আমার ধীমান খ্যাতনামা নিষ্ঠাবান
নন্দনতাত্ত্বিক বন্ধু অ্যাসট্রেতে চুরুটের ছাই
ঝেড়ে, হাই তুলে পুরু লেন্সের আড়ালে-রাখা চোখে
কৌতুকের কলাপ ছড়িয়ে
বল্লেন, “এবার ছেড়ে দিন বেচারীকে,
ঢের হলো ঢলাঢলি। আপনার চুলে বহুদিন
আগেই ধরেছে পাক, চোখে ছানি পড়বার দেরি
নেই, আর তিনিও যে কচি খুকী,
এ-কথা যাবে না বলা। ইতিমধ্যে তাকে যথারীতি
সবাই ষোড়শী ব’লে ডাকে। দয়া ক’রে
এবার ছাড়ুন তার কস্তাপেড়ে শাড়ির আঁচল। আর শুনতে চাই না
আপনার মুখে-
‘স্বপ্নের সমুদ্র থেকে উঠে-আসা নারী
আমার সকল গান মঞ্জরিত তোমারই উদ্দেশে। যযাতিকে
মানায় না, সত্যি বলতে কী, তবুণীর নীলাম্বরী
ধ’রে টানাটানি, এই আচরণ ছাড়ুন এখন।“
আমি তো ছেড়েই দিতে চাই। সবক্ষণ তাকে পুঁজি
ক’রে যারা নিজেদের কপাল ফেরায়,
সংখ্যায় নগণ্য নয় তারা। অপদার্থ এই আমি
রাতারাতি সম্পদ অর্জনকারী মন্ডলীর কেউ
নই; দেখি মাস্তানেরা সকল সময়
ওৎ পেতে থাকে,
কখন বসাবে তার গালে কামার্ত কামড় নোংরা
দাঁতে; হাতে ছোরা
ঘোরাতে ঘোরাতে ওরা চেপে ধরে তার দু’টি স্তন
দিন দুপুরেই। তার শাড়ি
কাঁচুলি খোলার জন্যে এক-পায়ে রয়েছে দাঁড়িয়ে
দশদিকে দশজন। আমি তাকে শ্বাপদের ধারালো দঙ্গলে
ফেলে রেখে মাথা হেঁট ক’রে
চ’লে যাবো? বলুন হে বন্ধু, এ তরুণী হরিণীকে
কী ক’রে বাঘের মুখে ফেলে শুধু নন্দনতত্ত্বের বেল পাকা
দেখে যাবো কাকের ধরনে? আমি তার
পাশে থেকে অন্যরকমের প্রেমসংহিতা লিখে
যেতে পারি কিনা
এ নিয়ে প্রকাশ্যে অবহেলা আর যন্ত্রণাকে নিয়েছি দত্তক।।