ওল্ড স্টেটমেন্ট
নিউ স্টেটমেন্ট
1 of 2

বংশাবলি ১ – ২১

১ শয়তান ইস্রায়েলের লোকদের বিপক্ষে ছিল। তার প্ররোচনায় পা দিয়ে দায়ূদ ইস্রায়েলে আদমশুমারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
২ তিনি য়োয়াব ও ইস্রায়েলের নেতাদের ডেকে বললেন, “যাও বের্-শেবা থেকে দান পর্য়ন্ত সমগ্র ইস্রায়েলের জনসংখ্যা গণনা করে আমাকে জানাও। আমি যাতে বুঝতে পারি এদেশে মোট কত জন বাস করে।”
৩ কিন্তু য়োয়াব উত্তর দিলেন, “প্রভু তাঁর লোকদের শতগুণ বাড়িযে চলুন! মহারাজ, ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দাই তো আপনার অনুগত ভৃত্য। কেন আপনি এই কাজ করতে চাইছেন? আপনি সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের পাপের ভাগী করবেন।”
৪ কিন্তু রাজা দায়ূদ তাঁর সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় য়োয়াব তাঁর আদেশ মানতে বাধ্য হলেন। তিনি সমগ্র ইস্রায়েলে ঘুরে ঘুরে জনসংখ্যা গুনে আবার জেরুশালেমে ফিরে খবর দিলেন য়ে
৫ ইস্রায়েলে মোট ১১,00,000 লোক আছে যারা তরবারির ব্যবহার জানে। আর যিহূদায় এই ধরণের লোকের সংখ্যা ৪,৭০,000।
৬ রাজা দায়ূদের নির্দেশ মনঃপুত না হওয়ায য়োয়াব লেবি ও বিন্যামীন পরিবারের বংশধরদের জনসংখ্যা গণনা করেন নি।
৭ ঈশ্বরের দৃষ্টিতে দায়ূদ একটি খারাপ কাজ করেছিলেন। তাই প্রভু ইস্রায়েলকে শাস্তি দিলেন।
৮ দায়ূদ তারপর ঈশ্বরকে বললেন, “আমি মূর্খের মতো জনসংখ্যা গণনা করে গুরুতর পাপ করেছি। এখন আমি তোমায় অনুনয় করছি, তুমি আমায়, তোমার দাসকে এই পাপ থেকে মুক্ত কর।”
৯ প্রভু তখন দায়ূদের ভাব্বাদী গাদকে বললেন, “যাও দায়ূদকে গিয়ে বল: ‘প্রভু এই কথা বলেছেন: তোমাকে শাস্তি দেবার জন্য আমি তিনটে উপায়ের কথা ভেবেছি। তুমি য়ে ভাবে বলবে সে ভাবেই আমি তোমায় শাস্তি দেব।”‘
১০
১১ তখন, গাদ নির্দেশ মত দায়ূদকে গিয়ে বললেন, “প্রভু বলেছেন, ‘তোমায় শাস্তি দেবার জন্য তিনটি পথের কথা আমি ভেবেছি। প্রথমটি হল- তিন বছর দেশে দুর্ভিক্ষ হবে। দ্বিতীয়টি হল- যারা তরবারি নিয়ে তাড়া করবে সেই সব শএুদের কাছ থেকে তোমায় তিনমাস ধরে পালিয়ে বেড়াতে হবে। আর তৃতীয়টি হল- তিন দিন তোমাকে প্রভুর হাতে শাস্তি ভোগ করতে হবে। মহামারীতে দেশ ছেযে যাবে। প্রভুর দূতরা ইস্রায়েলের ঘরে ঘরে লোকদের প্রাণ নেবে।’ এবার তুমি বল আমি প্রভুকে কি জানাব।”
১২
১৩ দায়ূদ গাদকে বললেন, “হায! কি বিপদে পড়েছি! আমি কি ভাবে শাস্তি পাবো তা ঠিক করার ভার আমি অন্যদের হাতে দিতে চাই না। প্রভু করুণাময, তিনিই আমায় যথাযোগ্য শাস্তি দেবেন।”
১৪ অতঃপর প্রভু ইস্রায়েলে মহামারী পাঠালেন, তাতে ৭০,000 লোকের মৃত্যু হল।
১৫ প্রভু জেরুশালেমকে ধ্বংস করতে এক জন দেবদূতও পাঠালেন। কিন্তু সে যখন জেরুশালেম ধ্বংস করতে শুরু করল তখন প্রভুর করুণা হল। যিবূষীয় অর্ণানের শস্য মাড়াইযের উঠানের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা সেই দূতকে প্রভু বললেন, “আর নয় থাক! য়থেষ্ট হয়েছে।”
১৬ দায়ূদ ও নেতারা ওপরে তাকিযে, জেরুশালেমের ওপর প্রভুর তরবারি হাতে প্রভুর সেই দূতকে দেখতে পেলেন। তখন তারা শোকের পোশাক পরে আভূমি নত হলেন।
১৭ দায়ূদ ঈশ্বরকে বললেন, “আমি জনসংখ্যা গণনা করতে বলে পাপ করেছি। আমিই পাপাত্মা। ইস্রায়েলের লোকরা তো নিরপরাধ। প্রভু আমার ঈশ্বর, মহামারীতে ওদের প্রাণ না নিয়ে তুমি আমায় আর আমার পরিবারকে শাস্তি দাও।”
১৮ তখন প্রভুর দূত গাদকে বললেন, “দায়ূদকে যিবূষীয় অর্ণানের খামারের কাছে প্রভুর উপাসনার জন্য একটা বেদী নির্মাণ করতে বলো।”
১৯ গাদ দায়ূদকে একথা জানালে তিনি অর্ণানের খামারে গেলেন।
২০ অর্ণান তখন গম ঝাড়াই করছিল। সে পেছন ফিরে দূতকে দেখতে পেল। অর্ণানের চার পুত্র ভয়ে লুকিয়ে পড়লো।
২১ দায়ূদ বয়ং হেঁটে হেঁটে টিলার ওপরে অর্ণানের কাছে গেলেন। তাঁকে দেখতে পেয়ে খামার ছেড়ে এসে অর্ণান তাঁর সামনে আভূমি নত হলেন।
২২ দায়ূদ বললেন, “তোমার খামার বাড়িটা আমায় বেচে দাও। যা দাম লাগে আমি দেব। তারপর আমি এখানে প্রভুর উপাসনার জন্য একটি বেদী বানাব। তাহলে এই মহামারী বন্ধ হবে।”
২৩ অর্ণান দায়ূদকে বলল, “আপনিই আমার রাজা ও প্রভু। আপনার যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আপনি অবশ্যই আমার শস্য মাড়াই এর ক্ষেত্রটা নিতে পারেন। এছাড়াও আমি হোমবলির জন্য আপনাকে ষাঁড় আর গম দিচ্ছি এবং মযদা শস্য নৈবেদ্যর জন্য আপনার যা কিছু দরকার সবই আপনাকে দেব।”
২৪ কিন্তু রাজা দায়ূদ উত্তর দিলেন, “না, তা সম্ভব নয়। আমি তোমার থেকে বিনা মূল্যে কিছু নিয়ে তা প্রভুকে দিতে পারব না। আমি ঈশ্বরকে এমন কিছুই দেব না যার জন্য আমায় দাম দিতে হবে না। তোমাকে আমি এ সব কিছুর পুরো দাম দেব।”
২৫ তখুনি তিনি অর্ণানকে জায়গাটির জন্য প্রায় ১৫ পাউণ্ড সোনা দিলেন।
২৬ তারপর দায়ূদ সেই শস্য মাড়াইযের জায়গায় প্রভুর উপাসনার জন্য বেদী বানালেন। সেই বেদীতে হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য দিয়ে দায়ূদ প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন। প্রভু আকাশ থেকে বেদীতে অগ্নিশিখা পাঠিয়ে সেই ডাকে সাড়া দিলেন।
২৭ তারপর প্রভু তাঁর দেবদূতকে উন্মুক্ত তরবারী কোষবদ্ধ করতে আদেশ দিলেন।
২৮ দায়ূদ দেখলেন, অর্ণানের খামার বাড়িতে প্রভু তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছেন। তিনি সেখানেই প্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান উত্সর্গ করলেন।
২৯ পবিত্র তাঁবু এবং হোমবলি অর্পণের বেদীটি ছিল গিবিয়োন শহরে একটি উঁচু জায়গায়। ইস্রায়েলের বাসিন্দারা যখন মরুভূমিতে ঘুরছিলেন তখন মোশি এই পবিত্র তাঁবু বানিয়ে ছিলেন।
৩০ কিন্তু দায়ূদ ঈশ্বরের দূতের তরবারীর ভয়ে পবিত্র তাঁবুতে ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলতে যাননি।