বুখারি হাদিস নং ৪৬৯৩-৪৭০০

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৯৩ | 4693 | ٤٦۹۳

পরিচ্ছদঃ শাদী করতে উৎসাহ দান। আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ ‘তোমরা শাদী করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে’
৪৬৯৩। সাঈদ ইবনু আবূ মারয়াম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিন জনের একটি দল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইবাদত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিবিগণের গৃহে আগমন করল। যখন তাঁদেরকে এ সম্পর্কে অবহিত করা হল, তখন তারা এ ইবাদতের পরিমাণ যেন কম মনে করল এবং বলল, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সমকক্ষ হতে পারি না। কারণ, তার আগে ও পরের সকল গুনাহ্ মাফ করে দেয়া হয়েছে। এমন সময় তাদের মধ্য থেকে একজন বলল, আমি সারা জীবন রাতে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে থাকব। অপর একজন বলল, আমি সারা বছর রোযা পালন করব এবং কখনও বিরতি দিব না। অপরজন বলল, আমি নারী বিবর্জিত থাকব-কখনও শাদী করব না।

এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিকট এলেন এবং বললেন, “তোমরা কি ঐ সকল ব্যাক্তি যারা এরূপ কথাবার্তা বলেছ? আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহকে তোমাদের চেয়ে বেশী ভয় করি এবং তোমাদের চেয়ে তাঁর প্রতি আমি বেশি আনুগত্যশীল; অথচ আমি রোযা পালন করি, আবার রোযা থেকে বিরতও থাকি। সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করি এবং ঘুমাই ও বিয়ে-শাদী করি। সুতরাং যারা আমার সুন্নাতের প্রতি বিরাগ ভাব পোষণ করবে, তারা আমার দলভুক্ত নয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৯৪ | 4694 | ٤٦۹٤

পরিচ্ছদঃ শাদী করতে উৎসাহ দান। আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ ‘তোমরা শাদী করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে’
৪৬৯৪। আলী (রহঃ) … যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উরওয়া (রহঃ) আমাকে অবহিত করেছেন যে, তিনি আয়িশা (রাঃ) কে আল্লাহর এই বাণী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেনঃ তোমরা যদি আশংকা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে শাদী কর নাদীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে- দুই, তিন অথবা চার। কিন্তু তোমাদের মনে যদি ভয় হয় যে, তোমরা সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীকে। এতে পক্ষপাতিত্ব না করার অধিকতর সম্ভাবনা”।

আয়িশা (রাঃ) বলেন, হে ভাগ্নে! একটি ইয়াতীম বালিকা এমন একজন অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে ছিল, যে তার সম্পদ ও রূপের প্রতি আকৃষ্ট ছিল। সে তাকে তার সমকক্ষ মহিলাদের চেয়ে কম মোহর দিয়ে শাদী করার ইচ্ছ করে তখন লোকদেরকে নিষেধ করা হল। ঐসব ইয়াতীমের শাদী করার ব্যাপারে; তবে যদি তারা তোমাদের ব্যাপারে সুবিচার করে ও পূর্ণ মোহর আদায় করে (তাহলে পারবে)। যদি না পারে, তাহলে তোদের ব্যতীত অন্য নারীদের শাদী করার আদেশ করা হল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৯৫ | 4695 | ٤٦۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৪২৭. রাসূলুল্লাহ্ (সা) এর বাণী “ তোমাদের মধ্যে যাদের শাদীর সামর্থ্য আছে, সে যেন শাদী করে। কেননা, শাদী তার দৃষ্টিকে অবনমিত রাখতে সাহায্য করবে এবং তার লজ্জাস্থান রক্ষা করবে”। এবং যার দরকার নেই সে শাদী করবে কি না?
৪৬৯৫। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আলকামা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন আমি আবদুল্লাহ‌ (রাঃ) এর সাথে ছিলাম, উসমান (রাঃ) তাঁর সাথে মিনাতে দেখা করে বলেন, হে আবদুর রহমান! আপনার কাছে আমার কিছু প্রয়োজন আছে। এরপর তারা উভয়েই এক পার্শ্বে গেলেন। তারপর উসমান (রাঃ) বললেন, হে আবদুর রহমান! আমি আপনার সাথে এমন একটি কুমারী মেয়ের শাদী দেব, যে আপনাকে আপনার অতীত দিনকে স্মরণ করিয়ে দিবে? আবদুল্লাহ যখন দেখলেন, তার এ শাদীর প্রয়োজন নেই তখন তিনি আমাকে ‘হে আলকামা’ বলে ডাক দিলেন। আমি তাঁর কাছে গিয়ে বলতে শুনলাম, আপনি যখন আমাকে একথা বলেছেন (তখন আমার স্মরনে এর চেয়ে বড় কথা আসছে আর তা হচ্ছে) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বললেন, হে যুবকের দল! তোমাদের মধ্যে যে শাদীর সামর্থ্য রাখে, সে যেন শাদী করে এবং যে শাদীর সামর্থ্য রাখে না, সে যেন ‘রোযা’ পালন করে। কেননা, রোযা যৌন ক্ষমতাকে অবদমন করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৯৬ | 4696 | ٤٦۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৪২৮. যে শাদী করার সামর্থ্য রাখে না, সে সওম পালন করবে
৪৬৯৬। উমর ইবনু হাফ্‌স ইবনু গিয়াস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আমরা যুবক বয়সে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম; অথচ আমাদের কোনো কিছু (সম্পদ) ছিল না। এমনি অবস্থায় আমাদেরকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হে যুব সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যারা শাদী করার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন শাদী করে। কেননা, শাদী তার দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং যৌনতাকে সংযমী করে এবং যাদের শাদী করার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোযা পালন করে। কেননা, রোযা তার যৌনতাকে দমন করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৯৭ | 4697 | ٤٦۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৪২৯. বহুবিবাহ
৪৬৯৭। ইব্‌রাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … আতা (রহঃ) বলেন, আমরা ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর সঙ্গে ‘সারিফ’ নামক স্থানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী মায়মূনা (রাঃ) এর জানাযায় উপস্থিত ছিলাম। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, ইনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী। সুতরাং যখন তোমরা তাঁর জানাযা উঠাবে তখন ধাক্কা-ধাক্কি এবং জোরে নাড়া-চাড়া করো না; বরং ধীরে ধীরে নিয়ে চলবে। কেননা, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নয়জন বিবি ছিলেন। তিনি আট জনের সাথে পালাক্রমে রাত্রি যাপন করতেন। কিন্তু একজনের সাথে রাত্রি যাপনের পালা ছিল না।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৯৮ | 4698 | ٤٦۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৪২৯. বহুবিবাহ
৪৬৯৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একই রাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সকল বিবির নিকট গমন করতেন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ন’জন স্ত্রী ছিল। অন্য সনদে “মুসাদ্দাদ” এর স্থলে খলীফা নাম উল্লেখ আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৯৯ | 4699 | ٤٦۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৪২৯. বহুবিবাহ
৪৬৯৯। আলী ইবনু হাকাম (রহঃ) … সাঈদ ইবনু জুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, ইবনু আব্বাস (রাঃ) আমাকে বললেন, তুমি শাদী করেছ? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, শাদী কর। কেননা, এই উম্মতের মধ্যে যিনি শ্রেষ্ঠ ব্যাক্তি, তাঁর অধিক সংখ্যক বিবি ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৭০০ | 4700 | ٤۷۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৪৩০. যদি কেউ কোন নারীকে শাদী করার উদ্দেশ্যে হিজরত করে অথবা কোন সৎ কাজ করে তবে তার নিয়্যত অনুসারে (ফল) পাবে।
৪৭০০। ইয়াহ্‌ইয়া ইবনু কাযা’আ (রহঃ) … উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিয়্যতের ওপরেই কাজের ফলাফল নির্ভর করে এবং প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিয়্যত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে। সুতরাং যার হিজরত আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলের সন্তুষ্টির জন্য তার হিজরত আল্লাহ্ এবং তাঁর বসূলের জন্যই। আর যার হিজরত পার্থিব স্বার্থের জন্য অথবা কোন মহিলাকে শাদী করার জন্য, সে তাই পাবে, যে উদ্দেশ্যে সে হিজরত করেছে।