা বর্ণনা করতে দেখছি না কেন? তিনি বলেন লোকটি বললঃ আমার (দেওয়া) মালের (মোহর) কি হবে? তাকে বলা হল, তোমার মাথা ফিরে পাবে না। যদি তুমি সত্যবাদী হও (তবুও পাবে না) (কেননা) তুমি তার সাথে সহবাস করেছ। আর যদি তুমি মিথ্যাবাদী হও, তবে তা পাওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠে না।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৯ | 4929 | ٤۹۲۹
পরিচ্ছদঃ ২০৭২. লি‘আনকারীদ্বয়কে ইমামের একথা বলা যে, নিশ্চয় তোমাদের কোন একজন মিথ্যাবাদী, তাই তোমদের কেউ তাওলা করতে প্রস্তুত আছ কি ?
৪৯২৯। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সাঈদ ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি লিআনকারীদ্বয় সম্পর্কে ইবনু উমরকে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লিআনকায়ীদ্বয়কে লক্ষ্য করে বলেছিলেনঃ তোমাদের হিসাব গ্রহনের দায়িত্ব আল্লাহরই। তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। তার (স্ত্রীর) উপর তোমার কোন অধিকার নেই। লোকটি বললঃ তবে আমার মাল (মোহর হিসেবে প্রদত্ত)? তিনি বললেনঃ তুমি কোন মাল পাবে না। যদি তুমি সত্যবাদী হও তাহলে এর বিনিময়ে তুমি তার লজ্জাস্থানকে হালাল করে নিয়েছিলে। আর যদি তার উপর মিথ্যারোপ করে থাক তবে তো মাল চাওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না।
সুফিয়ান বলেনঃ আমি এ হাদীস আমর (রাঃ) এর কাছ থেকে মুখস্থ করেছি। আইয়্যুব বলেনঃ আমি সাঈদ ইবনু জুবায়র-এর কাছে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি ইবনু উমর (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ এক ব্যাক্তি তার স্ত্রীর সাথে লিআন করল (এখন তাদের বিধান কি?) তিনি তার দু’আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ সুফিয়ান তার তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল ফাঁক করলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ আজলানের এক দম্পত্তির বৈবাহিক সম্পর্ক এভাবে ছিন্ন করে দেন এবং বলেনঃ আল্লাহ তাআলা অবহিত আছেন যে, তোমাদের একজন অবশাই মিথ্যাবাদী। সুতরাং কেউ তাওবা করতে সম্মত আছ কি? এভাবে তিনি তিনবার বললেন। সুফিয়ান বলেনঃ আমি তোমাকে যেভাবে হাদীসটি শোনাচ্ছি এভাবেই আমি আমর ও আইয়্যুব (রাঃ) থেকে মুখস্থ করেছি।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩০ | 4930 | ٤۹۳۰
পরিচ্ছদঃ ২০৭৩. লি‘আনকারীদ্বয়কে পৃথক করে দেওয়া।
৪৯৩০। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক পুরুষ তার স্ত্রীকে অপবাদ দিলে, তিনি উভয়কে শপথ করান এরপর পৃথক করে দেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩১ | 4931 | ٤۹۳۱
পরিচ্ছদঃ ২০৭৩. লি‘আনকারীদ্বয়কে পৃথক করে দেওয়া।
৪৯৩১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক আনসার ব্যাক্তি ও তার স্ত্রীকে লি‘আন করান এবং তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩২ | 4932 | ٤۹۳۲
পরিচ্ছদঃ ২০৭৪. লি‘আনকারিণীকে সন্তান অর্পন করা হবে।
৪৯৩২। ইয়াহ্ইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তি ও তার স্ত্রীকে লি‘আন করালেন এবং সন্তানের পৈতৃক সম্পর্ক ছিন্ন করে উভয়কে পৃথক করে দিলেন। আর সন্তান মহিলাকে দিয়ে দিলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৩ | 4933 | ٤۹۳۳
পরিচ্ছদঃ ২০৭৫. ইমামের উক্তিঃ হে আল্লাহ্! সত্য প্রকাশ করে দিন।
৪৯৩৩। ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লি‘আনকারী দম্পত্তি সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সম্মুখে আলোচনা হচ্ছিল। ইতিমধ্যে ‘আসিম ইবনু ‘আদী (রাঃ) এ ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করে চলে গেলেন। এরপর স্বগোত্রীয় এক ব্যাক্তি তার কাছে এসে জানাল যে, সে তার স্ত্রীর সাথে এক ব্যাক্তিকে পেয়েছে। ‘আসিম (রাঃ) বললেন, অযথা জিজ্ঞাসাবাদের দরুনই আমি এ বিপদে পতিত হলাম। এরপর তিনি তাকে নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলেন এবং যে লোকটিকে সে তার স্ত্রীর সাথে পেয়েছে, তার সম্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অবহিত করলেন। অভিযোগকারী ছিলেন হলদে, হালকা দেহ্ ও সোজা চুলের অধিকারী। আর তার স্ত্রীর কাছে পাওয়া লোকটি ছিল মোটা ধারনের স্থুলকায় ও খুব কোঁকড়ানো চুলের অধিকারী।
তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আল্লাহ্ আপনি সত্য প্রকাশ করে দিন। এরপর মহিলা ঐ লোকটির আকৃতি বিশিষ্ট একটি সন্তান প্রসব করে, যাকে তার স্বামী তার সাথে পেয়েছে বলে উল্লেখ করেছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়কেই লি‘আন করালেন। এক ব্যাক্তি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) কে সেই বৈঠকে জিজ্ঞাসা করল, ঐ মহিলা সম্বন্ধেই কি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেনঃ আমি যদি বিনা প্রমাণে কাউকে রজম করতাম তাহলে একে রজম করতাম? ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ না, সে ছিল অন্য এক মহিলা যে ইসলামে কুখ্যাত ব্যভিচারিণী ছিল।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৪ | 4934 | ٤۹۳٤
পরিচ্ছদঃ ২০৭৬. যদি মহিলাকে তিন তালাক দেয় এবং ইদ্দত শেষে সে অন্য স্বামীর কাছে বিয়ে বসে, কিন্তু সে তাকে স্পর্শ (সংগম) না করে থাকে।
৪৯৩৪। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। (হাদীসটি নিম্নোক্ত হাদীসের অনুরুপ)। [দেখুন পরের হাদিস]
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৫ | 4935 | ٤۹۳۵
পরিচ্ছদঃ ২০৭৬. যদি মহিলাকে তিন তালাক দেয় এবং ইদ্দত শেষে সে অন্য স্বামীর কাছে বিয়ে বসে, কিন্তু সে তাকে স্পর্শ (সংগম) না করে থাকে।
৪৯৩৫। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রিফাআ কুরাযী এক মহিলাকে বিয়ে করে পরে তালাক দেয়। এরপর মহিলা অন্য স্বামী গ্রহন করে। পরে সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তাকে অবহিত করলো যে সে (স্বামী) তার কাছে আসে না আর তার কাছে কাপড়ের কিনারা সদৃশ বৈ কিছুই নেই। তিনি বললেনঃ তা হবে না, যতক্ষন পর্যন্ত তুমি তার কিছু স্বাদ আস্বাদন না করবে, আর সেও তোমার কিঞ্চিত স্বাদ আস্বাদন না করবে (ততক্ষন প্রথম স্বামীর কাছে যাওয়া যাবে না)।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৬ | 4936 | ٤۹۳٦
পরিচ্ছদঃ ২০৭৮. গর্ভবতী মহিলাদের ইদ্দতের সময়সীমা সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত।
بَابُ: {وَاللاَّئِي يَئِسْنَ مِنَ الْمَحِيضِ مِنْ نِسَائِكُمْ إِنِ ارْتَبْتُمْ}
قَالَ مُجَاهِدٌ إِنْ لَمْ تَعْلَمُوا يَحِضْنَ أَوْ لاَ يَحِضْنَ وَاللاَّئِي قَعَدْنَ عَنِ الْحَيْضِ، وَاللاَّئِي لَمْ يَحِضْنَ، فَعِدَّتُهُنَّ ثَلاَثَةُ أَشْهُرٍ
২০৭৭. পরিচ্ছেদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের হায়েয বন্ধ হয়ে গেছে …. যদি তোমাদের সন্দেহ দেখা দেয় তাদের ইদ্দত তিন মাস এবং তাদেরও, যাদের এখনও হায়েয আসা আরম্ভ হয়নি। মুজাহিদ বলেনঃ যদিও তোমরা না জান যে, তাদের হায়েয- হবে কি না। যাদের ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গেছে এবং যাদের এখনো আরম্ভ হয়নি, তাদের ‘ইদ্দত তিন মাস।
৪৯৩৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনা সালামা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, আসলাম গোত্রের সুবায়-আ নাম্বী এক মহিলাকে তার স্বামী গর্ভাবস্থায় রেখে মারা যায়। এরপর আবূ সানাবিল ইবনু বাকাক (রাঃ) তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু মহিলা তার সাথে বিয়ে বসতে অস্বীকার করে। সে (আবূ সানাবিল) বললঃ আল্লাহর শপথ দুটি মেয়াদের মধ্যে দীর্ঘতর মেয়াদ অনুসারে ইদ্দত পালন না করা পর্যন্ত তোমার জন্য অন্যান্য বিয়ে বসা দুরস্ত হবে না। এর প্রায় দশ দিনের মধ্যেই সে সন্তান প্রসব করে। এরপর সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলে তিনি বললেনঃ এখন তুমি বিয়ে করতে পার।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৭ | 4937 | ٤۹۳۷
পরিচ্ছদঃ ২০৭৮. গর্ভবতী মহিলাদের ইদ্দতের সময়সীমা সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত।
৪৯৩৭। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে তিনি ইবনু আরকামের নিকট (এই মর্মে) একটি পত্র লিখলেন যে তুমি সুবায়-আ আসলামীয়াকে জিজ্ঞাস কর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে কি প্রকারের ফতোয়া দিয়েছিলেন? সে উত্তরে বললঃ তিনি আমাকে সন্তান প্রসব করার পর বিয়ে করার ফতোয়া দিয়েছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৮ | 4938 | ٤۹۳۸
পরিচ্ছদঃ ২০৭৮. গর্ভবতী মহিলাদের ইদ্দতের সময়সীমা সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত।
৪৯৩৮। ইয়াহইয়া ইবনু কাযাআ (রহঃ) … মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, সুবায়’আ আসলামীয়া তার স্বামীর মৃত্যুর কয়েকদিন পর সন্তান প্রসব করে। এরপর সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বিয়ে করার অনুমতি প্রার্থনা করলে তিনি তাকে অনুমতি দেন। তখন সে অন্যত্র বিয়ে করে।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৯ | 4939 | ٤۹۳۹
পরিচ্ছদঃ ২০৮০. ফাতিমা বিনত কায়েসের ঘটনা এবং মহান আল্লাহর বাণীঃ আর তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্কে ভয় কর, তোমরা তাদের বাসগৃহ থেকে বহিষ্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয়, যদি না তারা স্পষ্ট অশ্লীলতায় জড়িয়ে পড়ে। এসব আল্লাহর বিধান; যে আল্লাহর বিধান লংঘন করে, সে নিজেরই উপর অত্যাচার করে। তুমি জাননা, হয়ত আল্লাহ্ এরপর উপায় করে দেবেন …… আর তোমরা নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী যে স্থানে বাস কর, তাদেরকে সে স্থানে বাস করতে দাও ….. আল্লাহ্ কষ্টের পর শান্তি দিবেন। (সুরা তালাকঃ ১-৭)
২০৭৯. পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ তালাকপ্রাপ্তা মহিলারা তিন কুরু (হায়েয) পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। ইব্রাহীম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ‘ইদ্দতের মধ্যে বিয়ে করে, এরপর মহিলা তার কাছে তিন হায়েয পর্যন্ত অবস্থান করার পর দ্বিতীয় স্বামীও যদি তাকে তালাক দেয়, তবে সে প্রথম স্বামী থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। উক্ত তিন হায়েয তৃতীয় স্বামীর গ্রহণের জন্য যথেষ্ট হবেনা। (বরং তার জন্য নতুনভাবে ‘ইদ্দত পালন করতে হবে।) কিন্তু যুহরী বলেছেনঃ যথেষ্ট হবে। সুফিয়ানও যুহরীর মত গ্রহণ করেছেন। মা’মার বলেন, মহিলা কুরু যুক্ত হয়েছে তখনি বলা হয়, যখন তার হায়েয বা তুহুর আসে। مَا قَرَأَتْ بِسَلًى قَطُّ তখন বলা হয়, যখন মহিলা গর্ভে কোন সন্তান ধারণ না করে। (অর্থাৎ ‘কুরু’ অর্থ ধারণ করা বা একত্রিত করাও হয়)
৪৯৩৯। ইসমাঈল (রহঃ) … কাসিম ইবনু মুহাম্মদ ও সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে ইয়াহইয়া ইবনু সা-ঈদ ইবনু আস (রহঃ) আবদুর রহমান ইবনু হাকাম এর কন্যাকে তালাক দিলে আবদবু রহমান তাকে উম্মুল মূমিনীন আয়িশা (রাঃ) এর কাছে নিয়ে গেলে, তিনি মদিনার শাসনকর্তা মারওয়ানের কাছে বলে পঠোলেনঃ আল্লাহকে ভয় কর, আর তাকে তার ঘরে ফিরিয়ে দাও। মারওয়ান বলেন, সুলায়মানের বর্ণনায় আবদুর রহমান আমাকে যুক্তিতে পরাজিত করেছে। কাসিম ইবনু মুহাম্মদের বর্ণনায় তিনি বলেন, ফাতিমা বিনত কায়েসের ঘটনা কি আপনয়ি কাছে পৌছেনি? তিনি বললেনঃ ফতিমা বিনত কায়েসের ঘটনা স্মরণ না রাখলে তোমার কোন ক্ষতি হবেনা। মারওয়ান বললেনঃ যদি মনে করেন ফাতিমাকে বের করার পিছনে তার দুর্ব্যবহার কাজ করেছে, তবে বলব, এখানে সে দুর্ব্যবহার বিদ্যমান আছে।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪০ | 4940 | ٤۹٤۰
পরিচ্ছদঃ ২০৮০. ফাতিমা বিনত কায়েসের ঘটনা এবং মহান আল্লাহর বাণীঃ আর তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্কে ভয় কর, তোমরা তাদের বাসগৃহ থেকে বহিষ্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয়, যদি না তারা স্পষ্ট অশ্লীলতায় জড়িয়ে পড়ে। এসব আল্লাহর বিধান; যে আল্লাহর বিধান লংঘন করে, সে নিজেরই উপর অত্যাচার করে। তুমি জাননা, হয়ত আল্লাহ্ এরপর উপায় করে দেবেন …… আর তোমরা নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী যে স্থানে বাস কর, তাদেরকে সে স্থানে বাস করতে দাও ….. আল্লাহ্ কষ্টের পর শান্তি দিবেন। (সুরা তালাকঃ ১-৭)
৪৯৪০। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ফাতিমার কি হল? সে কেন আল্লাহকে ভয় করছেনা অর্থাৎ তার এ কথায় যে, তালাকপ্রাপ্তা নারী (তার স্বামীর থেকে) খাদ্য ও বাসস্থান কিছুই পাবে না।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪১ | 4941 | ٤۹٤۱
পরিচ্ছদঃ ২০৮০. ফাতিমা বিনত কায়েসের ঘটনা এবং মহান আল্লাহর বাণীঃ আর তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্কে ভয় কর, তোমরা তাদের বাসগৃহ থেকে বহিষ্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয়, যদি না তারা স্পষ্ট অশ্লীলতায় জড়িয়ে পড়ে। এসব আল্লাহর বিধান; যে আল্লাহর বিধান লংঘন করে, সে নিজেরই উপর অত্যাচার করে। তুমি জাননা, হয়ত আল্লাহ্ এরপর উপায় করে দেবেন …… আর তোমরা নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী যে স্থানে বাস কর, তাদেরকে সে স্থানে বাস করতে দাও ….. আল্লাহ্ কষ্টের পর শান্তি দিবেন। (সুরা তালাকঃ ১-৭)
৪৯৪১। আমর ইবনু আব্বাস (রহঃ) … কাসিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। উরওয়া ইবনু যুবায়র (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞাস করলঃ আপনি কি জানেন না, হাকামের কন্যা অমুককে তার স্বামী তিন তালাক দিলে, সে (তার পিতার ঘরে) চলে গিয়েছিল। তিনি বললেনঃ সে মন্দ কাজ করেছে। উরওয়া বললঃ আপনি কি তার কথা শুনেন নি? তিনি বললেনঃ এ হাদীস বর্ণনায় তার কোন কল্যান নেই।
ইবনু আবূ যিনাদ হিশাম সুত্রে তার (হিশামের) পিতা থেকে আরও বর্ণনা করেন যে, আয়িশা (রাঃ) এ কথাকে অত্যন্ত দোষনীয় মনে করেন। তিনি আরও বলেন, ফাতিমা একটি ভীতিকর স্থানে থাকত, তার উপর আশংকা থাকায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে (স্থান পরিবর্তনের) অনুমতি প্রদান করেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪২ | 4942 | ٤۹٤۲
পরিচ্ছদঃ ২০৮১. স্বামীর গৃহে অবস্থান করায় যদি তালাকপ্রাপ্তা নারী তার স্বামীর পরিবারের লোকজনদের গালমন্দ দেয়ার বা তার ঘরে চোর প্রবেশ করা ইত্যাদির আশংকা করে।
৪৯৪২। হিব্বান (রহঃ) … উরওয়া থেকে বর্ণিত যে আয়িশা (রাঃ) ফাতিমার কথাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৩ | 4943 | ٤۹٤۳
পরিচ্ছদঃ ২০৮২. মহান আল্লাহর বাণীঃ তাদের জন্য গোপন করা বৈধ হবে না যা আল্লাহ্ তাদের জরায়ুতে সৃষ্টি করেছেন, হায়েয হোক বা গর্ভ সঞ্চার হোক।
৪৯৪৩। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ (হজ শেষে) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রওয়ানা হওয়ার ইচ্ছা করলেন, তখন সাফিয়্যা (রাঃ) বিষন্ন অবস্থায় স্বীয় তাবুর দরজায় দাঁড়িয়ে গেলেন। তিনি তাকে বললেনঃ মহা সমস্যা তো, তুমি তো আমাদের আটকিয়ে রাখবে। আচ্ছা তুমি কি তাওয়াফে যিয়ারত করেছ? তিনি বললেনঃহ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তা হলে এখন চলো।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৪ | 4944 | ٤۹٤٤
পরিচ্ছদঃ ২০৮৩. মহান আল্লাহর বাণীঃ তালাকপ্রাপ্তাদের স্বামীরা (ইদ্দতের মধ্যে) তাদের ফিরিয়ে আনার অগ্রাধিকার রাখে এবং এক বা দু’তালাকের পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার পদ্ধতি সম্পর্কে।
৪৯৪৪। মুহাম্মদ (রহঃ) … হাসান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ মা’কাল তার বোনকে বিয়ে দিলে, তার স্বামী তাকে এক তালাক প্রদান করে।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৫ | 4945 | ٤۹٤۵
পরিচ্ছদঃ ২০৮৩. মহান আল্লাহর বাণীঃ তালাকপ্রাপ্তাদের স্বামীরা (ইদ্দতের মধ্যে) তাদের ফিরিয়ে আনার অগ্রাধিকার রাখে এবং এক বা দু’তালাকের পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার পদ্ধতি সম্পর্কে।
৪৯৪৫। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … হাসান (রহঃ) থেকে বর্নিত যে, মাকাল ইবনু ইয়াসারেব বোন এক ব্যাক্তির বিবাহাধীন ছিল। সে তাকে তালাক দিল। পুনরায় ফিরিয়ে আনলোনা, এভাবে তার ইদ্দত শেষ হয়ে গেলে সে আবার তার কাছে বিবাহের প্রস্তাব দেয়। মাকাল (রাঃ) ক্রোধান্বিত হলেন, তিনি বললেনঃ সময় সুযোগ থাকতে ফিরিয়ে নিল না, এখন আবার প্রস্তাব দিচ্ছে। তিনি তাদের মাঝে (পুনর্বিবাহে) প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ালেন। এরপর আল্লাহ তাআলা এ আয়াতটি অবর্তীর্ন করেনঃ তোমরা যখন স্ত্রীকে তোমরা তালাক দাও এবং তারা তাদের ইদ্দত-কাল পূর্ন করে, তখন তারা নিজেদের স্বামীদেরকে বিবাহ করতে চাইলে তোমরা বাধা দিও না। (বাকারাঃ ২৩২)। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডাকলেন এবং তার সামনে আয়াতটি পাঠ করলেন। তিনি তার জিদ পরিত্যাগ করে আল্লাহর আদেশের অনুসরণ করেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৬ | 4946 | ٤۹٤٦
পরিচ্ছদঃ ২০৮৩. মহান আল্লাহর বাণীঃ তালাকপ্রাপ্তাদের স্বামীরা (ইদ্দতের মধ্যে) তাদের ফিরিয়ে আনার অগ্রাধিকার রাখে এবং এক বা দু’তালাকের পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার পদ্ধতি সম্পর্কে।
৪৯৪৬। কুতায়বা (রহঃ) … নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু উমর (রাঃ) তার স্ত্রীকে ঋতুমতী অবস্থায় এক তালাক দেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আদেশ দিলেন, তিনি যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনেন এবং মহিলা পবিত্র হয়ে পূনরায় ঋতুমতী হয়ে পরবর্তী পবিত্রাবস্থা আসা পর্যন্ত তাকে নিজের কাছে রাখেন। পবিত্রাবস্থায় যদি তাকে তালাক দিতে চায় তবে দিতে পারেবে কিন্তু তা সংগমের পূর্বে হতে হবে। এটাই ইদ্দত, যে সময় তালাক দেয়ার জন্য আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন। আবদুল্লাহকে ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি তাদের বলেনঃ তুমি যদি তাকে তিন তালাক দিয়ে দাও। তবে মহিলা অন্য স্বামী গ্রহণ না করা পর্যন্ত তোমার জন্য হালাল হবে না। অন্য বর্ননায় ইবনু উমর (রাঃ) বলতেন, তুনি যদি এক বা দু’ তালাক দিতে কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এরুপই আদেশ দিয়েছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৭ | 4947 | ٤۹٤۷
পরিচ্ছদঃ ২০৮৪. ঋতুমতীকে ফিরিয়ে আনা
৪৯৪৭। হাজ্জাজ (রহঃ) … ইউনুস ইবনু জুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু উমরকে (হায়েয অবস্থায় তালাক দেওয়া সম্পর্কে) জিজ্ঞাস করলাম। তিনি বললেনঃ ইবনু উমব (রাঃ) তার স্ত্রীকে হায়েয অবস্থায় তালাক দিলে উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার জন্য তাকে আদেশ দেন। এরপর বলেনঃ ইদ্দতের সময় আসলে সে তালাক দিতে পারে। রাবী বলেন, আমি বললাম এ তালাক কি হিসাবে ধরা হবে? ইবনু উমর বললেনঃ তবে কি মনে করছ, যদি সে অক্ষম হন বা বোকামী করে। (তাহলে দায়ী কে?)।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৮ | 4948 | ٤۹٤۸
পরিচ্ছদঃ ২০৮৫. বিধবা নারী চার মাস দশ দিন শোক পালন করবে। যুহরী (র) বলেন, বিধবা কিশোরীর জন্য খোশবু ব্যবহার করা উচিত হবে না। কেননা, তাকেও ইদ্দত পালন করতে হবে।
৪৯৪৮। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … যায়নাব বিনত আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মীনী উম্মে হাবীবার পিতা আবূ সুফিয়ান ইবনু হারব (রাঃ) মূত্যুবরণ করলে আমি তাঁর কাছে উপস্থিত হই। উম্মে হাবীবা (রাঃ) যাফরান ইত্যাদি মিশ্রিত হলদে রং এর খোশবু নিয়ে আসতে বললেন। তিনি এক বালিকাকে এ থেকে কিছু মাখলেন! এরপর তার নিজের চেহারার উভয় পাশে কিছু মাখলেন। এরপর বললেনঃ আল্লাহর কসম! খোশবু ব্যবহার করার কোন প্রয়োজন আমার নেই। তবে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন মহিলার জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শোক পালন করা বৈধ হবে না। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুতে চার মাস দশ দিন শোক পালন করতে পারবে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’ তিন বার বললেন, না।
তিনি আরও বললেনঃ এতো মাত্র চার মাস দশ দিনের ব্যাপার। অথচ বর্বরতার যুগে এক এক মহিলা এক বছরের মাথায় বিষ্ঠা নিক্ষেপ করত। হুমায়দ বলেন, আমি যায়নাবকে জিজ্ঞাসা করলাম। এক বছরের মাথায় বিষ্ঠা নিক্ষেপ করার অর্থ কি? তিনি বলেন, সে যুগে কোন মহিলার স্বামী মারা গেলে সে অতিক্ষুদ্র একটি কোঠায় প্রবেশ করতো এবং নিকৃষ্ট কাপড় পরিধান করত, কোন খোশবু ব্যবহার করতে পারত না। এভাবে এক বছর অতিক্রান্ত হলে তার কাছে চতুষ্পদ জন্তু যথা গাধা, বকরী অথবা গাভী আনা হতো। আর সে তার গায়ে হাত বুলাতো। হাত বুলাতে বুলাতে অনেক সময় সেটা মারাও যেত। এরপর সে (মহিলা বেরিয়ে আসতো। তাকে বিষ্ঠা দেয়া হতো এবং তা তাকে নিক্ষেপ করতে হতো। এরপর ইচ্ছা করলে সে খোশবু ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারতো। মালিক (রহঃ) কে تَفْتَض শব্দের অর্থ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ মহিলারা ঐ প্রানীর চামড়ায় হাত বুলাতো।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৯ | 4949 | ٤۹٤۹
পরিচ্ছদঃ ২০৮৬. শোক পালনকারিণীর জন্য সুরমা ব্যবহার করা।
৪৯৪৯। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে যে, জনৈক মহিলার স্বামী মৃত্যু বরণ করলে তার পরিবারের লোকেরা তার চক্ষুযুগল নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা করল। তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তার সুরমা ব্যবহারের অনুমতি প্রার্থনা করল। তিনি বললেনঃ সুরমা ব্যবহার করতে পারবে না। তোমাদের অনেকেই (জাহেলী যুগে) তার নিকৃষ্ট কাপড় বা নিকৃষ্ট ঘরে অবস্থান করত। যখন এক বছর অতিক্রান্ত হত আর কোন কুকুর সে দিকে যেত তখন সে বিষ্ঠা নিক্ষেপ করত। কাজেই চারমাস দশ দিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যস্ত সুরমা বাবহার করতে পারবে না (বর্ণনাকারী বলেন) আমি যায়নাবকে উম্মে হাবীবা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন মহিলার জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শোক পালন করা বৈধ নয়। তবে স্বামীর মৃত্যু হলে চারমাস দশদিন শোক পালন করবে।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫০ | 4950 | ٤۹۵۰
পরিচ্ছদঃ ২০৮৬. শোক পালনকারিণীর জন্য সুরমা ব্যবহার করা।
৪৯৫০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … মুহাম্মদ ইবনু সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) বলেছেন, স্বামী ছাড়া অন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শোক পালন করতে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫১ | 4951 | ٤۹۵۱
পরিচ্ছদঃ ২০৮৭. তুহুর (পবিত্রতা) এর সময় শোক পালনকারিণীর জন্য কুস্ত (চন্দন কাঠ) খোশবু ব্যবহার করা।
৪৯৫১। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওহাব (রহঃ) … উম্মে আতিয়্যা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমাদেরকে নিষেধ করা হত, আমরা যেন কারো মৃত্যুতে তিন দিনের অধিক শোক পালননা করি। তবে স্বামীর মৃত্যুতে চার মাস দশ দিন শোক পালন করতে হবে এবং আমরা যেন সুরমা খোশবু ব্যবহার না করি আর রঙীন কাপড় যেন পরিধান না করি তবে হালকা রঙের হলে দোষ নেই। আমাদেরকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে, আমাদের কেউ যখন হায়েয শেষে গোসল করে পবিত্র হয় তখন সে (দুর্গন্ধ দুরকরনার্থে) আযফার নামক স্থানের কুস্ত (সুগন্ধি) ব্যবহার করতে পারে। তাছাড়া আমাদেরকে জানাযার পিছে পিছে যেতে নিষেধ করা হতো।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫২ | 4952 | ٤۹۵۲
পরিচ্ছদঃ ২০৮৮. শোক পালনকারিণী রং করা সুতার কাপড় ব্যবহার করতে পারে।
৪৯৫২। ফাযল ইবনু দুকায়ন (রহঃ) … উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন মহিলার জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের অধিক শোক পালন করা বৈধ হবে না। তবে স্বামীর ব্যাপার ভিন্ন। আবার সুরমা ও রঙিন কাপড়ও ব্যবহার করতে পারবে না। তবে সুতাগুলো একত্রে বেঁধে হালকা রং লাগিয়ে পরে তা দিয়ে কাপড় বুনলে তা ব্যবহার করা যাবে।
আনসারী (রহঃ) … উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন শোক পালন কারিনা যেন সুগন্ধি ব্যবহার না করে। তবে হায়েয থেকে পবিত্র হওয়া কালে (দুর্গন্ধ দূরকরণার্থে) “কুস্ত” ও “আযফার” সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারে।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৩ | 4953 | ٤۹۵۳
পরিচ্ছদঃ ২০৮৯. (মহান আল্লাহর বাণী) তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তাদের স্ত্রীরা চার মাস দশ দিন প্রতীক্ষায় থাকবে। যখন তারা তাদের ইদ্দতকাল পূর্ণ করবে, তখন যথাবিধি নিজেদের জন্য যা করবে তাতে তোমাদের কোন অপরাধ নাই। তোমরা যা কর সে সমবন্ধে আল্লাহ্ সবিশেষ অবহিত।
৪৯৫৩। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। মহান আল্লাহর বানীঃ “তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মারা যায়” তিনি এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, স্বামীর বাড়ীতে অবস্থান করে এ ইদ্দত পালন করা মহিলার জন্য ওয়াজিব ছিল। পরে মহান আল্লাহ নাযিল করেনঃ তোমাদের মধ্য স্বপত্নীক অবস্থায় যাদের মূত্যু আসন্ন তারা যেন তাদের স্ত্রীদেরকে গৃহ থেকে বহিষ্কার না করে তাদের এক বছরের ভরন-পোষনের ওসিয়্যত করে। কিন্তু যদি তারা বের হয়ে যায় তবে বিধিমত নিজেদের জন্য তারা যা করবে তাতে তোমাদের কোন পাপ নেই। (আল্লাহ পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়)। মুজাহিদ বলেনঃ আল্লাহ তাআলা সাত মাস বিশ দিনকে তার জন্য পূর্ণ বছর সাব্যস্ত করেছেন। মহিলা ইচ্ছা করলে ওসিয়্যত অনুসারে থাকতে পারে, আবার চাইলে চলেও যেতে পারে। একথাই আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ “বহিষ্কার না করে, তবে যদি সেচ্ছায় বের হয়ে যায় তবে তাতে তোমাদের কোন পাপ নেই তাই মহিলার উপরইদ্দত পালন করা যথারীতি ওয়াজিবই আছে।
আবূ নাজীহ এ কথাগুলো মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেছেন। আতা বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ আর আয়াতটি স্বামীর বাড়ীতে ইদ্দত পালন করার হুকুমকে রহিত করে দিয়েছে। অতএব সে যেখানে ইচ্ছা ইদ্দত পালন করতে পারে। আতা বলেনঃ ইচ্ছা হলে ওসিয়্যত অনুযায়ী সে স্বামীর পরিবারে অবস্থান করতে পারে। আবার ইচ্ছা হলে অন্যত্রও ইদ্দত পালন করতে পাবে। কেননা, মহান আল্লাহ বলেছেনঃ তারা নিজেদের জন্য বিধিমত যা করবে, তাতে তোমাদের কোন পাপ নেই। আতা বলেন- এরপর মিরাসের আয়াত নায়িল হলে বাসস্থান দেওয়ার হুকুমও রহিত হয়ে যায়। এখন সে যেখানে মনে চায় ইদ্দত পালন করতে পারে, তাকে বাসস্থান দেওয়া জরুরী নয়।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৪ | 4954 | ٤۹۵٤
পরিচ্ছদঃ ২০৮৯. (মহান আল্লাহর বাণী) তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তাদের স্ত্রীরা চার মাস দশ দিন প্রতীক্ষায় থাকবে। যখন তারা তাদের ইদ্দতকাল পূর্ণ করবে, তখন যথাবিধি নিজেদের জন্য যা করবে তাতে তোমাদের কোন অপরাধ নাই। তোমরা যা কর সে সমবন্ধে আল্লাহ্ সবিশেষ অবহিত।
৪৯৫৪। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … উম্মে হাবীবা বিনত আবূ সুফিয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। যখন তার কাছে পিতার মৃত্যু সংবাদ পৌছালো, তখন তিনি সুগন্ধি আনিয়ে তার উভয় হাতে লাগালেন এবং বললেনঃ সুগন্ধি লাগানোর কোন প্রয়োজন আমার নেই। কিন্তু সেহেতু আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন মহিলার জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের অধিক শোক পালন করা বৈধ হবে না। তবে স্বামীর মৃত্যুতে চারমাস দশদিন শোক পালন করতে হবে।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৫ | 4955 | ٤۹۵۵
পরিচ্ছদঃ ২০৯০. বেশ্যার উপার্জন ও অবৈধ বিবাহ। হাসান (র) বলেছেন, যদি কেউ অজান্তে কোন মুহাররাম মহিলাকে বিয়ে করে ফেলে, তবে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। মহিলা নির্দিষ্ট মোহর ছাড়া অন্য কিছু পাবে না। তিনি পরবর্তীতে বলেছেন, সে মোহরে মিসাল পাবে।
৪৯৫৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুরের মূল্য, গনকের পারিশ্রমিক এবং বেশ্যার উপার্জন গ্রহন করতে নিষেধ করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৬ | 4956 | ٤۹۵٦
পরিচ্ছদঃ ২০৯০. বেশ্যার উপার্জন ও অবৈধ বিবাহ। হাসান (র) বলেছেন, যদি কেউ অজান্তে কোন মুহাররাম মহিলাকে বিয়ে করে ফেলে, তবে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। মহিলা নির্দিষ্ট মোহর ছাড়া অন্য কিছু পাবে না। তিনি পরবর্তীতে বলেছেন, সে মোহরে মিসাল পাবে।
৪৯৫৬। আদম (রহঃ) … আবূ জুহায়ফা (রাঃ) এর পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন উল্কি অংকনকারিনা উল্কি গ্রহণকারিনা, সুদ গ্রহিতা ও সুদ দাতাকে। তিনি কুকুরের মূল্য ও বেশ্যার উপার্জন ভোগ করতে নিষেধ করেছেন। চিত্রকরদেরকেও তিনি অভিসম্পাত করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৭ | 4957 | ٤۹۵۷
পরিচ্ছদঃ ২০৯০. বেশ্যার উপার্জন ও অবৈধ বিবাহ। হাসান (র) বলেছেন, যদি কেউ অজান্তে কোন মুহাররাম মহিলাকে বিয়ে করে ফেলে, তবে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। মহিলা নির্দিষ্ট মোহর ছাড়া অন্য কিছু পাবে না। তিনি পরবর্তীতে বলেছেন, সে মোহরে মিসাল পাবে।
৪৯৫৭। আলী ইবনু জাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। অবৈধ পন্থার মাধ্যমে দাসীর উপার্জিত অর্থ ভোগ করতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৮ | 4958 | ٤۹۵۸
পরিচ্ছদঃ ২০৯১. নির্জনবাসের পরে মোহরের পরিমাণ, অথবা নির্জনবাস ও স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দিলে স্ত্রীর মোহর এবং কিভাবে নির্জনবাস প্রমাণিত হবে সে প্রসঙ্গে।
৪৯৫৮। আমর ইবনু যুরারা (রহঃ) … সাঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু উমরকে জিজ্ঞাসা করলামঃ যদি কেউ তার স্ত্রীকে অপবাদ দেয়? তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আজলান গোত্রের এক দম্পতির বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ জানে তোমাদের দু’ জনের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। সুতরাং তোমাদের মধ্যে কেউ কি তাওবা করতে রাযী আছ? তারা উভয়ে অস্বীকার করল। তিনি পুনরায় বললেনঃ আল্লাহ অবহিত আছেন তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। কাজেই তোমাদের মধ্যে কে তাওবা করতে রাযী আছ? তারা কেউ রাযী হল না। এরপর তিনি তাদেরকে পৃথক করে দেন। আইয়্যুব বলেনঃ আমর ইবনু দীনার আমাকে বললেন, এই হাদীসে আরো কিছু কথা আছে, আমি তা তোমাকে বর্ণনা করতে দেখছি না। রাবী বলেন, লোকটি তখন বললঃ আমার মাল (স্ত্রীকে প্রদত্ত মোহর) ফিরে পাব না? তিনি বললেনঃ তুমি কোন মাল পাবে না। যদি তুমি সত্যবাদী হও, তবুওতো তুমি তার সাথে সংগম করেছ। আর যদি মিথ্যাবাদী হও, তাহলে তো কোন প্রশ্নই আসে না।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৯ | 4959 | ٤۹۵۹
পরিচ্ছদঃ ২০৯২. তালাকপ্রাপ্তা নারীর যদি মোহর নির্ণিত না হয় তাহলে সে মুত‘আ পাবে। কারণ মহান আল্লাহ্ বলেছেনঃ তোমরা নিজেদের স্ত্রীদেরকে স্পর্শ করা কিংবা তাদের জন্য মোহর ধার্য করার পূর্বে তালাক দিলে তোমাদের কোন পাপ নেই। তোমরা তাদের সংস্থানের ব্যবস্থা করো। বিত্তবান তার সাধ্যমত এবং বিত্তহীন তার সামর্থ্যানুযায়ী ….. তোমরা যা কর আল্লাহ্ সে সব দেখেন। আল্লাহ্ আরও বলেছেনঃ তালাকপ্রাপ্তা নারীদেরকে প্রথমত কিছু দেওয়া মুত্তাকীদের কর্তব্য। আর লি’আনকারিণীকে তার স্বামী তালাক দেওয়ার সময় নবী (সাঃ) তার জন্য মুত‘আর কিছু দিয়ে দেওয়ার কথা উল্লেখ করেননি।
৪৯৫৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লিআনকারী স্বামী-স্ত্রীকে বলেছিলেন, আল্লাহ তোমাদের হিসাব গ্রহণ করবেন। তোমাদের একজন মিথ্যুক। তার (মহিলার) ওপর তোমার কোন অধিকার নেই। সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার মাল? তিনি বললেনঃ তোমার কোন মাল নাই। তুমি যদি সত্যই বলে থাক, তাহলে এ মাল তার লজাস্থানকে হালাল করার বিনিময়ে হবে। আর যদি মিথ্যা বলে থাক, তবে এটা চাওয়া তোমার জন্য একান্ত অনুচিত।