এখানে দাঁড়াও তুমি প্রবীণ অশথতলে, দাঁড়াবার প্রয়োজন থাক
আর না-ই থাক, দাও খানিক বিশ্রাম
পা দু’টোকে, ছায়া মাখো গায়ে, বন দোয়েলের ডাক
শোনো, দেখে নাও গ্রাম
গ্রামান্তের শোভা। কতদিন
আসো নি এমন ছায়াস্নিগ্ধ পরিবেশে।
তোমার পড়ে কি মনে এরকম বিকেলে মলিন
হয়ে-আসা দিগন্তের রেখা থেকে ভেসে
এসেছিল হৃদয়ের তন্তুজাল আলোড়নকারী
সুর, দুটি চোখ
তার দূর শতাব্দীর গহনতা নিয়ে ঝুঁকেছিল জলে, তারই
ছায়া পান ক’রে, তুমি ভুলেছিলে শোক?
তোমার পড়ে কি মনে? মনে
পড়ুক অথবা না-ই পড়ুক, এখন ছায়াবোনা পথে কিছুক্ষণ
থাকো অপেক্ষায়, দূর নীলাকাশ তারার স্পন্দনে
পাবে অন্য মানে, মায়াবন
চকিতে উঠবে জেগে পথপ্রান্তে। উড়ুক্কু মাছের ঝাঁকে ছেয়ে
যাবে দশদিক, অস্তগামী
সূর্যের ললাট বেয়ে
নামবে রঙিন সুতো, হৃদয়ে বুলোবে তুলি কে শিল্পী বেনামি।
অথচ এখানে তুমি খুব বেশিক্ষণ পারবে না
দাঁড়াতে, হঠাৎ ভয়ে কাঁটা
দেবে গায়ে; কেমন অচেনা
লাগবে সকল কিছু এক লহমায়; পায়ে হাঁটা
পথ হয়ে যাবে ঝড়ক্ষুব্ধ খর নদী, এ গ্রাম নিমেষে
ভীষণ তলিয়ে যাবে পৌরাণিক অন্ধকারে। তুমি
থাকবে দাঁড়িয়ে ঠায় বাজপোড়া মানুষের মতো অবশেষে;
কোথাও পাবে না খুঁজে কেউ এতটুকু চেনা ভূমি।