‘আমি যাচ্ছি, আমার এ মুখ তুমি আর কোনো দিন
দেখবে না, আমি চলে যাচ্ছি, আমার সকল বেলা
তোমার দু’চোখ থেকে করতল থেকে
তুলে নিয়ে যাচ্ছি, তোমার মনোমণ্ডলে আমি আর
কেউ নই’ বলে তুমি একঘর আলো
শুষে নিয়ে করেছ প্রস্থান।
হে বিষাদময়ী নিরুপমা, হে প্রতিমা
কী করে তোমাকে বিসর্জন
দেব বিস্মৃতির কালিন্দীতে?
ইচ্ছে করলেই তো আর দুটি হৃদয়ের
সম্পর্কের সাঁকো, যেমন ভাবছ তুমি,
যায় না ভাসিয়ে দেয়া বিদ্বেষের বানে।
তুমি তো কখনো নও ব্ল্যাকবোর্ড লেখা
ভৌগোলিক কোনো নাম, নও ত্র্যালজেব্রার ফর্মুলা
অথবা পদ্যের পঙ্ক্তি নও কোনো, তড়িঘড়ি শুধু
ঘষে তুলে ফেললেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
এখনও তো যেদিকে তাকাই, তুমি, শুধু, ব্যাপ্ত তুমি
সবখানে, এই তো দাঁড়াতে এসে নিঃশব্দে এখানে;
মেঝে কী ব্যাকুল নিত বুক পেতে
তোমার পায়ের ছাপ। বসতে চেয়ারে,
দোলাতে পা ঘন ঘন এবং পাখির পালকের
কোমল শব্দের মতো শাড়ির মর্মর উঠত বেজে
শিরায় আমার। এই ঘর তুমিময়
সকল সময়,
একে কোন জাদুবলে রেখেছ বানিয়ে অলৌকিক জাদুঘর?
কেন যে আমার হাতে সহজেই এক মুঠো বালি
রেখে চলে গেছ পেছনে নির্জন ফেলে ধ্বংসস্তুপ,
বুঝতে পারিনি।
তুমি ফিরে আসো আর না-ই আসো আমি এখানেই
থাকব অটল বসে সর্বক্ষণ, এ জায়গা কখনো ছাড়ব না।
উন্মত্ত মুয়াজ্জিনের মতো রটাচ্ছি তোমার নাম
প্রহরে প্রহরে,
সেই ধ্বনি মাথা কোটে স্তব্ধতার পুরুষ্ট দেয়ালে,
তোমার শরীর ভেবে বার-বার শূন্যতাকে করি আলিঙ্গন।