চলেই যেতাম;
আয়োজন ছিল ঠিকঠাক,
বেবাক নিখুঁতই বলা চলে।
তবে কোনও লটবহর ছিল না,
কিয়দ্দূরে জন্মদিন খুব মুখ ভার করে ছিল
দাঁড়ানো নীরবে এক কোণে,
যেন তাকে অতিশয় কালো মেঘ বানাবার লোভে
মরণের ফেরেশ্তা তার
হিংস্র হিম ডানা
সফেদ অপরিসর বেডে দিয়েছে ছড়িয়ে
চিৎ-হয়ে-থেকে অচেতন
আমার ওপর।
যেখানে যেতাম চলে কাউকে কিছু না বলে বড়ই নিশ্চুপ,
সেখানে, নিশ্চিত জানি, কেউ
নেই, কিছু নেই, আছে শুধু
অন্তহীন বোবা অন্ধকার, চির স্তব্ধতার হিম দীর্ঘশ্বাস।
আখেরে হয়নি যাওয়া। মিশকালো মেঘ
থেকে ঢের ধূসর মেঘের
আস্তরণ ভেদ করে ভাসতে ভাসতে
এক ঝাঁক তারা ছুঁয়ে, বিস্তর সাঁতার কেটে হ্রদে,
মেঘনা নদীর ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভেসে গইন্তা ঘাটের
ভেজা মাটি ছুঁয়ে
শ্যামলীর শান্ত গলি, রাধাচূড়া নিমেষে দৃষ্টিতে পুরে নিয়ে
কী করে যে সিঙ্গাপুরে বিরাট আরোগ্য নিকেতনে
কাশফুল্প্রায় ধবধবে বেডে প্রত্যাবর্তনের
কোমল আরামে কিন্তু বেগানা ডেরায় ফিরে এলাম, বুঝিনি।
কী আনন্দ চেনা ভুবনে আমার ফিরে এসে
চোখ মেলে তাকাবার এদিকে সেদিকে। পুনরায়
ভোরবেলা তরতাজা মাখনের মতো রোদ, আকাশের নীল,
শ্যামলীতে আমার আপন ঘরে বইয়ের মিছিল, বারান্দায়
লেজঝোলা পাখি দেখে, নয়না, দীপিতা আর অন্তরের অজস্র চুমোর
স্বাদ নিয়ে, জীবনসঙ্গিনী, তিন কন্যা, পুত্র এবং টিয়ার,
ভাইবোন সকলের দৃষ্টিতে চিত্তের প্রস্ফুটিত ফুল আর
অন্তরতমার অনুপস্থিতির বিরানায়
গুণীর তানের মতো ণ্ডঞ্জরিত অস্তিত্বে আমার।
কোথায় আমার চেনা বলপেন? কোথায় লুকালো
অভিমানে? কোথায় রয়েছে পড়ে কবিতার খাতা?
প্লিজ, খঁজে এনে দাও কাছে-
ওদের সান্নিধ্য বড় প্রয়োজন আজ।
১০.১১.৯৯