আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সে চমকে ওঠে, যেন অচেনা কারুকে দেখছে
অনেকদিন পর। জুলফি শাদা, চুল দ্রুত পলায়নপর, গলার ত্বক
ভীষণ কুঁচকে-যাওয়া। বেশীদেরি নে আর, এখন থেকে থেকে এক অদৃশ্য
এসিড তাকে ক্ষইয়ে দিতে থাকবে তারই প্রখর সংকেত ভোরের আয়নায়।
এখন থেকে দাঁত নড়বে ঘন ঘন, কমতে শুরু করবে চোখের জ্যোতি।
অসুখ বিসুখ বিশ্বস্ত কুকুরের মতো নিত্যসঙ্গী হবে তার। এখন থেকে
প’ড়ে প’ড়ে মার খেতে হবে সময়ের। এখন থেকে কেউ আর তাকে
ঈর্ষা করবে না তার কান্তির জন্যে, এ-কথা ভেবে প্রবল গ্রীষ্মেও দুঃসহ
শীত অনুভব করে সে।
‘হায়, লোকটা রাতারাতি বুড়ো হয়ে গেল’ ব’লে কেউ কেউ
করুণা প্রকাশ করতে চাইবে এবং এটাই হলো সবচেয়ে মারাত্মক।
মুখ ফুটে কিছু না বললেও হাবে ভাবে বিলক্ষণ বুঝিয়ে দেবে,-
যত বারফট্রাই করনা কেন, আসলে এখন তুমি বার্ধক্যের মুখে
ইদুঁর। ভাবে, এক্ষুনি ঘুরে দাঁড়াবে আয়নার দিএক পিঠ দিয়ে,
আমল দেবেনা কাল-ভারাক্রান্ত কোনো চিন্তাকে, ভেসে বেড়াবে
হালকা হাওয়ায়। প্রকৃত ঈগল কখনো বয়সের ভার স্বীকার
করেনা, তাকে মানায়না অসুস্থ গেরস্ত আচরণ; বায়ুস্তরে
তরঙগ তাকে তুলতেই হবে পাখার ঝলসানিতে বারংবার। তাই,
সে আজো পাখি দ্যাখে, জ্যোৎস্নার ভিতরে হাত বাড়িয়ে দেয়
আর কোনো কোনো রাতে তার শিরায় তীব্র হুইস্কির মতো কী যেন
সঞ্চারিত হয় অলক্ষে। তখন সে আলোয় ঘেরা টেবিলে ঝুঁকে মেতে ওঠে
সময়ের সঙ্গে অলৌকিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, হয়ে ওঠে নীরোগ তরুণ।