উপন্যাস
গল্প

পাথরের চোখ – ২

।। দুই।।

বৈশালী কিছুক্ষণ চুপচাপ জানলার ধারে দাঁড়াল।

দৃষ্টি চলমান জনতার দিকে নিবদ্ধ হলেও, বেশ বোঝা গেল সে গভীর কিছু চিন্তা করছে।

একসময়ে পরদার পাশে টেলিফোনের কাছে চেয়ার টেনে বসল। ডায়াল করল, তারপর বলল, একবার সত্যেন রায়কে দিন।

বৈশালীর কণ্ঠ শোনা গেল।

বিশেষ প্রয়োজনে আপনাকে এত সকালে বিরক্ত করছি মিস্টার রায়। আমি বৈশালী। বৈশালী ব্যানার্জি। হ্যাঁ, একরকম ভালোই আছি। খবর? আজকের কাগজে ভুবন বাজপেয়ির ব্যাপারটা বেরিয়েছে। ওটার সম্বন্ধে আমার একটু আগ্রহ রয়েছে। ঠিক আছে, আমি আধ ঘণ্টার মধ্যে আপনার কাছে যাচ্ছি। পথে মোটরটা একবার দেখে যাব। আচ্ছা, নমস্কার।

পোশাক পালটে বৈশালীর বের হতে মিনিট পনেরো লাগল।

যাবার সময় বাহাদুরকে বলে গেল, আমার একটু দেরি হতে পারে। তুমি খেয়ে নিয়ো।

লালবাজার থেকে বৈশালী খবর নিয়ে জানল যে, মোটরটা ডালহৌসি স্কোয়্যারের ফুটপাতেই পড়ে আছে।

বৈশালী যখন গিয়ে পৌঁছোল তখনও কিছু কিছু কৌতূহলী জনতা ভিড় করে আছে।

মোটর একধারে রেখে বৈশালী নামল।

একটি পুলিশ মোটরের কাছে দাঁড়িয়ে আছে। কিছুটা রেলিং ভেঙে মোটরটা স্কোয়্যারের মধ্যে ঢুকে গেছে। ইমপালা শেভ্রোলে। মরাল-শুভ্র রঙের।

বৈশালী একটা গাছতলায় দাঁড়াল।

ভুবনবাবুর দেহ পোস্টমর্টেমের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আজ বিকালেই রিপোর্ট আসবে। রিপোর্টে নতুন কোনও তথ্য বৈশালী আশা করে না। ভুবনবাবু মৃত এটাই চরম সত্য।

প্রশ্ন হচ্ছে, কে আততায়ী?

যদি ময়ূরটা তার প্রিন্সকোটের মধ্যে পাওয়া যায়, তাহলে বুঝতে হবে ভুবনবাবুকে হত্যার উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন। ব্যাবসা সংক্রান্ত কোনওরকম রেষারেষি হওয়া বিচিত্র নয়।

বৈশালী এগিয়ে গিয়ে পুলিশের কাছে দাঁড়াল।

নিজের ভ্যানিটি ব্যাগ খুলে একটা কার্ড বের করে দেখিয়ে চাপা গলায় বলল, আমার সেলাম দরকার নেই, তাহলে লোকদের কৌতূহল বাড়বে। আমি শুধু মোটরের কাছে গিয়ে একটু দেখতে চাই।

বৈশালীর পাশে পাশে পুলিশও এগিয়ে গেল।

বেশি কাছে যাবার প্রয়োজন হল না। কাচের মধ্যে দিয়ে দেখা গেল পিছনের সাদা সিট-কভারে রক্তের দাগ।

তার মানে ভুবন বাজপেয়ি পিছনের সিটে ছিল। চালনচক্র ছিল অন্য লোকের হাতে। কিন্তু চালক কোথায় গেল?

খুব সম্ভব কোনও কারণে মোটরের গতি যখন মন্দীভূত, তখন আততায়ী গুলি ছুড়েছিল। চালক হতবুদ্ধি হয়ে ভারসাম্য হারিয়ে মোটর ফুটপাতে উঠিয়ে দিয়েছিল। তারপর রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা। অবশ্য ধাক্কা এমন জোর নয় যে চালক আহত হবে।

চালক সাধারণভাবে পুলিশ স্টেশনে যাবে, এটাই সহজ বুদ্ধিতে ভাবা যেতে পারে। তার গা-ঢাকা দেবার কোনও হেতু থাকতে পারে না, যদি না সে-ও এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকে।

চালক কি পিছন ফিরে ভুবনবাবুকে গুলি করেছিল? আর সেই সময় মোটর পথ ছেড়ে বিপথে গিয়েছিল? সেটাও সম্ভব।

বৈশালী নিচু গলায় জিজ্ঞাসা করল, লালবাজার থেকে কেউ এসেছিল?

হ্যাঁ, ফরেনসিক ডিপার্টমেন্টের লোক এসেছিল। তারা অনেক ফোটো তুলে নিয়ে গেছে।

ব্যালিস্টিক ডিপার্টমেন্টের কেউ?

না। তাঁরা বোধহয় বডির আঘাত দেখবেন। তাতেই বোঝা যাবে।

ঠিক আছে। আমি চলি।

গুঞ্জনরত জনতার মাঝখান দিয়ে পথ করে বৈশালী নিজের মোটরের দিকে এগিয়ে গেল।

নানা কথার টুকরো তার কানে ভেসে এল।

মেয়ে পুলিশ। দেখলি না, পুলিশটা কিছু বলল না। আর আমরা এক-পা এগোলেই চেঁচাচ্ছে।

না, না, মেয়ে পুলিশ নয়, তাদের পোশাকই আলাদা। এ বোধহয় যে খুন হয়েছে তার কেউ।

দূর, তাহলে এরকম খুশি-খুশি ভাব হয়?

অমন বড়োলোক আত্মীয় খতম হলে সবাইয়ের খুশি-খুশি ভাব হয়।

হাসি চেপে বৈশালী মোটর চালু করল। এবার গন্তব্যস্থল লালবাজার।

এখানে প্রায় সবাই চেনা। অনেকের সঙ্গেই কথা বলতে বলতে বৈশালী সোজা ডেপুটি কমিশনার সত্যেন রায়ের কামরার সামনে এসে দাঁড়াল।

আরদালি ছুটে আসতে জিজ্ঞাসা করল, সায়েব একলা আছেন?

হ্যাঁ, মেমসাব।

আরদালি এক হাত দিয়ে দরজা খুলে ধরল। প্রকাণ্ড টেবিল। ফাইল আর অন্যান্য কাগজের স্তুূপ। সত্যেন রায় খুব মনোযোগ দিয়ে কয়েকটা ফোটো দেখছিল। পায়ের শব্দে মুখ তুলল।

আরে এসো বৈশালী, তোমার কথাই ভাবছিলাম।

একটা চেয়ার টেনে বসতে বসতে বৈশালী বলল, আমার ভাগ্য। হঠাৎ?

হঠাৎ নয়, ভুবন বাজপেয়ির কেসটার কথা ভাবছিলাম। তুমি যখন ফোন করেছ, বুঝলাম, ভিতরে রহস্য আছে। ভদ্রলোককে এভাবে কে গুলি করল?

এ কথার উত্তর তো আপনাদের বিভাগের দেবার কথা। লোকটি কাল রাতে আমার কাছে গিয়েছিল।

তা-ই নাকি? ভদ্রলোক শিলাগড়ের বড়ো ব্যাবসাদার তা জানি। আগে কয়লার ব্যাবসা ছিল, এখন খাদে তেমন কয়লা নেই। কিন্তু অভ্র আর হিরা-চুনি-পান্নার ভদ্রলোকের ঢালাও কারবার।

মিস্টার রয়, আপনি তো অনেক কিছুই জানেন।

জানি, কারণ দিল্লি থেকে টেলেক্স এসেছিল, আন্তর্জাতিক চোরাকারবারি দল কলকাতায় এসেছে। ভুবন বাজপেয়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে।

তারপর?

তারপর জাল বিস্তার করেছিলাম, কিন্তু পাখি ধরা পড়েনি।

কারণ?

বোধহয় আগে থেকে গন্ধ পেয়েছিল।

আমার একটু সাহায্যের প্রয়োজন।

হুকুম করো।

ভুবনবাবুর জিনিসগুলো একটু দেখব।

জিনিসগুলো মানে?

যেগুলো প্রিন্সকোটের পকেট থেকে আপনারা উদ্ধার করেছেন।

এসো।

সত্যেন রায় বেরিয়ে গেল। পিছন পিছন বৈশালী। কিছুটা এগিয়ে পাশের একটা ঘরে ঢুকে পড়ল।

গোটা দুয়েক সাব-ইনস্পেক্টর বসে ছিল। সত্যেন রায় ঢুকতেই তারা তটস্থ হয়ে উঠে দাঁড়াল।

বোস, কোণের আলমারিটা খোল তো।

একজন সাব-ইনস্পেক্টর চাবি দিয়ে আলমারি খুলল।

সত্যেন রায় বলতে আরম্ভ করল, একটা মানিব্যাগ ছিল, তাতে প্রায় হাজার দেড়েক টাকা, দুটো আংটি, হাতঘড়ি, আর একটা ভারী মজার জিনিস।

কী?

একটা ময়ূর।

ময়ূর?

বৈশালী এমন চমকে উঠল যে, আর-একটু হলে তার ভ্যানিটি ব্যাগটা হাত থেকে ছিটকে মেঝের ওপর পড়ে যেত।

হ্যাঁ, বেশ কারুকার্য করা। দু-চোখে দুটো লাল পাথর। পেখমেও চমকদার পাথর বসানো।

বৈশাখী কোনও কথা বলল না।

ময়ূরই যদি পাওয়া গিয়ে থাকে তাহলে ভুবন বাজপেয়িকে হত্যা করার আততায়ীর কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে? কিংবা, কোনও কারণে ময়ূরটা হস্তগত করা হয়তো তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। আলমারি থেকে বেরোল মানিব্যাগ, আংটি, ঘড়ি, শেষকালে ভেলভেটে মোড়া ময়ূর। পরিবেশ ভুলে বৈশালী তাড়াতাড়ি ভেলভেটে মোড়া ময়ূরটা তুলে নিল। খুব নিরীক্ষণ করার প্রয়োজন হল না। চোখের সামনে তুলে ধরেই বৈশালী বুঝতে পারল।

দুটো চোখে চুনি নয়, লাল সাধারণ পাথর।

আশ্চর্য! এত দ্রুত কী করে ময়ূর বদলানো সম্ভব হল!

কাল রাতে ভুবনবাবু তাকে যে ময়ূর দেখিয়েছিল, এ ময়ূর সে ময়ূর নয়।

রত্ন সম্বন্ধে বৈশালীর মোটামুটি একটা জ্ঞান আছে। ঝুটো পাথর আর আসল রুবির পার্থক্য সে বেশ বোঝে।

সত্যেন রায় বলল, ময়ূরটা আমি ইতিমধ্যেই চিমনলালকে দেখিয়ে নিয়েছি। পাথরগুলো সব ঝুটো।

বৈশালী হাসল।

পাথরগুলো যে ঝুটো সেটা বোঝবার জন্য চিমনলালকে ডাকবার দরকার নেই, আমার মতন লোকই সেটা বুঝতে পারে।

জিনিসগুলো সব আলমারিতে তুলে রাখা হল।

বৈশালী সত্যেন রায়ের দিকে ফিরে বলল, আমি চলি মিস্টার রয়। বিকালে পোস্টমর্টেম রিপোর্টটা এলে আমাকে একবার খবর দেবেন।

কথাটা বলেই বৈশাখী কী ভাবল, তারপর আবার বলল, পোস্টমর্টেম রিপোর্টে নতুন তথ্য আর কী জানা যাবে। আপনারা তো বলছেন, গুলিতে মৃত্যু। রিভলভারের গুলিতে।

পোস্টমর্টেম রিপোর্টে নিহতের শারীরিক অবস্থার কথারও উল্লেখ থাকবে। বিশেষ করে তার ভিসারার অবস্থা। চলো আমার ঘরে একটু বসে যাবে। চা খাবে এক কাপ।

বৈশালী এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করে বলল, আর-একদিন এসে না হয় চা খাওয়া যাবে।

সত্যেন রায় কপট গাম্ভীর্যে বলল, তোমাকে তো এখন ছাড়তে পারব না।

কারণ?

কারণ নিহত ব্যক্তির সঙ্গে শেষ তুমি কথা বলেছ। অন্তত আমাদের যতটুকু জানা আছে। কাজেই এ কেসে তুমি একজন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সাক্ষী। তোমার স্টেটমেন্ট আমাদের দরকার।

আপাত-গাম্ভীর্যের সুরে কথা বললেও বৈশালীর পক্ষে সত্যেন রায়ের কণ্ঠের পরিহাসের সুরটুকু বুঝতে অসুবিধা হল না।

.

সত্যেনবাবু বৈশালীর পিতৃবন্ধু। বৈশালীর বাবা শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায় ইলেকট্রিক কোম্পানির নামী ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। বর্তমানে অবসর গ্রহণ করে হাজারিবাগে রয়েছেন। বৈশালী এ দেশের শিক্ষা শেষ করে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডেও কিছুদিন শিক্ষানবিশি করেছিল। সত্যেনবাবু চেষ্টা করেছিল যাতে সে পুলিশে কাজ নেয়। বৈশালী রাজি হয়নি। সে শখের গোয়েন্দা থাকতেই চেয়েছিল।

বৈশালী আবার সত্যেন রায়ের কামরায় গিয়ে ঢুকল।

এবার বলো তো ভুবন বাজপেয়ি কেন তোমার কাছে গিয়েছিল?

থেমে থেমে বৈশালী সব ঘটনা বলল।

সত্যেন রায় চেয়ারে হেলান দিয়ে নিবিষ্টচিত্তে শুনল। তারপর সামনের দিকে একটু ঝুঁকে পড়ে বলল, কিন্তু ময়ূরের এই পাথরের জন্য ভদ্রলোকের এত উদবেগের কারণ? দুটো পাথরই তো ঝুটো।

ভুবনবাবু কাল রাতে যে ময়ূর আমার কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন সেটা এ ময়ূর নয়। সে ময়ূরের একটা চোখে খুব দামি চুনি বসানো ছিল।

তাহলে সে ময়ূর গেল কোথায়?

যে ভুবনবাবুকে গুলি করেছে সে-ই সরিয়েছে।

আর এ ময়ূরটা?

সম্ভবত পুলিশের চোখে ধুলো দেবার জন্য এ ময়ূর নিহতের পকেটে রেখে গেছে।

সত্যেন রায় মাথা নাড়ল।

সিলি, আততায়ী অতক্ষণ ঘটনাস্থলে ছিল? সামনে রাইটারস’ বিল্ডিংস, দু-পা গেলেই লালবাজার। গুলির শব্দ হবার পরও আততায়ী ময়ূর বদলাবার জন্য অত সময় নষ্ট করবে?

যদি রিভলভারে সাইলেন্সার দেওয়া থাকে?

কী জানি, সব জিনিসটা আমার খুব ছেলেমানুষি মনে হচ্ছে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট এক্সপার্টরা সব কিছু তন্ন তন্ন করে খুঁজছে, কোথাও কোনও আঙুলের ছাপ পায়নি। তার মানে বাইরের কেউ ভুবনবাবুর পোশাক স্পর্শ করেনি। ব্যাপারটা রীতিমতো ঘোরালো হয়ে উঠছে। আচ্ছা, তুমি এখন কী করবে?

আমার কাল শিলাগড় যাবার কথা।

যাবে?

ঠিক বুঝতে পারছি না কী করব। শিলাগড়ে কি খবর পাঠানো হয়েছে?

হ্যাঁ, সকালেই টেলিগ্রাম করা হয়েছে।

তাহলে লোক আসবে সেখান থেকে। তারা যদি আমাকে যেতে বলে যাব। আজ উঠি।

আচ্ছা এসো। তোমার মা-বাবার খবর ভালো তো?

হ্যাঁ, গত সপ্তাহে চিঠি পেয়েছি। ভালোই আছে।

বৈশালী উঠে দাঁড়াল।

সত্যেন রায়ের হঠাৎ মনে পড়ে গেল, আরে, তোমাকে চা খাওয়ানোর কথা ছিল।

আজ থাক, আর-একদিন হবে। এখন মাঝে মাঝে তো এখানে আসতেই হবে।

বৈশালী বেরিয়ে পড়ল।

সিঁড়ির কাছ বরাবর গিয়েই তাকে দাঁড়িয়ে পড়তে হল।

দু-পাশে পুলিশ, মাঝখানে একটি লোক।

লোকটার পরনে শার্ট আর ফুলপ্যান্ট। পোশাকে ধুলোর ছাপ। এমনকী ধুলোর চিহ্ন মাথার চুলেও।

একনজর দেখেই বৈশালী বুঝতে পারল।

লোকটি মদে চুর। তাকে প্রায় টেনে ওপরে তোলা হচ্ছে।

বৈশালী একপাশে সরে দাঁড়াল।

পিছনে একজন সাব-ইনস্পেক্টর। সাব-ইনস্পেক্টরটি পরিচিত।

সে কাছে আসতেই বৈশালী জিজ্ঞাসা করল, মজুমদার, সিধু পানের কেস নাকি?

ঠিক বুঝতে পারছি না।

একেবারে বৈশালীর পাশে এসে সাব-ইনস্পেক্টর আবার বলল, ব্যাটা ড্রাইভার। পকেটের লাইসেন্স দেখে মালুম হল। একটা চিঠিও আছে। চিঠির ওপরে ভুবন-নিবাস, শিলাগড় লেখা। সেইজন্য একে স্যারের কাছে নিয়ে যাচ্ছি, না হলে পাঁড় মাতালকে এখানে আনার কী দরকার।

এই তাহলে ভুবন বাজপেয়ির ড্রাইভার। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বৈশালী ভাবতে লাগল। এখন তার চলে যাওয়া সম্ভব নয়। ব্যাপারটা দেখে যেতে হবে।

দলের পিছন পিছন বৈশালী সত্যেন রায়ের কামরায় ঢুকল। সত্যেন রায় জানলার কাছে দাঁড়িয়ে ছিল। রাস্তার দিকে চোখ ফিরিয়ে।

এতগুলো লোকের পায়ের শব্দে মুখ ফেরাল।

কী হল?

সাব-ইনস্পেক্টর এগিয়ে এসে বলল, ভুবন বাজপেয়ির ড্রাইভার স্যার।

অ্যাঁ! সত্যেন রায় চমকে উঠল।

তারপর লোকটার দিকে ফিরে বলল, কী হে, কী নাম তোমার?

লোকটি উদ্ভ্রান্ত দৃষ্টি মেলে সত্যেন রায়কে দেখল, তারপর চোখ নামিয়ে নিল।

কী নবাবপুত্তুর, কথা কানে গেল না?

লোকটি নির্বিকার।

এবার সাব-ইনস্পেক্টর বলল, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি স্যার, একটি কথাও বের করতে পারিনি।

মারের চোটে ভূত পালায়, নেশা তো ছার।

তার চেয়ে এক কাজ করলে হয়।

বৈশালীর কথায় সবাই তার দিকে মুখ ফেরাল।

কী?

ডাক্তার রাহাকে একবার ডেকে পাঠান-না। একে পরীক্ষা করে দেখবেন।

দেখার আর কী আছে। ডাক্তার রাহা বলবেন স্টমাক পাম্প করতে। ঠিক আছে, ডাক্তার রাহাকে একবার ডাকো তাহলে কেউ।

একজন পুলিশ বেরিয়ে গেল।

.