১ য়োযাশ মাত্র ৭ বছর বয়সে রাজা হয়ে ৪০ বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মা সিবিযা ছিলেন বের্-শেবা শহরের বাসিন্দা।
২ যতদিন পর্য়ন্ত যাজক যিহোয়াদা জীবিত ছিলেন ততদিন পর্য়ন্ত য়োযাশ প্রভুর নির্দেশিত পথে জীবনযাপন করেছিলেন।
৩ যিহোয়াদা যোয়াশের দুটো বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের পর, রাজা যোয়াশের অনেকগুলি সন্তান হয়েছিল।
৪ পরবর্তীকালে, রাজা য়োযাশ প্রভুর মন্দিরকে নবরূপ দেবার পরিকল্পনা করেছিলেন।
৫ তিনি সমস্ত লেবীয় ও যাজকদের একসঙ্গে ডেকে বললেন, “যাও, ইস্রায়েলের প্রত্যেকে প্রতি বছর যে কর দেয তা সংগ্রহ কর এবং তোমাদের প্রভুর মন্দিরকে নতুন রূপ দাও। যাও, আর দেরী করো না।” কিন্তু লেবীয়রা এতে বিশেষ উত্সাহ দেখালেন না।
৬ তখন রাজা য়োযাশ প্রধান যাজক যিহোয়াদাকে ডেকে বললেন, “আপনি কেন লেবীয়দের যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের কাছ থেকে কর সংগ্রহ করতে আদেশ দেন নি যা প্রভুর দাস মোশি ও ইস্রায়েলের লোকরা পবিত্র তাঁবুর জন্যই ব্যবহার করতেন।”
৭ অতীতে, দুষ্ট রাণী অথলিয়ার পুত্ররা প্রভুর মন্দির থেকে পবিত্র জিনিসপত্র নিয়ে গিয়েছিলেন এবং সেগুলো বালদেবতার আরাধনার জন্য ব্যবহার করেছিলেন।
৮ রাজা য়োযাশ প্রভুর মন্দিরের দরজার বাইরে একটা প্রণামীর সিন্দুক বানিয়ে বসানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।
৯ এরপর লেবীয়রা যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের প্রভুর জন্য কর দেবার কথা ঘোষণা করেন। ঈশ্বরের জন্য ইস্রায়েলীয়রা যখন মরুভূমিতে দিন কাটাচ্ছিল তখন এইভাবে মোশি এই কর সংগ্রহ করেছিলেন।
১০ সমস্ত নেতা ও লোকরা খুশি মনে করে নিয়ে এসে প্রণামীর সিন্দুকে জমা দিল। সিন্দুকটা যতক্ষণ পর্য়ন্ত না ভরে গেল ততক্ষণ পর্য়ন্ত সবাই সিন্দুকে অর্থ জমা করতে লাগলো।
১১ সিন্দুকটা ভরে গেলে লেবীয়রা সেটা রাজকর্মচারীদের কাছে নিয়ে গেল। যখন রাজার সচিব ও প্রধান যাজকের সহকারী সিন্দুক খালি করে তার থেকে যাবতীয় অর্থ বের করে নিলেন, ওটা আবার ভরে যাওয়া পর্য়ন্ত একই জায়গায় ফেরত্ দেওয়া হয়েছিল। এইভাবে বেশ কিছু পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ হয়েছিল।
১২ রাজা য়োযাশ ও যিহোয়াদা দুজনে এই অর্থ প্রভুর মন্দিরের তদারকির কাজ য়াঁরা করতেন তাদের দিলেন। তারা প্রভুর মন্দির সারানোর জন্য সুদক্ষ পাথরকাটিযে ও ছুতোর মিস্ত্রি ভাড়া করলেন। এছাড়াও লোহা ও পিতলের কাজ জানা কারিগরদেরও ভাড়া করা হয়েছিল।
১৩ যারা প্রভুর মন্দির তদারকির কাজ করতো তারা সকলেই নিষ্ঠাবান ও সত্ হওয়ায ঈশ্বরের মন্দির পুননির্মাণের কাজ সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়েছিল এবং প্রভুর মন্দিরকে ঠিক আগের মতো ও আরো দৃঢ় করে বানানো হয়।
১৪ কাজটি শেষ হলে কর্মচারীরা অবশিষ্ট অর্থ রাজা য়োযাশ ও যাজক যিহোয়াদার কাছে ফিরিযে আনলো। এই অর্থ দিয়ে প্রভুর মন্দিরের জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র বানানো ছাড়াও, এই অর্থ প্রভুর মন্দিরের নিত্যসেবা ও হোমবলি নিবেদনের কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল। এছাড়াও এই অবশিষ্ট অর্থ দিয়ে সোনা ও রূপোর পাত্র ও টুকিটাকি জিনিসপত্র বানানো হয়েছিল। যিহোয়াদার জীবদ্দশায় যাজকরা নিয়মিত প্রভুর মন্দিরে হোমবলি উত্সর্গ করতেন।
১৫ অবশেষে, যিহোয়াদা বৃদ্ধ হলেন এবং ১৩০ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হল।
১৬ লোকরা দায়ূদ নগরীতে রাজাদের সমাধি ক্ষেত্রে যিহোয়াদাকে সমাধিস্থ করেছিলেন কারণ তিনি ইস্রায়েলের ঈশ্বর ও তাঁর মন্দিরের জন্য বহু ভাল ভাল কাজ করেছিলেন।
১৭ যিহোয়াদার মৃত্যুর পর, ইস্রায়েলের নেতৃবর্গ রাজা য়োযাশকে অভ্য়র্থনা করলেন এবং ধীরে ধীরে তাঁর স্তুতি করতে শুরু করলেন। য়োযাশ তাদের পরামর্শগুলি গ্রহণ করেছিলেন।
১৮ রাজা ও নেতারা, প্রভু তাঁদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের মন্দিরের দিক থেকে মুখ ফিরিযে নিলেন। পরিবর্তে, তারা আশেরার খুঁটি ও অন্যান্য ভ্রান্ত মূর্ত্তি পূজো শুরু করলেন। রাজা ও নেতাদের অপরাধের জন্য ঈশ্বর যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের ওপর রুদ্ধ হলেন।
১৯ ঈশ্বর লোকদের মন তাঁর প্রতি ফিরিযে আনার জন্য ভাব্বাদীদের পাঠালেন। কিন্তু লোকরা সদুপদেশে কর্ণপাত পর্য়ন্ত করলো না।
২০ তারপর ঈশ্বরের আত্মা যাজক যিহোয়াদার পুত্র সখরিয়র ওপর ভর করলো। তিনি লোকদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “ঈশ্বর এই কথা বলেছেন: ‘তোমরা কেন প্রভুর বিধিসমূহ ও আজ্ঞা অমান্য করছো? এভাবে তোমরা কখনোই কোনো কাজে কৃতকার্য় হতে পারবে না। তোমরা প্রভুকে ত্যাগ করেছো, তাই তিনিও তোমাদের ত্যাগ করেছেন।”
২১ কিন্তু বিচারবুদ্ধিহীন লোকরা তখন একসঙ্গে চএান্ত করলো এবং রাজা যখন তাদের সখরিয়কে হত্যা করতে আদেশ দিলেন, তারা পাথর ছুঁড়ে মন্দির চত্বরেই তাঁকে হত্যা করলো।
২২ একবারও রাজা য়োযাশ তাঁর প্রতি সখরিয়র পিতা যাজক যিহোয়াদার করুণার কথা মনে করলেন না। মারা যাবার আগের মূহুর্তে সখরিয় বললেন, “প্রভু যেন তোমার এই অপরাধ দেখতে পান এবং তোমাকে এর য়োগ্য শাস্তি দেন।”
২৩ এক বছরের মধ্যে অরামীয় সেনাবাহিনী এসে রাজা যোয়াশের রাজ্য আক্রমণ করলো। তারা যিহূদা ও জেরুশালেম আক্রমণ করল এবং সমস্ত নেতাদের হত্যা করবার পর সেনাবাহিনী যাবতীয় দুর্মূল্য জিনিসপত্র লুঠ করে দম্মেশকে রাজার কাছে সেগুলি পাঠিয়ে দিল।
২৪ অরামীয়রা ছোট সেনাবাহিনী নিয়ে এলেও প্রভু তাদের যিহূদার সেনাবাহিনী, যেটা তাদের সেনাবাহিনীর চেয়ে বড় ছিল, তাকে পরাজিত করতে দিলেন। কারণ যিহূদার লোকরা তাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরকে পরিত্যাগ করেছিল। এইভাবে রাজা যোয়াশের শাস্তি বিধান হল।
২৫ অরামীয়রা যখন চলে গেল তখন তিনি ভীষণভাবে আহত। তাঁর নিজের ভৃত্যরাই তাঁর বিরুদ্ধে চএান্ত করে তাঁকে তাঁর বিছানায হত্যা করলো। এরপর লোকরা তাঁকে দায়ূদ নগরীতে সমাধিস্থ করলো, তবে তা রাজাদের জন্য নির্দিষ্ট সমাধি ক্ষেত্রে নয়। যাজক যিহোয়াদার পুত্র সখরিয়কে হত্যা করার জন্যই যোয়াশের ভৃত্যরা তাঁর বিরুদ্ধে চএান্ত করেছিল।
২৬ যোয়াশের বিরুদ্ধে যারা চএান্ত করেছিল তাঁরা হল অম্মোনের শিমিযতের পুত্র সাবদ ও মোয়াবের শিম্রীতের পুত্র য়িহোষাবদ।
২৭ যোয়াশের পুত্রদের গল্প, তাঁর বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্বাণী ও তিনি কিভাবে আবার প্রভুর মন্দির নবরূপে নির্মাণ করেছিলেন সেসব কথা ‘রাজাদের সম্বন্ধে ব্বিরণী গ্রন্থে’ লিপিবদ্ধ আছে। যোয়াশের পর তাঁর পুত্র অমত্সিয নতুন রাজা হলেন।