হাদিস নম্বরঃ ৪২০১ | 4201 | ٤۲۰۱
পরিচ্ছদঃ ২৩১৪. আল্লাহর বাণীঃ তোমরা শ্রেষ্ঠ উম্মাত, মানব জাতির জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে (৩ঃ ১১০)
৪২০১। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ আয়াত সম্পর্কে বলেন, মানুষের জন্যে মানুষ কল্যাণজনক তখনই হয় যখন তাদের গ্রীবাদেশে শিকল লাগিয়ে নিয়ে আসে। এরপর তারা ইসলামে প্রবেশ করে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২০২ | 4202 | ٤۲۰۲
পরিচ্ছদঃ ২৩১৫. আল্লাহর বাণীঃ যখন তোমাদের মধ্যের দু’দলের সাহস হারানোর উপক্রম হয়েছিল এবং আল্লাহ তাদের অভিভাবক (৩ঃ ১২২)
৪২০২। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, إِذْ هَمَّتْ طَائِفَتَانِ مِنْكُمْ أَنْ تَفْشَلاَ وَاللَّهُ وَلِيُّهُمَا আয়াতটি আমাদেরকে উপলক্ষ করেই অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা দু’দল বনী হারিছা আর বনী ছালিমা। যেহেতু এ আয়াতে وَاللَّهُ وَلِيُّهُمَا “আল্লাহ উভয়ের সহায়ক” উল্লেখ আছে, সেহেতু এটা অবতীর্ণ না হোক তা আমরা পছন্দ করতাম না। সুফিয়ান (রাঃ)-এর এক বর্ণনায় وما يسرني ‘আমাকে ভাল লাগেনি’ আছে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২০৩ | 4203 | ٤۲۰۳
পরিচ্ছদঃ ২৩১৬. আল্লাহর বাণীঃ এই বিষয়ে আপনার করণীয় কিছুই নেই।(সূরাহ আলে-‘ইমরান ৩ঃ ১২৮)
৪২০৩। হিব্বান (রহঃ) … সালিম (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছেন যে, তিনি ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) এর শেষ রাকাআতে রুকু থেকে মাথা তুলে ‘সামিআল্লাহ লিমান হামিদা, রাব্বানা ওলাকাল হামদ’ বলার পর এটা বলতেনঃ হে আল্লাহ! অমুক, অমুক, এবং অমুককে লানত দিন। তখন আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করলেন। لَيْسَ لَكَ مِنَ الأَمْرِ شَىْءٌ} إِلَى قَوْلِهِ {فَإِنَّهُمْ ظَالِمُونَ তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদের শাস্তি দিবেন, এবিষয়ে তোমার করনীয় কিছুই নেই। কারণ তারা জালিম। (৩: ১২৮) ইসহাক ইবনু রাশিদ (রহঃ) ইমাম যুহরী (রহঃ) থেকে এটা বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২০৪ | 4204 | ٤۲۰٤
পরিচ্ছদঃ ২৩১৬. আল্লাহর বাণীঃ এই বিষয়ে আপনার করণীয় কিছুই নেই।(সূরাহ আলে-‘ইমরান ৩ঃ ১২৮)
৪২০৪। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কারো জন্য বদদোয়া অথবা দোয়া করার মনস্থ করতেন, তখন সালাত (নামায/নামাজ)-এর রুকুর পরেই কুনূতে নাযিলা পড়তেন। কখনো কখনো সামি আল্লাহ লিমান হামিদা, আল্লাহুম্মা রাব্বানা লাকাল হামদ বলার পর বলতেন, হে আল্লাহ! ওয়ালিদ ইবনু ওয়ালিদ, সালমা ইবনু হিশাম এবং আইয়াশ ইবনু আবূ রাবিয়াকে মুক্ত করুন। হে আল্লাহ! মুদার গোত্রের উপর শাস্তি কঠোর করুন। এ শাস্তিকে ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর যুগের দূর্ভক্ষের ন্যায় দুর্ভিক্ষে রূপান্তরিত করে দিন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা গুলোকে উচ্চস্বরে বলতেন। কখনো কখনো তিনি কয়েকটি আরব গোত্রের নাম উল্লেখ করে ফজরের সালাতে বলতেন, হে আল্লাহ! অমুক এবং অমুককে লানত দিন। অবশেষ আল্লাহ তাআলা নাযিল করলেনঃ لَيْسَ لَكَ مِنَ الأَمْرِ شَىْءٌ “হয় আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন কিংবা তাদেরকে আযাব দেবেন। এ ব্যাপারে আপনার কোন করণীয় নাই। কারণ তারা রয়েছে অন্যায়ের উপর।” (৩ঃ ১২৮)
হাদিস নম্বরঃ ৪২০৫ | 4205 | ٤۲۰۵
পরিচ্ছদঃ ২৩১৭. আল্লাহর বাণীঃ রসূল (সাঃ) তোমাদের পেছনের দিক থেকে আহবান করছিলেন। آخركم এর স্ত্রীলিঙ্গ أخراكم ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, দু’কল্যাণের একটি এর অর্থ হল বিজয় অথবা শহীদ হওয়া
৪২০৫। আমর ইবনু খালিদ (রহঃ) … বারা ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উহুদ যুদ্ধের দিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পদাতিক বাহিনীর উপর আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) কে সেনাপতি নির্ধারণ করেন। এরপর তাদের কতক পরাজিত হলে পালাতে লাগল, এটাই হল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তোমাদের পেছন দিক থেকে ডাকছিলেন। মাত্র বারজন ছাড়া আর কেউ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলেন না।
হাদিস নম্বরঃ ৪২০৬ | 4206 | ٤۲۰٦
পরিচ্ছদঃ ২৩১৮. আল্লাহর বাণীঃ প্রশান্তি তন্দ্রারূপে
৪২০৬। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ তালহা (রাঃ) বলেন, আমরা উহুদ যুদ্ধের দিন আপন আপন সারিতে ছিলাম। তন্দ্রা আমাদের আচ্ছাদিত করে ফেলেছিল। তিনি বলেছিলেন, আমার তরবারী আমার হাত থেকে পড়ে যাচ্ছিল, আর আমি তা উঠাচ্ছিলাম, আবার পড়ে যাচ্ছিল, আবার আমি উঠাচ্ছিলাম।
হাদিস নম্বরঃ ৪২০৭ | 4207 | ٤۲۰۷
পরিচ্ছদঃ ২৩২০. আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের বিরুদ্ধে লোক জমায়েত হয়েছে (৩ঃ ১৭৩)
باب قوله الذين استجابوا لله والرسول من بعد ما أصابهم القرح للذين أحسنوا منهم واتقوا أجر عظيم القرح الجراح استجابوا أجابوا يستجيب يجيب
২৩১৯. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহর বাণীঃ যখম হওয়ার পরও যারা আল্লাহ ও রাসুলের ডাকে সাড়া দিয়েছে তাদের মধ্যে যারা সৎকার্য করে এবং তাকওয়া অবলম্বন করে চলে, তাদের জন্য মহাপুরস্কার রয়েছে (৩ঃ ১৭২) القرح যখম। استجابوا ডাকে সাড়া দিন। يستجيب সাড়া দেয়।
৪২০৭। আহমদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, حَسْبُنَا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ বাক্যটি ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) বলেছিলেন, যখন তিনি অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন। আর মুহাম্মদ বলেছিলেন যখন লোকেরা বলল, ‘‘তোমাদের বিরুদ্ধে লোক জমায়েত হয়েছে, সুতরাং তোমরা তাদেরকে ভয় কর কিন্তু এটি তাদের ঈমান দৃঢ়তর করেছিল এবং তারা বলেছিল ‘‘আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি কত উত্তম কর্ম বিধায়ক’’ (৩: ১৭৩)
হাদিস নম্বরঃ ৪২০৮ | 4208 | ٤۲۰۸
পরিচ্ছদঃ ২৩২০. আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের বিরুদ্ধে লোক জমায়েত হয়েছে (৩ঃ ১৭৩)
৪২০৮। মালিক ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) যখন অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন তখন তাঁর শেষ বক্তব্য ছিল حَسْبِيَ اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ ‘‘আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট’’ তিনি কত উত্তম কর্ম বিধায়ক।
হাদিস নম্বরঃ ৪২০৯ | 4209 | ٤۲۰۹
পরিচ্ছদঃ ২৩২১. আল্লাহর বাণীঃ এবং আল্লাহ তাদেরকে নিজের অনুগ্রহে যা দান করেছেন তাতে যারা কৃপণতা করে এই কার্পন্য তাদের জন্য মঙ্গলকর হবে বলে তারা যেন ধারণা না করে। বরং এটা তাদের পক্ষে একান্তই ক্ষতিকর প্রতিপন্ন হবে। যাতে তারা কার্পন্য করে সে সমস্ত ধন-সম্পদকে কিয়ামতের দিন তাদের গলায় বেড়ী বানিয়ে পরানো হবে। আর আল্লাহ হচ্ছেন আসমান ও যমীনের পরম সত্ত্বাধিকারী। আর যা কিছু তোমরা কর; আল্লাহ সে সম্পর্কে জানেন। سَؤُطَوَّقُوْنَ এটা আরবী বাক্য طوقته بطوق (তাকে বেড়ি লাগিয়ে দিয়েছি) এর ন্যায়।
৪২০৯। আবদুল্লাহ ইবনু মুনীর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, যাকে আল্লাহ তাআলা ধন-সম্পদ দেন, তারপর সে তার যাকাত পরিশোধ করে না- কিয়ামত দিবসে তার ধন-সম্পদকে তার জন্য লোমবিহীন কালো-চিহৃ বিশিষ্ট সর্পে রূপান্তরিত করা হবে এবং তার গলায় পরিয়ে দেয়া হবে। মুখের দু’ধার দিয়ে সে তাকে দংশন করতে থাকবে এবং বলবে, ‘আমি তোমার সম্পদ, আমি তোমার সঞ্চয়।’ এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই আয়াত তিলাওয়াত করলেন وَلاَ يَحْسِبَنَّ الَّذِينَ يَبْخَلُونَ بِمَا آتَاهُمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ
অর্থ আল্লাহ তাদেরকে নিজের অনুগ্রহে যা দান করেছেন তাতে যারা কৃপণতা করে এই কার্পন্য তাদের জন্য মঙ্গলকর হবে বলে তারা যেন ধারণা না করে। বরং এটা তাদের পক্ষে একান্তই ক্ষতিকর প্রতিপন্ন হবে। যাতে তারা কার্পন্য করে সে সমস্ত ধন-সম্পদকে কিয়ামতের দিন তাদের গলায় বেড়ী বানিয়ে পরানো হবে। আর আল্লাহ হচ্ছেন আসমান ও যমীনের পরম সত্ত্বাধিকারী। আর যা কিছু তোমরা কর; আল্লাহ সে সম্পর্কে জানেন। (৩ঃ ১৮০)
হাদিস নম্বরঃ ৪২১০ | 4210 | ٤۲۱۰
পরিচ্ছদঃ ২৩২২. আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছিল তাদের এবং মুশরীকদের কাছ থেকে তোমরা অনেক কষ্টদায়ক কথা শুনবে (৩ঃ ১৮৬)
৪২১০। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি গাধার পিঠে আরোহন করেছিলেন, একটি ফদকী চাঁদর তাঁর পরনে ছিল। উসামা ইবনু যায়দ (রাঃ) কে তাঁর পেছনে বসিয়েছিলেন। তিনি বনী হারিস ইবনু খাযরায গোত্রে অসুস্থ সা’দ ইবনু উবায়দা (রাঃ) কে দেখতে যাচ্ছিলেন। এটা ছিল বদর যুদ্ধের পূর্বেকার ঘটনা। বর্ণনাকারী বলেন যে, যেতে যেতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন একটি মজলিশের সামনে গিয়ে পৌছলেন, যেখানে আবদুল্লাহ ইবনু উবায় বিন সালুলও ছিল, সে তখনও ইসলাম গ্রহণ করেনি। সে মজলিসে মুসলিম, মুশরিক, প্রতিমা পূজারী এবং ইহুদী সকল প্রকারের লোক ছিল এবং তথায় আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ)-ও ছিলেন। জন্তুর পদধূলি যখন মজলিস ছেয়ে ফেলল, তখন আবদুল্লাহ ইবনু উবায় আপন চাঁদরে নাক ঢেকে ফেলল। তারপর বলল, আমাদের এখানে ধুলো উড়িয়ো না।
এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এদরকে সালাম করলেন। তারপর বাহন থেকে অবতরণ করলেন এবং তাদেরকে আল্লাহর প্রতি দাওয়াত দিলেন এবং তাদেরকে কুরআন মজীদ পাঠ করলেন। আবদুল্লাহ ইবনু উবায় বলল, এই লোকটি! তুমি যা বলছ তা যদি সত্যি হয় তাহলে এর চেয়ে উত্তম কিছুই নেই। তবে আমাদের মজলিসে আমাদেরকে জ্বালাতন করবে না। তুমি তোমার তাবুতে যাও। যে তোমার কাছে যাবে তুমি তাকে তোমার কথা বলবে। অনন্তর আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি আমাদের মজলিসে এগুলো আমাদের কাছে বলবেন, কারণ আমরা তা পছন্দ করি। এতে মুসলমান, মুশরিক এবং ইহুদীরা পরস্পর গালাগালি শুরু করল। এমনকি তারা মারামারিতে লিপ্ত হওয়ার উপক্রম হল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে থামাচ্ছিলেন। অবশেষে তারা থামলো।
এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জন্তুর পিঠে আরোহণ করে রওয়ানা দিলেন এবং সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) এর কাছে গেলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, হে সা’দ! আবূ হুবাব অর্থাৎ আবদুল্লাহ ইবনু উবায় কি বলেছে, তুমি শুনেছ কি! সে এমন বলেছে। সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তাকে ক্ষমা করে দিন। তার দিকে ভ্রক্ষেপ করবেন না। যিনি আপনার উপর কিতাব নাযিল করেছেন, তাঁর শপথ করে বলছি, আল্লাহ আপনার উপর যা নাযিল করেছেন তা সত্য। এতদঞ্চলের অধিবাসীগণ চুক্তি সম্পাদন করেছিল যে, তাকে শাহী টুপি পরাবে এবং নেতৃত্বের শিরস্ত্রানে ভুষিত করবে। যখন আল্লাহ তাআলা সত্য প্রদানের মাধ্যমে এ পরিকল্পনা অস্বীকার করলেন তখন সে ক্রদ্ধ ও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং আপনার সাথে যে ব্যবহার করেছে যা আপনি দেখেছেন।
এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ক্ষমা করে দিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাহাবীগণ (রাঃ) মুশরিক এবং কিতাবীদেরতে ক্ষমা করে দিতেন এবং তাদের জ্বালাতনে ধৈর্যধারণ করতেন। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘‘তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছিল তাদের এবং মুশরিকদের নিকট থেকে তোমরা অনেক কষ্টদায়ক কথা শুনবে (৩ঃ ১৮৬)। আল্লাহ তাআলা আরো বলেছেন, ‘‘তাদের কাছে সত্য প্রকাশিত হওয়ার পরও কিতাবীদরে মধ্যে অনেকই তোমাদের ঈমান আনার পর ঈর্ষামূলক মনোভাববশত আবার তোমাদেরকে সত্য প্রত্যাখানকারীরূপে ফিরে পাওয়ার আকাঙ্খা করে। তোমরা ক্ষমা কর এবং উপেক্ষা কর, যতক্ষণ না আল্লাহ কোন নির্দেশ দেন। আল্লাহর সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।’’ (২: ১০৯)
আল্লাহ তাআলার নির্দেশ মোতাবেক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ক্ষমার দিকেই প্রত্যাবর্তন করতেন। শেষ পর্যন্ত তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা অনুমতি দিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বদরের যুদ্ধ চালিয়ে গেলেন এবং তাঁর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা কাফের কুরাইশ নেতাদেরকে হত্যা করলেন তখন ইবনু উবায় ইবনু সালুল তার সঙ্গী মুশরিক ও প্রতিমা পূজারীরা বলল, এটাতো এমন একটি ব্যাপার যা বিজয় লাভ করেছে। এরপর তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ইসলামের বায়আত করে জাহেরীভাবে ইসলাম গ্রহণ করল।
হাদিস নম্বরঃ ৪২১১ | 4211 | ٤۲۱۱
পরিচ্ছদঃ ২৩২৩. আল্লাহর বাণীঃ যারা নিজেরা যা করেছে তাতে আনন্দ প্রকাশ করে এবং নিজেরা যা করেনি এমন কার্যের জন্যে প্রশংসিত হতে ভালবাসে, তারা শাস্তি হতে মুক্তি পাবে, এরূপ আপনি কখনো মনে করবেন না। তাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে (৩ঃ ১৮৮)
৪২১১। সাঈদ ইবনু আবূ মারয়াম (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে তিনি যখন যুদ্ধে বের হতেন তখন কিছু সংখ্যক মুনাফিক ঘরে বসে থাকত এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেরিয়ে যাওয়ার পর বসে থাকতে পারার আনন্দ প্রকাশ করত। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যাবর্তন করলে তাঁর কাছে শপথ সহকারে অক্ষমতা প্রকাশ করত এবং যা করেনি তার জণ্যে প্রশংসিত হওয়াকে ভালবাসত। তখন এ আয়াত নাযিল হলঃ لاَ يَحْسِبَنَّ الَّذِينَ يَفْرَحُونَ
হাদিস নম্বরঃ ৪২১২ | 4212 | ٤۲۱۲
পরিচ্ছদঃ ২৩২৩. আল্লাহর বাণীঃ যারা নিজেরা যা করেছে তাতে আনন্দ প্রকাশ করে এবং নিজেরা যা করেনি এমন কার্যের জন্যে প্রশংসিত হতে ভালবাসে, তারা শাস্তি হতে মুক্তি পাবে, এরূপ আপনি কখনো মনে করবেন না। তাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে (৩ঃ ১৮৮)
৪২১২। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … আলকামা ইবনু ওয়াক্কাস অবহিত করেছেন যে, মারওয়ান (রাঃ) তাঁর দারোয়ানকে বললেন, হে নাফি! তুমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর কাছে গিয়ে বল, যদি প্রাপ্ত বস্তুতে আনন্দিত এবং করেনি এমন কাজ সম্পর্কে প্রশংসিত হতে আশাবাদী প্রত্যেক ব্যাক্তই শাস্তি প্রাপ্ত হয় তাহলে তাবৎ মানুষই শাস্তি প্রাপ্ত হবে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, এটা নিয়ে তোমাদের মাথা ঘামানো হচ্ছে একটা অবান্তর ব্যাপার। একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহুদীদেরকে ডেকে একটা বিষয় জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তাতে তারা সত্য গোপন করে বিপরীত তথ্য দিয়েছিল। এতদসত্বেও তারা প্রদত্ত উত্তরের বিনিময়ে প্রশংসা লাভের আশা করেছির এবং তাদের সত্য গোপনের জন্য উল্লাসিত হয়েছিল। তারপর ইবনু আব্বাস (রাঃ) পাঠ করলেন- وَإِذْ أَخَذَ اللَّهُ مِيثَاقَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ} … {يَفْرَحُونَ بِمَا أَتَوْا وَيُحِبُّونَ أَنْ يُحْمَدُوا بِمَا لَمْ يَفْعَلُوا ‘‘স্মরণ কর, যদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছিল আল্লাহ তাদের প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন, তোমরা এটা মানুষের কাছে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করবে এবং তা গোপন করবে না। এরপরও তারা তা অগ্রহ্য করে এবং তুচ্ছ মূল্যে বিক্রয় করে। অতএব তারা যা ক্রয় করে তা কত নিকৃষ্ট! যারা নিজেরা যা করেছে তাতে আনন্ত প্রকাশ করে এবং যা করেনি এমন কাজের জণ্যে প্রশংসিত হতে ভালবাসে, তারা শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে এরূপ তুমি কখনো মনে করো না, তাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে (৩ঃ ১৮৭-১৮৮)।
বর্ণনাকারী আবদুর রাযযাক (রহঃ) ইবনু জুরায়য (রহঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২১৩ | 4213 | ٤۲۱۳
পরিচ্ছদঃ ২৩২৩. আল্লাহর বাণীঃ যারা নিজেরা যা করেছে তাতে আনন্দ প্রকাশ করে এবং নিজেরা যা করেনি এমন কার্যের জন্যে প্রশংসিত হতে ভালবাসে, তারা শাস্তি হতে মুক্তি পাবে, এরূপ আপনি কখনো মনে করবেন না। তাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে (৩ঃ ১৮৮)
৪২১৩। ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … হুমাইদ ইবনু আবদুর রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ) অবহিত করেছেনযে, মারওয়ান এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২১৪ | 4214 | ٤۲۱٤
পরিচ্ছদঃ ২৩২৪. আল্লাহর বাণীঃ আকশমন্ডল এবং পৃথিবীর সৃষ্টিতে, দিবস ও রাত্রির পরিবর্তনে নিদর্শনাবলী রয়েছে বোধশক্তি সম্পন্ন লোকের জন্য (৩ঃ ১৯০)
৪২১৪। সাঈদ ইবনু আবূ মারয়াম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমি আমার খালাম্মা মায়মুনা (রাঃ) এর কাছে রাত্রি যাপন করেছিলাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছুক্ষণ তাঁর পরিবারবর্গের সাখে আলাপ-আলোচনা করে শুয়ে পড়লেন। তারপর রাত্রির শেষ তৃতীয়াংশে তিনি উঠলেন এবং আসমানের দিকে তাকিয়ে পাঠ করলেন إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَاخْتِلاَفِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لآيَاتٍ لأُولِي الأَلْبَابِ এরপর দাঁড়ালেন এবং ওযু করে মিসওয়াক করে এগার রাকায়াত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এরপর বিলাল (রাঃ) আযান দিলে তিনি দু’ রাকাআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তারপর বের হয়ে ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২১৫ | 4215 | ٤۲۱۵
পরিচ্ছদঃ ২৩২৫. আল্লাহর বাণীঃ যারা দাঁড়িয়ে, বসে এবং শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আকাশমন্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্তা করে (৩ঃ ১৯১)
৪২১৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার খালাম্মা মায়মুনা (রাঃ) এর কাছে রাত্রি যাপন করি। আমি মনে স্থির করলাম যে, অবশ্যই আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা দেখব। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য একটা বিছানা বিছিয়ে দেয়া হল। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটার লম্বালম্বি দিকে নিদ্রামগ্ন হলেন। এরপর জাগ্রত হয়ে মুখমন্ডল থেকে ঘুমের রেশ মুছতে লাগলেন এবং সূরা আলে ইমরানের শেষ দশ আয়াত পাঠ করে তা সমাপ্ত করলেন। তারপর ঝুলন্ত একটি পুরাতন মশকের পানি পাত্রের নিকট এসে তা নিলেন এবং ওযু করে সালাত (নামায/নামাজ) দাঁড়ালেন, আমি দাঁড়িয়ে তিনি যা যা করছিলেন তা তা করলাম। তারপর আমি এসে তাঁর পার্শ্বে দাঁড়ালাম। তিনি আমার মাথায় হাত রাখলেন, তারপর আমার কান ধরে মলতে লাগলেন। তারপর দু’ রাকাআত, তারপর দু’ রাকাআত, তারপর দু’ রাকাআত, তারপর দু’ রাকাআত তারপর দু’ রাকাআত, তারপর দু’ রাকাআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন এবং তারপর বিতরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২১৬ | 4216 | ٤۲۱٦
পরিচ্ছদঃ ২৩২৬. আল্লাহর বাণীঃ হে আমাদের রব! কাউকে আপনি অগ্নিতে নিক্ষেপ করলে তাকে তো আপনি নিশ্চয় হেয় করলেন এবং জালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই (৩ঃ ১৯২)
৪২১৬। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে তিনি মায়মুনা (রাঃ)-এর কাছে রাত্রি যাপন করেন, তিনি হলেন তার খালাম্মা। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি বিছানায় আড়াআড়িভাবে শুয়েছিলাম আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার পরিবারবর্গ লম্বালম্বি দিকে শুয়েছিলেন। অর্ধরাত্রি কিংবা এর সামান্য পূর্ব অথবা সামান্য পর পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমালেন। তারপর তিনি জাগ্রত হলেন। এরপর দু’হাত দিয়ে মুখ থেকে ঘুমের আবেশ মুছতে লাগলেন। তারপর ঝুলন্ত একটি পুরাতন মশকের কাছে গেলেন এবং তা থেকে পরিপাটিভাবে উজু করলেন। এরপর সালাতে দাঁড়ালেন। তিনি যা যা করেছিলেন আমিও ঠিক তা করলাম। তারপর গিয়ে তার পার্শ্বে দাঁড়ালাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ডান হাত আমার মাথায় রেখে আমার ডান কান ধরে মলতে লাগলেন। এরপর তিনি দু’রাকাত, তারপর দু’ রাকাআত, তারপর দু’ রাকাআত, তারপর দু’ রাকাআত, তারপর দু’ রাকাআত, তারপর দু’ রাকাআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন এবং তারপর বিতরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তারপর তিনি একটু শুয়ে পড়লেন। অবশেষে মুয়াজ্জ্বীন আসল, তিনি হালকাভাবে দু’রাকাত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এরপর বের হলেন এবং ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২১৭ | 4217 | ٤۲۱۷
পরিচ্ছদঃ ২৩২৭. আল্লাহর বাণীঃ হে আমাদের পালনকর্তা! নিশ্চয় আমরা এক আহবানকারীকে ঈমানের প্রতি আহবান করতে শুনেছি, ‘তোমাদের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান আনয়ন কর’ অতএব আমরা ঈমান এনেছি (৩ঃ ১৯৩)
৪২১৭। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … কুরায়ব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। ইবনু আব্বাস (রাঃ) তাকে অবহিত করেছেন যে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী মায়মূনা (রাঃ) এর নিকট রাত্রি যাপন করেছিলেন। মায়মূনা (রাঃ) হলেন তাঁর খালাম্মা। তিনি বলেন, আমি বিছানার প্রস্থের দিকে শুয়েছিলাম এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গ দৈর্ঘ্যের দিকে শুয়েছিলেন। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিদ্রামগ্ন হয়েছিলেন। অর্ধরাত্রি কিংবা এর সামান্যাগে কিংবা সামান্য পরক্ষনে তিনি ঘুম থেকে জেগে উঠলেন। এবং মুখ থেকে ঘুমের আবেশ মুছতে মুছতে বসলেন। তারপর সূরা আলে ইমরানের শেষ দশ আয়াত পাঠ করলেন। এরপর সালাতে দাঁড়ালেন। তারপর ঝুলন্ত একটি পরাতন মশকের দিকে গিয়ে ভালভাবে ওযু করলেন। এরপর সালাতে দাঁড়ালেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, আমিও দাঁড়ালাম এবং তিনি যা করেছেন আমিও তা করলাম। তারপর আমি গিয়ে তাঁর পার্শ্বে দাঁড়ালাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ডান হাত আমার মাথায় রেখে আমার ডান কান মলতে শুরু করলেন। তারপর তিনি দু’ রাকাআত ছয়বারে বারো রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন এবং তারপর তিনি বিতরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। শেষে মুয়াযযিন ফজরের আযান দিলে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে সংক্ষিপ্ত কিরাআতে দু’ রাকাআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তারপর হুজরা থেকে বের হলেন এবং ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২১৮ | 4218 | ٤۲۱۸
পরিচ্ছদঃ ২৩২৮. আল্লাহর বাণীঃ আর যদি আশংকা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তবে বিয়ে করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে (নিসা ৪ঃ ৩)
সুরা নিসা
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : {يَسْتَنْكِفُ} يَسْتَكْبِرُ. {قِوَامًا} : قِوَامُكُمْ مِنْ مَعَايِشِكُمْ. {لَهُنَّ سَبِيْلًا} يَعْنِي الرَّجْمَ لِلثَّيِّبِ، وَالْجَلْدَ لِلْبِكْرِ. وَقَالَ غَيْرُهُ : {مَثْنَى وَثُلَاثَ وَرُبَاع} يَعْنِي اثْنَتَيْنِ وَثَلَاثًا وَأَرْبَعًا وَلَا تُجَاوِزُ الْعَرَبُ رُبَاعَ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, يَسْتَنْكِفُ অহঙ্কার করে, قِوَامًا -তোমাদের জীবিকার্জনের মাধ্যম। لَهُنَّ سَبِيْلًا -সাইয়েবা বা বিবাহিতার জন্য প্রস্তর নিক্ষেপ (রজম) আর কুমারীর জন্য বেত্রাঘাত। তিনি ব্যতীত অন্যান্য তাফসীরকারক বলেন, مَثْنَى وَثُلَاثَ وَرُبَاع অর্থাৎ দুই, তিন এবং চার; আরবগণ رُبَاعَ শব্দকে غير منصرف বা অপরিবর্তনশীল শব্দ মনে করে।
৪২১৮। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তির তত্ত্বাবধানে এক ইয়াতীম বালিকা ছিল। এরপর সে তাকে বিয়ে করল, সে বালিকার একটি বাগান ছিল। তার অন্তরে ঐ বালিকার প্রতি কোন আকর্ষণ না থাকা সত্ত্বেও বাগানের কারণে সে ঐ বালিকাটিকে সে বিবাহ করে রেখে দিতে চায়। এ সম্পর্কে আয়াত অবতীর্ণ হয়। আর যদি আশংকা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না। আমার ধারণা যে, উরওয়া বলেন, ইয়াতীম বালিকাটি সে বাগান ও মালের মধ্যে শরীক ছিল।
হাদিস নম্বরঃ ৪২১৯ | 4219 | ٤۲۱۹
পরিচ্ছদঃ ২৩২৮. আল্লাহর বাণীঃ আর যদি আশংকা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তবে বিয়ে করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে (নিসা ৪ঃ ৩)
৪২১৯। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ‘উরওয়া ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন মহান আল্লাহ বাণী وَإِنْ خِفْتُمْ أَنْ لاَ تُقْسِطُوا فِي الْيَتَامَى সম্পর্কে। তিনি উত্তরে বললেন, হে ভাগ্নে! সে হচ্ছে পিতৃহীন বালিকা, অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে থাকে এবং তার সম্পত্তিতে অংশীদার হয় এবং তার রূপ ও সম্পদ তাকে (অভিভাবককে) আকৃষ্ট করে। এরপর সে অভিভাবক উপযুক্ত মোহরানা না দিয়ে তাকে বিবাহ করতে চায়। তদুপরি অন্য ব্যাক্তি যে পরিমাণ মোহর দেয় তা না দিয়ে এবং তার প্রতি ন্যায় বিচার না করে তাকে বিয়ে করতে চায়। এরপর তাদের পারিবারিক ঐতিহ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ মোহর এবং ন্যায় ও সমুচিত মোহর প্রদান ব্যতীত তাদের বিয়ে করতে নিষেধ করা হয়েছে। এবং তদ্ব্যতীত যে সকল মহিলা পছন্দ হয় তাদেরকে বিয়ে করতে অনুমতি দেয়া হয়েছে।
‘উরওয়া (রহঃ) বলেন যে, আয়িশা (রাঃ) বলেছন, এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর লোকেরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে মহিলাদের ব্যাপারে জানতে চাইলে আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করেন, وَيَسْتَفْتُونَكَ فِي النِّسَاءِ এবং লোকেরা আপনার কাছে নারীদের বিষয়ৈ জানতে চায়। আয়িশা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর বাণী অন্য এক আয়াতে— তোমরা তাদেরকে বিয়ে করতে আগ্রহ প্রকাশ কর। ইয়াতীম বালিকার ধন-সম্পদ কম হলে এবং সুন্দরী না হলে তাকে বিবাহ করতে আগ্রহ প্রকাশ করো না। আয়েশো (রাঃ) বলেন, তাই ইয়াতীম বালিকাদের মাল ও সৌন্দর্যের আকর্ষনে বিবাহ করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে ন্যায় বিচার করলে ভিন্ন কথা। কেননা তারা সম্পদের অধিকারী না হলে তাদেরকেও বিবাহ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে না।
হাদিস নম্বরঃ ৪২২০ | 4220 | ٤۲۲۰
পরিচ্ছদঃ ২৩২৯. আল্লাহর বাণীঃ এবং যে বিত্তহীন সে যেন সঙ্গত পরিমাণে ভোগ করে। তোমরা যখন তাদেরকে তাদের সম্পদ সমর্পণ করবে তখন সাক্ষী রাখবে (৪ঃ ৬) بِدَارًا অর্থ مبادرة তাড়াতাড়ি। أعددنا অর্থ أعتدنا অর্থাৎ প্রস্তুত করে রেখেছি। আর أعددنا – عتاد থেকে أفعلنا এর ওযনে।
৪২২০। ইসহাক (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর বাণী وَمَنْ كَانَ غَنِيًّا فَلْيَسْتَعْفِفْ وَمَنْ كَانَ فَقِيرًا فَلْيَأْكُلْ بِالْمَعْرُوفِ বিত্তশালী গ্রহণ করবে না। অবতীর্ণ হয়েছে ইয়াতীমের সম্পদ উপলক্ষ্যে, যদি তত্ত্বাবধায়ক বিত্তহীন হয় তাহলে রক্ষনাবেক্ষণের বিনিময়ে সংগত পরিমাণে তা থেকে ভোগ করবে।
পরিচ্ছদঃ ২৩৩০. আল্লাহর বাণীঃ সম্পত্তি বণ্টনকালে আত্মীয়, ইয়াতীম এবং অভাবগ্রস্থ লোক উপস্থিত থাকলে তাদেরকে তা হতে কিছু দেবে এবং তাদের সাথে সদালাপ করবে (৪ঃ ৮)
৪২২১। আহমদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়াতটি সুস্পষ্ট, রহিত বা মানসুখ নয়। সাঈদ (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে ইকরামা (রহঃ) অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আল্লাহর বাণী يُوصِيكُمُ اللَّهُ فِي أَوْلاَدِكُمْ অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা তোমাদের সন্তান সম্বন্ধে নির্দেশ দিচ্ছেন। (৪ঃ ১১)
হাদিস নম্বরঃ ৪২২২ | 4222 | ٤۲۲۲
পরিচ্ছদঃ ২৩৩০. আল্লাহর বাণীঃ সম্পত্তি বণ্টনকালে আত্মীয়, ইয়াতীম এবং অভাবগ্রস্থ লোক উপস্থিত থাকলে তাদেরকে তা হতে কিছু দেবে এবং তাদের সাথে সদালাপ করবে (৪ঃ ৮)
৪২২২। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং আবূ বকর (রাঃ) বনী সালমা গোত্রে পদব্রজে আমার রোগ সম্পর্কে খোজ খবর নিতে গিয়েছিলেন। অনন্তর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পেলেন। কাজেই তিনি পানি আনালেন এবং ওযু করে ওযুর পানি আমার উপর ছিটিয়ে দিলেন। তখন আমি হুশ ফিরে পেলাম। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার সম্পত্তিতে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আপনি আমাকে নির্দেশ দেবেন? তখন এ আয়াত নাযিল হলঃ يُوصِيكُمُ اللَّهُ فِي أَوْلاَدِكُمْ
হাদিস নম্বরঃ ৪২২৩ | 4223 | ٤۲۲۳
পরিচ্ছদঃ ২৩৩১. আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের স্ত্রীদের পরিত্যাক্ত সম্পত্তির অর্ধাংশ তোমাদের জন্য (৪ঃ ১২)
৪২২৩। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মৃত ব্যাক্তির সম্পদ ছিল সন্তানের জন্য, আর ওসীয়ত ছিল পিতামাতার জন্য। এরপর তা থেকে আল্লাহ তাআলা তাঁর পছন্দ অনুযায়ী কিছু রহিত করলেন এবং পুরুষদের জন্য মহিলার দ্বিগুন নির্ধারণ করলেন। পিতামাতা প্রত্যেকের জন্য ৬ ভাগের ১ অংশ ও ৩ ভাগের ১ অংশ নির্ধারণ করলেন, স্ত্রীদের জন্য ৮ ভাগের ১ ও ৪ ভাগের ১ অংশ নির্ধারণ করলেন এবং স্বামীর জন্য ২ ভাগের ১ ও ৪ ভাগের ১ অংশ নির্ধারণ করলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২২৪ | 4224 | ٤۲۲٤
পরিচ্ছদঃ ২৩৩২. আল্লাহর বাণীঃ হে ঈমানদারগণ! নারীদেরকে যবরদস্তি তোমাদের উত্তরাধিকারী গণ্য করা বৈধ নহে (৪ঃ ১৯) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত لَا تَعْضُلُوْهُنَّ তাদের উপর বল প্রয়োগ করো না। حُوْبًا -গুনাহ, تَعُوْلُوْا ঝুঁকে পড়। نِحْلَةً মোহর।
৪২২৪। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ يَحِلُّ لَكُمْ أَنْ تَرِثُوا النِّسَاءَ كَرْهًا وَلاَ تَعْضُلُوهُنَّ لِتَذْهَبُوا بِبَعْضِ مَا آتَيْتُمُوهُنَّ ইসলামের প্রারম্ভিক যুগে অবস্থা এরূপ ছিল যে, কোন ব্যাক্তি মারা গেলে তার অভিভাবকগণ তার স্ত্রীর উপর দাবিদার হত। তারা ইচ্ছা করলে ঐ মহিলাকে বিয়ে করত। ইচ্ছে করলে অন্যের কাছে বিয়ে দিত। আর নতুবা তাকে আমরণ আটকে রাখত। কারো কাছে বিয়ে দিত না। মহিলার পরিবারের তুলনায় এরা অধিক দাবিদার ছিল। এরপর এ আয়াত নাযিল হল।
হাদিস নম্বরঃ ৪২২৫ | 4225 | ٤۲۲۵
পরিচ্ছদঃ ২৩৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পিতামাতা ও আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যাক্ত সম্পত্তির প্রত্যেকটির জন্য আমি উত্তরাধিকারী করেছি এবং যাদের সাথে তোমরা অঙ্গীকারবদ্ধ তাদেরকে তাদের অংশ দেবে। আল্লাহ সর্ববিষয়ের দ্রষ্টা (৪ঃ ৩৩)
مَوَالِيْ এক প্রকার হচ্ছে সে সকল আত্মীয়, যারা রক্ত সম্বন্ধের উত্তরাধিকারী। অপরপক্ষ عَاقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ অর্থাৎ চুক্তিবদ্ধ উত্তরাধিকারী। আবার مَوْلَى চাচাত ভাই, مَوْلَى الْمُنْعِمُ যে দাস মুক্ত করে, مَوْلَى আযাদকৃত দাস, مَوْلَى বাদশাহ, مَوْلَى মহাজন।
৪২২৫। সালত ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ হচ্ছে বংশীয় উত্তরাধিকারী, وَالَّذِينَ عَاقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ হচ্ছে মুহাজিরগণ যখন মদিনায় এসেছিলেন তখন তারা আনসারদের উত্তরাধিকারী হতেন। আত্মীয়তার কারণে নয় বরং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক তাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনের স্থাপনের কারণে। যখন وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ নাযিল হল, তখন এ হুকুম রহিত হয়ে গেল। তারপর বললেন, যাদের সাথে তোমরা চুক্তি করে থাক সাহায্য সহযোগীতা ও পরস্পরের উপকার করার। পূর্বতন উত্তরাধিকার বিলুপ্ত হল এবং এদের জন্য ওসীয়ত বৈধ।
হাদীসটি আবূ উসামা ইদ্রিসের কাছে এবং ইদ্রিস তালহার কাছে থেকে শুনেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২২৬ | 4226 | ٤۲۲٦
পরিচ্ছদঃ ২৩৩৪. আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ অণু পরিমাণও যুলম করেন না। مثقال ذرة এর অর্থ অনু পরিমান
৪২২৬। মুহাম্মদ ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে একদল লোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি কিয়ামতের দিন আমাদের প্রভুকে দেখব? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই। গ্রীষ্মকালের মেঘবিহীন ভর দুপুরের প্রখর কিরণ বিশিষ্ট সূর্য দেখতে তোমরা কি পরস্পর ভিড় করে থাক? তারা বলল, না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, পূর্ণিমার রাতে মেঘবিহীন আলো বিশিষ্ট চন্দ্র দেখতে গিয়ে তোমরা কি ভিড় কর? আবার তারা বলল, না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এদের কোনটিকে দেখতে যেমন ভিড় করো না; কিয়ামতের দিনও আল্লাহকে দেখতেও তোমরা পরস্পর ভিড় করবে না।
কিয়ামত যখন আসবে তখন এক ঘোষক ঘোসণা দেবে। তখন প্রত্যেকেই আপন আপন উপাস্যের অনুসরণ করবে। আল্লাহ ব্যতীত প্রতিমা ও পাথর ইত্যাদির যারা পূজা করেছে, তারা সবাই দোযখে গিয়ে পড়বে, একজনও অবশিষ্ট থাকবে না। পুণ্যবান হোক চাই পাপী, এরা এবং আল্লাহ অবশিষ্ট বিশ্বাসীরা ব্যতীত যখন আর কেউ থাকবে না, তখন ইহুদীদেরকে ডেকে বলা হবে, তোমরা কার ইবাদত করতে? তারা বলবে, আমরা আল্লাহর পুত্র উযাইরের ইবাদত করতাম। তাদেরকে বলা হবে যে, তোমরা মিথ্যা বলছ। আল্লাহ স্ত্রীও গ্রহণ করেননি পুত্রও গ্রহণ করেননি। তোমরা কি চাও? তারা বলবে, হে প্রভু! আমরা তৃষ্ণার্ত, আমাদেরকে পানি পান করান। এরপর তাদেরকে ইঙ্গিত করা হবে যে, তোমরা পানির ধারে যাওনা কেন? এরপর তাদেরকে দোযখের দিকে একত্র করা হবে তা যেন মরুভূমির মরিচীকা, এক এক অংশ অন্য অংশকে ভেঙ্গে ফেলছে। অনন্তর তারা সবাই দোযখে পতিত হবে।
তারপর খ্রিষ্টানদেরকে ডাকা হবে। তাদেরকে বলা হবে, তোমরা কার ইবাদত করতে? তারা বলবে, আমরা আল্লাহর পুত্র মসীহের ইবাদত করতাম। তাদেরকে বলা হবে তোমরা মিথ্যা বলছ। আল্লাহ স্ত্রীও গ্রহণ করেননি এবং পুত্রও নয়। তাদেরকে বলা হবে, তোমরা কি চাও? তারা প্রথম পক্ষের মত বলবে, এবং তাদের মত দোযখে নিপতিত হবে।
অবশেষে পুণ্যবান হোক কিংবা পাপী হোক আল্লাহর উপাসকগণ ব্যতীত আর কেউ যখন বাকি থাকবে না, তখন তাদের কাছে পরিচিত রূপের নিকটতম একটি রূপ নিয়ে রাববুল আলামীন তাদের কাছে আবির্ভূত হবেন। এরপর বলা হবে, প্রত্যেক দল নিজ নিজ উপাস্যের অনুসরণ করে চলে গেছে। তোমরা কিসের অপেক্ষা করছ? তারা বলবে, দুনিয়াতে এ সকল লোকের প্রতিামাদের চরম প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও আমরা সেখানে তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন থেকেছি এবং তাদের সাথে মেলামেশা করিনি। এখন আমরা আমাদের প্রতিপালকের অপেক্ষায় আছি, আমরা তাঁর ইবাদত করতাম। এরপর তিনি বলবেন, আমিই তোমাদের প্রতিপালক। তারা বলবে, আমরা আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করব না। এ কথাটি দু’বার কি তিনবার বলবে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২২৭ | 4227 | ٤۲۲۷
পরিচ্ছদঃ ২৩৩৫. আল্লাহর বাণীঃ যখন প্রত্যেক উম্মত হতে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকে ওদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব তখন কী অবস্থা হবে (৪ ঃ ৪১) الْخَتَّالُ الْمُخْتَالُ একই অর্থে ব্যবহৃত, দাম্ভিক। نَطْمِسَ সমান করে দেব। শেষ পর্যন্ত তাদের গর্দানের পশ্চাৎদিকের মতো হয়ে যাবে। طَمَسَ الْكِتَابَ কিতাবের লেখা মুছে ফেলা। سَعِيْرًا জ্বলন্ত।
৪২২৭। সাদকাহ (রহঃ) … আমর ইবনু মুররা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, আমার কাছে কুরআন পাঠ কর। আমি বললাম, আমি আপনার কাছে পাঠ করব? অথছ তা আপনার কাছেই অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি বললেন, অন্যের মুখে শ্রবণ করাকে আমি পছন্দ করি। এরপর আমি তাঁর নিকপ ‘সূরা নিসা’ পড়লাম, যখন আমি فَكَيْفَ إِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ أُمَّةٍ بِشَهِيدٍ وَجِئْنَا بِكَ عَلَى هَؤُلاَءِ شَهِيدًا পর্যন্ত পাঠ করলাম, তিনি বললেন, থাম, থাম, তখন তাঁর দুচোখ থেকে টপ টপ করে অশ্রু নির্গত হচ্ছিল।
আল্লাহর বাণীঃ وإن كنتم مرضى أو على سفر أو جاء أحد منكم من الغائط আর যদি তোমরা পীড়িত হও অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ শৌচ স্থান থেকে আসে ’’(৪: ৪৩)। صَعِيْدًا মাটির উপরি ভাগ। জাবির (রাঃ) বলেন যে সকল তাগুদের কাছে তারা বিচারের জন্য যেত তাদের একজন ছিল বুহাইনা গোত্রের, একজন আসলাম গোত্রের এবং এভাবে প্রত্যেক গোত্রে এক-একজন করে তাগুত ছিল। তারা হচ্ছে গণক। তাদের কাছে শয়তান আসত।
‘উমার (রাঃ) বলেন, الْجِبْتُ জাদু, وَالطَّاغُوْتُ শায়তান। ‘ইকরামাহ (রাঃ) বলেন, হাবশী ভাষায় শায়ত্বনকে الْجِبْتُ বলা হয়। আর গণককে طَّاغُوْتُ বলা হয়।
হাদিস নম্বরঃ ৪২২৮ | 4228 | ٤۲۲۸
পরিচ্ছদঃ ২৩৩৫. আল্লাহর বাণীঃ যখন প্রত্যেক উম্মত হতে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকে ওদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব তখন কী অবস্থা হবে (৪ ঃ ৪১) الْخَتَّالُ الْمُخْتَالُ একই অর্থে ব্যবহৃত, দাম্ভিক। نَطْمِسَ সমান করে দেব। শেষ পর্যন্ত তাদের গর্দানের পশ্চাৎদিকের মতো হয়ে যাবে। طَمَسَ الْكِتَابَ কিতাবের লেখা মুছে ফেলা। سَعِيْرًا জ্বলন্ত।
৪২২৮। মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার নিকট থেকে আসমা (রাঃ) এর একটি হার হারিয়ে গিয়েছিল। তা খোজতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকজন লোক পাঠিয়েছিলেন। তখন সালাত (নামায/নামাজ)-এর সময় হল, তাদের কাছে পানি ছিল না। আবার ওযুর পানিও পেলেন না। এরপর বিনা ওযুতে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে ফেললেন। তখন আল্লাহ তাআলা তায়াম্মুমের বিধান নাযিল করলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২২৯ | 4229 | ٤۲۲۹
পরিচ্ছদঃ ২৩৩৬. আল্লাহর বাণীঃ হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আনুগত্য কর রাসুলের এবং তাদের, যারা তোমাদের মধ্যে ক্ষমতার অধিকারী। কোন বিষয়ে তোমাদের মতভেদ থাকলে তা উপস্থিত কর, আল্লাহ ও রাসুলের কাছে তা-ই উত্তম এবং পরিনামে প্রকৃষ্টতর (৪ঃ ৫৯) وَأُولِي الأَمْرِ – দায়িত্বশীল।
৪২২৯। সাদাকাহ ইবনু ফাযল (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন যে, أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الأَمْرِ مِنْكُمْ আয়াতটি নাযিল হয়েছে আবদুল্লাহ ইবনু হুযাফা ইবনু কায়স ইবনু আদী সম্পর্কে যখন তাঁকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি সৈন্য দলের প্রধান করে প্রেরণ করেছিলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৩০ | 4230 | ٤۲۳۰
পরিচ্ছদঃ ২৩৩৭. আল্লাহর বাণীঃ কিন্তু না, আপনার প্রতিপালকের শপথ! তারা মুমিন হবে না, যতক্ষন পর্যন্ত তারা তাদের নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিচারাভার আপনার উপর অর্পণ না করে; এরপর আপনার সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে তাদের মনে কোন দ্বিধা না থাকে এবং সর্বান্তকরনে তা মেনে না নেয় (৪ঃ ৬৫)
৪২৩০। ‘আলী ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) … উরওয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, হারব বা মদিনার কঙ্করময় ভূমিতে একটি পানির নালা নিয়ে একজন আনসার যুবায়র (রাঃ) এর সাথে ঝগড়া করছিলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে যুবায়র! প্রথমত তুমি তোমার জমিতে পানি দাও, তারপর তুমি প্রতিবেশীর জমিতে পানি ছেড়ে দিবে। আনসারী বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে আপনার ফুফাত ভাই, তাই এই ফয়সালা দিলেন। এতে অসন্তুষ্টিবশত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারা রক্তিম হয়ে গেল। তারপর তিনি বললেন, হে যুবায়র! তুমি পানি চালাবে তারপর আইল পর্যন্ত ফিরে না আসা পর্যন্ত তা আটকে রাখবে তারপর প্রতিবেশীর জমির দিকে ছাড়বে।
আনসারী যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে রাগিয়ে তুললেন তখন তিনি তার হক পুরোপুরি যুবায়র (রাঃ) কে প্রদানের জন্য স্পষ্ট নির্দেশ দিলেন। তাদেরকে প্রথমে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন একটি নির্দেশ দিয়েছিলেন যাতে উদারতা ছিল।
যুবায়র (রাঃ) বলেন, فَلاَ وَرَبِّكَ لاَ يُؤْمِنُونَ حَتَّى يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ আয়াতটি এই উপলক্ষে নাযিল হয়েছে বলে আমার ধারনা।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৩১ | 4231 | ٤۲۳۱
পরিচ্ছদঃ ২৩৩৮. আল্লাহর বাণীঃ কেউ আল্লাহএবং রসূলের আনুগত্য করে ……… যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন। (সূরাহ আন-নিসা ৪ঃ ৬৯)
৪২৩১। মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু হাওশাব (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন যে, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, প্রত্যেক নাবী অন্তিম সময়ে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লে তাকে দুনিয়া ও আখিরাতের যে কোন একটি নির্বাচন করার এখতিয়ার দেওয়া হয়। যে অসুস্থতায় তাকে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে সে অসুস্থতায় তাঁর ভিষণ শাসকষ্ট আরম্ভ হয়েছিল। সে সময় আমি তাঁকে مَعَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ مِنَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِينَ [তাঁরা নাবীগণ, সত্যনিষ্ঠ শহীদ ও সৎকর্মপরায়ন যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন, তাঁদের সঙ্গী হবেন (৪: ৬৯)] বলতে শুনেছি। এরপর আমি বুঝে নিয়েছি যে তাঁকে ইখতিয়ার (শাসকষ্ট) দেওয়া হয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৩২ | 4232 | ٤۲۳۲
পরিচ্ছদঃ ২৩৩৯. আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের কী হল যে, তোমরা যুদ্ধ করবে না আল্লাহর পথে এবং অসহায় নর-নারী ও শিশুগণের জন্য … যার অধিবাসী জালিম (৪ঃ ৭৫)
৪২৩২। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … ‘উবায়দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন যে, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছি তিনি বলেছিলেন যে, আমি এবং আমার আম্মা (আয়াতে উল্লিখিত) অসহায়দের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৩৩ | 4233 | ٤۲۳۳
পরিচ্ছদঃ ২৩৩৯. আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের কী হল যে, তোমরা যুদ্ধ করবে না আল্লাহর পথে এবং অসহায় নর-নারী ও শিশুগণের জন্য … যার অধিবাসী জালিম (৪ঃ ৭৫)
৪২৩৩। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … ইবনু আবূ মূলায়কা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) الاَّ الْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ وَالْوِلْدَانِ ‘‘তবে যেসব অসহায় পুরুষ, নারী ও শিশু (৪ঃ ৯৮) আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন এবং বললেন, আল্লাহ যাদের অক্ষমতা অনুমোদন করেছেন আমি এবং আমার আম্মা তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত حَصِرَتْ সংকুচিত হয়েছে। تَلْوُوا أَلْسِنَتَكُمْ بِالشَّهَادَةِ সাক্ষ্য দিতে তাদের জিহবা বক্র হয়। الْمُرَاغَمُ الْمُهَاجَرُ হিজরতের স্থান, رَاغَمْتُ قَوْمِي আমার গোত্রকে ছেড়ে দিয়েছি, مَوْقُوتًا এবং مُوَقَّتًا তাদের উপর সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৩৪ | 4234 | ٤۲۳٤
পরিচ্ছদঃ ২৩৪০. আল্লাহর বাণীঃ “তোমাদের কী হল যে, তোমরা মুনাফিকদের সম্বন্ধে দু’দল হয়ে গেলে! যখন আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের জন্যে পুর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছেন (৪ঃ ৮৮) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, بَدَّدَهُمْ-তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করেছেন, فِئَةٌ-দল।
৪২৩৪। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত, فَمَا لَكُمْ فِي الْمُنَافِقِينَ فِئَتَيْنِ উহুদের যুদ্ধ থেকে একদল লোক দল ত্যাগ করে ফিরে এসেছিল, এরপর তাদের ব্যাপারে লোকেরা দু’দল হয়ে গেল, একদল বলেছে তাদেরকে হত্যা করে ফেল; অপর দল বলছিল তাদেরকে হত্যা করো না, তখন নাযিল হলঃ فَمَا لَكُمْ فِي الْمُنَافِقِينَ فِئَتَيْنِ অর্থাৎ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এই মদিনা হচ্ছে পবিত্র স্থান, আগুন যেভাবে রোপ্যের কালিমা বিদূরিত করে এটাও খবিস ও অসৎদেরকে বিদূরিত করে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৩৫ | 4235 | ٤۲۳۵
পরিচ্ছদঃ ২৩৪২. আল্লাহর বাণীঃ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মু’মিনগণকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম (৪ঃ ৯৩)
২৩৪১. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহর বাণীঃ যখন শাস্তি অথবা শঙ্কার কোন সংবাদ তাদের কাছে আসে তখন তারা তা প্রচার করে থাকে (৪ঃ ৮৩) أذاعوا به তা প্রচার করে দেয়, يستنبطونه খুজে বের করে, حسيبا যথেষ্ট, إناثا মৃত, পাথর হোক কিংবা মাটি অথবা এ রকম কিছু مريدا বিদ্রোহী, قيلا আর قولا একই অর্থাৎ বলা, طبع সীলকৃত।
৪২৩৫। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) … সাঈদ ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন যে, এই আয়াত সম্পর্কে কূফাবাসীগণ ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করল। (কেউ বলেন তা মনসূখ, কেউ বলেন মনসূখ নয়, এরপর এর সমাধানের জন্য) আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর কাছে গেলাম এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, উত্তরে তিনি বললেন, وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ আয়াতটি অবতীর্ন হয়েছে এবং এটি শেষের দিকে অবতীর্ন আয়াত; এটাকে কোন কিছু মনসূখ করেনি।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৩৬ | 4236 | ٤۲۳٦
পরিচ্ছদঃ ২৩৪৩. আল্লাহর বাণীঃ কেউ তোমাদেরকে সালাম করলে তাকে বলো না ‘তুমি মু’মিন নও’ (৪ঃ ৯৪)
৪২৩৬। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন যে, وَلاَ تَقُولُوا لِمَنْ أَلْقَى إِلَيْكُمُ السَّلاَمَ لَسْتَ مُؤْمِنًا আয়াতের ঘটনা হচ্ছে এই যে, এক ব্যাক্তির কিছু সংখ্যক ছাগল ছিল, মুসলিমদের সাথে তাদের সাক্ষাত ঘটায় সে তাদেরকে বলল “আসসালামু আলাইকুম”, মুসলিমরা তাকে হত্যা করল এবং তার ছাগলগুলো হস্তগত করে ফেলল, এই প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা এই আয়াত নায়িল করলেন عَرَضَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا تِلْكَ الْغُنَيْمَةُ
”হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন আল্লাহর পথে সফর কর, তখন যাচাই করে নিও এবং যে, তোমাদেরকে সালাম করে তাকে বলো না যে, তুমি মুসলমান নও। তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদ অন্বেষণ কর, বস্তুতঃ আল্লাহর কাছে অনেক সম্পদ রয়েছে। তোমরা ও তো এমনি ছিলে ইতিপূর্বে; অতঃপর আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। অতএব, এখন অনুসন্ধান করে নিও। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের কাজ কর্মের খবর রাখেন। ইহজীবনের সম্পদের আকাঙ্খায়-আর সে সম্পদ হচ্ছে এ ছাগল পাল।” (৪ঃ ৯৪)
আতা (রহঃ) বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) السَّلاَمَ পড়েছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৩৭ | 4237 | ٤۲۳۷
পরিচ্ছদঃ ২৩৪৪. আল্লাহর বাণীঃ মু’মিনদের মধ্যে যারা অক্ষম নয় অথচ ঘরে বসে থাকে ও যারা আল্লাহর পথে স্বীয় ধন-প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে তারা সমান নয় (৪ঃ ৯৫)
৪২৩৭। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে لاَ يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ আয়াতটি লেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি আমাকে বলে যাচ্ছিলেন এমতাবস্থায় উম্মে মাকতুম (রাঃ) তাঁর কাছে আগমন করলেন এবং বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ যদি আমি জিহাতে সক্ষম হতাম তা হলে অবশ্যই জিহাদ করতাম। তিনি অন্ধ ছিলেন। এরপর আল্লাহ তাআলা তাঁর রাসূলের উপর ওহী অবতীর্ন করলেন, এমতাবস্থায় যে তাঁর উরু আমার উরুর উপর ছিল আর তা আমার কাছে এতই ভারী অনুভুত হচ্ছিল যে, আমি আমার উরু থেতলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছিলাম। তারপর তাঁর থেকে এই অবস্থা কেটে গেল, আর আল্লাহ তাআলা নাযিল করলেনঃ غَيْرَ أُولِي الضَّرَرِ অক্ষমদের ব্যতীত। (৪ঃ ৯৫)
হাদিস নম্বরঃ ৪২৩৮ | 4238 | ٤۲۳۸
পরিচ্ছদঃ ২৩৪৪. আল্লাহর বাণীঃ মু’মিনদের মধ্যে যারা অক্ষম নয় অথচ ঘরে বসে থাকে ও যারা আল্লাহর পথে স্বীয় ধন-প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে তারা সমান নয় (৪ঃ ৯৫)
৪২৩৮। হাফস ইবনু ‘উমর (রহঃ) … বারা‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেলেন, যখন لاَ يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ আয়াতটি নাযিল হল, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যায়দ (রাঃ) কে ডাকলেন। তিনি তা লিখে নিলেন। ইবনু উম্মে মাকতুম (রাঃ) এসে তাঁর দৃষ্টিহীনতার ‘ওযর পেশ করলেন, আল্লাহ তাআলা নাযিল করলেনঃ غَيْرَ أُولِي الضَّرَرِ অক্ষমদের ব্যতীত। (৪ঃ ৯৫)
হাদিস নম্বরঃ ৪২৩৯ | 4239 | ٤۲۳۹
পরিচ্ছদঃ ২৩৪৪. আল্লাহর বাণীঃ মু’মিনদের মধ্যে যারা অক্ষম নয় অথচ ঘরে বসে থাকে ও যারা আল্লাহর পথে স্বীয় ধন-প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে তারা সমান নয় (৪ঃ ৯৫)
৪২৩৯। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … বারা‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন যে, لاَ يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ আয়াতটি যখন নাযিল হল, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন অমুককে ডেকে আন। এরপর দোয়াত, কাঠ অথবা হাড় খন্ড নিয়ে তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসলেন। তিনি বললেন, লিখে নাওঃ لاَ يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পেছনে ছিলেন ইবনু উম্মে মাকতুম (রাঃ)। তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি দৃষ্টিহীন। এরপর তখনই অবতীর্ন হলঃ لاَ يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ غَيْرُ أُولِي الضَّرَرِ وَالْمُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ
হাদিস নম্বরঃ ৪২৪০ | 4240 | ٤۲٤۰
পরিচ্ছদঃ ২৩৪৪. আল্লাহর বাণীঃ মু’মিনদের মধ্যে যারা অক্ষম নয় অথচ ঘরে বসে থাকে ও যারা আল্লাহর পথে স্বীয় ধন-প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে তারা সমান নয় (৪ঃ ৯৫)
৪২৪০। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) অবহিত করেছেন যে, বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী আর বদরের যুদ্ধে অনুপস্থিত মু’মিনগণ সমান নয়।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৪১ | 4241 | ٤۲٤۱
পরিচ্ছদঃ ২৩৪৫. আল্লাহর বাণীঃ যারা নিজেদের উপর জুলুম করে তাদের প্রাণ গ্রহণের সময় ফেরেশতাগণ বলে, তোমরা কী অবস্থায় ছিলে? তারা বলে, দুনিয়ায় আমরা অসহায় ছিলাম; তারা বলে, দুনিয়া কি এমন প্রশস্ত ছিল না যেথায় তোমরা হিজরত করতে? (৪ঃ ৯৭)
৪২৪১। আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ মুকরী (রহঃ) … আবূল আসওয়াদ ইবনু মুহাম্মদ ইবনু আবদুর রাহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন যে, একদল সৈন্য পাঠানোর জন্য মদিনাবাসীদের উপর নির্দেশ জারি করা হল, এরপর আমাকেও তাতে অন্তর্ভূক্ত করা হল। আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর মুক্ত গোলাম ইকরামের সাথে সাক্ষাৎ করলাম এবং তাঁকে এ ব্যাপারে অবহিত করলাম। তিনি আমাকে এ ব্যাপারে কঠোরভাবে নিষেধ করলেন, তারপর বললেন, কিছুসংখ্যক মুসলিম মুশরিকদের সাথে থেকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিরুদ্ধে মুশরিকদের দল ভারী করেছিল, তীর এসে তাদের কারো উপর পতিত হতো এবং তাকে মেরে ফেলত অথবা তাদের কেউ মার খেত এবং নিহত হত তখন আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ন করলেনঃ إِنَّ الَّذِينَ تَوَفَّاهُمُ الْمَلاَئِكَةُ ظَالِمِي أَنْفُسِهِمْ আবূল আসওয়াদ থেকে লাইস এটা বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৪২ | 4242 | ٤۲٤۲
পরিচ্ছদঃ ২৩৪৬. আল্লাহর বাণীঃ তবে সেসব অসহায় পুরুষ, নারী ও শিশু কোন উপায় অবলম্বন করতে পারে না এবং কোন পথও পায় না (৪ঃ ৯৮)
৪২৪২। আবূ নু‘মান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, إِلاَّ الْمُسْتَضْعَفِينَ সম্পর্কে তিনি বলেছেন যে, আল্লাহর তা‘আলা যাদের অক্ষমতা কবূল করেছেন আমার মাতা তাঁদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৪৩ | 4243 | ٤۲٤۳
পরিচ্ছদঃ ২৩৪৭. আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ অচিরেই তাদের পাপ মোচন করব্রেন, আল্লাহ পাপ মোচনকারী, ক্ষমাশীল (৪ঃ ৯৯)
৪২৪৩। আবূ নু‘আইম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘ইশার সালাত (নামায/নামাজ) পড়েছিলেন, তিনি সামি আল্লাহলিমান হামিদা বললেন, তারপর সিজদা করার পূর্বে বললেন, হে আল্লাহ! আয়্যাশ ইবনু আবূ রাবিয়াকে মুক্ত করুন, হে আল্লাহ! সালামা ইবনু হিশামকে মুক্ত করুন, হে আল্লাহ, ওয়ালিদ ইবনু ওয়ালিদকে মুক্ত করুন, হে আল্লাহ! অসহায় মু’মিনদেরকে মুক্ত করুন, হে আল্লাহ, মুযার গোত্রের উপর কঠিন শাস্তি নাযিল করুন, হে আল্লাহ! এটাকে ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর যুগের দূর্ভিক্ষে রূপান্তরিত করুন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৪৪ | 4244 | ٤۲٤٤
পরিচ্ছদঃ ২৩৪৮. আল্লাহর বাণীঃ যদি তোমরা বৃষ্টির কারণে কষ্ট পাও অথবা পীড়িত থাক তবে তোমরা অস্র রেখে দিলে তোমাদের কোন দোষ নেই (৪ঃ ১০২)
৪২৪৪। আবূল হাসান ইবনু মুহাম্মদ মুকাতিল (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, إِنْ كَانَ بِكُمْ أَذًى مِنْ مَطَرٍ أَوْ كُنْتُمْ مَرْضَى তিনি বলেছেন যে আবদুর রাহমান ইবনু ‘আউফ (রাঃ) আহত ছিলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৪৫ | 4245 | ٤۲٤۵
পরিচ্ছদঃ ২৩৪৯. আল্লাহর বাণীঃ লোকে আপনার কাছে নারীদের বিষয়ে ব্যবস্থা জানতে চায় আপনি বলুন আল্লাহই তাদের সম্বন্ধে তোমাদেরকে জানিয়ে দিচ্ছেন, এবং ইয়াতীম নারীদের সম্পর্কে (যাদের প্রাপ্য তোমরা প্রদান কর না অথচ তোমরা তাদেরকে বিয়ে করতে চাও, অসহায় শিশুদের সম্বন্ধে এবং ইয়াতীমদের প্রতি তোমাদের ন্যায় বিচার সম্পর্কে) যা কিতাবে শোনানো হয় (৪ঃ ১২৭)
৪২৪৫। ‘উবায়দ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, وَيَسْتَفْتُونَكَ فِي النِّسَاءِ قُلِ اللَّهُ يُفْتِيكُمْ فِيهِنَّ} إِلَى قَوْلِهِ {وَتَرْغَبُونَ أَنْ تَنْكِحُوهُنَّ আয়াত সম্পর্কে তিনি বলেছেন যে, সে হচ্ছে ঐ ব্যাক্তি যার নিকট ইয়াতীম বালিকা থাকে সে তার অভিভাবক এবং তার মুরুব্বি এরপর সেই বালিকা সেই অভিভাবকের অংশিদার হয়ে যায়, এমনকি খেজুর বৃক্ষেও। সে ব্যাক্তি তাকে বিবাহ করা থেকে বিরত থাকে এবং অন্য কারো নিকট বিয়ে দিতেও অপছন্দ করে এ আশংকায় যে, তার সেই সম্পত্তিতে বালিকা অংশীদার সেই সম্পত্তিতে তৃতীয় ব্যাক্তি অংশীদার হয়ে যাবে। এভাবে সেই ব্যাক্তি ঐ বালিকাকে আবদ্ধ করে রাখে। তাই এই আয়াত অবতীর্ন হয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৪৬ | 4246 | ٤۲٤٦
পরিচ্ছদঃ ২৩৫০. কোন স্ত্রী যদি তার স্বামীর দুর্ব্যবহার ও উপেক্ষার আশংকা করে (৪ঃ ১২৮) ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেছেন, شِقَاقٌ পরস্পর ঝগড়া-বিবাদ, وَأُحْضِرَتْ الْأَنْفُسُ الشُّحَّ কোন বস্তুর প্রতি অত্যধিক আশঙ্কা বা লোভ করা, كَالْمُعَلَّقَةِ সধবাও নয়, বিধবাও নয়। نُشُوْزًا হিংসা।
৪২৪৬। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, وَإِنِ امْرَأَةٌ خَافَتْ مِنْ بَعْلِهَا نُشُوزًا أَوْ إِعْرَاضًا আয়াত সম্পর্কে তিনি বলেছেন, যে কোন ব্যাক্তির যাওযিয়তে কোন মহিলা থাকে কিন্তু স্বামী তার প্রতি আকৃষ্ট নয় বরং তাকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে চায়, তখন স্ত্রী বলে আমার এই এই পাওনা আমি তোমাকে অব্যাহতি দিচ্ছি, এতদুপলক্ষে এ আয়াত নাযিল হল।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৪৭ | 4247 | ٤۲٤۷
পরিচ্ছদঃ ২৩৫১. আল্লাহর বাণীঃ মুনাফিকগণ তো জাহান্নামের নিন্মতম স্তরে থাকবে (৪ঃ ১৪৫) ইবনু ‘আববাস (রাঃ) أَسْفَلَ النَّارِ সম্বন্ধে পদের সঙ্গে পড়েছেন। نَفَقًا ভূগর্ভ, সুড়ঙ্গ।
৪২৪৭। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আসওয়াদ (রহঃ) বলেছেন, আমরা আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) এর মজলিশে ছিলাম, সেখানে হুযায়ফা আসলেন এবং আমাদের সম্মুখে দন্ডায়মান হয়ে সালাম দিলেন। এরপর বললেন, তোমাদের চেয়ে উত্তম গোত্রের উপরও মুনাফিকী এসেছিল পরীক্ষাসরূপ। আসওয়াদ বললেন, সুবহানাল্লাহ! অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘মুনাফিকগণ জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে থাকবে’’ হুযায়ফা (রাঃ) এর সত্য প্রকাশে আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হেসে উঠলেন। হুযায়ফা (রাঃ) মসজিদের এক কোনে গিয়ে বসলেন, আবদুল্লাহ (রাঃ) উঠে গেল তাঁর শাগরিদরাও চলে গেলেন। এরপর হুযায়ফা (রাঃ) আমার দিকে একটি পাথর টুকরো নিক্ষেপ করে আমাকে ডাকলেন। আমি তার নিকট গেলে তিনি বললেন, তাঁর নিছক হাশিতে আমি আশ্চর্য হলাম অথচ আমি যা বলেছি তা তিনি বুঝেছেন। এমন গোত্র যারা তোমাদের চেয়ে উত্তম তাদের উপর মুনাফিকী অবতরণ করা হয়েছিল। তারপর তারা তওবা করেছে এবং আল্লাহ তা‘আলা তাদের তওবা কবূল করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৪৮ | 4248 | ٤۲٤۸
পরিচ্ছদঃ ২৩৫২. আল্লাহর বাণীঃ তোমার নিকট ওহী প্রেরণ করেছি যেমন ইউনুস, হারুন এবং সুলাইমান (আঃ) এর নিকট ওয়াহী প্রেরণ করেছিলাম। (নিসা ৪ঃ ১৬৩)
৪২৪৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, ‘‘আমি ইউনুছ ইবনু মাত্তা (আলাইহিস সালাম) থেকে উত্তম’’ এটা বলা কারো উচিত নয়।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৪৯ | 4249 | ٤۲٤۹
পরিচ্ছদঃ ২৩৫২. আল্লাহর বাণীঃ তোমার নিকট ওহী প্রেরণ করেছি যেমন ইউনুস, হারুন এবং সুলাইমান (আঃ) এর নিকট ওয়াহী প্রেরণ করেছিলাম। (নিসা ৪ঃ ১৬৩)
৪২৪৯। মুহাম্মদ ইবনু সিনান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, যে ব্যাক্তি বলে “আমি ইউনুছ ইবনু মাত্তা থেকে উত্তম” সে মিথ্যা বলে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৫০ | 4250 | ٤۲۵۰
পরিচ্ছদঃ ২৩৫৩. আল্লাহর বাণীঃ লোকে তোমার নিকট ব্যবস্থা জানতে চায়। বল, পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি সম্বন্ধে তোমাদেরকে আল্লাহ ব্যবস্থা জানাচ্ছেন – কোন পুরুষ মারা গেলে সে যদি সন্তানহীন হয় এবং তার এক ভগ্নি থাকে তবে তার জন্য পরিত্যাক্ত সম্পত্তির অর্ধাংশ, এবং সে যদি সন্তানহীনা হয় তবে তার ভাই তার উত্তরাধিকারী হবে (৪ঃ ১৭৬) كَلَالَةِ যার পিতা কিংবা পুত্র উত্তরাধিকারী না থাকে مُكَلَّةُ النَّسَبِ বাক্য থেকে এটা ক্রিয়াপদ।
৪২৫০। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আবূ ইসহাক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। আমি ‘বারা (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, সর্বশেষ অবতীর্ন সূরা হচ্ছে ‘‘বারাআ’ত’’ এবং সর্বশেষ অবতীর্ন আয়াত হচ্ছে- يَسْتَفْتُونَكَ قل الله يفتيكم فى الكلالة
হাদিস নম্বরঃ ৪২৫১ | 4251 | ٤۲۵۱
পরিচ্ছদঃ ২৩৫৪. আল্লাহর বাণীঃ আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম। (৫ঃ ৩)
সুরা আল-মায়িদা
حُرُمٌ একবচনে حَرَامٌ নিষিদ্ধ অবস্থায় (৫ঃ ১), فَبِمَا نَقْضِهِمْ তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণ (আল-মায়িদাহ ৫/১৩), الَّتِيْ كَتَبَ اللهُ যা আল্লাহ নির্ধারণ করেছেন, تَبُوْءُ বহন করবে, অন্য একজন বলেছেন الإِغْرَاءُ শক্তিশালী করে দেয়া, دَائِرَةٌ ওলট-পালট, أُجُوْرَهُنَّ তাদের মাহর, مَخْمَصَةٍ ক্ষুধার তাড়নায় (৫ঃ ৩)।
(হে কিতাবীগণ) তাওরাত, ইনজিল ও যাহা তোমাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তোমরা তা প্রতিষ্ঠিত না করা পর্যন্ত তোমাদের কোন ভিত্তিই নেই (৫ঃ ৬৮)
সুফ্ইয়ান সাওরী (রহঃ) বলেন, আমার দৃষ্টিতে কুরআন মাজীদে لَسْتُمْ عَلٰى شَيْءٍ حَتّٰى تُقِيْمُوا التَّوْرَاةَ وَالْإِنْجِيْلَ وَمَآ أُنْزِلَ إِلَيْكُمْ مِّنْ رَّبِّكُمْ مَّخْمَصَةٍ আয়াতটির চেয়ে কঠোর অন্য কোন আয়াত নেই। مَنْ أَحْيَاهَا আর যে কেউ কারো জীবন রক্ষা করল, সে যেন সমস্ত মানুষের জীবন রক্ষা করল- (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৩২)। شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا আইন ও স্পষ্ট পথ, নিয়ম- (৫ঃ ৪৮) مُهَيْمِنُ আমানতদার, কুরআন তার পূর্বের কিতাবসমূহের আমানতদার। (৫ঃ ৪৮)
৪২৫১। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … তারিক ইবনু শিহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, ইহুদীগণ ‘উমর ফারুক (রাঃ) কে বলল যে, আপনারা এমন একটি আয়াত পড়ে থাকেন তা যদি আমাদের মধ্যে অবতীর্ন হত, তবে আমরা সেটাকে “ঈদ” করে রাখতাম। উমর (রাঃ) বললেন, এটা কখন অবতীর্ন হয়েছে, কোথায় অবতীর্ন হয়েছে এবং নাযিলের সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোথায় ছিলেন, আল্লাহর শপথ আমরা সবাই ‘আরাফাতে ছিলা, সেই আয়াতটি হল- الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ
হাদিস নম্বরঃ ৪২৫২ | 4252 | ٤۲۵۲
পরিচ্ছদঃ ২৩৫৫. আল্লাহর বাণীঃ এবং যদি পানি না পাও তবে পবিত্র মাটির দ্বারা তায়াম্মুম করবে (৫ঃ ৬)
تَيَمَّمُوْا তোমরা ইচ্ছে করবে, آمِّيْنَ উদ্দেশ্য করে, أَمَّمْتُ আর تَيَمَّمْتُ একই, আমি ইচ্ছে করেছি, ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন- وَ اللَّاتِيْ دَخَلْتُمْ بِهِنَّ، تَمَسُّوْهُنَّ، لَمَسْتُمْ এবং وَالإِفْضَاءُ এই চারটিরই অর্থ সহবাস করা।
৪২৫২। ইসমাঈল (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পত্নী আয়িশা (রাঃ) বলেছেন যে, আমরা সবাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে এক সফরে বের হলাম, বায়দা কিংবা বায়তুল জায়শ নামক স্থানে পৌছার পর আমর গলার হার হারিয়ে গেল। তা খোজার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তথায় অবস্থান করলেন এবং অন্যান্যলোকও তাঁর সাথে অবস্থান করল। সেখানেও কোন পানি ছিল না এবং তাদের সাথেও পানি ছিল না। এরপর লোকেরা আবূ বকর (রাঃ) এর কাছে আসল এবং বলল, আয়িশা (রাঃ) যা করেছেন আপনি তা দেখেছেন কি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সকল লোককে আটকিয়ে রেখেছেন, অথচ তাদের কাছেও পানি নেই আবার সেখানেও পানি নেই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঊরুতে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিলেন। এমতাবস্থায় আবূ বকর (রাঃ) এলেন এবং বললেন, তুমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সকল লোককে আটকে রেখেচ অথচ সেখানেও পানি নেই আবার তাদের সাথেও পানি নেই।
আয়িশা (রাঃ) বললেন যে, আবূ বকর (রাঃ) আমাকে দোষারূপ করলেন এবং আল্লাহ যা চেয়েছেন তা বলেছেন এবং তাঁর অঙ্গুলি দিয়ে আমার কোমরে ঠুসি দিতে লাগলেন, আমার কোলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবস্থানই আমাকে পালিয়ে যেতে বাধা দিয়েছে। পানিবিহীন অবস্থায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে উঠলেন। এরপর فتيمموا বলে আল্লাহ তা‘আলা তায়াম্মুমোর আয়াত নাযিল করলেন, তখন উসায়দ ইবনু হুযায়র বলেছেন, হে আবূ বকর এর বংশধর! এটা আপনাদের প্রথম মাত্র বরকত নয়। আয়িশা (রাঃ) বললেন, যে উটের উপর আমি ছিলাম, তাকে আমরা উঠালাম তখন দেখি হারটি তার নিচে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৫৩ | 4253 | ٤۲۵۳
পরিচ্ছদঃ ২৩৫৫. আল্লাহর বাণীঃ এবং যদি পানি না পাও তবে পবিত্র মাটির দ্বারা তায়াম্মুম করবে (৫ঃ ৬)
৪২৫৩। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, মদিনায় প্রবেশের পথে বায়দা নামক স্থানে আমার গলার হারটি পড়ে গেল। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে উট বসিয়ে অবস্থান করলেন। তিনি আমার কোলে মাথা রেখে শুয়েছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) এসে আমাকে কঠোরভাবে থাপ্পর লাগালেন এবং বললেন একটি হার হারিয়ে তুমি সকল লোককে আটকে রেখেছ। এদিকে তিনি আমাকে ব্যথা দিয়েছেন, অপর দিকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অবস্থায় আছেন, এতে আমি মৃত্যু যাতনা ভোগ করছিলাম। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাগ্রত হলেন, ফজর সালাত (নামায/নামাজ)-এর সময় হল এবং পানি খোজ করে পাওয়া গেল না, তখন নাযিল হলঃ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلاَةِ الآيَةَ হে মু’মিনগণ, যখন তোমরা সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত কণুই পর্যন্ত ধৌত করবে। (৫ঃ ৬)
এরপর উসায়দ ইবনু হুযায়র বললেন, হে আবূ বকরের বংশধর! আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের কারণে মানুষের জন্য বরকত নাযিল করেছেন। তোমাদের আপাদ মস্তক তাদের জন্য বরকতই বরকত।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৫৪ | 4254 | ٤۲۵٤
পরিচ্ছদঃ ২৩৫৬. আল্লাহর বাণীঃ সুতরাং তুমি ও তোমার প্রতিপালক যাও এবং যুদ্ধ কর, আমরা এখানে বসে থাকব (৫ঃ ২৪)
৪২৫৪। আবূ নু‘আঈম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন যে, বদর যুদ্ধের দিন মিকদাদ (রাঃ) বলেীছলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ইসরাঈলীরা মূসা (আলাইহিস সালাম) কে যে রকম বলেছিল, ‘‘যাও তুমি ও তোমার প্রতিপালক যুদ্ধ কর, আমরা এখানে বসে থাকব’’ আমরা আপনাকে সে রকম বলব না বরং আপনি অগ্রসর হোন, আমরা সবাই আপনার সাথেই আছি, তখন যেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সব দুশ্চিন্তা দূর হয়ে গেল।
এই হাদীসটি ওয়াকা-সুফিয়ান থেকে, তিনি মুখারিক থেকে এবং তিনি (মুখারিক) তারিক থেকে বর্ণণা করেছেন যে, মিকদাদ এটা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলেছিলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৫৫ | 4255 | ٤۲۵۵
পরিচ্ছদঃ ২৩৫৭. আল্লাহর বাণীঃ যারা আল্লাহ ও তার রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কার্য করে বেড়ায় তাদের শাস্তি এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা ক্রুশবিদ্ধ করা হবে অথবা বিপরীত দিক হতে তাদের হাত পা কেটে ফেলা হবে অথবা তাদেরকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে (দুনিয়ায় এটাই তাদের লাঞ্চনা ও আখিরাতে তাদের জন্য মহাশাস্তি রয়েছে) (৫ঃ ৩৩) [ الْمُحَارَبَتُ لِلَّهِ الْكُفْرُبِهِ ]-আল্লাহর সাথে কুফরী করা।
৪২৫৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ কিলাবা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি উমর ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) এর পেছনে উপবিষ্ট ছিলেন। তাঁরা কিসামাত দন্ড সম্পর্কিত হাদীসটি আলোচনা করলেন এবং এর অবস্থা সম্পর্কে আলাপ করলেন, তারা মৃত্যুদন্ডের পক্ষে বললেন এবং এও বললেন যে, খুলাফায়ে রাশেদীন এ পদ্ধতিতে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেছেন। এরপর তিনি আবূ কিলাবার প্রতি তাকালেন, আবূ কিলাবা তাঁর পেছনে ছিলেন। তিনি আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ নামে কিংবা আবূ কিলাবা নামে ডেকে বললেন, এই ব্যাপারে তোমার মতামত কি? আমি বললাম বিয়ের পর ব্যভিচার, কিসাসবিহীন খুন এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনার কোন একটি ব্যতীত অন্য কোন কারণে কাউকে মৃত্যুদন্ড দেয়া ইসলামে বৈধ বলে আমার জানা নেই।
আনবাসা বললেন, আনাস (রাঃ) আমাদেরকে এভাবে হাদীস বর্ণনা করেছেন (অর্থাৎ হাদীসে আরনিন।) আমি (আবূ কিলাবা) বললাম, আমাকেও আনাস (রাঃ) এই হাদীস বর্ণণা করেছেন। তিনি বলেছেন, একদল লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে এসে তাঁর সাথে আলাপ করল, তারা বলল, (প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে) আমরা এদেশের সাথে মিলতে পারছি না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এগুলো আমার উট, ঘাস খাওয়ানোর জন্য বের হচ্ছে, তোমরা এগুলোর সাথে যাও এবং এদের দুধ ও পস্রাব পান কর। তারা ওগুলোর সাথে বেরিয়ে গেল এবং দুধ ও প্রসাব পান করে সুস্থ হয়ে উঠল, এরপর রাখালের উপর আক্রমন করে তাকে হত্যা করে পশুগুলো লুট করে নিয়ে গেল।
মৃত্যুদন্ড ভোগ করার অপরাধসমূহ তাদের থেকে কতটুকু দূরে ছিল? তারা নর হত্যা করেছে,আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ভয় দেখিয়েছে। আনবাসা আশ্চর্য হয়ে বলল, সুবহানাল্লাহ! আমি বললাম, আমার এ হাদীস সম্পর্কে তুমি কি আমাকে মিথ্যা অপবাদ দেবে? আনবাসা বলল, আনাস (রাঃ) আমাদেরকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন, আবূ কিলাবা বললেন, তখন ‘আনবাসা বলল, হে দেশবাসী (অর্থাৎ সিরিয়াবাসী) এ রকম ব্যাক্তিবর্গ যতদিন তোমাদের মধ্যে থাকবে ততদিন তোমরা কল্যাণের মধ্যে থাকবে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৫৬ | 4256 | ٤۲۵٦
পরিচ্ছদঃ ২৩৫৮. আল্লাহর বাণীঃ এবং যখমের বদল অনুরূপ যখম (৫ঃ ৪৫)
৪২৫৬। মুহাম্মদ ইবনু সাল্লাম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রুবাই যিনি আনাস (রাঃ) এর ফুফু, এক আনসার মহিলার সামনের একটি বড় দাঁত ভেঙ্গে ফেলেছিল। এরপর আহত মহিলার গোত্র এর কিসাস দাবি করে। তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলো, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিসাসের নির্দেশ দিলেন, আনাস ইবনু মালিক এর চাচা আনাস ইবনু নযর বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ রুবাই এর দাত ভাঙ্গা হবে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আনাস! আল্লাহর কিতাব তো ‘বদলা’র বিধান দেয়। পরবর্তীতে বিরোধী পক্ষ রাযী হয়ে মুক্তিপণ বা দিয়ত গ্রহণ করল। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর এমন কিছু বান্দা আছে যারা আল্লাহর নামে শপথ করলে আল্লাহ তা‘আলা তাদের শপথ সত্যে পরিণত করেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৫৭ | 4257 | ٤۲۵۷
পরিচ্ছদঃ ২৩৫৯. আল্লাহর বাণীঃ হে রাসুল! তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে যা তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রচার কর (৫ঃ ৬৭)
৪২৫৭। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন যে, যদি কেউ তোমাকে বলে যে, তাঁর অবতীর্ণ বিষয়ের যৎসামান্য কিছুও মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোপন করেছেন তা হলে নিশ্চিত যে, সে মিথ্যা বলেছে। আল্লাহ বলেছেন, হে রাসূল! তোমার প্রতিপালকের নিকট থেকে তোমর প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা তুমি প্রচার কর।’
হাদিস নম্বরঃ ৪২৫৮ | 4258 | ٤۲۵۸
পরিচ্ছদঃ ২৩৬০. আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না (৫ঃ ৮৯)
৪২৫৮। আলী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, لاَ يُؤَاخِذُكُمُ اللَّهُ بِاللَّغْوِ فِي أَيْمَانِكُمْ আয়াতটি নাযিল হয়েছে মানুষের উদ্দেশ্যবিহীন উক্তি لاَ وَاللَّهِ আল্লাহর শপথ, بَلَى وَاللَّهِ হ্যাঁ আল্লাহর শপথ ইত্যাদি উপলক্ষে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৫৯ | 4259 | ٤۲۵۹
পরিচ্ছদঃ ২৩৬০. আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না (৫ঃ ৮৯)
৪২৫৯। আহমদ ইবনু আবূ রাযা’ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তাঁর পিতা কোন শপথই ভঙ্গ করতেন না। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা শপথ ভঙ্গের কাফফারার বিধান নাযিল করলেন। আবূ বকর (রাঃ) বলেছেন, শপথকৃত কার্যের বিপরীতটি যদি আমি উত্তম ধারণা করি তবে আমি আল্লাহ প্রদত্ত সুযোগটি গ্রহণ করি এবং উত্তম কাজটি সম্পাদন করি।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৬০ | 4260 | ٤۲٦۰
পরিচ্ছদঃ ২৩৬১. আল্লাহর বাণীঃ হে মুমিনগণ ! আল্লাহ তোমাদের জন্যে উৎকৃষ্ট যেসব বস্তু হালাল করেছেন সেগুলোকে তোমরা হারাম করো না। (এবং সীমালঙ্ঘন করে না। আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীকে পছন্দ করেন না) (৫ঃ ৮৭)
৪২৬০। আমর ইবনু আউন (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন যে, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে যুদ্ধে বের হতাম, তখন আমাদের সাথে স্ত্রীগণ থাকত না, তখন আমরা বলতাম আমরা খাসি হয়ে যাব না? তিনি আমাদেরকে এ থেকে নিষেধ করলেন এং কাপড়ের বিনিময়ে হলেও মহিলাদেরকে বিয়ে করার অর্থাৎ নিকাহে মু‘আর অনুমতি দিলেন এবং পাঠ করলেনঃ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تُحَرِّمُوا طَيِّبَاتِ مَا أَحَلَّ اللَّهُ لَكُمْ
হাদিস নম্বরঃ ৪২৬১ | 4261 | ٤۲٦۱
পরিচ্ছদঃ ২৩৬২. আল্লাহর বাণীঃ হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজা, বেদী ও ভাগ্য নির্ণায়ক শর ঘৃণ্য বস্তু, শয়তানের কার্য (সুতরাং তোমরা তা বর্জন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার) (৫ঃ ৯০) ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেছেন, الْأَزْلَامُ সে সকল তীর যেগুলো দ্বারা তারা কর্মসমূহের ভাগ্য পরীক্ষা করে। النُّصُبُ বেদী, সেগুলো তারা প্রতিষ্ঠা করে এবং সেখানে পশু যবহ করে। অন্য কেউ বলেছেন الزَّلَمُ তীর, الْأَزْلَامُ এর একবচন, ভাগ্য পরীক্ষার পদ্ধতি এই যে, তীরটাকে ঘুরাতে থাকবে। তীর যদি নিষেধ করে তো বিরত থাকবে আর যদি তাকে কর্মের নির্দেশ দেয় তাহলে সে নির্দেশিত কাজ করে যাবে। তীরগুলোকে বিভিন্ন প্রকার চিহ্ন দ্বারা চিহ্নত করা হয় এবং তা দ্বারা তথাকথিত ভাগ্য পরীক্ষা করা হয়। এতদসম্পর্কে فَعَلْتُ-এর কাঠামোতে قَسَمْتُ ব্যবহার করা হয় অর্থাৎ আমি ভাগ্য যাচাই করেছি, এর ক্রিয়া হচ্ছে الْقُسُوْمُ
৪২৬১। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন মদ নিষিদ্ধ হওয়ার বিধান যখন নাযিল হল, তখন মদিনাতে পাঁচ প্রকারে মদের প্রচলন ছিল, আঙ্গুরের পানিগুলো এর অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৬২ | 4262 | ٤۲٦۲
পরিচ্ছদঃ ২৩৬২. আল্লাহর বাণীঃ হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজা, বেদী ও ভাগ্য নির্ণায়ক শর ঘৃণ্য বস্তু, শয়তানের কার্য (সুতরাং তোমরা তা বর্জন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার) (৫ঃ ৯০) ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেছেন, الْأَزْلَامُ সে সকল তীর যেগুলো দ্বারা তারা কর্মসমূহের ভাগ্য পরীক্ষা করে। النُّصُبُ বেদী, সেগুলো তারা প্রতিষ্ঠা করে এবং সেখানে পশু যবহ করে। অন্য কেউ বলেছেন الزَّلَمُ তীর, الْأَزْلَامُ এর একবচন, ভাগ্য পরীক্ষার পদ্ধতি এই যে, তীরটাকে ঘুরাতে থাকবে। তীর যদি নিষেধ করে তো বিরত থাকবে আর যদি তাকে কর্মের নির্দেশ দেয় তাহলে সে নির্দেশিত কাজ করে যাবে। তীরগুলোকে বিভিন্ন প্রকার চিহ্ন দ্বারা চিহ্নত করা হয় এবং তা দ্বারা তথাকথিত ভাগ্য পরীক্ষা করা হয়। এতদসম্পর্কে فَعَلْتُ-এর কাঠামোতে قَسَمْتُ ব্যবহার করা হয় অর্থাৎ আমি ভাগ্য যাচাই করেছি, এর ক্রিয়া হচ্ছে الْقُسُوْمُ
৪২৬২। ইয়াকূব ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, তোমরা যেটাকে ফাযীক অর্থাৎ কাঁচা খুরমা ভিজানো পানি নাম রেখেছ সেই ফাযিখ ব্যতীত আমাদের অন্য কোন মদ ছিল না। একদিন আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আবূ তালহা, অমুক এবং অমুককে তা পান করাচ্ছিলাম। তখনই এক ব্যাক্তি এসে বলল, আপনাদের কাছে এ সংবাদ এসেছে কি? তাঁরা বললেন, ঐ কি সংবাদ? সে বললঃ মদ হারাম করে দেয়া হয়েছে, তাঁরা বললেন, হে আনাস! এই পাত্রগুলো ঢেলে দাও। আনাস (রাঃ) বললেন যে, তাঁরা এতদ প্রসঙ্গে কিছু জিজ্ঞাসাও করলেন না এবং এই ব্যাক্তির সংবাদের পর তাঁরা দ্বিতীয়বার পান করেন নি।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৬৩ | 4263 | ٤۲٦۳
পরিচ্ছদঃ ২৩৬২. আল্লাহর বাণীঃ হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজা, বেদী ও ভাগ্য নির্ণায়ক শর ঘৃণ্য বস্তু, শয়তানের কার্য (সুতরাং তোমরা তা বর্জন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার) (৫ঃ ৯০) ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেছেন, الْأَزْلَامُ সে সকল তীর যেগুলো দ্বারা তারা কর্মসমূহের ভাগ্য পরীক্ষা করে। النُّصُبُ বেদী, সেগুলো তারা প্রতিষ্ঠা করে এবং সেখানে পশু যবহ করে। অন্য কেউ বলেছেন الزَّلَمُ তীর, الْأَزْلَامُ এর একবচন, ভাগ্য পরীক্ষার পদ্ধতি এই যে, তীরটাকে ঘুরাতে থাকবে। তীর যদি নিষেধ করে তো বিরত থাকবে আর যদি তাকে কর্মের নির্দেশ দেয় তাহলে সে নির্দেশিত কাজ করে যাবে। তীরগুলোকে বিভিন্ন প্রকার চিহ্ন দ্বারা চিহ্নত করা হয় এবং তা দ্বারা তথাকথিত ভাগ্য পরীক্ষা করা হয়। এতদসম্পর্কে فَعَلْتُ-এর কাঠামোতে قَسَمْتُ ব্যবহার করা হয় অর্থাৎ আমি ভাগ্য যাচাই করেছি, এর ক্রিয়া হচ্ছে الْقُسُوْمُ
৪২৬৩। সাদকা ইবনু ফাযল (রহঃ) … জাবির (রাঃ) বলেছেন যে, উহুদের যুদ্ধের দিন ভোরে কিছু লোক মদ পান করেছিলেন এবং সেদিন তারা সবাই শহীদ হয়েছেন। এই মদ্যপান ছিল তা হারাম হওয়ার পূর্বেকার ঘটনা।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৬৪ | 4264 | ٤۲٦٤
পরিচ্ছদঃ ২৩৬২. আল্লাহর বাণীঃ হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজা, বেদী ও ভাগ্য নির্ণায়ক শর ঘৃণ্য বস্তু, শয়তানের কার্য (সুতরাং তোমরা তা বর্জন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার) (৫ঃ ৯০) ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেছেন, الْأَزْلَامُ সে সকল তীর যেগুলো দ্বারা তারা কর্মসমূহের ভাগ্য পরীক্ষা করে। النُّصُبُ বেদী, সেগুলো তারা প্রতিষ্ঠা করে এবং সেখানে পশু যবহ করে। অন্য কেউ বলেছেন الزَّلَمُ তীর, الْأَزْلَامُ এর একবচন, ভাগ্য পরীক্ষার পদ্ধতি এই যে, তীরটাকে ঘুরাতে থাকবে। তীর যদি নিষেধ করে তো বিরত থাকবে আর যদি তাকে কর্মের নির্দেশ দেয় তাহলে সে নির্দেশিত কাজ করে যাবে। তীরগুলোকে বিভিন্ন প্রকার চিহ্ন দ্বারা চিহ্নত করা হয় এবং তা দ্বারা তথাকথিত ভাগ্য পরীক্ষা করা হয়। এতদসম্পর্কে فَعَلْتُ-এর কাঠামোতে قَسَمْتُ ব্যবহার করা হয় অর্থাৎ আমি ভাগ্য যাচাই করেছি, এর ক্রিয়া হচ্ছে الْقُسُوْمُ
৪২৬৪। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম হানজালী (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন যে, আমি ‘উমর (রাঃ) কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিম্বরে বসে বলতে শুনেছি যে, এরপর হে লোকসকল! মদপানের নিষেধাজ্ঞা অবতীর্ণ হয়েছে আর তা হচ্ছে পাঁচ প্রকার, খুরমা থেকে, আঙ্গুর, খেজুর থেকে, মধু থেকে, গম থেকে এবং যা থেকে আর মদ হচ্ছে যব সুস্থ ও জ্ঞানকে আচ্ছাদিত করে রাখে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৬৫ | 4265 | ٤۲٦۵
পরিচ্ছদঃ ২৩৬৩. আল্লাহর বাণীঃ যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তারা পূর্বে যা ভক্ষন করেছে তজ্জন্য তাদের কোন পাপ নেই, যদি তারা সাবধান হয় এবং ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, সাবধান হয় ও বিশ্বাস করে, পুনরায় সাবধান হয় এবং সৎকর্ম করে এবং আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের ভালবাসেন (৫ঃ ৯৩)
৪২৬৫। আবূ নু‘মান (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, ঢেলে দেয়া মদগুলো ছিল ফাযীখ। আবূ নু‘মান থেকে মুহাম্মদ ইবন সাল্লাম আরও অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন, আনাস (রাঃ) বলেছেন, আমি আবূ তালহা (রাঃ) এর ঘরে লোকদেরকে মদ পরিবেশন করছিলাম, তখনই মদের নিষেধাজ্ঞা অবতীর্ণ হল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন ঘোষককে তা প্রচারের নির্দেশ দিলেন। এরপর সে ঘোষণা দিল। আবূ তালহা বলল, বেরিয়ে দেখ তো ঘোষণা কিসের? আনাস (রাঃ) বললেন, আমি বেরুলাম এবং বললাম যে, একজন ঘোষক ঘোষণা দিচ্ছেযে, যেনে রাখ মদ হারাম করে দেয়া হয়েছে। এরপর তিনি আমাকে বললেন যাও, এগুলো সব ঢেলে দাও। আনাস (রাঃ) বললেন, সেদিন মদিনার রাস্তায় রাস্তায় মদের স্রোত প্রবাহিত হয়েছিল। তিনি বলেন, সে যুগে তাদের মদ ছিল ফাযীখ, তখন একজন বললেন, যারা মদপান করে শহীদ হয়েছেন তাঁদের কি অবস্থা হবে? তিনি বলেন, এরপর আল্লাহ তা‘আলা নাযিল করলেন- لَيْسَ عَلَى الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جُنَاحٌ فِيمَا طَعِمُوا
হাদিস নম্বরঃ ৪২৬৬ | 4266 | ٤۲٦٦
পরিচ্ছদঃ ২৩৬৪. আল্লাহর বাণীঃ হে মু’মিনগণ ! তোমরা সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হবে (৫ঃ ১০১)
৪২৬৬। মুনযির ইবনু ওয়ালিদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন একটি খুতবা দিলেন যেরূপ আমি আর কখনো শুনিনি। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তবে তোমরা হাসতে খুব কমই এবং বেশী বেশী করে কাঁদতে’’। তিনি বলেন, সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) আপন আপন চেহারা আবৃত করে গুনগুন করে কান্না জুড়ে দিলেন এরপর এক ব্যাক্তি (আবদুল্লাহ ইবনু হুযায়ফা বা অন্য কেউ) বলল, আমার পিতা কে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘অমুক’’। তখন এই আয়াত নাযিল হলঃ لاَ تَسْأَلُوا عَنْ أَشْيَاءَ إِنْ تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ
এই হাদীসটি শুবা থেকে নযর এবং রাওহ ইবনু উবাদা বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৬৭ | 4267 | ٤۲٦۷
পরিচ্ছদঃ ২৩৬৪. আল্লাহর বাণীঃ হে মু’মিনগণ ! তোমরা সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হবে (৫ঃ ১০১)
৪২৬৭। ফাযল ইবনু সাহল (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, কিছু লোক ছিল তারা ঠাট্টা করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে প্রশ্ন করত, কেউ বলত আমার পিতা কে? আবার কেউ বলত আমার উষ্ট্রী হারিয়ে গেছে তা কোথায়? তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা এই আয়াত নাযিল করেছেন – يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَسْأَلُوا عَنْ أَشْيَاءَ إِنْ تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ
হাদিস নম্বরঃ ৪২৬৮ | 4268 | ٤۲٦۸
পরিচ্ছদঃ ২৩৬৫. আল্লাহর বাণীঃ বাহীরা, সাইবা, ওয়াসীলা ও হাম আল্লাহ স্থির করেন নি (৫ঃ ১০১)
وَإِذْ قَالَ اللهُ বাক্যে قَالَ اللهُ মানে يَقُوْلُ অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামাতের দিবসে বলবেন আর إِذْ শব্দটি অতিরিক্ত। الْمَائِدَةُ মূলে مَفْعُوْلَةٌ এর কাঠামোতে مَمْيُوْدَة ছিল, যেমন عِيْشَةٍ رَاضِيَةٍ এর মধ্যে رَاضِيَةٍ অর্থ مَرْضِيَةٌٍ এবং تَطْلِيْقَةٍ بَائِنَةٍ এর মধ্যে بَائِنَةٍ অর্থ مُبَائِنَةٍ, সুতরাং অর্থ হবে مِيْدَ بِهَا صَاحِبُهَا مِنْ خَيْرٍ ‘‘তার মালিক কল্যাণ বিছিয়েছেন’’ যেমন مَادَنِي-يَمِيْدُنِيْ বলা হয়।
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, مُتَوَفِّيْكَ আমি তোমার মৃত্যু ঘটাব। (৩ঃ ৫৫)
৪২৬৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … সাঈদ ইবনু মূসায়্যাব (রহঃ) বলেছেন, الْبَحِيرَةُ বাহীরা যে জন্তুর স্তন প্রতিমার উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত থাকে কেউ তা দোহন করে না। السَّائِبَةُ সায়িবা, যে জন্তু তারা তার উপাস্যের নামে ছেড়ে দিত এবং তা বহন কার্যে ব্যবহার করে না। তিনি বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, আমি আমর ইবনু আমির খুযায়ীকে দোযখের মধ্যে দেখেছি সে তার নাড়িভুড়ি টানছে, সে-ই প্রথম ব্যাক্তি যে সায়ীবা প্রথা প্রথম চালু করে। الْوَصِيلَةُ ওয়াসীলাহ, যে উষ্ট্রী প্রথম বারে মাদী বাচ্চা প্রসব করে এবং দ্বীতীয়বারেও মাদী বাচ্চা প্রসব করে, (যেহেতু নর বাচ্চার ব্যবধান ব্যতীত একটা অন্যটার সাথে সংযুক্ত হয়েছে সেহেতু) ঐ উষ্ট্রীকে তারা তাদের তাগুতের উদ্দেশ্যে ছেড়ে দিত।
الْحَامِ হাম, নর উট যা দ্বারা কয়েকবার প্রজনন কার্য নেয়া হয়, প্রজনন কার্য সমাপ্ত হলে সেটাকে তারা তাদের প্রতিমার জন্য ছেড়ে দেয়, এবং বোঝা বহন থেকে ওটাকে মুক্তি দেয়। সেটির উপর কিছু বহন করা হয় না। এটাকে তারা ‘হাম’ নামে অভিহিত করত।
আমাকে আবূল ইয়ামান বলেছেন যে, শুয়াইব, ইমাম যুহরী (রহঃ) থেকে আমাদের অবিহিত করেছেন, যুহরী বলেন, আমি সাঈদ ইবনু মূসাইয়্যিব (রহঃ) থেকে শুনেছি, তিনি তাকে এ ব্যাপারে অবিহিত করেছেন। সাঈদ ইবনু মূসাইয়্যিব বলেছেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ রকম শুনেছি। ইবনু হাদ এটা বর্ণনা করেছেন ইবনু শিহাব থেকে। আর তিনি সাঈদ থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে যে, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৬৯ | 4269 | ٤۲٦۹
পরিচ্ছদঃ ২৩৬৫. আল্লাহর বাণীঃ বাহীরা, সাইবা, ওয়াসীলা ও হাম আল্লাহ স্থির করেন নি (৫ঃ ১০১)
৪২৬৯। মুহাম্মদ ইবনু আবূ ইয়াকূব (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) বলেছেন যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি জাহান্নামকে দেখেছি তার একাংশ অন্য অংশকে ভেঙ্গে ফেলছে বা প্রবলভাবে জড়িয়ে রয়েছে, ‘আমরকে দেখেছি সে তার নাড়িভুড়ি টানছে, সে-ই প্রথম ব্যাক্তি যে, ‘‘সায়ীবা’’ প্রথা চালু করে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৭০ | 4270 | ٤۲۷۰
পরিচ্ছদঃ ২৩৬৬. আল্লাহর বাণীঃ যতদিন আমি তাদের মধ্যে ছিলাম ততদিন আমি ছিলাম তাদের কার্যকলাপের সাক্ষী; কিন্তু যখন তুমি আমাকে তুলে নিলে তখন তুমি তো ছিলে তাদের কর্যকলাপের তত্ত্বাবধায়ক এবং তুমিই সর্ববিষয়ে সাক্ষী (৫ঃ ১১৭)
৪২৭০। আবূ ওয়ালিদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন খুতবা দিলেন, বললেন, হে লোক সকল! তোমরা খালি পা, উলঙ্গ এবং খতনাবিহীন অবস্থায় আল্লাহর নিকট একত্রিত হবে, তারপর তিনি পড়লেন, كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُهُ وَعْدًا عَلَيْنَا إِنَّا كُنَّا فَاعِلِينَ যেভাবে আমি প্রথম সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব, প্রতিশ্রুতি পালন আমার কর্তব্য, আমি তা পালন করবই। আয়াতের শেষ পর্যন্ত (২১: ১০৪)
তারপর তিনি বললেন, কিয়ামত দিবসে সর্ব প্রথম যাকে বস্ত্র পরিধান করানো হবে তিনি হচ্ছেন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)। তোমরা জেনে রাখ, আমার উম্মতের কতগুলো লোককে উপস্থিত করা হবে এবং তাদেরকে বাম দিকে অর্থাৎ দোযখের দিকে নেয়া হবে। আমি তখন বলব, প্রভু হে! এগুলো তো আমার গুটি কয়েক সাহাবী, তখন বলা হবে যে, আপনার পর তারা কি জঘন্য কাজ করেছে তা আপানি জানেন না।
এরপর পুণ্যবান বান্দা যেমন বলেছিলেন আম তেমন বলবঃ وَكُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيدًا مَا دُمْتُ فِيهِمْ فَلَمَّا تَوَفَّيْتَنِي كُنْتَ أَنْتَ الرَّقِيبَ عَلَيْهِمْ
এরপর বলা হবে আপনি তাদের ছেড়ে আসার পর থেকে তারা তাদের গোড়ালির উপর ফিরে গিয়ে অর্থাৎ পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে ধর্মত্যাগী হয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৭১ | 4271 | ٤۲۷۱
পরিচ্ছদঃ ২৩৬৭. আল্লাহর বাণীঃ তুমি যদি তাদেরকে শাস্তি দাও তো তবে তারা তো তোমারই বান্দা, আর যদি তাদেরকে মাফ কর, তবে তুমি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় (৫ঃ ১১৮)
৪২৭১। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, আমাদের হাশর করা হবে এবং কিছু সংখ্যক লোককে বাম দিকে নিয়ে যাওয়া হবে, তখন আমি পুণ্যবান বান্দার অর্থাৎ ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর মত বলব- وَكُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيدًا مَا دُمْتُ فِيهِمْ} إِلَى قَوْلِهِ {الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
হাদিস নম্বরঃ ৪২৭২ | 4272 | ٤۲۷۲
পরিচ্ছদঃ ২৩৬৮. আল্লাহর বাণীঃ অদৃশ্যের কুঞ্জি তারই কাছে রয়েছে, তিনি ব্যতীত অন্য কেউ তা জানে না (৬ঃ ৫৯)
সুরা আল-আন‘আম
ইবনে ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, فِتْنَتُهُمْ ওযর পেশ করা, অক্ষমতা পেশ করা, مَعْرُوْشَاتٍ আঙ্গুরলতা ইত্যাদি যেগুলোকে উঁচুতে তুলে দেয়া হয়, لاُنْذِرَكُمْبِهِ তোমাদেরকে কথা দ্বারা সতর্ক করার জন্য, অর্থাৎ মক্কাবাসীকে, حَمُوْلَةً বহনকারী, لَلَبَسْنَ আমি তাদেরকে বিভ্রমে ফেলতাম,َيَنْأَوْنَ তারা দূরে থাকে, تُبْسَلُ অপমানিত হওয়া, أُبْسِلُوْا তারা অপমানিত হয়েছে, الْبَسْطُ-بَاسِطُوْأَيْدِيْهِمْ আঘাত করা, اسْتَكْثَرْتُمْ অনেককেই বিপথগামী করেছ, ذَرَأَ مِنَ الْحَرْثِ তাদের ফল-মূল ও ধন-সম্পদ থেকে এক অংশ আল্লাহর জন্যে নির্ধারণ করেছে আর একাংশ শায়ত্বন ও দেব-দেবীর জন্য। أَمَّا اشْتَمَلَتْ অর্থাৎ জরায়ুতে নর কিংবা মাদী ব্যতীত অন্য কিছু থাকে কি? সূতরাং কেন তোমরা কতক হারাম আবার কতক হালাল কর? مَسْفُوْحًا প্রবাহিত, صَدَفَ মুখ ফিরিয়েছে, أُبْلِسُوْا তারা নিরাশ হয়েছে, أُبْلِسُوْا সমর্পণ করা হয়েছে, سَرْمَدًا অনন্তকাল, اسْتَهْوَتْهُ তাকে বিপথগামী করেছে, تَمْتَرُوْنَ তোমরা সন্দেহ পোষণ করছ, وَقْرٌ বধিরতা, তবে الْوِقْرُ মানে বোঝা, أَسَاطِيْرُ বহুবচন, এক বচনে أُسْطُوْرَةٌ এবং إِسْطَارَةٌ মিথ্যা গল্প, الْبَأْسَاءُ কঠোরতা بَأْسٌ থেকে উৎপন্ন কখনো কখনো بُأْسٌ থেকে আসে, جَهْرَةً সরাসরি, الصُّوَرُ হচ্ছে صُوْرَةٍ-এর বহু বচন, যেমন سَوْرَةٌ এর বহু বচন سَوَر।مُلْك-مَلَكُوْتٌ রাজত্ব যেমন رَحْمَةٌ থেকে رَحْمُوْةٌ থেকে رَهْبُ থেকে رَهْبُوْتٌ আরবে প্রবাদ আছে جَنَّ ارَهْبُوْتٌ خَيْرٌ مِنْ رَحْمُوْتٌ – تُرْهَبُ خَيْرٌ مِنْ اَنْ تُرْحَمَ অন্ধকার হল, عَلَى اللهِ حُسْبَانُهُ মানে তার হিসাব আল্লাহর কাছে কখনো কখনো বা হয়, حُسْبَانًا মানে শায়ত্বনের জন্যে অগ্নি স্ফুলিঙ্গ উৎক্ষেপণ এবং উল্কাপিন্ড।
مُسْتَقِرٌ পৃষ্ঠে অবস্থান, مُسْتَوْدَعٌ জরায়ুতে অবস্থান, الْقِنْوُ কাঁদি, দ্বিবচনে قِنْوَانُ বহুবচনেরও قِنْوَانُ যেমন صِنْوَانِ-صِنْوٍ
৪২৭২। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সালিম ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অদৃশ্যের কুঞ্জি পাঁচটি – ‘‘কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর কাছে রয়েছে, তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং তিনি জানেন যা জরায়ুতে আছে, কেউ জাননা আগামীকাল সে কি অর্জন করবে এবং কেউ জাননা কোন স্থানে তাঁর মৃত্যু ঘটবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে অবহিত। (৩১ঃ ৩৪)
হাদিস নম্বরঃ ৪২৭৩ | 4273 | ٤۲۷۳
পরিচ্ছদঃ ২৩৬৯. আল্লাহর বাণীঃ বল, তোমাদের ঊর্ধ্বদেশ থেকে শাস্তি প্রেরণ করতে কিংবা তলদেশ থেকে (তোমাদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করতে এবং একদল অপর দলের সংঘর্ষের আস্বাদ গ্রহন করাতে তিনি সক্ষম। দেখ, কী রূপ বিভিন্ন প্রকারের আয়াত বিবৃত করি যাতে তারা অনুধাবন করে (৬ঃ ৬৫) )
يَلْبِسَكُمْ শব্দটিالْتِبَاسٌ থেকে উৎসারিত, তোমাদেরকে মিশ্রিত করে দিবেন,يَلْبِسُوْا তারা মিশ্রিত হয়,شِيَعًا বিভিন্ন দল।
৪২৭৩। আবূ নূ‘মান (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেছেন, যখনই এই আয়াত قُلْ هُوَ الْقَادِرُ عَلَى أَنْ يَبْعَثَ عَلَيْكُمْ عَذَابًا مِنْ فَوْقِكُمْ নাযিল হল তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি, আবার যখন أَوْ مِنْ تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ অবতীর্ণ হল তখনও বললেন আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। এবং যখন أَوْ يَلْبِسَكُمْ شِيَعًا وَيُذِيقَ بَعْضَكُمْ بَأْسَ بَعْضٍ নাযিল হল তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটা তুলনামূলকভাবে হালকা, তিনি هَذَا أَهْوَنُ কিংবা هَذَا أَيْسَرُ বলেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৭৪ | 4274 | ٤۲۷٤
পরিচ্ছদঃ ২৩৭০. আল্লাহর বাণীঃ এবং তাদের ঈমানকে জুলুম দ্বারা কলুষিত করে নি (৬ঃ ৮২)
৪২৭৪। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, যখন وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ আয়াত নাযিল হল, তখন তাঁর সাহাবাগণ বললেন, ‘‘জুলুম করেনি আমাদের মধ্যে এমন কে আছে?’’ এরপর নাযিল হল إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ নিশ্চয় শিরক চরম জুলুম।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৭৫ | 4275 | ٤۲۷۵
পরিচ্ছদঃ ২৩৭১. আল্লাহর বাণীঃ ইউনুস ও লুতকে এবং শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছিলাম বিশ্বজগতের উপর প্রত্যেককে (৬ঃ ৮৬)
৪২৭৫। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিনা করেছেন, তিনি বলেছেন, ‘‘আমি ইউনুস এবং মাত্তা থেকে উত্তম’’ এ উক্তি করা কারো জন্য উচিত নয়।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৭৬ | 4276 | ٤۲۷٦
পরিচ্ছদঃ ২৩৭১. আল্লাহর বাণীঃ ইউনুস ও লুতকে এবং শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছিলাম বিশ্বজগতের উপর প্রত্যেককে (৬ঃ ৮৬)
৪২৭৬। আদম ইবনু আবূ আয়াস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, ‘‘আমি ই্নুস ইবনু মাত্তা থেকে উত্তম’’ এ উক্তি করা কারো জন্য উচিত নয়।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৭৭ | 4277 | ٤۲۷۷
পরিচ্ছদঃ ২৩৭২. আল্লাহর বাণীঃ তাদেরকে আল্লাহ সৎ পথে পরিচালিত করেছেন সুতরাং তুমি তাদের পথ অনুসরণ কর (৬ঃ ৯০)
৪২৭৭। ইবরাহীম ইবনু মূসা … মুজাহিদ ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, সূরা “ص” এ সিজদা আছে কি না। তিনি উত্তরে বললেন, হ্যাঁ আছে। এরপর এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন- وَوَهَبْنَا} إِلَى قَوْلِهِ {فَبِهُدَاهُمُ اقْتَدِهْ তারপর বললেন যে তিনি অর্থাৎ দাউদ (আলাইহিস সালাম) তাদের অন্তর্ভুক্ত ইয়াযিদ ইবনু হারূন, মুহাম্মদ ইবনু উবায়দ এবং সাহল ইবনু ইউসুফ আওয়াম থেকে, তিনি মুজাহিদ থেকে একটু অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন, মুজাহিদ বললেন যে, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করেছিলাম, এরপর তিনি বললেন, যাদের অনুসরণ করতে নির্দেশ করা হয়েছে তোমাদের নাবী তাদের অন্তর্ভুক্ত।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৭৮ | 4278 | ٤۲۷۸
পরিচ্ছদঃ ২৩৭৩. আল্লাহর বাণীঃ ইহুদীদিগের জন্নে নখরযুক্ত সমস্ত পশু নিষিদ্ধ করেছিলাম এবং গরু ও ছাগলের চর্বিও তাদের জন্নে নিষিদ্ধ করেছিলাম। তবে এগুলোর পৃষ্ঠের অথবা অস্রের কিংবা অগ্নিসংলগ্ন চর্বি ব্যতীত, তাদের অবাধ্যতার দরুন তাদেরকে এই প্রতিফল দিয়েছিলাম, আমি তো সত্যবাদী (৬ঃ ১৪৬)
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, كُلَّ ذِيْ ظُفُرٍ উট, উটপাখী, الْحَوَايَا অন্ত্রসমূহ। অন্যজন বলেছেন هَادُوْا ইয়াহুদী হয়ে গেছে, তবে আল্লাহর বাণী هُدْنَا মানে تُبْنَا অর্থাৎ আমরা তাওবাহ করেছি, هَائِدٌ تَائِبٌ তাওবাহ্কারী।
৪২৭৮। ‘আমর ইবনু খালিদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেছেন যে, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তা‘আলা ইহুদীদেরকে লানত করেছেন, যখন তিনি তাদের উপর চর্বি হারাম করেছেন তখন তারা ওটাকে তরল করে জমা করেছে, তারপর বিক্রি করে তার মূল্য ভোগ করেছে। আবূ আসিম (রহঃ) … হাদীস বর্ণনা করেছেন জাবির (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৭৯ | 4279 | ٤۲۷۹
পরিচ্ছদঃ ২৩৭৪. আল্লাহর বাণীঃ প্রকাশ্য হোক কিংবা গোপন হোক অশ্লীল আচরণের নিকটও যাবে না (৬ঃ ১৫১)
৪২৭৯। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, হারাম কাজে মু’মিনদেরকে বাধা দানকারী আল্লাহর চেয়ে অধিক কেউ নেই, এই জন্যই প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে সকল অশ্লীলতা হারাম করেছেন, আল্লাহর স্তুতি প্রকাশ করার চেয়ে প্রিয় তাঁর কাছে অন্য কিছু নেই, সেজন্যই আল্লাহ আপন প্রশংসা নিজেই করেছেন।
আমর ইবনু মুররাহ (রহঃ) বলেন, আমি আবূ ওয়ায়েলকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কি তা আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ থেকে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, এটাকে তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী হিসাবে বর্ণনা করেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ।
ইমাম বুখারী (রহ.) বলেন, وَكِيْلٌ রক্ষক ও বেষ্টনকারী, قُبُلًا একবচনে قَبِيْلٌ অর্থাৎ শাস্তি বহু প্রকারের, এগুলোর এক একটি এক এক قَبِيْلٌ বা প্রকার। زُخْرُفٌ বাতিল ও অসার কথাকে শোভনীয় ও অলঙ্কৃত করে প্রকাশ করলে তাকে বলা হয় زُخْرُفٌ। حَرْثٌ حِجْرٌ নিষিদ্ধ, প্রত্যেক নিষিদ্ধ বস্তুকে مَحْجُوْرٌ حِجْرٌ বলা হয়, আবার নির্মিত ঘরও حِجْرٌ, মাদী ঘোড়াকেও حِجْرٌ বলা হয়, عَقْلٌ বা বুদ্ধি-বিবেচনাকেও حِجْى حِجْرٌ বলা হয়। আবার حِجْرٌ নামক স্থানে হচ্ছে সামূদ গোত্রের স্থান, ভূমির যে অংশকে তুমি নিষিদ্ধ ও সংরক্ষিত ঘোষণা করেছ তার নাম حِجْرٌ। এই জন্যে বাইতুল্লাহ শরীফের হাতীম নামক অংশকে حِجْرٌ বলা হয়, مَقْتُوْلٌ থেকে, যেমন قَتِيْلٌ তেমনি مَحْطُوْمٌথেকে গৃহীত, حَطِيْمٌ ইয়ামামার حِجْرٌ হচ্ছে একটি মনজিল বা ছোট্ট ঘর।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৮০ | 4280 | ٤۲۸۰
পরিচ্ছদঃ ২৩৭৬. আল্লাহর বাণীঃ যেদিন তোমর প্রতিপালকের কোন নির্দেশ আসবে সেদিন তার ঈমান কাজে আসবে না (যে ব্যক্তি পূর্বে ঈমান আনেনি কিংবা যে ব্যক্তি ঈমানের মাধ্যমে কল্যাণ অর্জন করেনি) (৬ঃ ১৫৮)
২৩৭৫. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহর বাণীঃ সাক্ষীদেরকে হাযির কর। (৬ঃ ১৫০)
হিজাযীদের পরিভাষায় একবচন, দ্বিবচন এবং বহুবচনের জন্যে هَلُمَّ ব্যবহৃত হয়।
৪২৮০ মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘পশ্চিম দিক থেকে সূর্যদয়ের পূর্ব পর্যন্ত কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে না। লোকেরা যখন তা দেখবে, তখন পৃথিবীর সকলে ঈমান আনবে, এবং সেটি হচ্ছে এমন সময় ‘‘পূর্ব ঈমান আনেনি এমন ব্যাক্তির ঈমান তার কাজে আসবে না।’’
হাদিস নম্বরঃ ৪২৮১ | 4281 | ٤۲۸۱
পরিচ্ছদঃ ২৩৭৬. আল্লাহর বাণীঃ যেদিন তোমর প্রতিপালকের কোন নির্দেশ আসবে সেদিন তার ঈমান কাজে আসবে না (যে ব্যক্তি পূর্বে ঈমান আনেনি কিংবা যে ব্যক্তি ঈমানের মাধ্যমে কল্যাণ অর্জন করেনি) (৬ঃ ১৫৮)
৪২৮১। ইসহাক (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যতক্ষন না পশ্চিম দিক থেকে সূর্যদয় ঘটবে ততক্ষন কিয়ামত হবে না, যখন সেদিক থেকে সূর্য উদিত হবে এবং লোকেরা তা দেখবে তখন সবাই ঈমান গ্রহণ করবে, এটাই সেই সময় যখন কোন ব্যাক্তিকে তার ঈমান কল্যাণ সাধন করবে না। তারপর তিনি আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৮২ | 4282 | ٤۲۸۲
পরিচ্ছদঃ ২৩৭৭. আল্লাহর বাণীঃ বল, আমার প্রতিপালক নিষিদ্ধ করেছেন প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীলতা (৭ঃ ৩৩)
সুরা আ’রাফ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন; وَرِيَاشًا সম্পদ, إِنَّه لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِيْنَ- তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের ভালবাসতেন না, দু‘আ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে, عَفَوْا- তারা সংখ্যাধিক্য হয় এবং তাদের সম্পত্তি প্রাচুর্য লাভ করে, الْفَتَّاحُ বিচারক, افْتَحْ بَيْنَنَا আমাদের মাঝে ফয়সালা করে দিন। نَتَقْنَا الْجَبَلَ উপরে তুলেছি পর্বত, انْبَجَسَتْ প্রবাহিত হয়েছে,مُتَبَّرٌ ক্ষতিগ্রস্ত, آسَى আমি আক্ষেপ করি, تَأْسَ- আক্ষেপ করবে, অন্যজন বলেছেন أَنْ لَّا تَسْجُدَ সাজদাহ করতে, يَخْصِفَانِ তাঁরা উভয়ে সেলাই করে জোড়া লাগাচ্ছিলেন, مِنْ وَرَقِ الْجَنَّةِ বেহেশতের পাতা, উভয়ে সংগ্রহ করেছিলেন এবং পাতা একটা অন্যটার সঙ্গে সেলাই করে জোড়া লাগাচ্ছিলেন, سَوْآتِهِمْ তাঁদের যৌনাঙ্গ, وَمَتَاعٌ إِلٰى حِيْنٍ এখন থেকে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত, আরবদের ভাষায় حِيْنُ বলা হয় একটি নির্দিষ্ট সময় থেকে অনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত, الرِّيَاشُوَالرِّيْشُ একই অর্থাৎ পোশাকের বহিরাংশ, قَبِيْلُهُ তার দল সে যে দলের অন্তর্ভুক্ত। ادَّارَكُوْا একত্রিত হল। মানুষ এবং অন্যান্য জন্তুর ছিদ্রসমূহকে سُمُوْمٌ বলা হয়, এর একবচন سُمُمٌّ সেগুলো চক্ষুদ্বয়, নাসারন্ধ্র, মুখ, দু’টি কান, বাহ্য পথ স্রাবনালী, غَوَاشٌ আচ্ছাদন, نُشُرًا বিক্ষিপ্ত, نَكِدًا স্বল্প পরিমাণ, يَغْنَوْا জীবন যাপন করেন, حَقِيْقٌ হক ও উপযুক্ত, যোগ্য, اسْتَرْهَبُوْهُمْ তাদেরকে আতংকিত করল, رَهْبَةٌ থেকে উৎপন্ন, تَلَقَّفُ গো গ্রাসে গিলে ফেলা, طَآئِرُهُمْ-তাদের ভাগ্য, বন্যা, طُوْفَانٌ-বন্যা অধিক হারে মৃত্যুকে ও طُوْفَانٌ বলা হয়, الْقُمَّلُ উকুন, عُرُوْشٌ-عَرِيْشٌ অট্টালিকা, سُقِطَ যারা অপমানিত হয় তাদেরকে বলা হয় سُقِطَ فِيْيَدِهِ। أَلَاسْبَاطُ বনী ইসরাঈলের গোত্রসমূহ, يَعْدُوْنَও يَتَعَدَّوْنَ সীমালঙ্ঘন করে; تَعَدَّوْ সীমালঙ্ঘন করেছে, شُرَّعًا প্রকাশ্যভাবে, بَئِيْسٍ কঠোর, أَخْلَدَ বসে থাকল এবং পেছনে পড়ল, سَنَسْتَدْرِجُهُمْ তাদের নিরাপদ স্থান থেকে তাদেরকে এসে ক্রমে বের করে আনবে, যেমন فَأَتَاهُمُاللهُ مِنْ حَيْثُ لَمْ يَحْتَسِبُوْا তাদেরকে আল্লাহ এমন শাস্তি দিলেন যা তারা ধারণা করেনি। مِنْجِنَّةٍ উন্মাদনা, কখন তাদেরকে পুনরায় বের করা হবে? فَمَرَّتْ بِهِ তাঁর গর্ভ অটুটু থাকল এরপর সেটাকে পূর্ণতা দান করলে, يَنْزَغَنَّكَ يَسْتَخِفَّنَّكَ তোমাকে কু-মন্ত্রণা দেয়া, طَيْفٌ আগত সংযোগযোগ্য, طَيْفٌ এবং طَائِفٌ এক রকম, يَمُدُّوْنَهُمْ অলংকৃত করে, خِيْفَةٌ ভয়, خُفْيَةٌ শব্দটি إِخْفَاءٌ থেকে নির্গত অর্থ গোপন করা, وَالْآصَالُ একবচনে أَصِيْلٌ আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়, যেমন আল্লাহর বাণী بُكْرَةً وَّأَصِيْلًا সকাল-সন্ধ্যা।
৪২৮২। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আমর ইবনু মুররাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ ওয়ায়েলকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি এটা আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ এবং তিনি এটাকে মারফু‘ হাদীস হিসাবে বর্ণনা করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অন্যায়কে ঘৃণাকরী আল্লাহর তুলনায় অন্য কেউ নেই, এজন্যই তিনি প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে অশ্লীলতা হারাম করে দিয়েছেন, আবার আল্লাহর চেয়ে প্রশংসা প্রিয় কেউ নেই, এজন্যই তিনি নিজে নিজের প্রশংসা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৮৩ | 4283 | ٤۲۸۳
পরিচ্ছদঃ ২৩৭৮. আল্লাহর বাণীঃ মুসা যখন আমার নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হল এবং তার প্রতিপালক তার সাথে কথা বললেন, তখন তিনি বললেন, হে আমার প্রতিপালক! আমাকে দর্শন দাও, আমি তোমাকে দেখব, তিনি বললেন, তুমি আমাকে কখনোই দেখতে পাবে না। তুমি বরং পাহাড়ের প্রতি লক্ষ কর, তা যদি স্ব-স্থানে স্থির থাকে তবে তুমি আমাকে দেখবে, যখন তার প্রতিপালক পাহাড়ে জ্যোতি প্রকাশ করলেন তখন তা পাহাড়কে চূর্ণ-বিচূর্ণ করল আর মুসা (আঃ) সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লেন। যখকন তিনি জ্ঞান ফিরে পেলেন, তখন বললেন, মহিমময় তুমি, আমি অনুতপ্ত হয়ে তোমাতেই প্রত্যাবর্তন করলাম এবং মুমিনদের মধ্যে আমিই প্রথম (৭ঃ ১৪৩) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, أَرِنِيْ আমাকে দেখা দাও।
৪২৮৩। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেছেন যে এক ইহুদী নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে এসে হাজির হল। তার মুখমন্ডলে চপেটাঘাত খেয়ে বলল, হে মুহাম্মদ! আপনার এক আনসারী সাহাবী আমার মুখমন্ডলে চপেটাঘাত করেছে। তিনি বললেন, তাকে ডেকোন। তারা ওকে ডেকে আনল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘একে চপেটাঘাত করেছ কেন?’’ সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি এই ইহুদীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন শুনলাম যে, সে বলছে তারই শপথ যিনি মূসা (আলাইহিস সালাম) কে মানবজাতির উপর মনোনীত করেছেন, আমি বললাম মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপরও মনোনীত করেছেন কি? এরপর আমার রাগ এসে গিয়েছিল, তাই তাকে চপেটাঘাত করেছি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (অন্যের মানহানি হতে পারে কিংবা নিজেদের খেয়াল খুশী মত) তোমরা আমাকে অন্যান্য নাবী থেকে উত্তম বলো না’’ (বরং আল্লাহর ঘোষণায় আমি তো উত্তম আছিই বরং থাকবোই), কারণ কিয়ামত দিবসে সব মানুষই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়বে, সর্বপ্রথম আমিই সচেতন হয়ে পড়ব, সর্বপ্রথম আমিই সচেতন হব। তিনি বলেন, তখন আমি দেখব যে, মূসা (আলাইহিস সালাম) আরশের খুটি ধরে রেখেছেন, আমার বোধগম্য হবে না যে, তিনি কি আমার পূর্বে সচেতন হবেন নাকি তুর পাহাড়ের সংজ্ঞাহীনতাকে এর বিনিময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৮৪ | 4284 | ٤۲۸٤
পরিচ্ছদঃ ২৩৭৯. আল্লাহর বাণীঃ মান্না এবং সালওয়া (৭ঃ ১৬০)
৪২৮৪। মুসলিম (রহঃ) … সাঈদ ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, الْكَمْأَةُ জাতীয় উদ্ভিদ মান্না-এর মত এবং এর পানি চোখের রোগমুক্তি।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৮৫ | 4285 | ٤۲۸۵
পরিচ্ছদঃ ২৩৮০. আল্লাহর বাণীঃ বল, হে মানুষ! আমি তোমাদের সকলের জন্যে আল্লাহর রাসুল। যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্বের অধিকারী; তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই, তিনিই জীবিত করেন ও মৃত্যু ঘটান, সুতরাং তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি ও তার বার্তাবাহক উম্মী নবীর প্রতি, যে আল্লাহ ও তার বাণীতে ঈমান আনে এবং তোমরা তার অনুসরণ কর যাতে তোমরা পথ পাও। (৭ঃ ১৫৮)
৪২৮৫। আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূদ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আবূ বকর (রাঃ) ও উমর (রাঃ) এর মধ্যে বিতর্ক হয়েছিল, আবূ বকর (রাঃ) উমর (রাঃ) কে চটিয়ে দিয়েছিলেন, এরপর রাগান্বিত অবস্থায় উমর (রাঃ) সেখান থেকে প্রস্থান করলেন, আবূ বকর (রাঃ) তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে করতে তাঁর পিছু ছুটলেন কিন্তু উমর (রাঃ) ক্ষমা করলেন না, বরং তাঁর সম্মুখের দরজা বন্ধ করে দিলেন। এরপর আবূ বকর (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে আসলেন। আবূদ দারদা (রাঃ) বলেন, আমরা তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলাম, ঘটনা শোনার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের এই সাথী আবূ বকর (রাঃ) অগ্রে কল্যাণ লাভ করেছে। তিনি বলেন, এতে উমর লজ্জাবোধ করলেন এবং সালাম করে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশে বসে পড়লেন ও ইতিবৃত্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সব বর্ণনা করলেন।
আবূ দারদা (রাঃ) বলেন, এতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসন্তুষ্ট হলেন। সিদ্দিকে আকবর (রাঃ) বারবার বলছিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি অধিক দোষী ছিলাম। অনন্তর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা আমার জন্য আমার সাথীটাকে রাখবে কি? তোমরা আমার জন্য আমার সাথীটাকে রাখবে কি? এমন একদিন ছিল যখন আমি বলেছিলাম, ‘‘হে লোক সকল! আমি তোমাদের সকলের জন্য রাসূল, তখন তোমরা বলেছিলেন, ‘‘তুমি মিথ্যা বলেছ’’ আর আবূ বকর (রাঃ) বলেছিল, ‘‘আপনি সত্য বলেছেন। ’’ ইমাম আবূ আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন غَامَرَ অগ্রে কল্যাণ লাভ করেছে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৮৬ | 4286 | ٤۲۸٦
পরিচ্ছদঃ ২৩৮২. আল্লাহর বাণীঃ তোমরা বল ক্ষমা চাই (৭ঃ ১৬১)
২৩৮১. আল্লাহ্র বাণীঃ এবং সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ল (৭ঃ ১৪৩) এ অধ্যায়ে আবু সাঈদ এবং আবু হুরায়রা (রাঃ) এর হাদীস বর্ণিত আছে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে।
৪২৮৬। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইসরাঈলীদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে, “নতশিরে প্রবেশ কর এবং বল, ক্ষমা চাই, আমি তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করব।” (৭: ১৬১) এরপর তারা তার বিপরীত করল, তারা নিজেদের নিতম্বে ভর দিয়ে মাটিতে বসে বসে প্রবেশ করল এবং বলল حَبَّةٌ فِي شَعَرَةٍ যবের মধ্যে বিচি চাই।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৮৭ | 4287 | ٤۲۸۷
পরিচ্ছদঃ ২৩৮৩. আল্লাহর বাণীঃ তুমি ক্ষমাপরায়নতা অবলম্বন কর, সৎ কাজের নির্দেশ দাও এবং অজ্ঞদের উপেক্ষা কর (৭ঃ ১৯৯)
৪২৮৭। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, ‘উয়াইনা ইবনু হিসন ইবনু হুযাইফা এসে তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র হুর ইবনু কায়সের কাছে অবস্থান করলেন। উমর (রাঃ) যাদেরকে পার্শ্বে রাখতেন হুর হলেন তাদের মধ্যে একজন। কারীবৃন্দ, যুবক-বৃদ্ধ সকলেই উমর ফারূক (রাঃ) এর মজলিশের সদস্য এবং উপদেষ্টা ছিলেন। এরপর ‘উয়াইনা তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্রকে ডেকে বললেন, এই আমীরের কাছে তো তোমার একটা মর্যাদা আছে, সুতরাং তুমি আমার জন্য তাঁর কাছে প্রবেশের একটা অনুমতি নিয়ে দাও। তিনি বললেন হ্যাঁ, তাঁর কাছে আমি আপনার প্রবেশের প্রার্থনা করব।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, এরপর হুর অনুমতি প্রার্থনা করলেন ‘‘উয়াইনার জন্য এবং উমর (রাঃ) অনুমতি দিলেন। ‘উয়াইনা উমরের কাছে গিয়ে বললেন, হ্যাঁ আপনি তো আমাদেরকে বেশী বেশী দানও করেন না এবং আমাদের মাঝে ন্যায় বিচারও করেন না। উমর (রাঃ) ক্রোধান্বিত হলেন এবং তাকে কিছু একটা করাতে উদ্যত হলেন। তখন হুর বললেন, আমিরুল মু’মিনীন! আল্লাহ তা‘আলা তো তাঁর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলেছেন, ‘‘ক্ষমাপরায়ণতা অবলম্বন কর’ সৎ কাজের নির্দেশ দাও এবং অজ্ঞ দিগকে উপেক্ষা কর’’ আর এই ব্যাক্তি তো নিঃসন্দেহে অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত। (হুর যখন তাঁর নিকট এটা তিলাওয়াত করলেন তখন আল্লাহর কসম তখন উমর (রাঃ) আয়াতের অমান্য করেননি। উমর আল্লাহর কিতাবের বিধানের সামনে স্থির দাঁড়িয়ে থাকতেন, অর্থাৎ তা অতিক্রম করতেন না।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৮৮ | 4288 | ٤۲۸۸
পরিচ্ছদঃ ২৩৮৩. আল্লাহর বাণীঃ তুমি ক্ষমাপরায়নতা অবলম্বন কর, সৎ কাজের নির্দেশ দাও এবং অজ্ঞদের উপেক্ষা কর (৭ঃ ১৯৯)
৪২৮৮। ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) বলেছেন, خُذِ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ আয়াতটি আল্লাহ তা‘আলা মানুষের চরিত্র সম্পর্কেই নাযিল করেছেন।
আবদুল্লাহ ইবনু বাররাদ বলেন, আবূ উসামা আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মানুষের আচরণ সম্পর্কে ক্ষমাপরায়ণতা অবলম্বন করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৮৯ | 4289 | ٤۲۸۹
পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ লোকে তোমাকে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ সম্বন্ধে প্রশ্ন করে, বল, যুদ্ধলব্ধ সম্পদ আল্লাহ এবং রাসুলের, সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর এবং নিজদিগের মধ্যে সদভাব স্থাপন কর (৮ঃ ১) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, الْأَنْفَالُ যুদ্ধলব্ধ সম্পদ, কাতাদাহ বলেন, رِيْحُكُمْ যুদ্ধ, نَافِلَةٌ দান।
৪২৮৯। মুহাম্মদ ইবনু আবদুর রহীম (রহঃ) … সা‘ঈদ ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম সূরা আনফাল সম্পর্কে, তিনি বললেন, বদরের যুদ্ধে নাযিল হয়েছে।
الشَّوْكَةُ-الْحَدُّ শক্তি, مُرْدَفِيْنَ একদল সৈন্যের পর আরেক দল, رَدِفَنِيْ এবং أَرْدَفَنِيْ আমার পেছন পেছন এসেছে, ذُوْقُوْا সরাসরি জড়িয়ে পড় এবং অভিজ্ঞতা অর্জন কর, মুখে আস্বাদন করা হয়, فَيَرْكُمَهُ এরপর তাকে একত্রিত করবেন,شَرِّدْ বিচ্ছিন্ন করে দাও, وَإِنْ جَنَحُوْا যদি তারা চায়, السِّلْمُ، السِّلْمُ এবং السَّلَامُ একই অর্থ সন্ধি, يُثْخِنَ জয়ী হওয়া, মুফাসসির মুজাহিদ বলেন, مُكَاءً তাদের অঙ্গুলিসমূহ মুখে ঢুকিয়ে দেয়া, শিস দেয়া, تَصْدِيَةً করতালি, لِيُثْبِتُوْكَ তোমাকে আটকে রাখার জন্যে।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৯০ | 4290 | ٤۲۹۰
পরিচ্ছদঃ ২৩৮৪. আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহর কাছে নিকৃষ্টতম জীব সেই বধির ও মূক যারা কিছুই বুঝে না (৮ঃ ২২) قال هم نفر من بني عبد الدار ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেছেন তারা বনী আবদুদ দার গোষ্ঠীর একদল লোক।
৪২৯০। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, إِنَّ شَرَّ الدَّوَابِّ عِنْدَ اللَّهِ الصُّمُّ الْبُكْمُ الَّذِينَ لاَ يَعْقِلُونَ সম্পর্কে তিনি বলেছেন যে, তারা হচ্ছে বনী আবদুদদার গোষ্ঠীর একদল লোক।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৯১ | 4291 | ٤۲۹۱
পরিচ্ছদঃ ২৩৮৫. আল্লাহর বাণীঃ হে মুমিনগণ! রাসুল যখন তোমাদেরকে এমন কিছুর দিকে আহবান করেন যা তোমাদেরকে প্রানবন্ত করে, তখন আল্লাহ ও রাসুলের আহবানে সাড়া দেবে এবং জেনে রাখ যে, আল্লাহ মানুষ ও তার অন্তরের অন্তরালে থাকেন এবং তারই কাছে তোমাদের একত্র করা হবে (৮ঃ ২৪) اسْتَجِيْبُوْا তোমরা সাড়া দাও, لِمَا يُحْيِيْكُمْ তোমাদেরকে সংশোধন করার জন্যে।
৪২৯১। ইসহাক (রহঃ) … আবূ সাঈদ ইবনু মুয়াল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একদা নামাযে ছিলাম, এমতাবস্থায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার পাশ দিয়ে গেলেন এবং আমাকে ডাকলেন, সালাত (নামায/নামাজ) শেষ না করা পর্যন্ত আমি তাঁর কাছে যাইনি, তারপর গেলাম, তিনি বললেন, তোমাকে আসতে বাধা দিল কিসে? আল্লাহ কি বলেননি, ‘‘রাসূল তোমাদেরকে ডাক দিলে, আল্লাহ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দেবে?’’ তারপর তিনি বললেন, আমি মসজিদ থেকে বের হবার পূর্বে তোমাকে একটি বড় সওয়াবযুক্ত সূরা শিক্ষা দেব। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন আমি তাঁর নিকট প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করিয়ে দিলাম।
মু‘আয বলেন হাফস শুনেছেন, একজন সাহাবী আবূ সাঈদ ইবনুল মু‘আল্লাকে এ হাদীস বর্ণনা করতে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন সেই সূরাটি হচ্ছে الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ সাত আয়াত বিশিষ্ট ও পুনঃ পুনঃ উল্লেখ্য আবৃত।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৯২ | 4292 | ٤۲۹۲
পরিচ্ছদঃ ২৩৮৬. আল্লাহর বাণীঃ স্মরণ কর, তারা বলেছিল, হে আল্লাহ! এটা যদি তোমার পক্ষ থেকে সত্য হয়, তবে আমাদের উপর আকাশ হতে প্রস্তর বর্ষণ কর কিংবা আমাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তি দাও (৮ঃ ৩২)
৪২৯২। আহমদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আবূ জাহেল বলেছিল, ‘‘হে আল্লাহ! এটা যদি তোমার পক্ষ থেকে সত্য হয়, তবে আমাদের উপর আকাশ হতে প্রস্তর বর্ষণ কর কিংবা আমাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তি দাও। তখনই নাযিল হল- وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنْتَ فِيهِمْ وَمَا كَانَ اللَّهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُونَ * وَمَا لَهُمْ أَنْ لاَ يُعَذِّبَهُمُ اللَّهُ وَهُمْ يَصُدُّونَ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ} الآيَةَ আল্লাহ এমন নহেন যে, তুমি তাদের মধ্যে থাকবে অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি দিবেন এবং আল্লাহ এমনও নহেন যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি দিবেন, এবং তাদের কি-বা বলবার আছে যে, আল্লাহ তাদেরকে শাস্তি দেবেন না যখন তারা লোকদের মসজিদুল হারাম থেকে নিবৃত করে? (যদিও তারা এর তত্ত্বাবধায়ক নয়, মুত্তাকীগণই এর তত্ত্বাবধায়ক; কিন্তু তাদের অধিকাংশ তা অবগত নয়) (৮: ৩৩-৩৪)
হাদিস নম্বরঃ ৪২৯৩ | 4293 | ٤۲۹۳
পরিচ্ছদঃ ২৩৮৭. আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ এমন নহেন যে, তুমি তাদের মধ্যে থাকবে অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি দিবেন এবং আল্লাহ এমনও নহেন যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন (৮ঃ ৩৩)
৪২৯৩। মুহাম্মদ ইবনু নযর (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বলেছেন, আবূ জাহেল বলেছিল। এরপর নাযিল হল-
وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنْتَ فِيهِمْ وَمَا كَانَ اللَّهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُونَ * وَمَا لَهُمْ أَنْ لاَ يُعَذِّبَهُمُ اللَّهُ وَهُمْ يَصُدُّونَ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ} الآيَةَ
হাদিস নম্বরঃ ৪২৯৪ | 4294 | ٤۲۹٤
পরিচ্ছদঃ ২৩৮৮. আল্লাহর বাণীঃ তোমরা তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে থাকবে যতক্ষন না ফিতনা দূরীভূত হয় এবং আল্লাহর দীন সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং যদি তারা বিরত হয় তবে তারা যা করে আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা (৮ঃ ৩৯)
৪২৯৪। হাসান ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক ব্যাক্তি তাঁর কাছে এসে বলল, হে আবূ আবদুর রহমান! আল্লাহ তাঁর কিতাবে যা উল্লেখ করেছেন আপনি কি তা শোনেন না? وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا মু’মিনদের দু’দল দন্ধে লিপ্ত হলে তোমরা তাদের মধ্যে মিমাংশা করে দেবে সুতরাং আল্লাহর কিতাবের নির্দেশ অনুযায়ী যুদ্ধ করতে কোন বস্তু আপনাকে নিষেধ করছে? এরপর তিনি বললেন, হে ভাতিজা! এই আয়াতের তাবিল বা ব্যাখ্যা করে যুদ্ধ না করা আমার কাছে অধিক প্রিয় وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا} إِلَى آخِرِهَا ‘‘যে স্বেচ্ছায় মু’মিন খুন করে’’ আয়াতে তাবিল করার তুলনায়। সে ব্যাক্তি বলল, আল্লাহ বলেছেন وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لاَ تَكُونَ فِتْنَةٌ ‘‘তোমরা ফিতনা নির্মূল না করা পর্যন্ত যুদ্ধ করবে’’ ইবনু উমর (রাঃ) বললেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আমরা তা করেছি যখন ইসলাম দুর্বল ছিল। ফলে লোক তার দ্বীন নিয়ে ফিতনায় পড়ত, হয়ত কাফেররা তাকে হত্যা করত নতুবা বেঁধে রাখত, ক্রমেক্রমে ইসলামের প্রসার ঘটল এবং ফিতনা থাকল না।
সে লোকটি যখন দেখল যে, আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) তার উদ্দেশ্যের অনুকুল হচ্ছেন না তখন সে বলল যে, ‘আলী (রাঃ) এবং ‘উসমান (রাঃ) সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? ইবনু উমর (রাঃ) বললেন যে, ‘আলী (রাঃ) এবং ‘উসমান (রাঃ) সম্পর্কে আমার কোন বক্তব্য নেই, তবে ‘উসমান (রাঃ) কে আল্লাহ তা‘আলা নিজেই ক্ষমা করে দিয়েছেন কিন্তু তোমরা তাঁকে ক্ষমা করতে রাযি নও, আর ‘আলী (রাঃ), তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চাচাতো ভাই এবং জামাতা, তিনি অঙ্গুলি নির্দেশ করে বললেন, ঐ উনি হচ্ছেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কন্যা, যেথায় তোমরা তাঁর ঘর দেখছ, هَذِهِ ابْنَتُهُ বলেছেন কিংবা هَذِهِ بِنْتُهُ বলেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৯৫ | 4295 | ٤۲۹۵
পরিচ্ছদঃ ২৩৮৮. আল্লাহর বাণীঃ তোমরা তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে থাকবে যতক্ষন না ফিতনা দূরীভূত হয় এবং আল্লাহর দীন সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং যদি তারা বিরত হয় তবে তারা যা করে আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা (৮ঃ ৩৯)
৪২৯৫। আহমদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … সা‘ঈদ ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইবনু উমর (রাঃ) আমাদের কাছে এলেন। বর্ণনাকারী إِلَيْنَا অথবা عَلَيْنَا শব্দ বলেছেন। এরপর এক ব্যাক্তি বলল, ফিতনা সম্পর্কিত যুদ্ধের ব্যাপারে আপনার রায় কি? আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) বললেন, ফিতনা কি তা তুমি জানো? মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেন। সুতরাং তাদের কছে যাওয়া ছিল ফিতনা, তার সঙ্গে গিয়ে যুদ্ধ করা তোমাদের রাজত্বের জন্য যুদ্ধ করার সমতুল্য নয়।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৯৬ | 4296 | ٤۲۹٦
পরিচ্ছদঃ ২৩৮৯. আল্লাহর বাণীঃ হে নবী ! মুমিনদের জিহাদের জন্যে উদ্বুদ্ধ কর। তোমাদের মধ্যে বিশজন ধৈর্যশীল থাকলে তারা দু’শ জনের উপর বিজয়ী হবে এবং তোমাদের মধ্যে একশ’জন থাকলে এক সহস্র কাফেরের উপর বিজয়ী হবে। কারন তারা এমন এক সম্প্রদায় যার বোধশক্তি নেই (৮ঃ ৬৫)
৪২৯৬। ‘আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, (আল্লাহর বাণীঃ) إِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ যখন নাযিল হল। এরপর দশজন কাফেরের বিপরীত একজন মুসলিম থাকলেও পালায়ন না করা ফরয করে দেয়া হল। সুফিয়ান ইবনু উয়াইনা (রহঃ) আবার বর্ণনা করেন, দু’শ জন কাফেরের বিপরীত ২০ জন মুসলিম থাকলেও পলায়ন করা যাবে না। তারপর নাযিল হল- الآنَ خَفَّفَ اللَّهُ عَنْكُمُ} الآيَةَ আল্লাহ এখন তোমাদের ভার লাঘব করলেন। তিনি অবগত আছেন যে, তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে, সুতরাং তোমাদের মধ্যে একশ’জন ধৈর্যশীল থাকলে তারা দু’শ জনের উপর বিজয়ী হবে। আর তোমাদের মধ্যে এক সহস্র থাকলে আল্লাহ অনুজ্ঞাক্রমে তারা দু’সহস্রের উপর বিজয়ী হবে। আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন। (৮: ৬৬)
এরপর দু’শ কাফেরের বিপক্ষে এক’শ জন মুসলিম থাকলে পলায়ন না করা (আল্লাহ পাক) ফরয করে দিলেন। সুফিয়ান ইবনু উয়াইনা (রহঃ) একবার বর্ণনা করেছেন যে, (তাতে কিছু অতিরিক্তাছে যেমন,) حَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى الْقِتَالِ إِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ নাযিল হল, সুফিয়ান বলেন, ইবনু শুবরুমা বলেছেন, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ এর ব্যাপারটাও আমি এরকম মনে করি।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৯৭ | 4297 | ٤۲۹۷
পরিচ্ছদঃ ২৩৯০. আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ এখন তোমাদের ভার লাঘব করলেন। তিনি অবগত আছেন যে তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে … আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন (৮ঃ ৬৬)
৪২৯৭। ইয়াহইয়া ইবনু আবদুল্লাহ সুলামী … ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, যখন إِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ আয়াতটি নাযিল হল তখন দশজনের বিপরীত একজনের পলায়নও নিষিদ্ধ করা হল, তখন এটা মুসলমানদের উপর দুৎসাধ্য মনে হলে পরে তা লাঘবের বিধান এলো الآنَ خَفَّفَ اللَّهُ عَنْكُمْ وَعَلِمَ أَنَّ فِيكُمْ ضُعْفًا فَإِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ مِائَةٌ صَابِرَةٌ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ এদেরকে যখন সংখ্যার দিক থেকে হাল্কা করে দিলেন, সেই নমনীয়তার সমপরিমাণ তাদের ধর্মও হ্রাস পেল।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৯৮ | 4298 | ٤۲۹۸
পরিচ্ছদঃ ২৩৯১. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তোমরা মুশরিকদের সাথে যেসব চুক্তি করেছিলে আল্লাহ ও তার রাসুলের তরফ থেকে সেসব বিচ্ছেদ করা হল (৯ঃ ১) ইব্ন ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, أَذَنٌ কারো কথা শুনে তা সত্য বলে ধারণা করা। تُطَهِّرُهُمْ এবং تُزَكِّيْهِمْ এর একই অর্থ, এ ব্যবহার পদ্ধতি অধিক। সে পবিত্র করে। زَكْوَةٌ ‘ইবাদাত ও নিষ্ঠা لَا يُؤْتُوْنَ الزَّكَاةَ (তারা যাকাত প্রদান করে না) (এবং) তারা এ সাক্ষ্যও প্রদান করে না যে, আর কোন উপাস্য নেই এক আল্লাহ ব্যতীত। يُضَاهُوْنَ তারা তুলনা দিচ্ছে।
সুরা বারাআত
وَلِيْجَةً এমন বস্তু যাকে তুমি আরেকটা বস্তুর মধ্যে ঢুকিয়ে দিলে। الشُّقَّةُ সফর, ভ্রমণ, الْخَبَالُ বিশৃঙ্খলা, বিপর্যয়, الْخَبَالُ মৃত্যু। وَلَاتَفْتِنِّيْ আমাকে হুমকি দিও না। كَرْهًا-وَ- كُرْهًا বাধ্যবাধকতা, উভয়টা একই অর্থবোধক, مُدَّخَلًا প্রবেশস্থল, যেথায় তারা প্রবেশ করবে। يَجْمَحُوْنَ তারা ত্বরান্বিত করবে। وَالْمُؤْتَفِكَاتِ যাদের নিয়ে ভূমি উল্টে গেছে। أَهْوَى তাকে গর্তে নিক্ষেপ করল। عَدْنٍ স্থায়িত্ব অবস্থান, যেমন, عَدَنْتُبِأَرْضٍ আমি অবস্থান করলাম, এগুলো থেকে مَعْدِنٍ শব্দ আসছে এবং বলা হয় فِيْ مَعْدِنِ صِدْقٍ অর্থাৎ সত্যের উৎপত্তিস্থল। الْخَوَالِفُ-الْخَالِفُ শব্দের বহুবচন অর্থ, যে আমার পিছনে থাকল। এবং আমার পরে বসে থাকল এবং এর অর্থ থেকে يُخْلِفُهُفِيالْغَابِرِيْنَ অর্থ, অবশিষ্টদের মধ্যে পিছনে রাখা হয় এবং الْخَالِفَةُ শব্দের বহুবচন হিসাবে الْخَوَالِفُ স্ত্রীলিঙ্গে ব্যবহার করা বৈধ আছে যদিও তা পুরুষ শব্দের বহুবচন, তা হলে তার এভাবে বহুবচন আরবী ভাষায় দু’টি শব্দ ব্যতীত পাওয়া যায় না, যথা فَارِسٌ এর বহুবচন فَوَارِسُ এবং هَالِكٌ এর বহুবচন هَوَالِكُالْخَيْرَاتُ শব্দের এক বচন خَيْرَةٌ অর্থ, কল্যাণ ও মর্যাদাসম্পন্ন বস্তু। مُرْجَئُوْنَ বিলম্বিত ব্যক্তিবর্গ। الشَّفَا কিনারা বা পার্শ্ব। الْجُرُفُ যা উঁচু স্থান বা উপত্যকা থেকে প্রবাহিত হয়। هَائِرٍ-هَارٍ পতিত হওয়া। যেমন বলা হয়, কুয়া ভেঙ্গে পড়েছে যখন তা ধ্বংস হয়ে যায়, আর এরূপভাবে انْهَدَمَتْ শব্দের অর্থ হয়ে থাকে। لَأَوَّاهٌ অধিক কোমল হৃদয়, ভয়-ভীতির কারণে। কবি বলেন, ‘‘যখন আমি রাতের বেলায় উষ্ট্রীর পিঠে আরোহণ করলাম, তখন সেটি দুশ্চিন্তাগ্রস্থ ব্যক্তির মত দীর্ঘশ্বাস ফেলে আহ! করতে থাকে।’’
৪২৯৮। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … বারা ইবনু ‘আযিব (রাঃ) বলেছেনঃ সর্বশেষে যে আয়াত অবতীর্ণ হয়, তা হল يَسْتَفْتُونَكَ قُلِ اللَّهُ يُفْتِيكُمْ فِي الْكَلاَلَةِ লোকে আপনার নিকট ব্যবস্থা জানতে চায়; বলুন! পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যাক্তি সম্বন্ধে আল্লাহ তোমাদের ব্যবস্থা জানোাচ্ছেন। (৪: ১৭৬) এবং সর্বশেষে যে সূরাটি অবতীর্ণ হয়, তা হল সূরায়ে বারাআত।
হাদিস নম্বরঃ ৪২৯৯ | 4299 | ٤۲۹۹
পরিচ্ছদঃ ২৩৯২. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ (হে মুশরিকদল) তোমরা তারপর দেশে চার মাস কাল পরিভ্রমন কর ও জেনে রাখ যে, তোমরা আল্লাহকে হীনবল করতে পারবে না। নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদের লাঞ্চিত করে থাকেন (৯ঃ ২) سيحوا سيروا পরিভ্রমন করা।
৪২৯৯। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ বকর (রাঃ) নবম হিজরীর হাজ্জে (হজ্জ) আমাকে এ নির্দেশ দিয়ে পাঠিয়ে দেন যে, আমি কুরবানীর দিন ঘোষণাকারীদের সঙ্গে মিনায় (সমবেত লোকদের) এ ঘোষণা করে দেই যে, এ বছরের পর কোন মুশরিক হাজ্জ (হজ্জ) করার জন্য আসবে না। আল্লাহর ঘর উলঙ্গ অবস্থা তাওয়াফ করবে না।
হুমায়দ ইবনু আবদুর রাহমান (রাঃ) বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী (রাঃ) কে পুনরায় এ নির্দেশ দিয়ে প্রেরণ করলেন যে, তুমি সূরায়ে বারাআতের বিধানসমূহ ঘোষণা করে দাও। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, মীনায় অবস্থানকারীদের মাঝে (কুরবানীর পর) আলী (রাঃ) আমাদের সাথে ছিলেন এবং সূরায়ে বারাআতের বিধানসমূহ ঘোষণা করলেন, এ বছরের পর কোন মুশরিক হাজ্জ (হজ্জ) করার জন্য আসবে না। কেউ উলঙ্গ অবস্থায় ঘর তাওয়াপ করবে না। আবূ আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেনঃ أَذَنهم অর্থ, তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৩০০ | 4300 | ٤۳۰۰
পরিচ্ছদঃ ২৩৯৩. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ আল্লাহ ও তার রাসুলের পক্ষ থেকে হজ্জে আকবরের দিনে আল্লাহর পক্ষ হতে মানুষের প্রতি এটা এক ঘোষণা যে, আল্লাহর সাথে মশরিকদের কোন সম্পর্ক রইল না এবং তার রাসুলেরও নয়। যদি তোমরা তওবা কর তাহলে তা (তোমাদের জন্য) মঙ্গলকর। আর যদি বিমুখ হও, তবে জেনে রাখ যে, তোমরা আল্লাহকে হীনবল করতে পারবে না। আর হে নবী! কাফেরদের যন্ত্রনাময় শাস্তির সংবাদ দিন (৯ঃ ৩)
৪৩০০। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আবূ বকর (রাঃ) আমাকে সেই কুরবানীর দিন ঘোষণাকারীদের সাথে মীনায় এ (কথা) ঘোষণা করার জন্য পাঠালেন যে, এ বছরের পর আর কোন মুশরিক (মক্কায়) হাজ্জ (হজ্জ) করতে পারবে না। আল্লাহর ঘর উলঙ্গ অবস্থায় কাউকে তাওয়াফ করতে দেওয়া হবে না। হুমায়দ (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরে আলী ইবনু আবূ তালিবকে পাঠালেন এবং বললেনঃ সূরায়ে বারাআতের বিধানসমূহ ঘোষণা করে দাও। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আলী (রাঃ) আমাদের সাথেই মীনাবাসীদের মধ্যে সূরায়ে বারাআত কুরবানীর দিন ঘোষণা করলেন। বললেন, এ বছরের পরে কেউ হাজ্জ (হজ্জ) (মক্কা) করতে আসতে পারবে না। এবং উলঙ্গ অবস্থায় আল্লাহর ঘরকে তাওয়াফ করবে না।