হাদীস নং ১৫৪১
আবুল ইয়ামান রহ……….উরওয়া রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়িশা রা.-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, মহান আল্লাহর এ বাণী সম্পর্কে আপনার অভিমত কি ? (অনুবাদ) সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শন সমূহের অন্যতম। কাজেই যে কেউ কাবাঘরে হজ্জ বা উমরা সম্পন্ন করে, এ দুটির মাঝে যাতায়াতে করলে তার কোন দোষ নেই। (২ : ১৫৮) (আমার ধারণা যে,) সাফা-মারওয়ার মাঝে কেউ সায়ী না করলে তার কোন দোষ নেই। তখন তিনি (আয়িশা রা.) বললেন, হে ভাতিজা ! তুমি যা বললে, তা ঠিক নয়। কেননা, যা তুমি তাফসীর করলে, যদি আয়াতের মর্ম তাই হত, তাহলে আয়াতের শব্দবিন্যাস এভাবে لا جناح عليه أن لا يتطوف بهما হত দুটোর মাঝে সায়ী না করায় কোন দোষ নেই। কিন্তু আয়াতটি আনসারদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে, যারা ইসলাম গ্রহণের পূর্বে মুশাল্লাল নামক স্থানে স্থাপিত মানাত নামের মূর্তির পূজা করত, তার নামেই তারা ইহরাম বাঁধত। সে মূর্তির নামে যারা ইহরাম বাঁধত তার সাফা-মারওয়া সায়ী করাকে দোষ মনে করত। ইসলাম গ্রহণের পর তাঁরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! পূর্বে আমরা সাফা ও মারওয়া সায়ী করাকে দূষণীয় মনে করতাম। (এখন কি করব ?) এ প্রসঙ্গেই আল্লাহ পাক إن الصفا والمروة من شعائر الله الآية অবতীর্ণ করেন। আয়িশা রা. বলেন, (সাফা ও মারওয়ার মাঝে) উভয় পাহাড়ের মাঝে সায়ী করা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিধান দিয়েছেন। কাজেই কারো পক্ষে এ দুয়ের সায়ী পরিত্যাগ করা ঠিক নয়। (রাবী বলেন) এ বছর আবু বকর ইবনে আবদুর রাহমান রা.-কে ঘটনাটি জানালাম। তখন তিনি বললেন, আমি তো এ কথা শুনিনি, তবে আয়িশা রা. ব্যতীত বহু আলিমকে উল্লেখ করতে শুনেছি যে, মানাতের নামে যার ইহরাম বাঁধত তার সকলেই সাফা মাওয়া সায়ী করত, যখন আল্লাহ কুরআনে বায়তুল্লাহ তাওয়াফের কথা উল্লেখ করলেন, কিন্তু সাফা ও মারওয়ার আলোচনা তাঁতে হল না, তখন সাহাবাগণ বলতে লাগলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমরা সাফা ও মারওয়া সায়ী করতাম, এখন দেখি আল্লাহ কেবল বায়তুল্লাহ তাওয়াফের কথা অবতীর্ণ করেছেন, সাফার উল্লেখ করেননি। কাজেই সাফা ও মারওয়া মাঝে সায়ী করলে আমাদের দোষ হবে কি ? এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক إن الصفا والمروة من شعائر الله الآية অবতীর্ণ করেন আবু বকর রা. আরো বলেন, আমি শুনতে পেয়েছি, আয়াতটি দু’ প্রকার লোকদের উভয়ের প্রতি লক্ষ্য করেই অবতীর্ণ হয়েছে, অর্থাৎ যারা জাহিলী যুগে সাফা ও মারওয়া সায়ী করা হতে বিরত থাকতেন, আর যারা তৎকালে সায়ী করত বটে, কিন্তু ইসলাম গ্রহণের পর সায়ী করার বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তাদের দ্বিধার কারণ ছিল আল্লাহ বায়তুল্লাহ তাওয়াফের নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু সাফা ও মারওয়ার কথা উল্লেখ করেননি ? অবশেষে বায়তুল্লাহ তাওয়াফের কথা আলোচনা করার পর আল্লাহ সাফা ও মারওয়া সায়ী করার কথা উল্লেখ করেন।