২২.
কিশোরের হাতটা ধরার জন্যে হাত বাড়াল একজন রোবটমানব।
চিৎকার করে উঠল কিশোর, না না!
ততক্ষণে রবিনের হাত চেপে ধরেছে একটা রোবট।
কিন্তু মুসাকে ধরতে যেতেই আচমকা ঘুরে দৌড় মারল সে। চিৎকার করে বলতে লাগল, কিশোর, রবিন, পালাও?
রূপালী টেবিলগুলোর ফাঁক-ফোকর দিয়ে ছুটতে থাকল ওরা। প্রথমে কিছু বুঝতে পারল না কর্মরত রোবটরা। তারপর গাজুলের চিৎকারে তাড়া করে এল কয়েকজন।
ফিরে তাকাল কিশোর। গাজুল-মাজুল সহ আরও সাত-আটটা রোবট ওদের পিছু নিয়েছে।
প্রাণপণে ছুটতে লাগল তিন গোয়েন্দা। বেরিয়ে এল আরেকটা আয়না বসানো চকচকে হলরূমে। এত উজ্জ্বল, এত তীব্র আলো, চোখ মেলে রাখাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
কোথায় যাচ্ছি? চিৎকার করে জিজ্ঞেস করল রবিন।
জানি না! জবাব দিল কিশোর। কিছুই দেখতে পাচ্ছি না, কোথায় যাচ্ছি কি করে বলব?
অন্ধের মত হোঁচট খেয়ে পড়ল সামনের দিকে। দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে চিৎকার বেরিয়ে এল আপনাআপনি।
সাড়াশির মত কঠিন আঙুল চেপে ধরল ওকে পেছন থেকে।
ছাড়া পাওয়ার জন্যে চিৎকার-চেঁচামেচি, ধস্তাধস্তি শুরু করল সে।
কিন্তু ধরা পড়ে গেছে। রবিন আর মুসাও ছাড়া পাওয়ার জন্যে চিৎকার করছে। হাত-পা ছুঁড়ছে। লাভ নেই। রোবটমানবেরা ওদের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী।
কাছে এসে দাঁড়াল গাজুল-মাজুল।
গম্ভীর কণ্ঠে গাজুল বলল, অকারণ চেষ্টা, গোলামেরা। এখান থেকে পালিয়ে বাঁচতে আর পারবে না তোমরা কোনমতেই।
বাড়ি যাওয়া আর হবে না তোমাদের কোনদিন, হাসতে হাসতে বলল মাজুল। আর যদি হয়ও, লাল রক্ত নিয়ে যেতে পারবে না। রূপালী রক্ত নিয়ে যেতে হবে। তা-ও কোনও অপারেশনে, যদি মনিব মনে করেন তোমাদেরকে পাঠানো দরকার।
দরজার দিকে ফিরে তাকাল গাজুল। যন্ত্রহাতে দরজায় এসে দাঁড়িয়েছে সেই তিনজন রক্তবদণকারী টেকনিশিয়ান। হাত নেড়ে তাদেরকে ডেকে বলল গাজুল, এসো। বদলে দাও।
তিন গোয়েন্দাকে যারা ধরেছে তাদের উদ্দেশে বলল সে, শক্ত করে ধরে রাখো। ছাড়বে না।
দরজায় দাঁড়ানো একজন টেকনিশিয়ান বলল, এখানে না বদলে ক্লিনিং রূমেই নিয়ে এসো না। রক্ত বদলানোর পর তো ধোলাই করার জন্যে সেখানে নিতেই হবে।
কি যেন ভাবল গাজুল। তারপর বলল, ঠিক আছে, নিয়ে চলো।
আবার ক্লিনিং রূমে নিয়ে আসা হলো তিন গোয়েন্দাকে। রূপালী টেবিলে তোলা হলো। চিত করে শুইয়ে দিয়ে হাত-পা চেপে ধরা হলো।
যন্ত্রের সুইচ টিপে দিতে লাগল টেকনিশিয়ানরা। মৃদু গুঞ্জন তুলে চালু হয়ে গেল মেশিন। সবার চোখ এখন এদিকে। ক্যাটওয়াকে যারা কাজ করছিল, কাজ। থামিয়ে দিয়ে তারাও তাকিয়ে আছে।
আর…আর বোধহয় বাঁচতে পারলাম না, গুঙিয়ে উঠল মুসা। গাজুল ঠিকই বলেছে। আমরা শেষ।
ফুঁপিয়ে উঠল রবিন। কান্নার মত স্বর বেরোল গলা থেকে।
কিশোর তাকিয়ে আছে তার পাশে দাঁড়ানো রোবটমানবের হাতের যন্ত্রটার দিকে। সুচের মত জিনিসটা তার ডান হাতের ওপর নিয়ে এসেছে রোবট। হাতের শিরা খুজছে ফুটিয়ে দেয়ার জন্যে।
চামড়া স্পর্শ করল সুচ।
তীক্ষ একটা ব্যথা।
শিরার মধ্যে বিধে গেল সুচ।
শীতল আতঙ্ক যেন গ্রাস করল কিশোরকে। অবশ হয়ে এল হাত-পা। মাথার মধ্যে অদ্ভুত এক অনুভূতি। মুক্তির আর কোন উপায় নেই। কিছুই করার নেই। আর। হাল ছেড়ে দিয়ে চোখ বুজল।
ঠিক এই সময় ক্যাটওয়াকের কাছ থেকে গমগম করে উঠল একটা ভারী কণ্ঠ, কোথায়? কই? কাদের নিয়ে আসা হয়েছে?
কণ্ঠটা কেমন চেনা চেনা লাগল কিশোরের।
চোখ মেলল আবার।
ক্যাটওয়াকের দিকে তাকিয়ে কণ্ঠের মালিককে দেখেই স্থির হয়ে গেল। বুঝতে পারল কেন চেনা চেনা লাগছিল। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না।
ক্যাটওয়াকে দাঁড়িয়ে আছেন স্বয়ং ডক্টর মুন! মহাক্ষমতাধর অসাধারণ ক্ষমতাশালী সেই বিজ্ঞানী, যার সঙ্গে বহুবার মোলাকাত হয়েছে ওদের।
ডক্টর মুনকে দেখে নিশ্চিত হলো রবিন, ভিনগ্রহে নয়, পৃথিবীতেই রয়েছে ওরা, ডক্টর মুনের কোনও গোপন আস্তানায়।
তিন গোয়েন্দাকেও দেখতে পেলেন ডক্টর মুন। বিমল হাসি ফুটল তাঁর মুখে। আদেশ দিলেন, অ্যাই ছাড়ো। ছেড়ে দাও ওদের।
বিনীত ভঙ্গিতে গাজুল বলল, রক্ত বদলানো এখনও শেষ হয়নি, মালিক।
না হোক, আদেশ দিলেন: ডক্টর মুন। নিয়ে এসো ওদেরকে আমার চেম্বারে।
রবিনের দিকে ফিরে তাকিয়ে ফিসফিস করে মুসা বলল, মনে হচ্ছে বেঁচে গেলাম এ যাত্রা।
কি জানি! জবাব দিল রবিন। কিংবা হয়তো আরও বড় কোন বিপদে পড়তে যাচ্ছি। ডক্টর মুনকৈ আমরা যে পরিমাণ ভুগিয়েছি এতকাল, এবার নিশ্চয় প্রতিশোধ না নিয়ে ছাড়বেন না।
সাদা আলো জ্বলছে ডক্টর মুনের চেম্বারে। তবে ক্লিনিং রূমের মত এত উজ্জ্বল চোখ ধাঁধানো নয়, চোখে পীড়াদায়কও নয়।
ঘুরে গিয়ে মস্ত ডেস্কের ওপাশে বসলেন ডক্টর মুন। তার দুই পাশে গিয়ে দাঁড়াল দুজন বডিগার্ড। ওরা স্বাভাবিক লাল রক্তের মানুষ নাকি রোবটমানব, দেখে বোঝার উপায় নেই। গম্ভীর, ভাবলেশহীন চেহারা।
তিন গোয়েন্দাকে ধরে নিয়ে ঘরে ঢুকেছে তিনজন প্রহরী। তাদের সঙ্গে গাজুল-মাজুল।
ডেস্কের সামনে এনে দাঁড় করিয়ে দেয়া হলো গোয়েন্দাদেরকে। হাসিমুখে তাদের দুই পাশে এসে দাঁড়াল গাজুল-মাজুল।
আপনার জন্যে নতুন গোলাম নিয়ে এলাম, মালিক, মাথা নুইয়ে কুর্নিশ করে বলল গাজুল।
ভীষণ বুদ্ধিমান ওরা, যোগ করল মাজুল।
ভুরু কুঁচকে তিন গোয়েন্দার দিকে তাকিয়ে রইলেন ডক্টর মুন। কিন্তু ওরা বুদ্ধিমান হয় কি করে? ওদেরকে তো বোকা বানিয়ে দিয়েছিলাম আমি।
বুঝতে পারল না গাজুল। বোকা বানিয়ে দিয়েছিলেন?
হ্যাঁ, ডক্টর মুন বললেন। আমাদের একটা টাইম ট্র্যাভেল মেশিন নিয়ে পালিয়েছিল ওরা। নিয়ে গিয়ে লুকিয়ে রেখেছিল লেকের পানিতে। ওটাতে চড়েই কিছুদিন আগে ফিরে এসেছিল আবার।
তারপর? কৌতূহলী হয়ে জানতে চাইল গাজুল।
মগজের মান নামানোর ওষুধ দিয়ে দিলাম বোকা বানিয়ে। ফেরত পাঠিয়ে দিলাম বাড়িতে। ওরা আমার পুরানো শত্রু। আমার কাজে বার বার বাগড়া দিয়েছে। বহু ক্ষতি করেছে। মেরে ফেলা যেত, কিন্তু তার কোন প্রয়োজন মনে করলাম না। এমন একটা কিছু করে দিতে চাইলাম, যাতে আমার কোন ক্ষতি করতে না পারে আর কোনদিন। ভাবলাম, কি করলে সেটা সম্ভব? বোকা বানিয়ে দিলে। বুদ্ধি না থাকলে আমার বিরুদ্ধে লাগতে পারবে না আর কখনও।
হাসিমুখে গাজুল জানাল, শাস্তি ওদের ভালমতই হয়েছে, মালিক। স্কুলে টিচার, বন্ধু-বান্ধবরা সারাক্ষণ ওদের নিয়ে দূর-দূর ছ্যা-ছ্যা করেছে, ইয়ার্কি মেরেছে, হাসাহাসি করেছে। তবে ইদানীং সেই অবস্থাটা আর ছিল না। তবে ওদের ভয় পাওয়া শুরু করেছিল পরিচিতজনেরা। ফ্রীক ভাবতে আরম্ভ করেছিল।
তার মানে?
মগজশক্তি রসায়ন দিয়ে বুদ্ধিমান বানিয়ে ফেলেছি। এত বেশি বুদ্ধিমান হয়ে গেছে ওরা এখন, ওদের বুদ্ধিমত্তার যন্ত্রণায় টিকতে না পেরে স্কুল থেকেই বের করে দিয়েছে ওদেরকে টিচাররা। বন্ধু-বান্ধবরা ভয়ে মিশতে চায় না। খুব ভাল গোলাম হবে আপনার, মালিক।
হুঁ, চিন্তিত ভঙ্গিতে মাথা দোলালেন ডক্টর মুন। ভুল করেছ। মস্ত ভুল। স্বাভাবিক বুদ্ধি যখন ছিল এদের, তখনই এরা আমার ক্ষতি করেছে একের পর এক। আগের চেয়েও বুদ্ধি যদি বেড়ে গিয়ে থাকে তাহলে তো দানবে পরিণত হয়েছে এখন। এদের এত বুদ্ধিমান রাখা যাবে না কোনমতেই। আমার ল্যাবরেটরিই ধ্বংস করে দিয়ে বেরিয়ে যাবে কোনদিন। তবে ওষুধ খাইয়ে যখন ফেলেছই, দেখা যাক কি রকম বুদ্ধিমান ওরা হয়েছে, তারপর আবার বোকা বানিয়ে দিলেই হবে। আর স্মৃতিশক্তিটাও ঠিক আছে কিনা দেখতে হবে।…কিশোর পাশা, বলো তো আমি কে?
আপনি আমাদের মালিক, নির্বিকার ভঙ্গিতে জবাব দিল কিশোর।
মুসা, রবিন, তোমরা বলো তো আমি কে?
আপনি গাজুল-মাজুল-হাজুল-বাজুল সবার মালিক, জবাব দিল মুসা।
রবিন বলল, আপনি রোবটমানব টাকরাভুম ওরফে গাকরা মিয়া।
রাগ ঝিলিক দিয়ে উঠল ডক্টর মুনের চোখে। কোনমতে দমন করলেন। ঝট করে তাকালেন একবার গাজুল-মাজুলের দিকে। কুঁকড়ে গেল ওরা।
গাজুল বলল, ওরা বোকা সাজার ভান করছে। কিন্তু গলায় জোর নেই তার।
মাজুল বলল, মালিক, ওদের অংক দিয়ে দেখুন। মুহূর্তে করে ফেলবে। যত কঠিনই দেন না কেন।
আবার কিশোরের দিকে তাকালেন ডক্টর মুন। দুই আঙুল তুলল। বল তো এখানে কটা আঙুল?
নির্দ্বিধায় জবাব দিল কিশোর, সাড়ে দশটা।
মুসাকে জিজ্ঞেস করলেন ডক্টর মুন, তুমি বলো, দুই আর তিন যোগ করলে কত হয়।
বিশ।
হাঁদারাম! ধমকে উঠল রবিন। দুই আর তিন যোগ করলে বিশ হয় নাকি? একুশ হয়, একুশ একুশ।
আরে কি শুরু করলে কি তোমরা? কিশোর বলল। আমরা যে বুদ্ধিমান হয়ে গেছি, এটা বুঝিয়ে দিতে চাও নাকি? তাহলে তো ধরে গোলাম বানাবে।
তাড়াতাড়ি জিভ কাটল রবিন, না না, তা কেন বোঝাব। এই মুসা, দুইয়ে আর তিনে এগারো হয়, বুঝলে? বারো বললেও অবশ্য ভুল হবে না।
হা-হা করে হাসল কিশোর। গাধাটা কি বলেরে!
গাধা! গাধা! করে সমানে চেঁচাতে লাগল মুসা আর রবিন। পরস্পরের দিকে তাকিয়ে হাবার মত হি-হি করে হাসতে লাগল।
যথেষ্ট হয়েছে। চিৎকার করে উঠলেন ডক্টর মুন। থামো!
রাগত চোখে গাজুলের দিকে অকালেন আবার তিনি। ঘামতে আরম্ভ করেছে গাজুল।
কর্কশ কণ্ঠে ডক্টর মুন বললেন, কি, কোথায় বুদ্ধিমান? আগের চেয়ে তো হাদা হয়েছে আরও। এত বোকা তো আমিও বানাইনি। বললাম না মগজশক্তি রসায়ন লাল রক্তে কাজ করে না।
হাত কচলে গাজুল বলল, কিন্তু মালিক, আমি সত্যি বলছি, বুদ্ধিমত্তার জন্যে ওদেরকে স্কুল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।
তাহলে বোকা হলো কি করে? ভুরু নাচালেন ডক্টর মুন।
ধীরে ধীরে পেছনে সরে যেতে লাগল মাজুল।
ধমকে উঠলেন ডক্টর মুন, যাচ্ছ কোথায়?
পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে গেল মাজুল।
কঠিন কণ্ঠে গাজুল-মাজুলের উদ্দেশে বললেন ডক্টর মুন, নিশ্চয় রিঅ্যাকশন হয়েছে ওষুধে। আমি নিশ্চিত, লাল, রক্তে কাজ করে না এই ওষুধ। আর করলেও বেশিদিন কার্যকর থাকে না। গর্জে উঠলেন হঠাৎ তোমাদের পাঠানো হয়েছে স্বাভাবিক মগজের বুদ্ধিমান মানুষকে ধরে আনতে। এ কাকে নিয়ে এলে তোমরা? কে বলেছিল আমি নিজে হাঁদা বানিয়ে রাখা কতগুলো ছেলেকে ওষুধ খাইয়ে বুদ্ধিমান বানিয়ে ধরে আনতে? তোমরা আমাকে ঠকিয়েছ!
ঠকঠক করে কাঁপতে লাগল গাজুল আর মাজুল।
করজোড়ে বলল গাজুল, ভুল হয়ে গেছে, মালিক। এবারের মত মাফ করে দিন।
ডক্টর মুন বললেন, ভাল করেই জানো তোমরা এখানকার নিয়ম। এখানে ভুলের কোন ক্ষমা নেই। বিজ্ঞান গবেষণায় সামান্যতম ভূলও বিরাট ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠে। তোমাদেরকে বাঁচিয়ে রাখলে ভবিষ্যতে আরও বড় কোন ভুল করে বসবে। আমার ল্যাবরেটরিতে এ ধরনের রিস্ক আমি নিতে পারি না। কষ্ট করার ভয়ে হাতের কাছে পাওয়া বোকাদেরকে ওষুধ খাইয়ে যারা বুদ্ধিমান বানানোর চেষ্টা করে, তাদের মত অলসদের দিয়ে আমার কোন উপকার হবে না।
ডেস্কের ড্রয়ারের দিকে ডান হাতটা নেমে গেল ডক্টর মুনের।
কি ঘটতে যাচ্ছে বুঝে গিয়ে চিৎকার করে উঠল গাজুল, না না, মালিক, আর কোনদিন ভুল হবে না…
তার কথা শেষ হওয়ার আগেই হাতটা বেরিয়ে এল আবার ডক্টর মুনের। হাতে একটা বড় পিস্তলের মত অস্ত্র। গাজুলের দিকে তাক করে টিপে দিলেন ট্রিগার। নলের মুখ থেকে বেরিয়ে এল একটা সাদা আলোকরশ্মি।
মুহূর্তে নেই হয়ে গেল গাজুল। সে যেখানে ছিল সেখানে টেনিস বলের সমান একটা রূপালী ধোঁয়ার কুণ্ডলী তৈরি হলো। ধীরে ধীরে উঠে যেতে লাগল ছাতের দিকে।
ঘুরে দরজার দিকে দৌড় মারল মাজুল।
কিন্তু দুই পা-ও যেতে পারল না। সাদা আলোকরশ্মি এসে লাগল তার পিঠে। চোখের পলকে গাজুলের অবস্থা হলো তারও।
হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইল তিন গোয়েন্দা। ডক্টর মুন বাদে সবার চোখে আতঙ্ক দেখতে পেল। অস্ত্রটা আবার ড্রয়ারে রেখে দিলেন ডক্টর মুন। প্রহরীদের বললেন, নিয়ে যাও এদের। টেকনিশিয়ানদের বলো, রক্ত বদলাক, কিংবা যত খুশি পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাক এদের ওপর। যদি কাজের উপযুক্ত করতে পারে, ভালো, নয়তো গায়েব করে দিক। হাবা দিয়ে আমাদের কোন কাজ হবে না। ওদের বাড়িতে ফেরত পাঠানোরও আর কোন যুক্তি নেই। যাও, নিয়ে যাও।