গিরিগুহার গুপ্তধন – ৪

চার

এই সুন্দর সকালে দীপংকর ও চম্পা যেন আনন্দের আতিশয্যে ভরে উঠল। ঠাকুর সিং-এর এই পর্ণকুটিরের পিছন দিকে পাহাড়ের কোল পর্যন্ত অনেকটা জায়গা বাঁশ-কঞ্চির বেড়া দিয়ে ঘেরা। সেইখানে নানা রকম সবজির ব্যবস্থা আছে। আলু কপি রাঙালু টমেটো শাক সব রকমই হয়। আশপাশে কোনও ঘরবাড়ি নেই। যা আছে তা বেশ দূরে দূরে।

চম্পা বলল, আগে এখানে অনেক লোকের বাস ছিল। এখন মৌভাণ্ডারে চাকরি পেয়ে সবাই শহরের দিকে চলে গেছে। আমরাই শুধু পড়ে আছি এখানে। এখন এখানে মোট দশ ঘর লোকের বাস। তাও দূরে দূরে। পাহাড়ের কোলে যে যার সুবিধেমতো জায়গায় ঘর করে নিয়েছে।

চম্পা কথা বলতে বলতেই ওর কাজ করতে লাগল। এরই ফাঁকে একবার দীপংকর একটা বালতি করে জল নিয়ে এল ঝরনা থেকে। অবশ্য ভেলুয়াও ওর পিছু পিছু গেল। আর চম্পা? সে সরু সরু লকড়ির জ্বালানিতে তেলচিটে ময়লা কড়ায় তেজপাতা আর গুড় দিয়ে হালুয়া বানাতে বসল।

গরম গরম সেই হালুয়ার স্বাদ অমৃতের মতো লাগল দীপংকরের।

হালুয়া খেতে খেতে দীপংকর বলল, আচ্ছা চম্পা, তোমার বাবা তোমাকে একা রেখে দোকানে থাকেন কেন? তুমি বড় হয়েছ, তোমাকে এমন চমৎকার দেখতে, যদি কেউ তোমাকে চুরি করে নিয়ে যায়?

কে আমাকে চুরি করবে? কার এমন সাধ্যি আছে যে ঠাকুর সিং-এর লেড়কির গায়ে হাত দেয়?

কিন্তু একা থাকতে তোমার ভয় করে না?

আমি তো একাই। ভয় করবে কেন? তা ছাড়া আমি ডাকাতের মেয়ে। আমার কী ভয় ডর আছে।

তুমি ডাকাতের মেয়ে?

চম্পা এবার হাঁটুতে মুখগুঁজে ডুকরে কেঁদে উঠল। তারপর বলল, তুমি আমাকে ঘৃণা করছ না তো? আমি তোমাকে ঠকাব না। আমার সব কথা তোমাকে বলব। শুধু একটা অনুরোধ, তুমি আমাকে ভুলে যেয়ো না।

দীপংকর বলল, চম্পা, তুমি আমার কাছে বড় রহস্যময় হয়ে উঠছ। তুমি আমাকে সব কথা খুলে বলো।

চম্পা বলল, বাবুজি তো আজ গালুডি চলে গেছেন সন্ধের আগে ফিরবেন না। আমি তোমাকে নিয়ে এক দূর গাঁওতে চলে যাব। সেখানে আজ হাট বসবে। আর ওখানে এক ঠাকুরমন্দির আছে। সেইখানে আমি তোমার জন্যে মানত করব।

কী মানত করবে তুমি?

তা তো বলব না। যদি তোমার স্মৃতি ফিরে আসে তা হলে তোমাকে নিয়ে সোজা তোমাদের বাড়িতে চলে যাব। আর ফিরব না। আশা করি তোমার মা-বাবা আমাকে ফিরিয়ে দেবেন না।

সে কী! বাবুজির জন্য মন কেমন করবে না তোমার?

করবে। কেন না ছোটবেলা থেকে ওকেই তো আমার বাবুজি বলে জেনে এসেছি। কিন্তু আমি জানি, ঠাকুর সিং আমার কেউ না।

দীপংকর অবাক হয়ে বলল, ঠাকুর সিং তোমার বাবুজি নয়?

না। অনেকদিন আগে গালুডির কাছে একবার এক ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা হয়। সেই সময় আমার মা-বাবা নাকি মারা যান। আমি লাইনের ধারে ছিটকে পড়ে কাঁদছিলাম। তখন ঠাকুর সিং আমাকে কুড়িয়ে এনে মানুষ করেন। আমার বয়স তখন পাঁচ বছর। আমার মা-বাবাকে আমি মনে করতে পারি না। তবে ঠাকুর সিং ও তার বউকে আমি ‘আম্মা-বাবুজি’ বললেও আমি জানি ওরা আমার কেউ নয়।

কাঠের জ্বাল দিতে দিতে উনুনে ভাত বসাল চম্পা। গোটা চারেক মুরগির ডিমও ফেলে দিল ভাতের মধ্যে। জ্বলন্ত অগ্নিশিখায় কিশোরী চম্পাকে সোনা দিয়ে তৈরি একটি মেয়ের মতো মনে হল।

চম্পা বলল, আমি স্কুলে যাই। ডাকাতের মেয়ে বলে অনেকে আমাকে বিদ্রূপ করে। এখন গরমের জন্যে এক মাস স্কুল বন্ধ। কিন্তু আমার স্কুলে যেতে একটুও ভাল লাগে না। আমি কী বাড়ির মেয়ে ছিলাম তা জানি না। কিন্তু এখন তো আমি ডাকাতের মেয়ে।

তোমার বাবা, মানে ঠাকুর সিং ডাকাত?

হ্যাঁ, এই জঙ্গলে আরও যারা আছে, তারা সবাই ডাকাত। এরা চোরা কাটরা করে জঙ্গলের কাঠ পাচার করে। স্মাগলিং জিনিস জঙ্গলের ভেতরে লুকিয়ে রাখে। ট্রেনে ডাকাতি করে। তবে আমার বাবুজি, ঠাকুর সিং ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের খুব ভালবাসেন। তাই তোমাকে এখানে নিয়ে এসে রেখেছেন। তুমি তো তোমার কোনও কথা ইয়াদ করতে পারছ না। যদি পারতে তা হলে এখনি আমি তোমাকে নিয়ে তোমার মা-বাবার কাছে চলে যেতাম। এইভাবে বনে-জঙ্গলে পড়ে থাকতাম না। যদিও এই পাহাড়, এই বন, এই ঝরনা, আমার কাছে স্বর্গ, তবুও আমার বাবুজি মরে গেলে এই জঙ্গলে আমি কী করব? একদিন আমি বড় হব তো! তখন?

দীপংকর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, আমি তোমাকে আমার মা-বাবার কাছে নিয়ে গেলে তারা তোমাকে আদর করে রাখবেন, এই আশ্বাস তোমাকে দিতে পারি চম্পা। তবে—

তবে কিনা তুমি কোনও কিছুই মনে করতে পারছ না এই তো? হ্যাঁ।

আচ্ছা আমি যদি তোমাকে কিছু কিছু মনে করিয়ে দিই? তা হলে? তা হলে তোমার মনে পড়বে না বাড়ির কথা?

দীপংকর অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে রইল চম্পার দিকে। বলল, তুমি! তুমি কি মনে করিয়ে দেবে আমাকে? আমার সম্বন্ধে কতটুকু তুমি জান? তোমার সম্বন্ধে আমি যা জানি, তুমি নিজেই তা জান না।

তার মানে?

তুমি কি জান, তুমি এখানে নজরবন্দি হয়ে আছ? আর আমি তোমার পাহারাদার।

চম্পা!

তুমি কি জান, দুটি মেয়ের ইজ্জৎ বাঁচাতে তুমি একজনকে খুন করেছ? তুমি কি জান, তারপর এক লরি দুর্ঘটনা হয়েছিল তোমার এবং তাইতেই স্মৃতিভ্রংশ হয়েছ তুমি? তুমি কি জান, তোমাকে খুঁজে বার করবার জন্য পুলিশ হন্যে হয়ে ঘুরছে?

দীপংকরের অবস্থা তখন অবর্ণনীয়। বলল, এসব কী বলছ তুমি? আমিআমি তো কিছুই মনে করতে পারছি না।

কাল রাতে আমি সব শুনেছি দীপংকর।

দীপংকর! কে দীপংকর!

তুমি। কাল সকালে কালনেমি আর ময়নিহান যখন তোমাকে আমার বাবার কাছে দিয়ে চলে যায় তখনও কেউ জানত না তোমার পরিচয়। এখানকার নামকরা ডাকাত, অবশ্য সবাই জানে উনি একজন মান্যগণ্য শেঠজি কুন্দনলাল, তোমাকে মোটরে করে ঘাটশিলায় পৌঁছে দেয়। এখন তুমি তারই নজরবন্দি। কাল বিকেলে সমস্ত কাগজে তোমার ছবি ছাপা হয়েছে, ওই ঘটনার বিবরণ সহ। তারপর থেকেই তোমাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে কুন্দনলালের লোকেরা। কেন না তোমার জেঠু যিনি এই অরণ্যে কুন্দনলালের লোকদের হাতে খুন হয়েছেন তিনি ছিলেন, কুন্দনলালের চিরশত্রু। তাঁর জীবিত বংশধরদে করতে চাইবে। তারপর তোমার বাবাকে এবং তোমাকেও হত্যা করবে ওরা। কিন্তু আমি বেঁচে থাকতে তা হতে দেব না। আমি আজই তোমাকে এখান থেকে সরিয়ে দেব দীপংকর।

দীপংকর বলল, তোমার কথা শুনে আমার সব কেমন ওলোট পালোট হয়ে যাচ্ছে।

আমার বাবুজি, ঠাকুর সিং কিন্তু তোমার ভাল চান। উনি এখন চুরিডাকাতি ছেড়ে দিয়েছেন। আমি জ্ঞানে ওঁকে কোনও ডাকাতি করতে দেখিনি। তবুও ডাকাত নাম তো রটে গেছে। তাই আমার কোনও মর্যাদা নেই ডাকাতের মেয়ে বলে। বাবুজি আজ গালুড়িতে গেছেন কুন্দনলাল শয়তানের সঙ্গে দেখা করতে। উনি তোমাকে অন্য কোথাও না-সরিয়ে, আমাদের কাছেই যদি তুমি থাক সেই অনুমতি নিতে গেছেন।

কিন্তু কেন? এতে ওঁর লাভ?

আমার অনুরোধে। তা ছাড়া সত্যি বলতে কী, বাবুজি এক সময় ডাকাত থাকলেও এখন ওঁর অনেক পরিবর্তন হয়েছে। একটু আধটু খারাপ কাজ যে এখনও করেন না তা নয়। তবে তোমার ওপর বাবুজির একটু দুর্বলতা এসে গেছে। কিন্তু তবুও কুন্দনলাল যদি রাজি না হন, তা হলে বাবুজি তোমাকে কুন্দনলালের হাতে তুলে দেবেন, কিন্তু ভুলেও তোমাকে তোমার বাবা-মা’র কাছে পৌঁছে দিয়ে আসবেন না। এখানেই বাবুজির সঙ্গে আমার অমিল। তাই বাবুজিকে আমি ভালবেসেও ভালবাসতে পারিনি। আর সেজন্যই বাবুজিকে ছেড়ে কোথাও চলে যেতেও আমার মন কাঁদবে না।

তোমার কি মনে হয় চম্পা, কুন্দনলাল আমাকে তোমাদের এখানে থাকতে দেবে?

জানি না। তবে বাবুজি তোমাকে রাখবার চেষ্টা করবেন। কেন না তুমি তো আগেকার কথা কিছুই মনে করতে পারছ না। এইটেই যা রক্ষে।

দীপংকর বলল, কিন্তু কুন্দনলাল যদি আমাকে তোমাদের এখানে থাকতে না দেয়?

না দিতেও পারে। তাই আমি আজই তোমাকে সরিয়ে দেব এখান থেকে।

কোথায়?

সে এক জায়গায়।

তাতে যদি কুন্দনলাল তোমার বাবাকে সন্দেহ করে?

করবে না। আমরা রটিয়ে দেব তুমি জর খেয়ালেই কোথাও চলে গেছ। দীপংকরের বুক থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল। সে ভেবে পেল না এখনও সে চম্পার কাছে আত্মপ্রকাশ করবে কি না। একবার মনে হল তার সব কথা সে খুলে বলে চম্পাকে। আবার ভাবল, না। ওকে স্বাভাবিক প্রতিপন্ন করবার সময় এখনও হয়নি। শুধু দুঃখ হল এই ভেবে কেন যে সেদিন গঙ্গার ধারে ও বেড়াতে গিয়েছিল। কেন যে রাগের মাথায় ওই রকম অস্থানে মেরে দিল ছেলেটাকে। ওই কাজ না করলে তো আজ ওকে এইভাবে চোরের মতো লুকিয়ে বেড়াতে হত না। ওর মা, ওর বাবা কত আদরযত্নে মানুষ করেছেন ওকে। ওর জন্যে তাঁরা কতই না দুঃখ পাচ্ছেন। দুঃখ কি ও-ই পাচ্ছে কম? মাকে বাবাকে একবার দু’চোখ ভরে দেখবার কত ইচ্ছে হচ্ছে ওর। কিন্তু না, আর কোনওদিনই ও বাবা-মায়ের কাছে ফিরতে পারবে না। কেন না ফিরলেই থানা-পুলিশ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা ফাঁসি। এইসব ভাবতে ভাবতে প্রচণ্ড উত্তেজনায় দীপংকর চিৎকার করে উঠল না—নানা না।

চম্পা ছুটে এসে ধরল দীপংকরকে। পরম স্নেহে ওর গায়ে হাত বুলিয়ে বলল, কী হল? এমন করে চেঁচিয়ে উঠলে যে? হল কী তোমার?

দীপংকর ওর চেঁচিয়ে ওঠার আসল কারণ না জানিয়ে বলল, চম্পা, তুমি আমাকে তোমার কাছ থেকে সরিয়ে কোথায় রেখে আসবে বলো? যদি তারা আমাকে ওই শয়তান কুন্দনলালের হাতে তুলে দেয়?

চম্পা বলল, না। সে ভয় নেই তোমার। আমি তোমাকে এমন জায়গায় লুকিয়ে রাখব যেখানে কুন্দনলালের ছায়াও প্রবেশ করতে পারবে না।

দীপংকরের চোখে এবার সত্যিই জল এসে গেল। আসবে না-ই বা কেন? এক সম্পূর্ণ অজানা অচেনা এই পাহাড়িয়া ললনার বুকে তার মতো এক অপরিচিত কিশোরের জন্য এই মধুর মমত্ববোধ কোথা থেকে এল? কেন এল? এ কথা কিছুতেই সে ভেবে পেল না। তবে কি জন্মান্তর বলে সত্যিই কিছু আছে? এই চম্পা কি ওর কেউ ছিল? কোনও সহোদরা? হয়তো হবে। তবে দীপংকর ওকে ছাড়বে না। ওর এখানকার কাজ শেষ হলে, ও নিজেই হাওড়ায় ফিরে ধরা দেবে পুলিশকে। তারপর যা ওর কপালে আছে তাই হবে। শুধু চম্পাকে তুলে দেবে ওর মা-বাবার হাতে এবং ওর শূন্যস্থান চম্পাকে দিয়ে পূর্ণ করিয়ে যে মায়া মমতায় দীপংকরকে মানুষ করেছেন ওর বাবা-মা সেই মধুর অপত্যস্নেহে চম্পাকেও মানুষ করবার অনুরোধ জানাবে। তারপর চম্পা বড় হবে। ওর বাবা-মা চম্পার বিয়ে দেবে। জীবিত থাকলে জেলে বসেও ওর শুভ কামনা করবে দীপংকর। আর যদি ফাঁসির দড়ি গলায় পরে মৃত্যু হয়, তা হলে মরণের ওপার থেকে ওকে ওর শুভেচ্ছা জানাবে। আশীর্বাদ করবে।

হঠাৎ ভেলুয়ার চিৎকারে সচকিত হয়ে উঠল ওরা। নিশ্চয়ই কেউ আসছে। কোনও আগন্তুককে না-দেখলে তো এইভাবে চেঁচাবে না ভেলুয়া।

চম্পা ইশারায় দীপংকরকে ঘরের ভেতরে লুকিয়ে পড়তে বলে নিজে দাওয়ার কাছে এসে খুঁটিতে ঠেস দিয়ে দাঁড়াল, কৌন হ্যায়রে? ওদিক থেকে উত্তর এল, কুত্তা সামালো।

চম্পা ধমক দিল ভেলুয়াকে, চল হ্যাট। চুপ রহো। আঃ আঃ আযা হিয়া পর।

চচচ।

ভেলুয়া লেজ নেড়ে নেড়ে পথ ছেড়ে পিছিয়ে এল দাওয়ার কাছে। একটি বলিষ্ঠ কণ্ঠের আওয়াজ এবার শুনতে পেল দীপংকর, ও লেড়কা কাঁহা হ্যায়?

চম্পা বলল, ও তো সবেরেই ঘাটশিলা চলা গিয়া।

কাহেকো ছোড়া উসকো? তেরা বাবুজি কাঁহা? আপকা সাথ মুলাকাত করনেকে লিয়ে গালুডি চলা গিয়া।

কব?

সবেরে।

আউর ও লেড়কা?

বাবুজি যানে কা বাদ ও ভি কাঁহা চলা গিয়া।

ঠিক হ্যায়। ও ফিন আ যায়ে গা তো উসকো জেরা খেয়াল রাখ না। উঁ? কী খেয়াল রাখবে চম্পা? তবু হ্যা বলতে হয় হ্যাঁ বলল। এখন মরো তোমরা খুঁজে। চম্পা ওর কাজ ঠিকই করে যাবে। কুন্দনলাল চলে যাবার পরও অনেকক্ষণ দাওয়ার খুঁটিতে ঠেস দিয়ে ওই রকম একইভাবে দাঁড়িয়ে রইল চম্পা। কেন না যদি আবার কোনও নতুন কথা বলতে ফিরে আসে? কিন্তু না। কুন্দনলাল যখন আর ফিরে এল না, তখন চম্পা ডাকল দীপংকরকে, দীপ! বাইরে এসো। দীপংকর ধীরে ধীরে বাইরে এসে বলল, কুন্দনলাল চলে গেছে?

হ্যাঁ। আমিও এখুনি তোমাকে সরিয়ে দিচ্ছি এখান থেকে।

তা না হয় দিলে, কিন্তু কতক্ষণ এবং কতদিন তুমি আমাকে ওইভাবে লুকিয়ে রাখবে চম্পা। ওরা কি ভাবছ বন-জঙ্গল তোলপাড় করবে না?

করবে। তবু তোমার কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারবে না। যাও এখন চট করে ঝরনায় গিয়ে চানটা করে এসো। তারপর পেট ভরে খেয়ে নাও দু’মুঠো। আচ্ছা থাক। একা যেতে হবে না। আমিও যাচ্ছি তোমার সঙ্গে। চলো।

দীপংকর একবার ইতস্তত করল। তারপর চম্পা ওকে ছেঁড়া ময়লা দুটো তেলচিটে গামছা বার করে দিতেই জামাপ্যান্ট ছেড়ে ওর সঙ্গে স্নান করতে চলল সে। দেখা যাক ওর ভাগ্য এবার ওকে কোন পথে নিয়ে যায়।