তারপর চোখে জ্বালা-ধরানো দুপুরে
জিবনের মাতৃক্রোড়ে মৃত্যু ঘুমিয়ে রয়েছে দুগ্ধতৃষ্ণাহীন।
বাতাসের চুমো তার গালে, বুজে-থাকা
চোখের পাতায় দূর মেঘপল্লী-পেরুনো রোদের
আঙুল চিকন ঘোরে, মৃত্যু কী নিঃসাড়
ঘুমন্ত, ছড়ানো ছ’টি হাত,
নাক জীবনের স্তনে গোঁজা! চতুর্দিকে অবিরাম
খোঁজাখুঁজি। যেন সব পুঁজি
খুইয়ে ঘুরছে
কতিপয় অতিশয় পরিশ্রান্ত উদ্ভ্রান্ত মানুষ।
ঢেউয়ে ছিলো ঘোড়া, শত শত, চোখে শীতল আগুন,
ক্ষমাহীন ছোবলের মতো, ঘোড়সওয়ারের
ঘূর্ণি-দড়ি ছুঁড়েছিলো, তাদের গ্রীবায়
প্রতিষ্ঠিত কী নগ্ন করোটি।
একজন লোক এক সারি অমৃতের সন্তানের পাশে
দূরগামী জাহাজের মালের ধরনে পড়ে আছে
স্তব্ধতায় মোড়া, চোখ জোড়া
প্রাচীন পাথর, কী-যে তার
নাম, কোথায় বা ধাম?
লোকটার পায়ের পাতায় খাদ্যাম্বেষী
পিঁপড়ের দঙ্গল,
নাক তার নীলিমার দিকে।
হঠাৎ জীবন তার কোলে মৃত্যুশিশু নিয়ে ছুটে
আসে লোকটার কাছে, ধুলোয় লুটোয়
মলিন আঁচল,
চোখ-ফেটে-পড়া অশ্রুজল, সত্তাময়
হাহাকার। অকস্মাৎ লোকটার হাত কী প্রবল
টেনে ওকে জাগিয়ে তুলতে চায় এক তাল কাদার মতন
ঘুম থেকে শুধু
মৃত্যু জীবনের আকর্ষণে
কিছুতে নড়ে না এতটুকু, ঠোঁট তার
নিথর নিশ্চুপ নুড়ি।
এখন শুইয়ে দেয়া প্রয়োজন, তবুও জীবন গোধূলিতে
মৃত্যু-বাছাটিকে কোল ছাড়া করতে চায় না।