৭
রাত্রে কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি।
সকালে খাবার ঘরে বসে রাজেনবাবুর সঙ্গে চা খাচ্ছি, এমন সময় নেপালী চাকরটা একটা চিঠি নিয়ে এল। আবার সেই নীল কাগজ—আর খামের উপর দার্জিলিং পোস্ট মার্ক।
রাজেনবাবু ফ্যাকাশে মুখ করে কাঁপতে কাঁপতে চিঠির ভাঁজ খুলে ফেলুদাকে দিয়ে বললেন, ‘তুমিই পড়। আমার সাহস হচ্ছে না।’
ফেলুদা চিঠিটা নিয়ে জোরে জোরে পড়ল। তাতে লেখা আছে—
‘প্রিয় রাজু, কলকাতায় জ্ঞানেশের কাছ থেকে তোমার ঘরের খবর পেয়ে যখন তোমায় চিঠি লিখি তখনও জানতাম না আসলে তুমি কে। তোমার বাড়িতে এসে তোমার ছেলেবয়সের ছবিখানা দেখেই চিনেছি তুমি সেই পঞ্চাশ বছর আগের বাঁকুড়া মিশনারি স্কুলের আমারই সহপাঠী রাজু!
‘এতকাল পরেও যে পুরোন আক্রোশ চাগিয়ে উঠতে পারে সেটা আমার জানা ছিল না। অন্যায় ভাবে ল্যাং মেরে তুমি যে শুধু আমায় হান্ড্রেড ইয়ার্ডস-এর নিশ্চিত পুরস্কার ও রেকর্ড থেকে বঞ্চিত করেছিলে তা নয়—আমাকে রীতিমত জখমও করেছিলে। বাবা বদলি হলেন তখনই, তাই তোমার সঙ্গে বোঝাপড়াও হয়নি, আর তুমিও আমার মন আর শরীরের কষ্টের কথা জানতে পার নি। তিনমাস পায়ে প্লাস্টার লাগিয়ে হাসপাতালে পড়ে ছিলাম।
‘এখানে এসে তোমার জীবনের শান্তিময় পরিপূর্ণতার ছবি আমাকে অশান্ত করেছিল। তাই তোমার মনে খানিকটা সাময়িক উদ্বেগের সঞ্চার করে তোমার সেই প্রাচীন অপরাধের শাস্তি দিলাম। শুভেচ্ছা নিও। ইতি—তিনু (শ্ৰীতিনকড়ি মুখোপাধ্যায়)