পরিশিষ্ট

চিড়িয়াখানা – ২১

একুশ

প্রমোদ বরাটের ঘর হইতে যখন বাহিরে আসিলাম বেলা তখন প্রায় বারোটা। পাশের ঘরে থানার কয়েকজন কর্মচারী খাতা-পত্র লইয়া কাজ করিতেছিল, বরাট বাহিরে আসিলে হেড-ক্লার্ক উঠিয়া আসিয়া নিম্নস্বরে বরাটকে কিছু বলিল।

বরাট ব্যোমকেশকে বলিল,—‘একটু অসুবিধা হয়েছে। আমাকে এখনি আর একটা কাজে বেরুতে হবে। তা আপনারা না হয় এগোন, আমি বিকেলের দিকে কলোনীতে হাজির হব।’

ব্যোমকেশ একটু চিন্তা করিয়া বলিল,—‘তার চেয়ে এক কাজ করা যাক, সন্ধ্যের সময় সকলে একসঙ্গে গেলেই চলবে। আপনি কাজে যান, সন্ধ্যে ছ’টার সময় স্টেশনে ওয়েটিং রুমে আমাদের খোঁজ করবেন।’

বরাট বলিল,—‘বেশ, সেই ভাল।’

ব্রজদাস বলিলেন,—‘কিন্তু আমি—’

ব্যোমকেশ বলিল,—‘আপনি এখন কলোনীতে ফিরে যেতে পারেন, কিন্তু যে-সব কথা হল তা কাউকে বলবার দরকার নেই।’

‘যে আজ্ঞে।’

ব্রজদাস কলোনীর রাস্তা ধরিলেন, আমরা স্টেশনে ফিরিয়া চলিলাম। চলিতে চলিতে ব্যোমকেশ বলিল,—‘আমাদের চোখে ঠুলি আঁটা ছিল। দময়ন্তী নামটা প্রচলিত বাংলা নাম নয় এটাও চোখে পড়েনি। অমন রঙ এবং রূপ যে বাঙালীর ঘরে চোখে পড়ে না এ কথাও একবার ভেবে দেখিনি। দময়ন্তী এবং নিশানাথের বয়সের পার্থক্য থেকে কেবল দ্বিতীয় পক্ষই আন্দাজ করলাম, অন্য সম্ভাবনা যে থাকতে পারে তা ভাবলাম না। দময়ন্তী স্কুলে গিয়ে পাঞ্জাবী মেয়েদের সঙ্গে গল্প করেন এ থেকেও কিছু সন্দেহ হল না। অথচ সন্দেহ হওয়া উচিত ছিল। নিশানাথবাবু বোম্বাই প্রদেশে সাতচল্লিশ বছর বয়সে একটি উনিশ-কুড়ি বছরের বাঙালী তরুণীকে বিয়ে করলেন এটা এক কথায় মেনে নেবার মত নয়।—অজিত, মাথার মধ্যে ধূসর পদার্থ ক্রমেই ফ্যাকাসে হয়ে আসছে, এবার অবসর নেওয়া উচিত। সত্যান্বেষণ ছেড়ে ছাগল চরানো কিম্বা অনুরূপ কোনও কাজ করার সময় উপস্থিত হয়েছে।’

তাহার ক্ষোভ দেখিয়া হাসি আসিল। বলিলাম,—‘ছাগল না হয় পরে চরিও, আপাতত এ ব্যাপারের তো একটা নিষ্পত্তি হওয়া দরকার। দময়ন্তী নিশানাথবাবুর স্ত্রী নয় এ থেকে কী বুঝলে?’

ক্ষুব্ধ ব্যোমকেশ কিন্তু উত্তর দিল না।

স্টেশনে ওয়েটিং রুমে তালা লাগানো ছিল, তালা খোলাইয়া ভিতরে গিয়া বসিলাম। একটা কুলিকে দিয়া বাজার হইতে কিছু হিঙের কচুরি ও মিষ্টান্ন আনাইয়া পিত্ত রক্ষা করা গেল।

আকাশে মেঘ আরও ঘন হইয়াছে, মাঝে মাঝে চড়বড় করিয়া দু’চার ফোঁটা ছাগল-তাড়ানো বৃষ্টি ঝরিয়া পড়িতেছে। সন্ধ্যা নাগাদ বেশ চাপিয়া বৃষ্টি নামিবে মনে হইল।

দুইটি দীর্ঘবাহু আরাম-কেদারায় আমরা লম্বা হইলাম। বাহিরে থাকিয়া থাকিয়া ট্রেন আসিতেছে যাইতেছে। আমি মাঝে মাঝে ঝিমাইয়া পড়িতেছি, মনের মধ্যে সূক্ষ্ম চিন্তার ধারা বহিতেছে—দময়ন্তী দেবী নিশানাথের স্ত্রী নয়, লাল সিং-এর স্ত্রী…মানসিক অবস্থার কিরূপ বিবর্তনের ফলে একজন সচ্চরিত্র সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি এরূপ কর্ম করিতে পারেন?…দময়ন্তী প্রকৃতপক্ষে কিরূপ স্ত্রীলোক? স্বৈরিণী? কুহকিনী? কিন্তু তাঁহাকে দেখিয়া তাহা মনে হয় না…

সাড়ে পাঁচটার সময় পুলিস ভ্যান লইয়া বরাট আসিল। আকাশের তখন এমন অবস্থা হইয়াছে যে, মনে হয় রাত্রি হইতে আর দেরি নাই। মেঘগুলা ভিজা ভোট-কম্বলের মত আকাশ আবৃত করিয়া দিনের আলো মুছিয়া দিয়াছে।

বরাট বলিল,—‘বিকাশকে আপনার উনিশ নম্বর মির্জা লেনে পাঠিয়ে দিলাম। কাল খবর পাওয়া যাবে।’

ব্যোমকেশ বলিল,—‘বিকাশ! ও—বেশ বেশ। ছোকরা কি আপনাদের দলের লোক, অর্থাৎ পুলিসে কাজ করে?’

বরাট বলিল,—‘কাজ করে বটে কিন্তু ইউনিফর্ম পরতে হয় না। ভারী খলিফা ছেলে। চলুন, এবার যাওয়া যাক।’

স্টেশনের স্টলে এক পেয়ালা করিয়া চা গলাধঃকরণ করিয়া আমরা বাহির হইতেছি, একটা ট্রেন কলিকাতার দিক হইতে আসিল। দেখিলাম নেপালবাবু গাড়ি হইতে নামিলেন, হন্‌হন্‌ করিয়া বাহির হইয়া গেলেন। আমাদের দেখিতে পাইলেন না।

ব্যোমকেশ বলিল,—‘উনি এগিয়ে যান। আমরা আধ ঘন্টা পরে বেরুব।’

আমরা আবার ওয়েটিং রুমে গিয়া বসিলাম। একথা-সেকথায় আধ ঘণ্টা কাটাইয়া মোটর ভ্যানে চড়িয়া বাহির হইয়া পড়িলাম।

কলোনীর ফটক পর্যন্ত পৌঁছিবার পূর্বেই ব্যোমকেশ বলিল,—‘এখানেই গাড়ি থামাতে বলুন, গাড়ি ভেতরে নিয়ে গিয়ে কাজ নেই। অনর্থক সকলকে সচকিত করে তোলা হবে।’

গাড়ি থামিল, আমরা নামিয়া পড়িলাম। অন্ধকার আরও গাঢ় হইয়াছে। আমরা কলোনীর ফটকের সম্মুখে উপস্থিত হইয়া দেখিলাম নিশানাথবাবুর ঘরের পাশের জানালা দিয়া আলো আসিতেছে।

ব্যোমকেশ সদর দরজার কড়া নাড়িল। বিজয় দরজা খুলিয়া দিল এবং আমাদের দেখিয়া চমকিয়া বলিয়া উঠিল,—‘আপনারা!’

ভিতরে দময়ন্তী চেয়ারে বসিয়া আছেন দেখা গেল। ব্যোমকেশ গম্ভীর মুখে। বলিল,—‘দময়ন্তী দেবীকে কিছু জিজ্ঞাসা করবার আছে।’

আমাদের ঘরে প্রবেশ করিতে দেখিয়া দময়ন্তী ত্রস্তভাবে উঠিয়া দাঁড়াইলেন, তাঁহার মুখ বিবর্ণ হইয়া গেল। ব্যোমকেশ বলিল,—‘উঠবেন না। বিজয়বাবু, আপনিও বসুন।’

দময়ন্তী ধীরে ধীরে আবার বসিয়া পড়িলেন। বিজয় চোখে শঙ্কিত সন্দেহ ভরিয়া তাঁহার চেয়ারের পিছনে গিয়া দাঁড়াইল।

আমরা উপবিষ্ট হইলাম। ব্যোমকেশ জিজ্ঞাসা করিল,—‘বাড়িতে আর কেউ নেই?’

বিজয় নীরবে মাথা নাড়িল। ব্যোমকেশ যেন তাহা লক্ষ্য না করিয়াই নিজের ডান হাতের নখগুলি নিরীক্ষণ করিতে করিতে বলিল,—‘দময়ন্তী দেবী, সেদিন আপনাকে যখন প্রশ্ন করেছিলাম তখন সব কথা আপনি বলেননি। এখন বলবেন কি?’

দময়ন্তী ভয়ার্ত চোখ তুলিলেন,—‘কি কথা?’

ব্যোমকেশ নির্লিপ্তভাবে বলিল,—‘সেদিন আপনি বলেছিলেন দশ বছর আগে আপনাদের বিয়ে হয়েছিল, কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি বিয়ে হওয়া সম্ভব ছিল না। নিশানাথবাবু আপনার স্বামী নন—’

মৃত্যুশরাহতের মত দময়ন্তী কাঁদিয়া উঠিলেন,—‘না না, উনিই আমার স্বামী—উনিই আমার স্বামী—’ বলিয়া নিজের কোলের উপর ঝুঁকিয়া পড়িয়া মুখ ঢাকিলেন।

বিজয় গর্জিয়া উঠিল,—‘ব্যোমকেশবাবু!’

বিজয়কে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করিয়া ব্যোমকেশ বলিয়া চলিল,—‘আপনার ব্যক্তিগত জীবনের গোপনীয় কথায় আমাদের দরকার ছিল না। অন্য সময় হয়তো চুপ করে থাকতাম, কিন্তু এখন তো চুপ করে থাকবার উপায় নেই। সব কথাই জানতে হবে—’

বিজয় বিকৃত স্বরে বলিল,—‘আর কী কথা জানতে চান আপনি?’

ব্যোমকেশ চকিতে বিজয়ের পানে চোখ তুলিয়া করাতের মত অমসৃণ কণ্ঠে বলিল,—‘আপনাকেও অনেক কৈফিয়ৎ দিতে হবে, বিজয়বাবু; অনেক মিছে কথা বলেছেন আপনি। কিন্তু সে পরের কথা। এখন দময়ন্তী দেবীর কাছ থেকে জানতে চাই, যে-রাত্রে নিশানাথবাবুর মৃত্যু হয় সে-রাত্রে কী ঘটেছিল?’

দময়ন্তী গুমরিয়া গুমরিয়া কাঁদিতে লাগিলেন। বিজয় তাঁহার পাশে নতজানু হইয়া বাষ্পরুদ্ধ স্বরে ডাকিতে লাগিল,—‘কাকিমা—কাকিমা—!’

প্রায় দশ মিনিট পরে দময়ন্তী অনেকটা শান্ত হইলেন, অশ্রুপ্লাবিত মুখ তুলিয়া আঁচলে চোখ মুছিলেন। ব্যোমকেশ শুষ্কস্বরে বলিল,—‘সত্য কথা গোপন করার অনেক বিপদ। হয়তো এই সত্য গোপনের ফলেই পানুগোপাল বেচারা মারা গেছে। এর পর আর মিথ্যে কথা বলে ব্যাপারটাকে আরও জটিল করে তুলবেন না।’

দময়ন্তী ভগ্নস্বরে বলিলেন,—‘আমি মিথ্যে কথা বলিনি, সে-রাত্রির কথা যা জানি সব বলেছি।’

ব্যোমকেশ বলিল,—‘দেখুন, কী ভয়ঙ্করভাবে নিশানাথবাবুর মৃত্যু হয়েছিল তা বিজয়বাবু জানেন। আপনি পাশের ঘরে থেকেও কিছু জানতে পারেননি, এ অসম্ভব। হয় আপনি দশটা থেকে এগারোটার মধ্যে বাড়িতে ছিলেন না, কিংবা আপনার চোখের সামনে নিশানাথবাবুর মৃত্যু হয়েছে।’

পূর্ণ এক মিনিট ঘর নিস্তব্ধ হইয়া রহিল। তারপর বিজয় ব্যগ্রস্বরে বলিল,—‘কাকিমা, আর লুকিয়ে রেখে লাভ কি। আমাকে যা বলেছ এঁদেরও তা বল। হয় তো—’

আরও খানিকক্ষণ মূক থাকিয়া দময়ন্তী অতি অস্পষ্ট স্বরে বলিলেন,—‘আমি বাড়িতে ছিলাম না।’

‘কোথায় গিয়েছিলেন? কি জন্যে গিয়েছিলেন?’

অতঃপর দময়ন্তী স্খলিতস্বরে এলোমেলোভাবে তাঁহার বাহিরে যাওয়ার ইতিহাস বলিলেন। দীর্ঘ আট মাসের ইতিহাস; তাঁহার ভাষায় বলিলে অনাবশ্যক জটিল ও জবড়জং হইয়া পড়িবে। সংক্ষেপে তাহা এইরূপ—

আট নয় মাস পূর্বে দময়ন্তী ডাকে একটি চিঠি পাইলেন। লাল সিং-এর চিঠি। লাল সিং লিখিয়াছে—জেল হইতে বাহির হইয়া আমি তোমাদের সন্ধান পাইয়াছি। ছদ্মবেশে গোলাপ কলোনী দেখিয়া আসিয়াছি, তোমাদের সব কীর্তি জানিতে পারিয়াছি। আমি ভীষণ প্রতিহিংসা লইতে পারিতাম কিন্তু তাহা লইব না। আমার টাকা চাই। কাল রাত্রি দশটা হইতে এগারোটার মধ্যে কলোনীর ফটকের পাশে যে কাচের ঘর আছে সেই ঘরে বেঞ্চির উপর ৫০০ টাকা রাখিয়া আসিবে। কাহাকেও কিছু বলিবে না, বলিলে তোমাদের দু’জনকেই খুন করিব। এর পর আমি তোমাকে চিঠি লিখিব না (জেলে বাংলা শিখিয়াছি কিন্তু লিখিতে চাই না), টাকার দরকার হইলে মোটরের একটি ভাঙা অংশ বাড়ির কাছে ফেলিয়া দিয়া যাইব। তুমি সেই রাত্রে নির্দিষ্ট সময়ে ৫০০ টাকা কাচের ঘরে রাখিয়া আসিবে।—

চিঠি পাইয়া দময়ন্তী ভয়ে দিশাহারা হইয়া গেলেন। কিন্তু নিশানাথকে কিছু বলিলেন না। রাত্রে ৫০০ টাকার নোট কাচের ঘরে রাখিয়া আসিলেন। কলোনীর টাকাকড়ি দময়ন্তীর হাতেই থাকিত। কেহ জানিতে পারিল না।

তারপর মাসের পর মাস শোষণ চলিতে লাগিল। মাসে দুই-তিন বার মোটরের ভগ্নাংশ আসে, দময়ন্তী কাচের ঘরে টাকা রাখিয়া আসেন। কলোনীর আয় ছিল মাসে প্রায় আড়াই হাজার তিন হাজার, কিন্তু এই সময় হইতে আয় কমিতে লাগিল। তাহার উপর এইভাবে দেড় হাজার টাকা বাহির হইয়া যায়। আগে অনেক টাকা উদ্বৃত্ত হইত, এখন টায়ে টায়ে খরচ চলিতে লাগিল।

নিশানাথ টাকার হিসাব রাখিতেন না, কিন্তু তিনিও লক্ষ্য করিলেন। তিনি দময়ন্তীকে প্রশ্ন করিলেন, দময়ন্তী মিথ্যা বলিয়া তাঁহাকে স্তোক দিলেন; আয় কমিয়া যাওয়ার কথা বলিলেন, খরচ বাড়ার কথা বলিলেন না।

এইভাবে আট মাস কাটিয়াছে। নিশানাথের মৃত্যুর দিন সকালে দময়ন্তী আবার একখানি চিঠি পাইলেন। লাল সিং লিখিয়াছে—আমি এখান হইতে চলিয়া যাইতেছি, যাইবার আগে তোমার সঙ্গে দেখা করিয়া যাইতে চাই। তুমি রাত্রি দশটার সময় কাচের ঘরে আসিয়া আমার জন্য অপেক্ষা করিবে। যদি এগারোটার মধ্যে না যাইতে পারি তখন ফিরিয়া যাইও। আমি তোমাকে ক্ষমা করিয়াছি কিন্তু কাহাকেও কিছু বলিলে কিম্বা আমাকে ধরিবার চেষ্টা করিলে খুন করিব।

সে-রাত্রে আহারের পর বাড়িতে ফিরিয়া আসিয়া দময়ন্তী দেখিলেন, নিশানাথ আলো নিভাইয়া শুইয়া পড়িয়াছেন। দময়ন্তী নিঃশব্দে পিছনের দরজা দিয়া বাহির হইয়া গেলেন। কিন্তু লাল সিং আসিল না। দময়ন্তী এগারোটা পর্যন্ত কাচের ঘরে অপেক্ষা করিয়া ফিরিয়া আসিলেন। দেখিলেন নিশানাথ পূর্ববৎ ঘুমাইতেছেন। তখন তিনিও নিজের ঘরে গিয়া শয়ন করিলেন।

পরদিন প্রাতঃকালে উঠিয়া নিশানাথের গায়ে হাত দিয়া দময়ন্তী দেখিলেন নিশানাথ বাঁচিয়া নাই। তিনি চীৎকার করিয়া অজ্ঞান হইয়া পড়িলেন।

ব্যোমকেশ নত মুখে সমস্ত শুনিল, তারপর বিজয়ের দিকে চোখ তুলিয়া বলিল,—‘বিজয়বাবু, আপনি এ কাহিনী কবে জানতে পারলেন?’

বিজয় বলিল,—‘তিন-চার দিন আগে। আমি আগে জানতে পারলে—’

ব্যোমকেশ কড়া সুরে বলিল,—‘অন্য কথাটা অর্থাৎ আপনার কাকার সঙ্গে দময়ন্তী দেবীর প্রকৃত সম্পর্কের কথা আপনি গোড়া থেকেই জানেন। কোনও সময় কাউকে একথা বলেছেন?’

বিজয় চমকিয়া উঠিল, তাহার মুখ ধীরে ধীরে রক্তাভ হইয়া উঠিল। সে বলিল,—‘না, কাউকে না।’

ব্যোমকেশ উঠিয়া দাঁড়াইয়া বরাটকে বলিল,—‘চলুন, এবার যাওয়া যাক।’

দ্বার পর্যন্ত গিয়া সে ফিরিয়া দাঁড়াইয়া বলিল,—‘একটা খবর দিয়ে যাই। লাল সিং দু’বছর আগে জেলে মারা গেছে।’