এখন বালাই নেই র্ক্ষুৎ পিপাসার। গলাবন্ধ
কোটের দরকার ফুরিয়েছে এই শীতে। আত্মরক্ষা অর্থহীন,
অস্ত্রও লাগে না তাই। দেখুন সবাই সাদা চোখে
কিংবা ক্যামেরার যান্ত্রিক ওপার থেকে,
শহরের এক কোণে, শনাক্তের পরপারে উপাধিবিহীন
কেমন নিস্পৃহ শুয়ে আছি, কী প্রকার নিশ্চেতন,
রায়ের বাজারে।
এই যে করোটি দেখছেন, একদা এটাই ছিল
স্বীকৃত আমার দামি মাথা আর সেই মাথার ভেতর
নানাবিধ চিন্তা পুঞ্জ পুঞ্জ
মেঘের মতন সূর্যোদয় কি সূর্যাস্তে
মোহন রঙিন
এবং গভীর বিবেচনা-
সেখানে ফ্রয়েড, কার্ল মার্কস, রিল্কে, ডস্টয়ভস্কির
শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে ছিল না বাধা কোনো।
এই যে যমজ লাঠি, সরু, সাদা, এরাই আমার
দুটি বাহু, কোনো দিন কী আবেগে ধরত জড়িয়ে
দয়িতাকে। আর এই শূন্য জায়গাটায়
স্পন্দিত হৃৎপিণ্ড ছিল, যা ওরা নিয়েছে উপড়ে পাশব আক্রোশে
আর এই মাত্র যেটা লোভাতুর কুকুর শেয়াল
পালাল সাবাড় করে, একেই তো জানতাম আমার নিজস্ব
কণ্ঠ বলে, যে-কণ্ঠে ধ্বনিত হত বারংবার অসত্য অন্যায়
ইত্যাদির বিরুদ্ধে ঝাঁঝালো প্রতিবাদ, যে-কণ্ঠে ধ্বনিত হত
কল্যাণের, প্রগতির কী সজীব জিন্দাবাদ আর স্বাধীনতা, স্বাধীনতা।
এ জন্যেই জীবনের বৈমাত্রের দ্বিপ্রহরে হলাম কংকাল।