দর্পণে প্রতিবিম্বিত কাঁটা – ১১

এগারো

এরপর জবানবন্দি দিতে এলেন সত্যপ্রসন্ন দুগার। দীর্ঘদিন তিনি এ- বাড়িতে আছেন। রায়বাহাদুরের একান্তসচিবই শুধু নন, গৃহকর্ত্রী তাঁর বাল্যবান্ধবী। গূঢ় রহস্য কিছু থাকলে তাঁরই জানার কথা। কিন্তু তিনিও

কোনও আলোকপাত করতে পারলেন না। হ্যাঁ, দিন-দশেক হল রায়বাহাদুর কিছু অস্থির, অন্যমনস্ক ছিলেন বটে, কিন্তু এমন কিছু মারাত্বকভাবে নয়। আত্মহত্যা করার মতো মানসিকতা তাঁর কোনদিনই ছিল না। ঘটনার দিন সকালেও তিনি সত্যপ্রসন্নের সঙ্গে বসে হিসাবের খাতা পরীক্ষা করেছেন। নানান বৈষয়িক নির্দেশ দিয়েছেন। রাত্রে একজন অতিথি কলকাতা থেকে আসছেন একথা সত্যপ্রসন্নকে জানাননি। স্পষ্ট বোঝা যায়, সেক্ষেত্রে তিনিই দশরথকে সরাসরি নির্দেশটা দিয়েছিলেন। স্টেশনে গাড়ি পাঠানোই শুধু নয়, আউটহাউস সংলগ্ন গেস্ট-হাউসের একটি কামরা—রমলা স্মিথের ঠিক পাশের ঘরখানাই আগন্তুকদের জন্য প্রস্তুত রাখার নির্দেশও দশরথকে দিয়েছিলেন। সরাসরি। একান্তসচিব সত্যপ্রসন্নের মাধ্যমে নয়।

অপরাজিতা যে কার গর্ভজাত এ-প্রশ্নটা আদৌ উত্থাপন করলেন না বাসু। হরেন্দ্রনাথও এ বিষয়ে কৌতূহলী নয়। তবে হরেনবাবু হত্যার মোটিভটা খুঁজে বার করার চেষ্টায় তাঁর সেই চিরাচরিত প্রশ্নটা পেশ করলেন : রায়বাহাদুরের অবর্তমানে সম্পত্তিটা কে পাবে? তিনি কি উইল করে রেখেছেন?

দুগার বললেন, আজ্ঞে হ্যাঁ। উইল তিনি করেছেন, প্রায় বছর চারেক আগে। আমি সেই উইল করার কথাটা জানি; কিন্তু তিনি কাকে কী দিয়ে গেছেন তা আমি জানি না।

হরেন্দ্র প্রশ্ন করেন, উইলে সাক্ষী হবার জন্য তিনি কি আপনাকে ডাকেননি? আপনি তো তাঁর প্রাইভেট সেক্রেটারি?

সত্যপ্রসন্ন জবাব দেবার আগেই বাসু বলেন, প্রথমত, হয়তো মিস্টার দুগার একজন বেনিফিশিয়ারি। ফলে তাঁকে সই দিতে, ডাকা হয়নি। দ্বিতীয় কথা, উইলে যে সাক্ষী হিসাবে স‍ই দেয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সে জানতে পারে না উইলে কী লেখা আছে! সে শুধু স্বাক্ষর করে যে, উইলটা সে সই হতে দেখেছে। তার সামনেই সই হয়েছে। এইটুকুই।

হরেন্দ্রনাথ প্রশ্ন করেন, রায়বাহাদুরের অ্যাটর্নি কে? উইলটা কে ওঁর নির্দেশমতো তৈরি করেছিলেন, তা জানেন?

—জানি। মোহনপুরেরই একজন প্রৌঢ় অ্যাডভোকেট। কলকাতায় প্র্যাকটিস করেন। তাঁর নাম শ্রীলালমোহন বসু। ঘটনাচক্রে তিনি এখন মোহনপুরে। একটু আগেই তিনি ফোন করেছিলেন, জানতে চেয়েছিলেন গুজবটা সত্য কি না।

বাসু বলেন, তাঁকে কি একবার আনা যাবে? এত রাত্রে? টেলিফোন করে দেখুন না, তিনি শুয়ে পড়েছেন কি না।

সত্যপ্রসন্ন বলেন, আজকের রাতটা মোহনপুরে কেউ ঘুমাবে না। সবাই জেগে আছে—যে যার বাড়িতে। আমি ফোন করছি। উনি আধঘন্টার ভিতরেই এসে যাবেন।

লালমোহনের আসতে যেটুকু দেরি হল তার মধ্যে ওঁরা দুজনের জবানবন্দি একে একে নিয়ে নিলেন। প্রথমজন শশীকলা দেবী। তিনি ইতিমধ্যে কিছুটা সামলেছেন। সলিল মিত্ৰই সাজেশনটা দিল। ওঁকে যদি আদৌ কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান তাহলে এখুনি করে নিন। কারণ তারপর আমি ওঁকে হেভি সিডেটিভে ঘুম পাড়িয়ে দিতে চাই। অগত্যা শশীকলা দেবী এসে বসলেন স্টাডিতে।

বাসু আর হরেনবাবু বসেছিলেন দুটি চেয়ারে। অপরাজিতা তার মাকে নিয়ে এসে বসিয়ে দিল একটা সোফায়।

.

বাসু বললেন, আমরা অত্যন্ত দুঃখিত মিসেস শেঠরায়। আমরা জানি, আপনি কী মর্মান্তিকভাবে আহত হয়েছেন। বেশিক্ষণ আপনাকে আটকাবো না। জরুরী দু-একটি কথা জেনে নিয়েই আপনাকে ছেড়ে দেব।

অপরাজিতা বলল, আমার বোধহয় এখন এখানে উপস্থিত থাকাটা ঠিক হবে না, তাই নয়?

বাসু বললেন, সচরাচর নয়, কারণ এরপর আমরা তোমাকেও পৃথকভাবে প্রশ্ন করব; তবে মিসেস শেঠরায় যদি চান …

কথাটা উনি শেষ করতে পারলেন না। তার আগেই শশীকলা তাঁর কন্যাকে বলে ওঠেন, তুই যা খুকু। আমি ঠিক আছি।

অপরাজিতা ধীরপদে নির্গত হতে –বাসুসাহেব কোনও প্রশ্ন উত্থানপতনের আগেই শশীকলা বলে ওঠেন, আপনারা যা যা জানতে চাইবেন আমি সব কথা জানাব; কিন্তু একটি শর্তসাপেক্ষে।

—শর্তসাপেক্ষে! কী শর্ত মিসেস শেঠরায়?

—কথা দিন। আপনারা ওই হতভাগ্য মানুষটার দেহ পোস্টমর্টেম……মানে, কাঁটা ছেঁড়া…….

উদগত কান্নায় বাকি কথা কটা শেষ করতে পারলেন না।

হরেন্দ্র বিহ্বলভাবে বাসুসাহেবের দিকে তাকালেন। তিনি বললেন, আপনি মনকে শক্ত করুন শশীকলা দেবী। যদি নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হয় যে, রায়বাহাদুর আত্মহত্যা করেছেন, তাহলে আমরা নিশ্চয় কোনও কাঁটা-ছেঁড়া করব না। রাত পোহালে কাল সকালে সারা মোহনপুরের মানুষ মহাশবের অনুগমন করে তাঁকে শেষবিদায় জানাবে।

ওঁর মুখটা দুহাতে ঢাকা ছিল। ধীরে ধীরে হাত দুটি সরে গেল। বিহ্বলভাবে উনি জানতে চান, মানে? আত্মহত্যা ছাড়া আর কী হতে পারে?

—জানি না। আমরা সেটা জানি না। এখনো খুঁজছি। কেন তিনি আমাকে জরুরী টেলিগ্রাম করে…

–জরুরী টেলিগ্রাম…

বাসু পকেট থেকে চিঠি আর টেলিগ্রাম বার করে শশীকলার হাতে দিলেন। অনেকক্ষণ ধরে তিনি তা দেখলেন। নিঃশব্দে ফেরত দিয়ে বললেন, আমি এর বিন্দুবিসর্গও জানতাম না।

—তবেই দেখুন। কোনও একটা গভীর সমস্যা তাঁকে প্রচণ্ডভাবে খোঁচাচ্ছিল। তিনি সেকথা আপনাকে বা তাঁর একান্তসচিব ওই মিস্টার দুগারকে পর্যন্ত জানাননি। তথ্যটা এতই গোপন রাখতে চেয়েছিলেন তিনি। অথচ আমি এসে পৌঁছানোর দশ-পনের মিনিট আগে তিনি এভাবে…

শশীকলা সোজা হয়ে উঠে বসলেন। বেশ একটা পরিবর্তন হল তাঁর মুখমণ্ডলে। দৃঢ়স্বরে বললেন, সেক্ষেত্রে আমি আমার শর্তটা প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। আপনারা যা ভাল বোঝেন করুন।

এবার হরেন্দ্রবাবুই সেই প্রশ্নটা উত্থাপন করেন, আমরা শুনেছি, রায়বাহাদুর দুবার বিবাহ করেন। তাই জানতে চাইছি, আপনি কি অপরাজিতার গর্ভধারিণী? না বিমাতা?

শশীকলা স্থিরভাবে বললেন, প্রশ্নটা বাসুসাহেবকে করবেন, উনি জানেন। এখানে এসে আমাদের দেখামাত্র যখন উনি আমাদের নাম ধরে ডাকতে শুরু করেন তখনই আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, ‘সুকৌশলী’কে আমরা যা জানিয়েছিলাম—তা ওঁর জানা।

বাসু বললেন, আই অ্যাডমীট! হ্যাঁ, অতীতের সেসব কথা এবং সাম্প্রতিক কিছু অতীত- কথা আমার জানা। তাই জানতে চাইছি, ‘দর্পণে প্রতিবিম্বিত কাঁটাটা’ কী এতই তীব্র ছিল যে উনি আত্মহত্যা করে বসবেন?

শশীকলা চোখ তুলে বাসুসাহেবকে একবার দেখে নিয়ে বললেন, আমার তা মনে হয় না। হ্যাঁ, আঘাত সে পেয়েছিল যখন আমি সন্ধান নিয়ে ওকে জানালাম যে, অতসী পুলিশ এনকাউন্টারে মারা গেছে…

বাধা দিয়ে হরেন্দ্রবাবু বলে ওঠে, কে? অতসী? সে কে? পুলিশ এনকাউন্টারে মানে? বাসু এদিকে ফিরে বললেন, প্লিজ মিস্টার দত্ত! আপনাকে পরে আমি সব কথা জানাব। আপাতত…

—অলরাইট! অলরাইট, স্যার!! দত্ত সামলে নিলেন নিজেকে।

বাসু শশীকলার দিকে ফিরে বলেন অতসীর মৃত্যুসংবাদে রায়বাহাদুর বিচলিত হয়েছিলেন? একথাই কি বলতে চান?

—আজ্ঞে হ্যাঁ; পুরুষোত্তমদাস শেঠজীর সঙ্গে নিজেকে তুলনা করে ও একটা ইনফিরিয়রিটি কমপ্লেক্সে’ ভুগছিল। পুলিশের হাঙ্গামার ভয়ে ও সমুর বউকে স্বীকার করে নিতে পারেনি; কিন্তু দু’শ বছর আগে সহায়-সম্বলহীন পুরুষোত্তমদাসজী মীরজাফরের ভয়ে ও জাতীয় ব্যবহার করেননি। এটাকেই আমি ‘দর্পণে প্রতিবিম্বিত কাঁটা’ বলতে চেয়েছিলাম।

বাসু জানতে চান, অতসীর মৃত্যুর কথা উনি কতদিন আগে জেনেছেন?

–সে তো বহুদিন আগে। ধরুন দেড়-দুবছর। … কেন?

—তাহলে এতদিন পরে সেটা ওঁর আত্মহত্যার কারণ হতে পারে না!

—নিশ্চয় নয়।

—তাহলে? অন্য কোনও হেতুর কথা আপনি আন্দাজ করতে পারেন না?

মহিলা নিঃশব্দে দুদিকে শিরশ্চালন করে অক্ষমতা জানালেন। বাসু বললেন, একটা কথা মিসেস শেঠরায়। অনেকেই বলেছেন, প্রায় মাসখানেক হল রায়বাহাদুরের চরিত্রে একটা পরিবর্তন হয়েছিল। তিনি প্রায়ই চিন্তামগ্ন থাকতেন, গম্ভীর হয়ে গেছিলেন। দাবা খেলা বন্ধ করেছিলেন। এমনকি, পুকুরে স্নান করতেও যেতেন না। এই পরিবর্তনের কোনও সম্ভাব্য হেতুর দিকে আপনি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন না? আপনি কি কিছুই টের পাননি? শশীকলা ধীরে ধীরে বললেন, হেতুটা আমি জানি। কিন্তু তার সঙ্গে ওর এই দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু সম্পর্কবর্জিত।

–তা হোক। আপনি যেটুকু জানেন, তা বলুন।

–খুকুর ওই থিয়েটার করাটা ও পছন্দ করত না। কিন্তু খুকু তো দু-তিন বছর হল তা করছে। ইদানীং ওই ছেলেটি কামাল রহমানের সঙ্গে খুকু একটু বাড়াবাড়িরকম মেলামেশা করছিল। ওরা দুজন স্টেজে হিরো-হিরোইন সাজে। তাই ও ভয় পেয়ে যায়।

বাসু বললেন, ধন্যবাদ! এতক্ষণে বোঝা গেল, রায়বাহাদুরকে কিসে খোঁচাচ্ছিল! জিতা হয়তো বেজাতে বিয়ে করে বসবে। তাই না?

–আমার তাই আন্দাজ।

বাসু বললেন, সেক্ষেত্রে আপনি বিশ্রাম নিতে যান। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করব যাতে পোস্টমর্টেমটা এড়ানো যায়।

.

এরপর জবানবন্দি দিতে এলেন ডক্টর মিস রমলা স্মিথ। বাঙালি। রঙ খুব ফর্সা। নামেই বোঝা যায়, অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান। সোফায় বসতে বসতে বললেন, অহেতুক একটা বিশ্রী ব্যাপারে জড়িয়ে পড়লাম এখানে এসে।

হরেন্দ্রনাথ বলেন, জড়িয়ে কিছুই পড়েননি। পাশের ঘরে একটা লোক আত্মহত্যা করলে বিড়ম্বনা কিছুটা হয়ই। আপনি কতদিন এসেছেন এখানে?

–প্রায় তিন মাস আগে। বছর তিনেক আগে এসেও প্রায় মাসখানেক ছিলাম। এবার এসেছি মাস-তিনেক।

–রায়বাহাদুরকে আপনি শেষ কখন দেখেন?

ডক্টর স্মিথ ম্লান হেসে বললেন, আপনাদের পুলিশি এনকোয়্যারির ভাষায় আমিই সম্ভবত ‘দ্য লাস্ট পার্সেন টু সি হিম অ্যালাইভ।’

–তার মানে?

–আমার সঙ্গে তাঁর শেষ সাক্ষাত ঠিক সাতটা ত্রিশে। ওঁর স্টাডিতে। তারপর বোধহয় ওঁকে জীবিত অবস্থায় আর কেউ দেখেনি। যদি না কোনও কাজে দশরথ ও-ঘরে গিয়ে থাকে সাড়ে সাতটার পরে।

–ঠিক সাতটা ত্রিশ কি করে বুঝলেন? ঘড়ি দেখেছিলেন?

–না। রাত নিস্তব্ধ ছিল। বৈঠকখানার বড় ঘড়িটায় জলতরঙ্গের শব্দ হতেই বুঝতে পারি, সাড়ে সাতটা বাজল। ইন ফ্যাক্ট—রোজই সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সাড়ে সাতটা আমি ওঁর সঙ্গে স্টাডিতে কাজ করি। আজও করেছি।

–কী কাজ?

–উনি একটি আত্মজীবনী লিখছিলেন। তার প্রথম বিশ-বাইশ পাতা ওঁর নিজের হস্তাক্ষরে। তারপর আমার হাতের লেখা। উনি মুখে মুখে বলে যেতেন, আমি সেটা সাজিয়ে- গুছিয়ে লিখে ওঁকে দেখাতাম। সারাজীবন লেখাপড়া বিশেষ করেননি। লংহ্যান্ডে ‘আত্মজীবনী’ লেখা তাঁর কর্ম নয়। অথচ ইচ্ছা আছে, অর্থ আছে। ফলে, পৃষ্ঠাপিছু উনি আমাকে পনের টাকা সম্মান দক্ষিণা দিতেন। আজও সন্ধ্যাবেলা এসে কাজ করে গেছি। সাড়ে সাতটার সময় যখন উঠে পড়ি তখন হঠাৎ উনি আমাকে রাত নয়টার সময় ডিনারে নিমন্ত্রণ করেন। আমি জানতে চেয়েছিলাম, হঠাৎ নৈশাহারের নিমন্ত্রণ? উনি জবাবে বলেছিলেন কলকাতা থেকে ওঁর একজন গেস্ট আসবেন। সেই জন্যই। তাঁর সঙ্গে আমার আলাপ করিয়ে দিতে চান। তাই বাসুসাহেবকে দেখে আমি খুব বেশি চমকে যাইনি।

হরেনবাবুর প্রশ্নের জবাবে ডক্টর স্মিথ জানালেন যে, প্রথমদিকে পূর্বপুরুষদের বিষয়ে রায়বাহাদুরের খুবই আগ্রহ ছিল, বিশেষ করে বংশের প্রথমপুরুষ মোহনলালের সম্পর্কে কিন্তু ইদানীং সেই উৎসাহটা ওঁর স্তিমিত হয়ে যায়। হেতুটা কী, তা উনি আন্দাজ করতে পারেননি। ডক্টর স্মিথের মতে, রায়বাহাদুর ছিলেন অত্যন্ত রাশভারী মানুষ। হামবড়াইভাবে টইটুম্বুর। মেগালোম্যানিয়াক। উনি যখন বিদায় নিয়ে চলে যান, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময়, তখন তাঁকে বিষণ্ণ দেখাচ্ছিল। ওঁর মনে হয়েছিল, মাসখানেক রায়বাহাদুর বেশ অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছেন। কোনও একটা সমস্যা তাঁকে খোঁচাচ্ছিল। কিন্তু উনি যে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছেন এমনটা মনে হয়নি।

হরেন্দ্র ধন্যবাদ জানিয়ে বললেন, আমার আর কিছু জিজ্ঞাস্য নেই। আপনি স্যার, কিছু প্রশ্ন করবেন?

বাসু বলেন, হ্যাঁ। দেখুন ডক্টর স্মিথ, আমরা রাত নয়টা নাগাদ যখন সদলবলে বৈঠকখানা থেকে স্টাডিরুমে যাচ্ছিলাম, তখন সবার সামনে ছিল দশরথ। আমি তারপর। দলে সবার পিছনে ছিলেন আপনি। ওই সময় প্যাসেজের আয়নার ভিতর দিয়ে দেখতে পেয়েছিলাম, আপনি মেঝে থেকে কিছু কুড়িয়ে নিলেন। জিনিসটা কী?

রমলা বললেন, আমার ঘরের চাবির রিঙটা। ওটা হাত থেকে পড়ে গিয়েছিল। কেন বলুন তো?