টাইম ট্রাভেল – পরিচ্ছেদ ৪

০৪.

 রবিন থামলে মুসার দিকে তাকালেন আঙ্কেল জ্যাক। এবার তোমার কোনও ঘটনার কথা বলো।

হাত ওল্টাল মুসা। কি আর বলব? আমারগুলোও.ওদের চেয়ে ভাল কিছু না।

তারমানে তুমি কিছু বলতে চাও না?

 মাথা নাড়ল মুসা। শুধু একটা কথাই বলি, এ ভাবে মাঝে মাঝেই বিপদে পড়তে হয়, অপদস্থ হতে হয় আমাদের তিনজনকে।

হু, গম্ভীর ভঙ্গিতে মাথা দোলালেন আঙ্কেল জ্যাক। চেয়ারে বসে সামনের দিকে ঝুঁকলেন। এক এক করে তাকালেন রবিন, কিশোর ও মুসার দিকে। তাহলে তোমাদের ধারণা তোমরা বোকা হয়ে গেছ?

কোন সন্দেহ নেই আর তাতে, এক আঙুল দিয়ে গাল চুলকাল কিশোর।

বিস্কুট আর দুধ এনে সামনে রেখে গেছেন চেরি আন্টি। কিন্তু ছুঁয়েও দেখল না কিশোর কিংবা রবিন। এমনকি মুসাও খাবারের দিকে একবার তাকিয়ে সেই যে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, আর তাকাচ্ছে না। বোকা হয়ে যাওয়াতে খাবারের লোভও যেন চলে গেছে তার। চেয়ারে পিঠ খাড়া করে শক্ত হয়ে বসে আছে তিনজনে। কোলের ওপর হাত রেখে।

আসলে হয়তো বোকা নই আমরা, কিশোর বলল। কিন্তু চালাকও নই। মাথায় ঘিলু বলতে কিছু নেই আমাদের।

বোকা নই মানেটা কি? রবিন বলল। বোকাই আমরা।  

একেকটা রামছাগল, মুসা বলল। গাধা। চেহারাটা গাধার মত হলে সারাক্ষণ ব্যা-ব্যাই করতাম।

কাশি দিয়ে গলা পরিষ্কার করলেন আঙ্কেল জ্যাক। চোখের পাতা সরু করে টাইম ট্রাভেল চিন্তিত ভঙ্গিতে তাকালেন ওদের দিকে। আমাকে কি করতে বলো?

ইয়ে… বলতে গিয়ে চুপ হয়ে গেল কিশোর। দ্বিধা করতে লাগল।

শেষে রবিন বলল, তুমি একজন বুদ্ধিমান লোক, তাই না আঙ্কেল? তুমি একজন বিজ্ঞানী।

মাথা ঝাঁকালেন আঙ্কেল জ্যাক।

আর বিজ্ঞানীদের সারাক্ষণই মাথা খাটানোর কাজ করতে হয়, ঠিক?

আবার মাথা ঝাঁকালেন আঙ্কেল জ্যাক।

 এবং তুমি একজন ব্রেন স্পেশালিস্ট, তাই তো? আবার প্রশ্ন করল রবিন।

 তৃতীয়বার মাথা ঝাঁকালেন আঙ্কেল জ্যাক।

সেজন্যেই এসেছি আপনার কাছে, এতক্ষণে যেন কথা খুঁজে পেল কিশোর। কারণ আপনিই আমাদের বুদ্ধিমান বানানোর একটা উপায় বের করতে পারবেন।

আঙ্কেল, অনুরোধের সুরে বলল রবিন, সত্যিই কি আমাদের জন্যে তুমি কিছু করতে পারো না? বুদ্ধি খানিকটা বাড়িয়ে দিতে পারো না আমাদের?

চিবুক ডললেন আঙ্কেল জ্যাক। সোজা হলেন চেয়ারে।

হ্যাঁ, অবশেষে জবাব দিলেন তিনি, পারি। এমন একটা ওষুধ আমি দিতে পারি, যেটাতে মনে হচ্ছে কাজ হবে।

কি ওষুধ? একসঙ্গে চিৎকার করে উঠল তিন গোয়েন্দা।