।। তিন ।।
সত্যেন রায় বলল, আচ্ছা বৈশালী, তুমি ডাক্তার ডাকতে বলছ কেন?
লোকটির চেহারা আমার ভালো ঠেকছে না। এ যেন ঠিক মদের কেস নয়। চোখ দেখে মনে হচ্ছে হাসিস কিংবা ওপিয়ম।
সত্যেন রায় হাসল।
ডাক্তার রাহা একেবারে রাস্তার উলটোদিকে বসে। রাহা ক্লিনিক।
পুলিশের সঙ্গে ডাক্তার রাহা এসে উপস্থিত।
ড্রাইভারের দিকে আঙুল দেখিয়ে সত্যেন রায় বলল, ওই আপনার পেশেন্ট। দেখুন তো কী ব্যাপার?
ডাক্তার রাহা অনেকক্ষণ ধরে পরীক্ষা করল। চোখের কোণ টেনে, স্টেথোস্কোপ বুকে বসিয়ে, নাড়ি টিপে।
ডাক্তার রাহার বাইরের পোশাক দেখে মানুষটাকে চেনা দুষ্কর। অনেকগুলো বিলিতি ডিগ্রি আছে। বিদেশের মেডিক্যাল জার্নালে মাঝে মাঝে প্রবন্ধ লেখে। বিভিন্ন দেশের নেশার প্রক্রিয়া সম্বন্ধে।
ডাক্তার রাহা সত্যেন রায়ের দিকে ফিরে বলল, ঠিক যা সন্দেহ করেছি।
কী সন্দেহ করেছিলেন?
বড়ো রকমের নেশা করানো হয়েছে। খুব বেশি ডোজের মর্ফিয়া কিংবা…
পাদপূরণ করে সত্যেন রায় বলল, হাসিস?
হতে পারে, কিংবা মারজুয়ানা হওয়াও বিচিত্র নয়। সঠিক বলতে পারছি না।
মারজুয়ানা এ দেশে পাওয়া যায়?
পয়সা ফেললে সবই পাওয়া যায়। কলকাতা এক অদ্ভুত মহানগরী।
কথা বলতে বলতে ডাক্তার রাহা ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ পরিষ্কার করতে লাগল।
এবার বৈশালী জিজ্ঞাসা করল, অ্যান্টিডোট কিছু দেবেন নাকি?
দেখি চেষ্টা করে, তবে কাজ হবে বলে মনে হয় না।
কেন?
জিনিসটা ব্রেন পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।
গোটা দুয়েক ইঞ্জেকশন দেওয়া হল।
ড্রাইভার অনড়, অসাড়।
ডাক্তার রাহা যেতে যেতে বলল, থাক শুয়ে। ঘণ্টা দুয়েক পরে একবার খোঁজ কোরো।
আমিও চলি। বৈশালীও উঠে দাঁড়াল।
রাস্তায় নেমে ডাক্তার রাহা বৈশালীকে জিজ্ঞাসা করল, লোকটি কি খুব প্রয়োজনীয় সাক্ষী নাকি?
সম্ভবত।
কীরকম?
আজ কাগজে দেখেছেন ভুবন বাজপেয়ি খুন হয়েছে। নিজের মোটরের মধ্যে দেহ পাওয়া গেছে।
লোকটি বুঝি সেই মোটরের ড্রাইভার?
হ্যাঁ।
বৈশালী মোটরে উঠল। পাশ কাটিয়ে ডাক্তার রাহাও চলে গেল।
বৈশালী যখন বাড়ি পৌঁছাল, তখন রোদ রীতিমতো চড়া।
খাওয়াদাওয়ার পর জানলা-দরজায় পরদা টেনে দিয়ে বৈশালী বিছানায় গা ঢেলে দিল।
শুল, কিন্তু ঘুমাল না। এত চিন্তা মাথায় নিয়ে ঘুমানো সম্ভব নয়। এটুকু বোঝা যাচ্ছে যে, ভুবন বাজপেয়ির হত্যার ব্যাপারে ড্রাইভারের কোনও হাত নেই। যে লোকটি হত্যা করেছে সে ড্রাইভারের চেনা। চেনা বলেই ড্রাইভারের এই অবস্থা। যাতে সে আততায়ীর সম্বন্ধে কিছু বলতে না পারে।
আর-একবার বৈশালী সমস্ত ঘটনাটা বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করল।
মোটরটি যখন চলছিল, তখন আততায়ী হাত তুলে মোটর থামাবার সংকেত করে। সে ভুবনবাবু আর ড্রাইভার—দুজনেরই পরিচিত। সুতরাং মোটর থেমেছিল। সঙ্গে সঙ্গে লোকটি ভুবনবাবুকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ে। খুব কাছ থেকে, কাজেই লক্ষ্যভ্রষ্ট হবার প্রশ্ন ওঠেনি।
কিন্তু ড্রাইভারকে ইঞ্জেকশন কে দিল? সঙ্গে সঙ্গে না দিলে ড্রাইভার চিৎকার করে উঠত। লোক জড়ো হওয়া বিচিত্র নয়। রাত তখন কত?
ভুবন বাজপেয়ির হাতের ঘড়িতে এগারোটা কুড়ি। ঘড়িটা ভুবনবাবুর পরমায়ু শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে থেমে গেছে এমন মনে করার কোনও হেতু নেই।
কিন্তু আর-একটা কথা। মোটর যদি থেমেছিল আততায়ীর সংকেতে, তাহলে সেটা ওভাবে ফুটপাতে উঠে রেলিংয়ে ধাক্কা লাগাল কেন?
দুর্ঘটনার চেহারা দেখে মনে হয়, মোটর যখন চলন্ত অবস্থায়, তখন আততায়ী মোটরে উঠেছিল।
একাধিক লোকের আততায়ী হওয়াও সম্ভব। একজন ভুবনবাবুকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করেছিল, অন্যজন ড্রাইভারকে রিভলভার দেখিয়ে নির্বাক করে ইঞ্জেকশন দিয়েছে। তারপর একসময়ে নকল ময়ূর রেখে আসল ময়ূর নিয়ে সরে পড়েছে। টেলিফোনের শব্দে বৈশালীর ঘুম ভেঙে গেল। শুয়ে শুয়েই বৈশালী হাত বাড়িয়ে ফোনটা নিল।
বৈশালী কথা বলছি।
আমি সত্যেন রায়।
কিছু খবর আছে?
খবর মানে পোস্টমর্টেম রিপোর্টটা এসেছে।
নতুন কিছু আছে তাতে?
বিশেষ নয়। রিভলভারের গুলিতে মৃত্যু। খুব ক্লোজ রেঞ্জে ফায়ার। ক্ষতস্থানের চারপাশে বারুদের দাগ। তবে একটা খবর আছে।
কী?
ভুবনবাবুর মৃত্যু হয়েছে রাত দশটা থেকে সাড়ে দশটার মধ্যে।
তা হতে পারে, কারণ ভুবনবাবু আমার বাড়ি থেকে রাত ন-টায় উঠেছিলেন।
আচ্ছা, রাখছি বৈশালী, আমাকে আবার আর-একটা কাজে বের হতে হবে।
বৈশালী ফোন রেখে দিল।
.
দিন দুয়েক পর।
বৈশালী বিকালে বেড়াতে বের হচ্ছিল, হঠাৎ কলিং বেলের শব্দ।
বৈশালী দাঁড়িয়ে পড়ল।
বাহাদুর সংবাদ নিয়ে আসবে। ঠিক তা-ই।
এক মাইজি এসেছে।
মাইজি? নিয়ে এসো।
বৈশালী ফিরে গিয়ে কৌচের ওপর বসল।
কে আসতে পারে? সহপাঠিনীদের কেউ? বিশেষ কেউই আসে না। সকলেই যে যার সংসার নিয়ে ব্যস্ত।
মক্কেলও অবশ্য আসতে পারে।
দরজায় খুট করে শব্দ।
আসব?
আসুন।
তারপর ঘরের মধ্যে যে ঢুকল, বৈশালী অনেকক্ষণ তার দিকে মুগ্ধ চোখে চেয়ে রইল।
গায়ের রং গজদন্তসদৃশ। ঈষৎ পীতাভ সাদা। দীর্ঘ, ঋজু চেহারা। অনেকটা রজনিগন্ধার স্তবকের মতন। ঘোমটা মাথার মাঝবরাবর। আয়ত ভ্রমরকৃষ্ণ দুটি চোখ, পদ্মপাপাড়িনিভ দুটি ঠোঁট। সারা মুখ বুদ্ধিদীপ্ত।
ঢুকেই দুটো হাত জোড় করে নমস্কার করল—নমস্তে।
বৈশালী দাঁড়িয়ে উঠে নমস্কার ফেরত দিল।
বলল, আপনাকে তো ঠিক চিনতে পারলাম না!
আমি ভুবন বাজপেয়ির স্ত্রী।
আশ্চর্য, দ্বিতীয় পক্ষ সেটা ভুবনবাবু বলেছিল, কিন্তু দুজনের মধ্যে বয়সের এত তফাত সেটা বৈশালী ভাবতেও পারেনি।
এমন সৌন্দর্য সচরাচর দেখা যায় না। তার ওপর সদ্যপ্রাপ্ত বিষাদের ছায়া সে সৌন্দর্যকে যেন আরও পবিত্র করে তুলেছে।
দাঁড়িয়ে রইলেন কেন, বসুন মিসেস বাজপেয়ি।
আমার নাম দীপালি বাজপেয়ি। দীপালি বসতে বসতে বলল।
আপনি মথুরায় ছিলেন শুনেছিলাম।
হ্যাঁ, মা-বাবা তীর্থ করতে গিয়েছিলেন। আমি তাঁদের সঙ্গে গিয়েছিলাম। কয়েকদিন আগে এসেছি।
আপনাকে কতকগুলো কথা জিজ্ঞাসা করব দীপালিদেবী।
বলুন।
আপনি হয়তো ইতিমধ্যে শুনেছেন, ভুবনবাবুর পকেটে একটা নকল ময়ূর পাওয়া গিয়েছে। নকল অর্থাৎ ঝুটো কাচ বসানো। অত্যন্ত আশ্চর্যের কথা যে, আততায়ী আসল ময়ূরটা নিয়ে গিয়ে নকল ময়ূরটা রেখে যাবার মতন এত প্রচুর সময় পেল কী করে? গঠনকৌশলে দুটো ময়ূরই এক ধরনের। এতে বোঝা যায় যে, দুর্বৃত্ত আসল ময়ূরটা খুব ভালোভাবেই দেখেছে, তা না হলে ঠিক একই রকমভাবে নকল ময়ূর তৈরি করতে পারত না।
দীপালি খুব মনোযোগ দিয়ে কথাগুলো শোনবার চেষ্টা করল। তারপর খুব মৃদুকণ্ঠে বলল, আপনার অনুমান ঠিক নয়, মিসেস ব্যানার্জি।
অনুমান ঠিক নয়?
না।
কীরকম?
নকল ময়ূরটা বাইরের কোনও লোক রেখে যায়নি। সেটা মিস্টার বাজপেয়ির পকেটেই ছিল।
তার মানে?
মানে, মিস্টার বাজপেয়ি যখনই আসল ময়ূরটা সঙ্গে নিয়ে যেতেন, তখনই নকল ময়ূরটাও তিনি কাছে রাখতেন। ওটা তিনিই কারিগর দিয়ে তৈরি করেছিলেন।
বৈশালী দুটো হাত গালে রেখে কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে রইল। একটু পরে অনেকটা আত্মগতভাবে বলল, তার মানে মিস্টার বাজপেয়ি জানতেন এই ময়ূরটার ওপর বাইরের লোকের লোভ আছে। তাদের চোখে ধুলো দেবার জন্যই নকল ময়ূরটা কাছে রাখতেন। তা-ই না?
সম্ভবত।
একটু থেমে দীপালি আবার বলল, এ কথা তিনি কোনওদিনই আমার সঙ্গে আলোচনা করেননি। তবে তাঁর হাবেভাবে আমার সন্দেহ হত। সব দরজা-জানলা বন্ধ করে যখন ময়ূরটা দেখতেন, কোথাও একটু আওয়াজ হলেই চমকে উঠতেন। তারপর যখন ময়ূরটা নিয়ে মাঝে মাঝে বাইরে যেতেন, দেখতাম ভীষণ সাবধান হতেন। কোথায় যাবেন কাউকে বলতেন না।
আপনাকেও না?
মেঝের দিকে চোখ নামিয়ে খুব মৃদুকণ্ঠে বলল, না, আমাকেও নয়।
আপনি কি আন্দাজ করতে পারেন, এই ময়ূরের ব্যাপারে কাদের আগ্রহ ছিল?
কিছুক্ষণ নীরব থেকে দীপালি বলল, সকলের কথা বলতে পারি না। তবে একজনের কথা জানি।
বৈশালী মেরুদণ্ড টান করে বসল।
কে সেই একজন?
অতীন।
অতীন? অতীন কে?
মিস্টার বাজপেয়ির ছেলে।
তিনি বর্মায় থাকেন, না?
হ্যাঁ, থাকে। কিন্তু দু-তিন মাস অন্তর সে এখানে আসে। কয়েক মাস আগে একটা কলহ আমার কর্ণগোচর হয়েছিল।
কীসের কলহ?
এই ময়ূর নিয়ে। শুধু ময়ূর নয়, কিছু দামি রত্ন নিয়ে।
কী ধরনের ঝগড়া?
মনে হল বিষয় ভাগাভাগির ব্যাপার। মিস্টার বাজপেয়ির ধনরত্নের একটা কারবার ছিল শুনেছেন কি?
হ্যাঁ শুনেছি। আন্তর্জাতিক চোরাকারবারির সঙ্গে তাঁর ব্যাবসার লেনদেন ছিল। সেটা কি আপনি জানেন?
না, জানি না। এ আমি বিশ্বাসও করি না।
দীপালির কণ্ঠস্বর রীতিমতো দৃঢ়।
বৈশালী এবার অন্য প্রসঙ্গ আরম্ভ করল।
আমি একটা ব্যাপার বুঝতে পারছি না দীপালিদেবী।
দীপালি বৈশালীর দিকে চোখ তুলে দেখল।
এই ময়ূরের চোখের জোড়া রুবির দাম এমন কিছু বেশি নয়। সাধারণ রুবির চেয়ে কিছু বেশি হতে পারে, কারণ সচরাচর এত বড়ো রুবি দেখা যায় না। কিন্তু এর জন্য এত বড়ো একটা হত্যাকাণ্ড ঘটে যাবে, এটাই আমার কাছে খুব বিস্ময়ের মনে হচ্ছে। ভুবনবাবুর কাছে নিশ্চয় এর চেয়ে আরও অনেক দামি রত্ন ছিল, তা-ই না দীপালিদেবী?
আমার পক্ষে এর কোনও সদুত্তর দেওয়া সম্ভব নয়।
আচ্ছা, আপনাদের ড্রাইভার, যিনি ভুবনবাবুর গাড়ি চালাতেন, তিনি কি বিশ্বাসী?
সম্পূর্ণ।
তাঁর নাম কী?
নিখিল কোনার।
কত বছর আছেন আপনাদের কাছে?
শুনেছি, প্রায় বিশ বছর। খুব নির্ভরযোগ্য ড্রাইভার।
হঠাৎ দীপালি সাশ্রুনয়নে বলে উঠল, শুধু আসল ময়ূরটাই নয়, আমার স্বামীর হত্যাকারীকেও আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে।
আপনার স্বামীর হত্যাকাণ্ডের ব্যাপার পুলিশের হাতে। তাঁরা যথাসাধ্য করছেন। কিন্তু আপনি আমার কাছে এসেছেন কেন? ভুবনবাবুর কাছে কখনো কিছু শুনেছিলেন?
মিস্টার বাজপেয়ি যখন ময়ূরের চোখের একটা পাথর চুরি যাবার কথা আমাকে লিখেছিলেন, তখনই তাঁকে আমি আপনার হাতে কেসটা দেবার কথা জানাই। কারণ এ বিষয়ে আপনার খ্যাতির কথা আমার বাবার কাছে বহুবার শুনেছি।
আপনার বাবার নাম কী?
সুরজমল খেত্রী।
সুরজমল খেত্রী তো বিখ্যাত জহুরি। তাঁর রত্নের কারবার সারা ভারতবর্ষে ছড়ানো। আমার অনেকগুলো কেসে রত্ন যাচাই করার ব্যাপারে তাঁর সাহায্য নিয়েছিলাম।
একটু পরে বৈশালী প্রশ্ন করল, আচ্ছা, যে সিন্দুকে এই ময়ূর থাকত, তার একটা বাড়তি চাবি আপনার কাছে থাকে?
হ্যাঁ, সে চাবি আমি মথুরা নিয়ে গিয়েছিলাম। এই যে সেই চাবি।
দীপালি উঠে দাঁড়িয়ে উঠে কোমর থেকে সাদা রেশমের শাড়িটা সরিয়ে ফেলল। রুপোর কোমরবন্ধ। তাতে অনেকগুলো চাবি আটকানো।
বৈশালী একটু অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিল, হঠাৎ দীপালির কণ্ঠস্বরে চমক ভাঙল।
আপনার কত ফি আমার জানা নেই। আপাতত এই টাকা ক-টা রাখুন।
বৈশালী চোখ তুলে দেখল, দীপালির প্রসারিত হাতে একগাদা নোট।
বৈশালী হাত নাড়ল।
এখন আপনি টাকাগুলো রেখে দিন। আমি ভুবনবাবুকে বলেছিলাম, আপনাকেও বলছি, একবার আমি শিলাগড়ে গিয়ে নিজের চোখে সব দেখতে চাই। তারপর স্থির করব, কেসটা নেব কি না। যখন কেসটা হাতে নেওয়া ঠিক করব, তখন আমার ফি-এর কথা আপনাকে জানাব। বসুন, একটু চায়ের কথা বলে আসি।
না, দীপালি বিষণ্ণভাবে ঘাড় নাড়ল, আমি কিছু খাব না। আমার অশৌচ চলছে।
ও মাপ করবেন। আমার খেয়াল ছিল না। বৈশালী বিব্রতকণ্ঠে বলল।
দীপালি জিজ্ঞাসা করল, কবে আপনি শিলাগড়ে আসতে পারবেন?
আমার মনে হয় এখন আপনারা ভুবনবাবুর কাজের জন্য ব্যস্ত থাকবেন। ক্রিয়াকর্ম হয়ে যাক, তারপর যাব।
বেশি দেরি হয়ে যাবে না? আমার ইচ্ছা আপনি আরও আগে আসুন।
বৈশালী কিছুক্ষণ কী ভাবল, তারপর প্রশ্ন করল, আচ্ছা, এই ক্রিয়া উপলক্ষে অতীনবাবু কি বর্মা থেকে আসবেন?
হ্যাঁ; অতীন একমাত্র পুত্র। সব কাজ তো তাকেই করতে হবে।
তিনি কি এখানে কিছুদিন থাকবেন?
বলতে পারি না। অতীনের যাওয়া-আসা সম্বন্ধে আমি কিছু জানি না।
অতীনবাবু শিলাগড়ে এলে আমাকে খবর পাঠাবেন।
আমি আপনাকে ট্রাঙ্ককল করে দেব।
বেশ, সেই ভালো।
আজ আমি চলি। নমস্কার। দীপালি উঠে দাঁড়াল।
আপনি কি আজ রাতেই শিলাগড় ফিরে যাবেন?
না, আজ আমি এখানে এক আত্মীয়ের বাড়ি রাত কাটাব। কাল ভোরে রওনা হব।