সিংহাসনে বস্ল রাজা বাজল কাঁসর ঘন্টা,
ছট্ফটিয়ে উঠল কেঁপে মন্ত্রীবুড়োর মনটা।
বললে রাজা, “মন্ত্রী, তোমার জামায় কেন গন্ধ?”
মন্ত্রী বলে, “এসেন্স দিছি- গন্ধ ত নয় মন্দ!”
রাজা বলেন, “মন্দ ভালো দেখুক শুঁকে বদ্যি,”
বদ্যি বলে, “আমার নাকে বেজায় হল সর্দি।”
রাজা হাঁকেন , “বোলাও তবে- রাম নারায়ণ পাত্র।”
পাত্র বলে, “নস্যি নিলাম এক্ষনি এইমাত্র-
নস্যি দিয়ে বন্ধ যে নাক, গন্ধ কোথায় ঢুকবে?”
রাজা বলেন, “কোটাল তবে এগিয়ে এস শুক্বে।”
কোটাল বলে, “পান খেয়েছি মশলা তাহে কর্পূর,
গন্ধে তারি মুন্ড আমার এক্কেবারে ভরপুর।”
রাজা বলেন, “আসুক তবে শের পালোয়ান ভীমসিং,”
ভমি বলে, “আজ কচ্ছে আমার সমস্ত গা ঝিম্ ঝিম্
রাত্রে আমার বোখার হল, বলছি হুজুর ঠিক বাৎ”-
ব’লেই শুল রাজসভাতে চক্ষু বুজে চিৎপাত।
রাজার শালা চন্দ্রেকেতু তারেই ধ’রে শেষটা
বল্ল রাজা, “তুমিই না হয় কর না ভাই চেষ্টা।”
চন্দ্র বলেন, “মারতে চাও ত ডাকাও নাকো জল্লাদ,
গন্ধ শুকে মর্তে হবে এ আবার কি আহ্লাদ?”
ছিল হাজির বৃদ্ধ নাজির বয়সটি তার নব্বই,
ভাব্ল মনে, “ভয় কেন আর একদিন তো মরবই-”
সাহস করে বল্লে বুড়ো, “মিথ্যে সবাই বকছিস,
শুঁকতে পারি হুকুম পেলে এবং পেলে বক্শিস।”
রাজা বলেন, “হাজার টাকা ইনাম পাবে সদ্য,”
তাই না শুনে উৎসাহতে উঠ্ল বুড়ো মদ্দ।
জামার পরে নাক ঠেকিয়ে- শুক্ল কত গন্ধ,
রইল অটল, দেখ্ল লোকে বিস্ময়ে বাক্ বন্ধ।
রাজ্য হল জয় জয়কার বাজ্ল কাঁসর ঢক্কা,
বাপ্রে কি তেজ বুড়োর হাড়ে, পায় না সে যে অক্কা!