বুখারি হাদিস নং ৪৩০১-৪৩৩০

হাদিস নম্বরঃ ৪৩০১ | 4301 | ٤۳۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৪. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তবে মুশরীকদের মধ্যে যাদের সাথে তোমরা চুক্তিতে আবদ্ধ রয়েছ (৯ঃ৪)
৪৩০১। ইসহাক (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হাজ্জের (হজ্জ) পূর্বের বছর আবূ বকর (রাঃ) কে যে হাজ্জের (হজ্জ) আমীর বানিয়ে পাঠিয়েছিলেন, সেই হাজ্জে (হজ্জ) তিনি যেন লোকদের মধ্যে ঘোষণা দেন, এ বছরের পর কোন মুশরিক হাজ্জ (হজ্জ) করতে আসতে পারবে না এবং উলঙ্গ অবস্থায় কেউ আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করতে পারবে না। হুমায়দ ইবনু আবদুর রহমান বলেন [আবূ হুরায়রা (রাঃ)] হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, হাজ্জে (হজ্জ) আকবেরর দিন হল কুরবানীর দিন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩০২ | 4302 | ٤۳۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৫. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তবে কাফের নেতৃবৃন্দের সাথে যুদ্ধ করবে। এরা এমন লোক যাদের প্রতিশ্রুতিই নয় (৯ঃ ১২)
৪৩০২। মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) … যায়িদ ইবনু ওয়াহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা হুযায়ফা (রাঃ) এর কাছে ছিলাম, তখন তিনি বলেন, এ আয়াতের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিদের মধ্যে শুধু তিনজন মুসলমান ও চারজন মুনাফিক বেঁচে আছে। ইত্যবসরে একজর বেদুঈন বলল, আপনারা সকলে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী। আমাদের এমন লোকদের অবস্থা সম্পর্কে খবর দিন যারা আমাদের ঘরে সিদ কেটে ঘরের অতি মূল্যবান জিনিসগুলো চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে, কেননা তাদের অবস্থা সম্পর্কে আমরা অবগত নই। হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, তারা সবাই ফাসীক ও অন্যায়কারী। হ্যাঁ, তাদের মধ্যে হতে চার ব্যাক্তি এখনও জীবতি-তাদের মধ্যে একজন এত বৃদ্ধ হয়ে পড়েছে যে, শীতল পানি পান করার পর তার শীতলতাটুকুর অনুভূতি সে উপলব্ধি করতে পারে না।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩০৩ | 4303 | ٤۳۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৬. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যারা স্বর্ণ, রৌপ্য পুঞ্জীভূত করে রাখে এবং আল্লাহর পথে তা ব্যয় করে বা, তাদেরকে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তির সংবাদ দিন (৯ঃ ৩৪)
৪৩০৩। হাকাম ইবনু নাফি (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, তোমাদের মধ্যে অনেকের পুঞ্জিভূত সম্পদ (যার যাকাত আদায় করা হয় না) কিয়ামতের দিন বিষাক্ত সর্পে পরিণত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩০৪ | 4304 | ٤۳۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৬. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যারা স্বর্ণ, রৌপ্য পুঞ্জীভূত করে রাখে এবং আল্লাহর পথে তা ব্যয় করে বা, তাদেরকে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তির সংবাদ দিন (৯ঃ ৩৪)
৪৩০৪। কুতায়বা ইবনু সা‘ঈদ (রহঃ) … যায়িদ ইবনু ওয়াহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একদা রাবাযা নামক স্থানে আবূ যার (রাঃ) এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমি (তাকে) জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কিসের জন্য এ স্থানে উপস্থিত হয়েছেন? তিনি বললেন, আমি সিরিয়া ছিলাম, তখন আমি [মুআবিয় (রাঃ) এর সামনে] এ আয়াত পাঠ করে শোনালাম। ‏وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلاَ يُنْفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ “যারা স্বর্ণ, রোপ্য পঞ্জিভূত করে রাখে এবং আল্লাহর পথে তা ব্যয় করে না, তাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির খবর দিন।” (৯: ৩৪)

মু‘আবিয়া (রাঃ) এ আয়াত শুনে বললেন, এ আয়াত আমাদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়নি। বরং আহলে কিতাবদের (ইহুদী ও নাসারা) সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। আমি (জবাবে) বললাম, এ আয়াত আমাদের ও তাদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। (এ তর্ক বিতর্কের কারণে সব কিছু বর্জন করে আমি এখানে চলে এসেছি। )

হাদিস নম্বরঃ ৪৩০৫ | 4305 | ٤۳۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৮. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ নিশ্চয় আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টির দিন হতেই আল্লাহর বিধানে আল্লাহর নিকট মাস গননায়, মাস বারোটি। তন্মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান (৯ঃ ৩৬) القيم শব্দটি قائم (প্রতিষ্ঠিত) অর্থে ব্যবহৃত হয়।
২৩৯৭. অনুচ্ছেদ: আল্লাহর বাণীঃ সে দিন জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং তা দিয়ে দাগিয়ে দেয়া হবে তাদের কপাল, তাদের পাঁজর এবং তাদের পৃষ্ঠদেশ, বলা হবেঃ এগুলো হল তা, যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা করে রেখেছিলে। সুতরাং যা তোমরা জমা করে রাখতে তার সাদ গ্রহণ কর। (৯: ৩৫)

আহমাদ ইবন শু’আয়ব ইবন সা’ঈদ (রহঃ) … খালিদ ইবনু আসলাম (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘উমার (রাঃ)-এর সঙ্গে বের হলাম। তখন তিনি বললেন, এ আয়াতটি যাকাতের বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বের। এরপর যাকাতের বিধান অবতীর্ণ হলে আল্লাহ তা সম্পদের পরিশুদ্ধকারী রূপে নির্ধারণ করেন।

৪৩০৫ আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওয়াহাব (রহঃ) আবূ বকর (রাঃ) কর্তৃক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আল্লাহর যেদিন আসমান যমীন সৃষ্টি করে সেদিন যেভাবে কাল (যামানা) ছিল তা আজও অনুরূপভাবে বিদ্যমান। বারমাসে এক বছর, তন্মধ্যে চার মাস পবিত্র। যার তিন মাস ধারাবাহিক যথা যিলকাদ, যিলহাজ্জ ও মুহাররম আর মুযার গোত্রের রজব যা জামিদিউসসানী ও সাবান মাসদ্বয়ের মধ্যবর্তী।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩০৬ | 4306 | ٤۳۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৯. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যখন তারা উভয়ে গুহার মধ্যে ছিলেন এবং তিনি ছিলেন দু’জনের একজন (৯ঃ ৪০) معنا অর্থ আল্লাহ আমাদের সাহায্যকারী, فعيلة السكينة এর সম ওযনে سكون থেকে, অর্থ প্রশান্তি
৪৩০৬। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ বকর (রাঃ) আমার কাছে বলেছেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে (সওর) গুহায় ছিলাম। তখন আমি মুশরিকদের পদচারণা দেখতে পেয়ে [নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে] বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি তাদের (মুশরিকদের) কেউ পা উঠায় তাহলে আমাদের দেখে ফেলবে। তখন তিনি বললেন, এমন দু’জন সম্পর্কে তোমার কি ধারণা, যাদের তৃতীয় জন হলেন আল্লাহ।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩০৭ | 4307 | ٤۳۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৯. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যখন তারা উভয়ে গুহার মধ্যে ছিলেন এবং তিনি ছিলেন দু’জনের একজন (৯ঃ ৪০) معنا অর্থ আল্লাহ আমাদের সাহায্যকারী, فعيلة السكينة এর সম ওযনে سكون থেকে, অর্থ প্রশান্তি
৪৩০৭। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন তাঁর ও ইবনু যুবায়র (রাঃ) এর মধ্যে (বায়আতের প্রেক্ষিতে) মতভেদ ঘটল, তখন আমি বললাম, তার পিতা যুবায়ের, তার মাতা আসমা (রাঃ) ও তার খালা আয়েশা (রাঃ), তার নানা আবূ বকর (রাঃ) ও তার নানী সুফিয়া (রাঃ)। আমি সুফিয়ানকে বললাম, এর সনদ বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, حَدَّثَنَا এবং ইবনু জুরায়জ (রহঃ) বলার আগেই অন্য এক ব্যাক্তি তাকে অন্যদিকে আকৃষ্ট করল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩০৮ | 4308 | ٤۳۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৯. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যখন তারা উভয়ে গুহার মধ্যে ছিলেন এবং তিনি ছিলেন দু’জনের একজন (৯ঃ ৪০) معنا অর্থ আল্লাহ আমাদের সাহায্যকারী, فعيلة السكينة এর সম ওযনে سكون থেকে, অর্থ প্রশান্তি
৪৩০৮। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু আবূ মূলায়কা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন ইবনু আব্বাস (রাঃ) ও ইবনু যুবায়র (রাঃ) এর মধ্যে বায়আত নিয়ে মতভেদ সৃষ্টি হল, তখন আমি ইবনু আব্বাসের কাছে গিয়ে বললাম, আপনি কি আল্লাহ যা হারাম করেছেন, তা হালাল করে ইবনু যুবায়রের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চান? তখন তিনি বললেন, আল্লাহর কাছে পানাহ চাচ্ছি, এ কাজ তো ইবনু যুবায়র ও বনী উমাইয়ার জন্যই আল্লাহ লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। আল্লাহর কসম! কখনো আমি তা হালাল মনে করব না, (আবূ মূলায়কা বলেন) তখন লোকজন ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে বলল, আপনি ইবনু যুবায়রের পক্ষে বায়আত গ্রহণ করুন। তখন ইবনু আব্বাস বললেন, তাতে ক্ষতির কি আছে? তিনি এটার জন্য যোগ্যতম ব্যাক্তি। তাঁর পিতা যুবায়র তো নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহায্যকারী ছিলেন, তার নানা আবূ বকর (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সওর গুহার সহচর ছিলেন। তার মা আসমা, যার উপাধি ছিল খাতুন নেতাক। তার খালা আয়িশা (রাঃ) উম্মূল মু’মিনীন ছিলেন, তার ফুফু খাদিজা (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী ছিলেন, আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ফুফু সফিয়া ছিলেন তার দাদী। এ ছাড়া তিনি (ইবনু যুবায়রের) তো ইসলামী জগতে নিষ্কলুষ ব্যাক্তি ও কুরআনের ক্বারী। আল্লাহর কসম! যদি তারা (বনী উমাইয়া) আমার সাথে সম্পর্ক রাখে তবে তারা আমার নিকটত্মীায়-স্বজনের সাথে সম্পর্ক রাখল। আর যদি তারা আমাদের রক্ষণাবেক্ষণ করে তবে তারা সমকক্ষ মর্যাদাসম্পন্ন ব্যাক্তিরই রক্ষণাবেক্ষণ করল। ইবনু যুবায়র, বনী আসা’দ, বনী তুআইত, বনী উসামা-এসব গোত্রকে আমার চেয়ে নিকটতম করে নিয়েছেন। নিশ্চই আবিল আস-এর পুত্র অর্থাৎ আবদুল মালিক ইবনু মারওয়ান অহংকারী চালচলন আরম্ভ করেছে। নিশ্চই তিনি অর্থাৎ আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) তার লেজ গুটিয়ে নিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩০৯ | 4309 | ٤۳۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৯. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যখন তারা উভয়ে গুহার মধ্যে ছিলেন এবং তিনি ছিলেন দু’জনের একজন (৯ঃ ৪০) معنا অর্থ আল্লাহ আমাদের সাহায্যকারী, فعيلة السكينة এর সম ওযনে سكون থেকে, অর্থ প্রশান্তি
৪৩০৯। মুহাম্মদ ইবনু ‘উবায়দ ইবনু মায়মূনা (রহঃ) … ইবনু আবূ মূলায়কা (রহঃ) বলেন, আমরা ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর ঘরে প্রবেশ করলাম। তিনি বললেন, তোমরা কি ইবনু যুবায়রের বিষয়ে বিষ্মিত হবে না? তিনি তো আর এ কাজে (খিলাফতের বিষয়) স্থিতিশীল। আমি বললাম, আমি অবশ্য মনে মনে তার ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা করি, কিন্তু আবূ বকর (রাঃ) কিংবা উমর (রাঃ) এর ব্যাপারে তটুকু চিন্তা-ভাবনা করিনি। সব দিক থেকে তার চেয়ে তারা উভয়ে উত্তম ছিলেন। আমি বললাম, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ফুফু সফিয়া (রাঃ) এর সন্তান, যুবায়রের ছেলে, আবূ বকর (রাঃ) এর নাতি। খাদিজা (রাঃ) এর ভাতিজা, আয়িশা (রাঃ) এর বোন আসমার ছেলে। কিন্তু তিনি (নিজেকে বড় মনে করে) আমার থেকে দূরে সরে থাকেন এবং তিনি আমার সহযোগিতা কামনা করেন না। আমি বললাম, আমি নিজে থেকে এজন্য তা প্রকাশ করি না যে, হয়ত তিনি তা প্রত্যাখান করবেন। এবং আমি মনে করি না যে, তিনি এটা ভাল করেছেন। অগত্যা বণী উমাইয়ার নেতৃত্ব ও শাসন আমার কাছে অন্যদের থেকে উত্তম।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩১০ | 4310 | ٤۳۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৪০০. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ এবং যাদের চিত্ত আকর্ষণ করা হয় তাদের জন্য (৯ঃ ৬০) মুজাহিদ বলেছেন, তাদেরকে দানের মাধ্যমে আকৃষ্ট করতেন।
৪৩১০। মুহাম্মদ ইবনু কাছীর (রহঃ) … আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কিছু জিনিস প্রেরণ করা হল। এরপর তিনি সেগুলো চার জনের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। আর বললেন, তাদেরকে (এর দ্বারা) আকৃষ্ট করছি। তখন এক ব্যাক্তি বলল, আপনি সঠিকভাবে দান করেননি। এতদশ্রবনে তিনি বললেন, এ ব্যাক্তির বংশ থেকে এমন সব লোক জন্ম নেবে যারা দ্বীন থেকে বের হয়ে যাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩১১ | 4311 | ٤۳۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৪০১. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ মু’মিনদের মধ্যে যারা স্বতঃস্ফুর্তভাবে সাদকা প্রদান করে এবং যারা নিজ শ্রম ব্যতীরেকে কিছুই পায় না, তাদেরকে যারা দোষারূপ করে ও বিদ্রুপ করে আল্লাহ তাদের বিদ্রুপ করেন; তাদের জন্য রয়েছে অতি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (৯ঃ ৭৯) يلمزون يعيبون و جهدهم وجهدهم طاقتهم – তাদের সাধ্যমত। অর্থ তাদের পরিশ্রমে ত্রুটি ধরে, جهد অর্থ শক্তি (৯ঃ ৭৯)
৪৩১১। বিশর ইবনু আবূ খালিদ আবূ মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন আমাদের সাদকা প্রদানের নির্দেশ দেয়া হল, তখন আমরা পরিশ্রমের বিনিময়ে বোঝা বহন করতাম। একদিন আবূ ‘আকীল (রাঃ) অর্ধ সা’ খেজুর (দান করার উদ্দেশ্যে) নিয়ে আসলেন এবং অন্য এক ব্যাক্তি (আবদুর রহমান ইবনু আউফ তার চেয়ে অধিক মালামাল (একই উদ্দেশ্যে) নিয়ে উপস্থিত হলেন। (এগুলো দেখে) মুনাফিকরা সমালোচনা করতে লাগল, আল্লাহ এ ব্যাক্তির সাদকার মুখাপেক্ষী নন। আর দ্বিতীয় ব্যাক্তি [আবদুর রহমান ইবনু আউফ (রাঃ)] শুধু মানূষ দেখানোর জন্য অধিক মালামাল দান করেছে। এ সময় এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় – “মু’মিনদের মধ্যে যারা স্বতঃস্ফুর্তভাবে সাদকা প্রদান করে এবং যারা নিজ শ্রম ব্যতীরেকে কিছুই পায় না, তাদেরকে যারা দোষারূপ করে ও বিদ্রুপ করে আল্লাহ তাদের বিদ্রুপ করেন; তাদের জন্য রয়েছে অতি মর্মন্তুদ শাস্তি।” (৯: ৭৯)

হাদিস নম্বরঃ ৪৩১২ | 4312 | ٤۳۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৪০১. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ মু’মিনদের মধ্যে যারা স্বতঃস্ফুর্তভাবে সাদকা প্রদান করে এবং যারা নিজ শ্রম ব্যতীরেকে কিছুই পায় না, তাদেরকে যারা দোষারূপ করে ও বিদ্রুপ করে আল্লাহ তাদের বিদ্রুপ করেন; তাদের জন্য রয়েছে অতি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (৯ঃ ৭৯) يلمزون يعيبون و جهدهم وجهدهم طاقتهم – তাদের সাধ্যমত। অর্থ তাদের পরিশ্রমে ত্রুটি ধরে, جهد অর্থ শক্তি (৯ঃ ৭৯)
৪৩১২। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ মাসঊদ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাদকা করার আদেশ প্রদান করলে আমাদের মধ্য হতে কেউ কেউ অত্যন্ত পরিশ্রম করে, (গম অথবা খেজুর ইত্যাদি) এক মুদ্দ আনতে পারত কিন্তু এখন আমাদের মধ্যে কারো কারো এক লাখ পরিমাণ (দিরহাম) রয়েছে। আবূ মাসঊদ (রাঃ) যেন (এ কথা বলে) নিজের দিকে ইঙ্গিত করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩১৩ | 4313 | ٤۳۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৪০২. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ (হে রাসুল) আপনি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন অথবা তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা না করুন, একই কথা, আপনি তাদের জন্য সত্তর বার ক্ষমা প্রার্থনা করলেও আল্লাহ তাদের কখনই ক্ষমা করবেন না (এর কারন, তারা আল্লাহ ও তার রাসুলকে অস্বীকার করেছে। আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না) (৯ঃ ৮০)
৪৩১৩। উবায়েদ ইবনু ইসমাঊল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু উবায় (মুনাফিক) মারা গেল, তখন তার ছেলে আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে আসলেন এবং তার পিতাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোর্তা দিয়ে কাফন দেবার আবেদন করলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোর্তাটি প্রদান করলেন, এরপর (আবদুল্লাহ তার পিতার) জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) পড়ানোর জন্য নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আবেদন জানালেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) পড়ানোর জন্য (বসা থেকে) উঠে দাঁড়ালেন, ইত্যবসরে উমর (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাপড় টেনে ধরে আবেদন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল, আপনি কি তার জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) পড়াতে যাচ্ছেন?

অথচ আপনার রব (আল্লাহ তা‘আলা) আপনাকে তার জন্য দোআ করতে নিষেধ করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তা‘আলা আমাকে এ ব্যাপারে ইখতিয়ার দিয়েছেন। আর আল্লাহ তা ইরশাদ করেছেন, ‘‘তুমি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর আর না কর; যদি সত্তর বারও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর তুব আমি তাদের ক্ষমা করব না।’’ সুতরাং আমি তার জন্য সত্তর বারের চেয়েও অধিক ক্ষমা প্রার্থনা করব। উমর (রাঃ) বললেন, সে তো মুনাফিক, শেষ পর্যন্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানোযার সালাত (নামায/নামাজ) পড়ালেন, এরপর এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। “তাদের মুনাফিকদের) কেউ মারা গেলে আপনি কখনো তাদের জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবেন না এবং তাদের কবরের কাছেও দাঁড়াবেন না।”

হাদিস নম্বরঃ ৪৩১৪ | 4314 | ٤۳۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৪০২. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ (হে রাসুল) আপনি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন অথবা তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা না করুন, একই কথা, আপনি তাদের জন্য সত্তর বার ক্ষমা প্রার্থনা করলেও আল্লাহ তাদের কখনই ক্ষমা করবেন না (এর কারন, তারা আল্লাহ ও তার রাসুলকে অস্বীকার করেছে। আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না) (৯ঃ ৮০)
৪৩১৪। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন আবদুল্লাহ ইবনু উবায় ইবনু সালুল মারা গেল, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তার জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) পড়বার জন্য আহবান করা হল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন (জানাযার জন্য) উঠে দাঁড়ালে, আমি তাঁর কাছে গিয়ে আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি ইবনু উবায়ের জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) পড়াবেন? অথচ যে লোক অমুক দিন অমুক অমুক কথা বলেছে। উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বলেন, আমি তার কথাগুলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে এক একটি করে উল্লেখ করেছিলাম। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুচকি হাসি দিয়ে আমাকে বললেন, হে উমর, আমাকে যেতে দাও। আমি বারবার বলাতে তিনি বললেন, আল্লাহর আমাকে ইখতিয়ার দিয়েছেন। আমি তা গ্রহণ করেছি।

আমি যদি বুঝতে পারি যে, সত্তরবারের চেয়েও অধিক ক্ষমা প্রার্থনা করলে তাকে আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করে দিবেন, তবে আমি সত্তরবারের অধিক ক্ষমা প্রার্থনা করবো। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন এবং (জানাযা) থেকে প্রত্যাবর্তন করে আসার পরই সূরা বারাআতের এ আয়াত অবতীর্ণ হয়, “তাদের কেউ মারা গেলে কখনো তার জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে না। এরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি অবিশ্বাস করেছে। এবং পাপাচারী অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। (৯: ৮৪)

উমর (রাঃ) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে আমার এ দুৎসাহসের জন্য পরে আমি চিন্তা করে আশ্চর্যান্বিত হতাম। বস্তুত আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অধিক জ্ঞাত।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩১৫ | 4315 | ٤۳۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৪০৩. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যদি তাদের (মুনাফিকদের) কেউ মারা যায় আপনি কখনো তাদের জানাযার নামায আদায় করবেন না এবং তাদের কবরের কাছেও দাঁড়াবেন না (৯ঃ ৮৪)
৪৩১৫। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন (মুনাফিক) আবদুল্লাহ ইবনু উবাই মারা গেল, তখন তার ছেলে আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসলেন। তিনি [নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাঁর নিজ জামাটি তাকে দিয়ে দিলেন এবং এর দ্বারা তার পিতার কাফনের ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দিলেন। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করার জন্য উঠে দাঁড়ালেন। তখন ইবনু উমর খাত্তাব (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাপড় ধরে আরজ করলেন, [ইয়া রাসূলাল্লাহ!] আপনি কি তার (আবদুল্লাহ ইবনু উবাই) এর জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবেন? সে তো মুনাফিক, অথচ আল্লাহ তা‘আলা তাদের (মুনাফিকদের) জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে আপনাকে নিষেধ করেছেন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (হে উমর!) আল্লাহ আমাকে ইখতিয়ার দিয়েছেন, অথবা বলেছেন, আল্লাহ আমাকে অবহিত করেছেন এবং বলেছেন, ‘‘আপনি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন আর না করেন, আপনি যদি সত্তরবারও ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তবুও আল্লাহ কখনো তাদেরকে ক্ষমা করবেন না।’’ (৯: ৮০) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি সত্তরবারের চেয়েও বেশীবার ক্ষমা প্রার্থনা করবো। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। আমরাও তাঁর সাথে জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলাম। এরপর এ আয়াত অবতীর্ণ হল, ‘‘তাদের (মুনাফিকদের) কেউ মারা গেলে আপনি তার জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) কখনো আদায় করবেন না এবং তার কবরের পার্শ্বেও দাঁড়াবেন না। তারা তো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কে অস্বীকার করেছে এবং পাপাচারী অবস্থায়ই মৃত্যু বরণ করেছে। (৯: ৮৪)

হাদিস নম্বরঃ ৪৩১৬ | 4316 | ٤۳۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৪০৪. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তোমরা তাদের কাছে ফিরে আসলে তারা আল্লাহর শপথ করবে, যাতে তোমরা তাদেরকে উপেক্ষা কর, সুতরাং তোমরা তাদেরকে উপেক্ষা করবে। তারা অপবিত্র, তাদের কৃতকর্মের ফলস্বরূপ জাহান্নাম তাদের আবাসস্থল (৯ঃ ৯৫)
৪৩১৬। ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু কা‘আব ইবনু মালিক (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, তিনি যখন তাবুকের যুদ্ধে পিছনে রয়ে গেলেন (অংশ গ্রহণ করলেন না), আল্লাহর কসম! তখন আল্লাহ আমাকে এমন এক নিয়ামত দান করেন যা মুসলমান হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত এতবড় নিয়ামত পাইনি। তা হল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সত্য কথা প্রকাশ করা। আমি তাঁর কাছে মিথ্যা বলিনি। যদি মিথ্যা বলতাম, তবে অন্যান্য (মুনাফিক ও) মিথ্যাবাদী ধ্বংস হয়েছে, আমিও সেভাবে ধ্বংস হয়ে যেতাম। যে সময় ওহী নাযিল হল ‘‘তোমরা তাদের নিকট (মদিনায়) ফিরে আসলে তারা আল্লাহর শপথ করবে, আল্লাহ সত্যত্যাগী সম্প্রদায়ের প্রতি তুষ্ট হবেন না।’’ (৯: ৯৫)

হাদিস নম্বরঃ ৪৩১৭ | 4317 | ٤۳۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৪০৬. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ এবং অপর কতক লোক নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছে, তারা সৎকর্মের সাথে অপর অসৎকর্মের মিশ্রন ঘটিয়েছে। সম্ভবত, আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (৯ঃ ১০২)
২৪০৫. অনুচ্ছেদ: আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তারা তোমাদের সামনে কসম করবে যাতে তোমরা তাদের প্রতি রাজি হও। যদি তোমরা তাদের প্রতি রাজি হয়ে যাও তবুও আল্লাহ এসব ফাসিক লোকদের প্রতি রাজি হবেন না। ( ৯: ৯৬)

৪৩১৭। মুয়াম্মিল ইবনু হিশাম (রহঃ) … সামুরা ইবনু জন্দুর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলেছেন, রাতে দু’জন ফেরেশতা এসে আমাকে নিদ্রা থেকে জাগ্রত করলেন। এরপর আমরা এমন এক শহরে পৌছলাম, যা স্বর্ণ ও রৌপ্যের ইট দ্বারা নির্মিত। সেখানে এমন কিছু সংখ্যক লোকের সাথে আমাদের সাক্ষাত ঘটর, যাদের শরীরের অর্ধেক খুবই সুন্দর যা তোমরা কখনো দেখনি। এবং আর এক অর্ধেক এমন কুৎসিত যা তোমরা কখনো দেখনি। ফেরেশতা দু’জন তাদেরকে বললেন, তোমরা ঐ নহরে গিয়ে ডুব দাও। তারা সেখানে গিয়ে ডুব দিয়ে আমাদের নিকট ফিরে এল। তখন তাদের বিশ্রী চেহারা সম্পূর্ণ দূর হয়ে গেল এবং তারা সুন্দর চেহারা লাভ করলো। ফেরেশতাদ্বয় আমাকে বললেন, এটা হল ‘জান্নাতে আদন’ এটাই হল আপনার আসল আরামস্থল। ফেরেশতাদ্বয় (বিস্তারিত বুঝিয়ে) বললেন, (আপনি) যেসব লোকের দেহের অর্ধেক সুন্দর এবং অর্ধেক বিশরী (দেখেছেন), তারা ঐ সকল লোক যারা দুনিয়াতে সৎকর্মের সাথে অসৎকর্ম মিশিয়ে ফেলেছে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন (এবং তারা অতি সুন্দর চেহারা লাভ করেছে)।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩১৮ | 4318 | ٤۳۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৪০৭. মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নাবী এবং মু’মিনদের জন্য সঙ্গত নয় (৯ঃ ১১৩)
৪৩১৮। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … মূসায়্যাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন আবূ তালিবে মৃত্যুর আলামত দেখা দিল তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কাছে গেলেন। এ সময় আবূ জেহেল এবং আবদুল্লাহ ইবনু আবূ উমাইয়াও সেখানে বসা ছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে চাচা! আপনি পড়ুন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ!। আপনার মুক্তির জন্য আল্লাহর নিকট এ নিয়ে আবেদন পেশ করব এ কথা শুনে আবূ জেহেল ও আবদুল্লাহ ইবনু উমইয়া বলল, হে আবূ তালিব! তুমি কি মৃত্যুর সময় (তোমার পিতা) আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম ত্যাগ করতে চাও? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে চাচা! আমি আপনার জন্য আল্লাহর তরফ থেকে যতক্ষণ আমাকে নিষেধ না করা হবে ততক্ষণ ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবো। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ

‘‘আত্মীয়-স্বজন হলেও মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নাবী এবং মু’মিনদের জন্য সঙ্গত নয়, যখন এ কথা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তারা জাহান্নামী।’’ (৯: ১১৩)

হাদিস নম্বরঃ ৪৩১৯ | 4319 | ٤۳۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৪০৮. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ অবশ্যই আল্লাহ অনুগ্রহপরায়ণ হলেন নবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতি, যারা সংকটকালে তার অনুগমন করেছিল। এমনকি তাদের একদলের অন্তর বাঁকা হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল, পরে আল্লাহ তাদের ক্ষমা করলেন, নিশ্চয়ই তিনি তাদের প্রতি দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু (৯ঃ ১১৭)
৪৩১৯। আহমদ ইবনু সালিহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু কা‘আব (রহঃ) থেকে বর্ণিত, কা‘আব (রাঃ) যখন দৃষ্টিহীন হয়ে পড়লেন, তখন তাঁর ছেলেদের মধ্যে যার সাহায্যে তিনি চলাফেরা করতেন, তিনি বলেন, আমি (আমার পিতা) কা‘আব ইবনু মালিক (রাঃ) এর কাছে তার ঘটনা বর্ণনায় وَعَلَى الثَّلاَثَةِ الَّذِينَ خُلِّفُوا‏ এ আয়াত এর তাফসীর সম্পর্কে বলতে শুনেছি। তিনি তার ঘটনার সর্বশেষে বলতেন, আমি আমার তওবা কবুল হওয়ার খুশিতে আমার সকল মাল আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পথে দান করতে চেয়েছছিলাম। কিন্তু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (সকল মাল সাদকা করো না) কিচু সাদকা করো এবং কিছু নিজের জন্য রেখে দাও। এটাই তোমার জন্য কল্যাণকর হবে।

পরিচ্ছদঃ ২৪০৯. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ এবং তিনি সে তিনজনকে ক্ষমা করলেন যাদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত মুলতবী রাখা হয়েছিল, যে পর্যন্ত না পৃথিবী বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও তাদের জন্য অতি সংকুচিত হয়েছিল এবং তাদের জীবন তাদের জন্য দুর্বিষহ হয়েছিল এবং তারা উপলব্ধি করতে পেরেছিল যে, আল্লাহ ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল নেই, পরে তিনি তাদের প্রতি মেহেরবান হলেন, যাতে তারা তাওবা করে, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (৯ঃ ১১৮)
৪৩২০ মুহাম্মদ (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু কা‘আব ইবনু মালিক (রাঃ) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি আমার পিতা কা‘আব মালিক (রাঃ) থেকে শুনেছি, যে তিনজনের তওবা কবূল হয়েছিল, তার মধ্যে তিনি একজন। তিনি বদরের যুদ্ধ ও তাবুকের যুদ্ধ এ দুটি ছাড়া অন্য কোন যুদ্ধে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে পশ্চাতে থাকেন নি। কা‘আব ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবুক যুদ্ধ হতে সূর্যোদয়ের সময় মদিনায় প্রত্যাবর্তন করলে আমি (মিথ্যা আযুহাতের পরিবর্তে) সত্যপ্রকাশের দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করলাম। তিনি [রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যে কোন সফর হতে সাধারণত সূর্যোদয়ের সময়ই ফিরে আসতেন। এবং সর্বপ্রথম মসজিদে গিয়ে দু’রাকাআত নফল সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। (তাবুকের যুদ্ধ থেকে এসে) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার সাথে এবং আমার সঙ্গীদের সাথে কথা বলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন, অথচ আমাদের ছাড়া অন্য যারা যুদ্ধে যাওয়া থেকে বিরত ছিল, তাদের সাথে কথা বলায় কোন প্রকার বাধা প্রদান করলেন না। সুতরাং লোকেরা আমাদের সাথে কথা বলা থেকে বিরত থাকতে লাগলেন।

এভাবে চিন্তার বিষয় এ ছিল যে যদি এ অবস্থায় আমার মৃত্যু এসে যায়, আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় না করেন, অথবা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাত হলে আমি মানুষের কাছে এই অবস্থায় থেকে যাব তারা কেউ আমার সাথে কথাও বলবে না, আর আমার জানোযার সালাত (নামায/নামাজ)ও আদায় করবে না। এরপর (পঞ্চাঁশ দিন পর) আল্লাহ তা‘আলা আমার তওবা কবূল করে তাঁর [নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি আয়াত অবতীর্ণ করেন। তখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ বাকী ছিল। সে রাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মে সালমা (রাঃ) এর কাছে ছিলেন, উম্মে সালমা (রাঃ) আমার প্রতি সদয় ও সহানুভূতিশীল ছিলেন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে উম্মে সালমা! কা‘আবের তওবা কবূল করা হয়েছে। উমম সালমা (রাঃ) বললেন, তাকে সুসংবাদ দেয়ার জন্য কাউকে তাঁর কাছে পাঠাব? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এখন খবর পেলে সব লোক এসে সমবেত হবে। তারা তোমাদের ঘুম নষ্ট করে দিবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পর (সকলের মধ্যে) আমাদের তওবা কবূল হওয়ার কথা ঘোষণা করে দিলেন। এ (ঘোষণার) সময় (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারা মুবারক খুশততে চাঁদের ন্যায় চমকাচ্ছিল। যেসব মুনাফিক মিথ্যা আযুহাত দেখিয়ে [রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসন্তুষ্টি থেকে] রেহাই পেয়েছিল, তাদের চেয়ে তওবা কবূলের ব্যপারে আমরা তিনজন পিছনে পড়ে গিয়েছিলাম, এরপর আল্লাহ তা‘আলা আমাদের তওবা কবূল করে আয়াত অবতীর্ণ করেন।

(তাবুকের যুদ্ধে) অনুপস্থিতিদের মধ্যে যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে মিথ্যা কথা বলেছে এবং যারা মিথ্যা আযুহাত দেখিয়েছে তাদের অত্যন্ত জঘন্যভাবে নিন্দাবাদ করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, ‘‘তোমরা তাদের কাছে ফিরে আসলে তারা তোমাদের কাছে আযুহাত পেশ করবে, বল, মিথ্যা অযুহাত পেশ করো না, আমরা তোমাদেরকে কখনোই বিশ্বাস করবো না। আল্লাহ আমাদেরকে তোমাদের খবর জানিয়ে দিয়েছেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তোমাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করবেন। (৯ঃ ৯৪)

হাদিস নম্বরঃ ৪৩২১ | 4321 | ٤۳۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৪১০. আল্লাহর বাণীঃ হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হও (৯ঃ ১১৯)
৪৩২১। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু কা‘আব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, যিনি কা‘আব ইবনু মালিক (রাঃ) (দৃষ্টিহীন হওয়ার পরে) এর পথপ্রদর্শক হিসেবে ছিলেন। তিনি (আবদুল্লাহ) বলেন, আমি কা‘আব ইবনু মালিক (রাঃ), তাবুক যুদ্ধে যারা পশ্চাতে থেকে গিয়েছিলেন তাদের ঘটনা বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আল্লাহর কসম! হয়ত আল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সত্য কথা কথা প্রকাশের কারণে, অন্য কাউকে এত বড় নিয়ামত দান করেন নি যতটুকু আমাকে প্রদান করেছেন। যখন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তাবুক যুদ্ধে না যাওয়ার সঠিক কারণ বর্ণণা করেছি তখন থেকে আজ পর্যন্ত (যে কোন ব্যাপারে) মিথ্যা বলার ইচ্ছাটুকু পর্যন্ত আমার হয়নি। শেষে পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর আয়াত নাযিল করলেন, ‘‘আল্লাহ অনুগ্রহপরায়ণ হলেন নাবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদিগকের প্রতি …… এবং সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হও।’’ (৯: ১১৭-১১৯)

হাদিস নম্বরঃ ৪৩২২ | 4322 | ٤۳۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৪১১. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তোমাদের মধ্য হতে তোমাদের কাছে এক রাসুল এসেছেন। তোমাদের যা বিপন্ন করে, তা তার জন্য অতি কষ্টদায়ক। সে তোমাদের কল্যাণকামী, মুমিনদের প্রতি সে দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু (৯ঃ ১২৮)
৪৩২২। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … যায়েদ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত, যিনি ওহী লেখকদের মধ্যে একজন ছিলেন, তিনি বলেন, আবূ বকর (রাঃ) (তার খিলাফতের সময়) এক ব্যাক্তিকে আমার কাছে পাঠালেন। এ সময় ইয়ামামার যুদ্ধ চলছিল। (আমি তার কাছে চলে আসলাম) তখন তাঁর কাছে উমর (রাঃ) বসা ছিলেন। তিনি [আবূ বকর (রাঃ) আমাকে] বললেন, উমর (রাঃ) আমার কাছে এসে বললেন যে, ইয়ামামার যুদ্ধ তীব্র গতিতে চলছে, আমার ভয় হচ্ছে, কুরআনের অভিজ্ঞগণ (হাফিজগণ) ইয়ামামার যুদ্ধে শহীদ হয়ে যান নাকি! যদি আপনার তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা না করেন তবে কুরআনের অনেক অংশ বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং কুরআনকে একত্রিত করে সংরক্ষণ করা ভাল মনে করি। আবূ বকর (রাঃ) বলেন, আমি উমর (রাঃ) কে বললাম, আমি এ কাজ কিভাবে করতে পারি, যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করে যাননি।

কিন্তু উমর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! এটা কল্যাণকর হবে। উমর (রাঃ) তাঁর এ কথার পুনরুক্তি করতে থাকেন, শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা এ কাজ কনরার জন্য আমার বক্ষকে উন্মুক্ত করে দেন। (অর্থাৎ এ প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে সক্ষম হই) এবং শেষ পর্যন্ত (এ ব্যাপারে) আমার অভিমত উমর (রাঃ) এর মতই হয়ে যায়। যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) বলেন, উমর (রাঃ) সেখানে নিরবে বসা ছিলেন, কোন কথা বলছিলেন না। এরপর আবূ বকর (রাঃ) আমাকে বললেন, দেখ, তুমি যুবক এবং জ্ঞানি ব্যাক্তি। আমরা তোমার প্রতি কোনরূপ বিরূপ ধারণা পোষণ করি না। কেননা, তুমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময়ে ওহী লিপিবদ্ধ করতে। সুতরাং তুমি কুরআনের আয়াত সংগ্রহ করে একত্রিত কর। কসম! তিনি কুরআন একত্রিত করার যে নির্দেশ আমাকে দিলেন সেটি আমার কাছে এত ভারী মনে হল যে, তিনি যদি কোন একটি পাহাড় স্থানান্তরিত করতে নির্দেশ দিতেন তাও আমার কাছে এরূপ ভারী মনে হতো না।

আমি বললাম, যে কাজ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করে যাননি, সে কাজটি আপনারা কিভাবে করবেন? এরপর আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! এ কাজ করাটাই কল্যাণকর হবে। এরপর আমিও আমার কথায় অটল থেকে বারবার জোর দিতে লাগলাম। পরিশেষে আল্লাহ যেটা উপলব্ধি করার জন্য আবু বকর ও উমর (রাঃ) এর বক্ষকে উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন, আমার বক্ষকেও তা উপলব্ধি করার জন্য উন্মুক্ত করে দিলেন (অর্থাৎ এর প্রয়োজনীয়তা তাদের ন্যায় আমিও অনুভব করলাম)। এরপর আমি কুরআন সংগ্রহে লেগে গেলাম এবং হাড়, চামড়া, খেজুর ডালে ও বাকলে এবং মানুষের বক্ষস্থল (অর্থাৎ মানুষের কাছে যা মুখস্ত ছিল। থেকে তা সংগ্রহ করলাম।

পরিশেষে খুযায়মা আনসারীর কাছে সূরায়ে তওবার দু’টি আয়াত (লিখিত) পেয়ে গেলাম, যা অন্য কারো কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারিনি। (যে আয়াতদ্বয়ের একটি হল) ‘লাকাদ জা আকুম’’ থেকে ষেশ পর্যন্ত। এরপর এ জমাকৃত কুরআন আবূ বকর (রাঃ)-এর ইন্তিকাল পর্যন্ত তাঁর কাছেই জমা ছিল তারপর উমর (রাঃ) এর কাছে এলো। তার ইন্তিকাল পর্যন্ত তার কাছেই এটি জমা ছিল। তারপর এটি হাফসা বিনত উমর (রাঃ) এর কাছে এলো।

উসমান এবং লায়স (রহঃ) خُزَيْمَةَ শব্দের বর্ণণায় শু‘আয়ব এর অনুসরণ করেছেন। অন্য এক সনদেও ইবনু শিহাব থেকে এ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। তাতে খুযায়মার স্থলে আবূ খুযায়মা আনসারী বলা হয়েছে। মূসা এর সনদে عَنْ ابْنُ شِهَابٍ এর স্থলে حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ এবং আবু খুযায়মা আনসারী বলা হয়েছে। ইয়াকুব ইবনু ইবরাহীমের অনুসরণ করেছেন।

অন্য এক সনদে সাবিত (রহঃ) এর عَنْ إِبْرَاهِيمَ এর পরিবর্তে حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ বলেছেন এবং খুযায়মা অথবা আবূ খুযয়মা নিয়ে সন্দেহ আছে।

আয়াতটির অর্থঃ ‘‘এরপর তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে তুমি বলে দিও, আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। আমি তারই উপর নির্ভর করি এবং তিনি মহা ‘আরশের অধিপতি।’’ (৯ঃ ১২৯) সূরা ইউনুস

হাদিস নম্বরঃ ৪৩২৩ | 4323 | ٤۳۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৪১২. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ আমি বনী ইসরাইলকে সমুদ্র পার করলাম ফেরাউন ও তার সেনাবাহিনী ঔদ্ধত্য সহকারে সীমালঙ্ঘন করে তাদের পশ্চাদ্ধাবন করল। পরিশেষে যখন সে নিমজ্জিত হল তখন সে বলল, আমি বিশ্বাস করলাম, যার প্রতি বনী ইসরাইল বিশ্বাস করেছে। এবং আমি আত্মসমার্পনকারীদের অন্তর্ভুক্ত। (১০ঃ ৯০) نُنَجِّيْكَ আমি তোমাকে যমীনের উঁচু স্থানে ফেলে রাখব। نَجْوَةٍ উচ্চ স্থান।
সুরা ইউনুস

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, فَاخْتَلَطَ অর্থাৎ বৃষ্টির দ্বারা ভূ-পৃষ্ঠে বিভিন্ন প্রকারের উদ্ভিদ উদ্গত হয়। আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ وَقَالُوا اتَّخَذَ اللهُ وَلَدًا سُبْحَانَه هُوَ الْغَنِيُّ -‘‘তারা বলেঃ ‘‘আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন। তিনি মহান, পবিত্র। তিনি অমুখাপেক্ষী।’’ (১০: ৬৮)

যায়দ ইবনু আসলাম (রহ.) বলেন, قَدَمَ صِدْقٍ দ্বারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বুঝানো হয়েছে। মুজাহিদ বলেন, এর অর্থ কল্যাণ। تِلْكَ آيَاتُ এগুলো কুরআনের নিদর্শন ও অনুরূপ, حَتَّى إِذَا كُنْتُمْ فِي الْفُلْكِ وَجَرَيْنَ بِهِمْ এখানে بِهِمْ দ্বারা بِكُمْ (তোমাদের নিয়ে) অর্থে دَعْوَاهُمْ তাদের দু‘আ। أُحِيْطَبِهِمْ তারা ধ্বংসোন্মুখ হল। أَحَاطَتْ بِهٰ خَطِيئَتُه গুনাহ তাদের ঘিরে ফেলছে। فَاتَّبَعَهُمْ وَأَتْبَعَهُمْ সমপর্যায়ের (তাদের পশ্চাদ্ধাবন করল।) عَدْوًا এখানে সীমা অতিক্রম অর্থে, মুজাহিদ (রহ.) বলেন, لِلنَّاسِ الشَّرَّ اسْتِعْجَالَهُمْ بِالْخَيْرِ এর দ্বারা মানুষের সেই কথা বুঝাচ্ছে, যখন সে রাগান্বিত হয়ে নিজ নিজ সন্তান-সন্ততি ও ধন-সম্পদ সম্পর্কে বলে, হে আল্লাহ! এতে বারাকাত দিও না, এর ওপর লা‘নাত কর। لَقُضِيَ إِلَيْهِمْ أَجَلُهُمْ যার প্রতি বদদু‘আ করা হয়েছে, তাকে ধ্বংস করে দিতেন এবং তাকে মেরে ফেলতেন। أَحْسَنُواالْحُسْنَى কল্যাণকর কাজের জন্য রয়েছে কল্যাণ এবং আরো অধিক। وَزِيَادَةٌ এবং অতিরিক্ত অর্থাৎ ক্ষমা। অন্যরা বলেন, আল্লাহর দীদার, الْكِبْرِيَاءُ রাজত্ব।

৪৩২৩। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় এলেন, তখন ইহুদীরা আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন রোযা পালন করত। (জিজ্ঞাসা করা হলে) তারা বলল, এদিন মূসা (আলাইহিস সালাম) ফেরাউনের উপর বিজয় লাভ করেছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদের বললেন, মূসা (আলাইহিস সালাম) সম্পর্কে তাদের (ইহুদিদের) চাইতে তোমরাই অধিক হকদার। সুতরাং তোমরাও রোযা পালন কর।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩২৪ | 4324 | ٤۳۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৪১৩. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ সাবধান! ওরা তার কাছে গোপন রাখার জন্য ওদের দ্বিভাজ (সংকুচিত) করে। সাবধান! ওরা যখন নিজেদেরকে বস্রে আচ্ছাদিত করে, তখন ওরা যা কিছু গোপন করে ও প্রকাশ করে, তিনি তা জানেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের অন্তরের বিষয় অবগত আছে। ( ১১ঃ ৫) অন্যজন বলেন, حَاقَ অবতীর্ণ হল। يَحِيْقُ অবতীর্ণ হয়। فَعُوْلٌ-يَئُوْسٌ এর ওযন يَئِسْتُ থেকে (নিরাশ হওয়ার অর্থে)। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, تَبْتَئِسْ দুঃখ করা।يَثْنُوْنَ صُدُوْرَهُمْ হকের মধ্যে সন্দেহ করা। لِيَسْتَخْفُوْا مِنْهُ আল্লাহ থেকে, গোপন রাখে যদি তারা সক্ষম হয়।
সুরা হুদ

আবূ মাইসারা (রহ.) বলেন, الْأَوَّاهُ হাবশী ভাষায় দয়ালু। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, بَادِئَالرَّأْيِ যা আমাদের সামনে স্পষ্ট। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, الْجُوْدِيُّ জাযিয়ার একটি পর্বত। হাসান (রহ.) বলেন, إِنَّكَ لَأَنْتَ الْحَلِيْمُ আপনি অতি সহনশীল। এর দ্বারা তারা ঠাট্টা করত। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, أَقْلِعِي থেমে যাও। عَصِيْبٌ কঠিন। لَا جَرَمَ অবশ্যই। فَارَ التَّنُّوْرُ পানি উথলে উঠল। ইকরামাহ (রহ.) বলেন, تَّنُّوْرُ ভূ-পৃষ্ঠকে বুঝানো হয়েছে।

৪৩২৪। হাসান ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … মুহাম্মদ ইবনু আব্বাস ইবনু জা‘ফর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে এমনিভাবে পড়তে শুনেছেন, ‏أَلاَ إِنَّهُمْ تَثْنَوْنِي صُدُورُهُمْ‏

মুহাম্মদ ইবনু আব্বাস বলেন, আমি তাঁকে এর মর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, কিছু লোক খোলা আকাশের দিকে উন্মুক্ত হওয়ার ভয়ে পেশাব-পায়খানা অথবা স্ত্রী সহবাস করতে লজ্জাবোধ করতে লাগল। তারপর তাদের সম্পর্কে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩২৫ | 4325 | ٤۳۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৪১৩. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ সাবধান! ওরা তার কাছে গোপন রাখার জন্য ওদের দ্বিভাজ (সংকুচিত) করে। সাবধান! ওরা যখন নিজেদেরকে বস্রে আচ্ছাদিত করে, তখন ওরা যা কিছু গোপন করে ও প্রকাশ করে, তিনি তা জানেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের অন্তরের বিষয় অবগত আছে। ( ১১ঃ ৫) অন্যজন বলেন, حَاقَ অবতীর্ণ হল। يَحِيْقُ অবতীর্ণ হয়। فَعُوْلٌ-يَئُوْسٌ এর ওযন يَئِسْتُ থেকে (নিরাশ হওয়ার অর্থে)। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, تَبْتَئِسْ দুঃখ করা।يَثْنُوْنَ صُدُوْرَهُمْ হকের মধ্যে সন্দেহ করা। لِيَسْتَخْفُوْا مِنْهُ আল্লাহ থেকে, গোপন রাখে যদি তারা সক্ষম হয়।
৪৩২৫। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … মুহাম্মদ ইবনু আব্বাস ইবনু জা‘ফর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু আববাস (রাঃ) ‏أَلاَ إِنَّهُمْ تَثْنَوْنِي صُدُورُهُمْ পাঠ করলেন। আমি বললাম, হে আবূল আব্বাস تَثْنَوْنِي صُدُورُهُمْ দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে? তিনি বললেন, কিছু লোক স্বীয় স্ত্রীর সাথে সহবাসের সময় অথবা পেশাব-পায়খানা (করার) সময় (উলঙ্গ হতে) লজ্জাবোধ করত, তখন ‏أَلاَ إِنَّهُمْ يَثْنُونَ صُدُورَهُمْ আয়াত অবতীর্ণ হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩২৬ | 4326 | ٤۳۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৪১৩. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ সাবধান! ওরা তার কাছে গোপন রাখার জন্য ওদের দ্বিভাজ (সংকুচিত) করে। সাবধান! ওরা যখন নিজেদেরকে বস্রে আচ্ছাদিত করে, তখন ওরা যা কিছু গোপন করে ও প্রকাশ করে, তিনি তা জানেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের অন্তরের বিষয় অবগত আছে। ( ১১ঃ ৫) অন্যজন বলেন, حَاقَ অবতীর্ণ হল। يَحِيْقُ অবতীর্ণ হয়। فَعُوْلٌ-يَئُوْسٌ এর ওযন يَئِسْتُ থেকে (নিরাশ হওয়ার অর্থে)। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, تَبْتَئِسْ দুঃখ করা।يَثْنُوْنَ صُدُوْرَهُمْ হকের মধ্যে সন্দেহ করা। لِيَسْتَخْفُوْا مِنْهُ আল্লাহ থেকে, গোপন রাখে যদি তারা সক্ষম হয়।
৪৩২৬। হুমায়দী (রহঃ) … আমর (রহঃ) বলেন, ইবন আব্বাস (রাঃ) এ আয়াত এভাবে পাঠ করলেন, ‏أَلاَ إِنَّهُمْ يَثْنُونَ صُدُورَهُمْ لِيَسْتَخْفُوا مِنْهُ أَلاَ حِينَ يَسْتَغْشُونَ ثِيَابَهُمْ আমর ব্যতীত অন্যরা ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন ‏يَسْتَغْشُونَ‏ তারা তাদের মাথা ঢেকে নিত। ‏سِيءَ بِهِمْ তারা সম্প্রদায় সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষণ করেন। এবং وَضَاقَ অর্থাৎ নিজ অতিথিকে দেখে সঙ্কুচিত হলেন। بِقِطْعٍ مِنَ اللَّيْلِ রাতের আঁধারে। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, ‏أُنِيبُ আমি তাঁরই অভিমুখী।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩২৭ | 4327 | ٤۳۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৪১৪. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ এবং তাঁর ‘আরশ ছিল পানির ওপরে
৪৩২৭। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তুমি খরচ কর। আমি তোমাকে দান করব এবং [রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, আল্লাহ তা‘আলার হাত পরিপূর্ণ। (তোমার) রাতদিন অবিরাম খরচেও তা কমবে না। তিনি বলেন, তোমরা দেখ না, যখন থেকে (আল্লাহ) আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন, তখন থেকে কি পরিমাণ খরচ করেছেন? কিন্তু এত খরচ করার পরও তাঁর হতে সম্পদের কোন কমতি হয়নি। আর আল্লাহ তা‘আলার ‘আরশ পানির উপর ছিল। তাঁর হাতেই রয়েছে পাল্লা। তিনি ঝুকান, তিনি উপরে উঠান।

اعْتَرَاكَ افْتَعَلَتَ-এর বাব থেকে। عَرَوْتُه এ অর্থে বলা হয়, তাকে পেয়েছি। তা থেকে يَعْرُوْهُ (তার উপর ঘটেছে) ও اعْتَرَانِيْ (আমার উপর ঘটেছে) ব্যবহার হয়। اٰخِذٌمبِنَاصِيَتِهَا অর্থাৎ তাঁর রাজত্ব এবং عَنِيْدٌ-عَنُوْدٌ-عَانِدٌ সবগুলোর একই অর্থ- স্বেচ্ছাচারী।

ওটি দাম্ভিকতা অর্থের প্রতি জোর দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। اسْتَعْمَرَكُمْ তোমাদের বসতি দান করলেন। আরবগণ বলত أَعْمَرْتُهُ الدَّارَ فَهِيَ عُمْرَى আমি এ ঘর তাকে জীবন ধারণের জন্য দিলাম। نَكِرَهُمْ وَأَنْكَرَهُمْ এবং اسْتَنْكَرَهُمْ সবগুলো একই অর্থে ব্যবহৃত। فَعِيْلٌ مَجِبْدٌ حَمِيْدٌ -مَجِيْدٌ-এর ওযনে مَاجِدٌ (মর্যাদা সম্পন্ন) থেকে حَمِيْدٌ (প্রশংসিত) এর অর্থে مَحْمُوْدٌ থেকে سِجِّيْلٌ অতি কঠিন বা শক্ত। سِجِّيْلٌ এবং سِجِّيْنٌ উভয় রূপেই ব্যবহৃত হয়। لَامُ এবং نُوْنٌ যেন দুই বোন। তামীম ইবনু মুকবেল বলেন, ‘‘বহু পদাতিক বাহিনী মধ্যাহ্নে স্কন্ধে শুভ্র ধারালো তলোয়ার দ্বারা আঘাত হানে। কঠিন প্রস্তর দ্বারা তার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য বিপক্ষের বীর পুরুষগণ পরস্পরকে ওসীয়ত করে থাকে।

والى مدين اخاهم شعيبا মাদইয়ান-এর নিকট অর্থাৎ মাদইয়ানবাসীর নিকট, কেননা মাদইয়ান তো একটি শহর। এর অনুরূপ وَاسْأَلْ الْقَرْيَةَ وَاسْأَلْ الْعِيْرَ অর্থাৎ গ্রামবাসীদের কাছে এবং কাফেলার লোকদের কাছে জিজ্ঞেস কর। وَرَاءَكُمْ ظِهْرِيًّا অর্থাৎ তারা তার প্রতি দৃষ্টি দেয়নি। যখন কেউ কারও উদ্দেশ্য পূর্ণ না করে, তখন বলা হয় ظَهَرْتَ بِحَاجَتِيْ এবং وَجَعَلْتَنِيْ ظِهْرِيًّا এখানে ظِهْرِيُّ দ্বারা এ ধরনের জানোয়ার বা পাত্র বোঝায় যা কাজের প্রয়োজনে তুমি তার দ্বারা নিজেকে আড়াল করবে। أَرَاذِلُنَا-আমাদের মধ্যে অধম, إِجْرَامِيْ এটা أَجْرَمْتُ -এর মাসদার। কেউ বলেন, جَرَمْتُ হতে উদ্গত الْفَلَكَ، والْفُلْكُ একবচন, বহুবচন উভয় ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ নৌকা এবং নৌকাগুলো। مُجْرَاهَا (নৌকার গতি) এটা أَجْرَيْتُ -এর মাসদার এবং أَرْسَيْتُ-নৌকা আমি থামিয়েছি। কেউ কেউ পড়েনঃ مَرْسَاَهَا অর্থাৎ তার স্থিতি এবং مَجْرَاهَا অর্থাৎ তার গতি। مُجْرِيْهَا এবং مُرْسِيْهَا অর্থাৎ যার সঙ্গে এরূপ (চালিত, স্থগিত) করা হয়েছে لرَّاسِيَاتُ অর্থাৎ স্থিত।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩২৭ | 4327 | ٤۳۲۷

পরিচ্ছদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ ويتم نعمته عليك وعلى آل يعقوب كما أتمها على أبويك من قبل إبراهيم وإسحاق আর আল্লাহ তোমার প্রতি এবং ইয়াকুব পরিবার-পরিজনের প্রতি তার অনুগ্রহ পূর্ণ করবেন, যেভাবে তিন তা করেছিলেন তোমার পিতৃপুরুষ ইব্রাহীম ও ইসহাকের প্রতি।
সুরা ইউসুফ

ফুযায়ল (রহ.) হুসায়ন (র.) মুজাহিদ (রহ.) বলেন, مُتْكَاءً (এক জাতীয়) লেবু এবং ফুযায়ল (রহ.) বলেন যে, مُتْكًا হাবশী ভাষায় (এক জাতীয়) লেবুকে বলা হয়। ইবনু ‘উয়াইনাহ (রহ.) …… মুজাহিদ (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন যে, مُتْكًا ঐ সব, যা চাকু দিয়ে কাটা হয়। ক্বাদাতাহ (রহ.) বলেন, لَذُوْعِلْمٍ সে ‘আলিম, যে তার ‘ইল্মের উপর ‘আমাল করে। ইবনু যুবায়র (রহ.) বলেন, صُوَاعٌ ফারসী মাপ-পাত্র, যার উভয় পাশ মিলানো থাকে; আজমীগণ এটা দিয়ে পানি পান করে। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, تُفَنِّدُوْنِ আমাকে মূর্খ মনে কর। অন্য হতে বর্ণিতঃ غَيَابَةٌ যেসব বস্তু তোমা হতে গোপন রয়েছে। وَالْجُبُّ ঐ কূপকে বলে যার মুখ বাঁধা হয়নি। بِمُؤْمِنٍلَنَا তুমি আমার কথায় বিশ্বাসী। بِمُؤْمِنٍلَنَا অধোগতি শুরু হওয়ার আগের বয়স। বলা হয় بَلَغَ أَشُدَّهُ وَبَلَغُوْا أَشُدَّهُمْ অর্থাৎ সে বা তারা পূর্ণ বয়সে উপনীত হয়েছে। কেউ কেউ বলেন, এর একবচন شَدٌّ (কারো কারো মতে) الْمُتَّكَأُ যে জিনিসের উপর পানাহার করার বা কথাবার্তা বলার সময় হেলান দেয়া হয়। যাঁরা مَتَكًا অর্থ লেবু বলেছেন এতে তা রদ হল। আরবদের ভাষায় ‘উতরুঞ্জ’ শব্দের ব্যবহার নেই। যখন তাদের প্রতি এই অভিযোগ দ্বারা প্রমাণ করা হয় যে, ‘মুত্তাকা’ অর্থ বিছানা, তখন তাঁরা আরো খারাপ অর্থ গ্রহণ করল এবং বলল যে, এখানে مُتْكٌ এর ت সাকিন। এর অর্থ স্ত্রীলোকের লজ্জাস্থানের পার্শ্ব। এ থেকে ব্যবহার হয় مَتْكَاءِ (যে নারীর সে অংশ কাটা হয়নি) এবং ابْنُ الْمَتْكَاءِ (মাত্কার পুত্র)। সে ঘটনায় লেবু হলেও তা তাকিয়া দেয়ার পরই হবে। شَعَفَهَا তার অন্তরকে আচ্ছন্ন করল। مَشْعُوْفٌ যার অন্তর প্রেমে জ্বালিয়ে দিয়েছে। أَصْبُ আমি আসক্ত হয়ে যাব। أَحْلَامٍ অনর্থক স্বপ্ন যার কোন ব্যাখ্যা নেই। أَضْغَاثُ ঘাসের মুঠা এবং যা এ জাতীয়। যেমন পূর্বের আয়াতে আছে خُذْ بِيَدِكَ ضِغْثًا এক মুঠো ঘাস লও। একবচনে ضِغْثٌ থেকে গঠিত نَمِيْرُ আমরা খাদ্যদ্রব্য এনে দিব। نَزْدَادُكَيْلَبَعِيْرٍ আমরা আরো এক উট বোঝাই পণ্য আনব। أَوَىإِلَيْهِ নিজের কাছে রাখল। السِّقَايَةُ পান পাত্র, পরিমাপ-পাত্র। সারাক্ষণ থাকবে حَرَضًامُحْرَضًا খুব দুর্বল হওয়া) يُذِيْبُكَ الْهَمُّ দুশ্চিন্তা-তোমাকে শেষ করে দিবে, تَحَسَّسُوْا তোমরা খোঁজ লও। مُزْجاةٌ স্বল্প, غَاشِيَةٌمِنْ عَذابِ الله عَامَّةٌ مُجَلِّلَةٌ আল্লাহর শাস্তি সকলকে বেষ্টন করে নিয়েছে।

৪৩২৭ আবদুল্লাহ্ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) আবদুল্লাহ্ ইবনু ওমর (রাঃ) থেকে বনিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সন্মানিত ব্যাক্তি, সন্মানিত ব্যাক্তির পুত্র, সন্মানিত ব্যাক্তির পুত্র, সন্মানিত ব্যাক্তির পুত্র, সন্মানিত ব্যাক্তি হলেন, ইউসুফ (আলাইহিস সালাম), তাঁর পিতা ইসহাক (আলাইহিস সালাম), তাঁর পিতা ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম), তাঁর পিতা ইবরাহিম (আলাইহিস সালাম)।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩২৮ | 4328 | ٤۳۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৪১৫. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ সাক্ষীগণ বলবেঃ এরাই হলো সেসব লোক যারা তাদের প্রতিপালকের বিরুদ্ধে মিথ্যা আরোপ করেছিল। সাবধান! আল্লাহর লা’নত জালিমদের ওপর (১১ঃ ১৮) أَشْهَادُ-এর একবচন হল, شَاهِدٌ যেমন, أَصْحَابٌ -এর এক বচন صَاحِبٌ
৪৩২৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … সাফওয়ান ইবনু মুহরিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা উমর ইবনু (রাঃ) তাওয়াফ করছিলেন। হঠাৎ এক ব্যাক্তি তাঁর সম্মুখে এসে বলল, হে আবূ আবদুর রহমান অথবা বলল, হে ইবনু উমর (রাঃ) আপনি কি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে (কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা এবং মু’মিনদের মধ্যকার) গোপন আলোচনা সম্পর্কে কিছু শুনেছে? তিনি বললেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, (কিয়ামতের দিন) মু’মিনকে তাঁর নিকটবর্তী করা হবে। হিশাম বলেন, মু’মিন নিকটবর্তী হবে, এমনকি আল্লাহ তা‘আলা তাকে নিজ পর্দায় আবৃত করে নেবেন এবং তার কাছ থেকে তার গুনাহসমূহের স্বীকারোক্তি নেবেন। (আল্লাহ জিজ্ঞাসা করবেন) অমুক গুনাহ সম্পর্কে তুমি জান কি? বান্দা বলবে, হে আমার রব! আমি জানি, আমি জানি। এভাবে দু’বার বলবে। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, আমি দুনিয়ায় তোমার গুনাহ গোপন রেখেছি। আজ তোমার সে গুনাহ মাফ করে দিচ্ছি। তারপর তার নেক আমল নামা গুটিয়ে নেয়া হবে।

পক্ষান্তরে অন্যদলকে অথবা (রাবী বলেছেন) কাফিরদের সকলের সামনে ডেকে বলা হবে, এরাই সে লোক যারা আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলেছিল এবং শায়বান حَدَّثَنَا قَتَادَةُ এর পরিবর্তে قَتَادَةُعَنْ এবং عَنْ صَفْوَانُ এর পরিবর্তে حَدَّثَنَا صَفْوَانُ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩২৮ | 4328 | ٤۳۲۸

পরিচ্ছদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ لقد كان في يوسف وإخوته آيات للسائلين “ইউসুফ ও তার ভাইদের ঘটনায় জিজ্ঞাসুদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।“ (১২:৭)।
৪৩২৮। মুহাম্মদ … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করা হল, কোন ব্যাক্তি অধিক সন্মানিত? তিনি বললেন, তাদের মধ্যে সেই আল্লাহ্’র নিকট বেশি সন্মানিত যে তাদের মধ্যে সবচে বেশি পরহেজগার। লোকেরা বলল, আমরা এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিনি। তিনি বললেন, সর্বাধিক সন্মানিত ব্যাক্তি আল্লাহ্’র নাবী ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)। তিনি তো নাবী’র পুত্র, নাবী’র পুত্র, নাবী’র পুত্র এবং খলিলুল্লাহ্ (আলাইহিস সালাম) এর পুত্র। লোকেরা বলল, আমাদের প্রশ্ন এ ব্যপারে ছিলনা। তিনি বললেন, সম্ভবত তোমরা আরব বংশ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছ। তারা বলল, হ্যাঁ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যারা জাহেলিয়াতে তোমাদের মাঝে উত্তম ছিল, ইসলামেও তারা উত্তম যদি তারা দ্বীন সম্পর্কে জ্ঞানের অধিকারী হয়। আবূ উসামা (রাঃ) উবায়দুল্লা’র সুত্রে এটাকে সমর্থন ব্যক্ত করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩২৯ | 4329 | ٤۳۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৪১৬. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ এবং এরূপই তোমার প্রতিপালকের শাস্তি। তিনি শাস্তি দান করেন জনপদসমূহকে, যখন তারা জুলুম করে থাকে। তার শাস্তি মর্মন্তুদ কঠিন (১১ঃ ১০২) الرِّفْدُ الْمَرْفُوْدُ অর্থাৎ সাহায্য, যে সাহায্য করা হয় (বলা হয়) رَفَدْتُهُ আমি তাকে সাহায্য করলাম। تَرْكَنُوْا ঝুঁকে পড়। فَلَوْلَا كَانَ কেন হয়নি। أُتْرِفُوْا তাদের ধ্বংস করে দেয়া হল। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, زَفِيْرٌ وَشَهِيْقٌ বিকট আওয়াজ এবং ক্ষীণ আওয়াজ।
৪৩২৯। সাদাকা ইবনু ফাযল (রহঃ) … আবূ মূসা আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা জালিমদের অবকাশ দিয়ে থাকেন। অবশেষে যখন তাকে পাকড়াও করেন, তখন আর ছাড়েন না। (বর্ণনাকারী বলেন) এরপর তিনি [নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এ আয়াত পাঠ করেন। “এবং এরূপই তোমার রবের শাস্তি।” তিনি শাস্তি দান করেন জনপদসমূকে যখন তারা জুলুম করে থাকে। তার শাস্তি মর্মন্তুদ, কঠিন। (১১: ১০২)

হাদিস নম্বরঃ ৪৩২৯ | 4329 | ٤۳۲۹

পরিচ্ছদঃ আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ “সে (ইয়াকুব (আঃ) বলল, না, তোমাদের মন তোমাদের জন্য একটি কাহিনী সাজিয়ে দিয়েছে।“ (১২ঃ ১৮)। سولت সুন্দর করে সাজিয়ে শোভনীয় করে দেখান।
৪৩২৯। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … যুহরী (রহঃ) উরওয়া ইবনু যুবাইর, সাইদ ইবনু মূসাইয়্যিব, আলকামা ইবনু ওয়াক্কাস এবং উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়শা (রাঃ) এর ইফক সম্পর্কে أَهْلُ الإِفْكِ যা বলেছেন তা শুনেছি। আল্লাহ এটা নির্দোষ প্রমানিত করেছেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়শা (রাঃ) কে বললেন, যদি তুমি নির্দোষ হয়ে থাক তবে অতি শীঘ্র আল্লাহ তোমার নির্দোষিতা প্রমান করে দিবেন। আর যদি তোমার দ্বারা এ গুনাহ সংঘটিত হয়ে থাকে, তবে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর ও তওবা কর। আয়শা (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! এ সময় আমি ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর পিতা ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম) এর উদাহরন ছাড়া বলার মত আর কিছু জবাব দেয়ার মত খুজে পাচ্ছিনা। (তিনি যা বলেছিলেন) সুতরাং পূর্ণ ধৈর্য ই শ্রেয়। তোমরা যা বলছ সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহ ই আমার সাহায্য স্থল। অবশেষে আল্লাহ আমার (নির্দোষিতা ঘোষণা করে) ‏إِنَّ الَّذِينَ جَاءُوا بِالإِفْكِ‏ দশটি আয়াত নাযিল করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩৩০ | 4330 | ٤۳۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৪১৭. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ নামায কায়েম করবে দিবসের দু’প্রান্তভাগে ও রজনীর প্রথমাংশে। নেক কাজ অবশ্যই পাপ মিটিয়ে দেয়। যারা উপদেশ গ্রহন করে এটি তাদের জন্য এক উপদেশ (১১ঃ ১১৪) زُلَفًا সময়ের পর সময় এবং এসব থেকেই مُزْدَلِفَةُ এর নামকরণ করা হয়েছে। মনযিলের পর মনযিল এবং زُلْفَى মাসদার অর্থ নিকটবর্তী হওয়া। ازْدَلَفُوْا একত্রিত হয়েছে। أَزْلَفْنَا আমরা একত্রিত হয়েছি।
৪৩৩০ মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার কোন এক ব্যাক্তি জনৈক মহিলাকে চুমু দিলেন। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে এ ঘটনা বললেন, তখন (এ ঘটনার প্রেক্ষিতে) এ আয়াত অবতীর্ণ হয় وَأَقِمِ الصَّلاَةَ طَرَفَىِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ذَلِكَ ذِكْرَى لِلذَّاكِرِينَ ‘‘সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করবে দিবসের দু’প্রান্ত ভাগে ও রাত্রির প্রথমাংশে নেক কার্য অবশ্যই পাপকে মিটিয়ে দেয়। যারা উপদেশ গ্রহণ করে তাদের জন্য এ এক উপদেশ। (১১: ১১৪) তখন লোকটি বলল, এ হুকুম কি শুধু আমার জন্য? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যারাই এ অনুসারে করবে, তাদের জন্য।

হাদিস নম্বরঃ ৪৩৩০ | 4330 | ٤۳۳۰

পরিচ্ছদঃ আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ “সে (ইয়াকুব (আঃ) বলল, না, তোমাদের মন তোমাদের জন্য একটি কাহিনী সাজিয়ে দিয়েছে।“ (১২ঃ ১৮)। سولت সুন্দর করে সাজিয়ে শোভনীয় করে দেখান।
৪৩৩০। মূসা (রহঃ) … আয়শা (রাঃ) এর মাতা উম্মে রুমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন, (অপবাদ রটনার সময়) আয়শা (রাঃ) আমাদের ঘরে জ্বরে আক্রান্ত ছিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সম্ভবত এ অপবাদের কারনে জ্বর হয়েছে। আয়শা (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ। তিনি উঠে বসলেন এবং বললেন, আমার এবং আপনার উদাহরন ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম) এবং তার পুত্র ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর ন্যায়। তার ভাইয়েরা কাহিনী সাজাল। তখন ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম) বলেছিলেন, পূর্ণ ধৈর্য্যই শ্রেয়। তোমরা যা বলছ সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহ ই আমার সাহায্য স্থল।