দেখিনি বহু দিন
ছেঁড়া জামা, রুক্ষ চুল, জুতোয় পেরেক–
সে ছেলেটা কোথায় যে গেল!
পকেটে চকমকি ভরা, দুপুরে বা মধ্যরাত্রে মেধার ভ্রমণ
পায়ের তলায় সর্ষে, সর্বক্ষণ খিদে—
চতুর্দিকে সার্থকতা উদ্যানের বাথরুম হয়েছে
বস্তি ভেঙে গড়া হলো অন্তিম যাত্রার কত রাস্তা
অফিস ফেরার পথে অনেকেই সেইখানে
নিজের জুতোর শব্দে মুগ্ধ হয়ে গেছে—
এরকম সুন্দরের মধ্যে সেই অভুক্ত যৌবন
দুহাত ছড়িয়ে তবু ঘোষণা করেছে,
আমি আছি।
কোথায় যে গেল সেই ছেলেটা, কোথায় যে গেল সেই
কোথায় যে গেল সেই ছেলেটা, দেখিনি বহুদিন!
সে বড় লাজুক, খুব অভীষ্ট বাড়িতে গিয়ে
বলেনি একটিও ছোট কথা
সিঁড়ির উপরে স্থির সাদা ফ্রক পরা রাজহংসীটিকে দেখে
কেঁপেছিল তার বুক বহুবার কেঁপেছিল বুক
তবু মুখ, তবু মুখ, তবু মুখ বন্ধ ছিল
সব কথা আগুনের ফুলকি হয়ে সহস্ৰ চিঠির সঙ্গে উড়ে
যায় দুঃখ শিহরন মেশা কবিতায় ছোট ছোট মাসিকপত্রের কোণে
শুয়ে থাকে
এবং গোপন থেকে বেড়ে ওঠে তুলোর কৌটায় রাখা বীজ
যার থেকে জন্ম নেবে বৃক্ষ
যার কোনো ফুল কিংবা ফল আছে কিনা
কেউ তা জানে না!
আবার কখনো শুরু হয় অসময়ে অসি খেলা
পর পর লুটেরা, পুলিশ, ঠক–এইসব কঠিন দেয়াল
ক্রমশ এগিয়ে আসে, ক্রমশ এগিয়ে আসে মাথা লক্ষ্য করে
সে একা, বা দুজন বন্ধুকে নিয়ে লড়ে গেছে জীবন সর্বস্ব
আকাশ ফাটানো কণ্ঠে মধ্যরাতে চেঁচিয়ে বলেছে,
আমি আছি!
অপবিত্র অর্ধাংশকে যে নেবে সে নিক
অপর পবিত্র অংশে এ জীবন পৃথিবীতে
দু’পা গেড়ে দাঁড়াবার
স্থান ছাড়বে না!
সীমানা ভাঙার রোখে রাত্রি ছিঁড়ে চেঁচিয়ে বলেছে,
আমি আছি!
কোথায় যে গেল সেই ছেলেটা, কোথায় যে গেল সেই
কোথায় যে গেল সেই ছেলেটা, দেখিনি বহুদিন!