বুখারি হাদিস নং ৪০১৮

হাদীস নং ৪০১৮

ইউসুফ ইবনে মূসা রহ………….জারীর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি আমাকে যুল খালাসার পেরেশানী থেকে স্বস্তি দেবে না? আমি বললাম, অবশ্যই। এরপর আমি (আমাদের) আহমাস গোত্র থেকে একশ’ পঞ্চাশজন অশ্বারোহী সৈনিক নিয়ে চললাম। তাদের সবাই ছিল অশ্ব পরিচালায় অভিজ্ঞ। কিন্তু আমি তখনো ঘোড়ার উপর স্থির হয়ে বসতে পারতাম না। তাই ব্যাপারটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জানালাম। তিনি তাঁর হাত দিয়ে আমার বুকের উপর আঘাত করলেন। এমনকি আমি আমার বুকে তাঁর হাতের চিহ্ন পর্যন্ত দেখতে পেলাম। তিনি দোয়া করলেন : হে আল্লাহ ! একে স্থির হয়ে বসে থাকতে দিন এবং তাকে হেদায়েতদানকারী ও হেদায়েত লাভকারী বানিয়ে দিন। জারীর রা. বলেন, এরপরে আর কখনো আমি আমার ঘোড়া থেকে পড়ে যাইনি। তিনি আরো বলেছেন যে, যুল খালাসা ছিল ইয়ামানের অন্তর্গত খাসআম ও বাজীলা গোত্রের একটি (তীর্থ) ঘর। সেখানে কতগুলো মূর্তি স্থাপিত ছিল। লোকেরা এগুলোর পূজা করত এবং এ ঘরটিকে বলা হত কাবা। রাবী বলেন, এরপর তিনি সেখানে গেলেন এবং ঘরটি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিলেন আর এর ভিটামাটিও চুরমান করে দিলেন। রাবী আরো বলেন, আর যখন জারীর রা. ইয়ামানে গিয়ে উঠলেন তখন সেখানে এক লোক থাকত, সে তীরের সাহায্য ভাগ্য নির্ণয় করত; তাকে বলা হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতিনিধি এখানে আছেন, তিনি যদি তোমাকে পাকড়াও করার সুযোগ পান তাহলে তোমার গর্দান উড়িয়ে দেবেন। রাবী বলেন, এরপর একদা সে ভাগ্য নির্ণয়ের কাজে লিপ্ত ছিল, সেই মুহূর্তে জারীর রা. সেখানে পৌঁছে গেলেন। তিনি বললেন, তীরগুলো ভেঙ্গে ফেল এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই—এ কথার সাক্ষ্য দাও, অন্যথায় তোমার গর্দান উড়িয়ে দেব। লোকটি তখন তীরগুলো ভেঙ্গে ফেলল এবং (আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এ কথার) সাক্ষ্য দিল। এরপর জারীর রা. আবু আরতাত নামক আহমাস গোত্রের এক ব্যক্তিকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমতে পাঠালেন খোশখবরী শোনানোর জন্য। লোকটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! সে সত্তার কসম করে বলছি, যিনি আপনাকে সত্য বাণী দিয়ে পাঠিয়েছেন, ঘরটিকে ঠিক খুজলি-পাঁচড়া আক্রান্ত উটের মত কালো করে রেখে আমি এসেছি। রাবী বলেন, এ কথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহমাস গোত্রে অশ্বারোহী এবং পদাতিক সৈনিকদের সার্বিক কল্যাণ ও বরকতের জন্য পাঁচবার দোয়া করলেন।