জোয়ান

জোয়ান

 সে প্রায় পাঁচশো বছর আগেকার কথা। ফরাসি জাতির তখন বড়ই দুঃখের দিন! দেশের রাজা হলেন পাগল—আর অপদার্থ রাজপুত্র সারাদিন আমোদেই মত্ত। দেশের মধ্যে কোথাও শান্তি নেই, শৃঙ্খলা নেই-চারিদিকে কেবল দলাদলি আর যুদ্ধবিবাদ। ঘরের শত্রু দেশের লোক, তার উপর বাইরের শত্রু ইংলণ্ডের রাজা। দেশসুদ্ধ সবাই দলাদলি নিয়ে ব্যস্ত, সেই সুযোগে ইংরাজরাজ দলবলসুদ্ধ ফ্রান্সের মধ্যে ঢুকে একধার থেকে দেশটা দখল করতে আরম্ভ করেছেন। তাঁকে বাধা দিবার কেউ নাই। এমনই দেশের দুদিন।

 ফ্রান্সের এক নগণ্য গ্রামের সামান্য এক কৃষকের মেয়ে, তার নাম জোয়ান। সমস্ত দেশের দুঃখ যেন এই মেয়েটির প্রাণে এসে বেজেছিল। ফ্রান্সের লোকজন, ফ্রান্সের? নদী, ফ্রান্সের ঘরবাড়ি সব যেন তার আপনার জিনিস ছিল। ফরাসি বীরদের আশ্চর্য কাহিনী শুনতে শুনতে তার উৎসাহ আগুন হয়ে জ্বলে উঠত, আর ফরাসিদের দুঃখের কথা ভাবতে ভাবতে তার চোখের জল আর ফুরাত না। ফ্রান্সকে সে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসত। আর ভালোবাসত তার অপনার গ্রামটিকে। সেই মিউজ নদীর ধারে। ছোট্টা ডমরমি গ্রামটি, তার গির্জার গায়ে কত সাধু ‘সেইণ্ট’, কত মহাপুরুষের পাথরমূর্তি। সেখানে সারাদিন গির্জার জানলা দিয়ে রঙিন আলো বাইরে আসে। সেখানে বুড়ো ওক গাছ আছে, আর দেবতার কুয়ো আছে, তাদের সম্বন্ধে কত আশ্চর্য গল্প লোকের কাছে শোনা যায়। জোয়ানের কাছে এ-সমস্তই সুন্দর আর সমস্তই সত্যি বলে মনে হত। সে অবাক হয়ে গির্জার কাছে বাগানে এসে বসে থাকত, আর ভাবত কে যেন তাকে ডাকছে। দেশের দুঃখে সে যখন কাঁদত তখন কে যেন তাকে বলত, ‘ভয় নাই, জোয়ান। তোমার এ দুঃখ আর থাকবে না।’ জোয়ন চেয়ে দেখত কোথাও কেউ নাই, খালি সেট মাইকেলের ঝকঝকে সুন্দর মূর্তিটি যেন তার দিকে করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। মাঝে মাঝে কারা যেন আলোর পোশাক পরে তার কাছ দিয়ে চলে যেত। জোয়ান কিছু বুঝত না, কেবল আনন্দে তার সমস্ত গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠত, তার দুচোখ বেয়ে দরদর করে জল পড়ত। এমনি করে কতদিন যায়, একদিন হঠাৎ সে শুনল কে যেন তার নাম ধরে ভাকছে। অতি মধুর অতি সুন্দর গলায় কে যেন বলছে, ‘জোয়ান। দুঃখিনী জোয়ান। ঈশ্বরের প্রিয় কন্যা জোয়ান। তুমি ওঠো। তোমার দেশকে বাঁচাও; রাজপুত্র আমোদেবিলাসে ডুবে আছেন, তাঁকে উৎসাহ দাও; সৈন্যদের মনে নতুন সাহস জাগিয়ে তোল। রাজমুকুট রাজাকে ফিরিয়ে এনে দাও।’ জোয়ান স্তব্ধ হয়ে সব শুনতে লাগল। সে যেন সত্যি সত্যিই দেখল সে আর সেই সামান্য কৃষকের মেয়ে নয়। তার মনে অদ্ভুত সাহস আর শক্তি এসেছে। সে যেন স্পষ্ট দেখতে পেল যে ফ্রান্সের সৈন্য আবার বিপুল তেজে যুদ্ধ করছে, আর সে নিজে অস্ত্র ও পতাকা নিয়ে তাদের আগে আগে চলেছে। এ কী অদ্ভুত কথা। সামান্য চাষার মেয়ে, সে না জানে লেখাপড়া, না জানে সংসারের কিছু, তার উপর একি অসম্ভব আদেশ! কিন্তু জোয়ানের মনে আর কোনো সন্দেহ হল না। সে সকলকে বলল, “আমায় রাজার কাছে নিয়ে চল।” এ কথা যে শোনে সেই হাসে, সেই বলে, “মেয়েটা পাগল।” তার বাবা বললেন, “মেয়েটার বড়ো সাহস বেড়েছে, কোনদিন বিপদ ঘটাবে দেখছি।” গ্রামের যে সর্দার সে বলল, “মেয়েটাকে ঘরে নিয়ে বন্ধ করে রাখ।” গির্জার যে বুড়ো পদরি সেও এসে জোয়ানকে গালাগালি দিয়ে শাসিয়ে গেল। কিন্তু জোয়ান তবু তার সেই এক কথাই বলে, “আমি রাজার কাছে যাব।” যাহোক শেষে জোয়ানের কথাই ঠিক হল। ছদ্মবেশে গ্রাম থেকে বেরিয়ে, কত বাধা বিপদের ভিতর দিয়ে প্রায় আড়াইশো মাইল পথ পার হয়ে একদিন সে সত্যি সত্যিই রাজদরবারে গিয়ে হাজির হল। সেখানে গিয়ে সে রাজার কাছে নিজের পরিচয় দিয়ে বলল, “আমি চাষার মেয়ে জোয়ান। ভগবান আমায় পাঠিয়েছেন শুধু এই কথা বলবার জন্য যে, রীমস নগর জয় করে আবার তুমি রাজা হবে।” পাড়াগেঁয়ে চাষার মেয়ে, তার মুখে এমন কথা শুনে সভাসুদ্ধ সকলে হেসে অস্থির। কিন্তু রাজার মুখে হাসি নেই—তিনি জোয়ানের শান্ত মুখের দিকে চেয়ে তার কথা শুনছেন আর তার মনে হচ্ছে—এ মেয়ে বড়ো সামান্য মেয়ে নয়। এ যা বলছে তা সত্যি হবে। তখনই হুকুম হল, “সৈন্যেরা সব প্রস্তুত হও, আবার যুদ্ধে যেতে হবে। ঈশ্বরের দৃত জোয়ান তোমাদের সেনাপতি হবেন।”

 তার পর মহা উৎসাহে সব ফিরে চলল। যেদিকে ইংরাজ সৈন্য গ্রাম নগর সব দখল করে পথঘাট অগিলিয়ে আছে সেইদিকে সবাই চলল। ঝকঝকে সাদা বর্ম পরে যোদ্ধার বেশে চাষার মেয়ে তাদের আগে আগে চলেছে। তার হাতে সাদা নিশান, তার উপর সোনালি কাজ করা যীশুখৃস্টের মূর্তি। চারিদিকের গ্রামবাসীরা এই আশ্চর্য দৃশ্য দেখবার জন্য ছুটে এল—তারা জোয়ানকে ঘিরে আনন্দে কোলাহল করে বলতে লাগল, “দেবতার মেয়ে জোয়ন। দেবতার মেয়ে জোয়ান।” এমনি করে সকলে মিলে অলেয়াঁ শহরে ইংরাজের শিবিরের সামনে উপস্থিত হল। সেইখানে এসে জোয়ান ইংরাজের কাছে এই খবর পাঠাল, “তোমরা আমার কথা শোনো। নগরের চাবি আমার কাছে দিয়ে তোমরা এ শহর ছেড়ে চলে যাও, এ দেশ ছেড়ে তোমাদের দেশে ফিরে যাও। যদি না যাও তবে আমি তোমাদের দুর্গ ভেদ করে যাব অরি চারিদিক এমন তোলপাড় করে তুলব যে হাজার বছর কেউ এ দেশে তেমন কাণ্ড দেখে নি।” ইংরাজ হেসে বললেন, “চাষার মেয়ে, চাষবাস গোরুবাছুর নিয়ে থাক।” কিন্তু জোয়ান তার দলবলসুদ্ধ যখন ইংরাজি শিবির আক্রমণ করলেন, তখন তাঁর অদ্ভুত উজ্জ্বল মুর্তি দেখে ইংরাজের সাহস ও বুদ্ধিব সব যেন আড়ষ্ট হয়ে গেল। কে-বা তখন যুদ্ধ করে, কে-বা ফরাসি সৈন্যের সামনে দাঁড়ায়, দু-একবার মাত্র আক্রমণের বেগ সহ্য করে ইংরাজ সৈন্য ছত্রভঙ্গ হয়ে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল। এক সপ্তাহ মধ্যেই অর্লেয়াঁ শহর উদ্ধার হয়ে গেল। এই সংবাদ যখন দেশময় ছড়িয়ে পড়ল তখন ফরাসিদের মনে কী যে উৎসাহের আগুন জ্বলে উঠল, তার আর বর্ণনা হয় না।

 কিন্তু ফ্রান্সের যাঁরা সেনাপতি ছিলেন, তাঁদের হিংসুকে মনগুলো হিংসায় জ্বলতে লাগল। তারা এতদিন যা করতে পারলেন না, একটা কোথাকার পাড়াগেঁয়ে চাষার মেয়ে কিনা তাই করে দিল। তাঁরা ভিতরে ভিতরে নানারকম শত্রুতা করে জোয়ানের কাজে বাধা দিতে লাগলেন। কিন্তু তারা শত্রুতা করে আর কি করবেন-সৈন্যেরা তখন জোয়ানকেই মানে, দেশের লোক জোয়ানের কথাই শোনে, জোয়ানকে তারা দেবতার মতো ভক্তি করে। এমনি করে জোয়ান গ্রামের পর গ্রাম, শহরের পর শহর উদ্ধার করতে করতে তাঁর সেই পুরানো ডমরেমি গ্রামের কাছে এসে পড়লেন। গ্রামের লোকেরা তখন দল বেঁধে তাদের জোয়ানকে দেখতে চলল। তারা দেখল, ফ্রান্সের সৈন্য আবার উৎসাহ করে যুদ্ধে চলেছে, আবার ফ্রান্সের গৌরবে তাদের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে আর তাদের আগে আগে রাজার সঙ্গে শ্বেত পতাকা নিয়ে আলোর মতো উজ্জ্বল পোশাকে চলেছেন চাষার মেয়ে জোয়ান। যারা আগে জোয়ানকে ঠাট্টা করেছিল, বাধা দিয়েছিল, শাসন করতে চেয়েছিল, তারা আজ গর্ব করে বলতে লাগল, “এই তো আমাদের জোয়ান—আমাদের গ্রামের মেয়ে।” আর জোয়ানের বাবা, সেই বৃদ্ধ চাষী যে তার মেয়েকে ডুবে মরবার কথা বলেছিল, আনন্দে তার দুচোখ বেয়ে জল পড়তে লাগল। সে বলল, “আমার ঘরেও এমন মেয়ে জন্মেছিল।”

 সেনাপতির চলেছেন পদে পদে বাধা দিবার জন্য। এক-একটা শহর জয় হয় আর তাঁরা রাজাকে বলেন, “আর গিয়ে কাজ নাই। হঠাৎ সৈন্যদের একটু উৎসাহ হয়ে কতগুলো শহর দখল করা গেছে। কিন্তু বেশি লোভ করলে, এর পরে ভারি বিপদ হবে।” কিন্তু জোয়ান বলে, “আমি জানি, রীমস্ নগর পর্যন্ত আমায় যেতে হবে, সেখানে রাজার অভিষেক হবে।” যখন রাজার মনও বিমুখ হয়ে পড়ল, তখন জোয়ান কেঁদে বলল, “আর কিছুদিন আমার কথা শুনুন তার পর আমি চলে যাব। শেষে আর সময় হবে না, আমি আর এক বছরের বেশি বাঁচব না।” যখন ক্রয় নগরের কাছে এসে ইংরাজের সৈন্যবল দেখে কাপরুষ রাজা মন্ত্রণা করতে বসলেন, তখন জোয়ান তার মন্ত্রণাসভায় ঢুকে বলল, “এমন করে সময় নষ্ট করবেন না।” সভার মন্ত্রীরা বললেন, “তোমায় ছয়দিনমাত্র সময় দিলাম, এর মধ্যে যদি শহর দখল করতে পার, তা হলে আমরা ফিরে যাব।” জোয়ান বলল, “ছয়দিন কেন? তিনদিন সময় দিন।” তার পরের দিনই সে সৈন্য নিয়ে ত্রয় নগরের দ্বারে উপস্থিত হতেই ইংরাজ প্রহরীরা বিনাযুদ্ধেই দ্বার ছেড়ে পথ ছেড়ে শহর ছেড়ে উত্তরের দিকে সরে পড়ল। তার পর ক্রমে রীমস নগরও উদ্ধার হল। মহা সমারোহ করে রাজার অভিষেক হয়ে গেল, জোয়ান নিজের হাতে রাজার মাথায় মুকুট তুলে দিল। তখন রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, “ফ্রাসের গৌরবমণি জোয়ান। আজ তুমি কি পুরস্কার পেতে ইচ্ছা কর?” জোয়ান বলল, “আমার তো সব ইচ্ছাই পূর্ণ হয়েছে—যদি অনুগ্রহ করতে চান, তবে আমার জন্মস্থান ডমরেমি গ্রামকে আজ থেকে খাজনামুক্ত করে দিন।” সেই থেকে আজ পর্যন্ত। গ্রাম আর সরকারি খাজনা দেয় না—আজও রাজস্ব-হিসাবের খাতায় জোয়ানের নাম করে বলা হয়, তার খাতিরে খাজনা মাপ।

 তার পর জোয়ান বলল, “আমার কাজ এখন শেষ হয়েছে। এখন আমি আমার গ্রামে ফিরে যাই।” কিন্তু সেনাপতিরা উলটা সুর ধরে বললেন, “এতদুর এলাম যখন, তখন পারিস পর্যন্ত যাওয়া যাক।” জোয়ানের মনে এতদিন আশা ছিল, উৎসাহ ছিল, কিন্তু এখন যেন আর তার সে ভরসা নাই। এতদিন তার মনে হত দেবতারা তার সঙ্গে আছেন, অজি প্রথম তার মনে হল সংসারে সে একা—পৃথিবীতে কেউ তার সহায় নেই। তবু রাজার আদেশ মানতে হবে। জোয়ান সৈন্য নিয়ে পারিসের দিকে চললেন। কিন্তু দুদিন না যেতেই অকৃতজ্ঞ নরাধম রাজা গোপনে ইংরাজের সঙ্গে সন্ধি করে, জোয়ানকে শত্রুর মুখে ফেলে নিজে দলবল নিয়ে সরে পড়লেন। জোয়ানের জীবনে এই প্রথমবার তার পরাজয় হল। এমন বিশ্বাসঘাতক কাপুরুষ রাজা, কিন্তু জোয়ান তাকে ছাড়তে পারল না। দুদিন যেতে না যেতেই রাজা আবার বিপদে পড়েছেন। সে খবর শুনেই জোয়ান তাঁর উদ্ধারের জন্য সৈন্য নিয়ে ছুটে গেল। এই তার শেষ যাত্রা। একদিন ঘোর যুদ্ধের মধ্যে তার নিজেরই দলের লোক তাকে ইংরাজের কাছে ধরিয়ে দিল।

 তার পরে সে কী দুঃখের দিন। শিশুর মতো নির্মল সুন্দর জোয়ানকে পশুর মতো খাঁচার মধ্যে পুরে, শিকল দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে, তার শত্রুরা তাকে ধরে নিয়ে গেল। কত লোকে কাঁদল, কত লোকে তার জন্য আকুল হয়ে প্রার্থনা করল, কিন্তু দেশের রাজা, দেশের বীর যোদ্ধা সেনাপতি, কেউ তার উদ্ধারের জন্য ছুটে গেল না, কেউ তার হয়ে একটি কথা পর্যন্ত বলল না। রাজা নির্বাক নিশ্চিন্ত, রাজার বিরোধী যারা তারা ইংরাজের সঙ্গে যোগ দিল। দেশী বিদেশী সকল শত্রু মিলে এই একটি অসহায় মেয়েকে ধ্বংস করবার জন্য মিথ্যা বিচারের ভড়ং করতে বসল। কত তর্জন শাসন, আর কত অন্যায় নির্যাতন করে, কত মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে, তারা জোয়ানকে জব্দ করতে চাইল। যুদ্ধের মধ্যেও যে কাউকে আঘাত করে নি; যুদ্ধের সময়েও যে একদিনের জন্যও ভগবানকে ভোলে নি; যার শেষ বিশ্বাস ছিল অস্ত্রে নয়, বর্মে নয়, কিন্তু দেবতার আশীর্বাদে ধর্ম-ব্যবসায়ী পাদরিরা তাকে শয়তানের দূত বলে, ধর্মদ্রোহী মিথ্যাবাদী বলে, পুড়িয়ে মারবার হুকুম দিলেন। শেষপর্যন্ত জোয়ানের বিশ্বাস টলে নি। সে নির্ভয়ে দাঁড়িয়ে বলেছিল, “যা করেছি, দেবতার আদেশে করেছি। তার জন্য আমার কোনো অপরাধ হয় নি।” কিন্তু যখন তাকে খোঁটার মধ্যে বেঁধে চারিদিকে কাঠ সাজিয়ে দিল, যখন নিষ্ঠর ঘাতকেরা মশাল নিয়ে সেই কাঠে আগুন ধরাতে এল, তখন ভয়ে তার বুক কেঁপে উঠল। তার মনে হল সেই ডমরেমি গ্রামের কথা—সেই যে গির্জার ধরে দেবতার বাণী সে শুনেছিল, সেই যে আলোর মতো দেবতারা তাকে ডেকে ডেকে আশার কথা বলেছিলেন—সেই কথা তার মনে হল। কিন্তু হয়। সেই দেবতারা আজ কোথায়? তাঁরাও কি জোয়ানকে ভুলে গেলেন? অসহায় শিশুর মতো জোয়ান কেঁদে উঠল, “সেণ্ট মাইকেল। সেণ্ট মাইকেল! অজি তুমি কোথায়?” সে ব্যাকুল ডাক শুনে নিষ্ঠুর বিচারকের চোখেও জল এল। চারিদিকে কান্নার রোল উঠল। কিন্তু অন্ধ হিংসার শাসন টুলবার নয়। যার পায়ের ধুলে নেবার যোগ্য তারা নয়, সেই মেয়েকে পুড়িয়ে মেরে ধর্মযাজকেরা নিশ্চিন্ত হলেন—ভাবলেন যাহোক এতদিনে ধর্ম বাঁচল।

সন্দেশ—পৌষ, ১৩২৫