ক তার নিজের কাছে প্রত্যহ আপনকার ছবি তুলে ধরে,
চেয়ে চেয়ে দ্যাখে, ভালো করে, পষ্ট করে, সব কিছু
দেখে নিতে চায়।
অথচ ঝাপ্সা লাগে কত কিছু, কত কিছু ভীষণ বিকৃত;
চোয়াল চোয়ালে নেই, চোখ নেই চোখের কোটরে,
হস্তদ্বয় উদরসদৃশ,
মাথায় সুতীক্ষ্ণ শিং কম্পমান সারাক্ষণ। ক তার নিজের
ছবি দেখে একরত্তি হয় না বিস্মিত।
কপালে পড়ে না কোনো ভাঁজ,
একটু কাঁপে না ওষ্ঠ, চোখে নেই ঢেউ কোনো-একজন যন্ত্র
আরেক যন্ত্রকে যেন ভাবলেশহীন দ্যাখে বিভ্রান্ত আঁধারে।
‘কখন এমন পাল্টে গিয়েছি বলো তো’, নিজেকেই বারংবার
প্রশ্ন করে, নিরুত্তর বসে থাকে স্বপ্নহীন প্রহরে প্রহরে।
টিনের চেয়ারে বসে প্রায়শ ক দ্যাখে অন্তরালে
আলখাল্লা পরা ঐন্দ্রজালিক কী মায়া
গোপনে দেখায় তাকে যখন তখন। কখনো-বা
টিনের চেয়ার মেঘদেশে
মিশে যায়, খায় ঘুরপাক, রূপান্তরে সূর্যমুখী কোনোদিন,
কোনোদিন যাদুমন্ত্রে করে বশীভূত।
নইলে হাত কেন চেয়ারের হাতলের মতো, কেন
বুক টেবিলের স্তব্ধ বুকের মতন? এমনকি চশমাটাও
বড় টিন টিন হয়ে গ্যাছে!
ইদানীং ধবধবে জ্যোৎস্নাকে কম্বলে ঢেকে ক রঙিন বুদ্ধুদের মতো
পাখিদের বারে বারে দিয়েছে ফিরিয়ে, শেফালিকে
দিয়েছে বিদায়।
হঠাৎ ক শোনে, মাঝে-সাঝে, তার অস্তিত্বের সীমান্তের ধু-ধু
নির্জনতা ফুড়ে কতিপয় কর্কশ কংকাল হেঁটে যায় আর
কী যেন চেঁচিয়ে বলে, ভাষা বোঝা দায়। শোনে, কেউ
জপায় স্মৃতির মধ্যে যেন-
‘এখন নিজেকে খুঁড়ে খুঁড়ে গহন তাৎপর্য কিছু খুঁজে নাও। চোখ বুজে
পড়ে থাকে এক কোণে, নিজেকে খোঁড়ার ইচ্ছাটুকু উদাসীন
মেঘ হয়ে উড়ে গেছে কবে। সকল ইচ্ছাই কত
তুচ্ছ মনে হয়,
তুচ্ছ মনে হয়।