পাহাড়ের রেলগাড়ি
এ যেন পাহাড়ের ওপরে ওঠা রেলগাড়ি
খানিকটা এগোয়, আবার কিছুটা পিছিয়ে আসে
উপমা: মানব সভ্যতা।
কখনও তরতর করে বেশি ওপরের দিকে উঠতে গেলে
ভেঙে পড়ে যায় নীচে
উপমা: মিশর, ব্যাবিলন।
কখনও এক একটা ধ্বনি ওঠে, মানুষ হাতে হাত মেলায়
এ ওকে আলিঙ্গনে টানে বুকের কাছে
আধখানা শতাব্দী যেতে না যেতেই
সেই সব হাতে ঝলসে ওঠে ছুরি।
কখনও জমাট পাথরের বুক থেকে বেরিয়ে আসে শিল্প
অরণ্যে ধ্বনিত শব্দব্রহ্ম
আবার পাহাড় উড়ে যায় বিস্ফোরণে, বিকট দামামায়
কানে তালা লাগে
কখনও সব কামরায় হুড়মুড় করে উঠে পড়ে
টিকিট না কাটা যাত্রী
রাজতন্ত্রকে চিবিয়ে, চুষে খায় গণতন্ত্র
আবার এক একটা যুগে গণতন্ত্রের পিঠে চাবুক কষায়
দু-একখানা নেপোলিয়ান আর হিটলার
কখনও সমস্ত মানুষের সুখ-শান্তির প্রতিশ্রুতি
স্বপ্নের একখানা ছবি হয়ে দোলে
আবার স্বপ্নের মতনই ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায় সেই ছবি।
কখনও মানুষ হয়ে ওঠে নরদানব, তারা মানুষেরই রক্ত চাটে
কানাকড়িতে বিকোয় মনুষ্যত্ব
উপমা: ইরাক, পালেস্তাইন
তবু কি শোনা যায় কু ঝিক ঝিক শব্দ
রেলগাড়িটা আবার ওপরে উঠবে
নাকি এখন মহাশূন্যযান, মহাশূন্যেই পরমাগতি!
এই সব লিখে চলেছি, আমি একজন দুঃখী মানুষ
সভ্যতার জারজ সন্তান
আজ আমার মন খারাপ পাতালমুখী…