হাদীস নং ৪৬২১ – কুরআন সংকলন।
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ……..যায়েদ ইবনে সাবিত রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইয়ামামার যুদ্ধে বহু লোক শহীদ হবার পর আবু বকর সিদ্দীক রা. আমাকে ডেকে পাঠালেন। এ সময় উমর রা.-ও তাঁর কাছে উপস্থিত ছিলেন। উমর রা. আমার কাছে এসে বলেছেন, ইয়ামামার যুদ্ধে শাহাদত প্রাপ্তদের মধ্যে ক্বারীদের সংখ্যা অনেক। আমি আশংকা করছি, এমনিভাবে যদি ক্বারীগণ শহীদ হয়ে যান, তাহলে কুরআন শরীফের বহু অংশ হারিয়ে যাবে। অতএব আমি মনে করি যে, আপনি কুরআন সংকলনের নির্দেশ দিন। উত্তরে আমি উমর রা-কে বললাম, যে কাজ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেন নি, সে কাজ তুমি কিভাবে করবে? উমর রা. এর জবাবে বললেন, আল্লাহর কসম, এটা একটা উত্তম কাজ। উমর রা. এ কথাটি আমার কাছে বার বার বলতে থাকলে অবশেষে আল্লাহ তায়ালা এ কাজের জন্য আমার বক্ষকে প্রশস্ত করে দিলেন এবং এ বিষয়ে উমর যা ভাল মনে করলেন আমিও তাই করলাম। যায়েদ রা. বলেন, আবু বকর সিদ্দীক রা. আমাকে বললেন, তুমি একজন বুদ্ধিমান যুবক। তোমার ব্যাপারে আমার কোন সংশয় নেই । অধিকন্তু তুমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওহীর লেখক ছিলে। সুতরাং তুমি কুরআন শরীফের অংশগুলোকে তালাশ করে একত্রিত কর। আল্লাহর শপথ ! তারা যদি আমাকে একটি পাহাড় এক স্থান হতে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিত, তাহলেও তা আমার কাছে কুরআন সংকলনের নির্দেশের চাইতে কঠিন বলে মনে হত না। আমি বললাম, যে কাজ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেননি, আপনারা সে কাজ কিভাবে করবেন? তিনি বললেন, আল্লাহর কসম ! এটা একটা কল্যাণকার কাজ। এ কথাটি আবু বকর সিদ্দীক রা. আমার কাছে বার বার বলতে থাকেন, অবশেষে আল্লাহ পাক আমার বক্ষকে প্রশস্ত ও প্রসন্ন করে দিলেন সে কাজের জন্য, যে কাজের জন্য তিনি আবু বকর এবং উমর রা.-এর প্রশস্ত ও প্রসন্ন করে দিয়েছিলেন। এরপর আমি কুরআন অনুসন্ধান কাজে আত্মনিয়োগ করলাম এবং খেজুর পাতা, প্রস্তরখণ্ড ও মানুষের বক্ষ থেকে আমি তা সংগ্রহ করতে থাকলাম। এমনকি আমি সূরা তওবার শেষাংশ আবু খুযায়মা আনসারী রা. থেকে সংগ্রহ করলাম। এ অংশটুকু তিনি ব্যতীত আর কারো কাছে আমি পাইন। আয়তগুলো হচ্ছে এই : তোমাদের মধ্য হতে তোমাদের কাছ এক রাসূল এসেছে। তোমাদের যা বিপন্ন করে তা তাঁর জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু। এরপর তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে তুমি বল, আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই। আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং তিনি মহা আরশের অধিপতি। (১২৮-১২৯) তারপর সংকলিত সহীফাসমূহ মৃত্যু পর্যন্ত আবু বকর রা.-এর কাছে সংরক্ষিত ছিল। তাঁর মৃত্যুর পর তা উপর রা.-এর কাছে সংরক্ষিত ছিল , যতদিন তিনি জীবিত ছিলেন। এরপর তা উমর –তনয়া হাফসা রা.-এর কাছে সংরক্ষিত ছিল।