।। এক।।
বৈশালী ব্যানার্জি কৌচে আধশোয়া অবস্থায়। হাতে একটা পত্রিকা। পত্রিকাটি খুব যে তার মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হচ্ছে এমন মনে হল না, কারণ বৈশালী মাঝে মাঝে চোখ তুলে বন্ধ জানলার দিকে দেখছে। বাইরের বিদ্যুৎ দীপ্তিতে কাচগুলো আলোকিত হয়ে উঠছে।
বৃষ্টি নেই, শুধু উত্তাল বাতাস, মেঘের গর্জন আর নীল বিদ্যুতের ঝিলিক।
তবু মন্দের ভালো। টানা এক সপ্তাহ ধরে প্রচণ্ড দাবদাহ চলছে। এক ফোঁটা জলের জন্য হাহাকার। নলকূপের চারপাশ ঘিরে মানুষের ভিড়। প্রায় অন্ধকার ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত। ধরিত্রীর জঠর থেকে যতটা সম্ভব জল টানার প্রচেষ্টায় মানুষ প্রায় কাহিল।
বৈশালী আবার পত্রিকায় মনোনিবেশ করল।
দরজার কাছে মৃদু পদশব্দ।
মুখ না তুলেই বৈশালী জিজ্ঞাসা করল, কী রে বাহাদুর?
নেপালি চাকর। বয়স পনেরো-ষোলো। ফুটফুটে চেহারা। পরিষ্কার বাংলা বলে।
বাহাদুরের মা-ও এ বাড়িতে কাজ করেছে। বাহাদুর আছে বছর পাঁচেক।
এক বাবু এসেছে।
বাবু?
বৈশালী জানলার দিকে চোখ ফিরিয়ে ভ্রূ কোঁচকাল।
এই দুর্যোগে আবার কে এল?
আপনার সঙ্গে দেখা করতে চায়।
নিয়ে এসো।
হাতের পত্রিকাটি টিপয়ের ওপর রেখে বৈশালী কৌচে হেলান দিয়ে বসল।
দু-একটা খুচরো চুল কপালের ওপর এসে পড়েছিল, বৈশালী হাত দিয়ে সেগুলো ঠিক করে নিল।
বাহাদুর বেরিয়ে গেল।
কয়েক মুহূর্ত পরেই একটি প্রৌঢ় ঘরের মধ্যে এসে দাঁড়াল। পরনে ধুতির ওপর দামি প্রিন্সকোট, তার ওপর আড়াআড়িভাবে মুগার চাদর। গৌরবর্ণ, কপালে চোখের পাশে বয়সের কুঞ্চন। নীল চোখের তারা।
আপনিই কি বৈশালী ব্যানার্জি?
বৈশালী মাথা নাড়ল। সম্মতিসূচক।
আশ্চর্য! প্রৌঢ়ের কণ্ঠে বিস্ময়ের সুর।
কী আশ্চর্য?
আপনার বয়স আমি আরও বেশি ভেবেছিলাম।
কারণ?
কারণ, যেসব কাজের গুরুদায়িত্ব আপনি সুষ্ঠুভাবে পালন করেছেন, তাতে আপনাকে পরিণতবয়স্কাই মনে হয়।
বৈশালী মৃদু হাসল। কোনও উত্তর দিল না।
তারপর প্রৌঢ়ের দিকে ফিরে বলল, আপনি বসুন।
বিপরীতদিকে রাখা কৌচের ওপর প্রৌঢ় বসল।
আপনি খুব দামি মোটরে এসেছেন বলে মনে হচ্ছে।
কী করে বুঝলেন?
খুব সহজে। বাড়ির সামনে মোটর দাঁড়াল, অথচ কোনও শব্দ পেলাম না। সাধারণ মোটরে এটা সম্ভব নয়। যাক, এই দুর্যোগে বেরিয়েছেন, কী ব্যাপার?
বিপদ কি আর দুর্যোগ বিচার করে আসে?
তা সত্যি। বিপদটা বলুন?
তবু প্রৌঢ় কিঞ্চিৎ ইতস্তত করছে দেখে বৈশালী বুঝতে পারল, তার বয়সের ওপর প্রৌঢ় সম্পূর্ণ আস্থা স্থাপন করতে পারছে না।
আপনার কোনও অসুবিধা থাকার দরকার নেই।
না, না, তা মোটেই নয়—প্রৌঢ় রীতিমতো বিব্রত হয়ে উঠল। তারপর চোখ ফিরিয়ে দরজার দিকে বারকয়েক দৃষ্টিপাত করল।
বৈশালী বুঝতে পারল। তাই বলল, আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন, আপনি যতক্ষণ এ ঘরে আছেন, ততক্ষণ কেউ আসবে না।
প্রৌঢ় যেন একটু আশ্বস্ত হল।
প্রিন্সকোটের ভিতরের পকেটে হাত চুকিয়ে ভেলভেটে মোড়া একটা বস্তু বার করে টিপয়ের ওপর রাখল।
তারপর বৈশালীর দিকে ফিরে বলল, আমার ধৃষ্টতা মাপ করবেন। দরজাটা বন্ধই করে দিয়ে আসি।
প্রৌঢ় ওঠবার আগেই বৈশালী ক্ষিপ্র পায়ে এগিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল।
প্রৌঢ় এবার ভেলভেটের আবরণ খুলে ফেলল।
ব্রোঞ্জের একটি ময়ূর। অপূর্ব কারুকার্য। লাল দুটি চোখ। দীর্ঘ পুচ্ছ নানা বর্ণের পাথর।
বাঃ, চমৎকার জিনিসটি তো।
চমৎকার ছিল একসময়ে। এখন এর কিছুই আর অবশিষ্ট নেই বৈশালীদেবী।
বৈশালী এ আক্ষেপের হেতু ঠিক অনুমান করতে পারল না।
প্রৌঢ় ময়ূরটি বৈশালীর দিকে এগিয়ে ছিল।
আপনি ভালো করে এর চোখ দুটো দেখুন।
বৈশালী ময়ূরটি হাতে তুলে নিল, তারপর পাশের ড্রয়ার থেকে একটা আতশকাচ বের করে কয়েক মিনিট খুব অভিনিবেশ সহকারে ময়ূরের চোখ দুটি নিরীক্ষণ করল, তারপর টিপয়ের ওপর নামিয়ে রেখে বলল, একটা চোখ খুব দামি রুবির, অন্যটায় ঝুটো কাচ বসানো।
ঠিক বলেছেন।
এর জন্যই কি আপনি আমার কাছে এসেছেন?
আজ্ঞে হ্যাঁ। তবে তার আগে আপনাকে পুরো ঘটনাটা শুনতে হবে।
বলুন।
বৈশালী কৌচে হেলান দিয়ে বসল।
প্রৌঢ় কাহিনি শুরু করার মুহূর্তে দরজায় শব্দ হল। ঠক ঠক।
প্রৌঢ় চমকে উঠে তাড়াতাড়ি ময়ূরটিকে কোটের পকেটে পুরে ফেলল।
কে?
বৈশালী হাতে অভয়মুদ্রা ফুটিয়ে বলল, বাহাদুর আপনার জন্য চা নিয়ে এসেছে।
চা? চা তো আমি খাই না।
বেশ, কী খাবেন বলুন? কফি, কোকো, ওভালটিন সব ব্যবস্থাই আছে।
না, মানে আমি দুধ খাই। তা ছাড়া, এখন কিছু খাবই না। সন্ধ্যা-আহ্নিক না করে আমি কিছু খাই না।
তাহলে অনুমতি করুন, আমি এক কাপ চা নিই।
নিশ্চয়, নিশ্চয়, এ কথা আবার আমাকে জিজ্ঞাসা করছেন?
বৈশালী উঠে দরজা খুলে দিল।
তারপর বাহাদুরের ধরে-থাকা ট্রে থেকে এক কাপ চা আর দুটো বিস্কুট নিয়ে কৌচে ফিরে এল।
বলুন এবার।
আপনি শিলাগড়ের নাম শুনেছেন?
শুনেছি। আসানসোল থেকে প্রায় ষাট মাইল। একসময়ে খুব বর্ধিষ্ণু জনপদ ছিল।
প্রৌঢ় মাথা নাড়ল।
ঠিকই বলেছেন। আজ শিলাগড় প্রায় মরুভূমি। অন্তত আমার পক্ষে। অতীত দিনের কোনও সম্পদই তার নেই। আমরা বাজপেয়ি। বহু পুরুষ আগে সুদূর পাঞ্জাব থেকে অন্নের সন্ধানে এ দেশে এসেছিলাম। আসানসোলে পাথরের বাসনের দোকান শুরু করেছিলাম। গয়া থেকে পাথর আনা হত। একটু একটু করে গুছিয়ে নিলাম। এই সময়ে আশপাশের টিলায় ভূতত্ত্ববিদরা কয়লার সন্ধান পেলেন। অবশ্য তাঁরা স্থিরনিশ্চয় হতে পারেননি। কিন্তু তাতেই বণিকের দল ভিড় জমিয়ে ফেলল।
সেই সময় বরাত ঠুকে আমিও একটা টিলা ইজারা নিয়ে নিলাম।
এক পরিচিত জ্যোতিষী ছিলেন। তিনি ভবিষ্যদবাণী করেছিলেন। কালো রং আমার জন্মগ্রহের অনুকূলে। সেইজন্য গয়ার কালো পাথরের কারবার শুরু করেছিলাম। কয়লাও কালো।
ভাগ্য সুপ্রসন্ন হতে দেরি হল না। যে টিলাটি আমি ইজারা নিয়েছিলাম তার আশপাশ থেকেই সবচেয়ে ভালো জাতের কয়লা বের হল। অন্যান্য লোকেরা রীতিমতো ঈর্ষান্বিত।
খুব বেশি খোঁড়ার প্রয়োজন হল না। কতকগুলো কয়লার খাদে তার প্রয়োজন হয় না। লম্বালম্বি কয়লার স্তর চলে যায়।
এখানে বৈশালী বাধা দিল, বুঝতে পারলাম, কয়লা আপনাকে প্রভূত অর্থের অধিকারী করল।
প্রৌঢ় ক্ষণেকের জন্য একটু বিব্রত হয়ে গেল, তারপর সে ভাব সামলে নিয়ে বলল, আসল কথায় আসছি বৈশালীদেবী। কয়লার সঙ্গে হাজারিবাগে একটা অভ্রের খনিও কিনলাম। যদিও অভ্র কালো নয়, তবু এ কারবারেও অদৃষ্ট সুপ্রসন্ন হল। ছেলের এ কারবারে মন গেল না। বিশেষ করে আমার স্ত্রীবিয়োগের পর। সে বর্মায় চলে গেল কাঠের ব্যাবসা করতে। সেখান থেকে চিঠিপত্রে লিখল সে দেশে নানা রকমের পাথর পাওয়া যায়। পাথরের ব্যাবসা শুরু করলাম। কেনা-বেচা করতে করতে নিজের কিছুটা শখ জন্মে গেল—পাথর জমানোর।
এসব পাথর কি পার্সেলেই আসত? বৈশালী প্রশ্নের খোঁচা দিল।
না, দামি পাথর একটি লোক নিয়ে আসত।
কে সে লোক?
আমার বড়োছেলের পরিচিত এক বর্মি। নাম মং শান। সে-ই এই দুটো রুবি নিয়ে এল। এমন চমৎকার রঙের আর গঠনের রুবি আমি আর দেখিনি। ইচ্ছা করলেই রাজারাজড়ার কাছে খুব চড়া দামে বিক্রি করতে পারতাম, কিন্তু ওই যে বললাম, রত্ন জমাবার একটা নেশা আছে। তাই কারিগর দিয়ে এই ময়ূরের দুটি চোখে দুটি রুবি লাগিয়ে নিলাম।
ময়ূরটি কোথায় থাকত?
আমার শোবার ঘরের সিন্দুকে।
চাবি কার কাছে?
একটি আমার কাছে, বাকিটা আমার স্ত্রী-র কাছে।
কথাটা বলেই প্রৌঢ় একটু আরক্ত হয়ে উঠল।
মানে, আমি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছি।
ময়ূরের একটি চোখে যে ঝুটো পাথর বসানো হয়েছে, এটা আপনি কবে টের পেলেন?
দিন সাতেক আগে।
কী করে?
এক জহুরিকে দিয়ে অন্য পাথর যাচাই করছিলাম, সেই সময় ময়ূরটা বের করে টেবিলের ওপর রেখেছিলাম। একবার দেখেই কেমন সন্দেহ হল। জহুরিকে দেখাতে নিঃসন্দেহে হলুম।
আপনার স্ত্রী-কে বলেছিলেন?
আমার স্ত্রী এখানে নেই। মথুরায়। তার মা-বাপের সঙ্গে।
কতদিন তিনি নেই?
প্রায় তিন মাস।
কাউকে আপনার সন্দেহ হয়?
কাকে সন্দেহ করব?
বাইরের কোনও লোককে ময়ূরটা দেখিয়েছিলেন?
তা দেখিয়েছিলাম। বাড়ির লোকের মধ্যে আমার স্ত্রী, আমার ছেলে, মং শান আর কুমার বাহাদুর দেখেছে।
কুমার বাহাদুর কে?
রতনপুরের কুমার বাহাদুর। তাঁরও রত্নের খুব নেশা। আমার কাছ থেকে অনেকবার পাথর কিনেছেন।
আপনি কি পুলিশে খবর দিয়েছেন?
না, এ ব্যাপার আর পুলিশকে কী জানাব। পুলিশ এসেই তো হাঙ্গামা বাধাবে। কোথা থেকে এসব রত্ন কিনেছি তার কৈফিয়ত চেয়ে বসবে।
কৈফিয়ত দেবার পক্ষে অসুবিধাজনক এমন রত্নও আপনার কাছে আছে?
প্রৌঢ় কোনও উত্তর দিল না।
আমার একবার শিলাগড়ে যাওয়া প্রয়োজন। বৈশালী বলল।
বেশ তো, কবে কখন যাবেন বলুন, আমি মোটর পাঠিয়ে দেব।
খুব দেরি করতে চাই না। ধরুন যদি পরশু যাই।
কোনও অসুবিধা নেই। কখন?
খুব ভোরে রওনা হতে চাই।
তাহলে এক কাজ করব। কাল রাত্রে মোটর পাঠিয়ে দেব।
বৈশালী কিছুক্ষণ কী ভাবল, তারপর বলল, আপনার মোটর পাঠাবার দরকার নেই, আমি নিজের গাড়িতেই যাব।
কিন্তু আপনি ভুবন-নিবাস চিনবেন কী করে?
ভুবন-নিবাস!
মানে আমার নাম ভুবন বাজপেয়ি। আমার বাড়ির নাম ভুবন-নিবাস।
আসানসোল পর্যন্ত যেতে আমার কোনও অসুবিধা হবে না।
ঠিক আছে। আসানসোলে আমার লোক থাকবে। আপনার মোটরের নম্বরটা বলুন।
এস এস এস সাতশো আটানব্বই। ছাই রঙের স্ট্যান্ডার্ড হেরাল্ড। আর-একটা কথা—।
বলুন।
আপনার স্ত্রী কবে ফিরবেন?
তিনি কাল ফিরছেন।
ভালোই হয়েছে, তাঁর সঙ্গে কথা বলবার সুযোগ পাব। আচ্ছা কিচ্ছু মনে করবেন না, একটা কৌতূহল—।
ভুবনবাবু উঠে দাঁড়িয়েছিল। আবার বসল।
আমার কাছে আসার পরামর্শ আপনাকে কে দিল?
আপনার খ্যাতি সুদূরবিস্তৃত। কোডারমার বেণিপ্রসাদের দশ লাখ টাকার জড়োয়া গয়নার কথা শুনেছি। সেটা আপনি কীভাবে উদ্ধার করেছিলেন, তাও আমার অজানা নয়। আপনি দয়া করে আমার এই রুবির একটা সুরাহা করে দিন। টাকার জন্য আটকাবে না।
ঠিক আছে। আমি একবার শিলাগড় ঘুরে আসি। তারপর আপনার সঙ্গে কথা বলব।
দূরের গির্জার পেটা ঘড়িতে ঢং ঢং করে ন-টা বাজল।
ভুবনবাবু এগোতে এগোতে বলল, চলি, আমাকে অনেকটা পথ যেতে হবে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টার রাস্তা। তাহলে পরশু আমার লোক দশটা থেকেই আসানসোল স্টেশনের কাছে থাকবে।
বৈশালী মাথা নাড়ল, তারপর ডাকল, বাহাদুর।
বাহাদুর এসে দাঁড়াতেই বলল, বাবু চলে যাচ্ছেন। মোটর পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দাও।
অনেক রাত পর্যন্ত বৈশালী শুয়ে শুয়ে একটা বই পড়ল।
ইংরেজি বই। দেশ-বিদেশের ধনরত্ন সম্বন্ধে।
অনেকগুলো আর্ট প্লেট আছে। নানা জাতের মহার্ঘ রত্নের ছবি। তাদের মূল্য। যাদের হেপাজতে আছে, তাদের নামধাম।
বর্মার রুবি সম্বন্ধে আলাদা একটা অধ্যায় আছে। বৈশালী সেটা বিশেষ মনোযোগ দিয়ে পড়ল।
পর পর অনেকগুলো নাম বৈশালীর মনের পটে ভেসে উঠল। ভুবন বাজপেয়ির স্ত্রী, মং শান, ভুবনবাবুর ছেলে।
পরের দিন বৈশালীর যখন ঘুম ভাঙল তখন বেলা হয়েছে।
জানলা থেকে পরদাটা সরাতেই রোদের ঝলক এসে ঘরে ঢুকল।
বৈশালী বাথরুম থেকে ফিরে এসে দেখল, টিপয়ের ওপর ধূমায়মান চায়ের কাপ, পাশে প্লেটে ডিম আর টোস্ট। একপাশে সেদিনের খবরের কাগজ।
চায়ে চুমুক দিতে খবরের কাগজের ওপর চোখ বোলানো বৈশালীর বহুকালের অভ্যাস।
আবহাওয়াবিদদের মতে মেঘ আকাশে থাকবে বটে, কিন্তু সে মেঘে শুধু বর্ষণের বঞ্চনা। আতপতপ্ত দেশের শীতল হবার কোনও সম্ভাবনা নেই।
পড়তে পড়তে বৈশালী হঠাৎ মেরুদণ্ড টান করে বসল।—
শোচনীয় দুর্ঘটনা। শিলাগড়ের বিখ্যাত ব্যবসায়ী ভুবন বাজপেয়িকে তাঁর মোটরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গিয়াছে। মোটরচালক নিখোঁজ। দামি মোটরটিও ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে। ভুবনবাবুর টাকার ব্যাগ, ঘড়ি, আংটি কিছুই অপহৃত হয় নাই, তাহাতে অনুমিতি হয় যে, চুরির জন্য এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় নাই।
বৈশালী উঠে দাঁড়াল। দারুণ উত্তেজনায় পায়চারি করতে করতে অস্ফুটকণ্ঠে বলল, ময়ূর, ময়ূরটা কোথায় গেল? সেটার খোঁজ নেওয়া দরকার।
.