২১.
দেয়ালে হেলান দিয়ে ধাতব মেঝেতে বসে থাকল ওরা। চোখে শূন্য দৃষ্টি।
খাঁচার দরজার কাছে এসে দাঁড়াল গাজুল আর মাজুল।
পৌঁছে গেছি আমরা, গাজুল জানাল।
এমন ভঙ্গিতে কিশোর, মুসা আর রবিন তিনজনেই মাথা আঁকাতে লাগল যেন সদ্য ঘুম থেকে উঠেছে।
কখন নামলাম? মুসার প্রশ্ন। কোন শব্দ তো শুনলাম না। ঝাঁকুনি তো লাগল না।
কতক্ষণ লাগল আসতে? রবিন অবাক। কখন রওনা হয়েছি, মনে করতে পারছি না।
হাতঘড়ির দিকে তাকাল কিশোর। এ জিনিসটা দিয়ে সম্ভবত সময় মাপা যায়। কিন্তু কি ভাবে মাপতে হয়, ভুলে গেছি।
খপ করে কিশোরের হাত চেপে ধরল রবিন। চোখের সামনে তুলে ধরে বলল, একটা বড় কাটা দেখা যাচ্ছে। আরেকটা ছোট কাটা। কোনটা দিয়ে কি হয়, বলো তো?
হেই, বাজে বোকো না! ধমকে উঠল গাজুল। তোমাদের বকবকানি শোনার সময় আমাদের নেই। মনে করেছে তোমাদের চালাকি আমরা ধরতে পারিনি। খুব ভালমতই পেরেছি। আমরা জানি কতখানি বুদ্ধিমান তোমরা।
খাঁচার একটা শিক চেপে ধরল গাজুল। তালা খোলার শব্দ হলো। এক ধরনের গুঞ্জন। তারপর পিছলে সরে গেল কয়েকটা শিক লাগানো একটা ফ্রেম। খুলে গেল দরজা।
জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলছে গাজুল আর মাজুল।
আমি খুব উত্তেজিত বোধ করছি, মাজুল বলল।
আমিও করছি, গাজুল বলল। আর উত্তেজিত হবই না বা কেন। এত চমৎকার তিনটে গোলাম নিয়ে এসেছি মনিবের জন্যে। তিনি ভীষণ খুশি হবেন।
উত্তেজিত আমরাও হচ্ছি, কিশোর বলল। মনিব দেখব। কখনও তো দেখিনি। তা ভাই মনিব জিনিসটা কোন ধরনের জীব? শিং আছে? লেজ কয়টা?
রবিন বলল, তাই তো! মনিব দেখব। বাচ্চা মেয়ের মত হাততালি দিতে লাগল, কি মজা! কি মজা! মুসার দিকে তাকাল। মুসা, তোমার আনন্দ লাগছে না?
না, ভয়ে ভয়ে বলল মুসা। যদি কামড়ে দেয়?
চুপ! চুপ করো! গর্জে উঠল গাজুল। বেরোও। এসো আমাদের সঙ্গে। আমাদের প্লেন ল্যান্ড করেছে মনিবের গম্বুজের ভেতরে। বেরোতে বেশি দেরি করলে মনি ভীষণ রেগে যাবেন।
ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করল মুসা, গম্বুজের ভেতরে। বলেন কি! ঢুকল কি করে?
সে গেলেই দেখতে পাবে, গর্বের সঙ্গে জবাব দিল গাজুল। পরক্ষণে বদলে গেল মুখের ভাব। ধমক দিয়ে বলল, খবরদার, বেশি কথা বলবে না। তোমাদের মনে রাখা উচিত, তোমরা গোলাম। কোন প্রশ্ন করবে না। কৌতূহল দেখাবে না। কথা বলতে যখন বলা হবে শুধু তখনই বলবে। মনে থাকবে?
নাহ্, থাকবে না, জোরে নিঃশ্বাস ফেলে জবাব দিল কিশোর। কি জানি কি হয়ে গেছে আমাদের, কিছুই মনে থাকে না। যাকগে, মন নিয়ে অত চিন্তার কিছু নেই। তা আমাদের কাজটা কি? কি কি গোলামি করতে হবে?
মনিবের ব্যক্তিগত গোলাম হিসেবে তোমাদের কাজ হবে তার ল্যাবরেটরিতে থাকা, সারাক্ষণ সহযোগিতা করা। যেহেতু তোমরা অতিবুদ্ধিমান গোলাম, তোমরা তাঁর সমস্ত অংক করে দেবে, গাজুল বলল। কঠিন কঠিন সব ক্যালকুলেশন। অবশ্য সবই কম্পিউটারে। তোমরা…
আতঙ্কে চোখ বড় বড় হয়ে গেল কিশোরের। কম্পিউটার! অংক! এগুলো আবার কি জিনিস?
তাকে ধমক লাগাল রবিন, গাধা নাকি! অংক কি জিনিস বোঝো না? নম্বর, নম্বর। একগাদা নম্বর।
নম্বর না, সংখ্যার হিসেব, অধৈর্য ভঙ্গিতে চিৎকার করে উঠল গাজুল।
কিন্তু নম্বরের হিসেব তো আমরা কিছুই জানি না, বোকার মত রবিন আর মুসার দিকে তাকাতে লাগল কিশোর। কি ভাবে কি করব, বলো তো? শেষে আমাদেরকে তাড়িয়ে দেবেন মনিব…।
উঁহু, শিং দিয়ে গুতো মারবে, শুধরে দিল তাকে মুসা। গাজুল-মাজুল যে ভাবে মনিবের নামে ভয় পাচ্ছে, আমার মনে হয় তার শিংগুলো খুব চোখা আর বড় বড়…
এই থামবে তোমরা! চিৎকার করে বলল মাজুল। গাজুলের দিকে ফিরল। ঘটনাটা কি বলো তো ওদের? এমন করছে কেন?
ও কিছু না, গাজুল জবাব দিল, ভয় পেয়েছে। ওদের কথায় কান দিও না। আমরা জানি ওরা কতখানি বুদ্ধিমান। চলো চলো, মনিবের সঙ্গে দেখাটা সেরে ফেলি।
হ্যাঁ, চলো।
তিন গোয়েন্দার দিকে তাকাল গাজুল। কি হলো, হাঁ করে দেখছ কি? বেরোতে বললাম না? নাকি লেজারের শক দেয়া লাগবে।
নির্বোধের মত প্রশ্ন করল কিশোর, সেটা আবার কি জিনিস? শিঙের চেয়ে খারাপ?
হতাশ ভঙ্গিতে মাথা নাড়ল মাজুল। নাহ, মনে হচ্ছে ধরে প্রথমে ক্লিনিং রূমে নিয়ে যেতে হবে এগুলোকে। লাল রক্তের ওপর আর আস্থা রাখতে পারছি না আমি।
তবে কি নীল রক্তও আছে? বেফাস প্রশ্ন করে ফেলল যেন কিশোর।
নীল নেই, তবে রূপালী রক্ত আছে। তোমাদের লাল রক্তের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষমতাশালী, নষ্ট প্রায় হয়ই না, আর রাসায়নিক পদার্থ পরিবহনের ক্ষমতাও লাল রক্তের চেয়ে অনেক অনেক বেশি। সত্যিই যদি তোমরা জান না করে থাকো, তোমাদের বুদ্ধি কমে গিয়ে থাকে, লাল রক্ত সব ফেলে দিয়ে দেহে রূপালী রক্ত ভরলেই আবার সব ঠিক হয়ে যাবে। নাও, চলো এখন।
গোলকযান থেকে ওদেরকে বের করে লম্বা একটা রূপালী হলওয়েতে নিয়ে এল গাজুল-মাজুল। ঘরের সব কিছুই যেন ক্রোম আর আয়নায় তৈরি। গোলকনটার মতই এখানেও সব কিছু চকচকে, যেন রূপালী আগুনের আভায় জ্বলছে।
হাঁটার সময় পায়ের শব্দ জোরাল হয়ে কানে বাজে। দ্রুত হাঁটছে গাজুল আর মাজুল। ওদের সঙ্গে সমতা রাখার জন্যে রীতিমত দৌড়াতে হলো তিন গোয়েন্দাকে।
চকচকে একটা ডাবল ডোরের সামনে এসে দাঁড়াল ওরা। দাঁড়াতেই আপনাআপনি যেন পিছলে নিঃশব্দে খুলে গেল দরজার পাল্লা। গাজুল-মাজুলের পিছু পিছু রূপালী একটা বড় বাক্সের মধ্যে এসে ঢুকল গোয়েন্দারা।
এই এলিভেটর আমাদেরকে ক্লিনিং রূমে নিয়ে যাবে, গাজুল বলল। মনে রাখবে, তোমরা গোলাম। কারও সঙ্গে কথা বলবে না তোমরা।
পেছনে নিঃশব্দে বন্ধ হয়ে গেল দরজা। ওপর দিকে ওটার টান অনুভব করল কিশোর। বুঝতে পারল ওপরে উঠছে এলিভেটর।
এত বুদ্ধিমান তিনটে ছেলেকে গোলাম হিসেবে ধরে এনেছি দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না, খুশি খুশি গলায় গাজুলকে বলল মাজুল। মনিব আমাদের ওপর খুব খুশি হবেন। সবাই হিংসে করবে আমাদের। তাই না?
তা করবে, জবাব দিল গাজুল। ঝামেলা পাকানোর ওস্তাদ ওরা, বোঝ যাচ্ছে, তবে গোলাম হিসেবে খারাপ হবে না।
থামল এলিভেটর। দরজা খুলে গেল। পিঠে ধাক্কা তো মেরে নামতে আদেশ করা হলো তিন গোয়েন্দাকে। আরও বেশি উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত একটা হলওয়েতে নামল ওরা। কাঁচের মত চকচকে মসৃণ দেয়াল আর মেঝে থেকে আলোর আভা বেরোচ্ছে। আয়নার তৈরি ছাত। এত উজ্জ্বল, তাকানো যায় না সেদিকে। আপনা থেকেই চোখের পাতা বুজে আসে।
রবিনের শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে গেল ভয়ের শীল শিহরণ। আতঙ্কিত হয়ে পড়ল। হঠাৎ করেই ভাবনাটা চলে এল মাথায়, অন্য কোন গ্রহে নিয়ে আসা হয়নি তো ওদের? চারপাশের পরিবেশ তো বটেই, গাজুল-মাজুলের আচরণও সন্দেহজনক। ওদের কথাবার্তা ঠিক স্বাভাবিক মানুষের মত নয়। স্বাভাবিক মানুষের মত চিন্তা-ভাবনাও করে না ওরা। তারমানে অন্য কোন গ্রহেই ওদেরকে নিয়ে আসা হয়েছে! কিডন্যাপ করা হয়েছে ওদেরকে। ভিনগ্রহবাসীদের রাজার গোলাম বানানোর জন্যে।
মুসা কিছু ভাবতে পারছে না। আতঙ্কে চিন্তাশক্তিই যেন ভোতা হয়ে গেছে ওর।
আর লম্বা, চকচকে হলওয়ে ধরে হাঁটার সময় কিশোরের মনে হচ্ছে, বাস্তবে নেই ওরা, স্বপ্নের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু সে জানে, এটা বাস্তব। মুসা আর রবিনের চেয়ে কম ভয় পাচ্ছে না সে।
হল পার হয়ে এসে মস্ত একটা ছড়ানো জায়গা। চারকোনা বাক্সের মত অসংখ্য ছোট ছোট ঘর। কাঁচের বাক্সের মত। তার ভেতরে গাজুল-মাজুলের মত ছোট ঘোট মানুষেরা শুয়ে আছে। যেন মানুষ বানানোর কারখানা এটা।
চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে দেখছে তিন গোয়েন্দা। হাঁ হয়ে ঝুলে পড়েছে মুসার নিচের চোয়াল। বাক্সগুলোর উল্টো দিকের মস্ত দেয়ালের একটা দরজা নিঃশব্দে খুলে গেল। বেরিয়ে এল একজন মানুষ। যান্ত্রিক কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল, এই রোবটগুলোকে আনলে কোত্থেকে? এদের জন্ম তো এখানে হয়েছে বলে মনে হয় না।
না, এরা রোবট নয়, মানুষ, জবাব দিল গাজুল।
অ! বিড়বিড় করল লোকটা।
কিন্তু মানুষ আনতে গেলে কেন? জিজ্ঞেস করল আরেকটা লোক। জ্বালাবে তো। জালিয়ে মারবে।
জ্বালানোর কারণটা বন্ধ করে নিলেই হবে, গাজুল বলল। তখন গোলাম হিসেবে এদের তুলনা হবে না। তাড়াতাড়ি করা দরকার। অপেক্ষা করতে করতে মনিব শেষে খেপে যাবেন।
আরেকটা ওরকম বাক্সওয়ালা ঘর পেরিয়ে এল ওরা। এটার মেঝে থেকে ছাত পর্যন্ত বোঝাই কাঁচের বাক্স। সবগুলো মানবশিতে ভর্তি। যেন ইনকিউবেটরে রাখা ডিম ফুটে মুরগীর বাচ্চা বেরোনোর মত করে জন্ম দেয়া হয়েছে এই শিশুদের।
দূর থেকে অদ্ভুত বাজনার শব্দ ভেসে এল। বৈদ্যুতিক করাত দিয়ে কাঠ চেরাই করার সঙ্গে মৌমাছির গুঞ্জন মিশিয়ে দিলে যে রকম শুনতে লাগবে, শব্দটা অনেকটা সেই রকম। একঘেয়ে। শুনতে শুনতে কেমন যেন ঝিম ধরে আসে।
এই যে এটাই, একটা বিশাল ঘর দেখিয়ে বলল গাজুল। এসে গেছি ক্লিনিং রূমের কাছে। এখানেই তোমাদেরকে ধোলাই করা হবে। ডানে ঘোররা।
থেমে গেল কিশোর। ডানে-বাঁয়ে তাকাতে লাগল। ডানদিকটা কোন দিকে? বুঝতে পারছি না তো। ডান কোনদিকে হয়?
তাই তো! হাবার মত চারপাশে তাকাতে লাগল মুসা। ডান কোনটা?
হাত তুলে দুদিকে দেখিয়ে মুসাকে বোঝাতে চাইল রবিন, একবার এদিকে ডান। একবার এদিকে ডান। চতুর্দিকই ডান দিক। কিন্তু কোনদিকে যাব কিভাবে মনে রাখব? কোনদিকে যাচ্ছি, সেটা মনে রাখা তো আরও কঠিন।
থামো! চিৎকার করে উঠল গাজুল। এ সব বদমাশি বন্ধ করো! বোকামির ভান করে এখনও ফাঁকি দেবার চেষ্টা। ভেবেছ আমি কিছু বুঝতে পারছি না, না? এসো, এদিক দিয়ে এসো।
বড়, উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত একটা ঘরে ওদেরকে ঠেলে দিল সে। বড় বড় রূপালী রঙের ধাতব টেবিল সাজানো রয়েছে ঘরটাতে। দেয়াল ঘেঁষে বসানো অদ্ভুত সব ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করছে টেকনিশিয়ানরা।
দেয়ালের সাইজ দেখে মনে হয় মাইলখানেক লম্বা। আয়না বসানো ছাতের কাছাকাছি বেরিয়ে থাকা ঝোলা বারান্দার মত দেখতে ক্যাটওয়াকে চলাফেরা করছে টেকনিশয়ানরা। ওখানেও যন্ত্রপাতি বসানো। নানা ধরনের শব্দ বেরোচ্ছে ওগুলো থেকে। তবে কোনটাই তেমন উচ্চকিত কিংবা জোরাল নয়। কানে পীড়া দেয় না।
তার নিজের চেয়ে লম্বা আরেকজন লোককে হাতের ইশারায় ডাক দিল। গাজুল। লোকটা কাছে এলে বিজাতীয় ভাষায় তাকে কি যেন বলতে লাগল সে। এক বর্ণও বুঝতে পারল না তিন গোয়েন্দা।
কথা শেষ হলে ওদের দিকে ফিরে তাকাল সে। নতুন গোলামদের দেখার জন্যে অপেক্ষা করে আছেন মনিব। প্রথমে তোমাদের ভেতরের যন্ত্রপাতি সব ধোলাই করে সাফ করা হবে। তবে প্রথমেই সেটা করতে গেলে মারা যেতে পারো তোমরা, তাই দেহের সমস্ত লাল রক্ত বের করে ফেলে রূপালী রক্ত ভরতে হবে আগে, আমাদের মত। রূপালী রক্ত ভীষণ টেকসই। যত ধোলাইই করা হোক না কেন, মরবে না তখন আর। বুদ্ধিতেও কোন রকম গোলমাল যদি থেকে থাকে, সব ঠিক হয়ে যাবে।
আবার লম্বা লোকটার দিকে ফিরে তাকিয়ে কি যেন বলল গাজুল।
দেয়ালের দিকে ফিরে তিনজন লোককে ডেকে কথা বলল লম্বা লোকটা। অদ্ভুত সেই ভাষার এক বর্ণও বুঝতে পারল না তিন গোয়েন্দা। গাট্টাগোট্টা তিনজন লোক এগিয়ে এল। হাতে তিনটে কিম্ভুত যন্ত্র। প্রতিটি যন্ত্র থেকে একটা করে মোটা নল বেরিয়ে আছে। নলের মাথায় চোখা সুচের মত জিনিস। সেগুলো গোয়েন্দাদের দিকে বাড়িয়ে দিল ওরা।
কি-কি-কি করছেন আপনারা! চিৎকার করে উঠল কিশোর।
ভয় নেই, ডান হাতটা বাড়াও তো, গাজুল বলল। একটুও ব্যথা পাবে না। সুচের মাথায় ব্যথানিরোধক লাগানো আছে। এক দিক দিয়ে তোমাদের লাল রক্ত বেরোতে থাকবে, আরেক দিক দিয়ে রূপালী রক্ত ঢুকবে। দেখবে, দুনিয়াটাই পাল্টে গেছে তখন। খুব আরাম পাবে। নাও, হাতটা বাড়াও। তাড়াতাড়ি করো। মনিব অপেক্ষা করছেন।
মুসা আর রবিনের দিকে তাকাল কিশোর। ওদের চোখেও আতঙ্ক।
কিশোর বলল, তারমানে…তারমানে আপনাদের দেহেও রূপালী রক্ত?
হেসে মাথা ঝাঁকাল গাজুল। হ্যাঁ। আমাদের দেহে আর যন্ত্রপাতিতে আরও কিছু পরিবর্তন আছে, যেগুলো তোমাদের নেই। আমাদের মগজটাও অন্য রকম, তোমাদের মত না।
কোনও ধরনের রোবট না তো? কথাটা মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল রবিনের।
মাথা ঝাঁকাল গাজুল, তা বলতে পারো। রোবটমানব। তবে রোবট হয়ে অসুবিধে নেই। মানুষ হওয়ার চেয়ে রোবট হওয়া অনেক শান্তির। কথা অনেক হলো। নাও, দেখি, ডান হাতটা বাড়াও তো এখন। আধঘণ্টার মধ্যেই দুঃখ-কষ্ট, বাড়ির জন্যে মন কেমন করা-কোন কিছুই থাকবে না আর তোমাদের।