বেশ কিছুদিন হলো ঘরের ভেতর ছুঁচো আর ইঁদুরের
উৎপাত বেড়েছে। এইসব
মৃত্তিকা খননকারী, গর্তবাসী প্রাণী কবে আমার ঘরের
জবরদখল নিয়ে ফেলেছে, পাইনি টের। উহাদের গন্ধে এখন তো
বিবমিষা হয়, মাঝেমাঝে
বমি করে ফেলি আর কোনও কোনও রাত
ভীষণ নির্ঘুম কাটে, অসুস্থতা বুকের ভেতর
কঠিন পাথর হয়ে চেপে বসে। কখনও কখনও
মনে হয়, মূষিক ও গন্ধ মূষিকেরা বন্ধ ঘরে
আমার শরীর ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাবে অসীম আহ্লাদে। খাটে শুধু
কঙ্কাল থাকবে পড়ে উন্মাদের দুঃস্বপ্নের মতো,-
এ ভাবনা ছড়ায় তুষারকণা রক্তের ভিতর।
তাহলে কি ছুঁচো আর ইঁদুরেরা আখেরে আমাকে
ঠাঁইনাড়া করে দেবে? কারও বাড়া ভাতে
কখনও দিইনি ছাই, তবু কেন এই
উৎপাত এখানে দিনরাত? আমার নিজেরই ঘর
কেন ঘৃণ্য মৃত্তিকাখননকারী প্রাণীদের অধিকারে ছেড়ে
চলে যেতে হবে? কেন কেবলি বিবাগী
হয়ে হেঁটে যেতে হবে দেশ-দেশান্তরে
নিঃসঙ্গ, ব্যথিত ইহুদির মতো? অথচ আমার
আপন ঘরের
ভেতর আসতো ভেসে গোলাপ, কনকচাঁপা, চন্দ্রমল্লিকার
ঘ্রাণ; পাখি সুরে সুরে ভরিয়ে তুলত কত নিমগ্ন প্রহর
আর কবিতার মুখ প্রথম আলোর মতো জাগত হৃদয়ে।
১৪.১.৯৯