দুই বন্ধু ছিল। একজন অন্ধ আরেকজন বদ্ধ কালা। দুইজনে বেজায় ভাব। কালা বিঞ্জাপনে পড়িল আর অন্ধ লোকমুখে শুনিল, কোথায় যেন যাত্রা হইবে, সেখানে সঙেরা নাচগান করিবে। কালা বলিল, “অন্ধ ভাই, চল, যাত্রায় গিয়া নাচ দেখি। অন্ধ হাত নাড়িয়া, গলা খেলাইয়া কালাকে বুঝাইয়া দিল, “কালা ভাই, চল, যাত্রায় নাচগান শুনিয়া আসি।
দুইজনে যাত্রার আসরে গিয়া বসিল। রাত দুপুর পর্যন্ত নাচগান চলিল, তারপর অন্ধ বলিল, “বন্ধু, গান শুনিলে কেমন? কালা বলিল, “আজকে তো নাচ দেখিলাম- গানটা বোধহয় কাল হইবে। অন্ধ ঘন ঘন মাথা নাড়িয়া বলিল, “মূর্খ তুমি! আজ হইল গান- নৃত্যটাই বোধহয় কাল হইবে।”
কালা চটিয়া গেল। সে বলিল , “চোখে দেখ না, তুমি নাচের মর্ম জানিবে কি? অন্ধ তাহার কানে আঙুল ঢুকাইয়া বলিল, “কানে শোন না, গানের তুমি কাঁচকলা বুঝিবে কি? কালা চিত্কার করিয়া বলিল, “আজকে নাচ, কালকে গান, অন্ধ গলা ঝাঁকড়াইয়া আর ঠ্যাং নাচাইয়া বলিল, “আজকে গান, কালকে নাচ।
সেই হইতে দুজনের ছাড়াছাড়ি। কালা বলে, “অন্ধটা এমন জুয়াচোর-সে দিনকে রাত করিতে পারে। অন্ধ বলে, “কালাটা যদি নিজের কথা শুনিতে পাইত, তবে বুঝিত সে কতবড় মিথ্যাবাদী।