ডাংকি
একবার এক সিংহ মৃত্যুর আগে তার শাবকদের বলে গেলো-
গাধার সাথে কখনো গাধার ভাষায় কথা বলো না। যদি বলো, তাহলে তোমরাও একদিন গাধায় পরিণত হবে।
শাবকেরা জবাব দিলো, আব্বা, আমরা গাধা চিনবো কী করে?
সিংহ বললো, দেখো – গাধা কোনো নির্দিষ্ট প্রাণীর নাম নয়। ‘গাধা’ কিছু গুণাবলির নাম। একটি বাঘও গাধা হতে পারে, যদি তার ভেতর গাধার গুণাবলি ফুটে ওঠে। আমি তোমাদেরকে গাধা চেনার পাঁচটি উপায় বলে যাচ্ছি:
এক. তোমরা জানো, জঙ্গলে প্রতিটি প্রাণীর নির্দিষ্ট বিচরণক্ষেত্র থাকে। গাধাদের তা থাকে না। গাধারা সিংহের এলাকায় ঢুকে বলবে, এ এলাকা আমার। শিয়ালের এলাকায় ঢুকে বলবে, এ এলাকাও আমার। তাই গাধার সাথে কখনো নিজ এলাকার মালিকানা নিয়ে বিবাদে জড়াবে না।
দুই. গাধা বেশিক্ষণ প্রস্রাব না করে থাকতে পারে না। সে যেখানে যাবে, সেখানেই প্রস্রাব করে আসবে। কিন্তু তুমি তার এই বহুমূত্র রোগের কোনো প্রতিবাদ করতে পারবে না। যদি করো— তাহলে সে তার প্রস্রাবের নানা ওষুধি গুণের কথা বর্ণনা করবে। আমি অনেক সিংহকে গাধার কথা বিশ্বাস করে তার প্রস্রাব পান করতে দেখেছি।
তিন. গাধা পৃথিবীর সকল প্রাণীকেই গাধা মনে করে। এমনকি গাধা তার ঈশ্বরকেও কল্পনা করে গাধা। সে মাংসাশী চিতার কাছে গিয়ে বলবে— তোমার ঘাস খাওয়া উচিত। আবার ফলভোজী বানরের কাছে গিয়ে বলবে— তোমারও ঘাস খাওয়া উচিত। একদিন এক গাধাকে আমি সাপের কাছেও ঘাস খাওয়ার উপকারিতা বর্ণনা করতে শুনেছি।
চার. প্রাণীদের মাঝে একমাত্র গাধাই যুক্তিবাদী। যেকোনো ঘটনাকে সে যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারে। ব্রহ্মাণ্ডে এমন কোনো বিষয় নেই যা ‘ডাংকি লজিক’ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। সাধারণ লজিকের সাথে ডাংকি লজিকের পার্থক্য হলো- ডাংকি লজিকে মগজের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয় লেজ। তোমরা ডাংকি লজিক থেকে সাবধান থাকবে।
পাঁচ. গাধা খুব আবেগপ্রবণ প্রাণী। আবেগের বশে সে যেকোনো কথা ও শব্দের এক হাজার অর্থ তৈরি করতে পারে। একবার খুব স্পষ্ট ভাষায় আমি একটি বক্তৃতা দিয়েছিলাম। কিন্তু গাধারা সেটি আমার ভাষায় না শুনে শুনলো নিজেদের ভাষায়, এবং বুঝলো সম্পূর্ণ ভিন্ন অর্থে। কারও বক্তব্য সুবিধাজনকভাবে অনুবাদ করতে ডাংকি ল্যাঙ্গুয়েজের জুড়ি নেই। তোমরা ডাংকি ল্যাঙ্গুয়েজ থেকেও সাবধান থাকবে।