৮
পরদিন সকালে প্রাতঃভ্রমণ সেরে বাড়ি ফিরে বাসুসাহেব দেখেন বাইরের বারান্দায় এঁরা তিনজনে দু-তিনখানা খবরের কাগজে বিশেষ একটি সংবাদ খুঁজছেন। সাধারণ মানুষের মৃতদেহ পথের ধারে পড়ে থাকাকে ইদানীং আর ‘নিউজ’ বলে ধরা হচ্ছে না। তবে এ খবরটা বেরিয়েছে একাধিক পত্রিকায়। বোধকরি স্থান- মাহাত্ম্যে। রয়্যাল ক্যালকাটা গলফ ক্লাবের সে রমরমার যুগ আর নেই। তবু মরা হাতি
লাখ টাকা। সংবাদে প্রকাশ : ঐ ক্লাবের মাঠে গতকাল রাত একটার সময় টহলদারী দারোয়ানের নজরে পড়ে এক নম্বর টীর কাছাকাছি একটি মৃতদেহ। পুরুষ। বয়স পঞ্চাশের ওপরে। পরনে শার্ট-প্যান্ট। ক্লাবের সভ্য নয়। তার পকেট ফাঁকা — কোন কাগজ, রুমাল, মানিব্যাগ, বাসের টিকিট কিচ্ছুটি নেই। দারোয়ান কেয়ারটেকারকে ডেকে আনে। পুলিশ এসে পৌঁছায় রাত পৌনে দুটোয়। বিস্তারিত খবর স্টপ-প্রেসে দেওয়া যায়নি। শুধু বলা হয়েছে, মৃতব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি। না, স্টোনম্যানের কীর্তি নয়। রগের পাশে বুলেটের আঘাত চিহ্ন।
কৌশিক বললে, আপনার জন্যই অপেক্ষা করছি। আমার মনে হয়, লাইসেন্সড প্রাইভেট ডিটেকটিভ হিসাবে আগবাড়িয়ে আমাকে খবরটা জানাতে হয়।
—কী খবর? কে খুন হয়েছে?
—তা জানি না। কিন্তু কে খুনটা করেছে তা জানি!
বাসু ধমকে ওঠেন, বোকার মতো কথা বল না কৌশিক। তুমি শুধু এটুকু জান যে, তুমি একটা বেওয়ারিশ রিভলভার উদ্ধার করেছ, যার একটি গুলি ব্যয়িত। তুমি আমাকে জানিয়েছ। ব্যস। এখন তুমি আমার মক্কেল। আমার নির্দেশ মতো চলবে।
হঠাৎ পোর্টিকোর সামনে এসে দাঁড়ালো একটা পুলিশ- জীপ। ধড়াচূড়ো-পরা ইন্সপেক্টর নিখিল দাশ নেমে এল গাড়ি থেকে। হোমিসাইড সেকশানে এই নিখিল দাশ নতুন জয়েন করেছে। বরাবরই সে বাসুসাহেবের ফ্যান, এখন ঘটনাচক্রে বিপক্ষশিবিরে এসে পড়াতেও তার মুগ্ধভাব কাটেনি। সম্প্রতি বাসুসাহেব একটি হত্যা মামলার কিনারা করে নিখিলের সঙ্গে পুরস্কারটা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। বাসুর ভাগে পড়েছে মক্কেলের মুক্তি আর ইন্সপেক্টর দাশের প্রাপ্তি : সমস্যা সমাধানের কৃতিত্ব। তথা, একটি ‘বউ!’
রানু বললেন, এসো, এসো নিখিল। কাকলিকে সঙ্গে নিয়ে এলে না কেন?
কাকলি নিখিলের সদ্যপরিণীতা বধূ।
—আমি কি এই কাকডাকা ভোরে সৌজন্য সাক্ষাতে এসেছি মামিমা?
তা সত্যি। বেচারি অফ-ডিউটিতে ছিল। কিন্তু পঞ্চায়েতি ইলেকশনের হাঙ্গামায় এমনিতেই লোকের টানাটানি। তাই মাঝরাত্রে ওর ঘাড়ে চেপেছে বাড়তি কাজের বোঝা। রাত দেড়টার সময় লালবাজার হোমিসাইড থেকে ওর বাড়িতে ফোন করে জানানো হয় যে, গলফ ক্লাবের মাঠে একটা মৃতদেহ পাওয়া গেছে। মার্ডার। গুলিবিদ্ধ বৃদ্ধ। লালবাজার থেকে পুলিশ ফটোগ্রাফারকে ওরা রওনা করিয়ে দিয়েছে। কিন্তু সিনিয়র ইন্সপেক্টর আর কেউ ডিউটিতে না থাকায় ওকেই সরেজমিনে কেসটা দেখতে বলা হচ্ছে। নিখিল রাত চারটের সময় লাসকে মরাকাটা-ঘরে রওনা করে দিয়ে ফিরে আসে। আর তখনই স্ত্রীর কাছে শোনে, লালবাজার হোমিসাইড থেকে দ্বিতীয়বার ফোন এসেছিল।
নিখিল রিং-ব্যাক করে। লালবাজার থেকে জানতে পারে যে, রাত চারটের সময় ওরা একটা ‘অ্যাননিমাস টিপস্’ পায় টেলিফোনে। অজানা লোকটা বিকৃতকণ্ঠে কথা বলছিল। আত্মপরিচয় দিতে চায়নি। তার বক্তব্য : মৃত ব্যক্তির নাম কালিপদ কুণ্ডু। ব্ল্যাকমেলিং ছিল তার ব্যবসা। সংবাদদাতা জানে যে, ঐ কুণ্ডুর সঙ্গে একজন যুবকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল গলফ ক্লাবে, রাত দশটায়। যুবকের নামটা সংবাদদাতা জানে না; কিন্তু সে থাকে টেমার লেনের একটা মেসবাড়িতে; আর দ্বিতীয়ত সে কী একটা মামলায় জড়িত। স্বনামধন্য ব্যারিস্টার বাসুসাহেবের মক্কেল।
নিখিল বলে, খবরটা শুনে আমি সরাসরি আপনার কাছে চলে এসেছি। এবার বলুন স্যার, টেমার লেনের মেসে আপনার কোনও মক্কেল থাকে?
বাসু বললেন, থাকে। অ্যাজ এ ম্যাটার অফ ফ্যাক্ট, কাল আমাদেরও শুতে অনেক রাত হয়েছিল। কৌশিক আমারই নির্দেশে একটা তদন্তে গিয়েছিল। ফিরে এল রাত বারোটা বাজিয়ে। খবরের কাগজে নিউজটা দেখে আমি হোমিসাইডে ফোন করতে যাচ্ছিলাম, এমন সময় তুমি নিজেই এসে হাজির। আমি কৌশিককে ডেকে দিচ্ছি। সে একটা এজাহার দেবে। শুধু এজাহার নয়, একটা বেওয়ারিশ রিভলভার তোমার হাতে তুলে দেবে।
—বেওয়ারিশ রিভলভার! মানে?
—হ্যাঁ, জার্মান মেড। ‘সড-অফ নজল’। এমন রিভলভার বাজারে কমই আছে। ও একটা ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে পেয়েছে।
—কোথায়?
—সেটা ওর কাছেই শোন। ওকে ডেকে দিচ্ছি।
উপায় নেই। শুধু আইন-সচেতন নাগরিক হিসাবেই নয়, হাইকোর্টের একজন প্র্যাকটিসিং ব্যারিস্টার হিসাবে সব কথাই ওঁকে জানাতে হবে। অনিবার্ণ হাজার টাকার রিটেইনার দিয়েছে কিন্তু সেটা তার ‘তহবিল তছরুপ’ কেসে। ট্রাস্টি হিসাবে সে যেন বিশ্বাসঘাতক রূপে চিহ্নিত হয়ে শাস্তি না পায়, তাই। সেই অজুহাতে সে মানুষ খুন করে নিরুদ্দেশ হতে পারে না। অনির্বাণ যদি রিভলভারটা ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে না দিয়ে বাসুসাহেবের চেম্বারে এসে আত্মসমর্পণ করত, তাহলে হয়তো ব্যাপারটা দাঁড়াতো অন্যরকম। কিন্তু অত্যন্ত বুদ্ধিমান ছেলেটি সে পথে যায়নি। কেন? সে কলকাতাবাসী হিসাবে কি জানে না যে, ময়লা ছুঁইলে শাস্তি পাইবে’ নির্দেশ অগ্রাহ্য করে একদল ভিখারি প্রতিদিন কাঠি দিয়ে ডাস্টবিনের ময়লা ঘাঁটে? সে কি জানে না, জমাদার ডাস্টবিনের ময়লা লরিতে লাদ করার সময় আচমকা রিভলভারটা আবিষ্কার করতে পারে? সে কি জানে না, যন্ত্রটার কালোবাজারী দাম পাঁচ-সাত হাজার? নিঃসন্দেহে ওটা আনলাইসেন্সড। অনির্বাণ ব্ল্যাকমানিতে কিনেছে। কিন্তু ঐ কালিপদ কুণ্ডুর মতো বৃদ্ধকে সে কেন এভাবে খুন করল? আরও আশ্চর্যের কথা— কৌশিকের জবানবন্দি অনুসারে : অনির্বাণ স্থান-নির্বাচন তথা সময়-নির্বাচন করেনি। করেছিল কালিপদ কুণ্ডু। কেন? অমন নির্জন স্থানে, অমন অন্ধকার রাত্রে কোন বৃদ্ধ কোন একটি জোয়ান মানুষের কাছে ব্ল্যাকমেলিং-এর টাকা আদায় করতে যায়? মৃত্যু কি তাকে টানছিল?
তৃতীয়ত, লালবাজার হোমিসাইডকে যে ভদ্রলোক বিকৃত কণ্ঠস্বরে টিপস্ দিয়েছেন তিনি কে? তাঁর স্বার্থই বা কী? অনিবার্ণকে সে চেনে না, চিনলে নামটা বলে দিত। ফলে শত্রুতাবশত অনিবার্ণকে ফাঁসাতে সে টেলিফোন করেনি। তাহলে তার উদ্দেশ্য কী?
বাসুসাহেবের অনুমতি পেয়ে কৌশিক আর সুজাতা পৃথক পৃথকভাবে তাদের এজাহার দিয়েছে। কৌশিক সেই থ্যাবড়া-নাক রিভলভারটা বাসুসাহেবের হেপাজত থেকে নিয়ে নিখিল দাশের হাতে তুলে দিয়েছে।
যন্ত্রটা নেড়ে চেড়ে দেখে নিখিল বললে, আমার ইন্টুইশান বলছে, এটা আনলাইসেন্সড! বিদেশ থেকে কোনভাবে স্মাগলড্ হয়ে ভারতে এসেছে।
বাসু বললেন, আমারও তাই মনে হয়।
নিখিল কৌশিকের কাছে জানতে চায়, এই রিভালভারে দেখছি ছয়টা চেম্বার। পাঁচটায় রয়েছে তাজা বুলেট, শুধু ফায়ারিং-ব্যারেলটা ফাঁকা। আপনি যখন ডাস্টবিন থেকে অস্ত্রটা উদ্ধার করেন, তখনও এই অবস্থা ছিল?
কৌশিক বললে, হ্যাঁ। তাই। আমি চেম্বার খুলে দেখেছিলাম। তারপর সেটা রি-সেট করে দিয়েছিলাম!
—গন্ধ শুঁকে দেখেছিলেন?
—হ্যাঁ, দেখেছিলাম। তখনও ওতে বারুদের গন্ধ ছিল।
নিখিল বাসুসাহেবের দিকে ফিরে বলে, আর আপনি? আপনি যখন মিস্টার মিত্রের হাত থেকে রিভলভারটা পান তখনও ঐ বারুদের গন্ধ ছিল?
—না। ছিল না। আমি রাত সাড়ে বারোটার সময় যখন ওটা হাতে পাই আর শুঁকে দেখি, তখন তাতে ছিল পচা চিংড়িমাছের গন্ধ।
—এনি ফিঙ্গার প্রিন্ট?
—আমাদের নজরে পড়েনি। মানে সাদা চোখে, আর ম্যাগনিফাইং গ্লাসে। যন্ত্রটা একটা রুমালে জড়ানো ছিল। সম্ভবত যার রুমাল সে ফিঙ্গার প্রিন্ট মুছে নিয়ে ওটা জড়িয়েছে— যাতে তার নিজের আঙুলের ছাপ না থাকে।
—সে রুমালটা কোথায়?
বাসু ইঙ্গিত করলেন। সুজাতা নোংরা রুমালটা এনে দিল। বাসু বললেন, ওতে কোন লভি মার্কও নেই, কারও নামের আদ্যক্ষরও সেলাই করা নেই। তবু ওটা এভিডেন্স। নিয়ে যাও
নিখিল রুমালটা কাগজে জড়িয়ে সংগ্রহ করল। বলল, এবার মিস্টার মিত্র আর মিসেস মিত্রকে একবার আমার সঙ্গে আসতে হবে। পুলিশ হসপিটালের মর্গে। কালিপদ কুণ্ডুর মৃতদেহটা শনাক্ত করতে।
কৌশিক বললে, আপনি চাইলে আমার দু’জন নিশ্চয়ই আপনার সঙ্গে আসব। কিন্তু ভেবে দেখুন, ইন্সপেক্টর দাশ, আমাদের দুজনের কেউই মৃতদেহটা দেখে তাকে কালিপদ কুণ্ডু বলে শনাক্ত করতে পারব না। হ্যাঁ, এই লোকটিই কাল সকালে টেমার লেনে ‘করুণা প্রকাশনী’র দোকানের সামনে বসেছিল কি না তা হয়তো বলতে পারব।
নিখিল বললে, জানি, এ জন্য আমি আমার একজন সহকারীকে পাঠিয়েছি টেমার লেনের মেস ম্যানেজারের জবানবন্দি নিতে। তিনিও পৃথকভাবে মর্গে এসে মৃতদেহ শনাক্ত করবেন। যা থেকে প্রমাণ হবে, কালিপদ কুণ্ডুই কাল সকালে টেমার লেনের মেসে অনিবার্ণবাবুর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। আসুন আপনারা দুজন!
বাসু বললেন, তাতেও প্রমাণ হবে না মৃতদেহটা কালিপদ কুণ্ডুর। যাহোক, তোমরা দেখে এসো তো।
নিখিল দাশের জীপে ওরা দু’জন এসে পৌঁছালো পুলিশ হসপিটালের মর্গে। ঘরটা বাতানুকূল করা। অত্যন্ত ঠাণ্ডা। সুজাতার সে কথা খেয়াল হয়নি। না হলে একটা শাল নিয়ে আসত।
মরা-কাটা ঘরের ইনচার্জ নিখিলকে দেখে সেলাম করল।
নিখিল বলল, ইসমাইল, কাল রাত চারটের সময় যে লাস টালিগঞ্জ থেকে এসেছে সেটা এঁদের দেখাও।
ইসমাইল ওদের আহ্বান করল : আসুন স্যার।
বিরাট বড় একটা ওয়াড্রোব মতো। ইসমাইল তার একটা ড্রয়ারের রিং দুহাতে ধরে টানলো। বল-বিয়ারিং-এর আবর্তনে ড্রয়ারটা এগিয়ে এল সামনের দিকে। তার গর্ভে মৃতদেহটা।
বছর পঞ্চাশ বয়স। দীর্ঘদেহী। গায়ে টুইলের শার্ট। পরিধানে নস্যি রঙের একটা প্যান্ট। লোকটার চোখ দুটি বোজা। গালে আঁচিল।
কৌশিক একবার দেখেই বললে, হ্যাঁ, এই লোকটিই কাল সকালে টেমার লেনে করুণা প্রকাশনীর বারান্দায় বসেছিল।
নিখিল এবার সুজাতার দিকে ফিরল।
সুজাতার গা গুলোচ্ছে। সে কোনও কথা বলল না। সজোরে মাথা নেড়ে সমর্থন করল কৌশিকের শনাক্তিকরণ।
মরাকাটা ঘর থেকে বেরিয়ে এসে নিখিল সুজাতাকে বললে, আয়াম সরি, মিসেস মিত্র। কিন্তু দোষটা একা আমার নয়। আপনি নিজেই এই প্রফেশন বেছে নিয়েছেন।
সুজাতা দৃঢ়স্বরে বললে, আমি তো কোন অভিযোগ করিনি আপনার বিরুদ্ধে। শুধু বলুন, আপনার প্রয়োজন কি ফুরিয়েছে? আমরা বাড়ি যেতে পারি?
—একটু চা বা কফি খাবেন না?
—থ্যাঙ্কস! না!
—বেশ। এই জীপই আপনাদের নিউ আলিপুরে পৌঁছে দিয়ে আসবে।
নিখিলের ব্যবস্থাপনায় টেমার লেনের ম্যানেজার এসে মরাকাটা ঘরে মৃতদেহ শনাক্ত করে গেল। তাতেও প্রমাণিত হল না যে, মৃতের নাম কালিপদ কুণ্ডু। শুধু জানা গেল যে, সে গত পশু বার-তিনেক টেমার লেন মেস-এ অনির্বাণের খোঁজ করতে এসেছিল। সাক্ষাৎ পায়নি। নিখিল আন্দাজ করল অনির্বাণ পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। কেন, কী বৃত্তান্ত বোঝা যাচ্ছে না; কিন্তু ঐ লোকটাও মরিয়া হয়ে পড়েছিল। তাই গতকাল সকাল সাতটা বাজার আগে এসে মেসের দরজায় হাজিরা দিয়েছে।
মৃতদেহের একটি ছবি নিখিল ছাপিয়ে দেবার ব্যবস্থা করল বাংলা-ইংরেজি-হিন্দি কাগজে। তার সম্ভাব্য নামটা জানালো না। দৈহিক বর্ণনা থাকল বিস্তারিত। দৈর্ঘ্য, ওজন, গালে আঁচিলের কথা এবং পোশাক-পরিচ্ছদের বিবরণ। আরক্ষা বিভাগ প্রার্থনা করছেন, এই বেওয়ারিশ মৃতদেহ, যাকে মঙ্গলবার মধ্যরাত্রে টালিগঞ্জ গলফ ক্লাবের মাঠে উদ্ধার করা গেছে, তার পরিচয় কারও জানা থাকলে হোমিসাইড বিভাগে টেলিফোনে যোগাযোগ করতে।
নিখিলের আশা ছিল বিকৃতকণ্ঠে কেউ টেলিফোনে জানাবে যে, ছবিটা দেখে সে মৃতদেহটি শনাক্ত করতে পারছে— ওর নাম ছিল কালিপদ কুণ্ডু।
বাস্তবে তা হল না কিন্তু। সে লোকটা আত্মগোপন করেই রইল, যদি ধরে নেওয়া যায় কাগজে ছাপা ছবিটা সে দেখেছে।
পরিবর্তে বর্ধমান থেকে এস. টি. ডি. করে এক ভদ্রলোক জানালেন যে, মৃতদেহটি তিনি ছবি দেখে শনাক্ত করতে পারছেন। দিন তিনেক আগেই ওঁর এই কর্মচারীটি নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। ভদ্রলোক থাকেন বর্ধমানের কানাইনাটশাল অঞ্চলে; নাম মহেন্দ্রনাথ পাল। তিনি স্বয়ং কলকাতায় আসছেন মৃতদেহটি শনাক্ত করতে। তার পূর্বে যেন দাহ করা না হয়। মহেন্দ্রনাথের বিশ্বাস, মৃত ব্যক্তি কালিপদ কুণ্ডু।