নদীমাতৃক

নদীমাতৃক

নদীটির নাম সাসকাচুয়ান
দুদিকে শুভ্র ঢেউ
এপারের আলো ওপারের হিম
ছাড়িয়ে হঠাৎ
পরা বাস্তব কার যেন মুখ দেখে।
সহসা কিসের শব্দ উঠলো,
কে যেন বললো
বরফ ভাঙছে, শুনলে না কেউ?
বাতাস স্তব্ধ, আকাশের কোনো
চেনাশুনো নেই।
শান্ত শায়িত ফেব্রুয়ারির সন্ধ্যা…

আমি চলে যাই অন্য একটি
নদীর কিনারে
গ্রীষ্মদুপুর,
গয়না নৌকা
মাছধরা জাল
আড়িয়েল খাঁর তীরে বসে আছে
বাল্য মূর্তি
কপিশ মেঘের পটভূমিকায়
চিল সমারোহ
ভাটিয়ালি সুরে কে যেন ডাকছে
কার পুত্রকে
স্টিমারের ভেঁপু
দূরকে করেছে নিকট বন্ধু
মিহি দুঃখের কণা উড়ে যায় মেঘে।

কিসের বিষাদ, কেমন বিষাদ
মনেও পড়ে না
শুধু মনে পড়ে পা ছড়িয়ে বসে থাকা
একাকিত্বের দারুণ গহন
চক্ষু না মেলে, শ্রবণ না খুলে
জীবনযাপন
এমন সময় নদী ডাকে নাম ধরে!
যাই যাই করে ওঠার আগেই
এ পৃথিবী কাঁপে
হাহা রবে কারা পেয়েছিল যেন
ধুলোর কুহেলি
এদিকে ফাটল, ওদিকে ফাটল
মাটি খোঁজে জল, জলের শিকল
জলের আগুন,
জল-সংসার
প্লাবনের ধ্বনি
গর্ভ অতলে মিলিয়ে যাবার
প্রাকমুহূর্তে
কেউ যেন হাত ধরে দিয়েছিল টান!

নিপারের কূলে ভেঙে দিল ঘুম
দ্বিপ্রহরের
ক্ষণ আবল্লী
অতি বিখ্যাত সুন্দর চারদিকে
তবুও হঠাৎ আকাশ দু’ভাগ
চড়াৎ শব্দ
রুপালি ঝলক, ক্ষণ বিদ্যুৎ…
সেবারে বর্ষা অজয়ের পাড়
দাপিয়ে অনেক
দূরে ছুটছিল
সেতু উপড়িয়ে
খ্যাতি চেয়েছিল
মুথা ঘাস আর শালজঙ্গল
চাষীর মেয়ের বিবাহবাসর
সব ভেসেছিল ঘোলাটে প্রবল স্রোতে
আমিও গিয়েছি, ড়ুবেছি, ভেসেছি
এ নদীতে নয়
অন্য জোয়ার
এ দুনিয়া নয়, অন্য দুনিয়া
সে রকম ঘুম স্বপ্নে প্রথম দেখা!