১ যখন গম তোলার সময় হল শিম্শোন তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেল। স্ত্রীকে দেবার জন্যে একটা কচি পাঁঠা নিয়ে গেল। শ্বশুরকে গিয়ে বলল, “আমি স্ত্রীর ঘরে ঢুকছি।”কিন্তু মেয়ের পিতা শিম্শোনকে ঢুকতে দিল না।
২ তার পিতা শিম্শোনকে বলল, “আমি ভেবেছিলাম তুমি তাকে ঘৃণা কর। তাই তার বিয়ে দিয়েছি একটি সেরা পাত্রের সঙ্গে। আমার ছোট মেয়ে আরও সুন্দরী। তুমি তাকেই নাও।”
৩ শিম্শোন বলল, “এখন তোমাদের মানে পলেষ্টীয়দের ওপর আঘাত হানলে কেউ আর আমাকে দোষ দিতে পারবে না।”
৪ এই বলে শিম্শোন বেরিয়ে গেল। সে ৩০0টি শেযাল ধরল। সে দুটো করে শেযাল ধরে তাদের লেজ দুটো বেঁধে জোড়া তৈরি করল। প্রত্যেক জোড়া শেযালের লেজে সে একটি করে মশাল বেঁধে দিল।
৫ তারপর মশালগুলো জ্বেলে দিল। পলেষ্টীয়দের শস্যক্ষেত্রে সে ঐ শেযালগুলোকে ছুটিযে দিল। এই ভাবে নতুন গজানো সমস্ত গাছ আর শস্যের গাদা সে বালিয়ে দিল। দ্রাক্ষার ক্ষেত আর সমস্ত জলপাই গাছ বালিয়ে দিল।
৬ পলেষ্টীয়রা জিজ্ঞাসা করল, “কে এসব কাজ করেছে?” কেউ একজন বলল, “শিমশোন করেছে। তিম্নার কোন একজনের জামাতা হচ্ছে এই শিম্শোন। তার এই কাজের কারণ তার শ্বশুর শিম্শোনের স্ত্রীকে অন্য এক সেরা পাত্রের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে।” তাই পলেষ্টীয়রা শিম্শোনের স্ত্রী আর শ্বশুরকে পুড়িয়ে মেরে ফেলল।
৭ শিম্শোন পলেষ্টীয়দের বলল, “তোমরা আমার ক্ষতি করেছ; এবার আমিও তোমাদের ক্ষতি করব। তারপর আমার তোমাদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়া বন্ধ হবে।”
৮ তারপর শিম্শোন পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করল। অনেক লোককে সে হত্যা করল। তারপর সে একটা গুহায় আশ্রয় নিল। গুহাটি ছিল ঐটম শিলা নামে একটি জায়গায়।
৯ পলেষ্টীয়রা যিহূদায় চলে গেল। লিহী নামের একটি জায়গায় তারা বিশ্রাম নিল। তাদের সৈন্যরা সেখানে তাঁবু গাড়ল। তারা যুদ্ধের জন্য তৈরি হল।
১০ যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা তাদের জিজ্ঞাসা করল, “তোমরা পলেষ্টীয়রা কেন এখানে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এসেছ?”তারা বলল, “আমরা শিম্শোনকে ধরতে এসেছি। আমরা তাকে বন্দী করতে চাই। সে আমাদের প্রতি যা অন্যায করেছে তার জন্য তাকে শাস্তি দিতে চাই।”
১১ যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর ৩,000 লোক তখন শিম্শোনের কাছে গেল। ঐটম শিলার গুহায় গিয়ে তারা তাকে বলল, “তুমি আমাদের এ কি করলে? তুমি কি জানো না যে পলেষ্টীয়রা আমাদের শাসন করছে?শিম্শোন বলল, “তারা আমার ওপর যে অন্যায কাজ করেছে শুধুমাত্র তার জন্যেই আমি তাদের শাস্তি দিয়েছি।”
১২ ওরা তখন বলল, “আমরা তোমাকে বেঁধে নিয়ে যাবার জন্য এসেছি। তোমাকে পলেষ্টীয়দের হাতে তুলে দেব।”শিম্শোন বলল, “প্রতিশ্রুতি দাও তোমরা আমাকে মারবে না।”
১৩ ওরা বলল, “ঠিক আছে। আমরা শুধু তোমাকে বেঁধে পলেষ্টীয়দের কাছে ধরিয়ে দেব। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমরা তোমায় হত্যা করব না।” এই বলে ওরা দুটো নতুন দড়ি দিয়ে শিম্শোনকে বেঁধে ফেলল। গুহা থেকে তাকে বের করে নিয়ে চলল।
১৪ শিম্শোন যখন লিহীতে এল, পলেষ্টীয়রা তাকে দেখতে এল। তারা আনন্দে চিত্কার করে উঠল। তখন প্রভুর আত্মা সবলে শিম্শোনের ওপর এল। দড়িগুলো পোড়া সূতোর মতো পলকা মনে হল এবং তার হাত থেকে খসে পড়ল। যেন সব গলে পড়েছে।
১৫ শিম্শোন একটা মরা গাধার চোযালের হাড় দেখতে পেল। হাড়টা নিয়ে তাই দিয়ে সে ১,000 জন পলেষ্টীয়কে হত্যা করল।
১৬ তখন শিম্শোন বলল: গাধার একটি চোযালের হাড় দিয়েই আমি ১,000 লোক হত্যা করেছি। একটি গাধার চোযালের হাড় দিয়ে আমি তাদের মৃতদেহগুলি জড়ো করেছি।
১৭ এই কথা বলে চোযালের হাড়টা শিম্শোন ছুঁড়ে ফেলে দিল। সেই জায়গার নাম রামত্ লিহী।
১৮ শিম্শোনের খুব পিপাসা পেয়েছিল। প্রভুর কাছে সে প্রার্থনা করল। সে বলল, “হে প্রভু আমি তোমার দাস। এই যে আমার বিরাট জয় হল, সে তো তোমারই দয়ায়। পিপাসায যেন আমি মারা না যাই। তাই এখন দয়া করো তুমি। দয়া করো যেন ওরা আমায় ধরে না ফেলে, যাদের এখনও সুন্নত্ পর্য়ন্ত হয় নি।”
১৯ লিহীর মাঠে একটা গর্ত আছে। ঈশ্বর সেই গর্ত ফাটিযে ঝর্ণা তৈরী করলেন। সেই জল পান করে শিম্শোন তাজা হয়ে উঠল। সে আবার শক্তি অনুভব করল। সে সেই ঝর্ণার নাম দিল এন-হক্কোরী। লিহী শহরে এই ঝর্ণা আজও আছে।
২০ শিম্শোন ২০ বছর ইস্রায়েলীয়দের বিচারক ছিল। সেটা ছিল পলেষ্টীয়দের রাজত্ব কাল।