বুখারি হাদিস নং ৪৬৪২-৪৬৯২

পরিচ্ছদঃ সুরা বাকারার ফযীলত
৪৬৪২। মুহাম্মদ ইব্‌ন কাসীর (রহঃ) … আবূ মাসঊদ (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে দু’টি আয়াত তিলাওয়াত করে। আবূ নু’আইম (রহঃ) আবূ মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কেউ যদি রাতে সূরা বাকারার শেষ দু’টি আয়াত পাঠ করে, সেটাই তার জন্য যথেষ্ট। উসমান ইব্‌ন হায়সাম (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে রমযানে প্রাপ্ত যাকাতের মাল হেফাজতের দায়িত্ব দিলেন। এ সময় জনৈক ব্যাক্তি এসে খাদ্য-দ্রব্য উঠিয়ে নিতে উদ্যত হল। আমি তাকে ধরে ফেললাম এবং বললাম, আমি তোমাকে আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে যাব। এরপর পুরো হাদীস বর্ণনা করে। তখন লোকটি বলল, যখন আপনি ঘুমাতে যাবেন, তখন আয়াতুল কুরসী পাঠ করবেন। এর ফলে আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন পাহারাদার নিযুক্ত করা হবে এবং ভোর পর্যন্ত শয়তান আপনার কাছে আসতে পারবে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (এ ঘটনা শুনে) বললেন, (যে তোমার কাছে এসেছিল) সে সত্য কথা বলেছে, যদিও সে বড় মিথ্যাবাদী শয়তান।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৪৩ | 4643 | ٤٦٤۳

পরিচ্ছদঃ সুরা কাহফের ফযীলত
৪৬৪৩। আমর ইবনু খালিদ (রহঃ) … বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি “সূরা কাহ্ফ” তিলাওয়াত করেছিলেন। তার ঘোড়াটি দু’টি রশি দিয়ে তার পাশে বাঁধা ছিল। তখন এক খন্ড মেঘ এসে তার উপর ছায়া বিস্তার করল। মেঘখন্ড ক্রমশ নিচের দিকে নেমে আসতে লাগল। আর তার ঘোড়াটি ভয়ে লাফালাফি শুরু করে দিল। ভোর বেলা যখন লোকটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উক্ত ঘটনার কথা বললেন, তখন তিনি বললেন, এ ছিল আস্‌সাকিনা (প্রশান্তি), যা কুরআন তিলাওয়াতের কারণে অবতীর্ণ হয়েছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৪৪ | 4644 | ٤٦٤٤

পরিচ্ছদঃ সুরা আল-ফাতহর ফযীলত
৪৬৪৪। ইস্‌মাঈল (রহঃ) … আসলাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন এক সফরে রাতের বেলায় চলছিলেন এবং উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) তাঁর সাথে ছিলেন। তখন উমর (রাঃ) তাঁর কাছে কিছু জিজ্ঞেস করলেন; কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কোন উত্তর দিলেন না। তারপর আবার জিজ্ঞেস করলেন; কিন্তু তিনি কোন উত্তর দিলেন না। পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, এবারও তিনি কোন উত্তর দিলেন না। এমতাবস্থায়, উমর (রাঃ) নিজকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমার মা তোমাকে হারিয়ে ফেলুক! তুমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তিনবার প্রশ্ন করে কোন উত্তর পাওনি। উমর (রাঃ) বললেন, এরপর আমি আমার উটকে দ্রুত চালিয়ে সকলের আগে চলে গেলাম এবং আমি শঙ্কিত হলাম, না জানি আমার সম্পর্কে কুরআন অবতীর্ণ হয়। কিছুক্ষণ পর কেউ আমাকে ডাকছে, এমন আওয়োজ শুনতে পেলাম। আমি মনে আশংকা করলাম যে, হয়তো বা আমার সম্পর্কে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। তখন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে গেলাম এবং তাঁকে সালাম দিলাম। তিনি বললেন আজ রাতে আমার কাছে এমন একটি সূরা অবতীর্ণ হয়েছে, যা আমার কাছে সূর্যালোক পতিত সকল স্থান হতেও উত্তম। এরপর তিনি পাঠ করলেন, إِنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًا مُبِينًا “নিশ্চয় আমি তোমাকে সুস্পষ্ট বিজয় দান করেছি”।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৪৫ | 4645 | ٤٦٤۵

পরিচ্ছদঃ কুল্‌হু আল্লাহু আহাদ (সূরা ইখলাস) এর ফযীলত
৪৬৪৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি অন্য আরেক ব্যাক্তিকে ‘কুল হুআল্লাহু আহাদ’ পড়তে শুনলেন। সে বার বার তা মুখে উচ্চারন করছিল। (তিনি মনে করলেন এভাবে বারাবার পাঠ করা যথেষ্ট নয়) পরদিন সকালে তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে এ সম্পর্কে বললেন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন। এ সূরা হচ্ছে সমগ্র কুরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান।

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বললেনঃ আমার ভাই- কাতাদা ইবনু নুমান আমাকে বলেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় এক ব্যাক্তি শেষ রাতে সালাতে শুধুমাত্র “কুল হুআল্লাহু আহাদ” ছাড়া আর কোনো সূরাই তিলাওয়াত করেন নি। পরদিন সকালে কোন এক ব্যাক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাছে আসলেন। বাকী অংশ পূর্বের হাদীসের অনুরূপ।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৪৬ | 4646 | ٤٦٤٦

পরিচ্ছদঃ কুল্‌হু আল্লাহু আহাদ (সূরা ইখলাস) এর ফযীলত
৪৬৪৬। উমর ইবনু হাফ্‌স (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদেরকে বলেছেন, তোমাদের কেউ কি এক রাতে কুরআনের এ-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াত করতে অসাধ্য মনে কর? এ প্রশ্ন তাদের জন্য কঠিন ছিল। এরপর তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে কার সাধ্য আছে যে, এমনটি পারবে? তখন তিনি বললেন, “কুল হুআল্লাহু আহাদ” অর্থাৎ সূরা ইখ্‌লাস কুরআন শরীফের এক-তৃতীয়াংশ।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৪৭ | 4647 | ٤٦٤۷

পরিচ্ছদঃ মু’আবিযাত (সূরা ফালাক ও সূরা নাস) এর ফযীলত
৪৬৪৭। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, যখনই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থ হতেন তখনই তিনি ‘সূরায়ে মু’আবিযাত’ পাঠ করে নিজের উপর ফুঁক দিতেন। যখন তাঁর রোগ কঠিন আকার ধারন করল, তখন বরকত লাভের জন্য আমি এই সকল সূরা পাঠ করে হাত দিয়ে শরীর মাসেহ্‌ করিয়ে দিতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৪৮ | 4648 | ٤٦٤۸

পরিচ্ছদঃ মু’আবিযাত (সূরা ফালাক ও সূরা নাস) এর ফযীলত
৪৬৪৮। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, প্রতি রাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শয্যা গ্রহনকালে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করে দু’হাত একত্রিত করে হাতে ফুঁক দিয়ে সমস্ত শরীরে হাত বুলাতেন। মাথা ও মুখ থেকে শুরু করে তাঁর দেহের সম্মুখভাগের উপর হাত বুলাতেন এবং তিনবার করে এরূপ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৪৯ | 4649 | ٤٦٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৪০৫. যারা বলে, দুই মলাটের মধ্যে (কুরআন) যা কিছু আছে তাছাড়া নবী (সা) কিছু রেখে যাননি
২৪০৪. অনুচ্ছেদঃ কুরআন তিলাওয়াতের সময় প্রশান্তি নেমে আসে ও ফেরেশতা নাযিল হয়। লায়স (রহঃ) উসাইদ ইব্‌ন হুদায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদা রাতে তিনি সূরা বাকারা পাঠ করছিলেন। তখন তাঁর ঘোড়াটি তারই পাশে বাঁধা ছিল। হঠাৎ ঘোড়াটি ভীত হয়ে লাফ দিয়ে উঠল এবং ছুটাছুটি শুরু করল। যখন পাঠ বন্ধ করলেন তখনই ঘোড়াটি শান্ত হল। ঘোড়াটি পূর্বের মতো আচরণ করল। যখন পাঠ বন্ধ করলেন ঘোড়াটি শান্ত হলো। পুনরায় পাঠ আরম্ভ করলে ঘোড়াটি পূর্বের মতো করতে লাগল। এ সময় তার পুত্র ইয়াহইয়া ঘোড়াটির নিকটে ছিল। তার ভয় হচ্ছিল যে, ঘোড়াটি তার পুত্রকে পদদলিত করবে। তখন তিনি পুত্রকে টেনে আনলেন এবং আকাশের দিকে তাকিয়ে কিছু দেখতে পেলেন। পরদিন সকালে তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উক্ত ঘটনা ব্যক্ত করলেন। ঘটনা শুনে রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে ইব্‌ন হুদায়র! তুমি যদি পাঠ করতে, হে ইব্‌ন হুদায়র! তুমি যদি পাঠ করতে। ইব্‌ন হুদায়র আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! আমার ছেলেটি ঘোড়ার নিকট থাকায় আমি ভয় পেয়ে গেলাম হয়ত বা ঘোড়াটি তাকে পদদলিত করবে, সুতরাং আমি আমার মাথা উপরে উঠাতেই মেঘের মত কিছু দেখলাম, যা আলোকময় ছিল। আমি যখন বাইরে এলাম তখন আর কিছু দেখ্‌খলাম না। তখন রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি জান, ওটা কি ছিল? তিনি বললেন, না। তখন রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তারা ছিল ফেরেশতামন্ডলী। তোমার তিলাওয়াত শুনে তোমার কাছে এসেছিল। তুমি যদি ভোর পর্যন্ত তিলাওয়াত করতে থাকতে তারাও ততক্ষন পর্যন্ত এখানে অবস্থান করত এবং লোকেরা তাদেরকে দেখতে পেত। এরপর হাদীসের অন্য একটি সনদ বর্ণিত হয়েছে।

৪৬৪৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবদুল আযীয ইবনু রুফাঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এবং শাদ্দাদ ইবনু মা’কিল ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর নিকট উপস্থিত হলাম। শাদ্দাদ ইবনু মা’কিল তাকে জিজ্ঞেস করলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআন ব্যতীত অন্য কিছু রেখে যাননি? ইবনু আব্বাস (রাঃ) উত্তর দিলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই মলাটের মাঝে যা কিছু আছে অর্থাৎ কুরআন ব্যতীত অন্য কিছু রেখে যাননি। আবদুল আযীয বললেন, আমরা মুহাম্মদ ইবনুল হানাফিয়ার নিকট গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনিই বললেন যে, দুই মলাটের মাঝে ছাড়া আর কিছু রেখে যাননি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৫০ | 4650 | ٤٦۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৪০৬. সব কালামের উপর কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব
৪৬৫০। হুদ্‌বাত ইবনু খালিদ (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যাক্তি কুরআন তিলওয়াত করে, তার উদাহরণ হচ্ছে ঐ লেবুর ন্যায় যা সুস্বাদু এবং সুগন্ধযুক্ত। আর যে ব্যাক্তি (মু’মিন) কুরআন পাঠ করে না, তার উদাহরণ হচ্ছে এমন খেজুরের মত, যা সুগন্ধহীন, কিন্তু খেতে সুস্বাদু। আর ফাসিক-ফাজির ব্যাক্তি যে কুরআন পাঠ করে, তার উদাহরণ হচ্ছে রায়হান জাতীয় গুল্মের মত, যার সুগন্ধ আছে, কিন্তু খেতে বিস্বাদযুক্ত (তিক্ত)। আর ঐ ফাসিক যে কুরআন একেবারে পাঠ করে না, তার উদাহরণ হচ্ছে ঐ মাকাল ফলের মত, যা খেতেও বিস্বাদ (তিক্ত) এবং যার কোনো সুঘ্রানও নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৫১ | 4651 | ٤٦۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৪০৬. সব কালামের উপর কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব
৪৬৫১। মুসাদ্দাস (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, অতীতের জাতিসমূহের সঙ্গে তোমাদের জীবনকালের তুলনা হচ্ছে আসর ও মাগরিব সালাত (নামায/নামাজ)-এর মধ্যবর্তী সময়কালের মত। তোমাদের এবং ইহুদী-নাসারাদের উদাহরণ হচ্ছে ঐ ব্যাক্তির ন্যায়, যে শ্রমিকদের কাজে নিযুক্ত করে তাদেরকে বলল, “তোমাদের মধ্যে কে এক কীরাতের বিনিময়ে দ্বি-প্রহর পর্যন্ত কাজ করবে”? ইহুদীরা কাজ করল। তারপর সেই ব্যাক্তি আবার বলল, তোমাদের মধ্যে কে এক কীরাতের বিনিময়ে দুপুর থেকে আসর পর্যন্ত কাজ করবে? নাসারার কাজ করল। এরপর তোমরা (মুসলামানরা) আসরের সালাত (নামায/নামাজ)-এর পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত প্রত্যেক দু’কীরাতের বিনিময়ে কাজ করেছ। তারা বলল, আমরা কম মজুরি নিয়েছি এবং বেশী কাজ করেছি। তিনি (আল্লাহ) বলবেন, আমি কি তোমাদের অধিকারের ব্যাপারে জুলুম করেছি? তারা উত্তরে বলবে, না। এরপর আল্লাহ বলবেন, এটা আমার দয়া, আমি যাকে ইচ্ছা দিয়ে থাকি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৫২ | 4652 | ٤٦۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৪০৭. কিতাবুল্লাহর ওসীরত
৪৬৫২। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … তালহা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ‌ ইবনু আবূ আউফ (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি কোন ওসীয়ত করে গেছেন? তিনি বললেন, না। তখন আমি বললাম, যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে কোন ওসীয়ত করে যাননি, তখন কি করে মানুষের জন্য ওসীয়ত করাকে (কুরআন মজীদে) বাধ্যতামূলক করা হল এবং তাদেরকে এজন্য নির্দেশ দেয়া হল। জবাবে তিনি বললেন, তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর কিতাব (গ্রহণ) এর ওসীয়ত করে গেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৫৩ | 4653 | ٤٦۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৪০৮. যার জন্য কুরআন যথেষ্ট নয়। আল্লাহ্‌র বাণীঃ তাদের জন্য কি যথেষ্ট নয় যে, আমি আপনার নিকট কিতাব নাযিল করেছি, যা তাদের নিকট পাঠ করা হয়
৪৬৫৩। ইয়াহ্‌ইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ কোন নাবী কে ঐ অনুমতি দেননি, যা আমাকে দিয়েছেন, আর তা হয়েছে কুরআন তিলাওয়াত যথেষ্ট। বারী বলেন, এর অর্থ সুষ্পষ্ট করে আওয়াজের সাথে কুরআন পাঠ করা।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৫৪ | 4654 | ٤٦۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৪০৮. যার জন্য কুরআন যথেষ্ট নয়। আল্লাহ্‌র বাণীঃ তাদের জন্য কি যথেষ্ট নয় যে, আমি আপনার নিকট কিতাব নাযিল করেছি, যা তাদের নিকট পাঠ করা হয়
৪৬৫৪। আলী ইবন আবদুল্লাহ‌ … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা’আলা অন্য কোন নাবী কে অনুমতি দেননি, যা আমাকে দিয়েছেন যে, কুরআন তিলাওয়াত করাই যথেষ্ট। সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, কুরআনই তার জন্য যথেষ্ট।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৫৫ | 4655 | ٤٦۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৪০৯. কুরআন তিলাওয়াতকারী হবার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করা
৪৬৫৫। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, দু’টি বিষয় ছাড়া অন্য কোন ব্যাপারে ঈর্ষা করা যায় না। প্রথমত, যাকে আল্লাহ তা’আলা কিতাবের জ্ঞাণ দান করেছেন এবং তিনি তার থেকে গভীর রাতে তিলাওয়াত করে। দ্বিতীয়ত, যাকে আল্লাহ তা’আলা সম্পদ দান করেছেন এবং তিনি সেই সম্পদ দিন-রাত দান-খয়রাত করতে থাকেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৫৬ | 4656 | ٤٦۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৪০৯. কুরআন তিলাওয়াতকারী হবার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করা
৪৬৫৬। আলী ইবন ইব্‌রাহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দু’ব্যাক্তি ব্যতীত অন্য কারও সাথে ঈর্ষা করা যায় না। এক ব্যাক্তি, যাকে আল্লাহ তা’আলা কুরাআন শিক্ষা দিয়েছেন এবং সে তা দিন-রাত তিলাওয়াত করে। আর তা শুনে তার প্রতিবেশীরা তাকে বালে, হায়! আমাদেরকে যদি এরূপ জ্ঞান দেয়া হত, যেরূপ জ্ঞাণ অমুককে দেয়া হয়েছে, তাহলে আমিও তার মত আমল করতাম। অন্য আর এক ব্যাক্তি, যাকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেন এবং সে সম্পদ সত্য ও ন্যায়ের পথে ব্যয় করে। এ অবস্থা দেখে অন্য এক ব্যাক্তি বলেঃ হায়! আমাকে যদি অমুক ব্যাক্তির মত সম্পদশালী করা হত, তাহলে সে যেরূপ ব্যয় করছে, আমিও সেরূপ ব্যয় করতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৫৭ | 4657 | ٤٦۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৪১০. তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তি উত্তম, যে নিজে কুরআন শিক্ষা গ্রহণ করে এবং অপরকে শিক্ষা দেয়
৪৬৫৭। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … উসমান (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যাক্তি সর্বোত্তম যে কুরআন শিখে এবং অন্যকে শিখায়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৫৮ | 4658 | ٤٦۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৪১০. তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তি উত্তম, যে নিজে কুরআন শিক্ষা গ্রহণ করে এবং অপরকে শিক্ষা দেয়
৪৬৫৮। আবূ নু’আয়ম (রহঃ) … উসমান ইবনু আফ্‌ফান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম তারা, যারা নিজেরা কুরআন শিখে এবং অন্যকেও শিক্ষা দেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৫৯ | 4659 | ٤٦۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৪১০. তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তি উত্তম, যে নিজে কুরআন শিক্ষা গ্রহণ করে এবং অপরকে শিক্ষা দেয়
৪৬৫৯। আমর ইবনু আউন (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা একজন মহিলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে হাযির হয়ে বলল, সে নিজকে আল্লাহর রাসূলের জন্য উৎসর্গ করার ইচ্ছা করেছে। এ কথা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার কোন মহিলার প্রয়োজন নেই। এক ব্যাক্তি তাঁকে বলল, একে আমার সঙ্গে শাদী করিয়ে দিন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তাকে একখানা কাপড় দাও। ঐ ব্যাক্তি তার অক্ষমতার কথা প্রকাশ করল, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তাকে একখানা লোহার আংটি হলেও দাও। এবারেও লোকটি আগের মত অক্ষমতা প্রকাশ করল। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে প্রশ্ন করলেন, তোমার কি কুরআনের কিছু অংশ মুখস্থ আছে? লোকটি উত্তর করলঃ হ্যাঁ। আমার অমুক অমুক সূরা মুখস্থ আছে। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে পরিমাণ কুরআন তোমার মুখস্থ আছে, তার বিনিময়ে তোমার নিকট এ মহিলাটিকে শাদী দিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৬০ | 4660 | ٤٦٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৪১১. মুখস্থ কুরআন পাঠ করা
৪৬৬০। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদা জনৈকা মহিলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আমার জীবনকে আপনার জন্য দান করতে এসেছি। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে তাকিয়ে তার আপাদমস্তক অবলোকন করে মাথা নিচু করলেন। মহিলাটি যখন দেখল যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন ফয়সালা দিচ্ছেন না তখন সে বসে পড়ল। এমতাবস্থায়, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীদের একজন বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি আপনার কোন প্রয়োজন না থাকে, তবে এ মহিলাটির সাথে আমার শাদী দিয়ে দিন। তিনি বললেন, তোমার কাছে কি কিছু আছে? সে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ্‌! আল্লাহর কসম কিছুই নেই। তিনি বললেন, তুমি তোমার পরিবার-পরিজনদের কাছে ফিরে যাও এবং দেখ কিছু পাও কি-না!

এরপর লোকটি চলে গেল এবং ফিরে এসে বলল, আল্লাহর কসম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি কিছুই পেলাম না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দেখ একটি লোহার আংটি হলেও! তারপর সে চলে গেল এবং ফিরে এসে বলল, আল্লাহর কসম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! একটি লোহার আংটিও পেলাম না’ কিন্তু এই যে আমার তহবন্দ আছে। সাহাল (রাঃ) বলেন, তার কোন চাঁদর ছিল না। অথচ লোকটি বলল, আমার তহবন্দের অর্ধেক দিতে পারি। এ কথা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ তহবন্দ দিয়ে কি হবে? যদি তুমি পরিধান কর, তাহলে মহিলাটির কোন আবরণ থাকবে না। আর যদি সে পরিধান করে, তোমার কোন আবরণ থাকবে না।

লোকটি বসে পড়লো, অনেকক্ষন সে বসে থাকল। এরপর উঠে দাঁড়াল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ফিরে যেতে দেখে তাকে ডেকে আনালেন। যখন সে ফিরে আসল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার কুরআনের কতটুকু মুখস্থ আছে? সে উত্তরে বলল, অমুক অমুক সূরা মুখস্থ আছে। সে এমনিভাবে একে একে উল্লেখ করতে থাকল। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি এ সকল সূরা মুখস্থ তিরাওয়াত করতে পার? সে উত্তর করল, হ্যাঁ! তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যাও তুমি যে পরিমান কুরআন মুখস্থ রেখেছ, উহার বিনিময়ে এ মহিলাটিকে তোমার সঙ্গে শাদী দিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৬১ | 4661 | ٤٦٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৪১২. কুরআন শরীফ বারবার তিলাওয়াত করা ও স্মরণ রাখা
৪৬৬১। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি অন্তরে কুরআন গেঁথে (মুখস্থ) রাখে তার উদাহরন হচ্ছে ঐ মালিকের ন্যায়, যে উট বেঁধে রাখে। যদি সে উট বেঁধে রাখে, তবে সে উট তার নিয়ন্ত্রণে থাকে, কিন্তু যদি সে বন্ধন খুলে দেয়, তবে তা আয়ত্তের বাইরে চলে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৬২ | 4662 | ٤٦٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৪১২. কুরআন শরীফ বারবার তিলাওয়াত করা ও স্মরণ রাখা
৪৬৬২। মুহাম্মদ ইবনু আর’আরা (রহঃ) … আবদুল্লাহ‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এটা খুবই খারাপ কথা যে, তোমাদের মধ্যে কেউ বলবে, আমি কুরআনের অমুক অমুক আয়াত ভুলে গেছি; বরং তাকে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। সুতরাং, তোমরা কুরআন তিলাওয়াত করতে থাক কেননা, তা মানুষের অন্তর থেকে উটের চেয়েও দ্রুতবেগে চলে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৬৩ | 4663 | ٤٦٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৪১২. কুরআন শরীফ বারবার তিলাওয়াত করা ও স্মরণ রাখা
৪৬৬৩। মুহাম্মদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কুরআনের প্রতি লক্ষ্য রাখবে। আল্লাহর কসম! যার কবজায় আমার জীবন! কুরআন বন্ধনমুক্ত উটের চেয়ে দ্রুত বেগে দৌড়ে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৬৪ | 4664 | ٤٦٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৪১৩. জন্তুর পিঠে বসে কুরআন পাঠ করা
৪৬৬৪। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … আবদুল্লাহ‌ ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে (উটের পিঠে) সওয়ার অবস্থায় ‘সূরা আল ফাত্হ’ তিলাওয়াত করতে দেখেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৬৫ | 4665 | ٤٦٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৪১৪. শিশুদের কুরআন শিক্ষাদান
৪৬৬৫। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … সাঈদ ইবনু যুবায়র (রহঃ) যে সকল সূরাকে তোমরা মুফাস্‌সাল বলো তা হচ্ছে মুহ্‌কাম। রাবী বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, যখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করেন, তখন আমার বয়স দশ বছর এবং আমি ঐ বয়সেই মুহ্‌কাম আয়াত সমূহ শিখে নিয়েছিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৬৬ | 4666 | ٤٦٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৪১৪. শিশুদের কুরআন শিক্ষাদান
৪৬৬৬। ইয়াকূব ইবনু ইব্‌রাহীম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মুহকাম সূরা সমূহ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবদ্দশায় মুখস্থ করেছিলাম। রাবী সাঈদ (রহঃ) বলেন, আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘মুহকাম’ অর্থ কি? তিনি বললেন, মুফাস্‌সাল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৬৭ | 4667 | ٤٦٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৪১৫. কুরআন মুখস্থ করে ভুলে যাওয়া এবং কেউ কি বলতে পারে, আমি অমুক অমুক আয়াত ভুলে গেছি? এবং আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে পাঠ করাবো, ফলে তুমি বিস্মৃত হবে না, অবশ্য আল্লাহ্‌ যা ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত……।
৪৬৬৭। রবী ইবনু ইয়াহ্‌ইয়া (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন এক ব্যাক্তিকে মসজিদে নববীতে কুরআন পাঠ করতে শুনলেন। তিনি বললেন, তার প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক, সে আমাকে অমুক সূরার অমুক আয়াত স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৬৮ | 4668 | ٤٦٦۸

পরিচ্ছদঃ ২৪১৫. কুরআন মুখস্থ করে ভুলে যাওয়া এবং কেউ কি বলতে পারে, আমি অমুক অমুক আয়াত ভুলে গেছি? এবং আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে পাঠ করাবো, ফলে তুমি বিস্মৃত হবে না, অবশ্য আল্লাহ্‌ যা ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত……।
৪৬৬৮। মুহাম্মদ ইবনু উবায়দ ইবনু মায়মূন (রহঃ) … হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণিত পূর্বের হাদীসের অতিরিক্ত রয়েছে, “যা ভুলে গেছি অমুক অমুক সূরা থেকে”। আলী এবং আবদা হিশাম থেকে তার সমর্থন ব্যক্ত করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৬৯ | 4669 | ٤٦٦۹

পরিচ্ছদঃ ২৪১৫. কুরআন মুখস্থ করে ভুলে যাওয়া এবং কেউ কি বলতে পারে, আমি অমুক অমুক আয়াত ভুলে গেছি? এবং আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে পাঠ করাবো, ফলে তুমি বিস্মৃত হবে না, অবশ্য আল্লাহ্‌ যা ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত……।
৪৬৬৯। আহ্‌মাদ ইবনু আবূ রজা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে রাতে কুরআন পাঠ করতে শুনে বললেন, আল্লাহ তাকে রহমত করুন। কেননা, সে আমাকে অমুক অমুক সূরার অমুক অমুক আয়াত স্মরন করিয়ে দিয়েছে, যা আমি ভুলতে বসেছিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৭০ | 4670 | ٤٦۷۰

পরিচ্ছদঃ ২৪১৫. কুরআন মুখস্থ করে ভুলে যাওয়া এবং কেউ কি বলতে পারে, আমি অমুক অমুক আয়াত ভুলে গেছি? এবং আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে পাঠ করাবো, ফলে তুমি বিস্মৃত হবে না, অবশ্য আল্লাহ্‌ যা ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত……।
৪৬৭০। আবূ নু’আয়ম (রহঃ) … আবদুল্লাহ‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন লোক এ কথা কেন বলে যে, আমি অমুক অমুক আয়াত ভুলে গেছি; বরং (আল্লাহর পক্ষ থেকে) তাকে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৭১ | 4671 | ٤٦۷۱

পরিচ্ছদঃ ২৪১৬. যারা সূরা বাকারা বা অমুক অমুক সূরা বলাতে দোষ মনে করেন না
৪৬৭১। উমর ইবনু হাফ্‌স (রহঃ) … আবূ মাসউদ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যদি কোন ব্যাক্তি সূরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত পাঠ করে, তবে এটাই তার জন্য যথেষ্ট।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৭২ | 4672 | ٤٦۷۲

পরিচ্ছদঃ ২৪১৬. যারা সূরা বাকারা বা অমুক অমুক সূরা বলাতে দোষ মনে করেন না
৪৬৭২। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … উমর ইব্‌ন খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হিশাম ইব্‌ন হাকীম ইব্‌ন হিযামকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবদ্দশায় ‘সূরা ফুরকান’ তিলাওয়াত করতে শুনলাম। আমি লক্ষ্য করলাম যে, সে বিভিন্ন কিরাআতে তা পাঠ করছে, যা আল্লাহর রাসূল আমাকে শিখাননি। যার ফলে তাকে সালাত (নামায/নামাজ)-এর মধ্যেই ধরতে উদ্যাত হলাম। অবশ্য আমি তার সালাত (নামায/নামাজ) শেষে সালাম ফিরানো পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। সালাত (নামায/নামাজ) শেষ হতেই তার গলায় রুমাল পেঁচিয়ে ধরলাম এবং তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, এই মাত্র তোমাকে যা পাঠ করতে শুনলাম, তা তোমাকে কে শিখিয়েছে? সে উত্তর করল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এরূপ শিখিয়েছেন। আমি বললাম, তুমি মিথ্যা বলছো। আল্লাহর কসম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ভিন্ন পদ্ধতিতে তিলাওয়াত করা শিখিয়েছেন, যা তোমাকে তিলাওয়াত করতে শুনেছি।

এরপর আমি তাকে টেনে নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত হলাম এবং বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি এই ব্যাক্তিকে ভিন্ন এক পদ্ধতিতে “সূরা ফুরকান” পাঠ করতে শুনেছি, যে পদ্ধতি আপনি আমাকে তিলাওয়াত করতে শিখাননি। অথচ আপনি আমাকে সূরা ফুরকান তিলাওয়াত শিখিয়েছেন।

এরপর তিনি বললেন, হে হিশাম! পাঠ করো! সুতরাং আমি যে পদ্ধতিতে পাঠ করতে শুনেছি, সে সেই পদ্ধতিতেই পাঠ করল। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এভাবে কুরআন নাযিল হয়েছে।

এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে উমর। তুমি পাঠ করো, সুতরাং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে যেভাবে শিখিয়েছিলেন, সেভাবে আমি পাঠ করলাম। এরপর তিনি বললেন, কুরআন এভাবেই নাযিল হয়েছে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বললেন, সাত কিরাআত বা পদ্ধতিতে পাঠ করার জন্য কুরআন নাযিল হয়েছে। সুতরাং এর মধ্যে যে পদ্ধতি তোমার জন্য সহজ, সে পদ্ধতিতে পড়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৭৩ | 4673 | ٤٦۷۳

পরিচ্ছদঃ ২৪১৬. যারা সূরা বাকারা বা অমুক অমুক সূরা বলাতে দোষ মনে করেন না
৪৬৭৩। বাশার ইবনু আদম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক কারীকে রাতে মসজিদে কুরআন শরীফ পাঠ করতে শুনলেন। এরপর তিনি বললেন, আল্লাহ তার প্রতি রহম করুন। সে আমাকে অমুক অমুক আয়াত স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, যা অমুক অমুক সূরা থেকে ভুলতে বসেছিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৭৪ | 4674 | ٤٦۷٤

পরিচ্ছদঃ ২৪১৭. সুস্পষ্ট ও ধীরে কুরআন তিলাওয়াত করা। এ সম্পর্কে আল্লাহর বাণীঃ কুরআন তিলাওয়াত কর ধীরে ধীরে সুস্পষ্টভাবে। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ আমি কুরআন নাযিল করেছি যাতে তুমি তা মানুষের নিকট পাঠ করতে পার ক্রমে ক্রমে। কবিতা পাঠের মতো দ্রুতগতিতে কুরআন পাঠ করা অপছন্দনীয়।
৪৬৭৪। আবূ নু’মান (রহঃ) … আবূ ওয়ায়িল (রহঃ) সূত্রে আবদুল্লাহ‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবূ ওয়ায়িল (রহঃ) বলেন, আমরা একদিন সকালে আবদুল্লাহ‌ (রাঃ) এর কাছে গেলাম। একজন লোক বলল, গতকাল সকালে আমি মুফাস্‌সাল সূরা পাঠ করেছি। এ কথা শুনে আবদুল্লাহ‌ (রাঃ) বললেন, এত তাড়াতাড়ি পাঠ করা যেন কবিতা পাঠ করার মতো; অথচ আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাঠ শুনেছি এবং তা আমার ভালভাবে স্মরণ আছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যে সমস্ত সূরা পাঠ করতে আমি শুনেছি, তার সংখ্যা মুফাস্‌সাল হতে আঠারটি এবং ‘আলিফ-লাম হামিম’ হতে দু’টি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৭৫ | 4675 | ٤٦۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৪১৭. সুস্পষ্ট ও ধীরে কুরআন তিলাওয়াত করা। এ সম্পর্কে আল্লাহর বাণীঃ কুরআন তিলাওয়াত কর ধীরে ধীরে সুস্পষ্টভাবে। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ আমি কুরআন নাযিল করেছি যাতে তুমি তা মানুষের নিকট পাঠ করতে পার ক্রমে ক্রমে। কবিতা পাঠের মতো দ্রুতগতিতে কুরআন পাঠ করা অপছন্দনীয়।
৪৬৭৫। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আল্লাহর বাণীঃ “হে নাবী! আপনার জিহ্বাকে তাড়াতাড়ি মুখস্ত করার জন্য নাড়াবেন না”। আল্লাহর এই কালাম সম্পর্কে তিনি বলেন, যখনই জিবরীল (আলাইহিস সালাম) ওহী নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসতেন, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুব তাড়াতাড়ি জিহবা এবং ঠোঁট নাড়াতেন এবং তার জন্য খুব কষ্টের ব্যাপার হত। আর এ অবস্থা সহজেই অন্য একজন অনুমান করতে পারত। সুতরাং এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তা’আলা এই আয়াত নাযলি করেন। “আমি কিয়ামত দিবসের কসম করছি, হে নাবী! তাড়াতাড়ি ওহী মুখস্থ করার জন্য আপনি আপনার জিহ্বা নাড়াবেন না। এ মুখস্থ করিয়ে দেয়া ও ফাঠ করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমারই। যখন আমি তা পাঠ করিতে থাকি, তখন আপনি সে পাঠকে মনোযোগ সহকারে শুনতে থাকুন। পরে এর অর্থ বুঝিয়ে দেয়াও আমার দায়িত্ব”। সুতরাং যখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) পাঠ করেন আপনি তার অনুসরণ করুন। এরপর থেকে যখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) বলে যেতেন তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা নীরবে শুনতেন। যখন তিনি চলে যেতেন, আল্লাহর ওয়াদা অনুযায়ী তিনি তা পাঠ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৭৬ | 4676 | ٤٦۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৪১৮. মদ অক্ষরকে দীর্ঘ করে পড়া
৪৬৭৬। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … কাতাদা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কিরাআত পাঠ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দীর্ঘায়িত করে পাঠ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৭৭ | 4677 | ٤٦۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৪১৮. মদ অক্ষরকে দীর্ঘ করে পড়া
৪৬৭৭। আমর ইবনু আসিম (রহঃ) … কাতাদা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনাস (রাঃ) কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ‘কিরাআত’ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ‘কিরাআত’ কেমন ছিল? উত্তর তিনি বললেন, কোন কোন ক্ষেত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দীর্ঘ করতেন। এরপর তিনি “বিস্‌মিল্লাহির রাহমানির রাহীম” তিলাওয়াত করে শোনালেন এবং তিনি বললেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘বিসমিল্লাহ্’, ‘আর রাহমান’, ‘আর রাহীম’ পড়ার সময় মদ্ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৭৮ | 4678 | ٤٦۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৪১৯. আত্‌তারজী
৪৬৭৮। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) … আবদুল্লাহ‌ ইবনু মুগাফ্‌ফাল (রাঃ) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উষ্ট্রির পিঠে অথবা উটের পিঠে আরোহণ করা অবস্থায় যখন উষ্ট্রটি চলছিল, তখন আমি তিলাওয়াত করতে দেখেছি। তিনি “সূরা ফাত্হ” এবং “সূরা ফাত্হ’র অংশ বিশেষ অত্যন্ত নরম এবং মধুর ছন্দোময় সুরে পাঠ করছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৭৯ | 4679 | ٤٦۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৪২০. সুললিত কন্ঠে কুরআন তিলাওয়াত করা
৪৬৭৯। মুহাম্মদ ইবনু খালাফ (রহঃ) … আবূ মুসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আবূ মূসা! তোমাকে দাঊদ (আলাইহিস সালাম) এর সুমধুর কন্ঠ দান করা হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৮০ | 4680 | ٤٦۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৪২১. যে ব্যক্তি অন্যের নিকট থেকে কুরআন পাঠ শুনতে ভালবাসে
৪৬৮০। উমর ইবনু হাফ্‌স ইবনু গিয়াস (রহঃ) … আবদুল্লাহ‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, “আমার সামনে কুরআন পাঠ কর”। আবদুল্লাহ বললেন, আমি আপনার সামনে কুরআন পাঠ করব; অথচ আপনার উপর কুরআন নাযিল হয়েছে। তিনি বললেন, আমি অন্যের নিকট থেকে শুনতে ভালবাসি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৮১ | 4681 | ٤٦۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৪২২. তিলাওয়াতকারীর তিলাওয়াত শোনার পর শ্রোতার মন্তব্য “তোমার জন্য এটাই যথেষ্ট”
৪৬৮১। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, তুমি কুরআন পাঠ কর। আমি আরয করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আপনার সামনে কুরআন পাঠ করব? অথচ তা তো আপনার ওপরই নাযিল হয়েছে। তিনি বললেন, হ্যাঁ। এরপর আমি “সূরা নিসা” পাঠ করলাম। যখন আমি এই আয়াত পর্যন্ত আসলাম “চিন্তা করো আমি যখন প্রত্যেক উম্মতের মধ্যে থেকে একজন করে স্বাক্ষী উপস্থিত করব এবং সকলের ওপরে তোমাকে স্বাক্ষী হিসাবে হাযির করব তখন তারা কি করবে”। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আপাতত এটুকুই যথেষ্ট। আমি তাঁর চেহারা মুবারকের দিকে তাকালাম, দেখলাম, তাঁর চক্ষুদ্বয় থেকে অশ্রু ঝরছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৮২ | 4682 | ٤٦۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৪২৩. কতটুকু সময় কুরআর পাঠ করা যায়? এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলার কালামঃ “যতটা কুরআন তুমি সহজে পাঠ করতে পার, ততটাই পড়”
৪৬৮২। আলী (রহঃ) … সুফিয়ান ইবনু উয়ায়না (রহঃ) বলেন, আমাকে ইবনু সুবরুমা (রহঃ) বললেন, আমি দেখতে চাইলাম, সালাতে কি পরিমাণ আয়াত পাঠ করা যথেষ্ট এবং আমি তিন আয়াত বিশিষ্ট সূরার চেয়ে ছোট কোন সূরা পাইনি। সুতরাং আমি বললাম, কারো জন্য তিন আয়াতের কম সালাত (নামায/নামাজ) পড়া উচিত নয়। আবূ মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সাক্ষাত করলাম, তখন তিনি বায়তুল্লাহ্ তাওয়াফ করছিলেন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদি কোন ব্যাক্তি সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত রাতে পাঠ করে, তাহলে তা তার জন্য যথেষ্ট।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৮৩ | 4683 | ٤٦۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৪২৩. কতটুকু সময় কুরআর পাঠ করা যায়? এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলার কালামঃ “যতটা কুরআন তুমি সহজে পাঠ করতে পার, ততটাই পড়”
৪৬৮৩। মূসা … আবদুল্লাহ‌ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার পিতা আমাকে সম্ভ্রান্ত বংশীয়া মহিলার সাথে শাদী দেন এবং প্রায়ই তিনি আমার সম্পর্কে আমার স্ত্রীর কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করতেন। আমার স্ত্রী বলত, সে কতইনা ভাল মানুষ যে, সে কখনও আমার বিছানায় আসেনি এবং শাদীর পর থেকে আমার সম্পর্কে খোঁজ খবরও নেয়নি। এ অবস্থা যখন দীর্ঘকাল পর্যন্ত চলতে থাকল তখন আমরা পিতা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমার সম্পর্কে অবগত করালেন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার পিতাকে বললেন, তাকে আমার সাথে সাক্ষাতের জন্য ব্যবস্থা করুন। এরপর আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সাক্ষাত করলে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি রকম রোযা পালন কর? আমি উত্তর দিলাম, প্রতিদিন রোযা পালন করি। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, এ অবস্থায় পূর্ণ কুরআন শরীফ খতম করতে তোমার কত সময় লাগে? আমি উত্তর দিলাম, প্রত্যেক রাতেই এক খতম করি।

তিনি বললেন, প্রত্যেক মাসে তিনদিন রোযা পালন করবে এবং কুরআন এক মাসে এক খতম দেবে”। আমি বললাম, আমি এর চেয়ে বেশী করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে প্রতি সপ্তাহে তিনদিন রোযা পালন করবে। আমি বললাম, আমি এর চেয়ে বেশী করার শক্তি রাখি। তিনি বললেন, দু’দিন পর এক দিন রোযা রাখ। আমি বললাম, আমি এর চেয়ে বেশী সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে সব চেয়ে উত্তম পদ্ধতির রোযা পালন কর। তা হল, দাঊদ (আলাইহিস সালাম) এর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) এর পদ্ধতি। তিনি এক দিন অন্তর একদিন রোযা পালন করতেন এবং প্রতি সাত দিনে একবার আল্লাহর কিতাব খতম করতেন। আহা! আমি যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দেয়া সুবিধা গ্রহণ করতাম! যেহেতু এখন আমি একজন দুর্বল বৃদ্ধ ব্যাক্তিতে পরিণত হয়েছি।

আবূল্লাহ্ (রাঃ) প্রত্যেক দিন তার পরিবারের একজন সদস্যের সামনে কুরআনের সপ্তমাংশ পাঠ করে শোনাতেন। দিবা ভাগে পাঠ করে দেখতেন, তার স্মরণশক্তি সঠিক আছে কিনা? যা তিনি রাতে পাঠ করবেন তা যেন সহজ হয় এবং যখনই তিনি শারীরিক শক্তি সঞ্চয়ের ইচ্ছা করতেন তখন কয়েক দিন রোযা রাখা বন্ধ রাখতেন এবং পরবর্তীকালে ঐ ক’দিনের হিসাব করে রোযা পালন করতেন। কেননা, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবদ্দশায় যে নিয়ম পালন করতেন পরে সে নিয়ম বর্জন করাটা অপছন্দ মনে করতেন। আবূ আবদুল্লাহ বলেন, কেউ তিন দিনে, কেউ পাঁচ দিনে এবং অধিকাংশ লোক সাত দিনে কুরআন খতম করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৮৪ | 4684 | ٤٦۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৪২৩. কতটুকু সময় কুরআর পাঠ করা যায়? এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলার কালামঃ “যতটা কুরআন তুমি সহজে পাঠ করতে পার, ততটাই পড়”
৪৬৮৪। সা’দ ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, সমগ্র কুরান খতম করতে তোমার কত সময় লাগে?

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৮৫ | 4685 | ٤٦۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৪২৩. কতটুকু সময় কুরআর পাঠ করা যায়? এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলার কালামঃ “যতটা কুরআন তুমি সহজে পাঠ করতে পার, ততটাই পড়”
৪৬৮৫। ইসহাক … আবদুল্লাহ‌ ইবনু আম্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, “এক মাসে কুরআন খতম কর”। আমি বললাম, আমি এর চেয়ে বেশী করার শক্তি রাখি। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে প্রতি সাত দিনে একবার খতম করো এবং এর চেয়ে কম সময়ের মধ্যে খতম করো না।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৮৬ | 4686 | ٤٦۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৪২৪. কুরআন পাঠ করা অবস্থায় ক্রন্দন করা
৪৬৮৬। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, তুমি আমার সামনে কুরআন পাঠ করো। আমি উত্তরে বললাম, আমি আপনার সামনে কুরআন পাঠ করবো; অথচ আপনারই ওপর কুরআন নাযিল হয়েছে। তিনি বললেন, আমি অন্যের কাছ থেকে কুরআন পাঠ শোনা পছন্দ করি। আমি যখন সূরা নিসা পাঠ করলাম, এমনকি যখন আমি এ আয়াত পর্যন্ত পৌঁছলামঃ “তারপর চিন্তা করো, আমি প্রত্যেক উম্মাতের মধ্যে একজন করে সাক্ষী হাযির করব এবং এ সকলের ওপরে তোমাকে সাক্ষী হিসাবে হাযির করব’। তখন তারা কি করবে”। তখন তিনি আমাকে বললেন, “থাম”! আমি লক্ষ্য করলাম, তাঁর (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর দু’চোখ মুবারক থেকে অশ্রু ঝরছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৮৭ | 4687 | ٤٦۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৪২৪. কুরআন পাঠ করা অবস্থায় ক্রন্দন করা
৪৬৮৭। কায়স ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বর্ণনা করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, আমার সামনে কুরআন পাঠ করো। আমি বললাম, আমি আপনার নিকট কুরআন পাঠ করব; অথচ আপনার ওপর কুরআন নাযিল হয়েছেন। তিনি বললেন, আমি অন্যের তিলাওয়াত শুনতে পছন্দ করি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৮৮ | 4688 | ٤٦۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৪২৫. যে ব্যক্তি দেখানো বা দুনিয়ার লোভে অথবা গর্বের জন্য কুরআন পাঠ করে
৪৬৮৮। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … আলী (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, শেষ যামানায় এমন একদল মানুষের আবির্ভাব ঘটবে, যারা হবে অল্পবয়স্ক এবং যাদের বুদ্ধি হবে স্বল্প। ভাল ভাল কথা বলবে; কিন্তু তারা ইসলাম থেকে এমন ভাবে বেরিয়ে যাবে যেমন তীর ধনুক থেকে বেরিয়ে যায়। তাদের ঈমান গলদেশের নীচে পৌঁছবে না। সুতরাং তোমরা তাদের যেখানে পাও, হত্যা কর। এদের হত্যাকারীর জন্য কিয়ামতে পুরস্কার রয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৮৯ | 4689 | ٤٦۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৪২৫. যে ব্যক্তি দেখানো বা দুনিয়ার লোভে অথবা গর্বের জন্য কুরআন পাঠ করে
৪৬৮৯। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ ভবিষ্যতে এমন সব লোকের আগমন ঘটবে, যাদের সালাত (নামায/নামাজ)-এর তুলনায় তোমাদের সালাত (নামায/নামাজ) কে, তাদের রোযার তুলনায় তোমাদের রোযাকে এবং তাদের আমলের তুলনায় তোমাদের আমলকে তুচ্ছ মনে করবে। তারা কুরআন পাঠ করবে; কিন্তু তা তাদের কন্ঠনালীর নিচে প্রবেশ করবে না (অর্থাৎ অন্তরে প্রবেশ করবে না এবং তা লোক দেখানো হবে)। এরা দ্বীন (ইসলাম) থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে যেমনভাবে নিক্ষিপ্ত তীর ধনুক থেকে বেরিয়ে যায়। আর অন্য শিকারী সেই তীরের অগ্রভাগ পরীক্ষা করে দেখতে পায়, তাতে কোন চিহ্ন নেই। সে তীরের ফলার পাশ্বদেশদ্বয়েও নজর করে অথচ সেখানে কিছু দেখতে পায় না। অবশেষে ঐ ব্যাক্তি কোন পাওয়ার জন্য তীরের নিম্নভাগে সন্দেহ পোষণ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৯০ | 4690 | ٤٦۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৪২৪. কুরআন পাঠ করা অবস্থায় ক্রন্দন করা
৪৬৯০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ঐ মু’মিন যে কুরআন পাঠ করে এবং সে অনুযায়ী আমল করে, তাঁর ঊদাহরণ ঐ লেবুর মত যা খেতে সুস্বাদু এবং গন্ধে মন মাতানো। আর ঐ মু’মিন যে কুরআন পাঠ করে না; কিন্তু এর অনুসারে আমল করে। তার ঊদাহরণ হচ্ছে ঐ খেজুরের মত যা খেতে সুস্বাদু কিন্তু গন্ধ নেই। আর সকল মুনাফিক যারা কুরআন পাঠ করে; তার উদাহরণ হচ্ছে, ঐ রায়হানের ন্যায়, যার মন মাতানো খুশবু গন্ধ আছে, অথচ খেতে একেবারে বিস্বাদ (তিক্ত)। আর ঐ মুনাফিক কুরআন পাঠ করে না, তার উদাহরণ হচ্ছে ঐ হাঞ্জাল (মাকাল) ফলের ন্যায়, যা খেতেও বিস্বাদ এবং তা দুর্গন্ধযুক্ত।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৯১ | 4691 | ٤٦۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৪২৬. যতক্ষন মন চায় কুরআন তিলাওয়াত করা
৪৬৯১। আবূ নু’মান (রহঃ) … জুনদুব ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যতক্ষণ মন চায় তিলওয়াত কর এবং মন যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন ছেড়ে দাও।

হাদিস নম্বরঃ ৪৬৯২ | 4692 | ٤٦۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৪২৬. যতক্ষন মন চায় কুরআন তিলাওয়াত করা
৪৬৯২। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, তিনি এক ব্যাক্তিকে আয়াত পাঠ করতে শুনলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যেভাবে পাঠ করতে শুনতেন, তার থেকে ভিন্ন পদ্ধতিতে সে পাঠ করছিল। তখন ঐ ব্যাক্তিকে তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিয়ে গেলেন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা উভয়ই সঠিকভাবে পাঠ করেছ। সুতরাং এভাবে কুরআন পাঠ করতে থাক। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বললেন, তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিসমূহ ধ্বংস হয়ে গেছে তাদের পরস্পরের বিভেদের কারণে।