হাদীস নং ১৩১০
কুতাইবা রহ………..আমর ইবনে মায়মুন আওদী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি উমর রা. কে দেখেছি, তিনি আপন পুত্র আবদুল্লাহ রা.-কে ডেকে বললেন, তুমি উম্মুল মুমিনীন আয়িশা রা.-এর নিকট গিয়ে বল, উমর ইবনে খাত্তাব রা. আপনাকে সালাম জানিয়েছেন এরপর আমাকে আপন সাথীদ্বয় (নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবু বকর রা.)-এর পাশে দাফন করতে তিনি রাযী আছেন কি না ? আয়িশা রা. বললেন, আমি পূর্ব থেকেই নিজের জন্য এর আশা পোষণ করতাম, কিন্তু আজ উমর রা.-কে নিজের উপর প্রাধান্য দিচ্ছি। আবদুল্লাহ রা. ফিরে এলে উমর রা. তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কি বার্তা নিয়ে এলে ? তিনি বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন ! তিনি আপনার জন্য অনুমতি প্রদান করেছেন। উমর রা. বললেন, সেখানে শয্যা লাভ করাই আমার কাছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মৃত্যুর পর আমার শবদেহ বহন করে (আয়িশা রা. এর নিকট উপস্থিত করে) তাকে সালাম জানিয়ে বলবে, উমর ইবনে খাত্তাব (পুনরায়) আপনার অনুমতি প্রার্থনা করেছেন। তিনি অনুমতি দিলে, সেখানে আমাকে দাফন করবে। অন্যথায় আমাকে মুসলমানদের সাধারণ কবরস্থানে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। তারপর উর রা. বলেন, এ কয়েকজন ব্যক্তি যাদের সম্পর্কে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যু পর্যন্ত সন্তুষ্ট ছিলেন, তাদের অপেক্ষা অন্য কাউকে আমি এ খিলাফতের (দায়িত্বপালনে) অধিক যোগ্য বলে মনে করি না। তাই আমার পর তাঁরা (তাদের মধ্য থেকে) যাকে খলীফা মনোনীত করবেন তিনি খলীফা হবেন। তোমরা সকলেই তাঁর আদেশ মেনে চলবে, তাঁর আনুগত্য করবে। এ বলে তিনি উসমান, আলী, তালহা , যুবাইর, আবদুর রহমান ইবনে আওফ ও সা’দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস রা.-এর নাম উল্লেখ করলেন। এ সময়ে এক আনসারী যুবক উমর রা. এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, হে আমীরুল মু’মিনীন ! আল্লাহ প্রদত্ত সুসংবাদ গ্রহণ করুন। আপনি ইসলামের ছায়াতলে দীর্ঘদিন অতিবাহিত করার সৌভাগ্য লাভ করেছেন যা আপনিও জানেন। এরপর আপনাকে খলীফা নিযুক্ত করা হয় এবং আপনি ন্যায়বিচার করেছেন। সর্বোপরি আপনি শাহাদাত লাভ করছেন। উমর রা. বললেন, হে ভাতিজা ! যদি তা আমার জন্য লাভ লোকসানের না হয়ে বরাবর হয়, তবে কতই না ভাল হবে। (তিনি বললেন) আমার পরবর্তী খলীফাকে ওয়াসিয়্যাত করে যাচ্ছি, তিনি যেন প্রথম দিকের মুহাজিরদের ব্যাপারে যত্নবান হন, তাদের হক আদায় করে চলেন, যেন তাদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করেন। আমি তাকে আনসারদের সাথেও সদাচারের উপদেশ দেই, যারা ঈমান ও মদীনাকে আকড়ে ধরে রয়েছেন, যেন তাদের মধ্যকার সৎকর্মশীলদের কাজের স্বীকৃতি প্রদান করা হয় এবং তাদের মধ্যকার (লঘু) অপরাধীকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। সর্বশেষে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দায়িত্বভুক্ত (সর্বস্তরের মু’মিনদের সম্পর্কে) সতর্ক করে দিচ্ছি যেন মুমিনদের সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করা হয়, তাদের রক্ষার জন্য যুদ্ধ করা হয় এবং সাধ্যাতীত কোন দায়িত্ব তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া না হয়।