বন্ধুকে বললাম, তুমি, আমি, তোমরা, ওরা
অথবা সে, বাস্তবিক এসব শব্দের মানে নেই।
তোমাকে যে-নামে ডাকি সে কি তোমার আসল নাম?
ভুলে যাই, বড়ো বেশি ভুলে যাই তোমার কি নাম,
এমন কি কী-যে এই আমার নিজের নাম, কখনও-সখনও
তা-ও ভুলে যাই, দ্যাখো কী অদ্ভুত জগতে আমরা
এত্যহ নিশ্বাস নিচ্ছি সারাক্ষণ। জংধরা তার
আর কেরোসিন কাঠে তৈরি ওরা, মানুষ বটেই,
হাঁটে ফুটপাতে, বসে চায়ের টেবিলে, তাস খেলে,
প্রত্যহ স্যুইচ টেপে এটা-সেটা, মেশিন চালায়
এবং কাগজে লেখে, ফ্যাল ফ্যাল চেয়ে থাকে ফের
গণক-যন্ত্রের দিকে। দেখছো না দেবতার স্বর্গীয় শরীরও
পুরনো সংবাদপত্রে কেমন বানানো, যেন এক ফুঁয়ে উড়ে
যাবে দূরে, বহু দূরে অলিম্পিক খেলায় কোথাও!
দেখছো না
রাস্তায় রাস্তায় পার্কে, মাঠে-কলোনিতে
দপ্তরে দপ্তরে
আর কারখানায় উন্মাদেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ এখন?
হরিণ, সতেজ ঘোড়া, খরগোশ, একরত্তি চড়াই, সবাই
চকিতে ফিরিয়ে নেয় চোখ, এমন কি গাছপালা
বেজায় বিমুখ।
ক্ষুধার্ত অসুস্থ
শিশুর কান্নার মতো কোথাও গিটার বেজে চলে একটানা।
মুখহীন মুখ দেখে পথ চলি, ডানে বাঁয়ে মুখহীন মুখ।
চতুর্দিকে বোতলের জাগছে পাহাড় শাদা, নীল-
সবুজ বোতল,
হলুদ বোতল,
বেগুনি বোতল,
বাদামি বোতল,
কাছে দূরে রাত্রিদিন কোকিলও ডাকছে কোকা-কোলা,
কোকা-কোলা!