বুখারি হাদিস নং ২৪১১

হাদীস নং ২৪১১

ইসমাঈল রহ……….আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ দুদলে বিভক্ত ছিলেন। একদলে ছিলেন আয়িশা, হাফসা, সাফিয়্যা ও সাওদা রা. অপর দলে ছিলেন উম্মু সালামা রা. সহ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অন্যান্য স্ত্রীগণ । আয়িশা রা.-এর প্রতি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিশেষ ভালোবাসার কথা সাহাবীগণ জানতেন। তাই তাদের মধ্যে কেউ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে কিছু হাদিয়া পাঠাতে চাইলে তা বিলম্বিত করতেন। যেদিন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়িশা রা.-এর ঘরে অবস্থান করতেন সেদিন হাদিয়া দানকারী ব্যক্তি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আয়িশা রা.-এর ঘরে তা পাঠিয়ে দিতেন। উম্মু সালামা রা.-এর দল তা নিয়ে আলোচনা করলেন। উম্মু সালামা রা.-কে তাঁরা বললেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে (এ বিষয়ে) আপনি আলাপ করুন। তিনি যেন লোকদের বলে দেন যে, যারা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে হাদিয়া পাঠাতে চান, তারা যেন তাঁর কাছে পাঠিয়ে দেন, যে স্ত্রীর ঘরেই তিনি থাকুননা কেন। উম্মু সালামা রা. তাদের প্রস্তাব নিয়ে তাঁর সাথে আলাপ করলেন। কিন্তু তিনি তাকে কোন জওয়াব দিলেন না। পরে সবাই তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, তিনি আমাকে কোন জবাব দিলেন না। তখন তাঁরা তাকে বললেন, আপনি তার সাথে আবার আলাপ করুন। (আয়িশা) বলেন, যেদিন তিনি তাঁর (উম্মু সালামার) ঘরে গেলেন, সেদিন তিনি আবার তাঁর কাছে আলাপ তুললেন। সেদিনও তিনি তাকে কিছু বললেন না। তারপর তারা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তখন তিনি বললেন, আমাকে তিনি কিছুই বলেননি। তখন তাঁরা বললেন, তিনি কোন জওয়াব না দেওয়া পর্যন্ত আপনি বলতে থাকুন। তিনি তার ঘরে গেলে আবার তিনি তাঁর কাছে সে প্রসঙ্গ তুললেন। এবার তিনি তাকে বললেন, আয়িশা রা.-এর ব্যাপার নিয়ে আমাকে কষ্ট দিও না। মনে রেখ, আয়িশা রা. ছাড়া আর কোন স্ত্রীর বস্ত্রাচ্ছাদনে থাকা অবস্থায় আমার উপর ওহী নাযিল হয়নি। (আয়িশা রা.) বলেন, একথা শুনে তিনি (উম্মু সালামা রা.) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আপনাকে কষ্ট দেওয়ার (অপরাধ) থেকে আমি আল্লাহর কাছে তাওবা করছি। তারপর সকলে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্যা ফাতিমা রা.-এক এনে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্যা সম্পর্কে ইনসাফের আবেদন জানাচ্ছেন। (ফাতিমা রা.) তাঁর কাছে বিষয়টি তুলে ধরলেন। তখন তিনি বললেন, প্রিয় কন্যা !আমি যা পছন্দ করি, তাই কি তুমি পছন্দ কর না? তিনি বললেন, অবশ্যই করি। তারপর তাদের কাছে গিয়ে তাদেরকে অবহিত করলেন। তাঁরা তাকে বললেন, তুমি আবার যাও। কিন্তু এবার তিনি যেতে অস্বীকার করলেন। তখন তারা যায়নাব বিনতে জাহাশ রা.-কে পাঠালেন তিনি তাঁর কাছে গিয়ে কঠোর ভাষা ব্যবহার করলেন, এবং বললেন, আপনার স্ত্রীগণ! আল্লাহর দোহাই দিয়ে ইবনে আবু কুহাফার (আবু বকর রা.)-এর কন্যা সম্পর্কে ইনসাফের আবেদন জানাচ্ছেন। এরপর তিনি গলার স্বর উচু করলেন। এমনকি আয়িশা রা.-কে জড়িয়েও কিছু বললেন। আয়িশা রা. সেখানে বসা ছিলেন। শেষ পর্যন্ত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়িশা রা.-এর দিকে তাকিয়ে দেখছিলেন। তিনি কিছু বলেন কিনা। (রাবী উরওয়া রা.) বলেন, আয়িশা রা. যায়নাব রা.-এর কথার প্রস্তুতি বাদে কথা বলতে শুরু করলেন এবং তাকে চুপ করে দিলেন। আয়িশা রা. বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন আয়িশা রা.-এর দিকে তাকিয়ে বললেন, এ হচ্ছে আবু বকর রা. -এর কন্যা। আবু মারওয়ান গাসসনী রা. হিশাম এর সূত্রে উরওয়া রহ. থেকে বলেন, লোকেরা তাদের হাদিয়াসমূহ নিয়ে আয়িশা রা.-এর জন্য নির্ধারিত দিনের অপেক্ষা করত। অন্য সনদে হিশাম রহ. মুহাম্মদ ইবনে আবদুর রাহমান ইবনে হারিস ইবনে হিশাম রহ. থেকে বর্ণিত, আয়িশা রা. বলেছেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে ছিলাম, এমন সময় ফাতিমা রা. অনুমতি চাইলেন।