জন্মান্ধের গান
‘যতদিন বাঁচবো যেন দুচোখ খুলেই বেঁচে থাকি’
একজন অন্ধ ভিখারী গান গাইছে। রাসের মেলায়,
তিনজন শহুরে বাবু তুড়ি দিচ্ছে, এবং পোশাকি
হাসি হেসে পয়সা খুঁড়ছে এলোমেলো, নিতান্ত হেলায়।
তারা কিন্তু অন্ধ নয়, চোরা চোখে দেখছে চারদিকে
নধর ডাঁটার মতো ষ্টুড়িটি বেশ, সঙ্গে আছে নাকি
অন্য কেউ? কি সুন্দর পুতুলটা দেখা মাত্র পাঁচ সিকে;
সাঁওতালীরা আয়না কিনছে, সন্ধে নামল, এখনো অনেক রঙ্গ বাকি।
অন্ধ ভিখারীটি ফিরলো গান সেরে, হাটখোলার পাশে তার কুঁড়ে
‘যতদিন বাঁচবো যেন দুচোখ খুলেই বেঁচে থাকি’
শুদ্ধ, পরিশ্রুত এক মিশমিশে আলো তার দুই চক্ষু জুড়ে
উদ্ভাসিত করে দৃশ্যে, প্রান্তর আকাশ, রাত্রি, আঁধার, জোনাকি;
অথবা করে না হয়তো, জন্মান্ধ নিবোধ লোকটা শোনা গান গায় শেখা সুরে
সেইদিন অর্থ বুঝবে, যেদিন কবরে শোবে তিন ফুট কালো মাটি খুঁড়ে।